এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  সমাজ

  • লিলিয়ান থেকে লীলা - এক অন্যরকম জীবন

    স্বাতী রায় লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | সমাজ | ২২ অক্টোবর ২০২১ | ১৪২১২ বার পঠিত | রেটিং ৪.৪ (৫ জন)
  • ১৯০০ সাল। ততদিনে মেয়েদের পড়াশোনা করাটা খানিকটা সহজ হয়ে গেছে। সেই কোন ১৮৮৩ সালে কাদ্মবিনী বসু বি এ পাশ করেছেন। তারপর নয় নয় করে আরও আঠেরো জন বঙ্গমহিলা বিএ পাস করে ফেলেছেন। ১৯০০ সালে পাশ করলেন যে কুড়িতম মহিলাটি তার কথা বলব বলেই এই লেখা।  এই কন্যাটি অনর্গল ইংরাজী আর ফ্রেঞ্চ বলতে পারে , আর ফ্রেঞ্চ নিয়ে পড়ে সে  পেল কলকাতা  বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগের সর্বোচ্চ নম্বর । নিয়মগত কারণে প্রেস্টিজিয়াস ঈশান স্কলারশিপ পেল না বটে, কিন্তু তাতে তো তার কৃতিত্ব খাটো হয় না। কন্যাটির নাম লিলিয়ান পালিত, বন্ধুরা ডাকে লিল বলে। 
     
    কলকাতার যে ইঙ্গ-বঙ্গ সমাজকে নিয়ে রবীন্দ্রনাথ প্রভূত ব্যঙ্গ করেছেন, তাদের অভিহিত করেছেন সিসি-লিসি-কিটি দের দল বলে, লিল বোধহয় তাদেরই একজন । তিন দাদার এক বোন। ১৮৭৯ সালে লন্ডনে জন্ম, বাবা তারকনাথ পালিত, মা কুমুদ কামিনী। বাবা তারকনাথ কলকাতা হাইকোর্টের ডাকসাইটে ব্যারিস্টার। বিশাল বড়লোক। সে সময়ের ইঙ্গবঙ্গ সমাজের মাথাদের একজন। কুমুদ কামিনী শান্ত শিষ্ট, ছোট্টখাট মহিলা, তারকনাথকে খুব ভয় পেতেন। তারকনাথ চেয়েছিলেন তাঁর সন্তানদের ইংল্যন্ডে পড়াশোনা করাতে । সেই উদ্দেশ্যে  ইংল্যন্ডের 3, Ormonde Terrace, Primrose Hill, N. W. পালিত পরিবারের আরেকটি ঠিকানা ছিল। দাদাদের পড়াশোনা বিলেতে। লিলিয়ান অবশ্য বেথুন থেকে প্রাইভেটে বিএ দিয়েছিলেন। সম্ভবত স্কুলজীবনে কলকাতার লরেটো কনভেন্টেও কিছুদিন পড়েছেন।  
     
