এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  গপ্পো

  • রাজরক্ত (রহস্য গল্প) : ১৬শ পর্ব

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | গপ্পো | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ৯৯১ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • | | | | | | | | | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮
    সৌরভ ১১ই এপ্রিল, মঙ্গলবার, রাত আটটা

    আজ সারাটা দিন কেটেছে বুক ঢিপ ঢিপ উত্তেজনায়। স্যারের হুকুমে আমরা বসেছিলাম ফরেনসিক অফিসে। আমরা মানে আমি আর স্যার। আমাদের অফিসে সিমরনকে বলা ছিল আগামী দু’দিনের জন্য কাউকে কোন অ্যাপয়েন্টমেন্ট না দিতে।

    স্যার নিয়ে এসেছেন বেশ কিছু রিপোর্টের জেরক্স কপি। সেই দিয়ে সিরিয়াল নম্বর ট্যাগ করে আমরা তৈরি করলাম একটা নতুন ফাইল, তাতে রয়েছে -- শান্তিরাম বা রামপ্রসাদ রাওয়ের তেলুগু ডায়েরির হিন্দি ও ইংরেজি অনুবাদ, দুটো ভিসেরা রিপোর্ট (যুবরাজের এবং ব্রহ্মরাক্ষস কুমীরের, হাসবেন না), শান্তিরাম ওঁরাওয়ের পাঁচ বছর আগে মৃত্যুর পুলিশি রিপোর্ট এবং শান্তিনিকেতন থেকে আসা একটি মেইল। এখানেই শেষ নয়, মেইল এসেছে সিন্ধিয়া স্কুল গোয়ালিয়র থেকে এবং রাজস্থানের আলোয়ারের এসপি অফিস থেকে। তারপর আছে উইল নিয়ে পরিহার অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস এর একটি হলফনামা ও পারিবারিক ডাক্তার শান্তিলাল মেহতার সাইন করা একটি রিপোর্ট। আরও আছে — যুবরাজ, কুমার সাহেব, বড়রাণীর ও ছোটরাণীর প্যান কার্ডের জেরক্স, এগুলি নিয়ে তৈরি হোল ফাইল নাম্বার টু।

    আর এর আগে পুলিশের কাছে যত জবানবন্দী, মানে দুই দিদি, হঠাৎ নেই হয়ে যাওয়া শান্তিরাম ওঁরাও, কুমারসাহেব এবং বুড়ার রাজবাড়ির সিকিউরিটি পুসওরামের এজাহার - তার কপি রয়েছে ফাইল নাম্বার ওয়ানে। এগুলো রইল আমার জিম্মায়।

    কিন্তু সাইনি ম্যাডামের সামনে একটা পাতলা মত ফোল্ডার, তাতে দুটো ডকুমেন্ট। একটার পাতা ওল্টাতেই আমার চক্ষু চড়কগাছ — আরেকজন হারিয়ে গেছে !

    গতকাল বুড়ার থেকে রওনা দেবার আগে কুমারসাহেব বীরেন্দ্রপ্রতাপ বুড়ার থানায় একটি জিডি বা জেনারেল ডায়েরি করিয়ে এসেছেন যার মর্মার্থ বিগত ৯ তারিখ রাত থেকে ওখানকার সিকিউরিটি গার্ড নিজের ডিউটি থেকে রহস্যজনক ভাবে নদারদ। ১০ তারিখ সকালে ওখান থেকে রওনা হবার সময়ও ওর খোঁজ পাওয়া যায়নি, ও বাড়িতেও ফেরে নি।

    পুসওরাম! বুড়ারের রাজবাড়ির সাদামাটা নিরীহ গাঁজাখোর সিকিউরিটি গার্ড। ও কী করে গায়েব হয় ! তাও ৯ তারিখ রাত্তির থেকে? সেদিন তো মাঝরাত্তির অবদি আমরা সবাই, মায় বিশাল পুলিশ ফোর্স ওখানে মজুদ ছিল। সে যাকগে, ওনার জিডি’র ভিত্তিতে বুড়ার ও পাশের শাহডোল থানার পুলিশ পুসওরামের খোঁজে এলাকায় চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে। এক পক্ষকালের মধ্যে দুটো মৃত্যু, একজন গায়েব! দেবী ছিন্নমস্তা কি রাজবাড়ির উপর কুপিত হয়েছেন? আরও রাজরক্ত চাই?

