গুরুচন্ডা৯ প্রকাশিত রসিকার ছেলে উপন্যাসে রোহিত ভেমুলার ছায়ায় গড়া কেন্দ্রীয় চরিত্র রোশনের পাশে আছে ফয়জান, স্বনামে নয়, তার নাম ওখানে ফয়জল। তার মৃত্যুর পর মা ছুটে এসেছেন অতদূর থেকে। তাঁর সঙ্গে কেমন ব্যবহার করেছে কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় পুলিশ, তার বর্ণনা আছে। সেই সময় প্রকাশিত বিভিন্ন কাগজের রিপোর্ট ঘেঁটে লেখা। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অনেকের ইন্টারভিউ নিয়ে তারপর তিলে তিলে গড়া হয়েছে এই দুর্ভাগা তরুণের চরিত্র। তাকে দাঁড় করানো হয়েছে রোহিত ভেমুলার পাশে। প্রখ্যাত সাহিত্যিক সাধন চট্টোপাধ্যায় এই ২০১৬ এবং ২০২২ কে এক সুতোয় গেঁথে ফেলাকে অন্যায়ের প্রবহমানতা দেখাবার পক্ষে খুবই কার্যকরী হয়েছে বলে ভেবেছেন। আমরা পড়ে দেখতে পারি উপন্যাসের কিছুটা অংশ, যেখানে মায়ের চোখের জল আর প্রবল আকুতি বৃথা হয়ে যাচ্ছে। এমপ্লুরা নামের রাসায়নিক দিয়ে যে নরপশুরা ফয়জানের মৃতদেহ অবিকৃত রাখবার চেষ্টা করেছিল, তাদের নির্লিপ্ততা। রসিকার ছেলে প্রকাশ করে গুরুচন্ডা৯ যে সামাজিক যুদ্ধের সূচনা করেছে, তাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে অমিতাভ চক্রবর্তীদের প্রতিবেদন।
প্রথম পর্বে আমরা ধ্যান কি ও অনপণসতী নিয়ে লিখেছিলাম । এবারের পর্বে আমরা দেখবো এই ধ্যানের উৎস, মানব মনের প্রবাহ, প্রথম দিকের ব্যবহারিক প্রয়োগ, ধ্যান ও মানব মনের বিচিত্রতা নিয়ে ক্লিনিক্যাল গবেষণা কি বলে ও স্নায়ুবিজ্ঞানের অতি প্রাথমিক কিছু ধ্যান ধারণার অবতারণা ।
আশির দশকে যাদবপুরের কয়েকটি ছাত্রছাত্রী শুশুনিয়া পাহাড়ে গেছে শৈলারোহণ অভ্যাস করতে - সেই ভিত্তিতে এই আখ্যান … চুনি বলে, "জেঠুর পরে কী মনে হয়েছে জানি না। আজ কিন্তু কয়েকবার আমার জেঠুর কাল রাতের কথাগুলো মনে পড়ছিল। দ্যাখ, ও কিন্তু নিজের জায়গায় সৎ। পুরুষের দুর্বলতা, প্রবণতা যাই হোক, ছেলে হিসেবে ও যেভাবে ভেবেছে তা ও পরিস্কারভাবে বলেছে। সেটাই সামগ্ৰিকভাবে পুরুষ জতের বৈশিষ্ট্য কিনা তা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। কিন্তু মেয়ে হিসেবে আমাদের তো ওর কথাগুলো ফ্যালনা মনে হয়নি। কিন্তু মেয়েদের ওপর অত্যাচারের জন্য পুরুষের দিকে আঙুল তোলা ছাড়া ঈশু কি মেয়েদের আচরণের ব্যাপারে কিছু বলেছে? তাহলে পুরুষের দিকে তোলা অভিযোগের তীরগুলো কিছুটা ভোঁতা হয়ে যায়। তাই না?"
যা হজম হয়েনা উহা, কবিতা, ন্যুনপক্ষে কবিতার প্রলাপপ্রয়াসী। নীলচে ফ্রিজের বই, স্টেডি নারী , স্বতঃসিদ্ধ কাচার মেশিন- সকলি সাক্সেস ভেল ; শুধু এই বিষ্ঠা এই অগম্য পুরীষ, চেম্বার উপচে পড়চে নৃতছন্দে নষ্টা উপমায়, একে নাও,
মাও ফাও, বাপ ব্যাটা আর পিসি। কিসি জমিতে হিসি করে ভেড়ি হচ্ছে। নো ভোট্টু ঘাসফুল দিয়ে জাপানি ইকেবানা সাজাচ্ছে।
Writer's Block
পশ্চিমবঙ্গে সরকারি স্কুল শিক্ষার মান কী কমছে? বিশেষতঃ রাজ্যে ক্ষমতা পরিবর্তনের পরে কী রাজ্যের সরকারি স্কুল শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে? এই প্রশ্নগুলির উত্তর বোঝার চেষ্টা করব Annual Status of Education Report এর ভিত্তিতে।
ও বাড়ির দুয়ার থেকে কেউ বলেছিল যেতেই কি হবে আজ? থেকেই যদি যায় বৈঠকখানার ঘরে? আজ রাতে চাঁদ উঠবেনা, চিনতেও চাইবে না কেউ সেই অস্ফুট আলোয় এলোমেলো চুলের ফাঁকে লাল রঙ অসময়ের বর্ষা বাতি নিভিয়ে দিয়েছে অনেকক্ষণ
আজকে সকালে তেতলার পিসিমার কাছে যে চিঠিটা এল, দাদা মানে পিসিমার ছেলে অনেকক্ষণ ধরে পিসিমাকে পড়ে পড়ে শোনাচ্ছে। ছেনু গিয়ে দু'বার দরজার সামনে থেকে ঘুরেও এল, কত লম্বা চিঠি রে বাবা! শেষে আর থাকতে না পেরে ছেনু গিয়ে পিসিমাকে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞেস করেই ফেলল, কার চিঠি গো? দেখা গেল অদ্ভুত ব্যাপার, পিসিমা হাসছে, অথচ চোখের কোণে জল, পিসিমা হেসে বলল, কে আসছে জানিস? কান্টু আসছে রে কান্টু, তোর কান্টু দাদা। এদ্দিন পর ও আসছে, শুনে বিশ্বাসই করতে পারছি না, তাই তো বারবার করে শুনছি। ছেনু ছোট্ট থেকে পিসিমার কাছে কান্টুদার অনেক গল্প শুনেছে, কিন্তু কোনোদিন কান্টুদাকে চোখে দেখেনি আজ পর্যন্ত। অবশ্য দেখবেই বা কি করে, ছেনুর জন্মের আগেই তো পিসিমার বড় ছেলে কান্টুদা সেই সাত সমুদ্দুর তেরো নদী পার করে কি একটা দেশ আছে, কানাডা না কি নাম, সেইখানে চলে গিয়েছিল। সেই থেকে সেখানেই থাকে আর মাঝে মধ্যে চিঠি লিখে খবরাখবর জানায়। শুরুর দিকে বাংলায় লিখত বটে কিন্তু পরে কি জানি কেন শুধু ইংরেজিতেই চিঠি পাঠায়, তাই অন্যরা পিসিমাকে তর্জমা করে পড়ে পড়ে শোনায় কি লিখেছে।
