এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ভ্রমণ  ঘুমক্কড়

  • গালুডি

    নরেশ জানা
    ভ্রমণ | ঘুমক্কড় | ২৩ মে ২০২৪ | ৬৯১ বার পঠিত | রেটিং ৪ (২ জন)
  • ছবি: রমিত চট্টোপাধ্যায়


    গালুডি



    এই সব ভাবতে ভাবতেই কখন যেন ১৮ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপর মহুলিয়া বুকে গেছিলাম আমরা। সন্ধ্যা পৌনে সাতটা। গোটা এলাকা নিশ্ছিদ্র অন্ধকারে ঢেকে রয়েছে। ঝম ঝম করে বৃষ্টি পড়ছে, জাতীয় সড়কের আলো গুলো অবধি জ্বলছে না। বুকটা ধক করে উঠল। আজকের মত ঘোরা শেষ। হলদিয়ায় সকাল ন'টায় গাড়িতে চেপছিলাম, প্রায় দশ ঘন্টার জার্নি। মাঝে সব মিলিয়ে হয়ত ঘন্টা দুয়েক গাড়ির বাইরে ছিলাম আমরা। শরীরের কলকব্জা নড়ে যেন ঝনঝন করছে, এই সময় হোটেলের কথা মনে পড়ল আর মনে পড়তেই বুকটা ধক করে উঠল। পাওয়ার আছে তো! ভোর ৫টায় ফোন করেছিলেন দেব কুমার সোনি, আমাদের গালুডি হোটেলের ম্যানেজার, স্যার আপনরা কী আসবেন? কেন? প্রশ্ন করেছিলাম। গত দুদিন ধরে প্রচন্ড ঝড় বৃষ্টি হচ্ছে স্যার, কাল সন্ধ্যা থেকে পুরো এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। আমাদের ডিজি আছে কিন্তু চালাতে সমস্যা হবে স্যার। যদি দু'একদিন পিছিয়ে দেন। পেছানোর কোনও প্রশ্নই ছিলনা। এমনিতেই আমার ভুলেই বাংরিপোষি ট্যুর ক্যানসেল হয়েছে । এই কুড়ি একুশ আমাদের বাংরিপোষি প্রোগ্রাম ঠিক হয়েছিল। সঙ্গে থাকা খুদে দুটোর স্কুলের ছুটির কথা ভেবেই। কিন্তু আমি হোটেল বুক করে বসলাম উনিশ কুড়ি। ভুল যখন ধরা পড়ল তখন আর কিছুই করার নেই, ওই দিন হোটেলে আর রুম পাওয়া গেলনা। বুকিংয়ের টাকাও ফেরত হওয়ার নয় তবে অন্য কোনোও সময় গেলে টাকাটা আ্যডজাস্ট করে দেবে ওরা। ওই টাকা ভুলে যাব এমন ক্ষমতা নেই সুতরাং ওই টাকা আ্যডজাস্ট করার জন্যই এবারের মত বাংরিপোষি স্থগিত রাখা হল। গত দু 'বছর বাচ্চারা কোথাও যেতে পারেনি, বাংরিপোষি প্রোগ্রাম ক্যানসেল হতেই মুষড়ে পড়েছিল বেচারারা তাই এই প্রোগ্রামটা সাজিয়েছিলাম। এখন কোনোও অবস্থাতেই এই প্রোগ্রাম ক্যানসেল করতে পারবনা। সোনি কে বললাম, ফ্যান চলবে তো? সোনি বললেন, 'বে-সক্'! ঝাড়খন্ডের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গও তুলকালাম হয়ে চলেছে। আমি বাকিদের কাছেও বিষয়টা চেপে গেলাম। শতদলের