এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  স্মৃতিকথা

  • পুরানো কথা পর্ব ২৯

    Jaydip Jana লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | স্মৃতিকথা | ০৭ জুলাই ২০২১ | ১৭৪৮ বার পঠিত
  • অনীর-এর পরিচালনায় "মাই ব্রাদার নিখিল" এইচ আই ভি ও সমকামীতা মুলক চলচ্চিত্র সর্বভারতীয় স্তরে মুক্তি পেয়েছে তখন।অনেকাংশেই সত্য ঘটনা অবলম্বনে এ ছবি একই সঙ্গে এইচ আই ভি ও বৈষম্যের তথ্যের পাশাপাশি সমকামী জুটির ভালবাসার কথাও বলে। কোলকাতার মাল্টিপ্লেক্স-এ ছবির প্রদর্শনীর সাথে সাথে বিভিন্ন এইচ আই ভি নিয়ে কাজ করা সংগঠনের সদস্যদের আমন্ত্রণমুলক প্রদর্শনীর ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। অন্য অনেকের মত আমি আর বিতানও দেখতে গিয়েছিলাম সে ছবি।

    সেদিন রাতে ফোনে কথা বলতে বলতে একটু বেশিই আবেগপ্রবণ হয়ে গেছিল বিতান। আহ্লাদী স্বরে বলে উঠেছিল,"আচ্ছা যদি কখনও আমার জানতে পারিস এইচ আইভি ধরা পড়েছে, সিনেমার নাইজেলের মত আমার পাশে থাকবি তো" ওর ছেলেমানুষিতে হেসে ফেলেছিলাম, স্বতঃস্ফূর্তভাবে বলেছিলাম ওসব তোমার হবে কেন? ও ভাবুক স্বরে উত্তর দিয়েছিল, "তুই জানিস তো আমি কত জনের সঙ্গে কত কিছু করে বেড়াই, আর আমার কন্ডোম ব্যবহার করতে ভাল লাগে না," এ সত্যিটা জানি, আর জানলেও কেমন যেন লুকিয়ে রাখতেই ভালবাসি। আসলে দরজা বন্ধের ঘটনা গুলো বন্ধ রাখতেই ভালবাসি। সব বন্ধুরা গোপন কথা,বিছানার কথা নিজেদের মাঝে আলোচনা করলেও আমার রুচিতে বাঁধে। আমি পারিনা। অজানা আশংকায় খনিক হলেও কেঁপে উঠেছিল বুকটা, তাও বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম সেদিন ওকে, "সে তো আমারও হতে পারে, আমিও তো অনেক কিছুই করেছি একসময়।" স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে খেঁকিয়ে থামিয়ে দিয়েছিলাম তারপরই, বোঝাতে চেষ্টা করেছিলাম, দিনকাল পাল্টেছে, হলে চিকিৎসা হবে, এত ভাবার দরকার নেই। আমিই নাকি একসময় ভেবেছিলাম এডস হলে পট করে মরে যায়। ও বাচ্চাদের মত বলে উঠেছিল, "আমি টেস্টই করাব না। এইচ আই ভি হয়েছে জানলেই আমি মরে যাব।" অনেক বুঝিয়ে বাঝিয়ে ঘুমোতে পাঠিয়ে ফোন রেখে ছিলাম সেদিন। কিন্তু সারারাত দুচোখের পাতা এক করতে পারিনি, ভয়টা আমারও তো ছিল, যদি সত্যিই আমিও এইচ আইভি আক্রান্ত হই, আমার নাইজেল ও যদি আমার পাশে না থাকে, ভাবতেই পারিনি কি হবে...!

    মনে হয়েছিল রক্তপরীক্ষাটা আমাদের মত সব মানুষেরই দরকার। শুধু বহুগামী না একের পর এক একগামী সম্পর্কেও যারা থাকি তাদেরও...

