স্বাধীন দেশে রাজা এবং প্রজার ধারণা এক মানসিক দাসত্ববৃত্তি থেকে আসে। তাই সাধারণতন্ত্র না বলে প্রজাতন্ত্র দিবস বলেন কেউ কেউ। । আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খুব ঘটা করে পালন হতো ২৬ জানুয়ারি ও ১৫ আগস্ট। প্রধানশিক্ষক ছিলেন আমার বড়োমামা। কংগ্রেসের বড়ো নেতা। বোঁদে দেওয়া হতো। পতাকা তোলার পর গোটা গ্রাম মিছিল করে ঘোরা শেষে। মাঝপথে কেউ যাতে না পালায়, তাই শেষে মিষ্টি। আমরা সিপিএম বাড়ির ছেলে। পিছনের দিকে থাকতাম। বন্দে বলে আওয়াজ উঠলেই আলতো করে বলে উঠতো কেউ কেউ, বোঁদে ছাগলের পোঁদে। তবে বোঁদে খাওয়ার সময় এ-সব কারও মনে থাকতো না। আমার মনে পড়ে না জুনিয়র হাইস্কুলে এ-সব পতাকা উত্তোলনের রেওয়াজ ছিল কি না! তবে সেহারা স্কুলে পড়ার সময় বেশ ভিড় হতো। ছাদে। বক্তৃতাও হতো। মিল মালিকের ছেলে কংগ্রেসের অবদান বললে, তেড়ে আধঘন্টা বক্তৃতা করে ধুইয়ে দিয়ে বলেছিলাম, ইয়ে আজাদি আধা হ্যায়। টাটা বিড়লা গোয়েঙ্কারা দেশ লুঠছে। তখন তো আদানি আম্বানিদের দেখি নি। তাহলে কী বলতাম জানি না। তখন বলেছিলাম, মাথাপিছু ৬০০ টাকা ঋণ।
সে-কবিতা কেন লিখে যাচ্ছি আজও এতদিন ধরে তাই ভাবি অনর্থক কেন আহ্বান করছি ধারাপাত শব্দ এযাবৎ অথচ অবাক আমি বুঝিইনি আকাশের দাবি সে-বিকেলে রাস্তার আলস্যে ছাউনির নিচে অপেক্ষা করেছে সাইকেল
এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজ কেন সফট টার্গেট হিসেবে বারবার এনকাউণ্টারের পর স্কোয়াডে থাকা মহিলাদের চরিত্র মূল্যায়নে এত সময় ব্যয় করেছে, তা নিয়ে কিন্তু মাথাব্যথা ছিল না মাওয়িস্ট শীর্ষ নেতৃত্বের। তাঁদের কাছে শশধর এবং কিষেণজি, দুই মৃত্যুই ছিল সমান গুরুত্বপূর্ণ। কেন এনকাউণ্টার হল, কীভাবে হল, কে খবর দিল পুলিশকে, সবই পরে তদন্ত করে দেখে মাওয়িস্ট নেতৃত্ব এবং তাদের অভ্যন্তরীণ তদন্তে দু’বারই ক্লিনচিট পেয়েছেন সুচিত্রা মাহাতো।
গায়ক ছেলেটা ইতিমধ্যে একটা ইংরেজি গান ধরেছে, আর অনেকেই হাততালি দিয়ে তাল দিচ্ছে। বিনীতা বুঝল নিশ্চয় জনপ্রিয় গান, তবে তার জানা নেই। “বিলিভার” আর “পেইন” এই দুটো শব্দ ঘুরে ঘুরে আসছিল গানটায়। ইংরেজি গানে অবশ্য তার আগ্রহ নেই। যাতে আগ্রহ আছে সেই রবীন্দ্র সঙ্গীত নিশ্চয় এই ছেলেটা গাইবে না।
হঠাৎই সভাকক্ষে হাসির মৃদু ঢেউ বয়ে গেল! কিন্তু সেই হাসি থামতে না থামতেই এক কম বয়সী লোক, বোধ করি, সভার তরুণতম আলোচক, উঠে দাঁড়ালেন। মুহূর্তেই সব চোখ তার দিকে ঘুরে গেল। লোকটির চোখে-মুখে খেলে যাচ্ছিল অলৌকিক এক আভা, বিজ্ঞানীরা একে ভাল করেই চেনেন; তাদের ভাষায় এ হচ্ছে ইউরেকা লাইট। আস্তে আস্তে বোমাটা বের করতে শুরু করলেন সেই তরুণ তার শ্মশুমন্ডিত মুখের গোপন দুয়ার থেকে, "একটা চিন্তা এসেছে আমার মাথায়! জানি না আপনাদের কাছে কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে, তবে আমার মনে হচ্ছে, কাজে দেবে। ওদেরকে আবার এক জায়গায় দাঁড় করিয়ে দিতে হবে আমাদের। আবার আগের মত স্থবির, আনত করে দিতে হবে। “
এই সহিংসতার শুরু অবশ্য পুলিশ-ছাত্রলীগ সখ্যতায়। রঘু ডাকাতের দল হেলমেট লীগ ঢাকা, জাহাঙ্গীর নগর, রাজশাহীসহ আরো সব বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী-পুরুষ শিক্ষার্থীদের নিষ্ঠুর লাঠিপেটায়, প্রকাশ্যে গুলিতে ও ইটপাথরের আঘাতে দমন করতে চায় আন্দোলন স্রোত। যা ক্রমেই সরকারি চাকরির কোটা সংস্কার থেকে সরকার বিরোধী রাজনৈতিক রূপ নিতে থাকে। শ্লোগান উঠে, তুই রাজাকার, তুই রাজাকার! স্বৈরাচার! স্বৈরাচার! .