তোমার মনে আছে, কবিরাজদাদা ওর শরীরের লক্ষণ দেখে বলেছিলেন, ভল্লা সাধারণ এলেবেলে ছেলে নয়। যথেষ্ট শক্তিশালী যোদ্ধা। আরও বলেছিলেন, ওই চরম অসুস্থ অবস্থায় ওর এখানে আসাটা হয়তো আকস্মিক নয়। হয়তো গোপন কোন উদ্দেশ্য আছে। আজকে সকলের সামনে কবিরাজদাদা সে প্রসঙ্গ তোলেননি। কিন্তু আমারও এখন মনে হচ্ছে কবিরাজদাদার কথাই ঠিক”।
নির্মম হত্যাকান্ড! খুন হয়েছিলেন আই আই টি খড়গপুরের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ফৈজান আহমেদ? কি ভাবে? গত ২১শে মে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ ডক্টর অজয় গুপ্তা কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর বেঞ্চকে জানান যে ফৈজানকে মাথার পিছনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল, ঘাড়ের জায়গায় ছুরির আঘাত করা হয়েছিল এবং তার পর পিছন থেকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে ঘাড়ে গুলি করা হয়েছিল। (১৩-ই জুনের ই-নিউজরুম ইন্ডিয়ার প্রকাশিত সংবাদ)। এই রিপোর্ট মৃতদেহের দ্বিতীর ময়নাতদন্তের ফল। কেন দু’বার ময়নাতদন্ত? কারণ, প্রথম ময়নাতদন্তে এতগুলি চিহ্নর কোন কিছু নজরে আসে নি আর মৃত্যুর কারণ সাব্যস্ত হয়েছিল আত্মহত্যা। নিজের হস্টেল ঘর থেকে ২৩ বছরের ছেলেটির অর্ধ-গলিত মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল। আই আই টি কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশের বক্তব্য অনুসারে তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন। ফৈজানের মৃত্যুর খবর পেয়ে তার পরিবার খড়গপুরে পৌঁছে তার মৃতদেহ দেখে এই মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে মানতে অস্বীকার করেন। তারা বলেন ফৈজান র্যাগিংয়ের শিকার এবং তিনি খুন হয়েছেন। ফৈজানের মা-বাবা কলকাতা হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করেন। পোস্ট-মর্টেম রিপোর্টে অসঙ্গতি নজরে আসায় হাইকোর্ট মৃতদেহ কবর থেকে তুলে নিয়ে এসে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করার আদেশ দেয়।
২০১৮-র ডিসেম্বরে পার্লামেন্টে সরকার জানায় যে, ২০১৫ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে মোট ২০,৩১৪.১২ হেক্টর বনভূমি কর্পোরেট সংস্থার হাতে খনিজ পদার্থ উত্তোলনের জন্য তুলে দেওয়া হয়েছে। যদিও আদিবাসীদের আন্দোলন, গ্রামসভা গুলির আপত্তি ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে কর্পোরেট সংস্থাগুলোর পক্ষে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায় কিছু সমস্যা হচ্ছিল, বিশেষ ছত্তিশগড়ের গভীর অরণ্য বেষ্টিত আদিবাসী জনজাতি নির্ভর এলাকাগুলিতে। ২০২৩ সালের নভেম্বরে ছত্তিশগড়ে বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে পরাজিত করে সরকার গঠন করে বিজেপি। এখানেও কায়দা করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী করা হয় বিজেপির আদিবাসী নেতা বিষ্ণু দেও সাই কে। ২০২৪ ডিসেম্বর মাসে শপথ নেন তিনি আর জানুয়ারি থেকেই গৌতম আদানির কোম্পানি শুরু করেছে নির্বিচার অরণ্য নিধন।