    অন্য ডকুমেন্টটা একটা আটপাতার ডাউনলোড করা ইংরেজি ডকুমেন্ট, কোন সায়েন্স সাইট থেকে। তাতে রয়েছে -- থ্যালিয়াম (Thallium) নামের কোন কেমিক্যাল নিয়ে কিছু নোটস, কিছু নাম ও বইপত্তরের রেফারেন্স।

    আমি স্যারের দিকে তাকাতেই উনি মাথা নেড়ে বললেন — তুই বুঝবি না, পড়েছিস তো কমার্স। এগুলো ফরেনসিক সায়েন্সের ব্যাপার স্যাপার। তাই এই ফাইলটা নিয়ে সাইনি যাবে আমাদের সঙ্গে, আর প্রথম দুটো নিয়ে তুই। এবার তোরা দু’জন ভাল করে স্টেপ বাই স্টেপ বুঝে নে, কখন তোরা কোন ডকুমেন্ট আমার হাতে তুলে দিবি।

    তারপর চলল আমাদের রিহার্সাল, বিকেল পাঁচটা অব্দি। আমি বকুনি খেলাম তিনবার, সাইনি একবার। শেষে এসপি শ্রীবাস্তব স্যার আসায় আমাদের ছুটি হল। কালকে দশটার মধ্যে তৈরি হয়ে এগারটা নাগাদ স্যারের সঙ্গে রিং রোডে পরিহার অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস এর অফিসে আমাদের সদলবলে হাজির হতে হবে।

    সব ভালয় ভালয় মিটে গেলে নিশ্চয়ই ইনক্রিমেন্টের কথা তোলা যাবে।

    পরিহার অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের অফিস, ১২ই এপ্রিল, বুধবার, বেলা ১১.৩০

    যুবরাজ সাহেবের পারলৌকিক ক্রিয়া ইত্যাদি সম্পন্ন হয়ে গেছে। তাই আজ পারিবারিক অ্যাটর্নির অফিসে রাজপরিবারের সবাই বসেছেন রাজাসাহেবের উইল অনুযায়ী বোম্বাগড় এস্টেটের বিধিবৎ উত্তরাধিকারীকে পরিচালনার দায়িত্ব এবং মালিকানা হক সঁপে দেয়ার জন্য ট্রান্সফার অফ প্রপার্টি অ্যাক্টের নিয়ম অনুযায়ী তৈরি আবশ্যক ডকুমেন্টকে বৈধরূপ দিতে, অর্থাৎ সইসাবুদ করতে।

    ওদের বৈঠক শুরু হয়ে গেছল ঠিক ১০.৪৫ মিনিটে। আমরা তখনও পৌঁছাই নি। কিন্তু ১১.১০ নাগাদ আমাদের গাড়ি কোসলে স্যার, আমাকে ও শিপ্রা সাইনিকে নিয়ে রিং রোডে পরিহার অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস এর অফিসের কাছাকাছি এসে একটু এগিয়ে একটা গাছের ছায়ায় দাঁড়াল। আমাদের এসপি অফিসের গাড়ি আসা অব্দি অপেক্ষা করতে হবে যে! বুঝতে পারি কোসলে স্যার যতই যাই হোন, পুলিশের উর্দি ছাড়া উনি এখন ঠুঁটো জগন্নাথ।

    আর পাঁচ মিনিট, এসপি অফিসের কাফিলা এসেছে - তিনটে গাড়ি। একটা জিপসি এবং দুটো কালো গাড়ি। স্যারের ইশারায় আমরা দু’জন স্যারের সঙ্গে নেমে পড়ি। উনি শ্রীবাস্তব স্যারের সঙ্গে এগিয়ে যান, পেছন পেছন ফাইল গুলো বগলদাবা করে আমি ও শিপ্রা। আজ শ্রীবাস্তব স্যার ফুল ইউনিফর্মে। ফলে বিনা বাধায় দরজা খুলে যায়। আমাদের অফিসের ভেতর কম্পিউটার ও ফাইলে হুমড়ি খেয়ে পড়া কাজে ব্যস্ত, গোমড়ামুখো, ফিসফিস করা নারীপুরুষের কাছাকাছি দুটো চেয়ার দিয়ে বসিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু শ্রীবাস্তব স্যারের গাড়ি থেকে নামা পুরুষ ও মহিলা অফিসার দু’জন অফিসবাড়ির বাইরে বাগানে দাঁড়িয়ে পড়েন। কালো গাড়িগুলোর থেকে কেউ নামে না। কেন? ভগাই জানে।