    প্রত্যেক বছর মে মাসের তৃতীয় রবিবার এইচ আই ভি আক্রান্ত হয়ে যে সকল মানুষজন যারা মারা গেছেন তাদের স্মৃতিতে "আন্তর্জাতিক এডস ক্যন্ডেল লাইট মেমোরিয়াল ডে" পালন করা হয়। সে বছর গোর্কি সদনের অনুষ্ঠানে আবারও "মাই ব্রাদার নিখিল" দেখানো হল। দেখতে গিয়ে দেখলাম হঠাৎই বিতান বেশ লম্বা ফর্সা একটা ছেলের পিছনে ঘুরঘুর করছে, আমার তখন এসব গা সওয়া হয়ে গেছে। মোটামুটি জামাকাপড় পাল্টানোর মত করে বিতান শরীর পাল্টায়, আমিও ততদিনে বুঝতে শিখেছি জোর করে আটকানো যায়না কিছুই। এ জগতে শরীরের ছড়াছড়ি, আর যে যত নষ্ট সে তত ভাল। পুরুষমানুষ আর নষ্ট হয় নাকি। বস্তাপচা সতীত্ব আসলে ন্যাকামি। বিপ্রদাসকে এসব বলতে গেলে সে তো আর এক কাঠি ওপরে, পারলে আমাকেও বেচে টেচে দেয়। এ বৃন্দাবনে সবাই সতী। নিজেকেও বোঝাই ভালবাসা তো মনে মনে, মনটাই সব। কোলাকুলি হাত মেলানো সেটাও তো শরীর আর, গোপন অঙ্গ সেটাও শরীর। তবুও মন মানে না। বিতানের সঙ্গে থাকতে শুরু করার পর যদিও কাউকেই মনে স্হান দিইনি ( বিপ্রদাস পরকীয়া হলেও ভাসুরতুল্য)। শুধু বিতানকে অনুরোধ করেছিলাম, কিছু না লুকোতে, এ সমাজে যেমন কেউ সম্পর্কে আছে জানার পরেও তার সঙ্গে লোকে কিছু করে বেড়ায় তেমনই তার সঙ্গীর কান ভাঙাতেও ছাড়েনা এই বলে যে "তোমার ভালবাসার মানুষটা মোটেও লয়াল নয়।" অন্যের মুখ থেকে কিছু শুনে অপ্রস্তুত হয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে আমি চাই নি কোনওদিন। খানিক বাদে বিতানই এসে ছেলেটার সঙ্গে আলাপ করাল ওর নাম জিতু। কথা বলতে গিয়ে বুঝলাম একটা পরিশীলিত চটক আছে বটে তবে একে নিয়ে তেমন কিছু ভাবারও দরকার নেই।

    গোর্কি সদন থেকে বেড়িয়ে দলবেঁধে ঠিক হল নন্দন চত্বরে আড্ডা দেব আমরা। এদিকে জিতু দেখি বিতানের সঙ্গে লেপ্টে। খুব বেশি না ভেবে আরও বন্ধুদের সাথে কলকল করতে করতে নন্দন চত্বরে হাজির হলাম আমরা। হঠাৎ করেই বিতান উধাও আমি আর জিতু বেশ বকবক করছি। বিতান ফিরল আর একটি ছেলের সাথে সেও তথাকথিত সুপুরুষই বটে।

