আগে ভারতবর্ষ স্বর্গরাজ্য ছিলনা, শিল্পপতিরা এমনকি স্বাধীনতার আগে থেকেই পার্টিতে পয়সা দিতেন। জিডি বিড়লার আত্মজীবনী পড়লেই দেখা যাবে, কংগ্রেসের পিছনে তিনি কত টাকা ঢেলেছিলেন, স্বাধীনতার আগেই। ইংরেজের সঙ্গে দরকষাকষির জন্য কংগ্রেসকে তাঁর দরকার ছিল। গোলটেবিল বৈঠকেও উপস্থিত হয়েছিলেন এক আধবার। টাটা কোনো পয়সা-টয়সা দিতেননা, কারণ ইংরেজ তাঁকে পুষত। নিজের স্বার্থেই। ... ...
সংখ্যাগুলো সবই কোটি টাকার অঙ্কে। আর কোম্পানিগুলোও খুবই বিখ্যাত। ১। ফিউচার গেমিং অ্যান্ড হোটেল সার্ভিসেস। কোম্পানিটি চালান লটারিসম্রাট সান্তিয়াগো মার্তিন। বহু বছর ধরে ইডি-সিবিআই এর নজরে আছেন, রেডও হয়েছে অনেকবার। কিন্তু ইডি সবাইকে ধরেনা। তার জন্য মূল্য চোকাতে হয় নিশ্চয়ই। কোম্পানি দিয়েছে ১৩০০ কোটি টাকারও বেশি। কোন দেবতার পায়ে গেছে, আন্দাজ করার জন্য কোনো পুরস্কার নেই। ২। মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং। তেলেঙ্গনার দুই রেড্ডির কোম্পানি। ২০১৯ এ আয়কর হানা হয়েছিল আপিসে। ক্যাগ রিপোর্টেও এদেরকে হাজার পাঁচেক কোটি টাকা অতিরিক্ত পাইয়ে দেওয়া হয়েছে সরকারের দিক থেকে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তদন্ত কোথাও এগিয়েছে বলে খবর নেই। অভিযোগ বড়, মূল্যও বড়। ... ...
সংশোধন করে কী হবে? সে বলেননি। কিন্তু আন্দাজ করা যায়। হিন্দুরাষ্ট্র হবে। অবাধ বাঙালি বিতাড়ন হবে। বাংলা হবে হিন্দুস্তান। একনায়কতন্ত্রের দিকে কয়েকধাপ এগোনো হবে। রাজ্য সরকারগুলো এখনই প্রায় মিউনিসিপ্যালিটি, তাকে ক্লাবের পর্যায়ে নামিয়ে আনা হবে। তা তুলেও দেওয়া হতে পারে। তারপর দেশজুড়ে একদিকে হিন্দি-হিন্দু--হিন্দুস্তান, অন্যদিকে আদানি-আম্বানির রাজত্ব। তাদের অনুদান নিয়ে শাসক দল ফেঁপে উঠবে, লুঠ-তরাজের অবাধ বন্দোবস্তো করে দেবে, বিনিময়ে পেটোয়া গণমাধ্যম জুড়ে সর্বক্ষণ গেয়ে চলা হবে, দেশে স্বর্গরাজ্য এসে গেছে। ... ...
দা জোন অফ ইন্টারেস্ট সিনেমার কথা আলাদা করে বলতে হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে গল্প। যুদ্ধের সিনেমায় আমরা যা সাধারণত দেখি এখানে তা সরাসরি নাই কিন্তু প্রবল ভাবেই আছে। ইংলিশ পরিচালক জোনাথন গ্লেজার পোল্যান্ডের কাহিনী নিয়ে জার্মান ভাষায় তৈরি করেছেন সিনেমাটি। জার্মান এক অফিসারের বাড়ির গল্প দেখানো হয়েছে। নির্বিকার ভাবে ইহুদি নিধনের পরিকল্পনা করছে, গল্পের পিছনে গ্যাস চেম্বারের ধোয়া দেখা যাচ্ছে, গুলি শোনা যাচ্ছে, মাঝেমধ্যেই আর্ত চিৎকারের শব্দ আসছে। কিন্তু তাদের সমস্ত আগ্রহ অন্য কিছু নিয়ে। চার পাঁচজন মহিলা বাড়িতে কাজ করছে, সব যথাসময়ে হচ্ছে, বাচ্চারা বাড়ির সামনে খেলাধুলা করছে, রোদে গা এলিয়ে বসে থাকছে! মাঝে মধ্যেই গা ঘিনঘিন একটা অনুভূতি আমার হইছে। সেরা সিনেমা না জিতলেও এইটা যে এ বছর সেরা আন্তর্জাতিক সিনেমার পুরস্কার জিততে চলছে তা এক প্রকার নিশ্চিত। ... ...