গাড়ির ড্যাশ বোর্ডের স্পিডোমিটার দেখলে জানা যায় তাঁর উচ্চতম গতি বেগ ঘণ্টায় দুশো কিলোমিটার । এই সব মূল্যবান তথ্য জানিয়ে বিক্রেতারা মহার্ঘ্য গাড়ি বিক্রি করেন । গাড়ির শো রুম থেকে বেরুলেই চোখে পড়ে নোটিস - শহরের ভেতরে গাড়ির গতির উচ্চসীমা ঘণ্টায় বিশ মাইল, একটু দূরে গেলে তিরিশ। মোটরওয়েতে ৭০ মাইল ( ১১২ কিমি ) গতি অনুমোদিত । সেখানে কদিন যাই ? যেখানে আমার নিত্যিদিনের ঘোরাঘুরি - হাটে বাজারে , বন্ধু সন্দর্শনে সেখানে আমার গাড়ির টিকিটি বাঁধা আছে তিরিশ বা বড়জোর পঞ্চাশ মাইল বেগে । প্রয়াত ভাস্করদার ( ভাস্কর দত্ত , সুনীলদার অভিন্ন হৃদয় বন্ধু) পুত্র অর্ণবের বাড়ি থেকে কিছু সঞ্চিত বই সংগ্রহের জন্য উত্তর লন্ডনের স্টোক নিউইংটন গেলাম গত রবিবার - এককালের সেই বিখ্যাত ওয়েস্টওয়ে আকীর্ণ হয়ে আছে অজস্র ক্যামেরায়, ওয়েম্বলি, হ্যামারস্মিথ থেকে কিংস ক্রস ছাড়িয়ে গাড়ি চলে ধীরে মন্দ গতিতে, আইন বাঁচিয়ে ।
মায়ের সঙ্গে ছেলের প্রবল মতাদর্শগত অমিল। অথচ এই অবিবাহিত ছেলেকে ঘিরেই মায়ের গোপন আবেগ। ভালোবাসা। ছেলে সূর্যকুমার যখন সংসার ভেঙ্গে ভাগ হয়ে যাচ্ছে, মানতে না পেরে এবং অন্যান্য কারণে আত্মহত্যা করে। আমাদের ছোটবেলায় অভাবের জ্বালায় সংসার চালাতে না পেরে পুরুষ বা নারীর আত্মহত্যার চেষ্টা দেখেছি। তবে এক 'মুসলিম' তরুণীর প্রেমে এক 'হিন্দু' তরুণের আত্মহত্যা গ্রামে খুব আলোড়ন তোলে।
ঘটমান বর্তমান ঘটেনাতো পিছনের কথামুখ ভুলি। দিলদরিয়াতে নেমে একে একে খুলে যায় -- এ ‘আমির’ আবরণ গুলি।।
মিনিট খানেক বাদে এসপি ফোন ছেড়ে বললেন, ‘‘কিছু হয়নি তেমন। ইলেকট্রিকের তার ছিঁড়ে পড়েছে কনভয়ে পুলিশের গাড়ির ওপর। তাতেই টাল সামলাতে না পেরে পুলিশের গাড়ি রাস্তার ধারে পড়ে গিয়েছে।’’ এসপির কথায় আশ্বস্ত হলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। কিন্তু প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ফোন ছেড়ে প্রভীণ কুমার জানালেন, ‘‘স্যার, ব্লাস্ট হয়েছে। ব্লাস্টে ইলেকট্রিক তার ছিঁড়ে মাটিতে পড়েছে। জোরে আওয়াজ হয়েছে, বড় ব্লাস্ট ছাড়া তা হতে পারে না।’’
নিট কেলেঙ্কারি নিয়ে নিয়ে বাংলা মিডিয়া এখনও মোটামুটি চুপচাপ, যেটুকু না বললে নয়, সেইটুকু বলছে। যদিও এরকম হবার সম্ভাবনা আছে, যে, নিটই স্বাধীন ভারতবর্ষের বৃহত্তম কেলেঙ্কারি। হ্যাঁ, আদালতের রায়ের পরেও ব্যাপারটা বদলায় না। কিন্তু মূলধারার মিডিয়ার হাতে ছেড়ে দেব বলে তো আমরা কাজ করছিনা। এই ভিডিওটা দেখুন, বিশদে পুরোটা বলা আছে।
ব্ল্যাক হোল?! ননসেন্স! বাস্তব জগতে ব্ল্যাক হোল বলে কোনও কিছুর অস্তিত্বই নেই। অস্তিত্ব থাকতে পারে না। এটা নেহাতই গণিতের একটা ফসল মাত্র। ‘ব্ল্যাক হোল’ হলো তাত্ত্বিক পদার্থবিদদের উর্বর মস্তিষ্ক প্রসূত এক কল্পনা বিলাস। এই কল্পনার না আছে কোনও বাস্তব ভিত্তি না আছে কোনও বাস্তব প্রমাণ। এমনটাই মনে করতেন সেই সময়ের অধিকাংশ বিজ্ঞানীরা। কেউ কেউ যদিও ব্ল্যাক হোলের অস্তিত্বের উপর ভরসা রাখতেন। তবে সেই সময়ে, ঈশ্বরে বিশ্বাস করার মতোই ব্ল্যাক হোলে বিশ্বাস করাও ছিল প্রমাণহীন একটা ধারণা মাত্র।
চলতি বছরে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে উত্তরাখণ্ডে পাঁচ জন মানুষের মৃত্যু ঘটেছে দাবানলে। প্রশ্ন উঠতে পারে যে দাবানলে মানুষ মরল কী ভাবে? কারণ দাবানল অরণ্যে হয়। তাহলে কি দাবানল এত বিধ্বংসী আকার ধারণ করেছে যে সেই আগুন ছড়িয়ে পড়েছে অরণ্যের পাশের জনপদে? এক্ষেত্রে সম্ভাব্য কারণ বলা হচ্ছে মানুষ দাবানল নেভাবার চেষ্টা করতে গিয়ে ঘটেছে এই ঘটনা। পাহাড়ে আদিবাসীদের একটা বড় অংশের মানুষের কাছে বৃক্ষ এবং অরণ্যের মহিমা দেবতার মত। পরিবেশবিজ্ঞান বইয়ের পাতা উল্টে শেখে না তারা। জন্ম থেকেই মানুষ প্রকৃতির হাত ধরে বাঁচে সেখানে, ফলে নাগরিক সভ্যতার বৃত্তের বাইরের মানুষ বৃক্ষদেবতা তথা অরণ্যকে বাঁচাবার চেষ্টা করবে, এমন ঘটনা নতুন নয়।
ফোনে কথা বন্ধ করল ইন্দ্রনীল, জামার পকেটে মোবাইল রেখে দুজনের দিকে একবার তাকাল। তারপর খামটা এগিয়ে দিল বিনীতার দিকে, সে ওটা হাতে নিল। ইন্দ্রনীল দেখল অরুণাভর বই বুকের ওপর খোলা, চোখ তারই দিকে। “সার্জারি ভালই হয়েছে। কিন্তু কন্ডিশন ভাল নয়। টিউমারটা ম্যালিগন্যান্ট,” কথা বলতে বলতেই ডাক্তার দেখল অরুণাভর চোখ বইয়ের দিকে ঘুরল। “আমি অকারণ আশা দিতে চাই না। মেটাস্টেসিস শুরু হয়েছে, মানে ছড়িয়ে গেছে রোগ, স্টেজ ফোর।” বিনীতা বিস্ফারিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকল ইন্দ্রনীলের দিকে, তারপর দেখল তার স্বামীর দিকে। তার চোখ বইয়ের পাতায়, তবে মন কোথায় বলা কঠিন।