    এইখানে তারকনাথ সম্বন্ধে দু কথা বলার লোভ ছাড়তে পারছি না। বিদ্যোৎসাহী এই মানুষটির নাম জড়িয়ে আছে কলকাতার দুটো নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যাদবপুর উনিভার্সিটি আর সায়েন্স কলেজের সঙ্গে। যখন বঙ্গভঙ্গের পরে স্বদেশি নিয়ে সবাই মেতে উঠেছে, তখন তারকনাথ পালিত আরও ক’জনের সঙ্গে মিলে তৈরি করেন “সোসাইটি ফর দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অফ টেকনিক্যাল এডুকেশন ইন বেঙ্গল” । তার আওতায় চালু হয় বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট।  ৯২ আপার সার্কুলার রোডের বাড়িতে হই হই করে আরম্ভ হয়ে যায় পঠন পাঠন। পরে অবশ্য ১৯১০ সালে এটা এনসিই বেঙ্গলের সঙ্গে মিশে যায়। আর তারপরই তারকনাথ পালিত এর সংস্রব ত্যাগ করেন। শোনা যায় কাজের আদর্শগত তফাৎ নিয়ে তারকনাথের আপত্তি ছিল। এই বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউটই অনেক ঝড় ঝাপটা পুইয়ে শেষে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের চেহারা নেয়। কিন্ত দল ছাড়লে কি হবে, দেশের বিজ্ঞানের ভিত শক্ত করার ইচ্ছে তো তখনও মরেনি। এদিকে বয়স হয়ে যাচ্ছে, সময় ফুরিয়ে আসছে।  তখন  ১৯১২ সালে আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে শলা করে তারকনাথ কলকাতা বিশ্ববদ্যালয়কে দুই দফায় প্রায় ১৫ লাখ টাকা দান করেন। উদ্দেশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় একটি উচ্চতর বিজ্ঞান চর্চাকেন্দ্র তৈরি।  এই দানের শর্ত হিসেবেই পালিত অধ্যাপকের পদ তৈরি হয়। নিজের বসত বাটিও বিজ্ঞান চর্চার জন্য দান করেন।  তারপরের কথা তো ইতিহাসের পাতায় ঠাই পেয়েছে। 
     
    অবশ্য বিদ্যাচর্চা বোধহয় এঁদের বংশগত। তারকনাথ পালিতের বাবা নিজের গ্রাম আমেরপুরে একটি স্কুল চালাতেন, সেটা অবশ্য ১৮৪৪ সালে তাঁর অকালপ্রয়াণের পরে উঠে যায়।  তারকনাথ ব্যক্তিগত জীবনে একটু ছিটিয়াল আর বাড়াবড়ি রকমের স্পষ্টভাষী ছিলেন বোধহয়। তাই সবার সঙ্গেই প্রায় ঝগড়া হত। ইনি ছিলেন সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সহপাঠী। আমৃত্যু বন্ধুও বটে।  সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিচারণে তারকনাথ পালিতের বহু উল্লেখ আছে।  ঊমেশ চন্দ্র বনার্জির কন্যা জানকি অ্যাগনেস পেনেলোপ মজুমদারের অনবদ্য স্মৃতিকথাতেও ( নাম “ফ্যামিলি হিস্ট্রি” ) তারকনাথ পালিতের পরিবারের উল্লেখ পাই। 
     
    যাই হোক লিলিয়ানের কথায় ফিরি।  লিলিয়ান একই সঙ্গে কালচার্ড এবং জিনিয়াস ছিলেন। কিন্তু “সংসার সুখী হয় রমণীর গুণে” এই সার কথাটা ইংল্যন্ডে বড় হওয়ার দরুন হয়ত একটু কানে কম ঢুকেছিল।  জানকি বলছেন যে she was wild and fighty. 
     
    লিলিয়ান নিজ ইচ্ছায় বিয়ে করেন শিশির মল্লিককে। ইনি ভাগলপুরের ব্যারিস্টার অতুল মল্লিকের চতুর্থ ছেলে। খুব সম্ভবত অভয়চরণ মল্লিক, যিনি  ভাগলপুরের প্রথম মহিলা সমিতি খুলেছিলেন, শিশিরের পিতামহ। এরাও সব ভাইরা কেউ ব্যারিস্টার, কেউ আই সি এস। এই বিয়েতে লিলিয়ানের একটি পুত্রসন্তানও হয়। অজিত মল্লিক। কিন্তু এই বিয়ে সুখের হয়নি। লিল কলকাতা হাইকোর্টে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা ঠোকেন। লিলের পক্ষে দাঁড়ান পিতৃবন্ধু ব্যারিস্টার সত্যেন্দ্রপ্রসন্ন সিংহ। ১৯০৯ সালে।  
     
