পরের দিন খুব ভোরবেলাতেই ভল্লার ঘুম ভেঙে গেল। আজ বেশ সুস্থ বোধ করছে সে। শরীরের ব্যথা, বেদনা – গ্লানি নেই বললেই চলে। বিছানায় উঠে বসল, তারপর ধীরে ধীরে ঘরের বাইরে এল। ভোরের আলো সবে ফুটেছে, বাইরের গাছপালার ডালে ডালে পাখিদের ব্যস্ততা টের পাওয়া যাচ্ছে তাদের কলকাকলিতে। হাওয়ায় সামান্য শিরশিরে ভাব। বিছানায় ফিরে গিয়ে সে গায়ের চাদরটা তুলে নিয়ে গায়ে জড়াল। দড়ি থেকে টেনে নিল গামছাটা – কষে বেঁধে নিল মাথায়। তারপর...
বিগত চার দশকের রাজনৈতিক স্লোগান ও দেওয়াললিখন
... কোথায় গেল আজ সূর্যতিলক আর কোথায় ফার বনে মরেছে কাক নবমীমিছিলের অস্ত্র ঝনঝনে পকেটে গেল না কি পনেরো লাখ?...
হঠাৎ কোনো প্রসঙ্গে মাথা চুলকে ওঠে। তা নিয়ে রম্যরচনা জাতীয় কিছু লিখে ফেলি। তবে সেসব রসে রম্য বা আঙ্গিকে রচনা পদবাচ্য হয় কিনা জানিনা। ভার্চুয়াল ডায়েরিতে দেখি এই ডিজিটাল ডায়েরিয়াটি লিখেছিলাম আজ থেকে ঠিক চার বছর আগে - ১লা জুন ২০২০. তখন ছিলাম মনিপাল, কর্ণাটকে। তবে এটার মূল প্রতিপাদ্য আজও রিলেভ্যান্ট। ভবিষ্যতেও থাকবে
আর কয়েকটা পরিবর্তন হয়েছে। ফুটবল খেলার মাঠে লোক নেই। সেখানে কিছুটা ঘিরে ঈদগাহ তলা। বেনে পাড়া বামুনপাড়ায় খেলার জায়গা ছিল না। দুটি পরিবার হাওড়া প্রবাসী হওয়ায় জায়গা মেলে। ছোটখাটো খেলার মাঠ হতেই পারতো। সেখানে এখন বড় দুর্গামন্দির। শিবমন্দির ছিল আগে মাটির। এখন শিব আর ওলাইচণ্ডীর আলাদা ঘর হয়েছে। আগে দুর্গাও ওখানে আসতেন। শিব লিঙ্গ সারা বছর থাকে। ওলাইচণ্ডীর বিসর্জন হয়। দুর্গারও। তবু আলাদা দুটি মন্দির।
সকাল থেকে অন্ধকার হয়ে আছে আকাশ। কে বলবে এটা মে মাস ? বুথের ভেতরে ছ জন কর্মী , হলে আমরা চারজন । শুধু ভোটার কম পড়িয়াছে ! অনেকদিন আগে দেশে দেখা একটা ছবি মনে পড়ে গেল – আই এস জোহরের একটা কলাম ছিল ফিল্ম ফেয়ারে , তাতে কার্টুন :ফার্স্ট ক্লাস কামরায় একজন যাত্রী বসে আছেন তাঁকে ঘিরে কন্ডাক্টর , চা ওলা সহ আরও কয়েকজন । নিচে মন্তব্য - উই অলওয়েজ হ্যাভ মোর পিপল সারভিং ওয়ান কাসটমার !সারা দেশের ভোট গণনা শেষ হতে সকাল। প্রিসাইডিঙ অফিসার একেক বার মাইক দখল করে ওয়ার্ড বাই ওয়ার্ড ফলাফল ঘোষণা করেন । দশটি আসনের ন’টিতে লিব ডেম বিজয়ী। সবচেয়ে বড়ো সাফল্য- বারো বছরের সিটিং কাউন্সিলর ন্যাপহিলের পোস্ট মাষ্টার সাজ হুসেনকে হারালেন স্থানীয় রাজনীতিতে সম্পূর্ণ নতুন চেহারা জন পিয়ারস । তিনি ও আমি একত্রে জন গণেশের দুয়ার প্রদক্ষিণ করেছি কিন্তু ভাবতে পারি নি ষাট পেরুনো এক রিটায়ার্ড আই টি এঞ্জিনিয়ার সমাজে পরিচিত মুখ এক পোস্ট মাষ্টারকে দুশো ভোটের ব্যবধানে তাঁর আসন থেকে সরাতে পারবেন ! বোধহয় লেবার প্রধান মন্ত্রী হ্যারলড উইলসন বলেছিলেন, এ উইক ইজ এ লং টাইম ইন পলিটিক্স।
মাউশির আইন আর ভিকারুন্নেসার আইন আলাদা! মাউশি যে বয়স সীমা দিয়েছে তার সাথে ভিকারুন্নেসার বয়স সীমার পার্থক্য আছে! এইটা অনেক অনেক অভিভাবকই জানে না। কেউ জানলেও মাউশি যেহেতু আবেদন করতে দিয়েছে দেখি আবেদন করে। আইনে না হলে বাতিল হয়েই যাবে, সমস্যা কী? সমস্যা হল ভিকারুন্নেসা তাদের আলাদা বয়স সীমা মাউশিকে জানায় নাই, নিজেরাও কোন উদ্যোগ নেয় নাই। ফলাফল? ১৬৯ জন শিশুর সুযোগ হয়ে গেছে প্রথম শ্রেণীতে ভর্তির! এরপরেও যদি দুই পক্ষ এইটার সমাধানের চেষ্টা করত তবুও বছরের মাঝে এসে এমন বিপদ তৈরি হত না এই ফুলের মতো শিশু গুলোর। লটারিতে টিকলেই তো হল না, বাচ্চার কাগজ পত্র সব ঠিক আছে কি না এগুলা যাচাই বাছাইয়ের ব্যাপার আছে না? ভিকারুন্নেসা এই যাচাই বাছাইয়ের কাজও সফল ভাবে করেছে। তখনও বাদ দেয় নাই এদেরকে! তখন বাদ দিলে এই অভিভাবকেরা একটু ঘাইঘুই করে মেনে নিত হয়ত। ভিকারুন্নেসা যুক্তি দেখাতে পারত যে আমাদের এখানে এই বয়স সীমা, এর বাহিরে আমরা নিব না। কিন্তু তা হয়নি। এদেরকে ভর্তি করা হয়েছে। বাচ্চারা ক্লাসও শুরু করেছে। ভিকারুন্নেসা তখন কেন এইটা করতে পারে নাই? তখন মহামান্য মাউশি ধমক দিয়ে বলেছিল তাদের আইনই আইন, এর বাহিরে কেউ আলাদা করে ভর্তির জন্য নতুন আইন তৈরি করতে পারবে না। আমার বন্ধু নিজে মাউশিতে গিয়েছিল, ওকেও মৌখিক ভাবে বলে দেয় যে সোজা ভর্তি করায় ফেলেন, আমরা যা বলছি ওইটাই ঠিক!
