এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • ঘটি ভর্তি বাঙালনামা

    Animesh Baidya লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২৫ নভেম্বর ২০১৩ | ১৫৩৪ বার পঠিত
  • ঘটি-বাঙাল, মাচা-লোটা, চিঙড়ি-ইলিশ। আজকের বিশ্বায়িত ভুবন-ডাঙায় এই বাইনারি অপোজিসন ঠিক কতোটা প্রাসঙ্গিক তা জানা নেই। বাইনারি শব্দটি মনে এলেই কেমন যেন মনে হয় ‘নারী কর্তৃক’। মানে ‘BY নারী’। সে যাই হোক, না হেঁজিয়ে মূল কথায় আসি। ওই তিনটি বাইনারি অপোজিসন বছরের বাকি দিনগুলোতে কতোটা প্রাসঙ্গিক তা জানা নেই। তবে বছরের তিন চারটে দিন এবং তার আশেপাশের দিনগুলিতে ওই শব্দগুলোই হয়ে ওঠে বাঙালির প্রধান পরিচিতি। ঠিকই ধরেছেন। ফুটবল ডার্বি ম্যাচ কিংবা বড় ম্যাচের দিনগুলোর কথাই বলছি। ইস্টবেঙ্গল বনাম মোহনবাগান ম্যাচ মানেই ‘ওরা থাকে ওধারে’। আমরা এবং ওরা। যে বিভাজন কখনও শাসক দল করলেও কেউ আঙুল তুলবে না তাদের দিকে।
    আমি কট্টর ইস্টবেঙ্গল সমর্থক। ইস্টবেঙ্গলকে নিয়ে মনে মনে এক ধরনের জঙ্গিপনা আছে বলেও মনে হয়। ক্লাবের সব ম্যাচ মাঠে গিয়ে দেখি না ঠিকই। কিন্তু ঠিক খোঁজ রাখি, কি হলো, জিতলো না হারলো। আর বড় ম্যাচ হলে স্বশরীরে হাজির হই মাঠে। এমনও হয়েছে যে, পাঁচটা থেকে ম্যাচ শুরু, কিন্তু দুটোর সময়েও জানতাম না যে ম্যাচ দেখতে যাচ্ছি। কিন্তু ভিতরে ভিতরে একটা উসখুস কাজ করতে থাকে। এবং দেখা যায় তিনটের সময়ে ঠিক বেরিয়ে পড়লাম মাঠের দিকে। মানে কি এক অমোঘ টান! অনেক বন্ধুকেই বলতে শুনেছি, বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যান ইউনাইটেড-এর ম্যাচ দেখার পরে এই জঘন্য ফুটবল দেখতে যাওয়ার কি আছে! কি করে বোঝাই তাদের যে, এই ম্যাচ যতো না ফুটবল সৌন্দর্যের, তার থেকেও অনেক বেশি আবেগের সৌন্দর্যের। তাদের প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে, কোলকাতা জুড়ে তো এত বড় বড় দুর্গাপুজো হয় তাহলে কেন বাবা পাড়ার ওই ছোট্ট পুজোর জন্য তোমাদের এতো টান!
    আসলে ব্যক্তিগত ভাবে আমার মনে হয় আবেগের বাইরেও আরও একটি বিষয় আমাকে টানে এই বড় ম্যাচ ঘিরে। সারা বছরই তো মুহূর্তে মুহূর্তে কতো কতো হতাশা, রাগ, ক্ষোভ, অভিমান, খারাপ লাগা জন্মায় মনের মধ্যে। তার বহিঃপ্রকাশ হয় না। মুহূর্ত হারিয়ে গেলেও ওই আবেগ এবং অনুভবগুলো থেকে যায় মনের মধ্যে। চেতনের বাইরে, কিন্তু থেকে যায় ঠিক। আর এই বড় ম্যাচ আসলে ওই জমে থাকা হতাশা, রাগ, ক্ষোভ, অভিমান, খারাপ লাগার অনুভবগুলোকে কারও একটা দিকে ঢেলে দেওয়ার পরিসর। মানে ওই বড় ম্যাচের দিন মোহনবাগানের উপর ঢেলে দিয়ে আসি এত দিনের ওই জমিয়ে রাখা অপছন্দের অনুভুতিগুলো। বিপক্ষের খেলোয়াড় থেকে দর্শক, তারা হয়ে ওঠে আমার বহিঃপ্রকাশের লক্ষ্য। কোথাও গিয়ে এই দিনটা আসলে আমার REFRESH বোতাম টেপার দিন। রাষ্ট্রশক্তি, অফিসের বস, কলেজের অসহ্য সিনিয়র, দেখা হলেই ক্রমাগত জ্ঞান দিতে থাকা পাড়ার বুড়ো এই সকলের প্রতি জমতে থাকা অনুচ্চারিত রাগ-ক্ষোভ, কোথাও যোগ্যতা থাকা সত্বেও প্রমাণ করতে না পারার হতাশা, প্রেমিকার প্রতি অপ্রকাশিত অভিমান এই সব এক সঙ্গে প্রকাশ করার দিন। আর এই প্রকাশের লক্ষ্য হল ওই মোহনবাগান এবং তার সমর্থকেরা।
    যাই হোক, এই বড় ম্যাচের দিনগুলোতে কতো নানান নানান অভিজ্ঞতা হয়, কতো মজার ঘটনাই যে ঘটে। কতো নতুন নতুন সৃজনশীল গালাগালি(!) শিখি। মাঠে যাওয়ার পথে বাইপাসের রাস্তায় দুই বিরোধী শিবিরের ম্যাটাডোরে দুই ক্লাবের পতাকা ওড়ানো এবং পরস্পরের বিরুদ্ধে ছুড়ে দেওয়া গালাগালির বৃষ্টি, সে যেন এক যুদ্ধ। যতোই আমার সভ্য মনন ওই গালাগালি নিয়ে ভুরু কোচকাক না কেন, মিথ্যে বলব না, কোথাও গিয়ে মনে মনে আমিও যোগ দেই ওই বাচিক লড়াইয়ে। এ ছাড়া গ্যালারিতে কতো অদ্ভুত রকমের লোকের সঙ্গে দেখা হয় প্রতিবার। যেমন ইস্টবেঙ্গল গ্যালারিতে একজন রেফারি আসেন প্রত্যেক ম্যাচে। রেফারির পরনে সেই পুরনো ঘরাণার কালো পোশাক এবং মুখে রেফারির বাঁশি। মোহনবাগানের কেউ ইস্টবেঙ্গলের খেলোয়াড়কে ফাউল করলেই (মাঠের আসল রেফারির চোখে সেটা ফাউল না হলেও) তিনি সঙ্গে সঙ্গে বাঁশি বাজান এবং পকেট থেকে কখনও হলুদ কার্ড কিংবা কখনও লাল কার্ড দেখাতে থাকেন গ্যালারি থেকেই। কতো রং-বেরঙের সাজ নিয়ে কতোজন আসেন গ্যালারিতে। অবাক বিষ্ময়ে আমি দেখি।
    যা-ই হোক, গত রোববার মানে ২৪ নভেম্বর, ২০১৩-তেও ঠিক হাজির হয়ে গেলাম মাঠে। সে দিনের দুটো টুকরো গল্প শেয়ার করার ইচ্ছে জাগলো।