আমাদের শিবির থেকে, আমেরিকান কনসালের কাছে চিঠি দিয়ে তিনজনকে জাঞ্জিবারে পাঠিয়েছিলাম, সেই সঙ্গে 'হেরাল্ড'-এর কাছে টেলিগ্রাফ পাঠানোর জন্যও। রাজদূতকে অনুরোধ করেছিলাম যে তিনি যেন একটা-দুটো ছোট বাক্স ভরে কিছুমিছু বিলাসদ্রব্য দিয়ে লোকদের ফেরত পাঠান যা ক্ষুধার্ত, জীর্ণ, ছ্যাতলাধরা মানুষজন তারিফ কুড়াবে। বার্তাবাহকদের বৃষ্টি- অনাবৃষ্টি, নদী- বন্যা কোনো কিছুর জন্যই থামতে বারণ করা হয়েছিল - যাতে তারা তাড়াহুড়ো করল না আর তারা উপকূলে পৌঁছানোর আগেই আমরা তাদের ধরে ফেললাম এমন ঘটনা না ঘটে। প্রবল উৎসাহে "ইনশাআল্লাহ, বানা" বলে তারা রওনা দিল।
সিঙ্গুরের পরের স্টেশন কামারকুন্ডুতে, প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান শুনলাম, এক হকারকে আরপিএফ গুঁতো মেরে ট্রেনে থেকে ফেলে দিয়ে মেরে ফেলেছে বলে অভিযোগ। কেন্দ্রীয় বাহিনী। পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত এলাকায়, কিছুদিন আগেই বিএসএফ একজনকে গুলি করে মেরে ফেলেছিল বলে অভিযোগ। কেন্দ্রীয় বাহিনী। তাদের দাপাদাপি সীমান্ত ছাড়িয়ে অনেক দূর পর্যন্ত। কান পাতলেই অভিযোগ শুনতে পাওয়া যায়। তাদের দাপাদাপি রেলে। কান পাতলেই শুনতে পাবেন অত্যাচারের অভিযোগ। বাঙালিদের তুলে হিন্দুস্তানিদের বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে হকার হিসেবে, স্টেশনের স্থায়ী স্টলগুলোতে হিন্দিভাষীদের অস্বাভাবিক বাড়বৃদ্ধি।
জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে মনোনিবেশ এবং ধ্যান ব্যাপারটির অপরিসীম তাৎপর্য। ধ্যান ব্যাপারটিকে ধর্ম, রীতিনীতি বা মনোবিজ্ঞান থেকে একটু সরিয়ে দেখা যাক। একটা প্রশ্ন ওঠা খুবই স্বাভাবিক: যে ধ্যান করলে মনের "গভীরে" হয় কি? যদি সত্যি কিছু হয়, তাকে জানা যাবে কোন উপায়ে? কোনটা বিজ্ঞান আর কোনটা নয়? এই প্রশ্নগুলোকে কেন্দ্র করে আমাদের মস্তিষ্ক, এবং চেতনার একটা আকর্ষণীয় দিক নিয়ে আলোচনার ব্যাপার রয়েছে। বিশেষ করে, ধ্যান বিষয়টিকে কেন্দ্র করে স্নায়ুবিজ্ঞান (নাকি স্নায়ুশাস্ত্র) ও কম্পিউটার বিজ্ঞানের মেলবন্ধনে চিন্তাভাবনার একটি নতুন দিক উন্মোচিত হচ্ছে।
FSSAI (ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া) এর চরম ব্যর্থতা। খাদ্যদ্রব্যের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে এবং রাসায়নিক পেস্টিসাইড নিয়ন্ত্রণ করতে FSSAI সম্পূর্ণ ব্যর্থ। দায়ের করা একটি পিটিশনে বলা হয়েছে যে কীটনাশক যুক্ত খাবারের ব্যবহার সারাদেশে ক্যান্সার রোগের প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে এবং তাতে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। কীটনাশক এবং ক্যান্সারের মধ্যে একটি সরাসরি বৈজ্ঞানিক সম্পর্ক রয়েছে। ফলে কীটনাশক যুক্ত খাবার, তার ব্যবহার, অতিব্যবহার এক বিরাট চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবেদনকারী সারা দেশ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছেন যা দেখায় যে কীটনাশকের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি হচ্ছে। সিনিয়র আইনজীবী অনিথা শেনয়, আবেদনকারী অ্যাডভোকেট আকাশ বশিষ্ঠের পক্ষে উপস্থিত হয়ে সুপ্রিম কোর্টকে জানালেন। পাশাপাশি পিটিশনে ক্যালসিয়াম কার্বাইড এর মতো রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে ফল কৃত্রিমভাবে পাকানো, আপেলের মত ফলগুলির রং বা আবরণ প্যারাফিন, শেলাক এবং পলিথিনের মত উপাদান দিয়ে তৈরি মোম দিয়ে পলিশিংয়ের বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়। এছাড়া ডাল এবং খাদ্যশস্যে কৃত্রিম রং ব্যবহারের কথাও উল্লেখ করা হয়। ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের এক বেঞ্চ 17 মে, 2024 পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা ও মান অথরিটি অফ ইন্ডিয়াকে (FSSAI) নোটিশ জারি করেছে এবং তাদের প্রতিক্রিয়া চেয়েছে।