    কেন হয়েছিল ডিভোর্স? জানতে পারি নি। হাজার খুঁজেও কলকাতা হাইকোর্টের এই রকম কোন কেসের সন্ধান পাইনি। কোন ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণেও  ডিভোর্সের কারণ নিয়ে কোন তথ্য পাইনি।  তবে শৈলসূতা দেবী  “পরিণয়ে প্রগতি” বইতে জানিয়েছেন যে  “স্বামীত্বের সুযোগ লইয়া স্ত্রীর উপরে যতটুকু প্রভাব খাটানো  চলে, লিলিয়ানের স্বামী সেটুকু প্রভাব খাটাইতে চাহিতেন ; কিন্তু ধনী পিতার আদরে বর্ধিতা কন্যা স্বামীকে স্বামীত্বে ততখানি অধিকার প্রদান করিয়া আপনার স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ করিবেন কেন ? তিনি স্বামীগৃহ পরিত্যাগ করিয়া পিতৃগৃহে চলিয়া আসিলেন। “ -  ঠিক কি হয়েছিল যা জেনে কোন মতামত দেওয়া উচিত না, তবে এই ঘটনায় সে সময় যে বেশ নাড়াচাড়া পড়ে গিয়েছিল সে তো বলাই বাহুল্য। জনশ্রুতি এই যে খুব সম্ভবত এটাই প্রথম ভারতীয়দের মধ্যে ডিভোর্সের কেস। যদিও পক্ষে বা বিপক্ষে কোন প্রমাণ পাই নি। 
     
    লিলের জীবন এরপর অন্য খাতে বইল। তিনি আবার বিয়ে করেন। এবার ভাগলপুরের জমিদার দীপ নারায়ণ সিংহকে। অসম্ভব ধনশালী, বিহার প্রদেশ কংগ্রেসের হর্তাকর্তা দীপ নারায়ন নিজেও ব্যারিস্টার, যদিও একদিনও আদালতে পা দেন নি।  কলকাতার ইঙ্গ বঙ্গ সমাজে খুবই পরিচিত একটি নাম।  দীপ নারায়ণের কিন্তু এটা দ্বিতীয় বিবাহ।  প্রথম স্ত্রী রামানন্দী দেবীর একটি কন্যা সন্তানও আছে। তাহলে  লিল কেন এই বিয়েতে রাজী হলেন? জানা নেই।  
     
    দীপ নারায়ণকে বিয়ে করে লিল বিভিন্ন  সমাজসেবা মূলক কর্মকান্ডে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন। নতুন পরিচিতিও হল , লীলা সিংহ।  চিত্রা দেব জানিয়েছেন যে  লিল ভাগলপুরে মেয়েদের জন্য স্কুল খোলেন। তার কোন প্রমাণ যদিও মেলে নি, তবে ভাগলপুরে অনাথাশ্রম খোলা, লেবার ওয়েলফেয়ারের জন্য কাজ করা, বিভিন্ন বৃত্তির বন্দোবস্ত করা এইসবই তাদের কাজের মধ্যে পড়ত। এ ছাড়া, দীপ নারায়ণের মৃত্যুর আগে তাঁর দান করা সম্পদ দিয়ে তৈরি  লীলা-দীপনারায়ণ ট্রাস্ট ভাগলপুরের টেকনিক্যাল  শিক্ষার ক্ষেত্রে একটা নতুন যুগের সূচনা করে। বিহারের অসহযোগ আন্দোলনেরও তিনি এক পরিচিত মুখ। 
     