খবরে প্রকাশ, রাজধানী ঢাকার সৌন্দর্য পরিবর্ধনে বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নিয়েছে ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশান। এর মধ্যে একটি প্রজেক্ট ১৯১৯ কোটি টাকার। যার আওতায় রয়েছে খেলার মাঠ, কমিউনিটি সেন্টার, পুকুর আধুনিকায়নের পরিকল্পনা, যার বাস্তবায়ন দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া কালুনগর, জিরানি, মান্দা ও শ্যামপুরে খাল নির্মাণেও অনুষ্ঠিত হচ্ছে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ; সীমানপ্রাচীর, যানবাহন ও পথচারী চলার জন্য সেতু, পায়ে চলার পথ, পাবলিক টয়লেট, প্লাজা, সাইকেল লেন, আর বৈদ্যুতিক বাতির থাম – সব কিছু দাঁড়িয়ে যাচ্ছে ছায়াছবির মত। একই সাথে অনেক কিছু উধাও হচ্ছেও ছায়াছবির মত; যেমনঃ পুকুর বা খালের উন্নয়নে টনকে টন কংক্রিট গেলে দেয়া হচ্ছে পার্শ্ববর্তী সব সবুজকে উচ্ছেদ করে!
'নিও-লেফট' বামপন্থার তাত্ত্বিক রেমন্ড উইলিয়ামস, তার বহুপঠিত 'অ্যাডভার্টাইজিং: দ্য ম্যাজিক সিস্টেম' নিবন্ধে দেখিয়েছিলেন, কিভাবে সমাজপরিমন্ডলের ব্যক্তিমানুষ পুঁজিতন্ত্রের দৌলতে 'বিষয়' হয়ে ওঠে, হয়ে ওঠে 'নির্বাচক'মাত্র এবং স্বয়ম্ভূ 'জনতা'র সার্বভৌম অবস্থান থেকে সে হয়ে ওঠে 'জনমত' নামক একরৈখিক, সমসত্ত্ব কন্ঠস্বর। সিদ্ধান্ত গ্রহণ গণতন্ত্রের একটি ফাংশনে' পর্যবসিত হয়, কিন্তু সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রণোদনা জোগানোর জন্য একটি নতুন ব্যবস্থা কায়েম করা হয়, যাতে করে সংখ্যাগরিষ্ঠকে একটি বিশেষ শাসনকাঠামো নির্মাণের লক্ষ্যে সংগঠিত করা যায়, তৈরি করে নেওয়া যায় নিজেদের প্রয়োজনীয় 'জনমত'। এই ব্যবস্থায় সংখ্যাগরিষ্ঠকে জনপিন্ড হিসাবে দেখা হয়, যাদের মতামত, জনসমূহ হিসাবে গৃহীত হবে, ব্যক্তি হিসাবে নয়, এই রূপান্তর 'বিজনেস অফ গভর্নেন্সের' একটি জরুরী ফ্যাক্টর। ব্যবহারিক পরিপ্রেক্ষিতে, এই রাজনীতি, বৃহৎ-পুঁজি, আমলাতন্ত্র ও বিজ্ঞাপনীজগতের মিলিঝুলি জাদুকাঠামো দীর্ঘ সময়ের জন্য সফলও হতে পারে, কিন্তু সামাজিক সমস্যাগুলি বর্ণনা করা ক্রমশ কঠিন হয়ে ওঠে, যেহেতু প্রচারকের পেশা এবং প্রচারকের বাস্তবতার ব্যবধান রয়েছে। অধিকন্তু, শাসক একটি অত্যাধুনিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় প্রকৃত ক্ষমতার জন্য ক্রমবর্ধমানভাবে আগ্রাসী ভূমিকা নেওয়ার ফলে, পুরানো সামাজিক-রাজনৈতিক প্রশ্নগুলি অপ্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে এবং, নয়া অর্থনৈতিক ব্যবস্থার রক্ষণাবেক্ষণ সমস্ত সামাজিক কার্যকলাপের মূল উদ্দেশ্য হয়ে ওঠে।
মন চায় বামের ভোট বাড়ুক। কিন্তু নরেন্দ্র মোদির ভারতে সম্ভবনার শিল্পে কি সে লেভেল প্লেয়িং গ্রাউন্ড আছে যেখানে বামেরা খেলতে পারে ? স্বতন্ত্র শক্তি হিসেবে বামেদের ভূমিকা এমনকি এই বাইপোলার পরিস্থিতিতেও অনস্বীকার্য। তাই তাদের ভোট দেওয়াটাও গুরুত্বপূর্ণ। খেলার ছলে কেই বা নেবে কৃষক আন্দোলনের অন্যতম চালিকা শক্তি বামেদের? মুশকিল হল ২০২৪ য়ের সাধারণ নির্বাচনে বামেদের বড় অংশকে বেশির ভাগ আসনেই ইন্ডিয়া জোটের আঁতাতের বাইরে প্রার্থী দিতে দেখা গেছে। সবচেয়ে বড় বাম দল সি পি আই এম দিয়েছে মোট বাহান্নটা আসনে। তার মধ্যে কেরালার পনেরোটা সিটে আর বাংলার তেইশটা যথাক্রমে কংগ্রেস আর তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। ইন্ডিয়া জোটের নেতৃত্ব এই শরিকি লড়াইয়ে ভাবিত নয় কারণ এই দু রাজ্যে জোট করতে যাওয়ার বাস্তবতা নেই। উল্টে করতে গেলে বিরোধী স্পেস বিজেপি খেয়ে নিতে পারে। এ কথাটা কেরালা আর পশ্চিম বাংলা এই দু রাজ্যে শুধু নয় পাঞ্জাবের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। সেখানেও রাজ্যে ক্ষমতায় থাকা আপ আর কংগ্রেসের মধ্যে দা কাটারি সম্পর্ক। অর্থাৎ যেখানে নির্বাচনী জোট হয়নি সেখানে নির্বাচন পরবর্তী জোটের কথাই ইন্ডিয়া জোটের নেতৃত্বের মাথায় আছে। সে কথা মাথায় রেখে, পশ্চিম বঙ্গে দুই যুযুধান ইন্ডিয়া শরিক তৃণমূল কংগ্রেস আর বামফ্রন্ট-কংগ্রেস ভোট পরবর্তী অবস্থান নিয়ে এখনই বিতর্কে মেতেছে। উদ্দেশ্য নিজের নিজের ভোট ব্যাংক চাঙ্গা রাখা।
আশির দশকে যাদবপুরের কয়েকটি ছাত্রছাত্রী শুশুনিয়া পাহাড়ে গেছে শৈলারোহণ অভ্যাস করতে - সেই ভিত্তিতে এই আখ্যান … অমিয়দা বললেন, "কী বলতে চাইছি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছো। ক্লাইম্বিং জগতে ওনারা মহাপুরুষ। নমস্য ব্যতিক্রম। অনেকেই পাহাড়ে দূর্ঘটনায় অকালে প্রয়াত। আমরা সাধারণ মানুষ। তাই চলবো সুরক্ষা নিয়ম মেনে। কী মনে থাকবে, তো?" শৈলারোহণ যে মোটেও ছেলেখেলার বিষয় নয় তা অমিয়দা দুটো বাস্তব উদাহরণ দিয়ে প্রাঞ্জল ভাবে বুঝিয়ে দিলেন …
সেদিন ছিল ২০০২ সালের ২৬ অক্টোবর। একদম সকাল সকাল একটা খুন হল জামবনির জামুই গ্রামে। দিবাকর মালাকার নামে এক স্থানীয় সিপিআইএম নেতা তাঁর দুই সঙ্গী মানিক শতপথী এবং হেনা শতপথীর সঙ্গে মোটরসাইকেলে চেপে যাচ্ছিলেন। সকাল সাতটা-সাড়ে সাতটা হবে। দিবাকর মালাকার ছিলেন বাসু ভকতের অনুগামী এবং এলাকায় যথেষ্ট প্রভাবশালী নেতা। অত সকালে আক্রমণ হতে পারে ভাবতে পারেননি। খুব কাছ থেকে দিবাকর মালাকারকে গুলি করা হয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হল দিবাকর মালাকারের।
