এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • হেদুয়ার ধারে - ৫৭ 

    Anjan Banerjee লেখকের গ্রাহক হোন
    ২৫ নভেম্বর ২০২৩ | ২৫৩ বার পঠিত
  • বিকেল পাঁচটা নাগাদ সাগর উল্টোডাঙার সিদ্ধেশ্বর হার্ডওয়্যারে এসে বসল। সাগরের দুই অনুগত সহচর শম্ভু আর মাণিক তার অপেক্ষাতেই ছিলাম। শম্ভু বলল,
    ' দাদা কাল এলেন না যে ... '
    ----- ' নাহ্ ... কাল আর হল না। কাজ ছিল শ্যামপুকুরে .... হ্যাঁ শোন, কাল একটা কাজ আছে ... সকাল সাড়ে নটা নাগাদ খান্নার দিকে নলিন সরকার স্ট্রিটের মুখে থাকবি। কানু আর বাবলাকেও থাকতে বলবি। একসঙ্গে দাঁড়াবি না
    ... ভাগাভাগি করে দাঁড়াবি। আর কানুকে বলবি পকেটে ছোটখাট কিছু একটা যেন রাখে। আমার কাছেও থাকবে ... দরকার হবে না অবশ্য। যদি লাগে চমকাবার জন্য তাই ... বুঝে নিয়েছিস? '
    ----- ' হ্যাঁ দাদা ... বড় কেস না ছোট কেস? ' মাণিক বলল।
    ------ ' ছোট ছোট .... ওই মেয়েদের টিজ করার ব্যাপার ... '
    ----- ' ও.. ও..ও ... বুঝতে পেরেছি, ইন্টু কেস ... '
    ----- ' ঠিক আছে ... ওই টাইমে দাঁড়াবি চারজন ভাগাভাগি করে। আমাকে দেখতে পেলে আমার আমার পেছন পেছন আসবি ... পাক্কা?
    ----- ' একদম পাক্কা দাদা ... ' শম্ভু বলল।

    কাবেরী সেদিন দুপুরে বলল, ' সুমনা তুই আমাকে একটু হেল্প কর, নইলে আমার অনার্সটা শিওর কাটা যাবে ... অবস্থা খুব খারাপ ... '
    ----- ' নিশ্চয়ই ... আমি যতটা পারব, মানে আমার সাধ্যমতো তোকে নিশ্চয়ই হেল্প করব। আমাদের বাড়িতে আয় না ... দুজনে একসঙ্গে প্র্যাকটিস করি ... এতে আমারও হেল্প হবে ... '
    ----- ' তা করলে হয় ... কখন যাব বল। '
    ----- ' রাত্রে ছাড়া আর কখন সময় হবে? ছুটির দিন অবশ্য দুপুরবেলাটা পাওয়া যাবে ... অবশ্য তোর বাড়িতেও হতে পারে কিন্তু আমার অবস্থা তো তুই জানিস ... ' সুমনা বলল।
    ----- ' দেখি কি করা যায়। কালকে জানাব ... আসলে এত মেন্টাল ডিস্ট্র্যাকশান হচ্ছে একদম কনসেনট্রেট করতে পারছি না ... '
    সুমনা কথাটা এখানেই এনে ফেলতে চাইছিল। সে সুযোগ নষ্ট করল না।
    বলল, ' কেন রে ... কি সমস্যা তোর? তুই তো কোন কিছু নিয়ে অত ব্রুড করিস না। সে রোগ বরং আমার আছে। মোটেই ভাল জিনিস না, এটা বুঝি ... '
    ----- ' না রে সুমনা ... আমিও আস্তে আস্তে তোর মতো হয়ে যাচ্ছি ... '
    সুমনা চমকে উঠে বলল, ' মানে? '
    ----- ' মানে, বেশি ইমপালসিভ অ্যান্ড ইমোশনাল হয়ে পড়ছি ... রেডিওয় একটা রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনছিলাম কাল --- আমার মন কেমন করে ... কে জানে কাহার তরে ... মন কেমন করে ...