মোদি কি আদৌ বারানসীতে জিতেছেন? ফলাফল বেরিয়ে যাবার পর এই প্রশ্ন কেন? কারণ, অন্য কেউ না, বিজেপির নেতারাই প্রশ্নটা তুলছেন। গোপন কিছু না। আস্ত সাক্ষাৎকার বেরিয়েছে। কিন্তু খুব সম্ভবত আপনি দেখেননি, কারণ মিডিয়া দেখায়নি। বা যৎসামান্য দেখিয়েছে। ওদিকে ব্যাপারটা কিন্তু বিস্ফোরক। তাই আমরাই ভিডিও সমেত জিনিসটা সামনে নিয়ে এলাম। আমাদের চ্যানেল এখনও পুরোদস্তুর তৈরি না। কিন্তু এইসব জিনিস এলে এখনও সঞ্চালকরা তৈরি না বলে তো থেমে থাকা যায়না। তাই করে ফেলা হল। কেন করে ফেলতে হল, সে দেখলেই বুঝতে পারবেন।
আশির দশকে যাদবপুরের কয়েকটি ছাত্রছাত্রী শুশুনিয়া পাহাড়ে গেছে শৈলারোহণ অভ্যাস করতে - সেই ভিত্তিতে এই আখ্যান … যতই মুড অফ থাকুক, কেউ লুজ বল দিলে ছক্কা মারার জন্য সুমনের মন নিশপিশ করে। ভাবলেশহীন মুখে বলে, "তোর সাথে একা গল্প করতে আমার ভয় করে।" কোমরে দু হাত দিয়ে তুলি লড়াকু ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে বলে, "ভয় করে! কেন? আমি কী কামড়ে দেবো তোকে?"
"একা বেড়ানোর আনন্দে" - এই সিরিজে আসবে ভারতের কিছু জায়গায় একাকী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এটি পর্ব - ২৮ … দুবার একই ভুল করে একটি জনশ্রুতির মর্মার্থ উপলব্ধি করেছি কাঁপতে কাঁপতে - ছাগল দিয়ে লাঙ্গল দেওয়া গেলে চাষা বলদ কিনতো না। সেবার উত্তরাখণ্ড ভ্রমণে পঞ্চকেদারের দুটি কেদারে গেছিলাম। একাকী যোশিমঠ থেকে কল্পেশ্বর। ছ জনের দলে তুঙ্গনাথ। দলটি হয়েছিল গুপ্তকাশীতে আলাপ পাঁচটি উত্তরপ্রদেশের তরুণের সাথে। তুঙ্গনাথ, দেওরিয়া তালে দুটি রাত কাটিয়ে উখিমঠ থেকে ওরা হরিদ্বার চলে যেতে আবার আমি একা
এ বছর চৈত্রের শুরু থেকেই ঝলসে দেওয়া শুকনো গরম। সেই গরমে sskm এর এক একটা লাইনে তিন ঘন্টা দাঁড়িয়ে নারী পুরুষ। মেয়েরা এখানে সংখ্যাগুরু। সংসারের যাবতীয় কাজ ভোর রাতে উঠে সামলে তারা চলে আসে। কখনো নিজের জন্য, কখনো সন্তানের জন্য। এমনকি এমন মেয়ের দেখা পেয়েছি যে sskm চেনে হাতের তালুর মত আর তার হাত ধরে প্রথমবারের জন্য ডাক্তার দেখাতে এসেছে তার স্বামী। মেয়েরা না কি রাস্তা পেরোতে পারে না
এটা আজই আমার পাতায় পোষ্টিত “টুনটুন মুনটুন”- লেখার প্রলম্বিত পুনশ্চঃ
কঠোরভাবে প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য - দেশব্যাপী পঞ্চবার্ষিকী যাত্রাপালা সদ্যসমাপ্ত হয়েছে। বিগত কয়েক হপ্তা ধরে তাই নিয়ে এন্তার কূটকচা৯ দেখেশুনে মনপ্রাণ ভারাক্রান্ত। কিছু মাস বাদে ঐ রঙ্গপালাই চলবে আরো কিছু প্রদেশে আঞ্চলিক পর্যায়ে। তার মাঝে একটু হালকা হতে লিখলুম এই চিরন্তন লীলাপ্রসঙ্গ … তবে তরল আঙ্গিকে
রাস্তায় নেমেই ঘড়ির কাঁটায় নজর দিয়ে দেখে নিয়েছি বেলা তখন দশটা বেজে পনেরো। ঝাড়খন্ড আর বাংলার আকাশ থেকে তখনও ঘূর্ণাবর্তের ছায়া কাটেনি বটে কিন্তু এখন এই মুহূর্তে সোনার মত রোদ গলে পড়ছে। গুগল ট্র্যাকার দেখে ঝিলমিল আর রাগিণী আমাকে জানালো আমাদের হাঁটতে হবে এক কিলোমিটার পথ। মৃত্যুঞ্জয় গাড়িটা নিয়ে এগিয়ে গেছে, গীয়ার নিউট্রাল করে শব্দহীন গাড়ি নেমে গেছে সুন্দরী দুয়ারসিনির পথে। আমাদের সাথেও রয়েছে চার সুন্দরী। রুশতি আজ জিন্স্ পরেছেন। নীল ফেডেড জিন্সের ওপর লাল আর কালো স্ট্রাইপ দেওয়া সাদা শার্ট। মেয়ে রাগিণী আজ পুরোপুরি কালো পোশাকের আশ্রয় নিয়েছে। স্লিভলেস ঝালর দেওয়া কালো টপ আর পালাজো। রিয়ানের আজ কমলা আশ্রয়। কলার দেওয়া হাঁটু ছাড়ানো কুর্তি আড়াল করেছে কালো চোস্তা পাজামাকে। ঝিলমিল একটা মেরুন পাজামার ওপর কালো টি শার্ট চড়িয়েছে।
আশির দশকে যাদবপুরের কয়েকটি ছাত্রছাত্রী শুশুনিয়া পাহাড়ে গেছে শৈলারোহণ অভ্যাস করতে - সেই ভিত্তিতে এই আখ্যান …একটা অবুঝ অভিমান দলা পাকিয়ে উঠছে সুমনের মনে। মলয়দা রেশনিং করে খেতে বলা সত্ত্বেও ওরা কিছুটা জল বাঁচিয়ে রাখতে পারলো না ওদের জন্য? এই ফেলো ফিলিংস নিয়ে এরা পাহাড়ে যাবে?