শিরোনাম দেখে মনে হতে পারে লেখাটি “নীল দর্পণ” দ্বারা অনুপ্রাণিত। কিন্তু মক্ষী দর্পণে কোনো জ্বলন্ত আর্থসামাজিক বিষয়ে আলোচনা করা হয়নি। সে যোগ্যতাও আমার নেই। এটা ভোটের বাজারের হুল্লোড়ে পরিবেশিত একটি পাতি রম্যরচনা। এই ডিসক্লেমার সত্ত্বেও যদি কেউ লেখাটি পড়েন এবং বিরক্তির উদ্রেক হয় অনুগ্ৰহ করে আমায় গাল দেবেন না
সত্যজিৎ ঘরে-বাইরেতে সন্দীপের গলায় কিশোরকুমারকে গিয়ে গান গাইয়েছিলেন। কেন গাইয়েছিলেন? আপনারা সক্কলেই ঘরে-বাইরে পড়েছেন। ফলে আলাদা করে বলার কিছু নেই, রবীন্দ্রনাথের দুখানা উপন্যাস খুবই প্রচারধর্মী, গোরা এবং ঘরে-বাইরে। গোরাতে প্রায় চোঙা ফুঁকে ভালো-ভালো কথা বলা হয়েছে। ঘরে-বাইরেতে অতটা নয়। কিন্তু তাতেও, সেটা প্রায় কুরুক্ষেত্র। রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং নিখিলেশ হয়ে সন্দীপকে শৈল্পিক কথার মারপ্যাঁচে নানা ব্রহ্মাস্ত্র ঝেড়েছেন। বিমলা বেচারি সেই যুদ্ধক্ষেত্রে প্রায় উলুখাগড়া। তাকে বাদ দিলে ওটা আর উপন্যাস না হয়ে 'স্বদেশী বিষয়ক আবর্তক ও নিবর্তক সম্বাদ' হয়ে যেত, তাই রাখা।
আজকের যুগে দাঁড়িয়ে যেখানে তরুণ থেকে বয়স্ক সবাই নিয়মিত ইন্টারনেটে আনাগোনায় স্বচ্ছন্দ সেখানে নিজেদের সম্ভাব্য ভোটারকে টার্গেট করতে সমস্ত রাজনৈতিক দলই নিজেদের আইটি সেল তৈরি করে ফেলেছে। কারও আইটি সেল বেশি সক্রিয়, কারও কম, তবে প্রত্যেকেই অঞ্চল বুঝে, অডিয়েন্স বুঝে, কোন মাধ্যমে বলা হচ্ছে তার ওপর ভিত্তি করে ভিন্ন ভিন্ন ধরণের প্রচার কৌশল নিয়ে থাকে। কিন্তু কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের আইটি সেল অনেক আগেই তাদের কার্যকলাপ শুরু করায় সেই পরিমাণ সাফল্য পেতে বা ততটা নেটওয়ার্ক তৈরি করতে বাকিদের আরোও বেশি কাঠখড় পোড়াতে হবে।
১৯৪৮ সালে র্যালফ আলফার ও রবার্ট হারম্যান দেখালেন, যে, গ্যামোর তত্ত্ব যদি সত্যি হয়, তাহলে সেই মহাবিস্ফোরণের কিছু অনুরণন এখনো খুঁজে পাওয়া উচিত। শক্তি বা তড়িচ্চুম্বকীয় তরঙ্গের ক্ষেত্রে এই অনুরণনটা হবে কৃষ্ণবস্তু বিকিরণ, যার উষ্ণতাও তাঁরা হিসেব করলেন, মান বেরোলো ৫ কেলভিনের মতন। ৫ কেলভিন মানে ‘–২৬৮° সেলসিয়াস’, অর্থাৎ মহাকাশ খুবই ঠান্ডা জায়গা। কিন্তু মহাবিশ্ব বরাবর এমন ঠান্ডা ছিল না। বিগ ব্যাং তত্ত্ব বলে, অতীতে মহাবিশ্বের আয়তন যখন খুব ছোটো ছিল, তখনো এই অনুরণনটা কৃষ্ণবস্তু বিকিরণই ছিল, কিন্তু তার তরঙ্গদৈর্ঘ্য ছিল অনেক কম, অর্থাৎ এক একটা ফোটনের শক্তি ছিল অনেক বেশি। যত দিন গেছে, এই বিকিরণ ঠান্ডা হয়ে এসেছে। অর্থাৎ, এই বিকিরণ খুঁজে পাওয়া গেলে আর উষ্ণতা হিসেবের সঙ্গে মিলে গেলে তা ‘বিগ ব্যাং’ তত্ত্বের পক্ষে অকাট্য প্রমাণ হবে।
“অরুণাভ দাস। আপনাদের তো দেখেছি, গত মাসে মিস্টার শর্মার ছেলের বার্থডে পার্টিতে। গেছিলেন না?” পরিস্কার বাংলায় বলল ডাক্তার। “হ্যাঁ, কিন্তু…,” অরুণাভর কথা শেষ হল না, ইন্দ্রনীল হাত তুলে তাকে থামাল। “আপনার শার্ট, টাই আর স্যুট ছিল ডিফরেন্ট শেডস অফ ব্লু। আর ম্যাডাম,” বিনীতার দিকে তাকাল সে, “আপনি পরেছিলেন একটা লাল গর্জাস শাড়ি।” “বাব্বা, আপনি তো দারুণ লোক। গত মাসে পার্টিতে একবার দেখলেন, আর তাদের ড্রেস, শাড়ি সব মনে করে রাখলেন,” বলল অরুণাভ। “শুধু শাড়ি না, আরো অনেক কিছু বলতে পারি।” “মানে?” ভ্রূ কুঁচকে গেল বিনীতার।
লোকসভা ভোট শেষ দফায়। এবার ভোটে উত্তুঙ্গ কোনো উদ্দীপনা ছিলনা, ছিলনা কোনো হাওয়া, চাপা এক উৎকণ্ঠা নিয়ে ভোট হয়েছে। সেই ধারা শেষ দফায়ও অব্যাহত। রাজনৈতিক পটচিত্রে উত্তেজনার অবশ্য কোনো অভাব হয়নি। অভাব হয়নি নাটকীয়তার। ভোটের ঠিক আগে নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত রায় এসেছে সুপ্রিম কোর্টের। নির্বাচনের মধ্যেই এসেছে কলকাতা হাইকোর্টের পরপর দুটি রায়। একটিতে বিপুল সংখ্যক রাজ্য সরকারি শিক্ষককে কর্মচ্যুত করা হয়েছে, অন্যটিতে ২০১০ সালের পর পশ্চাদপদ অংশের সংরক্ষণকে একরকম করে বাতিল করা হয়েছে। দুটির চূড়ান্ত রায়ই অবশ্য সুপ্রিম কোর্টে ঝুলে। সন্দেশখালি ভোটের আগে থেকেই শিরোনামে। কিন্তু ভোটের মধ্যে এসেছে নতুন চমক। গঙ্গাধর কয়ালের এবং আরও কয়েকটি ভিডিও ফাঁস হয়ে ভাইরাল। এসেছে স্বয়ং রাজ্যপালের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ।