শ্যালিকা রুষতির স্বামী শুভাশিষও বললেন, দুনিয়া রসাতলে গেলেও বেড়াতে যাবই। সাহস পেয়ে গেলাম! কিন্তু হোটেলে যাওয়ার পথে আতংকটা চেপে বসল। যদি হোটেলেও পাওয়ার না থাকে খুবই সমস্যা হয়ে যাবে। কারন প্রচন্ড গরম অনুভূত হচ্ছে, প্যাচপ্যাচে গরম, ফ্যানে এই গরম কাটার নয়! হোটেলের গেটে গিয়ে যখন গাড়ি থামল তখন ঝেড়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সোনি নিজেই এগিয়ে এলেন অভ্যর্থনা করতে। অমায়িক মানুষ। একেবারে নতুন হোটেল। ঝাঁ চকচকে রুম গুলো। মনে হল আমরাই প্রথম উদ্বোধন করলাম। এই অভিনন্দন অবশ্য পাওয়ার যোগ্য আনন্দবাজারের হলদিয়ার সংবাদদাতা সৌমেন মন্ডল ভাইয়ের। বাংরিপোষি প্ল্যান বাতিল হতে ওই বলেছিল ঘাটশিলা আসতে। আমার প্রথমটা ইচ্ছা ছিলনা। আগে একবার এসেছি। ওকে বলেছিলাম যেতে পারি যদি ঘাটশিলা ছাড়া অন্য কোথাও থাকার ব্যবস্থা করে দাও। আমার আরও আবদার ছিল গালুডিতে থাকার। ওই অনেক খুঁজে পেতে এই হোটেলের ব্যবস্থা করে দিল এবং অবিশ্বাস্য কম দামে। এসি রুম মাত্র চোদ্দশ টাকায়! যদিও বিস্ময় আরো কিছু অপেক্ষা করছিল আমাদের জন্য। বৃষ্টি চলল আরও প্রায় ঘন্টা খানেক। বলা বাহুল্য পাওয়ার নেই, ডিজি চলছে। কিন্তু সোনি আমাদের বলল বিদ্যুৎ দপ্তরের লোকেরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। হোটেলে ক্যান্টিন নেই কিন্তু খুচ পারোয়া নেই। সোনি বলতেই চা চলে এল পাশের দোকান থেকে। ডিনারের মেনু আর রেট চার্ট হোয়াটস অ্যাপ করলেন সোনি। সেই মত কোনও এক রেস্তোরাঁয় ফোন করে খাবার অর্ডার দেওয়া হল। ওরা ঠিক সাড়ে নটায় খাবার পাঠাবেন বললেন। ততক্ষণে চান টান করে ফ্রেশ হয়ে নিয়েছিলাম। পায়ের তলা সুড় সুড় করে উঠল। বৃষ্টি থেমে গেছে, যদিও পাওয়ার আসেনি। বাইরেটা ঘুটঘুটে অন্ধকার। উঁচু নিচু পাথুরে পথে কাদার কোনও ভয় নেই। টর্চটা হাতে নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। শতদলও সঙ্গী হল। হোটেলের সামনেই একটি দোকানে মিটমিট করে আলো জ্বলছিল। দোকানি কে জিজ্ঞাসা করলাম স্টেশনটা কোন দিকে। সে বাঁ দিক দেখিয়ে দেয়। আমি খড়গপুরের ছেলে। জানি যে স্টেশন মানেই নিদেন পক্ষে চা আর পান টা জুটে যাবে। একটা পান খাওয়ায় জন্য মনটা ছটপট করছিল। এখানে পান কিংবা চা পেলাম না, কিন্তু স্টেশনটাকে পেলাম। আর সেটাই আমাদের চমকে দিল!