আধার দেশ গরিব ... ...
ধরুন, আপনারা জনা দশেক মিলে একটা রেস্টুরেন্টে খেতে গেছেন। ওয়েটার একটা গোল টেবিলে বসালো—সবার থেকে সবাই সমান দূরত্বে—একেবারে নিখুঁত প্রতিসাম্য। তারপর দশটা গেলাস এনে টেবিলে রেখে দিয়ে গেল, দু-জনের ঠিক মাঝখানে একটা করে গেলাস। আবারও প্রতিসম। এখন আপনি ডান হাতের গেলাস তুলবেন, না বাঁ হাতের – সেটা আপনার মর্জি। কেউ না কেউ তো প্রথম গেলাসটা তুলবেনই, যাঁর সবচেয়ে বেশি তেষ্টা পেয়েছে, তিনিই প্রথম তুলবেন। যেই তিনি কোনো একটা গেলাস তুললেন – ধরা যাক ডান হাতের, প্রতিসাম্য ভেঙে গেল। ওয়েটার কিন্তু জোর করে প্রতিসাম্য ভাঙেনি, আপনাদেরই একজন ভাঙলেন। তাঁর হাতে দুটো সমান সম্ভাবনা ছিল – ডান বা বাঁ দিকের গেলাস তোলার, তিনি যে কোনো একটা বেছেছেন। কিন্তু যেই তিনি ডানদিকের গেলাস তুললেন, আপনাদের সবাইকেই ডানদিকের গেলাসই তুলতে হবে, নইলে কেউ একজন গেলাস না পেয়ে রেগে যাবেন আবার কেউ দুটো গেলাস নিয়ে বোকাবোকা মুখ করে বসে থাকবেন। ... ...
সাফল্যমণ্ডিত, কারণ, এই পুরোটাই করা হবে ধীরেসুস্থে। পাকিস্তানের মতো জোরেসোরে না। সইয়ে সইয়ে। ৫৬ সালে বাংলা-বিহার সংযুক্তির প্রস্তাব এলে আন্দোলনে ফেটে পড়বে বাংলা। পিছিয়ে আসা হবে সেই সিদ্ধান্ত থেকে। তার কমাস পরেই ভাষাভিত্তিক রাজ্যের সিদ্ধান্তে শিলমোহর দেওয়া হবে আইন করে। একই সঙ্গে বোম্বেকে দেওয়া হবে খোলা মাঠ। ৫৭ সালে তৈরি হবে নতুন রেডিও চ্যানেল। বিবিধ ভারতী। যা মূলত বোম্বে সিনেমার গানকে সর্বভারতীয় জায়গায় পৌঁছে দেবার সরকারি ব্যবস্থা। বোম্বের প্রচার প্রসার , ফুলে ফেঁপে ওঠা চলবে অবাধে। বোম্বের তারকারা হয়ে উঠবেন আন্তর্জাতিক তারকা। পাশাপাশি রেডিওতে বহুভাষিক সর্বভারতীয় সম্প্রচার কিন্তু বন্ধ হবেনা, কয়েক দশক। পুরোটা সইয়ে নিয়ে অবশেষে আশির দশকে এসে, দূরদর্শনের যুগে সর্বভারতীয় টিভি হয়ে উঠবে বাধ্যতামূলক হিন্দি শিক্ষার কার্যক্রম। ... ...