    ওঁরা দরজা ঠেলে ঢুকে পড়েন ভেতরের বিশেষ চেম্বারটিতে। সেগুন কাঠের ভারি প্যানেল লাগানো দরজা বন্ধ হয়ে যায়। কোন আওয়াজ বাইরে আসেনা। আমরা অপেক্ষা করি। আশপাশের কাজে ব্যস্ত লোকজন আমাদের দেখেও না দেখার ভান করছে। অফিসে এসি কি ঠিকমত কাজ করছে না?

    আমার মোবাইল চ্যাঁ চ্যাঁ শব্দ করে। বসের মেসেজ - চলে আয়। আমরা দু’জন প্রায় লাফিয়ে উঠি। ফাইলগুলো শক্ত করে চেপে ধরে ওই ভারি দরজা ঠেলে ঢুকে পড়ি।

    সেই ভেতরের হলঘরটা, যেখানে মাত্র ক’দিন আগে কোসলে স্যার অমন হাসিমুখ কুমড়োপটাশকে চুপসে যাওয়া মুক্তকেশি বেগুন করে ছেড়ে দিয়েছিলেন।

    আজ এখানে হেভি গ্যাঞ্জাম। ওভাল টেবিলের এক মাথায় মিঃ দিলীপরাজ সিং পরিহার, অন্য মাথায় রয়েছেন কুমারসাহেব বীরেন্দ্রপ্রতাপ এবং তাঁর পাশে রাণীসাহিবা ইন্দ্রকুমারী। মাঝখানে বসে রয়েছেন এঁদের পারিবারিক ডাক্তার প্রাণলাল মেহতা। ডক্টর মেহতা আগের উইলে শুধু সাক্ষী নয়, ট্রাস্টিও ছিলেন। আর আছেন ছিন্নমস্তা মন্দিরের পূজারী শ্যামানন্দ মহারাজ। জানতে পেরেছি উনিও দুটো উইলের সাক্ষী।

    আমরা ঢুকে পড়ায় কুমারসাহেব স্পষ্টতঃ শুধু বিরক্ত নয়, বেশ রেগে গেছেন মনে হচ্ছে।

    -- বুঝতে পারছিনা আপনারা ঠিক কী চান। দুই হত্যারিন আপনাদের গাফিলতিতে জামিন পেয়ে গেল। কবে কেসের আসল শুনানি শুরু হবে তার কোন ঠিকঠিকানা নেই। এদিকে আমাদের পারিবারিক মিটিং চলছে, এর মধ্যে আপনাদের হামলা! আমি একে হামলাই বলব। সিটিজেনের প্রাইভেসির উপর হামলা। আমাদের মত ট্যাক্সপেয়ারের পয়সায় আপনাদের পোষা হয় , আর আপনারা নিজেদের কাজ ছেড়ে ---।

    হাত তুলে ওঁর বক্তৃতা থামিয়ে দিয়েছেন এসপি শ্রীবাস্তব। গলার স্বর এবং ওজনে উনি এখন পুরোদস্তুর সিটি সুপারিন্টেন্ডেন্ট অফ পোলিস, বিলাসপুর।

    -- আমাদের কাজের খাতিরেই আজ এখানে আসা। যুবরাজ সাহেবের হত্যার তদন্তে নতুন কিছু তথ্য এবং সাক্ষ্যপ্রমাণ জুটেছে। কিন্তু তার সমস্ত মিসিং লিংক আমাদের হাতে নেই। আপনাদের সহযোগিতা চাই। ভাবলাম - রাজোয়ারায় না গিয়ে এখানে সবার সঙ্গে একসাথে কথা বলে নেব। সময় বাঁচবে। আপনারা নিশ্চয়ই চান যে নতুন রাজার অভিষেকের আগে যুবরাজ সাহেবের হত্যাকারী ধরা পড়ুক।

    -- সে নিয়ে প্রশ্ন নেই। কিন্তু এসবের মাঝখানে এরা কী করছে? মানে এই সিকিউরিটি কোম্পানির লোকজন? এরা তো পুলিশ নয়!