    গাঢ় অন্ধকারে ডুবে রয়েছে ভারতের আদিতম রেল স্টেশন। জরুরি কোনও বিদ্যুৎ সংযোগে ছোট্ট স্টেশনটার বাইরে একটা সোডিয়াম ভেপারের আলো পড়েছে টিকিট ঘরের বাইরে টালির চালে বসানো বোর্ডের ওপর। পলিমারের নীল বোর্ডের ওপর সাদা রঙে দেবনাগরী হরফে লেখা গালুডিহি! সেই আলোর এক চিলতে পড়েছে সামনের রেল লাইনের ওপর। অনায়াসে পায়ে হেঁটেই লাইন টপকে আমরা ঢুকে পড়লাম টিকিট ঘরের ভেতর। আমরা দাঁড়িয়ে আছি ১৩৩ বছর আগে তৈরি হওয়া একটি প্রাচীন রেল স্টেশনে! ১৮৮৭ সালে নাগপুর থেকে ছত্তিশগড় রেল লাইন পাততে শুরু করলো বেঙ্গল নাগপুর রেলওয়ে কোম্পানী যা শেষ অবধি বিলাসপুর হয়ে আসানসোল অবধি এগিয়ে গেল। আর তার অব্যবহিত পরেই শুরু হল মুম্বাই থেকে কলকাতা অবধি রেললাইন পাতার কাজ ভায়া এলাহবাদ! ১৮৮৭ সাল ধরলে অবশ্য বছরটা ১৩৫ হওয়া উচিৎ কিন্তু আরও ২ বছর কমিয়ে বললাম এই কারনে যে প্ল্যাটফর্মের সেই আদি অকৃত্তিম ওজন মাপার যন্ত্রটা দেখলাম মরছে ধরা দেহ নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এই ওজন তখন মাপা হত স্কেলে। সমস্ত রেল স্টেশনেই এই যন্ত্র সরবরাহ করার মনোপলি ব্যবসা ছিল আ্যভরে ওয়ে ট্রোনিক্স কোম্পানি লিমিটেডের। ইংল্যান্ডের বাকিংহামে তাদের সদর দপ্তর। যন্ত্রটির গায়ে ডব্লু এন্ড টি আ্যভরে লেখার পাশাপাশি বিএনআর বা বেঙ্গল নাগপুর রেলওয়ে কথাটি ঢালাই করা ছাপ দেওয়া রয়েছে আর প্রতিস্থাপনের বছর উল্লেখ করা হয়েছে ১৮৮৯ সাল! শেষবারের মত পন্যের ওজন মাপক এই যন্ত্রটির যথার্থ ক্ষমতা যাচাই করা হয়েছে ১১৮ বছর আগে ২৫ নভেম্বর ১৯০৪ সালে! এই সময় খুব মনে পড়ছিল আমার আরেক ভাতৃপ্রতিম বন্ধু বর্তমান পত্রিকার হলদিয়ার প্রতিবেদক শ্যামল সেনের কথা। আমি নিশ্চিত ওকে আর হোটেলে ফেরত নিয়ে যাওয়া সম্ভব হতনা, আমাদেরও না। গোটা রাত স্টেশনেই থেকে ও গবেষণা চালিয়ে যেত। স্টেশনটা আমাদের হোটেল গায়ত্রী গেস্ট হাউস থেকে জাস্ট দেড় মিনিট! সিদ্ধান্ত নিলাম কাল সকালে উঠেই দিনের আলোতে স্টেশনটাকে দেখব আর এসি চলুক আর নাই চলুক ১৪০০ টাকা করেই রুম প্রতি ভাড়া দেব, কোনোও দরদাম করবনা।

    অন্ধকার এই স্টেশন চত্বরে পান অবশ্য জুটলো না। কিন্তু পান না চিবুলে বুঝি এই অনাদিকাল ধরে একই রকম দাঁড়িয়ে থাকার স্বাদ পানসে হয়ে যায়। সুতরাং ফের উল্টো দিকে হাঁটা শুরু করলাম। হোটেলটার সামনে দিয়েই যেতে হবে। রিসেপশন থেকে রাস্তাটা নজরে পড়ে। সোনি আমাদের স্বল্প আলোতেও চিনলেন, মৃদু হাসলেন। হয়ত বা ভাবলেন, সুরা সন্ধানী আমরা। অচেনা জায়গায় সুরার খোঁজে এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াচ্ছি। আমরা জাতীয় সড়কের দিকে অর্থাৎ মহুলিয়ার দিকটায় হাঁটছিলাম। একটা মোড় পেরিয়ে জাতীয় সড়কের দিকে বাঁকতেই মিলে গেল দোকান। মুদি আর রকমারি দ্রব্যের সাথে পানও রয়েছে। ঝাড়খন্ড হলেও পান কিন্তু সেই আমাদের এগরা রামনগরের। একটা মুখে পুরে আরও কয়েকটা মুড়ে পকেটে ভরে ফিরলাম। অপূর্ব স্বাদ, হোটেলে ঢোকার আগেই মুখেই মিলিয়ে গেল! হোটেলে ঢুকে দেখলাম পাওয়ার চলে এসেছে, এসি চলছে । মনে মনে বললাম, জয় ঝাড়খন্ড!