    ১ম ঘটনা-
    এই দুই দলের সমর্থকদের নিয়ে নানান গল্প-গাঁথা, মিথ নিয়ে অনেক লেখা হয়েছে, অনেক কিছু পড়েছি। কিছু বিশ্বাস করেছি আর কিছু মিথ বলে অনুমান করেছি। একটা গল্প আগে অনেক বার শুনেছি কিন্তু কোথাও একটা সন্দেহমিশ্রিত বিশ্বাস ছিল। কিন্তু ওই দিন মাঠে গিয়ে ভুল ভাঙল। বিশ্বাস হলো যে, ক্লাবের প্রতি ভালবাসা এই পর্যায়েও পৌঁছোতে পারে। গ্যালারিতে আমার পাশেই একটা দল এসে বসলো। একজনের সঙ্গে আমার টুকটাক কথা হচ্ছিল। এক পর্যায়ে সে আমাকে বললো,

    এই হইলো আমাগো কেলাব। আমাগো কেলাবের লেইগ্যা আমাগো ভালোবাসাডাই আলাদা। ওই যে দ্যাহেন, আমাগো লগে ওই যে ছেলেডা আইছে। অর মা-র আইজ শ্রাদ্ধ আছিল। শ্রাদ্ধতে পুরাপুরি থাকলো-ও না। ঠিক আইয়া পড়ল মাচাগো হারাইতে।