    এসব ন্যাকা ন্যাকা গান আমি আগে শুনতামই না ... কিন্তু কাল গানটা শুনে আমার কেমন মন কেমন করতে শুরু করল ... '
    সুমনা চোখ বড় বড় করে বলল, ' তাই নাকি ! এরকম ব্যাপার? '
    ----- ' হমম্ ... '
    ----- ' তুই একটা ডিসিশান নিয়ে নে না ... অমিতাভ বা পার্থপ্রতিম... একজন কাউকে ... এভাবে কদ্দিন.... ওরা যখন রাজি আছে .... '
    কাবেরী চুপ করে রইল।
    সুমনা মরীয়া হয়ে উঠল। বলল, ' কিরে ... কিছু বলছিস না যে ... '
    ----- ' হুঁ, ভাবছি ... আসলে ওদের কারো সঙ্গেই স্থায়ী সম্পর্ক করার কথা ভাবতে পারছি না ... '
    ----- ' কারো ব্যাপারে সফট কর্নার তো নিশ্চয়ই আছে ... নইলে, আমার মন কেমন করে ... শুনে ওরকম রিয়্যাকশান হবে কেন? '
    ----- ' হমম্ .... কি যে করি বুঝতে পারছি না ... '
    ----- ' আরে অত বোঝাবুঝির কিছু নেই ... যদি চাস তো আমি তোর সঙ্গে থাকতে পারি ... ডিসিশান নিয়ে ফেল ... ' সুমনা অতিরিক্ত উদ্যোগী হয়ে ওঠে।
    কাবেরী সুমনার দিকে তাকিয়ে থাকে একটু অবাক হয়ে। সে কোনদিন সুমনাকে এসব ব্যাপারে এরকম সক্রিয় হতে দেখেনি।
    সুমনা দ্রুত সামলে নেয় নিজেকে। বলে, ' না, মানে ... তোর পড়াশুনোর ক্ষতি হচ্ছে তাই ... '
    ----- ' হ্যাঁ, কথাটা ঠিকই বলেছিস ... ভুল কিছু না ... আচ্ছা দাঁড়া আমি কাল জানাব তোকে। তবে, তোকে কিছু করতে হবে না। আমি নিজেই করে নেব। তুই শুধু কোর্সের ব্যাপারটা একটু হেল্প করে দে .... ভীষণ পেছিয়ে পড়েছি ... '
    ----- ' হ্যাঁ নিশ্চয়ই। আমি কোর্সের ব্যাপারে সব কিছু করব তোর জন্য ... তুই শুধু ... '
    ----- ' শুধু ... কি? '
    ----- ' না, কিছু না ... এমনি বলছিলাম ... মানে, ওই... শুধু তোর জন্যই আছি আমি ... বুঝলি তো ... ' সুমনা আবার সামলে নিল।
    ---- ' তাই তো। এমন না হলে বন্ধু ... ' কাবেরী জড়িয়ে ধরে সুমনাকে।
    সুমনা ভাবল, প্রতিবিম্বকে বলতে হবে তার বাবা তার সঙ্গে কথা বলতে চান। কালকেই বলতে হবে প্রতিবিম্বকে। কিন্তু কিভাবে কথাটা বলা যায় সে ব্যাপারে মনে মনে নানা কথা সাজাতে লাগল সে।
    এ পৃথিবীতে কত রকম মানুষ যে কত প্রকারের সমস্যা নিয়ে ঘুরছে তার ঠিক নেই। প্রত্যেকেই তার নিজের সমস্যাকে সবচেয়ে সঙ্কটপূর্ণ মনে করে।

    সকাল পৌনে দশটা বাজল। পল্লব বলল, 'মা, ওই ভদ্রলোক আসবে বলেছিল আজকে .... মিনুকে স্কুলে নিয়ে যাবে বলল ... '
    ----- ' কি জানি বাবা কি করবে ... কেমন লোক কে জানে ... '
    ------ ' থানার বড়বাবু তো বললেন ভাল বোঝাতে পারে। বোঝাতে পারে মানে কি? '