    -- এরা আপনার কন্সালট্যান্ট এবং আমারও। হত্যার সময় ওদের একজন ওখানে উপস্থিত ছিল। ওর ভুমিকাও সন্দেহের বাইরে নয়। কাজেই সামনাসামনি কথাবার্তা হলে অনেক জট খুলতে পারে।

    -- বেশ, শুরু করুন; তবে তাড়াতাড়ি করবেন। অনর্থক এদিক ওদিকের কথা না তুলে কাজের কথায় আসুন।

    এসপি মুচকি হাসলেন। কোসলে স্যারের দিকে তাকিয়ে অর্থপূর্ণ মাথা নেড়ে বলতে শুরু করলেন — আচ্ছা, আজ আপনারা সবাই মিলে এস্টেটের প্রপার্টি, দায়িত্ব, স্বর্গীয় রাজাসাহেবের উইল— এসব নিয়ে নতুন করে ভাগ বাঁটোয়ারা করছেন, কিন্তু পরিবারের সব সদস্য না থাকলে কী সেটা উচিত হবে?

    -- কে নেই?

    -- কেন, যুবরাজ সাহেবের উইডো, রাণী দেবেন্দ্রকুমারী। ওঁর মাসোহারাও তো রিভাইজ হবে, নয় কি?

    -- উনি আলোয়ারে থাকেন, এসে যাবেন। ওসব ছেড়ে মার্ডার কেসে কতদূর পৌঁছেছেন সেটা বলুন।

    -- বেশ, গত মাসের ২৭ তারিখে বুড়ারের রাজোয়ারায় নিহত হলেন যুবরাজ বীরেন্দ্রপাল সিং, দেবী মন্দিরে পুজো দিতে যাওয়ার একটু আগে। সময় আন্দাজ ৯টা, অর্থাৎ কুমারসাহেবের ও শান্তিরামের বয়ান এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট উইটনেস সৌরভ বিশ্বাসের বয়ান মিলিয়ে দেখলে সেটাই দাঁড়াচ্ছে। আর মৃত্যুর কারণ পেছন থেকে ঘাড়ে ছোরার আঘাত, তাতে ৩/৪ ইঞ্চির ক্ষত এবং তার ফলে একটি শিরা কেটে গিয়ে রক্তক্ষরণ। মনে হচ্ছে যে হত্যাকারী বাঁ-হাতি বা ন্যাটা। ওখানে ওই সময় দু’জন ন্যাটা উপস্থিত ছিল। একজন দুই অভিযুক্ত বাঙালি বোনের মধ্যে ছোটজন, ইংরেজির অধ্যাপক কুন্দনন্দিনী আর অন্যজন ড্রাইভার শান্তিরাম। হত্যায় ব্যবহৃত ছোরাটাও পাওয়া গেছে -- অভিযুক্তের ব্যাগ থেকেই উদ্ধার করা হয়েছে। তাতে রক্তের চিহ্ন ছিল এবং ফরেনসিক রিপোর্টে যুবরাজের ব্লাড গ্রুপের সঙ্গে মিলে গেছে।

    ফলে প্রাথমিকভাবে ওই দুই বোনকে সংযুক্ত ভাবে খুনের ষড়যন্ত্র ও খুন করার অভিযোগে গ্রেফতার করে আদালতে পেশ করা হয়েছে, কিন্তু তদন্তের ভিত্তিতে পাকাপাকি ভাবে চার্জ ফ্রেম করা এখনও বাকি।

    -- তা এখানে আমাদের সময় নষ্ট না করে সেটাই করুন না! আপনাদের প্রবলেমটা কী?