    তবে লীলা সিংহের সবথেকে বড় ভূমিকা বোধহয় ভারতের মেয়েদের ভোটাধিকারের লড়াইতে। সরকারের এনকোয়ারি কমিশনে বিহারের হয়ে লীলা প্রতিনিধিত্বও করেন।  তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে ভারতের মেয়েরা তো পর্দানশীন, তাহলে তারা কি করে ভোটে দাঁড়াবে বা ভোট দেবেন? সঙ্গে সঙ্গে লীলার সপাট উত্তর দিয়েছিলেন, যেভাবে ভূপালের বেগম পর্দার আড়াল থেকে রাজ্যপাট চালান। মেয়েদের স্বাধিকারের প্রশ্নে তিনি একেবারে সমঝোতাহীন।  বিভিন্ন দেশে দেশে ঘুরে ভারতীয় মেয়েদের ভোটাধিকারের পক্ষে জনমত তৈরি করেছেন।  ১৯৩৫ সালে দীপনারায়ণ সিংহ মারা যাওয়ার পরে লিল প্যারিসে চলে যান। সেখানেই ১৯৪১ সালে তাঁর মৃত্যু হয়।  স্বাধীন ভারতে মেয়েদের ভোটে দাঁড়ানো আর ভোট দেওয়ার অধিকার দেখে যাওয়ার সৌভাগ্য তাঁর হয় নি।  
     
    আগেই বলেছি পালিত বংশের কোন স্মৃতিকথা, চিঠিপত্রের আমি সন্ধান পাই নি। তিল তিল করে বিভিন্ন স্মৃতিকথা, ইন্টারভিউ থেকে জুড়ে জুড়ে এইটুকু খাড়া করা। ইন্দিরা দেবী তার স্মৃতিসম্পূটে তারকনাথ পালিত সম্বন্ধে বলেছেন  যে তাঁর পারিবারিক জীবন সুখের হয় নি। ছেলে-মেয়েকে বিলিতি আচার-ব্যবহারের স্রোতে ভাসিয়ে দেওয়ার জন্য পরে তাঁর অনুতাপ হয়েছিল। জানি না এই পারিবারিক অসুখের কতখানি লিলের কারণে। অবশ্যই বাঙ্গালী মেয়েদের যে লক্ষ্মী মেয়ের ছাঁদ আমরা দেখতে অভ্যস্ত, লিল সেই ছাঁচে পড়েন না। যতই বিলেতি ধরণে বড় হন, কি করে তিনি এতখানি সমাজ সংস্কারকে নস্যাত করার সাহস পেলেন? অনেক ভেবে মনে হয়েছে, ছোট থেকে বাঙ্গালী মেয়েদের যে “মেয়ে করে তোলার”  ট্রেনিং দেওয়া হয়, বৃহত্তর- পরিবার বর্জিত  বিদেশবাসের কারণে তাঁর বোধহয় সেই আত্মবিসমৃতির শিক্ষায় কিঞ্চিত কমতি পড়েছিল। তাই হয়ত আত্মকে তিনি বেশি গুরুত্ব দিতে পেরেছিলেন। দীর্ঘ বিলেতবাসের জন্য  বিলিতি ধরণের নারী স্বাধীনতার বক্তব্যেও তিনি ঘোর প্রভাবিত ছিলেন। তার সমসাময়িক বাঙ্গালী লক্ষ্মী মেয়েরা যখন হিন্দুধর্মের পক্ষে গ্লানিকর হিন্দু-মুসলিমের ( শান্তি দাস -হুমায়ুন কবীরের ) বিয়েতে বাগড়া দিতে চেষ্টা করেন, তখন তিনি নিজেকে ডুবিয়ে দেন মেয়েদের ভোটাধিকার আদায়ের কাজে। কোনটা যে বেশি ভাল কাজ! 
          