    এক রাত পার। আজই ফেরার দিন। প্রোগ্রাম ছকে ফেলেছি। সকাল ৯টায় গাড়িতে ওঠা তারপর গালুডি ড্যাম ঘুরে সোজা চলে যাব দুয়ারসিনি। সেখান থেকে... না সেকথা এখন থাক। সব থেকে বড় কথা সকাল ৯টার আগেই আরেকবার চক্কর মারতে হবে স্টেশনটায়। আমি আর শতদল ফের স্টেশনের পথে। সকাল ৭টা, মাত্র দেড় মিনিট। এবার স্টেশনের সামনেটাকে স্টেশনের মত মনে হয়। ডালায় করে ভাজা হচ্ছে পুরি, চপ, ফুলুরি, জিলিপি। লুচি দশ টাকায় পাঁচটা, চপ তিন টাকা! ড্যাম থেকে ধরে আনা কুচো চিংড়ি, চারাপোনা, চেড়ি বাটা বিকোচ্ছে। কাছের কোনও গাঁ থেকে আসা লাউ, ঝিঙে, শাক ইত্যাদি সবজি । আমাদের সেই পায়ে হেঁটে পের হওয়া টিকিট ঘরের সামনে থাকা নিচু লাইনটায় একটা মালগাড়ি দাঁড়িয়ে। আমরা সেই আদ্যিকালের আরওবি দিয়ে প্ল্যাটফর্মে নেমে যাই। ওপাশে অনেক দুরে একটা পাহাড় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। স্টেশনে ঢোকার মুখেই সেটা নজরে পড়ে। পুরানো নুড়ি বেছানো প্ল্যাটফর্মে আমরা হাঁটি। এখনও আগের মতই প্ল্যাটফর্মে লোহার ডিম্বাকার ঢালাই করা চাকতিতে গালুডিহি লেখা। না এখন এধরনের লেখা স্টেশনগুলোতে নজরে পড়ে বলে মনে হয়না। টিকিট ঘরের সামনে এখনও সাবেক কালের লালরঙা বালতি গুলো লোহার আংটা থেকে সার দিয়ে দুলছে, অগ্নি নির্বাপনের প্রাচীন ব্যবস্থা। টিকিট ঘরে সেই ওজন মাপার স্কেল যন্ত্রটা তো আছেই কিন্তু তার সাথে আরও আছে লাল ডাকবাক্স আর ট্রেনের ' খবর' হলে যাত্রীদের জানানোর জন্য মাঝখানে কেটে রেল পাতের টুকরো অংশটা! সব আজ প্রাণহীন, নিস্পদ। হৃৎপিণ্ড থেমে যাওয়া যন্ত্র ফসিল। হাত নিশপিশ করে, মনে হয় বাজিয়ে দেই একবার। হুটোপুটি অনাসৃষ্টি বেধে যাক! টিকিট জানলার দিকে তাকাই, জানলাটা কাল রাতের মতই বন্ধ, একটা নোটিশ লটকানো। ঝুঁকে পড়ে লেখাটা পড়ি, টিকিট ঘর স্থানান্তরিত হয়েছে। অনতিদূরেই নজরে পড়ে ঝাঁ চকচকে সাদা ঘরটা। ওদিকে যাইনা, যেতে ইচ্ছা করেনা। আরও দেখতে পাই নতুন একটা ফুট ওভার ব্রিজ গড়ে উঠছে। বড় হচ্ছে গালুডি, নাকি বুড়ি হচ্ছে? মন খারাপ হয়ে যায়। মালগাড়িটা তখনও দাঁড়িয়ে। পুরানো ফুট ওভার ব্রিজ দিয়েই নেমে আসি। আমার আর শতদলের ক্যামেরায় ধরা থাকে কুমারী, অনুঢ়া, গালুডি। আজ রোদ উঠেছে ঝলমলিয়ে, রোদ চশমা হৈ হৈ করে স্টেশন চত্বরে নেমে এসেছে রিয়ান, রুষতি, ঝিলমিল, রাগিণীরা। পেছনে পেছনে শুভাশিসও। ওরা স্টেশনের দিকটায় নেমে যায়। আমি ফিরে তাকাই। স্টেশনের সেই প্রবেশমুখ টালির দোচালার ওপর দিয়ে পাহাড়টা দেখা যাচ্ছে, যেন রোদ থেকে আড়াল করছে লজ্জাবনতা গালুডিকে। ও পাহাড়টা আমার চেনা। ওটাই বড়াপাহাড়। পাহাড়টা যেন আমায় ডাকে। আমি আস্তে করে বলি, আসছি।