    -- প্রবলেম হলেন আপনার কনসাল্ট্যান্ট এবং আমার সহযোগী প্রাক্তন ডিএসপি মিঃ কোসলে। উনি এই থিওরিতে বেশ কিছু গন্ডগোল দেখতে পাচ্ছেন। তাই ওনাকেও সাথে নিয়ে এসেছি, আপনাদের হেল্প পেলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

    -- কিন্তু উনি বা ওনার সিকিউরিটি ফার্ম তো এখন আর আমার কন্সালট্যান্ট নন, আমাদের কন্ট্র্যাক্ট ২৭ তারিখেই শেষ হয়ে গেছে।

    -- না, এখনও শেষ হয়নি। এখনও কন্ট্র্যাক্ট অনুযায়ী ফাইনাল পেমেন্ট পাইনি, তার আগে ক্লায়েন্ট-সার্ভার রিলেশন শেষ হতে পারে না।

    মুখ খুলেছেন কোসলে স্যার; আমার পিত্তি জ্বলে যাচ্ছে।

    -- ওঃ, সেই পাঁচ হাজার টাকাটা? ঠিক আছে, এখনই চেক কেটে দিচ্ছি। অব তো আপ সে ছুটকারা মিলেগা।

    কিন্তু শ্রীবাস্তব স্যার মাথা নাড়েন। এখনই নয়, উনি যে আমারও আন-অফিশিয়াল কনসাল্ট্যান্ট। ওনার কিছু প্রশ্ন রয়েছে। সেগুলোর সমাধান হওয়া দরকার।

    -- বেশ, শুনি কী সেই ধাঁধা, যার সমাধানে আপনাদের দৌড়ে আসতে হয়েছে।

    কুমারসাহেবের ঠোঁট বিদ্রূপে বেঁকে যায়।

    কোসলে স্যার টেবিলে রাখা জলের গেলাসের ঢাকা খুলে চোঁ চোঁ করে সেটা খালি করে ফেললেন। তারপর হাতের উলটো দিক দিয়ে গোঁফ-ঠোঁট মুছে খাঁকারি দিয়ে শুরু করলেন।

    -- ধাঁধা একটা নয়, অনেকগুলো। কোনটা ছেড়ে কোনটা ধরি! আচ্ছা, প্রথমে ধরুন ছোরার সমস্যাটা। এখন জানা গেছে ওটা ছিল যুবরাজ সাহেবের। উনি সঙ্গে করে এনেছিলেন রাত্তিরে ছিন্নমস্তার মন্দিরে আঙুল চিরে রক্ত দেবার জন্যে, যেমন উনি প্রতি বছর করে থাকেন। এই ব্যাপারটা তো অভিযুক্ত দুই বোনের জানার কথা নয়? ওরা হোল বাইরের লোক। হত্যার ষড়যন্ত্র করে থাকলে ওরা নিশ্চয়ই নিজেদের কোন হাতিয়ার নিয়ে আসত, সেটাই স্বাভাবিক নয় কি?

    কুমারসাহেব মাথা নাড়েন। ওরা অন্য কোন হাতিয়ার নিশ্চয়ই নিয়ে এসেছিল। ঘটনাচক্রে ছোরাটা চোখে পরে যায়, কাজেই তার সদব্যবহার করে ফেলেছে, নিজেদেরটা বের করার দরকার হয়নি।

    -- কী সেই হাতিয়ার?

    -- সেটা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন কেন? ওটা বের করা তো আপনাদের কাজ।

    -- কিন্তু সমস্যা হল ওরা যদি খুন করে থাকে এবং ছোরাটা ব্যাগের মধ্যে লুকিয়ে রেখে থাকে তাহলে তো চেঁচামেচি না করে চুপচাপ কেটে পড়ার কথা। ওরা চেঁচাল কেন?

    -- এটা কোন কথা হল? এর পরেই আমি বা শান্তিরাম যুবরাজের ঘরে যেতাম, খুন হয়েছে জানতে পারতাম, তখন ওরা ধরা পড়ে যেত। কারণ আমরা বারান্দায় থাকার ফলে ওদের বেরিয়ে যেতে দেখতে পেতাম। সেটা খেয়াল করেই ওরা চেঁচামেচি জুড়েছিল। যাতে সবাই ওদের নিরীহ নির্দোষ মনে করে।

    -- আচ্ছা, ওরা যদি হত্যাকারী হয়ে থাকে তাহলে ছোরার গায়ে দুইবোনের কারও হাতের বা আঙুলের ছাপ নেই কেন?