পায়েল কাপাডিয়ার ছবিতেও এই রাজনৈতিক সচেতনতার আভাস পাওয়া যায়। তাঁর ছবির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল রাজনীতি আর ব্যক্তিগত জীবন সমান্তরাল ভাবে চলে, এমনও মনে হতে পারে যেন দুটো ভিন্ন কাহিনি। রাজনীতি বলতে দলীয় মিটিং, মিছিল নয়, কোন ইস্যু, বিক্ষোভ, প্রতিবাদকে পূর্বনির্ধারিত দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখা নয়, নির্মোহ ভাবে বৃহত্তর ও ব্যক্তিগত পরিসর কে ফুটিয়ে তোলা। পায়েল আগেও কান উৎসবে অংশগ্রহণ করেছেন, পুরষ্কার জিতেছেন। ২০১৭ সালে তাঁর ‘আফটারনুন ক্লাউডস’ একমাত্র ভারতীয় ছবি যা উৎসবে নির্বাচিত হয়েছিল। ২০২১ সালে তাঁর তথ্যচিত্র ‘আ নাইট অফ নোইং নাথিং’ সেরা ডকুমেন্টারি ছবির জন্য ‘গোল্ডেন আই’ পুরষ্কার পায়। এই ছবিতে ২০১৫ সালে FTII এ মহাভারত-খ্যাত গজেন্দ্র চৌহানকে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ করার প্রতিবাদে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল তা দেখান হয়েছে। প্রসঙ্গত পরিচালক নিজে এই আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলেন যার জন্য তিনি প্রায় সাড়ে চার মাস ক্লাস বয়কট করেছিলেন এবং তাঁর অনুদানও বন্ধ হয়ে গেছিল। ছাত্রদের এই প্রতিবাদ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়ে। এরই মধ্যে এক কলেজের ছাত্রী তার প্রেমিকের অনুপস্থিতি অনুভব করছে। একই চিঠিতে সে লিখছে ক্যাম্পাসে কী হচ্ছে সে বুঝে উঠতে পারছে না, হয়তো স্ট্রাইক করার জন্য তাঁদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। মুসলিম যুবককে চোখ বেঁধে, কোমরে পিস্তল ঠেকিয়ে পুলিশের জিপে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, একই সাথে মেয়েটি চিঠিতে তার চারিপাশের বাস্তব, কল্পনা, স্বপ্ন, ফ্যান্টাসি উজাড় করে দিচ্ছে। এই ভাবে পরিচালক পলিটিকাল আর পারসোনালের মধ্যে আন্তসম্পর্ক খুঁজছেন, বোঝার চেষ্টা করছেন।
আশির দশকে যাদবপুরের কয়েকটি ছাত্রছাত্রী শুশুনিয়া পাহাড়ে গেছে শৈলারোহণ অভ্যাস করতে - সেই ভিত্তিতে এই আখ্যান … অমিয়দা বললেন, "আমি তোমাদের রক ক্লাইম্বিং কোর্সে যাইনি। তাই এখন সরাসরি পাথরে গিয়ে চড়ার আগে শৈলারোহণের যে কিছু নিয়মকানুন আছে, যা তোমরা কোর্সে শিখেছো সেগুলো একটু ঝালিয়ে নেওয়া যাক। তোমরা হয়তো জানো শৈলারোহণ ব্যাপারটা শুরু হয়েছিল ইওরোপে, বলা ভালো মূলতঃ ব্রিটেনে। তাই এখোনো বহু দেশে ব্রিটিশ মাউন্টেনিয়ারিং কাউন্সিল বা BMC প্রবর্তিত ক্লাইম্বিং টেকনিক, প্রোটোকল, সুরক্ষা নিয়ম, ইকুইপমেন্ট স্পেসিফিকেশন ইত্যাদি গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে বিবেচিত হয়। তার কারণ ব্রিটিশরা খুব মেথডিক্যাল।" …
সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমির (সিএমআইই) তথ্য দেখায় যে, ২০০৩ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত, গুজরাটে এই ধরনের বিনিয়োগকারী সম্মেলনগুলিতে দেওয়া প্রতিশ্রুতির মাত্র ২৫ শতাংশ দিনের আলো দেখেছিল৷ অনেক বিজেপি শাসিত রাজ্য একে মডেল হিসাবে গ্রহণ করেছে। যেমন -- হ্যাপেনিং হরিয়ানা, মোমেন্টাম ঝাড়খণ্ড, রিসার্জেন্ট রাজস্থান ইত্যাদি। উত্তরপ্রদেশ (ইউপি ইনভেস্টর সামিট), পশ্চিমবঙ্গ (বেঙ্গল গ্লোবাল সামিট), ঝাড়খন্ড এবং ওড়িশাও বিনিয়োগের উপযুক্ত গন্তব্য হিসাবে নিজেকে তুলে ধরার জন্য ভাইব্রেন্ট গুজরাট সামিটের অনুরূপ সংস্করণ আয়োজন করেছে। কিন্তু সব জায়গাতেই একই কান্ড– বড় বড় ঘোষণার কিছুকাল পর দেখানোর মতো কিছু নেই। ইভেন্টের সময় যে মৌ (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়, খুব কমই প্রকৃত বিনিয়োগ হয়, কারণ মৌগুলির কোনও আইনি বাধ্যবাধকতা নেই। এই জাতীয় শোগুলির পর বলার মতো কর্মসংস্থান যে হয় এমন কোনও বিশ্বাসযোগ্য তথ্যও নেই।
আগে মাঝেমধ্যে টুকটাক ঢুকলেও গুরুতে প্রথম মজলুম ২৮.১০.১৮ সন্ধ্যায়। সেদিন ২৪.৭.১৪তে শিবাংশু লিখিত “আমাকে তুই আনলি কেন…” চোখ পড়লো। খানিকটা পড়েই জমে গেলাম। অতঃপর অনেক রাত অবধি ২১ পর্বের ১১ হাজার শব্দেরও বেশী সেই লেখা একলপ্তে পড়ে শেষ করলাম। শুধু তাই নয়, মাঝে মাঝে থাকতে না পেরে, তার কিছু কিছু ভালো লাগা অংশ কপি করে হোয়াতে পেষ্ট করে মুষ্টিমেয় কজন বন্ধু এবং এক প্রাচীন বান্ধবীকেও পাঠিয়েছি। শিবাংশু গুরুতে (আপাতত) শেষ লেখাটি লেখেন ২০.৩.২১ - “স্বপনে তাহারে” - বিখ্যাত ডিডেকটিভ গল্প লেখক স্বপনকুমার প্রসঙ্গে। বর্তমান খাজা রচনাটি সেটি হতে অনুপ্রাণিত
গুজরাত দাঙ্গার সময় রাস্তায় উন্মত্ত হিন্দু গোষ্ঠীর লোকেরা শুধু স্থানীয় মুসলমানদেরই হত্যা করেনি, এক হাজারের বেশি ট্রাকও জ্বালিয়ে দিয়েছিল। জেনারেল মোটরস কারখানায় তৈরি জাহাজে পাঠানো ‘ওপেল অ্যাস্ট্রা’ গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার খবর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে হেডলাইন হয়েছিল। এক হিসাবে দেখা যায় দাঙ্গায় গুজরাটের দু’হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছিল। ওই সাম্প্রদায়িক হিংসা আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের ভীতিগ্রস্ত করে তোলে। শিল্পপতিদের ধারণা ছিল পরে গোলমাল আরও বাড়বে। সেই বছর সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে গুজরাতে ফরেন ডায়রেক্ট ইনভেস্টমেন্ট (এফডিআই) আসা একেবারে বন্ধ হয়ে যায়।
ঘরে এলে নাকি গেলে দেহলীটি ছুঁয়ে? নিশ্চিত না জানি। যেই পথে তুমি গেলে সাগরের ঢেউয়ে --- সেই পথে আমি তো উজানী !