    এদিকে ছেলেটিকে বিতানের সঙ্গে দেখার পর থেকেই জিতুর শুরু হল ছটপটানি, যা আমি বেশ উপভোগ করছি। হঠাৎই বিপ্রদাসও দেখলাম বিতানের সঙ্গের ছেলেটির সঙ্গে খানিকক্ষণ বেশ হেসে হেসে কথা বলছে, আর খানিক বাদেই বিতান ছেলেটির সাথে বেড়িয়ে গেল। এদিকে জিতুর তো দেখি প্রাণ ওষ্ঠাগত। তার কাছে তখনও পর্যন্ত বিতানের মোবাইল নম্বর ও নেই। বেচারা প্রায় কাঁদোকাঁদো হয়ে আমার কাছে বিতানের নম্বর আছে কিনা জানতে চাইল। আমি হাঁসব না কাঁদব ভেবে পাইনা। মনে মনে মজাও পেলাম, কিন্তু কারও অনুমতি ছাড়া অজানা কাউকে তার নম্বর দেওয়া আমার কাছে কখনোই সমীচীন মনে হয় না। সেটা জানিয়ে পাশ কাটাতে চাইলাম। কিন্তু এ ছেলে পুরো কাঁঠালের আঠা। বাধ্য হয়ে বিতানকে ফোন করে জানতে চাইলাম নম্বর দেব কিনা! বিতান উল্টে জানাল, "যা ভাল বোঝ কর, আর আমার ফিরতে রাত হবে, তুমি বাড়ী ফিরে যাও রাতে ফোন করব।" যাই হোক বুঝলাম না নতুন ছেলেটি কে কি বিত্তান্ত, শুধু বুঝলাম বিতান তার সাথেই আছে, জিতুকে বিতানের ফোন নম্বরটা পাওয়ার পর জানাল বিতান যার সাথে আছে সে অর্চন (নাম পরিবর্তিত)। ওকে জিতু অনেক দিন থেকে চেনে, শেষে ফোড়ন দিতেও ছাড়ল না আমার সংসার এবার ভাঙল বলে...!

    আমিও হেসে বাড়ীর রাস্তা ধরলাম।

    আসলে অর্চনের নাম আমি বহুবার শুনেছিলাম বিপ্রদাস আর বিতানের কাছে। সেই যে কাউন্সেল ক্লাবের প্রথম দিকে ওরা যখন যেত তখন থেকেই ওরা অর্চন কে চিনত। বিতান অর্চন ওরা একসঙ্গে পুরুষ দেহে পুরুষ দেহীদের আকর্ষণে এইচ আইভির সম্ভাবনা নিয়ে, এমনকি কি ধরনের বি সি সি ( বিহেভিয়ার চেঞ্জ কমিউনিকেশন) মেটেরিয়াল নিয়ে এই সমস্ত মানুষের কাছে পৌঁছানো যায় সে সব কাজ করত, সে গল্প আমি বিতানের কাছে অনেকবার শুনেছিলাম। প্রথম রামধনু পদযাত্রার ছবিতে খবরের কাগজে অর্চনকে দেখা গিয়েছিল। সে নিয়ে পারিবারিক সমস্যাও হয়েছিল। শোনা যায় তারপর বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছিল ও। আর অর্চনের খবর ওরা কেউ পায়নি। যখন এইচ আইভি এডস ইনটারভেনশনের প্রকল্পের কাজ শুরু হল, তখন থেকে ওর মত দক্ষ কর্মীর অভাব ওরা বোধ করেছে সে কথা আমি অনেকবার শুনেছি। তাই অর্চন নাম টা শুনেই আমার মাথায় একঝলক ওর কথাই খেলেছিল।

    রাতের বেলা বিতানের ফোনে একরাশ খুশির ঝলক। আমি ঠিকই ভেবেছিলাম। বেশ কয়েকবছর রাজ্যের বাইরে কাটিয়ে অর্চন আবার কোলকাতায়।

    কয়েকদিন বাদেই বিতান আর বিপ্রদাসের পরামর্শে অর্চন ও আমাদের সাথে এই প্রজেক্টে যোগ দিল। আর তারপর অর্চনের সঙ্গে বন্ধুত্ব হতে আমার বেশি সময় লাগেনি।

    তথাকথিত কতি, একবগগা, অ্যটেনশন প্রিয় একটা আবেগপ্রবণ মানুষ। যার কাছে কমিউনিটির মানুষই সব।