    আমি মনে মনে ভাবলাম, মায়ের প্রতি টান যে সকলের একই রকম থাকবে তাও-তো না। সে ভাবেই আমার যুক্তিবাদী সত্ত্বা ঘটনাটির মানে খুঁজে নিতে চেয়েছিল। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে ভুল ভাঙল। সেই লোকটি ফের বলল,

    ভাইববেন না যে মা-র উপর টান ছিল না ওর। বিরাট টান আছিল। যেমনে অসুস্থ মা-র সেবা করছিল গত তিন বছর হেইয়া আমরাই জানি। ছোড বেলায় বাবা মরছিল। হেইয়ার পর থেইক্যা মা-ই আছিল ওর ধ্যান-জ্ঞান।

    আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলাম সেই মা-হারা লোকটির দিকে। আমার পাশের লোকটি ফের বলল,

    ওরে কইছিলাম আর যাইতে হইবো না মাঠে। তুই বরং শ্রাদ্ধতেই থাক। তহন ও কইলো, ইস্টবেঙ্গল তো আমার আর একটা মা। এক মা মরছে তো কি হইছে, আর এক মা তো আছে।

    আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম। কোনও প্রতিক্রিয়াই দেখাতে পারলাম না। কারণ তখন ইস্টবেঙ্গল দল মাঠে নামছে। গোটা গ্যালারি তুমুল গর্জনে উঠে দাঁড়িয়ে স্বাগত জানাচ্ছে। আমি দেখলাম সেই সদ্য মা-হারা লোকটি পাগলের মতো উড়িয়ে যাচ্ছে তাঁর সঙ্গে করে নিয়ে আসা লাল-হলুদ পতাকাটি। এক মা-কে হারানোর দুঃখ ভুলছে অন্য মা-কে ভালবাসার মধ্যে দিয়ে। হে সমর্থক, কুর্নিশ তোমায়।

    দ্বিতীয় ঘটনা-
    ম্যাচটা আমরা ১-০ গোলে জিতেছি। তুমুল আনন্দে মাতোয়ারা গোটা লাল-হলুদ জনতা। স্টেডিয়াম থেকে বিজয় উল্লাস করতে করতে বেরিয়ে আসছিল গোটা জনতা। সে কি তুমুল চিৎকার! আমিও লাল-হলুদ পতাকা গলায় জড়িয়ে বীরদর্পে বেরিয়ে এলাম রাস্তায়। ভাবলাম অটো নিয়ে করুণাময়ী যাই, সেখান থেকে S-9 ধরে সোজা যাদবপুর। একেকটা অটো আসছে আর লোকজন হুমরি খেয়ে পড়ছে সেই অটোর উপর। আর অবশেষে 'যোগ্যতমের উদ্বর্তন'। যাই হোক, একটা অটোর দিকে আমিও এগোলাম। কিন্তু সফল হলাম না। কিন্তু তার পরে দেখলাম যারা যারা সফল হয়েছিলেন তারা নেমে আসছেন। চালক দ্বিগুণ ভাড়া চাইছেন। সুতরাং বাকিরা গালাগাল দিতে দিতে অটো থেকে নেমে এলেন। পকেটে যখন টাকা আছেই, আমি আর অন্যথা না ভেবে দ্বিগুণ ভাড়াতেই রাজি হয়ে গেলাম। পেছনের সিটে আগে থেকেই একজন মধ্যবয়েসি লোক বসেছিল। কোলে একটি বাচ্চা। আমি মাঝে বসলাম। তাকিয়ে দেখাও হয়নি পাশের লোকটির দিকে। অটো চালু হলো। হঠাৎ পাশের বাচ্চা ছেলেটি বলল,

    বাবা ওডাফার ওটা কেন পেনাল্টি দিল না?

    আমি শুনেই অবাক হয়ে পাশে তাকালাম। চার-পাঁচ বছরের একটি মিষ্টি ছেলে। গলায় মোহনবাগানের পতাকা জড়ানো। কেমন যেন একটু মন খারাপ হয়ে গেল ছেলেটির জন্য। হঠাৎ অটোর পাশ দিয়ে একটি ম্যাটাডোর যাচ্ছিল লাল-হলুদ পতাকা ওড়াতে ওড়াতে। তারা পেছন থেকে ওই বাচ্চা ছেলেটির উড়তে থাকা সবুজ-মেরুন পতাকা দেখতে পেয়েই রে-রে করে চেঁচিয়ে উঠল, পতাকা ভিতরে ঢোকা, পতাকা ভিতরে ঢোকা। আমি নিশ্চিত, যারা চেঁচিয়ে উঠেছিল তারা জানতোও না ওই পতাকাটি গলায় জড়িয়ে আছে একটি মিষ্টি ছোট্ট ছেলে। কারণ, তারা অটোর পাশে এসে পতাকাধারীর চেহারা দেখে আর মোটেই চেঁচায়নি। ছেলেটি হঠাৎ কেঁদে উঠে বলল,

    বাবা রেফারি ইস্টবেঙ্গলের ছিল। কেন পেনাল্টিটা দেয়নি?