"একা বেড়ানোর আনন্দে" - এই সিরিজে আসবে ভারতের কিছু জায়গায় একাকী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এটি পর্ব - ২৭ … পরিচিত সঙ্গীর সাথে হপ্তা দুয়েক অবধি ভ্রমণ ঠিক আছে। তার বেশী হলে নানা কারণে ছানা কাটতে শুরু করে। কিন্তু দু মাসের একাকী ভ্রমণেও কখনো সঙ্গীহীনতার চাপ অনুভব করিনি। সেলফ ড্রাইভ করে বেড়াতে গেলে বাস্তবিক কারণে সাথে একজন থাকলে সুবিধা হয়। কারণ পথে গাড়ি খারাপ হতেই পারে। জনবাহনে গেলে সে প্রয়োজন নেই। একাকী ভ্রমণে সঙ্গীর অভাব বোধ না করলেও চলার পথে স্থানীয় মানুষের সাথে গল্পগুজব করতে ভালোই লাগে। যাদের সাথে আর কখনো দেখা হবেনা তাদের সাথে ক্ষণিকের আলাপ স্মৃতিতে রয়ে যায় বহুদিন
প্রথম দিন আলাপের সময়েই এই দলটি তার কাছে বিদ্রোহের মন্ত্র জানতে চেয়েছিল। সমস্ত অন্যায়ের বিরুদ্ধে একত্রে লড়ে যাওয়ার শপথ নিয়েছিল। বলেছিল ভল্লাদা তুমি একা, তাই ওরা তোমাকে এভাবে চূড়ান্ত হেনস্থা করতে পেরেছে। তোমার ওপর ঘটে যাওয়া এই অপমানের শোধ তুলব আমরা সবাই মিলে। ভল্লা মনে মনে হেসেছিল। একটু বিদ্রূপের সুরে গম্ভীর মুখে ভল্লা বলেছিল, “খাওয়া, ঘুমোনো আর হাগতে-পাদতে-মুততে যাওয়া ছাড়া আর কী পারিস? ছুটতে পারিস? লাফাতে পারিস? গাছে উঠতে পারিস? সাঁতার কাটতে পারিস? অস্ত্র চালাতে পারিস কিনা জানতে চাইলাম না। জানি, ও জিনিষ তোরা কোনদিন হাতেও ধরিসনি”।
মঙ্গলসূত্র, মুসলিম, মাটন, মাচ্ছি, মোষ, মুজরা- এসবের মাঝে যে দুটো ম-এর কাহিনী চাপা পড়ে গেছে সেটা হল মহিলা ভোটার আর মাইগ্রেন্ট লেবারার। ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দুই দফায় যে বিষয়টা নজর কেড়েছিল সেটা ছিল ভোট শতাংশ কমে যাওয়া। নির্বাচনের শেষের দিকে যেটা নজর কেড়েছে সেটা হল পুরুষদের চেয়ে নারীদের বেশিমাত্রায় অংশগ্রহণ। নারীদের মধ্যে অতিরিক্ত ভোটদানের হার বিশেষভাবে দেখা গেছে বিহার, পূর্ব উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি জেলায় এবং ঝাড়খণ্ডে। সবচেয়ে লক্ষণীয় হল বিহার। বিহারে প্রথম দফায় নারীদের ভোট শতাংশ পুরুষের চেয়ে কম ছিল। দ্বিতীয় দফা থেকে বাড়তে শুরু করে। বিহারে যেটা কমেছে সেটা হল পুরুষদের ভোটদানের হার- এটা ৫৫.১% থেকে ৫৩.৩% এ নেমে এসেছে। মহিলাদের ভোটদানের হার ৫৯.৪% যা ২০১৯এর প্রায় সমান।
হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ মুরগি পালন করতেন না। তাঁদের ঘরের মেয়েরা হাঁস পালন করতেন। কোনও হিন্দু বাড়িতেই মুরগি ঘরে রান্না করা যেত না। ফিস্টিতে খেতে হতো। মুরগিকে বলা হতো রামপাখি। মুরগির ডিমকে রামফল। জ্বর সর্দি হলে শরীর দুর্বল হলে প্রেসার লো হলে গ্রামের ডাক্তার মুরগির হাফ বয়েল ডিম খেতে নিদান দিতেন। তখন মুসলিম বাড়িতে গিয়ে মুরগির ডিম কিনে আনতে যেতো। এখন তো মুরগির মাংস জলভাত পোল্ট্রির কল্যাণে। এই পোল্ট্রি আমাদের গ্রামে আসে বামফ্রন্টের বেকার ভাতা দেওয়ার কল্যাণে। বেকার ভাতা পেতেন তিনজন। তিনজনই কংগ্রেসি। এঁরা ম্যাট্রিক পাস করে কর্মবিনিয়োগ কেন্দ্রে নাম লিখিয়েছিলেন। নাসির চাচা ও সালাম চাচা ছিলেন উদ্যোগী মানুষ। দুজনেই আমার খুব পছন্দের মানুষ। তাঁদের রাজনীতি আমাদের পরিবারের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনে কোনও বাধা হয়নি। বামপন্থী রাজনীতির কারণে ২০০৯ থেকে আমাদের পরিবারকে বয়কট করা হলেও সালাম চাচা, ধনা চাচা ও মাদু চাচা নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছেন। এসেছেন। আর এসেছেন ব্রাহ্মণ সন্তান পীরে কাকা। সালাম চাচা ও নাসির চাচা কর্মবিনিয়োগ কেন্দ্র থেকে বামফ্রন্ট সরকারের দেওয়া ঋণ নিয়ে গ্রামে প্রথম পোল্ট্রি করলেন। গ্রামের বাইরে মাঠে। তখন ঘরোয়া মুরগির মাংসের দাম ২০ টাকা। ছাগলের মাংসের নাম তখন মাটন হয়নি। দশ টাকা কিলো। এবার পোল্ট্রি এসে দাম হল ১৫ টাকা কেজি।