    ঘড়ির কাঁটায় ৯টা। কাল ফেরার পথে গাড়ির স্টেপনি বদল করতে হয়েছিল কিন্তু ঝড় জল আর বিদ্যুৎ বিহীন পথে কেউ পাংচার সারাতে রাজি হয়নি। 'সুবা আও' বলে সবাই হাঁকিয়ে দিয়েছে। মৃত্যুঞ্জয় গাড়িটা নিয়ে সকাল সকাল গ্যারেজে গিয়েছে, এখনও ফেরেনি। আমরা পাক্কা মিদনাপুরিয়া। সঙ্গে আনা মুড়ি, শশা আর বাদাম মেলে দেওয়া হল বিছানার ওপর পেপার পেতে। কিনে আনা তিন টাকাওয়ালা কয়েকটা চপ। গতকাল রাতে রেস্তোরাঁর অর্ডার করা আটার তন্দুরি রুটি, চিকেন কষা আর পনির মশলার হ্যাংওভার দিব্যি হাপিশ করে দিল খাঁটি মিদনাপুরিয়া ব্রেকফাস্ট। ব্যাগেজ করাই ছিল। হোটেলের টাকাও মেটানো হয়ে গিয়েছিল। মৃত্যুঞ্জয় হাজির হতেই একে একে সবাই উঠে পড়ল। ৫ লিটারের দুটো জলের বোতল গাড়িতে তোলার আগে দেখা গেল একটা পুরো খালি, অন্যটা অর্ধেক। সোনিকে বললাম, মিনারেল ওয়াটার কোথায় পাব? সোনি বললেন, বোতল দিজিয়ে। ফাঁকা বোতলটা বাড়িয়ে দিলাম। মিনিট খানেকের মধ্যেই বোতলটা ভরে এনে বললেন, 'বে-ফিকর পিয়ে, গালুডি কি পানি, মিনারেল উনারেল ফেইল হো যায়গা।' গাড়ি ছুটল দু'কিলোমিটার দুরে গালুডি ড্যাম। গাড়ি এসে যখন ড্যামের গায়ে দাঁড়ালো তখন জলের মাতন তুঙ্গে উঠেছে। জলের সেই প্রবল গর্জনে পাশের মানুষের কথাও শোনা যাচ্ছেনা। সুবর্ণরেখার সে কী রূপ! ২১টি স্লুইস গেটের মধ্যে দিয়ে জল আছড়ে পড়েছে। কী সুন্দর, কী অপরূপ সেই দৃশ্য! কিন্তু ভয়ংকর তো কম নয়! দিনটা ২১শে আগস্ট, রবিবার। জল ছেড়েছে গালুডি। আমরা যখন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সেই জল দেখছি তখন পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন, কেশিয়াড়ীতে বিডিও অফিস থেকে মাইক ফোঁকা হচ্ছে, "হুঁশিয়ার হুঁশিয়ার, গালুডি থেকে এত হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। নদী তীরবর্তী মানুষরা সাবধান থাকুন। আরও জল বাড়লে নিরাপদ দূরত্বে সরে আসুন। প্রশাসন সবরকম পরিস্থিতি মোকাবিলায় তৈরি রয়েছে..... ।" আমাদের কানে অবশ্য সেই ঘোষনা আসার প্রশ্নই নেই, আমাদের সব্বাই তখন ব্যস্ত দাঁতন থেকে ১৫০ কিলোমিটার দুরে গলুডি ব্যারেজের ওপর দাঁড়িয়ে জলের সেই প্রবল তোলপাড় দেখতে। এই সময় আমার নজরে পড়ল দুটি অদ্ভুত ধরনের মৎস্য শিকার। একদল মানুষ ওই অত উঁচু থেকে