    ----- ' কি জানি ... দশটা তো বাজতে চলল ... চিনি তো খেয়েদেয়ে রেডি হয়ে বসে আছে ... চিনি না জানি না ... একটা লোকের সঙ্গে ছাড়াও ঠিক হবে কি? যদি উল্টো বিপত্তি হয় ... '
    ----- ' না না ... চিনির সঙ্গে আমি যাব। আজ তো আমার ছুটি। '
    ----- ' দশটার মধ্যে আসবে বলেছিল। দশটা তো
    বাজতে চলল ... কিরকম লোক কে জানে। ওঃ ... চিন্তার আর শেষ নেই ... কি যে করি ... এ আর এক বিপদ হল ... ওঃ ... '
    চিনি মানে মিতালি বসে বসে ছটফট করছিল মনে মনে আবার নতুন কোন বিপদের শঙ্কায়।
    দশটা বাজতে পাঁচ মিনিট বাকি। ছাব্বিশের বি বাই এক-এর একতলার ঘরে কড়া নাড়ার আওয়াজ হল।
    গায়ত্রী বলল, ' দেখ তো কে এল ... ওই এল নাকি? '
    পল্লব উঠে গিয়ে দরজা খুলল।

    সাগর হাসিমুখে একগাল হেসে বলল, ' আমি এসে গেছি দিদিভাই ... ঠিক টাইমে এসেছি তো ... '
    গায়ত্রী বললেন, ' হ্যাঁ ... ঠিক টাইমেই এলেন ...'
    ----- ' তা'লে আর দেরি করে লাভ নেই। সাড়ে দশটা থেকে স্কুল তো? ' মেয়ের নাম কি? '
    ----- ' মিতালি ... ডাকনাম চিনি। ও খুব ভয় পাচ্ছে ... মানে একটু দেখবেন ... '
    ----- ' আপনি আমার ওপর ভরসা রাখুন দিদিভাই... আপনাকে কথা দিচ্ছি ... আর যাতে কোনদিন ও ভয় না পায় আমি সে ব্যবস্থা করব ... কি চিনি ... রেডি তো? চল বেরিয়ে পড়ি ... তোমার এ মামা সঙ্গে থাকতে তোমার কোন ভয় নেই .... চল ... তোমাকে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে আসি ... '
    সাগরের হাবভাব দেখে এবং কথাবার্তা শুনে চিনির মনে একটা ভরসা বাসা বাঁধল।
    গায়ত্রী বললেন, ' যদি কিছু মনে না করেন ভাই.... আমার ছেলে যদি আপনার সঙ্গে যায় অসুবিধে হবে? '
    ----- ' আমাকে আপনি বলবেন না দিদিভাই ...
    তুমি বললেই ভাল হবে। ও হ্যাঁ ... ছেলে তো সঙ্গে যাবেই .... আসলে ওই তো নিয়ে যাবে বোনকে।
    আমি পেছন পেছন যাব আর কি ... তোমার নাম কি মামু? '
    ----- ' পল্লব ... পল্লব সেনগুপ্ত... '
    গায়ত্রী বললেন, ' ডাকনাম সান্টু... '
    ----- ' আচ্ছা সান্টু ...শোন, তোদের সঙ্গে যদি রাস্তায় কেউ কথা বলতে চায় ওখানে দাঁড়িয়ে যাবি। কিছু কথা বলবি না ... তোরা শুধু দাঁড়িয়ে থাকবি। ব্যাস... তোদের আর কিছু করতে হবে না। হ্যাঁ ... যেটা জিজ্ঞাসা করা হয়নি ... তোর কোন স্কুল যেন ... '
    ------ ' নারী শিক্ষা মন্দির ' চিনি উত্তর দেয়।
    ----- ' ও আচ্ছা ... পাড়ার মধ্যেই ... ছুটির ক'টায়?'