পুলসিরাত পার হয়ে যখন শেষমেষ তারা ঢুকলো অফিসটাতে, তখন দেখা গেল সেলিম ভিজলেও তার বসের মত কাকভেজা হয়নি, ফ্যানের বাতাসে একটুখানি বসলেই চলছে। ওদিকে বসের সামনে মেলে ধরা হয়েছে দীপুর টি-শার্টটা।
বহিরাগত শিল্পী হেনরি ডারগার
‘বুদ্ধদেববাবুর কনভয়ে ব্লাস্ট হয়েছে? একটা চ্যানেল দেখাচ্ছে।’ অফিস থেকে আসা এই এক লাইনের বার্তাই তখন যথেষ্ট ছিল। ড্রাইভারকে গাড়ি ঘোরাতে বলে সঙ্গে সঙ্গে ফোন করলাম মুখ্যমন্ত্রীর আপ্ত সহায়ক জয়দীপ মুখার্জিকে। ‘বুদ্ধদেববাবুর কনভয়ে ব্লাস্ট হয়েছে?’ ‘কিছু একটা হয়েছে। তবে ব্লাস্ট না। এসপি বলছে, ইলেকট্রিক ওভারহেড তার ছিঁড়ে একটা পুলিশের গাড়ির ওপর পড়েছে। তাতে একটু আগুন ধরে যায়। টাল সামলাতে না পেরে গাড়িটা উল্টে গিয়েছে। তাতে তিন-চারজন পুলিশ ইনজিওরড। তবে সিএমের কনভয়ে না, এটা ঘটেছে রামবিলাস পাসোয়ানের কনভয়ে।’
মহম্মদ সেলিম বহু ক্ষেত্রেই সঠিক কথা বলে থাকেন। এবারও বলেছেন। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, "কেউ কেউ স্বঘোষিত বিপ্লবী আছে, তাদের আমরা বলি ফেসবুকে বেশি বিপ্লবীয়ানা করবেননা। কিন্তু করে। এখানে এমন একটাও সিপিএমের কাছ থেকে এক্সপেক্ট করতে পারোনা, যে, মহিলাদের সম্পর্কে বা এ ধরণের ভাতা সম্পর্কে অফিশিয়ালি ডিনাউন্স করছে। কেন করবে? আমরা আমাদের বামপন্থী আন্দোলন মানে হচ্ছে, গোট বিশ্বে আমরা চাই, সরকার ক্ষতিপূরণ হিসেবে, মানুষের যে অধিকার দিতে পারছেনা, তাকে কিছুটা অন্তত সাবসিডাইজ করবে। আর বাকি যারা এগুলো নিয়ে কটাক্ষ করছেন, তাঁরা বামপন্থী নন, তাঁরা হতে পারেন সমর্থক, আমাদের দায় আমাদের কথা তাঁদের কাছে নিয়ে যাওয়া, আমাদের মাধ্যমগুলো দিয়ে, সরাসরি তাঁদের কাছে গিয়ে। কেউ কেউ উগ্র সমর্থক আছেন, তাঁদের আমরা সমর্থক থাকতে বলব, উগ্রতা কমাতে বলব।" (শুনে শুনে লেখা, মোটামুটি হুবহু উদ্ধৃতি)।
বাংলায় যে তৃণমূল প্রার্থীরা জিতলেন তাঁরা কী হেরে যাওয়া বাম প্রার্থীদের থেকে কম শিক্ষিত? এবং দেশে যে বামেরা জিতলেন তাঁরা কী বাংলার তৃণমূল বা বাম প্রার্থীদের থেকে কম বা বেশি শিক্ষিত? এই দুটি প্রশ্নের উত্তর বোঝার চেষ্টা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে।
ঝলমলে সোশ্যাল মিডিয়া আর স্মার্টসিটির বাইরে কবে থেকে যেন হেঁটেই চলেছে আরেকটা ভারত। এতদিনে তাদের অন্তত নামটুকু নথিবদ্ধ থাকার কথা ছিল সরকারের কাছে। কথা ছিল, কিন্তু নেই আসলে, আর সেজন্য আমরা ন্যুনতম লজ্জিতও নই, প্রশ্নও করি না কেন অভিবাসী শ্রমিকদের তালিকা নেই সরকারের কাছে? কেন স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও গ্রামীণ মেয়েদের এত হাঁটতে হবে শুধুমাত্র জলের জন্য? বইটা আমাদের জ্বলন্ত এই প্রশ্নগুলোর মুখোমুখী দাঁড় করিয়ে দেয়। মনে করিয়ে দেয় ‘সুনাগরিক’এর দায়িত্ব পালন করি নি আমরাও।
"একা বেড়ানোর আনন্দে" - এই সিরিজে আসবে ভারতের কিছু জায়গায় একাকী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এটি পর্ব - ২৬ … এই সিরিজের ৪নং পর্বে জনৈক নীল ২১.১০.২৩ লিখেছিলেন - “অনসূয়া দেবী যাত্রার কথা লিখবেন না?” বলেছিলাম - “লিখবো। সেও বেশ আনন্দময় অভিজ্ঞতা”। আরো নানা বিষয়ে লিখতে গিয়ে সময় হয়নি। এতোদিনে নীলের অনুরোধ রাখতে পারলাম। তবে আমার ছড়িয়ে ফেলা স্বভাব অনুযায়ী এই যাত্রা পথেও আসবে কিছু পার্শ্বপ্রসঙ্গ
