এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ধারাবাহিক  গপ্পো  শনিবারবেলা

  • মহারাজ ছনেন্দ্রনাথের নামরহস্য

    রমিত চট্টোপাধ্যায়
    ধারাবাহিক | গপ্পো | ২৫ মে ২০২৪ | ৫২৪ বার পঠিত | রেটিং ৫ (৫ জন)
  • অলংকরণ: রমিত চট্টোপাধ্যায়



    বড়ো বড়ো মহাপুরুষরা প্রায়শই একাধিক নামে পরিচিত হয়ে থাকেন, তেমন তেমন কারোর ক্ষেত্রে আবার নামের লিস্টি শুরু হলে কাগজখানা গড়গড়িয়ে বেলেঘাটা থেকে বেলঘরিয়া চলে যাবে। যেমন কেষ্ট মহারাজের অষ্টোত্তর শতনাম, আমাদের মহারাজ ছনেন্দ্রনাথেরও নামের মোটে কমতি নেই। বাবা ডাকত 'বাবুসোনা' বলে, বড়দা নামটাকে কেটে ছেঁটে করে দিল 'বাবু', আবার সেই নামটাই দিদিদের হাতে পড়ে হয়ে গেল 'বাবলি'। দিদিমা ডাকত 'ছোট্টু' বলে, মা ডাকত 'খোকা' (অবশ্য মা ছাড়া অন্য কেউ খোকা বলে ডাকলেই ছেনু ভীষণ রেগে যেত, বলত আমি কি খোকা!)। তেতলার পিসিমা নাম দিয়েছিল 'ভোম্বল', গোটা তেতলা জুড়ে তাই ভোম্বল নামটাই চলত। মাঝে তেতলায় এক নতুন ভাড়াটে এসেছিল, তার বউ কি করে যেন বাবলি নামটা জেনে ফেলে, তার ডাকে সেটা দাঁড়ালো গিয়ে 'বাবলা'-য়। তারা নানা গোলমাল পাকিয়ে ফেলে মাঝে মাঝেই ছেনুর ওপর দোষ চাপিয়ে দিত করুণ সুরে, বাঁধা ডায়লগ - কে আর করবে বলো, বাবলাই করেছে!

    আরেকবার ছোড়দার সঙ্গে শ্রদ্ধানন্দ পার্কে খেলতে গিয়ে ওর নাম হয়ে গেল 'নীলমণি'। ছোড়দা সেদিন ছেনুকে বুঝিয়েছিল, আসল নাম কাউকে বলবি না, তাহলে ছেলেধরা বাড়ি এসে তোকে ধরে নিয়ে যাবে, তাই সেখানে নাম জিজ্ঞেস করতে ছেনু নিজের নীল জামার দিকে তাকিয়ে সটান জানিয়ে দিল, আমার নাম তো নীলমণি, সেই থেকে ওখানে এই নামটাই চালু হয়ে গেল। আবার পরে জ্যাঠা ডাকত 'ছ‍্যাদন' বলে, জ্যাঠতুতো দাদারা সেইটাকে আবার করে ফেলল 'ন্যাদন'। তবে এই ছ‍্যাদন নামটা অবশ্য ছেনু নামেরই অপভ্রংশ (এরকম বিদঘুটে অপভ্রংশ বোধহয় সেই সময়ই সম্ভব ছিল)। কিন্তু সব নামের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত যে নাম, তা কিন্তু ছিল - 'ছেনু'। এরকম একটা অদ্ভুত নাম, মহারাজ ছনেন্দ্রনাথের কপালে জুটল কি করে, সেটাও এক অদ্ভুত বৃত্তান্ত...


    গ্লাসটা হাতে নিয়েই ছেনু বলল, যাই আমি ছাদে ঘুরতে ঘুরতে খেয়ে আসি। মা অবাক, এক্ষুণি রোদের মধ্যে ছাদে গিয়ে কি করবি ? আজ অন্তত এক জায়গায় বসে চুপটি করে খা। ছেনু তবুও অনড়, আঃ এক জায়গায় বসে খাওয়া যায়! একটু এদিক সেদিক দেখতে দেখতে খেলে তবে না ভাল্লাগে। অগত্যা মা বলেন, যাও, তবে এখন ছাদে নয়, তেতলা অব্দি যেতে পারো।

    ব্যস, এই সুযোগের অপেক্ষাতেই তো ছেনু ছিল, এক ছুটে দুধের গ্লাস হাতে তেতলার সিঁড়িতে উঠে পড়ল। এবার পা টিপে টিপে এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে সিঁড়ি দিয়ে তেতলায় পৌঁছে ভালো করে তাকিয়ে দেখে নিলো কেউ আছে কিনা। যখন দেখতে পেল চারিদিক ফাঁকা, কেউ তার দিকে নজর রাখছে না, তখন গ্লাস থেকে এমন করে এক চুমুক দুধ খেলো, যাতে চলকে কিছুটা দুধ মুখ বেয়ে নেমে আসে, তারপর একটা বিচ্ছিরি মুখ করে কোনোক্রমে ঢোঁক গিলে সেই এক চুমুক দুধ গলা দিয়ে চালান করে নিচু হয়ে বসে ড্রেনের মুখটায় বাকি দুধটা আস্তে করে ঢালতে লাগল। ঢালতে ঢালতেও কড়া নজর চারদিকে, এই বুঝি কেউ দেখে ফেলল। ধীরে ধীরে পুরো দুধটাই ঢালা হয়ে গেলে আস্তে করে উঠে আবার সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে এল।