সম্ভবত, কোনও ভোটার যাতে পোলিং বুথে ঢুকে ছবি তুলতে বা ভিডিও করতে না পারেন, সেই জন্যই মোবাইল ফোন, ক্যামেরা বা এই ধরনের কোনও রকম বৈদ্যুতিন যন্ত্র নিয়ে বুথে প্রবেশের ওপরে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কিন্তু, ভিডিও বা ছবি তো নির্বাচনী স্বচ্ছতার জন্য আরও বেশি করে প্রাসঙ্গিক। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরায় বুথের অভ্যন্তরের বিভিন্ন অনৈতিক কার্যকলাপের দৃশ্য ধরা পড়েছে। পোলিং অফিসারদের হুমকি দিয়ে সম্মিলিত ভাবে বুথ জ্যাম, দেদার ছাপ্পা – এসব ঘটনা তো আমাদের কাছে অতিপরিচিত। তাই বুথের ভেতরে যদি কেউ বা কয়েকজন মিলে গণ্ডগোল পাকানোর চেষ্টা করে, ভোটারদের কাছে ফোন থাকলে সেটার ছবি তোলা বা ভিডিও করা যাবে তৎক্ষণাৎ, যেটা পরে প্রমাণ হিসাবে ব্যবহার করে অপরাধীদের ধরার ক্ষেত্রে সেগুলো কাজে লাগতে পারে। শুধু ইভিএম মেশিনে একজনের ভোটদানের দৃশ্য যাতে অন্য কেউ না তুলতে পারে, সে বিষয়ে কড়া নজর রাখতে হবে।
চালচিত্র এখন সিনেমাটাও এই রীতি অনুসরণ করেই বানানো। যদিও অত পুরোনো না, এবং অত গভীর অনুসন্ধানেরও প্রয়োজন পড়তনা, কিন্তু সেটুকুও করার দরকার মনে হয়নি। এই সিনেমায় আশির দশকের কলকাতায় দিব্যি ল্যাজ তুলে ঘুরে বেড়ায় নীল-হলুদ বেসরকারি বাস, আশিতে সেসব বাস কেউ চোখে দেখেনি। শব্দ শোনা গেলে তারা হয়তো নিউটাউন-নিউটাউন বলেও হাঁক পাড়ত। দেখা যায়, সবুজ অটো। নায়কের বৌয়ের নাম মাঝেমধ্যেই মিতা থেকে বদলে গীতা হয়ে যায়। এবং মিতা ওরফে গীতা মিনার্ভা থেকে উত্তরপাড়া যেতে নিয়মিত শিয়ালদহ স্টেশনে গিয়ে ট্রেন ধরেন। শিয়ালদা থেকে উত্তরপাড়া ট্রেনে চড়ে যাওয়া একেবারে অসম্ভব কিছু না, কিন্তু সে তো নৈহাটি-ব্যান্ডেল হয়েও যাওয়া যায়, সাধারণভাবে সুস্থ লোকে ওই দিক দিয়ে নিয়মিত যায় না আর কি।
ব্যক্তির জীবনে তিনটি দশক বড় কম সময় নয়। এই দীর্ঘ সময়ে ঘরে বাইরে তার নিজস্ব পরিসরে অনেক কিছু বদলায়। পুরানো গাড়ি বাতিল হয়, নতুন গৃহে প্রবেশ হয়, পুরানো সম্পর্কে শ্যাওলা ধরে, নতুন অহং পুষ্ট হয়, পুরানো স্মৃতি ধূসর হয়, নতুন মানে খুঁজতে হয়। এমন নানা পরিবর্তনের প্রভাবে কখনো জীবনের কিছু সরল সমীকরণ ক্রমশ বিবর্তিত হয় জটিল অসমীকরণে। এসবের মাঝে তিন দশক ধরে একটি সামান্য টি-শার্ট কিভাবে এহেন সার্ভিস দিয়ে যায় ভেবে অবাক লাগে
আমার খালার ফোনে ফোন আসল একটা। উনার বিকাশ ( বাংলাদেশের অন্যতম সেরা মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান) একাউন্টের পিন নাম্বারে সমস্যা হয়েছে, ঠিক করাতে হবে। খালার সাথে কথা বলে ওরা বুঝছে এই মহিলা এগুলা কম বুঝে। ওদের আত্মবিশ্বাস এতো যে তারা বলছে যে বুঝে তার কাছে নিয়ে যান। খালা আমার কাছে আসতেছিল পথে মধ্যে আরেক 'বিশেষ ভাবে অজ্ঞ' একজনের সাথে দেখা, তিনি তাদের সাথে কথা বলে যেমন যেমন করতে হয় তেমন তেমন করে কাজ সমাধা করেছেন। খালা এরপরে আসছে আমার কাছে। এসে বলল তোমার কাছেই আসতেছিলাম, বিকাশের পিন ঠিক করতে হব বলে, পথে অমুকের সাথে দেখা, ও ঠিক করে দিল! আমি শুনেই বুঝলাম এইটা গন কেস! বললাম, খালা বিকাশে টাকা কত ছিল? খালা বলল চার পাঁচ হাজারের মতো। আমি বললাম, ব্যালেন্স দেখেন, সম্ভবত এক টাকাও নাই! খালা বলে আরে না, ওরা তো পিন ঠিক করার জন্য বলছে। আমি বললাম, আপনে দেখেন! দেখা হল, ফিনিশ! এক টাকাও নাই!