    -- এর উত্তরও সহজ। হত্যাকারী আগেই ছোরাটির সব ছাপ ভাল করে মুছে দিয়েছে।

    -- এবার আরও সহজ প্রশ্নঃ সব ছাপ ভাল করে মুছে দিলে তো রক্তের দাগও মুছে যাওয়ার কথা। সেটা কেন হয়নি? বা অন্যভাবে দেখলে রক্তের দাগ না মোছা গেলে কী ভাবে ছোরার গায়ে হাতের ছাপ মুছে ফেলা সম্ভব? মানে এই প্রশ্নগুলো ডিফেন্সের ল’ইয়ার আদালতে চার্জ ফ্রেমের স্টেজেই জিজ্ঞেস করবে। এর উত্তর স্যাটিসফ্যাক্টরি নাহলে চার্জ ফ্রেম হতে সমস্যা হবে, তাই আমরা একটু বাজিয়ে নিচ্ছি।

    -- এসব আপনি ওদেরই জিজ্ঞেস করুন গিয়ে। রক্তের ছাপ ছোরার ব্লেডে রয়েছে। ওরা বাঁটের কাছটা সাবধানে মুছে দিয়েছে। আর কিছু?

    -- এবার ছোরার ঘা। একটাই আঘাত, তাতে ঘাড়ের শিরা কেটে রক্তপাত হয়। ওই ঘরোয়া মেয়েদের পক্ষে অমন মোক্ষম স্ট্রাইক, তাও ৩/৪ ইঞ্চির - আদৌ সম্ভব কি?

    -- কেন নয়? প্রতিহিংসায় বা অন্ধ রাগে মানুষের হাতে শক্তি এসে যায়। আর কী ব্যাখ্যা হতে পারে?

    -- হতে পারে ওই প্রাণঘাতী মারাত্মক আঘাতটা দিদিমণিরা কেউ করেন নি, করেছে কোন শক্ত সমর্থ পুরুষ মানুষ, কী বলেন?

    -- বলতে কী চাইছেন? হেঁয়ালি না করে খুলে বলুন।

    -- বলছি যে, প্রাথমিক পোস্টমর্টেম রিপোর্ট বলছে আঘাতটা বাঁহাতি কেউ করেছে। ওখানে শুধু ছোট দিদিমণি নয়, একজন বাঁহাতি পুরুষ মানুষও ছিল — শান্তিরাম ওঁরাও বা রামপ্রসাদ রাও। ইন্ডিপেন্ডেন্ট উইটনেস সৌরভ দেখেছে যে শান্তিরাম তালা খুলছে বাঁহাতে, ডাইনিং হলের লাইট জ্বালাচ্ছে নেভাচ্ছে বাঁহাতে।

    কুমারসাহেব মুচকি হাসেন।

    -- ওখানে আর একজন পুরুষ মানুষও ছিল।

    কোসলে স্যারও হেসে ফেলেন। জানিয়ে দেন যে উনি শান্তিনিকেতন থেকে ভেরিফাই করেছেন যে কুমারসাহেবের এজাহারে কোন ভুল নেই। উনি কলেজ জীবনে বল ও ব্যাট দুটোই ডানহাতে করতেন, নো সৌরভ গাঙ্গুলি সিনড্রোম !

    পরিবেশ হালকা হয়। মিঃ পরিহারের ইশারায় সবার জন্য ভাল ফ্লেভার চা এসে যায়।

    চুমুক দিতে দিতে কুমারসাহেব জানতে চান — তাহলে কি পুলিশ দুই বোনকে খালাস দিয়ে মৃত শান্তিরামের বিরুদ্ধে চার্জ ফ্রেম করবে?