    এটা এখন মহারাজ ছনেন্দ্রনাথের রোজকার রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোনোদিন ছাদে গিয়ে ঢেলে আসে, কোনোদিন জানলা দিয়ে, আবার কোনোদিন কোনোদিন তেতলার নর্দমায় আর মাঝে মাঝে বাথরুমে। অবশ্য ও শুরু থেকেই যে দুধ ফেলে দেওয়া শুরু করেছে তা কিন্তু নয়, প্রথম দিন দিব্যি লক্ষী ছেলের মতো খাওয়া শুরু করেছিল কিন্তু দুধটা যে এমন বিচ্ছিরি খেতে তা কে জানত! সেদিন কোনোক্রমে শেষ করা গেছিল। পরের দিন আবার হাতে দুধের গ্লাস ধরাতেই ছেনু তো আর কিছুতেই খাবে না। মায়েরও কড়া হুকুম, শেষ না করে কোনো মতেই ওঠা যাবে না। তখন আর কি করা, ছেনু একটা করে চুমুক দেয় আর পরের চুমুকের জন্য সাহস সঞ্চয় করতে করতেই পনেরো মিনিট করে কেটে যায়। এরকম তিন চার খানা চুমুকের পরে দেখা গেল এখনও প্রায় অর্ধেকের বেশি দুধ পড়ে রয়েছে। তাই দেখে মা বাকি দুধটা ঢক করে খাইয়ে দিলেন ধরে। সেই ধাক্কা সামলাতে সেদিন ছেনুর বাকি দিন লেগে গেল। পরের দিনও একই গল্প, ছেনু দুধের গ্লাস ধরে মুখ ব্যাজার করে বসে রয়েছে। এক-দু চুমুক খেয়ে আর খাচ্ছেনা। তাই দেখে মায়ের একটু দয়া হল, বললেন, যা একটু ঘুরতে ঘুরতে খা, ভালো লাগবে। ছেনু দোতলার ভেতর বারান্দায় ঘুরতে ঘুরতে নিচের দিকে তাকিয়ে মুখে একটা বিতিকিচ্ছিরি অভিব্যক্তি নিয়ে দুধটা কোনোক্রমে গলাদ্ধকরণ করছিল। এমন সময় নিচের ড্রেনের ফুটোর দিকে চোখ গেল। ছেনুদের বাড়ির মাঝখানে খানিকটা উঠোন মতো রয়েছে, তাকে ঘিরে চারিদিকে ঘর। প্রত্যেক ঘরের সামনে রয়েছে প্যাসেজ যা ধরে পুরো উঠোন প্রদক্ষিণ করা যায়। প্রত্যেক তলার প্ল্যানই প্রায় কাছাকাছি। এই দোতলার ড্রেনের ফুটোয় চোখ যেতে ছেনু চারিদিকে তাকিয়ে সাহস সঞ্চয় করে আস্তে আস্তে করে বাকি যেটুকু দুধ পড়ে ছিল, সেটা ড্রেনে ঢেলে দিল। ব্যস, সেই থেকে এটাই মহারাজ ছনেন্দ্রনাথের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত।

    কিন্তু হঠাৎ ছেনুর ওপর এই দুধের গেলাসের অত্যাচার শুরু হলোই বা কেন? জানতে গেলে পিছিয়ে যেতে হবে আরো বেশ কিছুদিন।

    চিরকালই বাইরের খাবার দাবারের প্রতি ছেনুর লোভটা একটু বেশি। এই বড়দার কাছে বায়না করে ঝালমুড়ি-ফুচকা, বেনার থেকে জিলিপি, তো কোনোদিন মায়ের কাছ থেকে জেদ করে পাঁঠার ঘুগনি আবার কোনোদিন কাকার সঙ্গে গিয়ে দ্বারিকের বিখ্যাত সিঙ্গাড়া সাঁটিয়ে আসা তো লেগেই রয়েছে। তো তার ফলে যা হয় আর কি, ছেনুর মাঝে মাঝেই পেট খারাপ করত। দুরন্ত ছেলে, ঠিকমতো হাত ধুতো কি না খাওয়ার আগে, সেটাও কেউ দেখতে পেত না। পেটের আর কি দোষ! আরও ছোটবেলায় একবার ভয়ানক ডিপথেরিয়া হওয়ায় বেলেঘাটার আই ডি হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছিল, রাম ভোগান ভোগা যাকে বলে! তার ওপর এত পেট-টেট খারাপের ফলে এখন যাকে ইমিউন সিস্টেম বলে, যা নিয়ে তখনকার দিনে কেউ মাথা ঘামাত না, সেসবও একটু দুর্বল হয়ে পড়েছিল হয়তো, তাই মরশুমি জ্বরগুলোও সবার আগে ছেনুকেই পাকড়াও করত। বাড়ির সব্বার ছোট হওয়ায় মা'র ছেনুকে নিয়ে একটা চিন্তা লেগেই থাকত। হয়তো কোনোদিন ঘরোয়া আড্ডায় সেই চিন্তা হয়তো মুখ ফুটে প্রকাশ পেয়ে গিয়েছিল, তাই পাশের বাড়ির এক বউ মাকে বুদ্ধি দিল, ছেলেটা এত ভোগে যখন, কি থেকে কি হয়, যাও না, বালিগঞ্জে একটা খুব ভালো ডাক্তার বসে, পারলে একবার গিয়ে দেখিয়ে আনো। ছেনুদের টুকটাক অসুখ-বিসুখে পাড়ার রবি ডাক্তারকেই দেখানো হত। ওনার মেয়ে ছোদ্দির সাথে এক ক্লাসেই পড়ত, তাছাড়া পারিবারিক পরিচিতির সুবাদে ছেনুদের থেকে কোনো ভিজিটও নিতেন না। তাই শুধু শুধু হঠাৎ বালিগঞ্জ অব্দি দৌড়ানোর কথা কে আর ভাববে। তাই মা শুনে টুনে বললেন আচ্ছা, ভালো কথা বলেছ, দেখা যাক।