আশির দশকে যাদবপুরের কয়েকটি ছাত্রছাত্রী শুশুনিয়া পাহাড়ে গেছে শৈলারোহণ অভ্যাস করতে - সেই ভিত্তিতে এই আখ্যান … ঈশু বলে, "দ্যাখ জেঠু, এই ক্যাম্পিংয়ে একমাত্র গৌরব ছাড়া আমরা আর কে কতটা রক ক্লাইম্বিং করতে পারবো জানি না তবে আজকের এই আলোচনাটা খুব এনজয় করলাম। অনেক কিছু জানলাম। এর আগে কোনোদিন এমন স্পর্শকাতর বিষয়ে এভাবে খোলামেলা আলোচনা কারুর সাথে হয়নি। তাই এই আউটিংটা বহুদিন মনে থাকবে। থ্যাঙ্কস জেঠু। তোকে প্রায়শঃই চ্যাংড়ামি করতে দেখে ভাবতাম তুই একটা লঘুচিত্ত, চপলমতির ছেলে। তুই যে এমন সব সংবেদনশীল বিষয়েও এতো সাবলীল ভাবে আলোচনা করতে পারিস, জানা ছিলো না। এবার চল আমরা শুতে যাই, অনেক রাত হয়েছে। কাল সকালে তাড়াতাড়ি উঠতে হবে।" তখনও সুমন জানতো না, আগামীকাল গভীর রাতে ওকেই আবার এই কথাটা বলতে হবে ঈশুকে, অন্য পরিস্থিতিতে
যে বাড়িতে সত্যপীরের পালা, সে বাড়ির ছেলে মেয়েরা লোকেদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলে আসতো। সত্যপীরের ভূমিকায় যিনি অভিনয় করতেন তাঁর হাতে থাকতো একটা বিরাট সাদা চামর। সেটা মাথায় বুলিয়ে তিনি আশির্বাদ করতেন। হিন্দু মুসলমান সবাই সেই আশির্বাদ নিতেন। ১০-২০ পয়সা করে দিতেন মায়েরা সত্যপীরের পালায়। কিশোর ঘোষালদা লিখেছেন, ১৯৮০ র মাঝামাঝি সত্যপীর সত্যনারায়ণ হয়ে গেল। তা, সত্যপীরের পালায় হিন্দু মুসলমান একতার কথা থাকতো।
স্যর স্ট্র্যাফোর্ড আর দ্বিতীয়বার দেখা করেননি গান্ধীর সঙ্গে, করে লাভ ছিল না। তিনি অবিশ্যি সত্যি-সত্যিই ভারতের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী ছিলেন, সেরকমই পরিকল্পনা ছিল তাঁর, কিন্তু সেই পরিকল্পনার ধার ধারতেন না তাঁর বস, উইনস্টন চার্চিল। সেই সময়কার ভাইসরয় লিনলিদগোও চার্চিলেরই দলে। ক্রিপ্সের মতো অনেক সোশ্যালিস্ট দেখা আছে তাঁদের। হামবাগ সব! জওহরলাল আর সেই সময়কার কংগ্রেসের রাষ্ট্রপতি মৌলানা আজাদ অবিশ্যি ক্রিপসের সঙ্গে একমতই ছিলেন, ছিলেন এমনকি রাজাগোপালাচারিও, যদিও লীগের ব্যাপারে কংগ্রেসের অবস্থানের প্রতিবাদে কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন রাজাগোপালাচারি নিজে। এখন গান্ধী একাই বিরোধীপক্ষ, যদিও নিজে গান্ধী মনে করেন না তা। তিনি মনে করেন সমস্ত দেশবাসী তাঁর পক্ষে। তিনি একবার সঙ্কেত দিলেই প্রায় প্রতিটি ভারতবাসী নেমে পড়বে রাস্তায়, তাদের মুখে থাকবে একটাই কথা, ভারত-ছাড়! যদি নিজে থেকে না ছাড়, আমরাই ছাড়াব তোমাদের। করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে!
প্রতিকূলতার মুখে দাঁড়িয়ে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবনা যেভাবে প্রত্যাঘাত করেছে, সেটাকেই নজরুল শব্দের স্বচ্ছন্দ গতিতে রূপান্তর ঘটিয়ে গেছেন বরাবর, কিছুটা একবগগা এবং ছেলেমানুষের মতই। গূঢ় দর্শন তাঁর লেখার বাঁধনহারা উচ্ছলতায় খাদ মেশায় নি কখনও, তেমনই পুনরাবৃত্তিও পিছু ছাড়েনি। নজরুল ঠিক এখানেই স্বেচ্ছাচারী অসংযমী অসচেতন, এবং তাঁর সৃষ্টির অনেকাংশই গভীর ভাবলোকে অনুত্তীর্ণ। তবে ওই ঐচ্ছিক খামতিগুলোই কি তাঁকে অনন্য করেনি? তিনি তো একাই হয়ে উঠেছেন একটা ঘরানার আদি ও অন্ত। পূর্ব ও উত্তরসূরি না থাকা এক অদ্বিতীয় ধারা। এমনই এক তেজস্ক্রিয়তা, অর্ধ জীবনকালের সূত্র মেনে যার ফুরিয়ে যাওয়াটা নির্ধারিত। সেই ফুরিয়ে যাওয়াতেও অবশ্য তাঁর মস্ত সাফল্য।
শুকনো পাতা দিয়ে বানানো গদিতে ভল্লা শুয়ে আছে। আজ পাঁচদিন হল সে একইভাবে শুয়ে আছে, নিশ্চেতন। তার মাথার কাছে বসে আছেন জুজাকের বউ। জুজাক দাঁড়িয়ে আছেন পায়ের দিকে। আর নিচু হয়ে বৃদ্ধ কবিরাজ হাতের নাড়ি পরখ করছেন ভল্লার। কিছুক্ষণ পর কবিরাজ ভল্লার হাতটা নামিয়ে দিলেন, বিছানায়। সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বললেন, “জুজাক, আমার মন বলছে, ছোকরা এ যাত্রায় বেঁচে গেল। হতভাগার বাপ-মায়ের কপাল ভালো বলতে হবে।”
ব্যস, এই সুযোগের অপেক্ষাতেই তো ছেনু ছিল, এক ছুটে দুধের গ্লাস হাতে তেতলার সিঁড়িতে উঠে পড়ল। এবার পা টিপে টিপে এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে সিঁড়ি দিয়ে তেতলায় পৌঁছে ভালো করে তাকিয়ে দেখে নিলো কেউ আছে কিনা। যখন দেখতে পেল চারিদিক ফাঁকা, কেউ তার দিকে নজর রাখছে না, তখন গ্লাস থেকে এমন করে এক চুমুক দুধ খেলো, যাতে চলকে কিছুটা দুধ মুখ বেয়ে নেমে আসে, তারপর একটা বিচ্ছিরি মুখ করে কোনোক্রমে ঢোঁক গিলে সেই এক চুমুক দুধ গলা দিয়ে চালান করে নিচু হয়ে বসে ড্রেনের মুখটায় বাকি দুধটা আস্তে করে ঢালতে লাগল। ঢালতে ঢালতেও কড়া নজর চারদিকে, এই বুঝি কেউ দেখে ফেলল। ধীরে ধীরে পুরো দুধটাই ঢালা হয়ে গেলে আস্তে করে উঠে আবার সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে এল।