    ছেলেটির ওই জলে ভেঁজা চোখ দেখে কী ভীষণ এক মন খারাপ আছড়ে পড়ল মনে। আমার গলায় তখন অটোর হাওয়ায় উড়ছে লাল-হলুদ পতাকা। কেন যেন ইচ্ছে হচ্ছিল পতাকাটা ব্যাগের ভিতর লুকিয়ে ফেলি। ছেলেটির ফুঁপিয়ে কান্না দেখে জীবনে এই প্রথম বার মনে হল, ম্যাচটা আমরা না জিতলেও তো পারতাম! ড্র হলেও তো পারতো! তাহলে ওই মিষ্টি মুখে এমন মন খারাপের ফুঁপিয়ে কান্না দেখতে হতো না। তবে একটা জিনিস ভেবে মনটা ভাল হয়ে গেল। আবেগের ব্যাটনটা ঠিকঠাকই পৌছে গিয়েছে পরের প্রজন্মের কাছে। অনেক কিছু হারিয়ে যাওয়ার মধ্যেও কিছু আবেগ আজও বেঁচে আছে, কিছু ভালোবাসা বেঁচে থাকতে চায়, বাঁচিয়ে রাখতে চায় কেউ কেউ।
    ধন্য ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান! ধন্য বড় ম্যাচের আবেগ! ধন্য ভালবাসার লড়াই!
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২৫ নভেম্বর ২০১৩ | ১৫৩৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • aranya | 154.160.130.16 (*) | ২৫ নভেম্বর ২০১৩ ১০:০০45814
  • ভাল লাগল
  • + | 213.110.247.221 (*) | ২৬ নভেম্বর ২০১৩ ০১:০৩45824
  • অসাধারণ, দারুন লাগল অনিমেষদা