    এরমধ্যে ছেনু আবার, কাকিমার সাথে কাকিমার বাপের বাড়ি উত্তরপাড়ায় ক'দিনের জন্য ঘুরতে গেছিল। ভালোই মজা হচ্ছিল। সেখানে গিয়ে আবার আলাপ হল ভারি করিৎকর্মা এক দাদার সঙ্গে। ফিরে আসার দিন সকালে ছেনু দেখে, সেই দাদা একটা খারাপ হয়ে যাওয়া ইস্তিরি খুলে সারাতে বসেছে, ভেতরের সব তার-টার বেরিয়ে রয়েছে, দাদার হাতে একটা 'ইস্ক্রু-ডাইভার', আর বসে বসে দাদা দুটো তার এক করছে আর পাশেই একটা পুঁচকে বাল্বে আলো জ্বলে উঠছে। দেখে তো ছেনুর ভারি মজা লেগেছে। ছেনু দাদার কাছে গিয়ে বলে, দাও না, আমিও একবার আলো জ্বালি। পারবি? তবে এই নে, বলে কোন দুটো তার কোথায় ঠেকাতে হবে দেখিয়ে দাদা তার দুটো ছেনুকে হ্যান্ডওভার করে দেয়। ছেনু তো প্রচণ্ড উৎসাহে ওই তার দুটো জুড়তেই বাল্বে আলো জ্বলবে কি, উল্টে মুহূর্তের মধ্যে দু'চোখে সর্ষেফুল দেখল! প্রচন্ড ইলেকট্রিক শকে ওর ব্রহ্মতালু অব্দি কেঁপে উঠেছে, ফলশ্রুতি গগনভেদী চিৎকার! তাই দেখে দাদা জলদি লাফ দিয়ে কারেন্টটা অফ করে দিল, নইলে যে সেদিন আরো কি হয়ে যেতে পারতো, ভগবানই জানেন। তারপর হাত সরাতে দেখা গেল তালুতে বেশ কিছুটা জায়গা পুড়ে কালো দাগ মতো হয়ে গেছে আর ছেনু থেকে থেকেই ভয়ে কেঁপে উঠছে। দাদা বললো, কি রে, ঠিক আছিস? ছেনু কোনোমতে মাথা নাড়ে। ততক্ষণে ছেনুর চিৎকার শুনে বাড়ির সবাই ছুটে এসে সেই দাদাকে খুব একচোট বকাবকি করল, এইটুকু পুঁচকে ছেলের হাতে কেউ কারেন্টের তার দেয়! দাদাও বুঝতে পেরেছে কাজটা ভুল হয়ে গেছে। যাইহোক সেদিন কাকিমার সাথে ছেনু বাড়ি ফিরে এল।

    পরদিন আজব ব্যাপার, সকালবেলা ছেনু আর বিছানা থেকে উঠতেই পারছে না, শরীর এত দুর্বল। গা-হাত-পা'য় ভীষণ ব্যাথা। মা, বড়দা, ছোড়দা, বদ্দি, ছোদ্দি সবাই ঘিরে ধরে তাকে দেখছে। বড়দা দেখে বলল, রবি ডাক্তারকে ডাকি ? মা বলল না রে, গতিক সুবিধার লাগছে না, আজকের দিনটা ও শুয়েই থাক, একটা বড় ডাক্তারের খোঁজ পেয়েছি, কাল ওকে দেখাতে নিয়ে যাব। ও সারাদিন শুয়েই ছিল, মা এসে পাশে বসে দুপুরে আর রাতে অল্প করে শিঙ্গি মাছের ঝোল আর ভাত খাইয়ে দিল। পরদিনও শরীর ভালোই দুর্বল। সেদিন পাশের বাড়ির সেই মহিলার থেকে বালিগঞ্জের ডাক্তারবাবুর নাম, ঠিকানা, ভিজিট, সময় সব জেনে পরেরদিন সকালে মা, ছোড়দা আর ছেনুকে সঙ্গে করে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে রওনা দিল ট্রেনে চেপে।