    বিবাহ বিচ্ছেদের মাধ্যমে লিল  ভারতীয় সমাজকে যে ধাক্কাটা দিয়েছিল, সেটা কিন্তু খুব আকাশ থেকে  পড়া না। তার অনেক আগে থেকেই ভারতীয় মেয়েরা বিবাহবিচ্ছেদের প্রশ্ন তুলছেন। কিন্তু তারা সংখ্যায় এতই কম যে সমাজ নাকে সর্ষের তেল দিয়ে ঘুমিয়েছে। বেশির ভাগ মেয়েই তো যা চলে আসছে তার থেকে অন্যরকম কিছু করার কথা ভাবতেই পারেন না। আর তারপর বাবা-মা বা পরিবারের অন্যদের থেকে বিরোধিতা পেলে তো আর কথাই নেই। বিদ্রোহের মুকুল ওখানেই ঝড়ে গেল। ফলে আমাদের মেয়েরা স্বামী-পরিত্যক্তা হয়ে চোখের জল ফেলে যেতে পারেন যাবজ্জীবন, কিন্তু বিবাহ বিচ্ছিন্না হওয়ার সাহস দেখাতে পারতেন না। লিলের পরেও কাজটা সহজ হয় নি। ১৯২৫ নাগাদ নিরুপমা দেবী যখন কুচবিহারের রাজকুমারকে ডিভোর্স করেন, তখনও আবার তুমুল ঝড় ওঠে।   
     
    আজ একশ বছর পরেও কি  ছবিটা পুরো পাল্টাল? সমাজের সব স্তরে কি আজ ডিভোর্স গ্রহণীয় হয়েছে? বাবা-মারা  বলেন না আর  যে মানিয়ে চল, মানিয়ে চলাই মেয়েদের কাজ ? কে জানে!  তবে এতদিনে অনেকটাই আগল খুলেছে। পিছনের কারণ যাই হোক না কেন,  অনেকেই আর ফালতু কে কি বলবে ভেবে নিষ্ফলা বিবাহসম্পর্কে আটকে থাকছেন না। তার চাইতে ডিভোর্সকে অনেক বেশি পছন্দ করছেন। এই লিঙ্কটা https://economictimes.indiatimes.com/magazines/panache/happily-divorced-indian-women-are-breaking-the-stigma-around-separation-like-never-before/articleshow/67704287.cms তার প্রমাণ।  মেয়েদের এই আত্মমুক্তির পথটি খুলে দেওয়ার জন্য লিলের মতন অগ্রবর্তিনীদের ধন্যবাদ না জানিয়ে উপায় কি?
     
    নোট - তারক নাথ পালিত কেমন মানুষ ছিলেন একটি ঘটনায় আভাস মেলে, আজন্ম ছেলেদের বিলিতি পরিবেশে মানুষ করলেও বড় ছেলে ইংরেজ দুহিতা বিয়ে করায় তার সঙ্গে সংশ্রব ত্যাগ করেন। আর মেয়ে শিশির মল্লিক কে ডিভোর্স করলেও সেই শিশির মল্লিককেই লোকেন পালিতের সঙ্গে  নিজের উইলের executor করেন।