নেট পুরোপুরি বন্ধ আর কারফিউ চালুর পরে দৈনিক রাতে যা জানতাম আর যা বুঝতাম তা লেখার চেষ্টা করে গেছি। সব সময় মাথা ঠিক ভাবে কাজ করেছে এমনও না। পুরোটা আবার বসে বসে পড়লে হয়ত অনেক কিছুই বাদ দিতাম আমি। কিন্তু নেট পেয়েছি, আবার কখন নেটের বাহিরে চলে যাই ঠিক নাই। তাই পুরো লেখাটাই একবারে দিয়ে দিলাম। ইচ্ছা ছিল ভাগ ভাগ করে দেওয়ার। সরকার ফেসবুককে ভয় পাচ্ছে। এইটাই হচ্ছে সত্য। নেট দিতে আমার মনে হয় না আর অন্য কোন সমস্যা আছে। ফেসবুকে মানুষ এতদিন যা হয়েছে তার ভিডিও চিত্র, স্থির চিত্র দেখবে, দেখে আবার যদি রাগের বিস্ফোরণ ঘটে? সরকার তা চাচ্ছে না। সহজ একটা বিষয়কে কতখানি জটিল করা যায় তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ হয়ে থাকবে এই আন্দোলনটা। নতুন প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয়তা এখন প্রায় শূন্যের কাছে। অথচ জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারত এখান থেকে। আজকের প্রথম আলোর রিপোর্ট অনুযায়ী মৃত্যুর সংখ্যা ১৯৭! আমার এই লেখায় এক জায়গায় লেখছি ধার্মিকেরা বলে ঈশ্বর যা করেন মঙ্গলের জন্যই করেন, সেই মহান মঙ্গলের অপেক্ষায় বসে থাকা ছাড়া আর কিছুই করার নাই। এখনই ওইটাই বলছি! অদ্ভুত কালো অধ্যায় পার করল বাংলদেশ।
ভাস্কর লিখেছিলেন ‘শেষ নেই এমন এক পাহাড়ে অনবরত চড়তে থাকার সঙ্গে কবিতা লেখার তুলনা করা যায় কিছুটা’... সেই বোবাপাহাড়ের ঠিক তলায় দাঁড়িয়ে আমি, সিসিফাসের উত্তরাধিকার বহন করে চলেছি যেন, তবু বিশ্বাস করি এরপরের স্টপেই আলো-ভরা উপত্যকা আসছে একটা, আর অনেক চিঠি হাতে সেখানে আমার জন্য নিশ্চয়ই একটা আস্ত ডাকবাক্স বানিয়ে রেখেছেন একজন রুপোলি চুলের নিঃসঙ্গ মানুষ।
কয়েক দিন ধরে মনে হচ্ছে যে বাড়ি গুলোতে জীবনের দিন সব কাটিয়ে এলাম শেষ বেলায় তাদের কথা একটু লিখে যাই। যাই বলছি বটে যাওয়ার নাম গন্ধ নেই। জাঁকিয়ে বসেছি মাটি মায়ের কোল আঁকড়ে। লিখতে অসুবিধা হয়। আস্তে আস্তে লিখবো খণ্ড খণ্ড। সেভ করতে গিয়ে লেখা হারিয়ে ফেলি। অনেকের জীবন এক বাড়িতে কেটে যায়। আমাদের তা হয়নি। ছোটবেলা থেকে কতো বাড়িতে থাকলাম। যেটুকু মনে আছে লিখতে থাকি। সুখে জড়ানো না হোক স্বস্তি শান্তি তো ছিল। মা বাবা ভাইবোন, দুএকজন সহায়ক, গৃহপালিত নিয়ে মধবিত্ত পরিবার। হাসি খুশি মোটামুটি খেয়ে মেখে মন্দ কাটেনি বলতে পারি। যাঁরা পড়বেন জেনে বুঝেই অপ্রয়োজনের আনন্দে পড়বেন।
গত ১২ই জুলাই, শুক্রবার, অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে পনেরোতম আন্তর্জাতিক গণিত-শিক্ষণ কংগ্রেস-এর সম্মেলন থেকে অধ্যাপক জয়শ্রী সুব্রহ্মনিয়নকে নিরাপত্তা-আধিকারিকরা প্রহরা দিয়ে বের করে দেন। তাঁর ব্যাজ বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং রেজিস্ট্রেশন প্রত্যাহার করা হয়। কারণ হিসেবে তাঁকে বলা হয়, যে, সেদিন সকাল ন-টায় অধ্যাপক আশিস অরোরা-র বৈদিক গণিতের অধিবেশনে তাঁর করা কিছু মন্তব্যকে কিছু অন্য অংশগ্রহণকারীর শাসানিমূলক ও ভীতিপ্রদ মনে হয়েছে। কতটা আতঙ্কের উদ্রেককারিণী এই ভারতীয় গণিত-অধ্যাপক? কতটা ভয়ঙ্কর তাঁর উপস্থিতি, যার ফলে তাঁকে শিক্ষকদের সম্মেলন থেকে বের করে দিতে হয়? ‘বৈদিক গণিত’ ঠিক কীরকম বিপন্ন হয়েছিল তাঁর উপস্থিতিতে? এসব কথা জানতে, সেই অধিবেশনেরই আরেক শ্রোতা এবং ওই সম্মেলনের আরেক নিমন্ত্রিত বক্তা, ওহায়ো স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক থিওডর চাও-এর বয়ান পড়ে ফেলুন।