    ডাক্তারবাবু খুব ভাল করে ছেনুকে দেখলেন, কি কি হয়েছে জেনে, স্টেথো লাগিয়ে বুকের ধুকপুক শুনলেন, একটা পাদানি-র ওপর দাঁড় করিয়ে ওজন মাপলেন, পোড়া জায়গাটা দেখলেন, চোখ টেনে দেখে, নাড়ির গতিও মাপা হল। এসব করে শেষে কাগজে খসখস করে ওষুধ লিখে দিয়ে বললেন, চিন্তার কোনো কারণ নেই, ঠিক হয়ে যাবে। খুব জোরে শক পেয়েছে তো, কিছুদিন একটু দুর্বলতা থাকবে। ওষুধ গুলো খাক, মলমটা লাগাবে, সাথে চেষ্টা করবেন ওকে রোজ একটু গরম দুধ যদি দেওয়া যায়। এমনিতে খাওয়া দাওয়ায় কোনো বাধা-নিষেধ নেই কিন্তু ক'টা দিন একটু হালকা খাওয়াই ভালো। আর মাঝে মাঝে যে পেট খারাপের কথা বলছিলেন তার জন্য, যখন কিছু খাবে, ভালো করে হাত ধুয়ে খেতে হবে। ঠিক এক মাস পর আমাকে আবার দেখিয়ে যাবেন, তখন আর ভিজিট লাগবে না।

    মা ডাক্তারবাবুকে ভিজিট দিতে, উনি পকেটে রেখে ছেনুর টোবলা গালদুটো টিপে আদর করে দিয়ে বললেন, তুমি তো গুডবয়, একদম ভয় পাবেনা, চিন্তা নেই, আবার এক মাস পর চলে এসো কিন্তু। ওরা বেরিয়ে আবার বালিগঞ্জ স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে বাড়ি ফিরে এলো।

    বাড়িতে দুধ খাওয়ার তেমন চল ছিলনা, কিন্তু ডাক্তারবাবু বলে দিয়েছেন, তাই মা বাড়ি ফিরে ছোড়দার ওপর দায়িত্ব দিল, ছেনুর জন্য রোজ সকালে দুধ নিয়ে আসার। তখন দুধের প্যাকেট এরকম সব দোকানে দোকানে ঢালাও পাওয়া যেত না। ডিপোয় কার্ড করিয়ে অনেক লাইন দিয়ে নিয়ে আসতে হতো। পাঁচশো মিলির কাঁচের বোতলে রাংতার ঢাকনা দেওয়া (সেই রাংতা আবার কড়া মাজায় ভীষণ উপযোগী ছিল), খালি বোতল ফেরত দিলে ভর্তি বোতল দেওয়া হত। শেয়ালদার সরস্বতী প্রেসের কাছে হরিণঘাটার যে দুধের ডিপো ছিল, সেখানে কার্ড করিয়ে যবে থেকে ছোড়দা কাঁচের বোতলে করে দুধ নিয়ে আসা শুরু করল সেদিন থেকে শুরু হল ছেনুর ঘোর দুর্দিন।

    সেই হরিণঘাটার দুধ যে কি অখাদ্য খেতে ছিল তা আর কহতব্য নয়। চিনি টিনি ছাড়া সেই দুধ মুখে দিলে ছেনুর যেন অন্নপ্রাশনের ভাত অব্দি উঠে আসত। মা জোর করে সেই দুধ খাওয়াবেই আর ছেনুর খেতে একদমই ইচ্ছে করত না। ছেনু হয়তো কিছুটা ল্যাকটোজ় ইনটলারেন্টও ছিল, তাই আরও বেশি অসুবিধা হত, কিন্তু তখন আর এসব বিষয় নিয়ে সাধারণ লোক থোড়াই মাথা ঘামাত! তাই শুরুতে যেমনটি বলেছি, দুধ নিয়ে মহারাজের এই লুকোচুরি চলতেই থাকল। কাক-পক্ষীও টের পেত না, দুধের আসলে কী গতি হচ্ছে!

    ওষুধের গুণে বা যাই হোক দিন দশেকের মধ্যেই ছেনু মোটামুটি অনেকটা দুর্বলতা কাটিয়ে উঠল। ও যে রোজ পুরো দুধটাই ফেলে দিত তা নয়, দু-এক ঢোক খেত, তাতে করে ঠোঁটের ওপর বেশ একটা দুধের গোঁফও তৈরি হয়ে যেত, যেটা দুধ খাওয়ার বেশ জোরালো প্রমাণ হিসেবে দেখানো যেত।

    কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী আছে, লর্ড কর্নওয়ালিসের চিরস্থায়ী বন্দোবস্তও চিরস্থায়ী হতে পারেনি, সেখানে ছেনু তো কোন ছার। একদিন ড্রেনে দুধ ঢালা হয়ে গেছে প্রায়, ড্রেনের পাশে দুধের শেষ ফোঁটার ওপর গোটা কয়েক সুড়সুড়ি পিঁপড়ে খেলা করছে আর ছেনু বসে বসে তাদের দেখছে, এমন সময়ে তেতলার পিসিমা ছেনুকে দেখে ফেললেন। হাতে গ্লাস আর সামনে ড্রেনের পাশে অল্প দুধ পড়ে আছে দেখে পিসিমা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ও কি করেছ! দুধটা কি ফেলে দিয়েছ নাকি? ছেনু তাড়াতাড়ি বলে ওঠে, এই শেষটুকু পিঁপড়েগুলোকে দিলুম। কিন্তু সাফাইয়ে কাজ হলো না, দোতলায় ঠিক খবর চলে গেল, মা চোখ কপালে তুলে বলে উঠলেন, হ্যাঁ রে, তুই রোজ রোজ দুধ ফেলে দিস? ছেনু বলে, কই! না তো! রোজই তো খাই, একদিন একটুকুনি দুধ পিঁপড়েদের দিয়েছিলুম। আর দেবো না। প্রত্যক্ষ প্রমাণের অভাবে অপরাধী ছাড়া পেয়ে গেল বটে, কিন্তু পরদিন থেকে দুধের গ্লাস নিয়ে ছেনু উঠলেই মা চোখে চোখে রাখা শুরু করলেন। আর ছেনুও নিরুপায়, পুরো দুধটাই বাধ্য হয়ে খেতে হচ্ছে এখন।

    তবে আশার কথা, এর কিছুদিনের মধ্যেই আবার সেই ডাক্তারবাবুর কাছে যাওয়ার দিন চলে এল। বেশি দেরি করা যাবেনা, বলা যায়না, বেশি দেরি করে গেলে আবার যদি ভিজিট লাগে! ওইদিন ট্রেনে কি একটা সমস্যা হয়েছিল, তাই বাসে করেই ওরা বালিগঞ্জে রওনা দিল। ট্রেনে যেটা দশ মিনিটের পথ, সেখানে বাসে অনেকটাই। ডাক্তার বাবুর চেম্বারে ওদের ডাক পড়তে, মা, ছেনুকে নিয়ে ভেতরে ঢুকলেন। ডাক্তারবাবু আবার সব চেক টেক করে বললেন, কেমন আছো এখন? ছেনু মাথা নেড়ে বলে এখন একদম ভালো হয়ে গেছি। মা পাশ থেকে অনুযোগ করলেন, আপনি যে ওষুধ গুলো দিয়েছিলেন, সেগুলো তো ঠিকমতো খেয়েছে, মলমটাও লাগানো হয়েছে, কিন্তু জানেন, দুধ মোটেই খেতে চায় না। ডাক্তারবাবু ভুরু কুঁচকে ছেনুকে বললেন সেকি, তোমার দুধ ভালো লাগে না? ছেনু সুযোগ পেয়ে বলল, না, একদম ভাল্লাগে না! দুধ একেবারে বিচ্ছিরি জিনিস।
    - খাওনি তাহলে এ ক'দিন ?
    - খেয়েছি, কিন্তু একটুও ইচ্ছে করেনা খেতে।
    - তাহলে কী হবে? আচ্ছা দাঁড়াও দেখি।

    মাকে বললেন, এক কাজ করুন, এবার থেকে তাহলে ওকে দুধের বদলে ছানা দেওয়া শুরু করুন। ওই যে পাউডার পাওয়া যায়, ওটা দিয়ে কাটিয়ে নেবেন।

    এই শুনে মহারাজ মনে মনে বললেন, হুঁ, আমার বয়েই গেছে ছানা খেতে, দেখো না, এটাও আমি জানলা দিয়ে চালান করবো।

    ডাক্তারখানা থেকে বেরিয়ে ওরা ফেরার বাস ধরল। ছেনু বসেছে মায়ের কাছেই লেডিজ সিটে, ছোড়দা একটু পেছন দিকে কমন সিটে। মায়ের পাশেই বসে আছে এক অদ্ভুত পোশাকের মহিলা। গায়ে একটা সাদা জোব্বা মতন, এক পরিপাটি সাদা ঘোমটার মতো কাপড়ে মাথাটা ঢাকা, গলায় ঝুলছে রুপোলি ক্রুশ, হাতে একটা ছোট্ট কাঠের পুঁতি দিয়ে গাঁথা মালা, আর চোখে চশমা। মায়ের সাথে গল্প শুরু হতে জানা গেল উনি নাকি কলকাতা থেকে দূরে কোন একটা গির্জার সন্ন্যাসিনী। ছেনু অবাক হয়ে জানতে চায়, তোমরা ওই গির্জাতে কি করো? তিনি হেসে জানালেন, কেন, যিশুবাবার পুজো করি, প্রার্থনা করি। ছেনু আবার বলে, কি প্রার্থনা করো?
    - সবাই যাতে ভালো থাকে সেটাই চাই গডের কাছে।
    বলে ছেনুর গালদুটো টিপে আদর করে দিয়ে জানতে চান, তোমার নাম কি? বাড়ি কোথায়?