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ২২ অক্টোবর ২০২১ | ১৪২১২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Kuntala Lahiri-Dutt | ২২ অক্টোবর ২০২১ ১০:৪৯500031
  • কি যে ভালো লাগল, কি বলবো! 
    আপনি আরো তথ্য পাননি তার কারণ ইনি কোলকাতার বাইরের মানুষ. এই সমস্যার কোনও সমাধান নেই! 
  • সম্বিৎ | ২২ অক্টোবর ২০২১ ১১:১৩500033
  • বাপ রে! কী খাটনির কাজ করেছিস! তারকনাথ পালিতকে রবিবাবুও কোন একটা বই উচ্ছুগ্য করেছিলেন বলে যেন মনে হচ্ছে।
  • স্বাতী রায় | ২২ অক্টোবর ২০২১ ১৫:৪৭500049
  • তারকনাথ পালিত কে বই উৎসর্গ করেছেন ? জানি না r ক্ষণিকা উৎসর্গ করেছিলেন লোকেন পালিত কে।  লোকেন পালিত রবীন্দ্রনাথের বন্ধু লোক। 
    তারকনাথ  রবীন্দ্রনাথ কে টাকা ধার দিয়েছেন। তবে দুজনের সম্পর্ক খুব উষ্ণ ছিল না বোধহয়। এও সব দান করলেও বিশ্ব ভারতীকে মাত্র ১০০ টাকা দিয়েছিলেন। বোধ হয় একটু আদর্শগত ফারাক ছিল। 
  • স্বাতী রায় | ২২ অক্টোবর ২০২১ ১৫:৫১500050
  • @kuntala  আজই সন্ধান পেলাম যে দীনেন্দ্র কুমার রায় তারকনথের  একটি জীবনী লিখেছেন। আগে জানতাম না। 
  • সম্বিৎ | ২৩ অক্টোবর ২০২১ ০৪:০৯500080
  • লোকেনের সঙ্গে তারকনাথকে গুলিয়েছি। 
  • প্রশান্ত শীল | 180.151.132.2 | ২৩ অক্টোবর ২০২১ ১২:৩৩500099
  • লেখাটি ভাল হয়েছে। তবে  লেখক “সংসার সুখী হয় রমণীর গুণে” এই উক্তি দিয়ে কি প্রচ্ছন্ন ভাবে লীলা কে দোষ দিতে চেয়েছেন ডিভোর্সের  ব্যাপারে  ? 
  • কৌশিক ঘোষ | ২৩ অক্টোবর ২০২১ ১৫:৪১500105
  • প্রশান্ত বাবু 
    ক্ষমা করবেন। আমার কিন্তু অন‍্যরকম মনে হয়েছে। ভারতীয় মেয়েদের কানে (পশ্চিমি মেয়েরাই বা বাদ যাবে কেন ? যতো দোষ সব বৌদের, সর্বত্রই) ছোট্ট থেকেই তো ঢালা হয় 'সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে।' ঐ জায়গাটা পড়ে আমার তো মনে হলো এই বলা বিষয়টার প্রতি লেখক শ্লেষের সুরে কথা বলছেন এবং সংসার সুখের হয় জাতীয় বক্তব্যের বিরুদ্ধেই বলছেন। গোটা লেখাটার কোথাও ঐ প্রবাদের পক্ষে কিছু বলছেন এমন সুর কানে ধরা পড়েনি।
    আমার পরিচিত বৃত্তে এই ধরনের কথন বেশ চালু। অন‍্যত্র কি হয় জানি না, হয়তো সেজন্য সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে।
  • | ২৩ অক্টোবর ২০২১ ১৬:৫৪500110
  • তোমার এই খুঁজে বের করা কাহিনীগুলো এত ভাল লাগে। অনেকে যেমন বেরিয়ে আসছে তেমনি অনেকে আটকেও থাকছে। অনেকে আবার স্রেফ মাথারবুপরে একটা নিরাপদ ছাদের অভাবে বেরোতে পারে না। বাপ মায়েরা যদি আরেকটু বুঝদার হত! 
  • স্বাতী রায় | ২৩ অক্টোবর ২০২১ ২০:১৩500121
  • প্রশান্ত বাবু না আমি লিলিয়ান কে একটুও দোষ দিই নি। ওই লাইনটা, কৌশিক যেমন বলেছেন,  ব্যঙ্গ করে লেখা। 
    আর  যে ডিভোর্সের কারণই জানতে পারিনি তা নিয়ে লিল বা শিশির কাউকেই দোষ দেব কেন ? 
     