ছেলেটার নাম অ্যারন বুশনেল। বয়স ২৫। খবরটা পড়ে, দেখে, এবং শুনে, প্রথমেই মনে হল, তা বলে এইভাবে? অন্য কিছু কি করা যেতনা? তারপর মনে হল, ধাক্কা কত বেশি হলে, তবেই এ জিনিস করা যায়। এ ছেলে ছিল সামরিকবাহিনীতে সাইবারডিফেন্স অপারেশন স্পেশালিস্ট। যেটা ঝপ করে মনে করিয়ে দেবে এডওয়ার্ড স্নোডেনের কথা। তিনিও ছিলেন, যদ্দূর জানা যায়, সাইবার নজরদারির কাজে।ওইসব গোপন কাজে, এমন কিছু থাকে, যা, মানুষের মাথাই ওলটপালট করে দেয়। বুশনেল বলেছে প্যালেস্তাইনে গণহত্যা। স্নোডেনের সময় ছিল আফগানিস্তান। আফগানিস্তানের উপর একটা সিনেমা দেখছিলাম, তাতে গ্রামকে গ্রাম লোক, ড্রোনহানায় হয় নেই, নয়তো পঙ্গু। একটা গ্রামে ড্রোন হত্যা করেছিল এক মুরুব্বিকে। তারপর তাঁর সমাধির অনুষ্ঠানে আবার ড্রোনহানা। মরে আরও কিছু লোক। ... ...
সত্যেন্দ্রনাথ বসু মশাইকে দিয়েও এই গল্পটা শুরু করলে খারাপ হয় না। দুর্ভাগ্যক্রমে তিনি এমন এক দেশে জন্মেছিলেন, যে, সেখানকার লোকে তাঁর কাজ সম্পর্কে এক বিন্দু না জেনেও তাঁকে আইকন বানিয়ে দেবার আগে দু-বার ভাবে না। ইউরোপে জন্মালে বিজ্ঞানী হিসেবে তিনি আরো বেশি স্বীকৃতি পেতেন, হয়তো নোবেল পুরস্কারও পেতেন, কিন্তু হিরো-বুভুক্ষুর দল তাঁকে নিয়ে এমন উৎকট মাতামাতি করত না (কতটা উৎকট তার পরিচয় পরে দেব)। সত্যেন্দ্রনাথ ঠিক কী করেছিলেন? ... ...
একথা অনস্বীকার্য যে আজকের ইসলামি দুনিয়ায় সঠিক বৈজ্ঞানিক মনোভাব এবং যুক্তিবাদের চর্চায় ঘাটতি আছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই শ্লথতা এবং কূপমণ্ডুকতার পৃষ্ঠপোষক রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় কায়েমী শক্তির মেলবন্ধন । অথচ অতীতে সমস্ত ধর্ম,সংস্কৃতি এবং বিজ্ঞান থেকে শেখার মনোভাব দেখিয়েছেন ইসলামি পণ্ডিতরা।সবাই পাশ্চাত্যের সংজ্ঞা অনুযায়ী সেকুলার হবেন না, সাংস্কৃতিক কারণেই তা সম্ভব নয় এটা আমাদের বুঝতে হবে। বিজ্ঞান এবং ধর্মের মধ্যে, যুক্তিবাদ এবং আবেগের মধ্যে কিছুটা সমন্বয় এবং যেখানে সেই সমন্বয় সম্ভব নয় সেখানে তাদের নিজস্ব স্বাধীন ক্ষেত্র সম্পর্কে সচেতন থাকা দরকার। ... ...
এগুলা সবই ছিল, অতীত কালে বলছি। কারণ হুট করেই এগুলা সব বেদাত, হারাম হিসেবে চিহ্নিত হয়ে গেছে! কবে কীভাবে যে হয়ে গেল বুঝতেই পারি নাই। অনেক আগে এক শবে বরাতে আমাদের মসজিদে একজন নিউজপ্রিন্ট কাগজে দুই পাশে ছাপা একটা লিফটলেটের মত বস্তু নিয়ে আসছিল। তাতে লেখা ছিল শবে বরাত পালন করা যাবে না, এগুলা বেদাত, হারাম! সেদিন ওই লোক কোনমতে লম্বা পায়ে এলাকা ছেড়ে নিজের পিঠ বাঁচিয়ে ছিল। কেউ সেদিন তার কথা শুনতে রাজি ছিল না। অথচ ওয়াহাবি সালাফিদের এখন এত জোর যে শবে বরাতই টিম টিম করে কোনমতে টিকে আছে! শবে বরাত বললে আব্বার কথা মনে পড়বেই। আব্বা আমাদের মত সারা রাত মসজিদে কাটিয়ে দিতেন না, এশার নামাজের পরে কিছুক্ষণ মসজিদে থেকে চলে আসতেন বাসায়। এরপরে বাসায়ই নামাজ পড়তেন। সকালে দুই হাত তুলে দোয়া ধরতেন। ডুকরে কাঁদতেন, গাল বেয়ে পানি পড়ত, সবার জন্য দোয়া করতেন, দাদা দাদীর জন্য দোয়া করতেন, নানা নানীর জন্য, নিজের ভাই বোনের জন্য। আকুল হয়ে কাঁদতেন। হায়! কেউ যদি তখন তাঁকে বুঝাইতে আসত যে শবে বরাত পালন করা যাবে না! আহা! কেউ যদি আমাকে এখন বুঝায় দিতে পারত যে আমার বাপ ধর্ম বুঝত না, সারা জীবন বেদাত হারাম কাজ করে গেছে লোকটা! ... ...