    আমাদের জীবনে সম্পর্ক খুব বেশি দিন টেঁকে না। আসলে সম্পর্কে থাকতে গেলে যে ধৈর্য্য, পারস্পরিক বিশ্বাস থাকা দরকার তা আমরাই রাখতে পারিনা। তারওপর তথাকথিত হেটারোনর্ম্যাটিভ সম্পর্কের মত সমাজ, সন্তান আইন কোনও কিছুরই তো বাঁধন ছিল না। সবসময়ই ভাঙনের জয়গান। আর তাই সপ্তাহ মাস করে করে যখন দিন এগোয় আমরাও অবাক হই। কমিটেড একগামীতা সোনার পাথরবাটি, ওপেন রিলেশনশিপ-এও একে অন্যের জন্য থাকাটা খুব কম। তারপরেও ব্যাতিক্রম থাকে। আমি এক যুগ পেরিয়েও সম্পর্কে আছেন এমন অনেককেই জানি। তখন কাউকে কাউকে জানতাম। আর তাই যখন বিতানের জীবনে একবছর আমি বিতানের সাথে রয়ে গেলাম বিতান অবাক হয়েছিল। ওর জীবনে নাকি এটাই প্রথম সম্পর্ক যেখানে কেউ সব ঝড়ঝাপটা নিয়েও একবছর ধরে ওর সাথে থাকার অঙ্গীকার পালন করেছে।

    এত খবর আমি রাখতাম না খুশি হয়ে সব কথা বিতান রিকিকে বলেছিল। রিকিও শুনে খুব খুশি হয়ে আমি অফিস যেতেই আমায় আমায় জড়িয়ে ধরে সব জানাল। বিতান অফিস পৌছতেই বাকীরাও হইহই করে উঠল। রিকি ওদিকে আওয়াজ দিতে শুরু করল বিতানকে," কিরে অ্যানিভার্সারি গিফ্ট কি দিবি", বিতান নিজে জানতে না চেয়ে রিকিকে বলল," ওকে জিজ্ঞেস কর ওর কি চাই। "সঙ্গে ফোড়ন দিতেও ছাড়ল না "আর কি চাইবে, আমার সবকিছুই তো ওর!" আমি হেসে ফেলেছিলাম, লজ্জাও পেয়েছিলাম, উত্তর দিয়েছিলাম, "আমার আবার কি চাই! যা দেবে খুশি হয়ে তাতেই হবে।"

    বিতান জানত ওর সাথে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার খুব শখ ছিল, তাই কদিন বাদেই ঠিক করল আমরা দার্জিলিং যাব, মধুচন্দ্রিমায়!!!! ডিসেম্বরের ঠান্ডায়। খবরটা চাপা থাকেনি মোটেও সঙ্গে সঙ্গে পোঁ ধরল আমাদের মেয়ে শিবু, ওদিকে আমার আইবুড়ো ননদ, অর্চন শুনে বলল সেও যাবে। বিতান আবার তারপর বড়দি মানে ত্রিদীপকেও যাওয়ার কথা বলল। বিপ্রদাসকেও বলা হলে তিনি যেতে পারবেন না জানালেন। ফুল ফ্যামিলি নিয়ে মধুচন্দ্রিমা যাওয়ার প্ল্যান দেখে আমি হেসে বাঁচিনে। আমার মা বাবার বিয়ের পর পুরী যাওয়ার গল্প মনে পড়ে গিয়েছিলো। যদিও সংসারী আমার তাতে খুব একটা দুঃখ হয়নি।

    দুঃখের তখনও বাকি ছিল, তখন আমাদের সকলেরই রোজগার কম। তাই ঠিক হয়েছিল,ট্রেন রিজার্ভেশন না করে ডেলী টিকিটে যাওয়া হবে। শিয়ালদহ থেকে দার্জিলিং মেল। যেদিন যাব সেদিন দুপুরে হঠাৎ বিতান জানাল জিতুও আমাদের সঙ্গে যেতে চায়। ও এর আগে কোথাও যায়নি। শুনেই মাথাটা গেল গরম হয়ে। আমি জানালাম আমি যাব না। বাকীরা যাক। এদিকে বড়দি আর অর্চন সব শুনে রেগে লাল। আমি না গেলে ওরাও যাবে না। বিতান পড়ল আতান্তরে। এদিকে শিবু সবশুনে বিতানকে খুব গাল পাড়ল। এদিকে বিতান তখন জিতুর জন্য মজেছে। সকলে মিলে আমায় বোঝাতে শুরু করল বাকীদের জন্য আমি যেন যাই। কাউকেই বোঝাতে পারলাম না এ বেড়াতে যাওয়াটা শুধু আমার আর বিতানের, আমাদের একবছর একসাথে থাকার, আমাদের ভালবাসার একসাথে উদযাপনের। এদিকে খারাপও লাগছিল। বড়দিও অফিস ছুটি নিয়েছিল। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম অনেক হয়েছে, আমি বাকীদের জন্যই যাব। বিতান আর জিতুকে আমি চিনিও না। এটা সে মুহুর্তে আমার কাছে শুধুই বেড়াতে যাওয়া, ভালবাসার মানুষের সাথে কোথাও যাওয়ার স্বপ্ন মনে মনেই রয়ে গেল।