    @দ আমাদের দেশে মেয়েদের জন্য শেল্টার জিনিসটার বহু সংখ্যায় দরকার। আর দরকার কর্ম নিরাপত্তা। দুটোরই কোন সরকার ভরসা দেবে না, হয়ত সোসিও ইকোনমিক্যালি ভরসা দেওয়া সম্ভব ও না,  আর এই দাবী নিয়ে মেয়েদের হয়ে লড়র  মত কোন গোষ্ঠীও নেই।   কাজেই  আমাদের বাপের বাড়ি ছাড়া গতি নেই। এদিকে সব মেয়েরাও কিন্তু নিজের ভার নিজে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয় না।  বাবা ভাই একবার দায় ঝেড়ে ফেলেছে , সেই বা ফের ঘাড় পাতবে কেন?  
  • কৌশিক ঘোষ | ২৩ অক্টোবর ২০২১ ২১:৩৫500124
  • স্বাতী
    এবার কিন্তু আপনার দ-কে বলা বক্তব্য পছন্দ হলো না। শেল্টার নেই তো নেই। বাপের বাড়িও নেই তো নেই। মেয়েদের কাছে এ আর কি নতুন ?
    আমি নিজে এক কলেজযাত্রী মেয়ের বাবা। পরিচিত বৃত্তে বিবাহিত, বিয়েতে-আগ্রহ-নেই-অতএব-একলা, ডিভোর্সি, সব ধরনের মহিলাই আছেন। পরিবেশ তাঁদের অনেককে 'feeling lonely' করে তোলে, করে তুলেছে, ঠিক কথা। মাটির রাস্তায় চলছেনও এঁদের অনেকেই 'lonely' হয়ে, কষ্টের সাথে অজস্র বাঁকা কথা, বাঁকা নজর সয়ে।
    আমার মেয়ে-বৌ বা অন‍্যদের মেয়ে বৌ পিসি মাসি কাকিমা, এরা সবাই পুরুষদের মতোই সমান সমান অংশীদার সবকিছুর, এই আইডিয়াটা এখনো নেই।এখানেও নেই, আমেরিকাতেও নেই। কিন্তু একশো বছর আগের চেয়ে অনেকটাই পাল্টেছে অবস্থা। 
    কিছুতেই অর্ধেকটাকে পেছনে ফেলে রেখে বা পেছনে ঠেলে রেখে গোটাটার এগোনো সম্ভব না। গোটাটার এগোনো অবশ‍্যম্ভাবী। তাহলে ঐ ঠেলে রাখা অর্ধেকটার স্বীকৃতি পাওয়া এবং সমান অংশীদারিত্ব পাওয়াও অবশ‍্যম্ভাবী। সে আমরা পুরুষবীরবৃন্দ চাই বা না চাই, সেসব does not matter.
    দ আর স্বাতীরা পাঁচ হাজার বছর ধরে জ্বলে আসছে, গ্রহে তথাকথিত সবথেকে উন্নত প্রাণীরা চিরকাল মনে করে এলো সংসার সুখের করে তোলা শুধুমাত্র দ বা স্বাতীদের দায়িত্ব। জ্বলা সহ‍্য হয়ে গেছে, দিদি। সমান সমান জায়গা তো দিতে হবেই। না হয় আর পাঁচশো বছর জ্বলবে। 
     
  • স্বাতী রায় | 117.194.37.201 | ২৫ অক্টোবর ২০২১ ১৩:১৫500185
  • @কৌশিকবাবু সমান অংশীদারীত্ব তো নিতান্ত প্রয়োজন। কোন দ্বিমত নেই।  কিন্তু এই চেতনা তো সব মেয়েদের মধ্যে জাগতেও হবে। তবে দ যেটা বলেছিলেন যে মেয়েরা একটা নিরাপদ ছাদ পায় না বলে বেরোতে পারে না সেটার প্রেক্ষিতে আমি একটা  প্রাকটিক্যাল সমস্যার কথা বলেছিলাম। আর সেই সঙ্গে এটাও আমার বিশ্বাস যে  পৈতৃক সম্পত্তিতে মেয়ের সমান অংশ এটা যেমন সত্যি মেয়েদের মাথায় ঢোকা দরকার  তেমনই এটাও বোঝা দরকার যে বিয়ের সময় পঁচিশ ভরি সোনা, আসবাব এট- ওটা-সেটা নিয়ে বিয়ে করলে সেটাও কিন্তু সেই অংশীদারিত্বের থেকেই যায়।  
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল মতামত দিন