দেওয়ানি লাভ করার মাত্র ৭ বছরের মধ্যেই ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার নারীদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতাকে একেবারে প্রান্তিক করা ও সমাজকে ক্রমশ পিতৃতান্ত্রিক করে তোলার জন্য বিভাজনমূলক আইন চালু করার উদ্যোগ নেয়। প্রথমে হেস্টিংস ও পরে কর্নওয়ালিসের উদ্যোগে তৈরি হয় ঔপনিবেশিক হিন্দু আইন, যার নিদর্শন প্রাক্-পলাশি বাংলায় ছিল না। ১৯৫৫ সালে হিন্দু কোড বিল পাস না হওয়া পর্যন্ত এই ঔপনিবেশিক আইনটি এ দেশে পুরোদমে বিদ্যমান ছিল। কোন প্রেক্ষাপটে ও কী উদ্দেশ্যে ঔপনিবেশিক শাসকরা এই আইন তৈরি করে, তার সুলুকসন্ধান করাই এই ধারাবাহিক প্রবন্ধের মূল প্রতিপাদ্য।
... যে কথা বলছিলাম, রাজধানীর ঘটনাটা যেদিন ঘটেছিল, শুনেছি সেই রাত্রেই ভল্লা রাজধানী থেকে রওনা হয়েছিল। রাজধানী ছাড়ার পর চতুর্থ দিন ভোরে সে আমাদের গ্রামে এসে পৌঁছেছিল পায়ে হেঁটে। বিপর্যস্ত অবস্থায়। রাজধানী থেকে আমাদের গ্রামের যা দুরত্ব, সেটা তিনদিন, তিন রাত পায়ে হেঁটে আসা অসম্ভব। বিশেষ করে ওরকম অসুস্থ অবস্থায়। তার মানে দাঁড়াচ্ছে ও বেশিরভাগ পথটাই এসেছিল হয় ঘোড়ায় চড়ে অথবা রণপায়..
আহা, ফিরে আসি হাৎরাসে। এ যোগীনদাদা সে যোগীনদাদা নয়। শোনা যাচ্ছে যোগীরাজ্যের যোগীনদাদা এখনও হাৎরাসে গিয়ে উঠতে পারেননি। এমনকি, একটা এফ-আই-আরও হয়নি সাকারবাবার নামে। ভালোই। রেগেমেগে শেষ পর্যন্ত পৌঁছতেনও যদি দাদা (যোগীন অর্থাৎ যোগীরা বাবাও আবার দাদাও), তাহলে আবার অনত্থ হয়ে যেতে পারত, তাই না? যোগীনদাদা শুনেছি আজকাল বুলডোজার ছাড়া আর কিছু চড়েনই না!
বাবা বারান্দায় বসে একধাপ নিচের সিঁড়িটায় একটা যুৎসই উচ্চতার কাঠের টুকরো রেখে তার উপর বাঁশের টুকরোটা দাঁড় করিয়ে দা দিয়ে সেটাকে লম্বালম্বি কয়েকটা টুকরোয় চিরে ফেলল। তারপর তাদের একটার গা থেকে দা দিয়ে কয়েকটা ছিলকা বার করে নিয়ে ছুরি দিয়ে সেগুলোকে চেঁছে চেঁছে কয়েকটা মসৃণ এবং নমনীয় কাঠি বানিয়ে নিল। এরপর রঙিন কাগজের বান্ডিল থেকে একটা কাগজকে টেনে নিয়ে সেটাকে ভাঁজ করে, ভাঁজ বরাবর ছুরি টেনে তার থেকে একটা বর্গাকার টুকরো বার করে আনল। এরপর ঐ কাঠিগুলোর একটাকে সেই কাগজের টুকরোটার উপর রেখে কাঠির গোড়া যদি এক নম্বর কোণায় রাখা হয়েছে ধরি, তবে অন্য প্রান্তকে তিন নম্বর কোণার দিক করে বসিয়ে কোণা ছাড়িয়ে দুই কি তিন ইঞ্চি দূরে ছুরি দিয়ে কাঠির গায়ে দাগ কেটে তারপর দাগ বরাবর দু’ টুকরো করে, দাগের প্রান্ত আর গোড়ার প্রান্তকে একটা সুতো দিয়ে আলগা করে বেঁধে একটা ধনুক বানিয়ে ফেলল। সুতোটা তখনো ঢিলা রেখে ধনুকটাকে এবার চৌকো কাগজের উপর বসিয়ে ঠিকমত আকারে এনে সুতোর সেই ছিলা টাইট করে বেঁধে ফেলা হল। ধনুকের দুই মাথা কাগজের এক আর তিন নম্বর কোণা ছুঁয়ে আছে। আমরা ভিতরে ভিতরে উত্তেজনায় ছটফট করলেও শান্তভাবে বসে দেখে যাচ্ছি।