    ----- ' সাড়ে চারটায়... '
    ----- ' ঠিক আছে ... তখন আমি থাকব না। তোর অন্য দুজন মামা তোকে বাড়ি নিয়ে আসবে। আমি দেখিয়ে দেব। তারা স্কুলের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকবে। অবশ্য তার দরকার হবে না ... তবু প্রথম দিন ... '
    নে চল এবার, দশটা বেজে গেছে ... '
    ওরা তিনজন বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ল।
    সার্কুলার রোডের মোড়ে শম্ভু, মাণিক, কানু আর বাবলা ছড়িয়ে ছিটিয়ে দাঁড়িয়েছিল।
    চিনি আর সান্টু বুকে একরাশ ভয় নিয়ে, জড়ানো পায়ে কর্ণওয়ালিস স্ট্রিটের দিকে হাঁটতে লাগল। তার পনের কুড়ি গজ পিছনে অনুসরণ করতে লাগল সাগরের চার সাগরেদ। ওদের পিছনে হেলেদুলে নির্বিকারভাবে হাঁটছে সাগর।

    চিনি আর সান্টু একটু এগোবার পর দেখতে পেল গ্রে স্ট্রিটের দিক থেকে যে গলিটা নলিন সরকারের দিকে এসেছে,তার মোড়ে ছেলে তিনটে দাঁড়িয়ে আছে। তেইশ চব্বিশ বছর বয়স, বেশ দুধুভাতু চেহারা দুজনের, আর একজন রোগা লম্বা কালোমতো। তিনজনই এই সকালবেলাতেই বেশ ফিটফাট হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। লম্বা কালো ছেলেটা পকেট থেকে চিরুনি বার করে চুল আঁচড়ে নিল।
    ওরা চিনিকে দেখতে পেয়েছে দূর থেকে।
    চিনি আর পল্লবের পা কাঁপতে লাগল। কিন্তু ওরা থামল না। সাগরের কথামতো এগোতে লাগল।
    গলির মোড়ে পৌঁছতে দুধুভাতু চেহারার একজন এগিয়ে এসে ওদের সামনে দাঁড়িয়ে গেল। চিনি আর সান্টুও দাঁড়িয়ে পড়ল। বুকের ভিতর ধকধক করছে। বাকি দুটো ছেলেও চিনিদের দুপাশে দাঁড়িয়ে গেছে।
    যে চিনির সামনে এসে দাঁড়িয়েছে সে বলল, ' এতদিন রাগ করে বাড়ি বসে থাকতে পারলে ... একটুও মন খারাপ করল না আমার জন্য। কালো লম্বা ছেলেটা বলল, ' যাক ... যা হবার হয়ে গেছে ... এখন তো ভাব হয়ে গেল ... তা'লে কবে আসছ বল ... আর দেরি সহ্য হচ্ছে না ...'
    তৃতীয় ছেলেটা ফিক করে হেসে পল্লবের দিকে তাকিয়ে বলল, ' শালাবাবু, তোমার আসার দরকার নেই ... তুমি কেন মাঝখানে আসছ বলতো সবসময়ে ... কিছু বোঝ না নাকি? কেন এত কষ্ট করছ আতার মতো ... '
    এইসময়ে ছেলেটার কাঁধে কে যেন হাত রাখল পিছন থেকে।
    সে বলল, 'কোথায় যেতে হবে জামাইবাবু? ও না যাক, আমি তো যেতে পারি ... '
    ছেলেটা পিছন ফিরে দেখল ডান হাত দিয়ে আলতোভাবে তার কাঁধ জড়িয়ে ধরে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছে হাতকাটা সোয়েটার পরা একজন সাতাশ আঠাশ বছরের গাট্টাগোট্টা লোক।
    সে অবাক হয়ে খানিকক্ষণ তাকিয়ে রইল কানুর দিকে। বাকি ছেলে দুটো তেড়ে গিয়ে কানুকে ধরবার চেষ্টা করল। এবার মাণিক আর বাবলা ছেলে দুটোর ঘাড়ে থাবা মেরে কলার চেপে ধরল।
    কানু ঝট করে প্রথম ছেলেটার গলা চেপে ধরল। বলল, ' কোথায় থাকিস? '