দড়ির সাহায্যে বাঁশের বাতায় বাঁধা জাল নামিয়ে দিচ্ছেন, তুলে আনছেন। মাছ উঠছে, রামশোল, কালবাউস, বাটা আরও কত কী! ওখানেই বিক্রি হচ্ছে সেই সব মাছ! এই সব মাছ ধরা জালগুলো অনেকটটা ঠিক আমাদের গাঁ ঘরের চাবি জালের মত। যাঁদের চাবি জাল সম্পর্কে ধারনা নেই তাঁদের জন্য বলা যে, একটি বাঁশের বাতার দুটি প্রান্তকে টেনে এনে মুখোমুখি বাঁধলে একটি বৃত্তাকার ক্ষেত্র বা রিং তৈরি হয়। সেই রিং বরাবর বাঁধা হয় জালটি। এমন ভাবে জালটি বাঁধা হয় যাতে ভেতরের অংশটি টানটান না হয়ে একটু ঝুলে থাকে অর্থাৎ বাতার তৈরি রিংয়ের চাইতে গোলাকার জলটি একটু বড় হতে হয়। বস্তুটি একটি ছাঁকনির আকার ধারন করে। এরপর তিনটি বাঁশের খন্ড ওই রিংয়ের তিন প্রান্তে সমান দূরত্বে বাঁধা হয়। এরপর ওই তিনটি বাঁশের মাথা এক জায়গায় টেনে এনে বাঁধা হয়। সব মিলিয়ে ওপরের অংশটি ত্রিভুজাকৃতি গ্রহন করে। সাধারণত জলের কম গভীরতায় দাঁড়িয়ে মাথার ওপর কিংবা বুক বরাবর তুলে রেখে মৎস্য শিকারি দাঁড়িয়ে থাকেন এরপর শোল মাগুর কিংবা ওই জাতীয় মাছের অস্থিত্ব টের পেলে ওই জাল নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এলাকা বিশেষে ওই জালের বিভিন্ন নাম হয়। কোথাও চাবি জাল কোথাও আবার ঝাঁপা জাল ইত্যাদি। গালুডি ব্যারেজের ওপর দিয়ে যাওয়া আসার রাস্তা বা যেখান থেকে আমরা নিচের জল দেখছি তার মধ্যখানের ব্যবধান প্রায় তিরিশ ফুট। ওই রকম জালের ত্রিকোণ বাতার শীর্ষে বাঁধা দড়ির সাহায্যে শিকারিরা ওপর থেকে নিচে জলের মধ্যে ওই জাল নামিয়ে দিচ্ছিলেন এবং ছেঁকে ছেঁকে মাছ ধরছিলেন।

    আরেক প্রকার মৎস্য শিকারও আমার নজর কেড়ে নিল যদিও তা মানুষ নয়, সেই শিকার করছিল দুরন্ত পানকৌড়ির দল। সংখ্যায় তারা গোটা আট দশেক ছিল। ব্যারেজের এই অংশে সুবর্ণরেখা পূর্ব থেকে হঠাৎ করেই ঈষৎ দক্ষিণ পশ্চিমে বাঁক নিয়েছে। তোলপাড় জলের রাশি পূর্ব থেকে ২১টি স্লুইস গেটের ফাঁক গলে আছড়ে পড়ছে। প্রকাণ্ড প্রকাণ্ড সব ঘূর্ণি তৈরি উথাল পাথাল হতে হতে জল নামছে খর বেগে। কী পরিমাণ সেই বেগ তা দেখলে কল্পনা করাই মুশকিল। তারই মধ্যে উজানে ঠোঁট বাড়িয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছে পানকৌড়ি গুলো, জলের গভীরে ঢুকে যাচ্ছে আর প্রায় আধ মিনিট পরে উঠে আসছে। সমস্যাটা বাড়ছে এরপরই, ওই উথাল পাথাল জলে ভর দিয়ে ফের আকাশে ডানা মেলতে রীতিমত নাকানি চোবানি খেতে হচ্ছে পাখিগুলোকে। কখনও কখনও সেই দোমড়ানো মোচড়ানো উথাল পাথাল দুরন্ত কুন্ডলি