আলাপ জমে গেলো ফ্রান্তিসেকের সঙ্গে। টি টুয়েন্টি নামক দানবের দুরাচার শুরু হবার আগে টেস্ট ক্রিকেটের মাঠে গল্প বেশি জমতো - অনেকক্ষণ যাবত মাঠে কিছুই ঘটে না, স্যাকরার ঠুক ঠাক চলে ব্যাটে বলে। ফুটবলের মাঠে সেটা সম্ভব নয়। তবু খেলার আগে, মাঝে, হাফ টাইমে কিছু কথা। আমরা তাঁকে একাধিক বিয়ারে আপ্যায়িত করেছি, কিছুতেই দাম দিতে দেব না! ভারত ও পূর্ব ইউরোপের ভাইচারা যুগ যুগ স্থায়ী হোক। দুজন ভারতীয়ের সঙ্গে এই ফ্রাঙ্কফুর্টের মাঠে দেখা হবে তিনি ভাবতে পারেন নি! আমার ট্রিভিয়া লাইব্রেরির শ্রীবৃদ্ধির জন্য যত না প্রশ্ন, ভারত সম্বন্ধে তাঁর জ্ঞানস্পৃহা অনেক বেশি। ততক্ষণে তাঁর টিম আইনত্রাখত ফ্রাঙ্কফুর্টের হাতে বেশ ঝাড় খাচ্ছে, ৩-০ গোলে পিছিয়ে এবং তাঁর মনোযোগ বিভ্রান্ত। তাই প্রস্তাব দিলাম- তিনি যদি চান আমরা একত্র হেঁটে শহরে ফিরতে পারি, এক ঘণ্টার পথ। ট্রামে বেজায় ভিড় হবে। ফ্রান্তিসেক বললেন যদি আমরা তাঁকে ট্রেন স্টেশনের কাছাকাছি অবধি সঙ্গ দিতে পারি তাঁর খুব উপকার হয়, রাতের ট্রেন ধরবেন। সেটাই আমাদের লজিস্টিক, ফ্রাঙ্কফুর্ট হাউপটবানহফের সামনে আমরা বারো নম্বর ট্রাম ধরে বাড়ি ফিরব।
বড়ো শখ করে এক দহলিজ/ কাছারি/ খানকা/ বৈঠকখানা বানিয়েছিলেন হেকিম সাহেব। সেটা আমিও দেখতে পেয়েছি। খড়ের বদল পাট দিয়ে পাঠ। দেওয়াল শোনা কথা, ডিমের লালা দিয়ে পালিশ করা। বেতের চাল। তারপরে খড়। আর দামি কাঠের হরেক কাছ। প্রতিটা খুঁটি বরগায় কাজ। লোকে দেখতো আসতো, এই শখের কাজ। দরজাও সেকালের মতো কারুকার্যময়। ঝাড়বাতি ঝুলতো। পাঙ্খাটানার ব্যবস্থাও ছিল। দহলিজের দখিন দিকে নিমগাছ। নিমের হাওয়া খাবেন, তাই।
'দেখুন আমাদের সমালোচনা ছিল মূলত দু'তিনটে জায়গায়। কোটেশ্বরের সাংগঠনিক ক্ষমতা, পার্টির প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে কোনও কথা নেই। ওর মতো সাহসী সংগঠক পাওয়া মুশকিল। কিন্তু লালগড় আন্দোলনে ও সংযম রাখতে পারল না, তাই পার্টির মূল কাজ থেকে অনেকটা সরে গেল। ওকে আমরা বলেছিলাম, ভুল করছ। এভাবে মানুষ খুন করা ঠিক হচ্ছে না। যথেচ্ছভাবে মানুষ খুন করে দলের সংগঠনে বৃদ্ধি হবে না। বরং আমাদের সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারণা খারাপ হয়ে যাবে। তাছাড়া সংগঠনের বিস্তার করতে হবে গোপনে। গোপন পার্টিকে টেলিভিশন চ্যানেলে ইন্টারভিউ দিয়ে, ফোনে ইন্টারভিউ দিয়ে প্রকাশ্যে এনে দিয়েছিল কোটেশ্বর। যা আমাদের পার্টির অনেক ক্ষতি করেছে।
“সত্যিই তো… টেগোর কেন?” বলল বিনীতা। “ইয়েস। এই একটা প্রশ্ন লোককে হন্ট করবে। একজন জিজ্ঞেস করবে আর একজনকে - হোয়াই টেগোর? সে আবার জিজ্ঞেস করবে তিন নম্বর লোককে - হোয়াই টেগোর? এই চেন চলতে থাকবে আর দোকানের নাম ছড়িয়ে পড়বে ইন ওয়ার্ড অফ মাউথ। নতুন দোকান, তাও সেক্টর ফোরে। পাবলিসিটি তো লাগবেই,” ছদ্ম গাম্ভীর্যের সাথে বলল রঞ্জিত। “আইডিয়া আচ্ছা হ্যায়,” মাথা ঝাঁকিয়ে বলল অরুণাভ। “ওই নামের জন্যই লোকে দোকানে আসবে। আর বৃষ্টি যদি হয় তবে ছাট আসবেই,” বলল রঞ্জিত। “মানে দোকানে লোকজন এলে বিক্রিও হবে। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ আর ফ্যাশন…?” পুরোন কথায় ফিরে এল দাস সাহেব।