    উত্তরটা দিলেন শ্রীবাস্তবজী।

    -- না, অভিযুক্ত মৃত হলে ক্রিমিনাল প্রসিডিওর কোডের ধারা ৩৯৪ অনুযায়ী কেস ওখানেই থেমে যায়। কারণ ভারতীয় দন্ডবিধি বা পেনাল কোডের উদ্দেশ্য হোল অপরাধীকে শাস্তি দেয়া এবং সর্বোচ্চ সাজা হোল প্রাণদন্ড। এখন অপরাধীই যদি মারা যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে কেস চালানো অর্থহীন হয়ে পড়ে।

    -- তাহলে আপনারা এবার দুইবোনকে রেহাই দিয়ে কেস ক্লোজ করে দেবেন?

    -- না, না। এখনই দুইবোনকে রেহাই দেয়া যাবে না। আমরা জানি না যে শান্তিরামই খুনি কিনা, এসব তো প্রাথমিক অনুমান মাত্র। আমরা সমস্ত অ্যাঙ্গেল পরীক্ষা করে দেখছি। এছাড়া ওই ৩৯৪ বয়লে যে যদি একাধিক অভিযুক্ত থাকে, আর বিচার চলার সময় তাদের একজন মারা যায়, তখন মামলা বন্ধ হবে না। অর্থাৎ ষড়যন্ত্রের সম্ভাবনাও বাদ দিচ্ছি না।

    তবে আমার সহযোগী কোসলে স্যারের যেন আরও কিছু বলার ছিল।

    সবার চোখ ফের কোসলে স্যারের দিকে।

    -- পোস্টমর্টেম, হাতিয়ার সবই হল, এবার কথা হবে mens rea বা হত্যার মোটিভ নিয়ে। ক্রিমিনাল জুরিস্প্রুডেন্সে মোটিভ খুব গুরুত্বপূর্ণ। মোটিভ হিসেবে অপরাধের গুরুত্ব ও ধারা পালটে যায়। আপনি গুলি চালালেন এবং একজন মারা গেল মানেই আপনি খুনি তা’ নয়। হতে পারে আপনি গাছের উপর পাখিকে নিশানা করেছিলেন, অর্থাৎ ব্যাপারটা দুর্ঘটনা। হতে পারে আপনি পুলিশ, পালাতে থাকা ডাকাতকে গুলি করে আটকাতে চেয়েছিলেন, মেরে ফেলতে নয়। হতে পারে আপনি আত্মরক্ষার্থে গুলি চালিয়েছিলেন। হতে পারে আপনি হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে রাগের মাথায় গুলি চালালেন - লোকটা মরে যাবে খেয়াল ছিল না।

    অর্থাৎ চার্জ ফ্রেম করার সময় ম্যাজিস্ট্রেট জানতে চাইবে অভিযুক্তের মোটিভ কী? কেন খুন করল? করে ওর কী লাভ? আর এই জায়গাটায় এসেই ছাড় দিতে হচ্ছে শান্তিরাম ওঁরাওকে। ও নিষ্ঠার সঙ্গে সেবা করেছে যুবরাজ সাহেবের। সময় মত ওষুধ খাওয়ানো, ওনার সিকিউরিটি সব করত। ও কেন এই খুনটা করবে? মোটিভ স্পষ্ট নয়। ওর কী লাভ? ওর ডায়েরি পড়েও কোন হিন্টস পাওয়া গেল না। অর্থাৎ যুবরাজ সাহেবের প্রতি ওর বেসিক ইমোশন কী ছিল? রাগ, ঘৃণা? আজ আর জানার উপায় নেই। কাজেই ওকে অভিযুক্ত সাজিয়ে কেস বন্ধ করা যাবে না। ফলে সন্দেহের কাঁটা ঘুরে যাচ্ছে ফের সেই দুইবোনের দিকে। কিন্তু ওরা কী করে খুনটা করল?

    স্যার প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন শ্রীবাস্তবজির দিকে। অমন গভীর ক্ষত? অতটা জোরে আঘাত?

    উত্তরটা এল কুমারসাহেবের দিক থেকে।

    -- যদি দু’হাতে ছোরাটার বাঁট চেপে ধরে আঘাত করে, মানে পেছন থেকে। টেনিসে মেয়েদের ডাবল হ্যান্ডেড রিটার্নের স্পীড খেয়াল করেছেন?