পাকিয়ে ওঠা জলের ভেতরে একেকটি পাখি এত বেশি সময় ধরে থেকে যাচ্ছিল যে আমার মনে হচ্ছিল সে বোধহয় চিরতরেই তলিয়ে গেল, আর উঠতে পারবেনা। অনন্ত শক্তিধর ওই পাক খেতে থাকা জলস্রোতের বিপরীতে দক্ষ সাঁতারু তো দুরের কথা একটা প্রমাণ সাইজের হাতিকেও হ্যাঁচোড় প্যাঁচোড় করতে হবে কিন্তু পাখি গুলো শেষ অবধি উঠে আসছে, আবার ঝাঁপাচ্ছে। আমি ঘড়ি মিলিয়ে দেখলাম সব চাইতে বেশি সময় নেওয়া পাখিটি প্রায় পঁচাত্তর সেকেন্ড ধরে লড়াই চালিয়ে ফের ডানা মেলল। তারপর সে বেশ খানিকটা দূরে গিয়ে নদীর বাঁধানো কিনারায় বসে ডানা দুটি সটান মেলে রোদে শুকাতে লাগল। হয়ত বৃদ্ধ হয়ে এসেছে সে, শক্তি কমে এসেছে। বাকি গুলো তখনও লুটোপুটি খাচ্ছে জলে। মাছ ধরছে, গিলছে, আবার ঝাঁপাচ্ছে। বড় অদ্ভুত সেই শিকার।

    আগেই বলেছি সুবর্ণরেখা এখানটায় ঈষৎ দক্ষিন পশ্চিমে বাঁক নিয়েছে। পরে তা ক্রমশঃ দক্ষিণ বাহিনী হয়ে পশ্চিমবঙ্গের ভেতর দিয়ে ওড়িশা প্রবেশ করে বঙ্গোপসাগরে মিলেছে। গালুডির উপরিভাগে নদী খাড়া হয়ে উত্তর থেকে দক্ষিণে নামছে অর্থাৎ নদী এখানে উচ্চ গতি সম্পন্ন। আর এই স্তরে ব্যারেজের ঠিক উপরেই নারোয়া পাহাড় ছুঁয়ে নেমে আসা সেই গুডরু নদী মিলিত হয়েছে। ওখানটায় যেতে হলে ব্যারেজ পেরিয়ে দিগরি আর বড়াপাহাড়কে বাঁয়ে রেখে এগুতে হয়। গালুডি রেল স্টেশনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকার সময় এই পাহাড়টাই আমাকে ডাকছিল। এখন আমি তাকে হাই করে দিলাম। শীতের সময় কিংবা গরমের শুখা মরশুমে যদি গালুডি ব্যারেজে আসেন তবে গুডরু আর সুবর্ণরেখার মিলনস্থলে নেমে পড়তে পারেন। নদীর শুকনো স্রোতে হরেক রকমের পাথর পাবেন। মাইলের পর মাইল জুড়ে নদী তাদের ঠেলতে ঠেলতে এনেছে আসতে আসতে তারা ক্ষয়েছে। হাজার হাজার বছর ধরে ক্ষয়ে ক্ষয়ে তারা নুড়ি পাথর। তাদের কোনওটা গোল, কোনোওটা ডিম্বাকৃতি। সাদা কালো হলদেটে সবুজাভ সেই পাথর কুড়িয়ে নিতে পারেন। কানের কাছে নিয়ে একবার নাড়িয়ে দেখে নিন তো, ভেতরটা ফাঁকা আর ভেতরে কিছু নড়ছে কিনা? যদি নড়ে আপনি পেয়ে গেছেন কোনোও অমুল্য রতন। জানেনই তো চুনী পান্না ক্যাটসআই গোমেদ ইত্যাদি রত্নগুলি বিভিন্ন খনিজ ধাতুর সংমিশ্রণে তৈরি। সেই খনিজ পদার্থ সমূহ যেমন আ্যলুমেনিয়াম, সিলিকন, ম্যাগনেসিয়াম, বেরিলিয়াম, সালফার, কপার ইত্যাদি। আগেই বলেছি জাদুগড়া ও তার লাগোয়া পাহাড় সমূহ বিভিন্ন খনিজ সম্পদের ভান্ডার। আগ্নেয়শিলা অধ্যুষিত এই এলাকা একসময় অগ্নুপ্যাত ও