কিন্তু কথা হল, সব চ্যানেল-ট্যানেল কিনে ফেলেও, অপছন্দের সিনেমাকে আটকে, এজেন্সি দিয়ে ভয়-টয় দেখিয়েও গোদীবাবুর ঠিক শান্তি নেই। পিছনে পাপ লেগে থাকলে যা হয়। এখনও দুচাট্টে লোক এদিক সেদিক খুচরো ট্যাঁফোঁ করে চলেছে, কে কখন বলে দেয় 'রাজা তুই ন্যাংটো' তার ঠিক নেই। এই আমার মতো কিছু তেএঁটে আছে, যারা মিডিয়ার শত প্ররোচনাতেও গোদীবিরোধিতা থেকে কিছুতেই নড়বেনা। তাদের থামাতে এবার এসে গেছে ভারতের নতুন সম্প্রচার বিলের খসড়া। পাশ হলে তার আওতায় এসে যাবে প্রায় সবকিছু। টিভি, কেবল তো ছিলই, ওটিটি, ইন্টারনেট, সমাজমাধ্যম। খুব সম্ভবত এই লেখাটা, নতুন বিল এলে 'সম্প্রচার'এর আওতায় পড়বে। এসব কাপড় খুলে দেওয়া লেখা, তাই বিলে বলা আছে, খবর বা সাম্প্রতিক বিষয়ে সম্প্রচার করতে হলে সব্বাইকে 'নিয়ম' বা কোড মেনে চলতে হবে। কী নিয়ম? না, সেটা বলা নেই। সরকার বা কর্তৃপক্ষ যখন যা ঠিক করে দেবে তাই। নইলে জেল-জরিমানা, সবই আছে। ... ...
এই ‘নির্বাচনী বন্ড’ কেবল বিজেপিদলটির দ্বারা নয় বরং গোটা রাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর সাহায্যেই নির্মিত হয়েছে, যা বিজেপি-মোদি সরকারের ব্রাহ্মণ্যবাদী সামন্ততান্ত্রিক কায়দার ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রের ঐতিহাসিক দুর্নীতি রূপেই ভবিষ্যতে উল্লেখিত থাকবে। যার ফলে আজ সংসদীয় গণতন্ত্র পুঁজিতান্ত্রিক ট্র্যাজেডিতে পরিণত হয়েছে, জনগণের ন্যূনতম গণতান্ত্রিক অধিকার এখানে সম্পূর্ন কমেডি হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের এমন বিপন্ন অবস্থায় দাঁড়িয়ে জনগণের বাস্তবিক অবস্থা সব মিলিয়ে মিশিয়ে ট্র্যাজিকমেডি চরিত্রে পরিণতি হয়েছে। যদিও দেশের বিজেপি-বিরোধী দলগুলির দুর্নীতিবাজ নেতাদের দৌলতে, যাঁদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপরে উঠে দাঁড়িয়েই বিজেপি-মোদি সরকার রাষ্ট্রের একেকটি স্তম্ভ কে হাতিয়ার করে, ব্রাহ্মণ্যবাদী সামন্ততান্ত্রিক কায়দার ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রের আবির্ভাব ঘটিয়েছে। তবুও এখন বিজেপি-বিরোধীদলগুলির এই একচেটিয়া লগ্নিপুঁজি-তন্ত্রের বিরোধিতা করে, নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ধীরে ধীরে দেশের নিপীড়িত-শোষিত কৃষক-শ্রমিক-আদিবাসী-সংখ্যালঘু, ছোট-মাঝারি ব্যবসাদারদের দ্বারস্থ হওয়ার ফলে দেশের জন-গণতন্ত্রের ভবিষ্যত ইতিবাচক দিক বহন করতে পারে। ... ...