উগ্র সাম্প্রদায়িক ও নারীবিদ্বেষী হিন্দুত্ববাদী বিজেপি-আরএসএসের বিরোধিতার সঙ্গে সঙ্গে উগ্র সাম্প্রদায়িক ও নারীবিদ্বেষী এই মুসলমান শ্রেণীর সমান বিরোধিতা আমাদের করতে হবে। না হলে আমাদের কোনো বিশ্বাসযোগ্যতা সমাজে থাকবে না।
ডাক্তারের চেম্বারের দরজা ঠেলে ঢুকে বিনীতা দেখল ব্যাগ গোছাচ্ছে ইন্দ্রনীল। বিনীতাকে দেখে একটু অবাক হল সে। “কিছু বলবেন, ম্যাডাম?” “আপনি বললেন প্রতিটা দিনই ইমপরট্যান্ট। ওর কন্ডিশন ঠিক কতটা খারাপ?” “আরে না না। শুনুন, এই কন্ডিশন থেকে লোকে সুস্থ হয়েছে এমন অনেক এক্সাম্পল আছে।” “তার মানে কন্ডিশন খারাপ। কতটা? ও কি–” বিনীতার কথা থামিয়ে দিল ইন্দ্রনীল। “শুনুন, যা যা করার সব করা হবে। বললাম না প্রথমে সার্জারি, তারপর–” এবার ইন্দ্রনীলকে থামাল বিনীতা। “ও সব আপনি আগেই বলেছেন। এখন ক্লিয়ারলি বলুন, ও কি টার্মিনাল পেশেন্ট?” “দেখুন ম্যাডাম…” “আমি যথেষ্ট স্ট্রং, আপনি বলুন।” ইন্দ্রনীল চুপ করে থাকে।
শত্রুর নাম হল প্লাস্টিক। এমনিতে প্রচণ্ড দরকারি জিনিস। কিসে না লাগে! কিন্তু সমস্যা এইটাই যে প্লাস্টিক বলতে আমরা যে বিভিন্ন ধরণের রাসায়নিক দ্রব্য বুঝি, তাদের সবকটিকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করার কোন পকেটসই সুবিধাজনক পরিবেশ বান্ধব উপায় মেলে না। আবার সেটা এমনি ফেলে রাখলে প্রকৃতিতে মিশে যেতে অতি দীর্ঘ সময় লাগে। আর ততদিনে ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে সেটা ম্যাক্রো-প্লাস্টিক মেসো-প্লাস্টিক, মাইক্রো-প্লাস্টিক ইত্যাদি বিভিন্ন আকারের চেহারা নেয়। ম্যাক্রোপ্লাস্টিক হল ২.৫ সেমির থেকেও দৈর্ঘে বা প্রস্থে বড় যে কোন প্লাস্টিকের টুকরো। ৫ মিমি – ২.৫ সেমি অবধি টুকরোকে বলে মেসো-প্লাস্টিক। আর মাইক্রোপ্লাস্টিক বলা হও ১ মাইক্রো মিলিমিটার থেকে ৫ মিলিমিটারের সাইজের প্লাস্টিকের কণা। এই মাইক্রোপ্লাস্টিক নিয়েই আজকের কথা। কারণ আজকের দিনে এরা জলে স্থলে বাতাসে সর্বত্র ভেসে বেড়াচ্ছে।
আমি বিদ্যাকে শুধোই, শুধু পাহাড়ের কি কোনো একক দেবতা নেই, যিনি তাকে রক্ষা করতে পারেন লাগাতার ধ্বংস আর নির্বিচার আক্রমণ থেকে? তাকে বলি, সমস্ত পাহাড়ের রাণী যে হিমাচল প্রদেশ তার চেহারা দিনের দিনের পর দিন যেভাবে কুৎসিত হয়ে উঠছে, তা কল্পনাতীত। পাঞ্জাব পেরিয়ে হিমাচলের সীমানায় ঢুকলেই শুধু উন্নয়ন, নির্মাণ, জেসিপি আর ট্রাকের পর ট্রাক! ট্যুরিজম পয়সা আনে, এজন্য রাস্তার পর রাস্তা তৈরি হচ্ছে, সিঙ্গল লেন ডাবল হচ্ছে বিয়াসের পাশে, সবচেয়ে উঁচু পাহাড়ের মাথায় পৌঁছে যাচ্ছে জেসিপি। ধুলোভরা গাড়ি চলার রাস্তাই হয়ত খুব শিগগিরই উন্নয়নের একমাত্র প্রতীক হয়ে উঠবে।
পরিবেশ বিপর্যয় আজ রাষ্ট্রীয় সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্ব চরাচরে পরিব্যাপ্ত। পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বেড়ে ১.৪৪ ডিগ্রির ঘরে, কোন প্রান্তে তীব্র দাবদাহ- খরা-তাপপ্রবাহ; অন্যত্র প্রবল বৃষ্টি-বন্যা-ধস, এমনকি দুটো বিপরীত এক্সট্রিম আবহাওয়া প্রায় একই সময়ে একই স্থানে আছড়ে পড়ছে। হিমবাহের অতিদ্রুত গলন, জল বাতাস নদীর দূষণ জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে প্রবলভাবে। ভারতবর্ষের ক্ষেত্রে সংবিধান-গণতন্ত্র-পরিবেশের সংকট সব জড়াজড়ি করে জট পাকিয়ে তুলেছে। প্রবল মূল্যবৃদ্ধি, বেকারি, আর্থিক বৈষম্য সহ পরিবেশ সংকটের মূল কারণ দেশি-বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানির নির্বিচারে জল জঙ্গল জমি পাহাড় নদী: প্রকৃতির সব উত্তরাধিকার লুটেপুটে ধ্বংস করা।