বাংলাদেশের অবস্থা যে ভয়াবহ, সে আর নতুন করে বলার কিছু নেই। ছাত্ররা গুলি খাচ্ছেন। ট্যাঙ্কও নামছে শুনলাম। আমার তালিকায় থাকা ছেলেমেয়েরা দেখছি "আন্দোলনে যাচ্ছি" লিখে রাস্তায় নেমে পড়ছেন। ইন্টারনেট নাকি জায়গায় জায়গায় বন্ধ। মেদিনিপুরের ভারত-ছাড়ো আন্দোলনের ইতিহাস মাথায় আসছে। যুবকরা পকেটে নাম-ঠিকানা লেখা কাগজ নিয়ে মিছিলে নামতেন সেই সময়। কেউ ফিরতেন, কেউ ফিরতেননা। আবু সাইদ ফেরেননি। ঢাকা তিয়েন-আন-মেন-স্কোয়ার হবে কিনা জানিনা, তবে আবুর ছবি তিয়েন-আন-মেন-স্কোয়ারের সেই যুবকের মতোই আইকনিক হয়ে গেছে। কোনো সন্দেহ নেই, হাসিনা সরকার বৈধতা হারিয়েছে। ভোটের ফলাফল যাই হোক, বিদায়ঘন্টা বাজছে। এইসব কান্ড ঘটানোর পর কোনো সরকার দীর্ঘদিন টিকে থাকতে পারেনা। এরশাদ পারেননি। সাম্প্রতিক কালে এর চেয়ে ঢের কম জনজাগরণে পশ্চিমবঙ্গেও উল্টে গিয়েছিল রাজ্যপাট। হাসিনার যাওয়াও সময়ের অপেক্ষা।
২০২৪ লোকসভায় নরেন্দ্র মোদীর চারশো পারের খোয়াব যদি সত্যি সত্যি বাস্তবায়িত হত তাহলে ২০২৫ সালে আরএসএসের শতবর্ষে সংঘকে হিন্দু রাষ্ট্র উপহার দেওয়া কিংবা আইন হিসেবে মনু সংহিতাকে প্রতিষ্ঠিত করা অসম্ভব ছিল না খুব। কারণ নিজের তৃতীয় দফার সরকারে তিনি যে সংবিধান বদলাবেন এমন আভাস নরেন্দ্র মোদী নিজে এবং অমিত শাহ দিয়ে রেখেছিলেন।
কিরাঙ্গোজি তার শিঙা বাজাতে থাকল, আস্টলফো১-এর জাদু-শিঙ্গার মতন প্রায় বিস্ফোরণের সম্ভাবনা দেয় আর কি! স্থানীয়রা ও আরবরা আমাদের চারপাশে ভিড় করে এলো। আর সেই উজ্জ্বল পতাকা, যার নক্ষত্রগুলি মধ্য আফ্রিকার বিশাল হ্রদের জলের উপর দুলেছিল, যেটি উজিজিতে দুর্দশাগ্রস্ত, নির্যাতিত লিভিংস্টোনের কাছে ত্রাণের প্রতিশ্রুতি হিসেবে প্রতিভাত হয়েছিল, সে আবার সমুদ্রে ফিরে এলো - ছেঁড়া অবস্থায় তা সত্য, তবে কোন ভাবেই অসম্মানিত নয়- ছিন্ন-ভিন্ন, কিন্তু পূর্ণ-সম্মানে।
অশরীরীরা যখন বন্ধু হয়ে ওঠে - তারা অনেক মুশকিলই আসান করে দেয় - তেমন বন্ধু মানুষদের মধ্যে কোথায়?
দিলদারে স্বপ্নগুলি যায়নাতো ফাঁকি। ঘটে যাওয়া সত্যিগুলি ফিরে ফিরে বলে যায় --- জীবনের আছে আরো বাকি !
সরকারের এ আক্রমণাত্মক আচরণে এটি স্পষ্ট যে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ধীরে ধীরে শিক্ষার আন্দোলন থেকে সরকার বিরোধী আন্দোলনে পরিনত হওয়ায় শাসকগোষ্ঠী ভীত-সন্ত্রস্ত্র হয়ে পড়েছে। নানা রকম হামলা-মামলার মধ্যেই বছর দুয়েক ধরে চলমান কোটা আন্দোলনে এই প্রথম "স্বৈরাচার!" "স্বৈরাচার!" শ্লোগান উঠেছে।
ধরুন শাহবাগ আন্দোলন হয়নি, গণজাগরণ মঞ্চ বলে কিছু এই দেশে হয়নি। সাকা, মুজাহিদ, নিজামি, কামরুজ্জামান সবাই এখনও এই ভূখণ্ডেই বাস করছে। জামাত আগের মতোই একটা ধরার মতো শক্তি। এমন একটা পরিস্থিতিতে কালকের ঘটনা ঘটল! অট্টহাসি চিনেন? আহ্লাদে আটখানা কাকে বলে জানেন? সব দেখতে পারতেন! পাকিস্তানের আগেরদিন নাই, থাকলে গতকাল যা হয়েছে পাকিস্তানের রাস্তায় মিষ্টি বিলানো হত। প্রকাশ্যে বিবৃতি দিত যে আমাদের কোন ভাইকে যেন অন্যায় ভাবে অত্যাচার করা না হয়! তারা আমাদের ভাই, তারা আমাদের বোন! এগুলা এক সময় নিয়ম করে দেখছি আমরা। খান...র পুলায় নায়েবে আমির মনের ভিতরের সুখানুভূতি চাপা দিয়ে গম্ভীর স্বরে টিভি ক্যামেরার সামনে বলত, খুব অন্যায় হচ্ছে! বৈষম্য দূর করে সঠিক ইশতেহার দেওয়া হোক! আমাদের কপাল ভালো যে সেই দিন দেখতে হচ্ছে না। এখন একবার চিন্তা করেন যারা রাজাকারদের ফাঁসির দাবীতে আন্দোলন করল, এই দেশে রাজাকারদের শাস্তি নিশ্চিত করল তাদের কাছেই এই স্লোগান বুলেটের মতো বিঁধছে। আর যারা সংগ্রাম করছে, যারা রাজাকাদের অত্যাচারে স্বজন হারিয়েছে, সরাসরি অত্যাচারের শিকার হয়েছে, তাদের কাছে কেমন লাগতে পারে এই স্লোগান?