১৬ জুন, সকাল ৭.৩০! স্কুলের প্রিন্সিপাল এবং বাকি শিক্ষকদের কাছ থেকে আশীর্বাদ আর শুভেচ্ছা নিয়ে মিছিল শুরু করল নালেডি হাই স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা! তারা যাবে অরল্যান্ডো স্টেডিয়ামে। এসেম্বলিতে সমবেত মিছিলে অংশগ্রহণকারী ছাত্রছাত্রীদের শান্তিপূর্ণ এবং অহিংস পথে থাকার জন্য কিছুক্ষণ আগেই সতর্ক করে দিয়েছে তাদের স্কুলের ছাত্র তথা অ্যাকশন কমিটির প্রথম চেয়ারপার্সন টেপেলো মোটোপেনিয়েন। সকাল ৮টা নাগাদ অরল্যান্ডো অভিমুখী নালেডি স্কুলের মিছিলে যোগ দিল মরিস আইজ্যাকসন হাই স্কুল আর ফেফেনি জুনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলের হাজার দুয়েক ছাত্রছাত্রীও! অনেক ছাত্রছাত্রীই জানত না যে ১৬জুন মিছিল হবে, কিন্তু স্কুলে এসে যখন তারা জানতে পারে, স্বতঃস্ফূর্তভাবে মিছিলে যোগ দিয়েছিল তারা। আর যারা মিছিলের কথা জানত, তারা? স্কুলের একমাত্র ইউনিফর্মটা কেচে ধুয়ে ইস্তিরি করে পরে আর ধুলোমলিন জুতোজোড়া পালিশ করে যথাসম্ভব ধোপদুরস্ত হয়ে মিছিলে হাঁটতে এসেছিল সেই সব উজ্জ্বল কিশোর কিশোরীরা! ... ...
অনেক সময় অপবিজ্ঞানকে সূক্ষ্মভাবে বিজ্ঞানের মোড়কে মুড়ে দেওয়া হয়। যেমন, পৃথিবী সব জিনিসকে নিজের দিকে টানে, তাই তারা পৃথিবীতে এসে পড়ে – কোনো প্রাচীন শাস্ত্রে এরকম কথা লেখা থাকলেই, নিউটনের অনেক আগে আমরা মহাকর্ষ সূত্র আবিষ্কার করেছি—এটা প্রমাণ হয় না। পৃথিবীতে আপেল এসে পড়ে, কারণ পৃথিবী আপেলকে টানে—এটা গুহামানবরাও বলতে পারত। ব্রহ্মাণ্ডে সব টানাটানিই যে একই সূত্রের ফল—সেটা নিউটনই প্রথম দেখান, আর বিজ্ঞানের যে কোনো সূত্রের জন্যে এই সার্বজনীনতাই মূল কথা। ... ...
সন্দেশখালির ওপর কিছু ভিডিও দেখে, রিপোর্ট পড়ে গুরুর ভাটে ১২.২.২৪/২০:৩৯ অরণ্য লিখলেন - “দিনের পর দিন গ্রামের মেয়েদের জোর করা হত রাতে তৃণমূলী গুন্ডাদের সাথে সময় কাটানোর জন্য। কথা না শুনলে স্বামী, পরিবারের লোকদের মারধর। এ জিনিস বোধহয় বাংলা আগে দেখে নি”। এটা পড়ে ১৯৭৫এ মুক্তিপ্রাপ্ত একটি ছবি ২০১৮তে বাড়িতে বসে ল্যাপটপে দেখার প্রতিক্রিয়া মনে পড়লো। রাগ, দুঃখ, ক্ষোভ, নিজে ঐ পরিস্থিতিতে থাকলে কীই বা করতে পারতাম ভেবে অসহায়তার অন্তে গ্ৰামবাসীদের প্রতিবাদে ফেটে পড়া দেখে - “বেশ হয়েছে” - গোছের ভিকারিয়াস প্লেজারের অনুভব। সিনেমাটা দেখে মোবাইলে কিছু ভাবনা ডায়েরি লেখার মতো লিখে রেখেছিলাম। এসেছিল কিছু পার্শ্বপ্রসঙ্গ। সন্দেশখালিতে অরণ্য উল্লিখিত ঘটনার প্রেক্ষিতে থাকলো সেই লেখাটি ... ...
