এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ভ্রমণ  যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে  খাই দাই ঘুরি ফিরি

  • ডেভিড লিভিংস্টোনের খোঁজে

    হেনরি মর্টন স্ট্যানলে
    ভ্রমণ | যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে | ২৭ মে ২০২১ | ২৪২১ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • | | | | | | | | | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ | ৩২ | ৩৩ | ৩৪ | ৩৫ | ৩৬ | ৩৭ | ৩৮ | ৩৯ | ৪০ | ৪১ | ৪২ | ৪৩ | ৪৪ | ৪৫ | ৪৬ | ৪৭ | ৪৮ | ৪৯ | ৫০ | ৫১ | ৫২ | ৫৩ | পর্ব ৫৪ | পর্ব ৫৫ | পর্ব ৫৬ | পর্ব ৫৭ | পর্ব ৫৮ | পর্ব ৫৯ | পর্ব ৬০ | পর্ব ৬১ | পর্ব ৬২ | পর্ব ৬৩ | পর্ব ৬৪ | পর্ব ৬৫ | পর্ব ৬৬ | পর্ব ৬৭ | পর্ব ৬৮ | পর্ব ৬৯ | পর্ব ৭০ | পর্ব ৭১ | পর্ব ৭২ | পর্ব ৭৩ | পর্ব ৭৪ | পর্ব ৭৫ | পর্ব ৭৬ | পর্ব ৭৭ | পর্ব ৭৮ | পর্ব ৭৯ | পর্ব ৮০ | পর্ব ৮১ | পর্ব ৮২ | পর্ব ৮৩ | পর্ব ৮৪ | পর্ব ৮৫ | পর্ব ৮৬ | পর্ব ৮৭ | পর্ব ৮৮ | পর্ব ৮৯ | পর্ব ৯০ | পর্ব ৯১ | পর্ব ৯২ | পর্ব ৯৩ | পর্ব ৯৪ | পর্ব ৯৫ | পর্ব ৯৬ | পর্ব ৯৭ | পর্ব ৯৮ | পর্ব ৯৯ | পর্ব ১০০ | পর্ব ১০১ | পর্ব ১০২ | পর্ব ১০৩ | পর্ব ১০৪ | পর্ব ১০৫ | পর্ব ১০৬ | পর্ব ১০৭ | পর্ব ১০৮ | পর্ব ১০৯ | পর্ব ১১০ | পর্ব ১১১ | পর্ব ১১২ | পর্ব ১১৩ | পর্ব ১১৪ | পর্ব ১১৫ | পর্ব ১১৬ | পর্ব ১১৭ | পর্ব ১১৮ | পর্ব ১১৯ | পর্ব ১২০ | পর্ব ১২১ | পর্ব ১২২ | পর্ব ১২৩ | পর্ব ১২৪ | পর্ব ১২৫ | পর্ব ১২৬ | পর্ব ১২৭ | পর্ব ১২৮ | পর্ব ১২৯ | পর্ব ১৩০ | পর্ব ১৩১ | পর্ব ১৩২ | পর্ব ১৩৩ | পর্ব ১৩৪ | পর্ব ১৩৫ | পর্ব ১৩৬ | পর্ব ১৩৭ | পর্ব ১৩৮
    ডেভিড লিভিংস্টোনআফ্রিকায় বেপাত্তা। কিংবদন্তি মানুষটির খোঁজে আফ্রিকা পৌঁছেছেন মার্কিন সাংবাদিক হেনরি মর্টন স্ট্যানলেজাঞ্জিবার থেকে শুরু হল আফ্রিকার গভীরে অভিযান। প্রথম লক্ষ্য বাগামোয়ো শহরে পৌঁছে পাক্কা দেড় মাস ধরে সেখান থেকে একে একে রওনা হলো অভিযানের মোট পাঁচটি কাফেলা। চলছে অভিযানের মূল কাহিনি। স্ট্যানলের সেই বিখ্যাত সফরনামা ‘হাও আই ফাউন্ড লিভিংস্টোন’। এই প্রথম বাংলায়। এই পর্বে এমপাওয়াপাওয়া পৌঁছনোর কথা। তরজমায় স্বাতী রায়