    এ দার্জিলিং ট্যুর আমার খুব খারাপ হয়নি। যদিও সব জেনেও জিতু একবারও কোনও ভাবেই বিতান আর আমাকে একটুও স্পেস দেয়নি। সারাক্ষণ বিতানের গায়ে গায়ে লেপ্টে ছিল। অভিমানে আমিও একটা কথাও বলিনি। অর্চন আর বড়দিও জিতুকে নিতে পারেনি। পারলে ওরা ম্যাল থেকে ধাক্কা মেরে ওকে পাহাড়ের খাদে ফেলে দেয়। ওখানে গিয়ে জেনেছিলাম এর আগে অর্চনের প্রথম সম্পর্কটাও জিতুর জন্য হারাম হয়ে গেছে। বড়দির মত চুপচাপ মানুষও জিতুকে তিরষ্কার করেছিল। আমি কাউকেই কিছু বলিনি। নিজের মত অর্চন আর বড়দি আর শিবুর সাথে সময় কাটিয়েছি।

    আসলে এই ট্যুর এ আনন্দ করার মতও অনেক উপাদান ছিল আমার জন্যে। প্রথম দার্জিলিং পাহাড়, প্রথম টয়ট্রেন আর সুন্দর নিসর্গে আমি আমার মত করে মজে গিয়েছিলাম। ঠিক হয়েছিল এন জে পি থেকে টয়ট্রেন এ দার্জিলিং যাব। তখনও এন জে পি থেকে টয়ট্রেন চালু ছিল। টয়ট্রেনের ডিজেল ইঞ্জিন, কয়লার ইঞ্জিনে বদলানো ছয়ঘন্টার জার্নি প্রায় বারো তেরো ঘন্টা, সকাল থেকে রাত অবধি পাহাড়ের রঙ পরিবর্তন, সারাটা রাস্তা ডিসেম্বরের ঠান্ডায় অর্চনের একটা স্লিভলেস উলেন জ্যাকেটের ফ্যাশন, ঘুম স্টেশনে ক্যাম্প ফায়ার দেখে রাতের বেলা বড়দি আর অর্চনের পাহাড়ি সুরে লোকাল মানুষজনের সঙ্গে নাচে আমারও পা মেলানো, মাঝে মাঝে অদ্ভুত অ্যাকসেন্টে ওদের ইংরেজি বলা, সব মিলিয়ে আমাকে আমার নিজের মত করে আনন্দে ভরিয়েছে। আসলে দার্জিলিং পাহাড় মানে আমার কাছে স্বপ্ন ছিল তখনও, অঞ্জন দত্তের গানের দার্জিলিং, সোনাদা, টুং, বাতাসিয়া লুপ, সত্যজিতের কাঞ্চনজঙ্ঘার দার্জিলিং ছাড়া আমি তখনও কিছু জানতাম না যে। আর তাই গ্লেনারিস কেভেনটার্সের হাতছানি অথচ পকেট গড়ের মাঠ সে এক অনাবিল অনুভুতি। চাইলেই আসলে নিজের সঙ্গে নিজের মত কাটাতে তখনও পারতাম আমি।

    শুধু তারপর থেকে ভালবাসার মানুষের সাথে বেড়াতে যাওয়ার স্বপ্ন আর কোনওদিন দেখার কথা ভাবি নি ...
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ০৭ জুলাই ২০২১ | ১৭৪৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি মতামত দিন