ব্রাতিস্লাভায় সিটি ব্যাঙ্কের নবীন কর্মী মারেক পটোমা বলেছিল নিজের দেশ না হলে আইস হকিতে স্লোভাক প্লেয়ারদের জায়গা জুটবে না তাই আমরা আলাদা হয়েছি! দেশ ভাগের এর চেয়ে জোরালো যুক্তি আমি অন্তত খুঁজে পাই নি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে উইলসন ডকট্রিন মাফিক ইউরোপে স্বায়ত্ত শাসনের যে দাবি উঠেছিল তার ফলে পুরনো অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্যের অংশ বিশেষ মিলে তৈরি হলো চেকোস্লোভাকিয়া, এই মাত্তর ১৯১৮ সালে। ক্যাথলিক ধর্মের প্রাধান্য দুই অঞ্চলে, চেকের সঙ্গে স্লোভাক ভাষা প্রায় ৮৫% মেলে; আমার প্রাক্তন সহকর্মী ইভেতার (এখন আবু ধাবিতে) কাছে গল্প শুনেছি – অফিসে সে কিছু নিয়ে আলোচনা করছে এক চেক কলিগের সঙ্গে। আরেক স্থানীয় সহকর্মী জিজ্ঞেস করে, তোমরা কোন ভাষায় কথা বলছ? ইভেতা বলে, নিজের নিজের মতন, আমি স্লোভাক এবং উনি বলছেন চেক! আমাদের হিন্দি/উর্দু সংলাপের মতন।
সাধু হন্টন
৪২% প্রেক্ষাপটের ভিত্তিতে ৬৩ শীত পার করেও আমার লেখ্যভঙ্গিতে লঘু রম্যরসময়তার প্রবণতা গেল না। অথচ ঐ রস উচ্চমার্গীয় আঙ্গিকে পেশ করার যোগ্যতাও নেই। তাই ওসব ধ্রুপদী পাঠকের ঋদ্ধরুচির উপযোগী নয়। ফলে তাঁদের রুচিশীল মন্তব্যে শালীন বিশেষণে অল্পাধিক উষ্মা, বিরক্তির প্রকাশ হয়ে পড়ে - যেমন “ঘাসবিচালি টাইপ রসিকতা”। তাতে অবশ্য আমি বিশেষ বিচলিত হই না। বিড়ম্বিতবোধও করি না। বরং তা নিয়েও আবার “খেলো টাইপস” রসিকতা করে ফেলি - এই যেমন এখন করছি।
প্রকাশিত হলো দুই মলাটে বৈদ্যুতিন উনিজি কথামৃত। লিখেছেন সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায়, এঁকেছেন নবীন শিল্পী কণিষ্ক। শিল্পীর সম্পর্কে বেশি জানা যায়নি, তিনি রাতের অন্ধকারে মেলবক্সে ছবির বান্ডিল ফেলে দিয়ে গেছেন। জানিয়েছেন উনিজির প্রতি অনুগত থাকতে চাইলে মাথা বর্জন করা ভালো, আর অনুগত থাকতে না চাইলে গর্দান যাওয়ার সম্ভাবনা, সুতরাং আগে থেকে মুন্ডু বিসর্জন দেওয়াই বিধেয়। নামিয়ে নিন, ছড়িয়ে দিন - উনিজি কথামৃত - পিডিএফ সংস্করণ।
ধরা যাক আমাদের n-সংখ্যক ভোটার আছে, n বিজোড় সংখ্যা (অর্থাৎ “টাই” অসম্ভব)। প্রত্যেক ভোটারের ঠিক বিকল্পে ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা ধরা যাক pc, এবং সবার ভোট পড়ে গেলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে “মেজরিটি রুল” অনুযায়ী, অর্থাৎ যে সবথেকে বেশি ভোট পাবেন, সেটিই আমাদের গণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত। কনডরসে-র উপপাদ্যে এও ধরে নেওয়া হয়, যে, প্রত্যেক ভোটার ‘স্বতন্ত্র’, ‘দক্ষ’ এবং ‘আন্তরিক’। ‘স্বতন্ত্র’ – অর্থাৎ যে যার নিজের ভোট দিচ্ছেন বা একজনের পছন্দ আরেকজনকে প্রভাবিত করে না। ‘দক্ষ’ – অর্থাৎ, প্রত্যেকের ঠিক বিকল্প খুঁজে নেওয়ার সম্ভাবনা অর্ধেকের থেকে বেশি, যত সামান্যই হোক, এক্কেবারে র্যান্ডম গ্যেস অর্থাৎ ইকির-মিকির-চামচিকির করে আন্দাজে যা-ইচ্ছে-তাই একটা বোতাম টিপে দেওয়ার থেকে তার প্রজ্ঞা বা দক্ষতা একচুল হলেও বেশি। আর শেষ অ্যাজ়াম্পশনের কথা আগেও লিখেছি, ভোটার-রা ‘আন্তরিক’, সিরিয়াস-ও বলা যায়—কেউ ইচ্ছে করে ভুলভাল ভোট দিয়ে নষ্ট করছেন না।
ঝুপ করে অন্ধকার নামল জঙ্গলমহলে। সাপধরা বুথ পেরিয়ে বাসু ভকতের গাড়ি এগোচ্ছে পিচ রাস্তা ধরে, জামবনির দিকে। জঙ্গলে আবছা অন্ধকারে বাসু ভকত কিংবা চালক গাড়ির দূর থেকে দেখতেও পেলেন না, গাছের গুঁড়ি ফেলে রাস্তা আটকে রেখেছে ঝাড়খন্ড পার্টির লোকজন। বিকেল থেকেই রাস্তার ধারে গাছের আড়ালে অপেক্ষা করছিল প্রচুর মহিলা-পুরষ এবং তীর, ধনুক নিয়ে সশস্ত্র ঝাড়খন্ডি বাহিনী। সরকারি গাড়ি গাছের গুঁড়ির সামনে থামলেই জঙ্গল থেকে বেরিয়ে ব্যালট বাক্স নিয়ে চম্পট দেবে তারা। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটের সন্ধ্যায় ব্যালট বাক্সের গাড়ি নয়, পাঁচামির জঙ্গলের ধারে ঝাড়খন্ডিদের তৈরি করা ব্যারিকেডের সামনে এসে থামল বাসুদেব ভকতের গাড়ি।