অন্যান্য কারনে ভূগর্ভস্থ মৌলিক খনিজগুলি লাভার সঙ্গে মিলে মিশে ভূপৃষ্ঠের ওপরে সঞ্চিত হয়েছে। নদী সেই পথ কেটে কেটে এসেছে হাজার হাজার বছর ধরে আর বয়ে এনেছে কাটা পাথরের খন্ড থেকে নুড়ি। কখনও কখনও তাই ওই সব নুড়ি থেকে রত্ন পাওয়া যায়। সুবর্ণরেখা যেমন নিজেও সেই রত্ন বাহিনী, গুডরুও তাই। রাঁচির পিস্কা থেকে উৎপত্তি হয়ে ওড়িশা অবধি সুবর্ণরেখার দৈর্ঘ্য প্রায় ৪৭৫ কিলোমিটার এরমধ্যে গালুডি অবধি সুবর্ণরেখার দৈর্ঘ্য প্রায় অর্ধেক এবং পুরোটাই রত্নখচিত পথ। আর গুডরুর যাত্রা খনিজ সমৃদ্ধ জাদুগড়ার ভেতর দিয়ে। সুতরাং এই দুই নদীর মিলনস্থলও যে রত্নগর্ভ হবে বলাই বাহুল্য। জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের নিয়মিত ভ্রমন তালিকায় গালুডি ছিল। শুনেছি অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর গালুডি বেড়াতে এসে সাতসকালেই ছুটে আসতেন সেই অমূল্য রতনের খোঁজে। কিন্তু এইবেলা আমাদের সেই খোঁজ সম্ভব হয়নি। আমাদের এবারের যাত্রা সুন্দরী দুয়ারসিনির পথে। আমরা গাড়ি ঘোরালাম উত্তরে মহুলিয়ার পথে।






    ক্রমশ...




    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ভ্রমণ | ২৩ মে ২০২৪ | ৬৯১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • PSB | 71.179.175.3 | ২৩ মে ২০২৪ ২০:৩২532241
  • ভীষণ ভালো লাগলো। সেই ২০০১ যাওয়ার স্মৃতি মনে পরে গেলো। এখনো কি ভূতবাংলো তা আছে গালুডি তে ? স্টেশন থেকে একটু দূরেই ছিলো একটা টিলা র উপরে। আর স্টেশনটা তে রাত্রে এসে বসতাম দূরের পাহাড় গুলো র ওপর ছোটো ছোট গ্রামগুলো র আলো দেখা যেত।
  • মিঠু মণ্ডল | 2409:4088:ae89:3ed9::71cb:2c07 | ২৪ মে ২০২৪ ১২:৫৬532287
  •  ঝরঝরে , প্রানবন্ত ভ্রমণ কাহিনী। লেখনীর গুনে চোখের সামনে ভেসে উঠলো প্রতিটি দৃশ্যপট। লেখকের আরো লেখা পড়ার প্রত্যাশা রইলো।
  • Amiya Kumar Panda | ২৪ মে ২০২৪ ২০:৫৫532299
  • অনবদ্য ।
    আবার সাগ্রহে অপেক্ষা, পরের কিস্তির জন্য।
    প্রণাম
     
  • Sudipta Acharyya | ২৪ মে ২০২৪ ২১:৩৪532300
  • পড়ে মনে হচ্ছে এক ছুট্টে চলে যাই…….
  • মহুয়া ব্যানার্জী | 2405:201:9003:ff68:1d47:c24c:d5c3:6bf3 | ২৮ মে ২০২৪ ১২:১৮532436
  • লেখার গুণে ছবির মত স্পষ্ট হয়ে উঠল সব। 
    সুখপাঠ্য। 
  • কস্তুরী দাশ | 45.114.176.43 | ২৯ মে ২০২৪ ১৯:৪৯532485
  • দুর্দান্ত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে প্রতিক্রিয়া দিন