    ছেনু ভালো নামটা বলে, মা পাশ থেকে বললেন, আমরা থাকি শেয়ালদায়, এটা হচ্ছে আমার ছোট ছেলে, আর ওই যে পিছনে বসে, ওটা আমার মেজ ছেলে। সন্ন্যাসিনীর সাথে মায়ের বেশ গল্প জমে উঠেছে, মা সমস্ত ছেলেমেয়েদের কথা বলছেন, ওনার কাছে চার্চের গল্প শুনছেন, এমন সময় পিছনের দিকে চোখ যেতে ছেনু দেখল, ছোড়দার পাশের সিটটা ফাঁকা হয়েছে। বাসের মধ্যে সিট ধরে ধরে ছোড়দার পাশে গিয়ে বসে ওকে ডেকে বলল, জানিস, উনি গির্জায় থাকেন। তুই গির্জা দেখেছিস?
    ছোড়দা ঠোঁট উল্টে বলল, কত্ত দেখেছি, এই কলকাতাতেই তো কতো গির্জা আছে।
    - এটা নাকি কলকাতা থেকে দূরে। শোন না, আমায় একদিন গির্জা দেখতে নিয়ে যাবি?
    - হ্যাঁ, নিয়ে যাওয়াই যায়, তবে তুই তো এবার থেকে গির্জাতেই থাকবি, তোর আর চিন্তা কি!
    - মানে!
    - মায়ের সাথে তো ওনার কথা হয়ে গেছে, তুই দুষ্টুমি করিস তো, তাই ওনার সাথে গির্জায় পাঠিয়ে দেবে।
    - সেকি! না আমি গির্জায় থাকবো না!
    - এখন আর বললে হবে, ওই জন্যই তো তোর নাম জানতে চাইছিল। আমি এখানে বসেই সব শুনতে পেয়েছি। বিশ্বাস না হয় ওনাকে জিজ্ঞেস করে দ্যাখ।

    ছেনু প্রায় কাঁদো কাঁদো ভাব কোনো রকমে চেপে শেষমেশ ওনার কাছে গিয়ে জানতে চাইলো, তুমি কি আমায় তোমার সাথে করে গির্জায় নিয়ে যাবে?

    সন্ন্যাসিনী হেসে বললেন, যাবোই তো, চলো আজই তোমায় গির্জায় নিয়ে যাব।

    - তারপর ওখানেই রেখে দেবে ?
    উনি এবার মজাটা বুঝতে পেরেছেন, বললেন, হ্যাঁ, তুমি ওখানেই থাকবে আমার সাথে, গির্জার চারদিকে ঘুরে ঘুরে দেখবে, খুব মজা হবে।
    - মা কে আর দেখতে পাবো না?
    - না, আর তো দেখা করা যাবেনা, ওটাই নিয়ম তো!

    ছেনু আর থাকতে পারেনা, এবার ভ্যাঁ করে কেঁদে ফেলে মা-কে জড়িয়ে ধরে, মাআআআ, না আমি কোত্থাও যাবো না, তোমার কাছেই থাকবো। তুমি যা যা বলবে তাই তাই করবো।
    মা হেসে ফেলে, ছেনুকে জড়িয়ে ধরেন, একদম দুষ্টুমি করবি না তো?
    - না, একদম দুষ্টুমি করবো না।
    - ডাক্তারবাবু বলে দিয়েছে কিন্তু ছানা খেতে, রোজদিন ঠিকমতো খাবি তো?
    - রোজ রোজ খাবো, কিন্তু একটুকুনি চিনি ছড়িয়ে দেবে ওপরে।
    - ঠিক আছে, তাহলে আমি বলে দিচ্ছি অন্য কোত্থাও নয়, আমরা সবাই তাহলে বাড়িতেই ফিরে যাচ্ছি। নাও এবার চোখ মুছে ফেলো।

    তারপর থেকে রোজ ছেনু চুপটি করে ঘরে বসে চিনি ছড়ানো ছানা প্লেটে করে খেত, আর ছোড়দা ঘরে ঢুকে সেই দৃশ্য দেখতে পেলেই সুর করে করে বলতো, 'গির্জেতে হলো কাবু, ছানা খায় ছ‍্যানাবাবু'। ছড়াটা শুনেই মহারাজ তেলেবেগুনে জ্বলে উঠতেন। এই মোক্ষম ছড়াটা এতটাই জনপ্রিয় হলো যে, বাকি সমস্ত ডাকনাম প্রথমে 'ছ‍্যানা' ও পরে তারই অপভ্রংশ 'ছেনু' নামের জৌলুসের সামনে ফিকে হয়ে গেল। আর কি করা, সব প্রজারা যদি মেনেই নেয়, তাহলে মহারাজের না মেনে আর উপায় কি!


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ধারাবাহিক | ২৫ মে ২০২৪ | ৫২৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | ২৫ মে ২০২৪ ১৫:১২532308
  • জয় মহারাজ ছনেন্দ্রনাথের জয়। 
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:5c9:5188:7866:f487 | ২৫ মে ২০২৪ ১৬:০৫532309
  • দারুন! 
     