“ ওঃ নো! ডেমন মীনা আগেইন! ও যাতে এই ম্যাচে অন্তত খেলতে না পারে সে ব্যবস্থা আমাদের করতেই হবে…” ১৯৫৪ সালের টেরেন্স শোন ট্রফির দ্বিতীয় ম্যাচ খেলার আগে বিপক্ষের রোশনারা ক্লাবের মহিলা টিমের ক্রিকেটারদের তালিকায় থাকা ফাস্ট বোলারটির নাম দেখে মাথায় হাত দিয়ে বসলেন ব্রিটিশ হাই কমিশন ওমেন্স ক্রিকেট টিমের মেমসাহেব খেলোয়াড়রা! দ্রুত শুরু হল সেই পঞ্চদশী কিশোরীকে বাদ দেওয়ার জন্য নানা চেষ্টা-অপচেষ্টা!
চারপাশের দুনিয়া
কালের নিয়মে, হিংস্র মৃত্যুদানবের উন্মত্ত নেশাতে এক সময় অবসাদ এসে জমাট বাঁধে। অহর্নিশি তোলপাড়ের ক্লান্তিতে খরস্রোতা নদীর চোখ ক্ষণিকের তরে বুজে আসে। বিধ্বস্ত চরাচরে ঝুপ করে নেমে আসে শ্মশানের স্তব্ধতা। গোবর নিকানো আদুরী উঠোনময় শুধু চরে বেড়ায় স্মৃতির বিধ্বংসী খণ্ডচিত্র। সুন্দরবনের মানুষদের আছেটাই বা কি, যে হারাবে! কিঞ্চিত জমি-জিরেত, খান কয়েক গবাদি পশু, স্বপ্ন বোঝাই ডিঙি নৌকো, আর নদীর ওপারের ভয়াল বাদাবন।
শিক্ষকপ্রতিম লেখক কুণাল বসুর পরামর্শে আমিন মালুফের লেখা পড়তে শুরু করেছি। আমি অশিক্ষিত পাঠক। কেউ যেন আবার "এদ্দিনে পড়লেন" ভেবে মনে মনে উপহাস শানাবেন না দয়া করে। গরীবের ঘোড়ারোগের মত অশিক্ষিত পাঠক উচ্চাঙ্গের লেখা পড়ে ফেলে ভারী অস্বস্তি বোধ করে। অনুভূতি বোঝানোর ভাষা নেই। মতামত দেবার যোগ্যতা নেই। সব চলে গেলে পড়ে থাকে কিছু রাবিশ লেখার ইচ্ছা। যেমন তেমন নয়। অনুপ্রাণিত রাবিশ।
এদিকে এক ইংরেজ সাহেব আসছেন, তিনিও পরেরদিন এই ট্রেনে সিলেট যাবেন। কিন্তু প্রথমশ্রেণীতে উঠতে গিয়ে শুনলেন এখানে তিনি আছেন, অন্য কামরাগুলোতেও তাঁরই লোকজন, তখন সাহেব তাঁদের ঘুমের ব্যাঘাত করা ঠিক হবে না ভেবে স্টেশনের বিশ্রামাগারে বসেই রাত কাটিয়ে দেন। তিনি কোন সময় কুলাউড়ায় এসে পৌঁছবেন এইটা হিসাব করে সিলেট থেকে অগ্রগামী এক দল রাতেই এসে হাজির হয়েছিলেন কুলাউড়ায়, সিলেটের স্বনামধন্য সব ব্যক্তিবর্গ। সবাই রাত কাটালেন স্টেশনে। কুলাউড়ায় পরেরদিন লোকে লোকারণ্য! সবাই ফুল মালা নিয়ে হাজির। একনজর দেখতে চায় সবাই। এর মধ্যে সিলেট থেকে আগত ওয়েলস প্রেসবিটেরিয়ান চার্চের মিসেস ইথেল রবার্টস রেলের কামরায় এসে কথা বলে গেলেন। সিলেটে তাঁদের বাড়িতেই উনার থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। তাঁরা বাড়ি ঘর ছেড়েই ক্ষান্ত হন নাই, কুলাউড়ায় এসে দেখাও করে গেলেন! কুলাউড়ায় দেওয়া হল আরেক সংবর্ধনা। উপচে পড়া ভিড়ের মাঝে ট্রেন চলল সিলেট মুখি।