    ছেলেটার গলা চেপে ধরে থাকায় সে কথা বলতে পারছিল না। কানু তার প্যান্টের পকেটে হাত দিয়ে বলল, ' এখানে কি আছে জানিস? প্যান্টের ভিতর থেকে চালিয়ে দেব। কেউ বুঝতেও পারবে না। তোর বাবা মায়ের কোল খালি হয়ে যাবে। ছেলেটার গলা ছেড়ে দিয়ে কানু আবার বলল, ' বল কোথায় থাকিস? '
    পুরো গল্পটা এতক্ষণে বুঝতে পেরে গেছে ছেলেটা।
    সে মিনমিনে গলায় বলল, ' হরি ঘোষ স্ট্রিটে। '
    কানু অবাক হওয়ার ভান করে বলল, ' সে কি ! হরি ঘোষ স্ট্রিটে এত বড় হিরো আছে জানতেই পারিনি ... কপাল ... '
    বাকি দুজনকে বাবলা আর মাণিক হাত পিছমোড়া করে ধরে রেখেছে। সামনে দাঁড়িয়ে আছে শম্ভু।
    কালো লম্বা ছেলেটা বলল, ' বিরাট ভুল করছ কিন্তু ... কার গায়ে হাত দিচ্ছ জান না ... খুব পস্তাতে হবে কিন্তু ... '
    শম্ভু ওই ছেলেটার গালে ঠাস করে এক চড় মারল।
    ----- ' যা খবর দে ... কে আছে তোর ডেকে আন ... '
    বলে ওর গালে আরও একটা চড় কষাল শম্ভু।
    চিনি আর সান্টু একপাশে কাঠ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ওখানে লোক চলাচল বন্ধ হয়ে গেল। কাছাকাছি দোকানগুলোয় ঝাঁপ পড়ে গেল।

    এই সময়ে প্রাতভ্রমণের ভঙ্গীতে হেঁটে সাগর মন্ডল ঘটনার অকুস্থলে এসে হাজির হল। এসে বলল, ' একি ! এখানে এসব কি হচ্ছে ... অ্যাই শম্ভু ওদের মারছিস কেন? চিনি, সান্টু এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? স্কুলে যাবি না? চল চল ... স্কুলের দেরি হয়ে যাচ্ছে ... এসব মারামারির মধ্যে থাকিস না ... চল চল ....'
    রোমিও তিনজনই সাগরকে চিনতে পারল। আগে বেশ কয়েকবার দেখেছে তাকে এ এলাকায়। তাকে দেখে পুরো চিত্রনাট্য মুহুর্তের মধ্যে আন্দাজ করতে পারল। তারা ভয়ে দিশেহারা হয়ে গেল। সেই প্রথম দুধেভাতে ছেলেটা চেঁচিয়ে বলল, ' আমাদের ছেড়ে দাও সাগরদা ... আর কোনদিন করব না ... ভুল করে ফেলেছি ... আর করব না ... '
    কথাগুলো যেন সাগরের কানেই ঢুকল না। সে চিনি আর সান্টুকে নিয়ে স্কুলের দিকে এগোতে লাগল।
    বাবলা চেঁচিয়ে জিজ্ঞাসা করল, ' দাদা ... এগুলোকে নিয়ে কি করব তা'লে? '
    সাগর পিছন দিকে মুখ ঘুরিয়ে জবাব দিল, ' থানায় নিয়ে যা ... কালীবাবু সব জানে ... আমার নাম বলিস... জি ডি করাই আছে ... আর হ্যাঁ ছুটির পর চিনিকে বাড়ি নিয়ে যাবি বাবলা আর কানু ... '

    রোমিও তিনজন চেঁচাতে লাগল, ' ছেড়ে দাও সাগরদা ... আর কোনদিন করব না ... বাড়িতে জানতে পারলে ঢুকতে দেবে না বাড়িতে .... '
    গায়ত্রীদেবী প্রবল উৎকন্ঠা নিয়ে বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়েছিলেন। দূর থেকে দেখতে পেলেন নিশ্চিন্ত পদক্ষেপে ফিরে আসছে তার ছেলে সান্টু।

    ( চলবে )
    ********************************************
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে প্রতিক্রিয়া দিন