    ওই হরিনঘাটার কাঁচের বোতলের মুখে একটা ক্রিম মতো জমতো, সেটাতে আরও বোঁটকা গন্ধ হতো :-)
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ২৫ মে ২০২৪ ১৬:৩৪532310
  • দ দি, dc দুজনকেই অনেক থ্যাঙ্কু লেখাটা পড়ার জন্য :-)
     
    ওই হরিণঘাটার দুধের দিন গেছে, মঙ্গল হয়েছে, বেঁচে থাক আমূল গোল্ড। অনেক ভাল।
     
    তবে হরিণঘাটার পুরোপুরি নিন্দেও করবো না, এখন বেশ অনেক মিট প্রোডাক্ট নিয়ে এসেছে, পর্ক-টর্ক সব আছে, ভালোই।
     
  • অমিতাভ চক্রবর্ত্তী | ২৫ মে ২০২৪ ১৭:১৫532311
  • ছনেন্দ্রনাথের জীবনীর অত্যন্ত দরকারি অধ‍্যায়। চমৎকার বিবরণ। 
     
    হরিণঘাটার দুধের সোনালি ঢাকনার নিচের মাখন - আহা! এটিকে নিন্দা করার তীব্র নিন্দা জারি থাকে বাহে! 
  • হীরেন সিংহরায় | ২৫ মে ২০২৪ ১৮:৫২532315
  • সহমত! দুর্ধর্ষ লেখা কিন্তু হরিনঘাটার দুধের নিন্দা করার তীব্র নিন্দা করি! আমার সময়ে (যখন ছনের জন্মাতে বহু বছর বাকি ) হরিনঘাটার দুধ এবং অনিচ্ছাকৃত ভাবে প্রস্তুত মাখন অন্য লেভেলের ছিল। হায় সেদিন গিয়াছে ! 
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ২৫ মে ২০২৪ ১৯:৪৮532316
  • অমিতাভবাবু ও হীরেনবাবুকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই লেখাটা পড়ার জন্য। 
     
    আমি হরিণঘাটার দুধের নিন্দে মোটেই করতে চাইনি, ছেনু ব্যক্তিগতভাবে ওটা খেতে ভালোবাসতো না এটুকুই বলতে চেয়েছি। এবং কিছু সম্ভাব্য কারণেরও সন্ধান দিয়েছি যেমন, ল্যাকটোজ ইনটলরেন্স বা এরকম কোনো কারণও থাকতে পারে দুধ ভালো না লাগার পিছনে। আর চিনি ছাড়া দিত বলেও হয়তো ভালো লাগতো না ছেনুর। 
     
    আর 'হরিনঘাটার দুধ' নিয়ে আমি আমার মন্তব্যে যা বলেছি, সেটাও ফিরিয়ে নিচ্ছি, হরিনঘাটার দুধ অনেকেরই হয়তো ভালো লাগে। তাঁদের দুঃখ দিতে চাইনি।
     
  • অমিতাভ চক্রবর্ত্তী | ২৫ মে ২০২৪ ২০:০৪532317
  • রমিতবাবু, আপনার কোন দোষ নেই। আমি বা হীরেনবাবু - আমরা হচ্ছি হরিনঘাটার দুধের সোনার যুগের লোক। তাই আমাদের এই নিয়ে একটু বিশেষ আহ্লাদ আছে আর কি। laugh
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:496:5e90:4540:e63e | ২৫ মে ২০২৪ ২০:০৮532318
  • আমার ঐ ওপরের মাখনটায় খুব গন্ধ লাগতো laugh
     
    আচ্ছা, ছবিটা তো খুবই সুন্দর হয়েছে, তবে shh টা বোধায় না দিলেও হতো। (এটা আমার মত, বলাই বাহুল্য যে আমি ছবির ব্যাপারে খুব কম জানি) 
  • Somnath Pal | ২৫ মে ২০২৪ ২০:৩৯532320
  • খুব সুন্দর
  • kk | 172.56.32.178 | ২৫ মে ২০২৪ ২০:৪৯532321
  • ওঃ, এই সিরিজটা এত ভালো হচ্ছে যে কী বলবো! পড়লে মনটা খুশি হয়ে যায়। যেমন লেখা, তেমনি ছবি। আমার কিন্তু shhh লেখাটা ভালোই লাগছে। ওটা বাদ দিলেও ভালো ছবিই হবে। কিন্তু সেটা শুধু ছবি হবে। ওটা থাকলে একটা ডাইনামিসিটি আসছে। ছবিটা একটা চলন্ত গল্পের অংশ হয়ে যাচ্ছে। এমনি আমার মনে হচ্ছে।
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:3d7e:ccb:fd89:49f4 | ২৫ মে ২০২৪ ২১:০১532323
  • তাহলে তো মিটেই গেল :-)
  • kk | 172.56.32.178 | ২৫ মে ২০২৪ ২১:১৬532324
  • না না, মেটার কী আছে? এটা তো ডিসপিউট নয়। দেখছেন তো একটা ছবি কত রকম ভাবে বিভিন্ন মানুষের কাছে বিভিন্ন মানে নিয়ে আসছে? এই জিনিষটাই আমার খুব ভালো লাগে। এইজন্য ওয়েল কমিউনিকেটেড কমেন্ট আসা এত ভালো লাগে বলি। আমার কেমন মনে হয় কমেন্ট সেকশনের একটা আলাদা ও সম্পূর্ণ ইকোলজি থাকে। সেটা খুব ইন্টারেস্টিং ব্যাপার! স্টাডি করতে খুব ভালো লাগে।
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:3d7e:ccb:fd89:49f4 | ২৫ মে ২০২৪ ২১:১৯532326
  • নানা, ডিসপিউট মেটার সেন্সে বলিনি। এই যে আমার একরকম মনে হলো আবার অন্যদের অন্যরকম মনে হলো, আর একটা কমন পার্সেপশান তৈরি হলো, সেটা বললাম। 
     
    "দেখছেন তো একটা ছবি কত রকম ভাবে বিভিন্ন মানুষের কাছে বিভিন্ন মানে নিয়ে আসছে?"
     