ছেনু দেখল, সত্যিই তো, পকাইকে তো এবার চড়তে দিতেই হয়, বেচারি এতক্ষণ ধরে অপেক্ষায় রয়েছে। তার ওপর ওরই ঘোড়া যখন। আজ সকালে পকাইদের বাড়ি এই ঘোড়াখানা আসতেই পকাই তাড়াতাড়ি ছেনুকে ডেকে এনেছে। সেই ঘোড়াখানা দেখেই তো ছেনু আনন্দে আত্মহারা। উফ্, ঘোড়া বটে একখানা। কি সুন্দর লালের ওপর সাদা,কালো, হলুদ দিয়ে রং করা, পিঠের উপর চওড়া করে বসার আসন পাতা, ঘাড়ের কাছে কেশরের পাশ দিয়ে আবার ধরার জন্য দুটো হাতল রয়েছে, খাড়া খাড়া কান, সাথে তেমনি টানা টানা চোখ - দেখেই চোখ জুড়িয়ে চায়। এ যা ঘোড়া, পক্ষীরাজ না হয়ে যায় না! সত্যিই, মহারাজ যেন এমন একটা ঘোড়ারই সন্ধানে ছিলেন এতদিন ধরে। তাই সে ঘোড়া দেখে আর লোভ সামলাতে পারেননি, পকাইয়ের জন্য আনা ঘোড়ায় নিজেই টপ করে বসে পড়েছেন। আর ঘোড়ায় চেপে টগবগ টগবগ করে সেই যে ছুটিয়েছেন, ডানা মেলে এদিক ওদিক ঘোরার মধ্যে আর সময়ের হুঁশ ছিল না। পকাই ধৈর্য হারিয়ে আবার ঘরে চলে গিয়েছিল, ফিরে এসেও যখন দেখল মহারাজের ঘোড়ায় চড়া শেষ হয়নি, তখন চিৎকার জুড়তেই ছেনুর টনক নড়ল।
জনা খুব দৃঢ় স্বরে বললে, “বিপদকে আমরা ভয় পাই না”। ভল্লা তাচ্ছিল্যের হাসি মুখে নিয়ে বলল, “খুব আনন্দ পেলাম শুনে। আসন্ন বিপদকে যদি কেউ বুঝতেই না পারে, সে বিপদকে ভয় পাবে কেন? একটি শিশু যখন জ্বলন্ত প্রদীপের শিখা ধরতে যায়, তাকে সাহসী বলব, না বীর বলব, আমি আবার ঠিক বুঝে উঠতে পারি না”।
তারুন্য পেরিয়ে এসে এখন আমি জানতে চাই কাকে বলে স্তন, / আর স্তনমন্ডল? / আমার কুকুরগুলো তোমার স্তনের দিকে তাকিয়ে থাকে / তাকিয়ে থাকে / বরফের ছাদের নিচে; মাকড়শা জাল বিছিয়েছে তোমার স্তনের ত্বকে।/ / আকর্ষণীয় না হোক, তবু আমার শরীর আছে । আমার শরীর থেকে/ তোমার শরীরে পৌছতে/ যে সেতু দরকার তা নির্মাণ করতে আমি মিন্ত্রী পাবো কোথায় ? / / টাকাপয়সা আর সামাজিক সম্পর্কের দাম আছে। কিন্তু আরও সময় নিতে/ আমি রাজি, / লিওনার্দোর মোনালিসা আর বতেরোর মোনালিসা যে আলাদা দুজন/ আলাদা সন্দেহজড়িত মেঘ আর উইনিং কন্ট্রাসেপশান, / এটা স্বীকার করে জানতে চাই/
একটা কথা আছে, শিশুরা ফুলের মতো সুন্দর। অবশ্যই। মিষ্টি হাসি, আধো আধো কথা। প্রিয়জনকে দেখলেই ছুটে আসা। কিন্তু ছোটদের মধ্যে নিষ্ঠুরতাও থাকে। সময় ও সমাজের প্রভাবে মানবিক হয়ে ওঠে। মানবিক নয়, বলা উচিত প্রাণবিক। পৃথিবীর সকল প্রাণীর মধ্যে নিষ্ঠুরতা কাদের মধ্যে বেশি?