    এপাড়ার ফুটবল টইতে ঘুরে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে গেলাম (যদিও ইবের জনসংখ্যা সেখানে বেশি, তবু ভালো লাগবেঃ) )
  • arindam | 69.93.247.95 (*) | ২৬ নভেম্বর ২০১৩ ০১:১৯45816
  • সুন্দর লেখা। একদম ঠিকঠাক মাঠের গল্প।
  • satyabrata | 131.240.208.65 (*) | ২৬ নভেম্বর ২০১৩ ০৬:১০45817
  • osadharon
  • shubhankar ganguli | 127.233.89.247 (*) | ২৬ নভেম্বর ২০১৩ ০৭:৪৬45818
  • দাদা খুব দারুন লাগোলো সোলো আনা বাঙ্গালি আবেগ
  • Sayantani Putatunda | 126.193.135.51 (*) | ২৬ নভেম্বর ২০১৩ ০৮:৩৫45819
  • osadharon!
  • rana basu | 71.16.148.94 (*) | ২৬ নভেম্বর ২০১৩ ০৮:৪৮45820
  • খুব ভালো
  • debolina | 24.139.125.180 (*) | ২৬ নভেম্বর ২০১৩ ০৯:৩০45821
  • দারুন ভালো অনিমেষ দা
  • partha sarkar | 113.244.240.100 (*) | ২৬ নভেম্বর ২০১৩ ০৯:৩৯45822
  • দারুন লাঘ্লো
  • Animesh Baidya | 131.245.139.33 (*) | ২৬ নভেম্বর ২০১৩ ১২:১৮45823
  • অসাধারণ লেখা
    পরে ভারি ভাল লেগেছে
  • Ananya | 127.194.231.175 (*) | ২৬ নভেম্বর ২০১৩ ১২:২৬45815
  • খুব সুন্দর একটা লেখা। এই ধরনের লেখার কোনো ডেফিনেশন বা বিশেষণ হয় না। বরাবর ই পড়তে ভালো লাগে। আর লেখনী যখন বিশিষ্ট তখন স্বাভাবিক ভাবে-ই অবাক হতে ভালো লাগলো। শুভেচ্ছা।
  • কল্লোল | 125.242.164.232 (*) | ২৭ নভেম্বর ২০১৩ ০১:১২45826
  • ইস্টবেঙ্গল সমর্থকেরা সত্যিই অতিকথার মানুষ। নিশ্চই সকলে নয়। কিন্তু এটাও সত্যি মোহনবাগান সমর্থকদের নিয়ে এমন কাহিনী নেই।
    সুরজিতের স্মৃতিকথা ব্যাক সেন্টারে এমনই এক গল্প। হয়তো অনেকেই জানে।
    ইস্টবেঙ্গল দল যেখান দিয়ে মাঠে নামে, তার গায়ে মেম্বার্স গ্যালারীতে একদম ধারে বসতেন মধ্যবয়ষ্ক ভদ্রলোক। নামার সময় সুরজিতকে উদ্দেশ্য করে বলতেন গোল চাই।
    কোন একটা খেলার দিন ভদ্রলোক তার জায়গায় ছিলেন না। সুরজিতেরও অভ্যাস হয়ে গিয়েছিলো, ভদ্রলোকের থেকে গোলের দাবী কবুল করা। যাই হোক, হাফটাইমে নামতে গিয়ে দেখে ভদ্রলোক বসে, ও যথারীতি গোলের দাবী। ম্যাচ শেষে ফেরার পথে সুরজিত জিজ্ঞাসা করেছিলো,
    - আজ দেরী হলো?
    - ছেলেটাকে পুড়িয়ে আসতে হলো। কি করি।
  • + | 213.110.247.221 (*) | ২৭ নভেম্বর ২০১৩ ০২:২৮45827
  • "ইস্টবেঙ্গল সমর্থকেরা সত্যিই অতিকথার মানুষ। নিশ্চই সকলে নয়। কিন্তু এটাও সত্যি মোহনবাগান সমর্থকদের নিয়ে এমন কাহিনী নেই।"

    এই লেখার মাঝে এই কমেন্ট নিয়ে আমি কিচ্ছু বলবনাঃ)
  • SG | 134.124.204.10 (*) | ২৭ নভেম্বর ২০১৩ ০৯:০৪45825
  • জনসংখ্যা বেশি তো কি হযেছে , মোবা না থাকলে ইবে কি থাকবে ??
  • nina | 78.37.233.36 (*) | ২৮ নভেম্বর ২০১৩ ০৮:০৬45829
  • বড় ভাল লাগল।
  • b | 135.20.82.164 (*) | ২৮ নভেম্বর ২০১৩ ১১:০০45828
  • ইবে-র সাপোর্ট বেস, সত্যি বলতে কি দেশ ভাগের আগে তেমন ছিলো কি? মোবার তো ছিলই।

    আমার বাবা একবার এক কাঠ বাঙাল ভদ্রলোককে চিনতেন, স্বাধীনতার আগে থেকেই তিনি মোহনবাগানের বড় সাপোর্টার। সে নিয়ে খোঁচালে ঐতিzজ্য বোজেন, এসব বলে টলে গলার শির ফুলিয়ে চেঁচাতেন। ১৯৬০/৬১ সাল নাগাদ, ইস্টবেঙ্গল বহুদিন পরে, কলকাতা লীগের ম্যাচে মোবাকে হারায়। ভদ্রলোক নাকি খেলা শুনতে শুনতেই হার্ট অ্যাটাকে মারা যান।

    আবার এটাও শুনেছি, মাঠে না যেতে পারলে অশোকনগর, নিউ বারাকপুর মধ্যমগ্রাম এসব দিগরের লোকজন ক্লাবের পতাকা টাঙিয়ে খেলা শুনতো। ইস্টবেঙ্গল ড্র করলেও তারা রেডিও ভাংচুর করত, হারলে কি হত সে ব্যাপারে কবি নীরব।
  • Abir | 76.215.158.118 (*) | ০৩ ডিসেম্বর ২০১৩ ০৯:৫৯45830
  • মেকি ক্লাবকর্তারা শুনছেন??
  • + | 213.110.247.221 (*) | ০৩ ডিসেম্বর ২০১৩ ১০:২৮45831
  • মোবা কর্তাদের অনেক কাজ আছে। সমর্থকদের কথা উনারা শোনেননা
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি মতামত দিন