    অবশ্যই, দ্যাট ইস দ্য এসেন্স অফ আর্ট :-)
  • :|: | 174.251.161.133 | ২৫ মে ২০২৪ ২২:২২532333
  • সত্যিই এই সিরিজটি অত্যন্ত মন ভালো করে দেওয়া। ছেনু মহারাজ যেন এইরকমই থাকেন এবং এই সিরিজ অনন্ত হয়ে ওঠে। 
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ২৫ মে ২০২৪ ২৩:২৬532334
  • সোমনাথবাবু ধন্যবাদ।
     
    কেকে, 
    আপনার উৎসাহ পেয়ে ভীষণ ভালো লাগল, ছবিটা নিয়ে আপনি, dc আর অমিতাভবাবু বেশ আলোচনা করেছেন, এটাও খুব ভালো লাগল। সত্যি যে কোনো শিল্পকে পাঠক বা দর্শকরা নিজের মতো করে ইন্টারপ্রেট করে নেবেন এটাই স্বাভাবিক, কোনো ফাইনাল বক্তব্য বা সেটল হওয়ার প্রশ্নই নেই। 
    তাছাড়া এই যে ডিরেক্ট ফিডব্যাক পাওয়া পাঠকদের থেকে, আবার বিষয় থেকে বিষয়ান্তরে চলে যাওয়া, এই কারণেই কমেন্ট সেকশন পড়তে এতো ভালো লাগে, একটা আলাদা ইকোলজি তৈরি হয়ে যায়, ঠিকই বলেছেন।
     
    চতুর্ভুজ, 
    অসংখ্য ধন্যবাদ পড়ে ভালোলাগা জানানোর জন্য। ছেনু মহারাজের যত গুলো ঘটনা পারি অবশ্যই শেয়ার করার চেষ্টা করব। :-)
  • Kishore Ghosal | ২৬ মে ২০২৪ ১৫:০৭532348
  • ছেনু মহারাজের জয় হোক -  প্রত্যেকটি পর্বেই  সরল শৈশবের সুন্দর ছবি...চলতে থাকুক...
  • Suvasri Roy | ২৬ মে ২০২৪ ১৫:২২532350
  • ছনেন্দ্রনাথ বড় হয়ে কী করেন?!
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ২৬ মে ২০২৪ ১৫:৪৭532353
  • @কিশোরবাবু, অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনাদের মন্তব্য গুলোই নতুন নতুন পর্ব লেখার উৎসাহ দেয় :-)
     
    @শুভশ্রী রায়, এ বাবা, এখন সব বলে দিলে হবে, একটা পুঁচকে বাচ্চার কাণ্ড কারখানা বলছি, বড় হওয়ার কথা আসছে কই। ওটা এখন সিক্রেট থাকুক, নইলে ছনেন্দ্রনাথের কথা বললেই অন্য একটা লোকের ইমেজ চলে আসবে পাঠকদের কাছে। 
  • পাপাঙ্গুল | ২৬ মে ২০২৪ ২২:৩১532355
  • ছনেন্দ্রনাথদের বয়স কখনো বাড়ে না। 
  • Amit Chatterjee | ২৮ মে ২০২৪ ০৯:২২532429
  • অসাধারণ একটি সিরিজ পড়ছি, ছেলেবেলার অতি সাধারণ ঘটনাগুলোকে এমন উপভোগ্য ভাগে ফিরিয়ে আনা হয়েছে তা সত্যিই তারিফযোগ্য। আগেরগুলো থেকে পড়া শুরু করে, এখন আগামী লেখা আসার অপেক্ষায় থাকি। 
    সঙ্গের ছবিগুলোও খুব সুন্দর হচ্ছে।
  • &/ | 151.141.85.8 | ২৯ মে ২০২৪ ০১:০১532462
  • খুব চমৎকার লেখা! সিরিজটা সত্যি খুব খুব খুব ভালো।
  • aranya | 2601:84:4600:5410:8900:1171:1934:d484 | ২৯ মে ২০২৪ ০৯:১৫532470
  • খুব খুব ভাল
  • aranya | 2601:84:4600:5410:8900:1171:1934:d484 | ২৯ মে ২০২৪ ০৯:১৭532471
  • ছনেন্দ্রনাথের ফ্যান আমরা সবাই। দারুণ লেখা + ছবি 
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ২৯ মে ২০২৪ ১২:৩০532478
  • অমিত চ্যাটার্জী, &/ ও অরণ্য বাবুকে অনেক অনেক ধন্যবাদ পাশে থাকার জন্য। ভীষণ ভালো লাগে আপনাদের থেকে মন্তব্য গুলো পেলে।
    :-D
     
  • aranya | 2601:84:4600:5410:ed05:58d3:76b2:b551 | ৩০ মে ২০২৪ ২১:৫৩532513
  • রমিত, বাবু-টা বাদ দাও। 
    গুরুচন্ডালি অত্যন্ত প্রিয় ফোরাম। তোমার মত প্রতিভাবান লেখক ও  শিল্পী গুরুতে আসায় খুবই খুশী :-)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল প্রতিক্রিয়া দিন