এই কেল্লার ভেতর একখানা নতুন গির্জা , স্কুল , খেলার মাঠ এইসব আছে। শনিবার বলে সবই বন্ধ। সেখান থেকে আবার দেবকা সৈকতে এসে টানা পাঁচিলের ওপর বসে আরব সাগরের হাওয়া খাওয়া গেল। সাবুর পাঁপড় , ঝালমুড়ি , টকঝাল চানাচুর এইসব ফেরিওয়ালারা ঘোরাঘুরি করছে। এই সৈকত রোজ পরিষ্কার করা হয় বলে মনে হল , প্লাস্টিক বা অন্যন্য নোংরা নেই। একজায়গায় ধাপ ধাপ করা আছে সৈকতে নামার জন্য। সেখানে দুখানা চৌকো বারান্দাওলা ঘরের মধ্যে কিছু জলখাবারের কাউন্টার, এছাড়া কোনো স্থায়ী খাবারের দোকান নেই। একটু আগে যে নির্মীয়মাণ রাস্তা দিয়ে দেবকা সৈকতে এসেছি, সেখানেই ফেরত যেতে হল তন্দুরি পমফ্রেট ইত্যাদি খাবার জন্য। এই রাস্তার দুধারে যাবতীয় হোটেল , খাবার জায়গা , ট্যাটু পার্লার ইত্যাদি। রাস্তাতেও ট্যাটু করানোর জন্য কেউ কেউ বাক্স নিয়ে বসে আছে।
জীবনের হাল না ভেঙ্গে যে নাবিক সঠিক দিশায় উপনীত হয়ে নৌকো বা জাহাজ থেকে নেমে কোন বন্দর অতিক্রম করেন, সেই অভিযানকে ইতালিয়ানে বলা হয়েছিল – পেরিয়ে বন্দর বা ‘ পাসে পোরত’ যা থেকে পাসপোর্ট কথাটা এসেছে। ফরাসিরাও অবশ্য এ শব্দের পিতৃত্ব দাবি করে থাকেন বলে শোনা যায় । জার্মান সহ বহু ইউরোপীয় ভাষায় তার নাম শুধু ‘পাস’- অতিক্রম ।
ইসলাম প্রতিষ্ঠার ইতিহাস। লক্ষ্য, কর্মসূচি ও আজকের মৌলবাদী প্রবণতা এবং সাম্প্রদায়িকতা
আপনি ভাববেন, আমজনতার কি এইসব দেখে রাগ হয়? হিংসে হয়? ছিনিয়ে খেয়ে নিতে ইচ্ছে করে? নাঃ। হয় না। কিস্যু হয় না। যারা বলে হয় তারা আঁতেল না হয় হাপ্প্যান্ট। শুনুন, হিংসে হয় সমানে-সমানে, বা সামান্য একটু উপরের লোকের উপর, তাকে একটু টেনে নামালে তৃপ্তির ঢেঁকুর ওঠে। আম্বানি কি আদানি সেই সব সীমার বহু বহু উর্ধ্বে। এদের জন্য হিংসে তো দূরস্থান, মানুষের মনে যা থাকে তার নাম একপ্রকার ভালোবাসা-ই। অ্যাডাম স্মিথ একে বলেছিলেন, “পিকিউলিয়ার সিম্প্যাথি” – অদ্ভুত সমবেদনা। আম্বানি-আদানির উচ্চাশা ও লোভ – কী করে যেন পরিণত হয়ে যায় আবাল জনতার উচ্চাশায়। আমাদের দেশ বিশ্বের ধনীতম হওয়ার ধারেকাছেও নেই তো কি আছে, আরে বাবা ধনীতম ব্যক্তিটি তো আমার-ই দেশের। তাই আমরা গৌরবে বহুবচ্চন। আর আহা, এই এতো বড়ো বড়ো বিষ বিলিওয়নেয়ার বড়োলোক, ওরাই যদি এমন বৎসরব্যাপী মোচ্ছব না করে তো করবেটা কে? ও পাড়ার পিন্টুদা?
একদিন বিকেলে অফিসে বসে আছি। পরিচিত এক ব্যক্তি বান্দোয়ান থেকে ফোন করলেন। এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে কথা হল। বললেন, পরীক্ষার জন্য বড়ো মিটিং বন্ধ আছে, কিন্তু পরিস্থিতি খুব খারাপ। কেন? বললেন, পুরো আতঙ্কের পরিবেশ। বিধায়কই বাড়িতে থাকতে পারছেন না, আর আমাদের কী হবে? তাঁর কথা শুনে একটু অবাক হলাম। জিজ্ঞেস করলাম, মানে? তিনি বললেন, বান্দোয়ানের এমএলএ বাড়ি থেকে লুকিয়ে রাতে একটা লাইব্রেরিতে গিয়ে থাকেন মাওবাদীদের ভয়ে।
ধ্যান কেন বিজ্ঞানের আলোচনার বিষয় ও কেন ধ্যান কি নিয়ে স্নায়ুবিজ্ঞানের আলোচনার আগে এই কথাগুলো লেখার প্রয়োজন । এটি প্রথম পর্ব বলে ধরে নেয়া যেতে পারে ।
গুরুচণ্ডা৯-তে আপনার কমেন্ট বক্সে বা লেখার পাতায়, হরিদাস পাল হোক কি খেরোর খাতা, কেমন করে ছবি জুড়বেন। একসময় এই কাজটি সরাসরি করা যেত। ভবিষ্যতেও আবার তাই করা যাবে আশা করা যায়। কিন্তু বর্তমানে আমাদের একটু ঘোরানো পথে কাজটি সারতে হচ্ছে। কেমন করে? জেনে নিন এখানে আর তারপর ঝপাঝপ ছবি আটকে দিন গুরুচণ্ডা৯-র পাতায়।
যথাসম্ভব শব্দ না করে ড্রেসিং টেবিলের সামনে থেকে চিরুনি তুলে নিয়ে সে গেল বারান্দার খোলা দরজার দিকে। এই বারান্দার সামনে একটা মুসান্ডা আর একটা হলুদ জবা গাছ আছে। দরজাটা বাইরের রাস্তা থেকে খুব চোখে পড়ে না। তাই এইখানে দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়ায় বিনীতা, চিরুনিতে চুল উঠে এলে সেগুলো আঙুলে পাকিয়ে ঘরের কোণে রাখা ঢাকনা দেওয়া ছোট ডাস্টবিনে ফেলে দেয়। আজও তাই করতে যাচ্ছিল, এমন সময়ে বাড়ির সামনে একটা গাড়ি এসে থামল
গর্জে উঠেছে অক্ষর শহর শ্রীরামপুর। ‘শ্রীরামপুর রেলওয়ে স্টেশন বুক স্টল' বন্ধ করা যাবে না এমন দাবি তুলে সরব হয়েছেন এ শহরের বিখ্যাত কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী, মানবাধিকার কর্মীরা।