এই সব দেখেশুনেই ডাক ছেড়ে বলতে ইচ্ছে হয় - হরি হে মাধব - তোমা বিনে কোথায় যাবো? ... ...
টাঙ্গাইলের শাড়ির জিআই ( Geographical Indications ) পাওয়া নিয়ে দুইটা ভিন্ন যুক্তি শোনা যাচ্ছে। দুইটাই সঠিক কিন্তু প্রসঙ্গ ভিন্ন। একটা ভারত থেকে জোর গলায় প্রচার হচ্ছে, তা হচ্ছে টাঙ্গাইল থেকে বসাক গোষ্ঠী, যারা মূলত শাড়ি বানাত তারা ভারত চলে গিয়ে সেখান থেকেই শাড়ি বানাচ্ছে, প্রচুর বিক্রি হচ্ছে, একজন বসাককে ভারত সরকার পদ্মশ্রী পুরস্কারও দিয়েছে। দেশের সংখ্যালঘু অত্যাচার, হিন্দুদের বাড়িঘর ছেড়ে সীমান্ত পাড়ি দেওয়া এগুলা দিয়ে বলা হচ্ছে তোমরা তাড়িয়ে দিয়েছে এখন আর তাঁদের শৈল্পিক কৃতিত্বের ভাগ চাও কেন? আর দ্বিতীয় কথাটা হচ্ছে বাংলাদেশের নারীরা শাড়ি পরা কমিয়ে দিয়েছে! এইটাও সত্য, আমার চোখের সামনে শাড়ি পরা নারীর সংখ্যা কমতে দেখছি। বিশেষ অনুষ্ঠান ছাড়া শাড়ি পড়ে না এখন অনেকেই, যারা এক সময় শাড়ি ছাড়া আর কিছুই বুঝত না। ... ...
বইমেলার শেষদিনে পৌরসভার চুক্তিভিত্তিক সাফাইকর্মী’রা জানালেন, বইমেলা শেষে আবার অন্য কোন মেলায় কিংবা অন্য কোথাও তাঁদের কাজ খুঁজতে হবে। কিন্তু পরেরবার তাঁরা পৌরসভার কর্তাদের বলবেন খানিক মজুরি বাড়াতে। কিন্তু এঁদের কথা মানবে কে? সরকারতো সব ব্যাপারেই বলেন বিরোধীরা উস্কিয়েছে এঁদের। আর গিল্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন রাজনীতি করা চলবে না বইমেলা নিয়ে অথবা বইমেলা প্রাঙ্গণের ভেতরে। আর বেশি কিছু করলে, সামনেই উত্তর বিধাননগর থানার পুলিশবাবু’রা আছেন, আশা করা যায় সবটা সামলে নেবেন। এইরকম কয়েকশো উদাহরণ বইমেলার ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে সাজানো রয়েছে। ... ...
কুপার কোম্পানির টার্গেট ক্রেতা ছিলেন ব্যাচেলর গ্রাহকরা। সমকালীন নানা পত্রপত্রিকায় পাওয়া যায় কুপার কোম্পানির তাদের নবজাতক পণ্যটির জন্য বানানো নানা মজাদার বিজ্ঞাপন, যাঁর একটির এক ছবিতে লং জনস পরিহিত ছিন্নবোতাম বেচারামুখ এক উদাস ব্যাচেলর আর অন্যটিতে বোতাম আর সেফটিপিনের ঝঞ্ঝাটবিহীন নতুন কুপার অন্তর্বাসে এক ঝকঝকে ব্যাচেলর। এর সঙ্গে লেখা ছিল, ‘যে সমস্ত যুবক অবিবাহিত এবং সিঙ্গেল, যারা জামার বোতাম ছিঁড়ে গেলে সেলাই করে নিতে পারবেন না, এ জামা তাদের জন্যই!’ চলুন, একটু ফিরে দেখা যাক আট থেকে আশি, কচি মেয়ে থেকে বুড়ো দাদু সক্কলকে অন্যতম প্রিয় পোশাক টি-শার্টের ইতিহাসকে! ... ...