    কোসলে স্যারের চোখ দ্রুত ঘুরল এদিকে? কেন? হঠাৎ পেছন দিক থেকে ছোরা দিয়ে আঘাত, তাও যুবরাজ সাহেবের ছোরা? কোনো সাডন প্রোভোকেশন? আমি ঠিক বুঝতে পারছি না। মানে ভিস্যুয়ালাইজ করতে পারছি না। আপনারা একটু হেল্প করুন।

    -- আমি বলছি। ওরা দাদার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন। এসেছিলেন একগাদা অভিযোগ নিয়ে। দাদা কেন অমন ব্যবহার করছেন? কেন ডেকে এনে অপমান করছেন? কেন চিনতে পারছেন না? যেই ওঁরা চার্জ করলেন দাদা ওদের দিকে তেড়ে গিয়ে ঘর থেকে বের করে দিতে চাইলেন, যেমন দশটি বছর আগে করেছিলেন? হয়ত বড়বোনকে তেড়ে গিয়েছিলেন, কারণ ওই একটা বাচ্চাকে নিয়ে সেবার বিলাসপুরের রাজোয়ারাতে এসে দাদাকে ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা করেছিল। একে তো অসুস্থ দাদার তিরিক্ষি মেজাজ, তায় অমন দশাসই চেহারা। বড়বোন নিঘঘাৎ ভয় পেয়ে চেঁচিয়ে উঠেছিল। সে চীৎকার আমরা সবাই শুনেছিলাম। আপনার ওই চ্যালা সৌরভও শুনেছিল। তখন ছোটবোন দিদিকে বাঁচাতে টেবিলের উপর থেকে ছোরাটা তুলে নিয়ে সর্বশক্তি দিয়ে আঘাত করে। একটা আঘাতই ফ্যাটাল হয়ে যায়। সেটা আপনি অ্যাক্সিডেট বলতে পারেন। কিন্তু আমার দাদা যুবরাজ বীরেন্দ্রপাল সমরপ্রতাপ সিং তাতেই প্রাণ হারান। এই হোল মোদ্দা কথা।

    -- ভেরি গুড; বেশ ভাল রীজনিং। কিন্তু তাতে ওঁদের না খুনি বলা যাবে না ষড়যন্ত্রকারী। বুঝতেই পারছেন।

    -- ঠিক আছে; কিন্তু আত্মরক্ষার জন্য পালটা আঘাতটাও তো ডিস্প্রপোশনেট হলে চলবে না। হ্যাঁ, এদের ফাঁসি বা যাবজ্জীবন হবে বলছি না, কিন্তু কয়েক বছরের সশ্রম কারাদন্ড? পাঁচ বা সাত? তাই হোক, এদের মত কুটিল হিংস্র ও লোভী মেয়েমানুষের শিক্ষা হওয়া উচিত। দশ বছর আগে দাদাকে ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা করেছিল, এখন আবার –।

    -- আপনি ওদের ভয় পান? কেন পান?

    -- কেন পাব না? ওরা কোলে বাচ্চা নিয়ে এসে যেভাবে দাদাকে —

    -- এক মিনিট? ওদের বয়ান অনুযায়ী বড় বোন বাচ্চা কোলে নিয়ে বারান্দায় অপেক্ষা করছিল, তারপরে যুবরাজ সাহাব চিটে ভিজিটরের নাম দেখে দেখা করতে রাজি হন নি। বাচ্চা কোলে বড়বোনকে ঘাড় ধাক্কা দেয়া হয়। ছোটবোন ভেতরে ঢুকে গিয়ে যুবরাজ বীরেন্দ্রপ্রতাপের সঙ্গে দেখা করতে চায়, ওর কোলে কোন বাচ্চা ছিল না। কিন্তু যুবরাজ তো বীরেন্দ্রপাল। উনি সোজা ওকে বের করে দেন। কোন দেনাপাওনার কথাই হতে পারে নি। তাহলে আপনি কী করে জানলেন যে ওরা বাচ্চা কোলে ব্ল্যাকমেল করতে এসেছিল?

    (আগামী কিস্তিতে শেষ)
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    | | | | | | | | | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮
  • ধারাবাহিক | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ৯৯১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লড়াকু মতামত দিন