বিশ্বায়নের সময় জুড়ে পিছিয়ে পড়া দেশগুলিতে লগ্নি পুঁজির ফাটকা প্রসারের হাত ধরে এবং সামন্তশ্রেনীর অংশের মিলিত বন্ধনে গড়ে উঠেছে নব্য আমলাতান্ত্রিক মুৎসুদ্দী পুঁজিপতিশ্রেনী। উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে, এদেশের আম্বানি-আদানি গোষ্ঠীদের। যাঁদের দ্বারাই আজ মূলত তৃতীয় বিশ্বে(এ দেশে) সাম্রাজ্যবাদীদের একচেটিয়া লগ্নি পুঁজির লুণ্ঠন অব্যাহত। তবে যেহেতু এই সময় সাম্রাজ্যবাদ স্বল্পমেয়াদি সময়ে একচেটিয়া ফাটকা মুনাফার উপরে বেশি ঝুঁকে পড়ে সেহেতু উৎপাদন - উৎপাদনশীলতা বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে কমতে থাকে যা পুঁজিবাদী উৎপাদন সম্পর্কে মূলে ধাক্কা দেয়(যা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বহু পুঁজিবাদী অর্থনীতিবিদেরা)। ফলে অতি-মুনাফার লোভ, বাজার দখলের প্রয়োজনে পুঁজির বর্ধিত পুনরুৎপাদনের স্বার্থে যুদ্ধ প্রায়শই প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তবে এ পর্বে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলি সবসময়ই তৃতীয় বিশ্বের ঘাড়ের উপরে বন্দুক রেখে যুদ্ধ চালাতে চায় এবং নিজেরা সরাসরি সেই যুদ্ধে যুক্ত না হয়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অন্যান্য পিছিয়ে পড়া দেশের 'পুতুল' সরকারের মাধ্যমে যুদ্ধ পরিচালনা করতেই তদপর হয়ে উঠে।
কপিশার কোল ঘেঁষে আমার মদিনা
“অঙ্কোলজিস্ট! কেন? ওনার কি… আমরা তো ভাবছিলাম টিবি হয়েছে,” বলল বিনীতা। “না ম্যাডাম। টিবির টেস্ট রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। আমার মনে হচ্ছে অঙ্কোলজি রিলেটেড কিছু হয়েছে স্যারের। ডক্টর বিশ্বাসের সাথে আমার ভাল আলাপ আছে। আমি ওনাকে বলে দেব। উনি রোজ বসেন, আপনারা কালই অ্যাপয়েন্টমেন্ট করে নিন। আমি ওনার নম্বর আর হাসপাতালের নম্বর দুটোই দিয়ে দিচ্ছি,” বললেন শ্রীবাস্তব। “কাল হবে না,” এতক্ষণে মুখ খোলে অরুণাভ, “কাল অফিসে একটা খুব ইম্পরটান্ট মিটিং আছে।” “কিন্তু স্যার…” “বললাম তো কাল হবে না।” কথা শেষ করে দেওয়ার ভঙ্গিতে বলল অরুণাভ। স্বামীকে ভালই চেনে বিনীতা, তাই কালকের দিন নিয়ে আর কথা বাড়াল না সে। বলল, “আপনি নম্বরটা দিন। পরশুর জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট করব।”
গাঢ় অন্ধকারে ডুবে রয়েছে ভারতের আদিতম রেল স্টেশন। জরুরি কোনও বিদ্যুৎ সংযোগে ছোট্ট স্টেশনটার বাইরে একটা সোডিয়াম ভেপারের আলো পড়েছে টিকিট ঘরের বাইরে টালির চালে বসানো বোর্ডের ওপর। পলিমারের নীল বোর্ডের ওপর সাদা রঙে দেবনাগরী হরফে লেখা গালুডিহি! সেই আলোর এক চিলতে পড়েছে সামনের রেল লাইনের ওপর। অনায়াসে পায়ে হেঁটেই লাইন টপকে আমরা ঢুকে পড়লাম টিকিট ঘরের ভেতর। আমরা দাঁড়িয়ে আছি ১৩৩ বছর আগে তৈরি হওয়া একটি প্রাচীন রেল স্টেশনে! ১৮৮৭ সালে নাগপুর থেকে ছত্তিশগড় রেল লাইন পাততে শুরু করলো বেঙ্গল নাগপুর রেলওয়ে কোম্পানী যা শেষ অবধি বিলাসপুর হয়ে আসানসোল অবধি এগিয়ে গেল। আর তার অব্যবহিত পরেই শুরু হল মুম্বাই থেকে কলকাতা অবধি রেললাইন পাতার কাজ ভায়া এলাহবাদ! ১৮৮৭ সাল ধরলে অবশ্য বছরটা ১৩৫ হওয়া উচিৎ কিন্তু আরও ২ বছর কমিয়ে বললাম এই কারনে যে প্ল্যাটফর্মের সেই আদি অকৃত্তিম ওজন মাপার যন্ত্রটা দেখলাম মরছে ধরা দেহ নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
৩০ তারিখে আমরা খোঞ্জে পৌঁছলাম, মাটির থেকে অনেকটা উঁচুতে দৈত্যাকৃতির সিকামোর আর বাওবাব গাছের পাতার বিশাল চাঁদোয়ার কারণে জায়গাটা উল্লেখযোগ্য। খোঞ্জের সর্দার চারটে গ্রামের গর্বিত মালিক, তার থেকে সে পঞ্চাশ জন সশস্ত্র লোককে এক ডাকে হাজির করতে পারে; তবুও ন্য়ামওয়েজির বাসিন্দাদের প্ররোচনায় এই লোকটা আমাদের ঠেকানোর জন্য প্রস্তুত ছিল, কারণ আমি তাকে মাত্র তিন ডোটি অর্থাৎ বারো গজ কাপড় হঙ্গা হিসাবে পাঠিয়েছিলাম।
আশির দশকে যাদবপুরের কয়েকটি ছাত্রছাত্রী শুশুনিয়া পাহাড়ে গেছে শৈলারোহণ অভ্যাস করতে - সেই ভিত্তিতে এই আখ্যান … মনোবৈজ্ঞানিক ডঃ সুশীল মজুমদার, দীপদার বিশেষ পরিচিত। একদিন সুমনকে ওনার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বললেন, সুশীলদা, এ হচ্ছে সুমন, যাদবপুরে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে। ওর মানব চরিত্র, কমপ্লেক্স এসব নিয়ে খুব কৌতূহল। আমায় নানা প্রশ্ন করে। আমি অনেককিছুর ঠিকঠাক জবাব দিতে পারি না। আপনি তো আজকাল বাড়িতেই থাকেন প্রায়। যদি মাঝেমধ্যে ওকে আসতে এ্যালাও করেন, ওর কিছু কৌতূহল নিরসন করেন, ওর ভালো লাগবে
আধুনিক যুগের আধুনিক মনোভাবের মুসলমানদের কারুর বাড়িতেই চারটি স্ত্রী নেই, এবং অসংখ্য বাচ্চা নেই। আগেকার দিনে হয়তো ছিল, ঠিক যেমন অন্ধকার যুগে হিন্দুদের কুলীন বামুনরা পঞ্চাশটা বিয়ে করতো, আর হিসেব-না-থাকা সন্তানের জন্ম দিয়ে কিশোরী বৌদের বিধবা করে দিয়ে মরতো। সাধারণ ঘরে মুসলমানদের যদি আট দশটা ছেলেমেয়ে হতো, সে তো হিন্দুদের ঘরেও হতো। আমার বাবারা ছিল ন-জন ভাইবোন। আমার মায়েরাও তাই। বিজেপি আরএসএস বিশ্ব হিন্দুদের মতো উগ্রপন্থীরা তো এসব প্রচার করবেই। কিন্তু লিবারাল বাঙালি হিন্দুরা কি তাদের মনোভাব বদলেছে?
গুরুচন্ডালিতে কিছু দুষ্টু গরুর দৌরাত্ম্য রোখার সম্ভাব্য উপায় প্রসঙ্গে এই প্রস্তাবনা। উদার গুরু তা করতে চাইবে কিনা বা চাইলেও তা করা সম্ভব কিনা জানি না
দিলদার নগরের ঠিকানা গুছিয়ে না রাখলে জীবন কোথা?