    আমরা আধুনিক মানচিত্রের সাহায্যে কিছুটা আন্দাজ করার চেষ্টা করছি হেনরি মর্টান স্ট্যানলে-র যাত্রাপথ। নইলে পাঠকের পক্ষে বোঝাই মুশকিল এইসব কাণ্ড ঘটছে কোথায়। কাজটা কঠিন। কারণ, এই পথে এমন অনেক জায়গার নাম রয়েছে যার আজ কোনো অস্তিত্বই নেই। বাগামোয়ো থেকে ‘উসেগুহহা’-র রাজধানী সিম্বামওয়েন্নিতে পৌঁছে এবারে উগোগো অঞ্চলের চুন্যু (চুন্যো) নামক জনপদের লক্ষ্যে চলেছে স্ট্যানলের কাফেলা। উসেগুহহা বলে কোনো স্থান বা প্রদেশ আজ আর নেই। এমনকি বোঝাও মুশকিল সেই অঞ্চলের বিস্তৃতি ঠিক কী ছিল। তবে সিম্বামওয়েন্নি নামে একটি ক্যাম্প-সাইট এখনও রয়েছে তানজানিয়ার মোরোগোরো শহরের কাছে। আন্দাজ করা যেতে পারে এই সিম্বামওয়েন্নি-র কথাই স্ট্যানলে বলছেন। কাজেই এখানে বর্ণিত যা-কিছু ঘটছে সবই মানচিত্রে নীল বুটি দেওয়া পথের আশেপাশেই।—সম্পাদক

    এমপাওয়াপাওয়ার ঢালে অবস্থিত অসংখ্য ছোটো ছোটো গ্রামের মধ্যে একটাতে ফারকুহরের জন্য একটি বাড়ি পাওয়া গেল, যতদিন না সেসুস্থ হয়ে আমাদের সঙ্গে উন্যানইয়েম্বেতে যোগ দেওয়ার জন্য যাত্রা শুরু করতে পারে, ততদিনের আশ্রয়।



    শ ও ফারকুহার (ডানদিকে)


    খাবার অঢেল আর হরেক রকমের, যাতে কিনা নেহাত খুঁতখুতে লোকরাও পছন্দের কিছু পায়। আর সস্তাও, আগে অনেক দিনই আমরা যেমনটা পেয়েছি তার থেকে অনেকটাই সস্তা। ফারুকুহরের সুরক্ষা ও স্বাচ্ছন্দ্যের দায়িত্ব যার হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে, সেই গ্রামপ্রধান লিউকোল এক ছোটোখাটো বুড়োমানুষ, মিটমিটে চোখ আর ভারী হাসিখুশি মুখ। তাকে যখন জানানো হল যে মুসুঙ্গুকে আমরা পুরোপুরি তার দায়িত্বে রেখে চলে যাব, সে জানাল যে মুসুঙ্গুর সেবা করার জন্য আর তার ইচ্ছের কথা গ্রামের লোককে বোঝানোর জন্য যেন আমরা লোক রেখে যাই। আমিও ফারকুহরের অসুস্থতার জন্য এই অতিরিক্ত খরচের কথা ভেবেছিলাম, যদিও আশা করেছিলাম যে এই অতিরিক্ত খরচের থেকে লিউকোল আমাকে রেহাই দেবে। তবে ফারকুহরের আগমন আর আমাদের এসে পৌঁছানোর মধ্যে যে সময়টুকু কেটেছিল, তাতেই গাঁওবুড়ো বুঝেছিল যে ফারকুহরের মতো একজনের চাহিদা মেটানো তার পক্ষে একেবারেই অসম্ভব। সে কিনা ছোটোখাটো জিনিসের জন্যও হুকুম করে আধুনিক অ্যাঙ্গলো-স্যাকসন ভাষায়, কিসাগারা বা কিসাওয়াহিলি বলবে না কিছুতেই, আর যখন কেউ সেটা বোঝে না, তখন প্রথমে তাদের ইংরেজিতে গালাগাল দেয় এবং তারপরে যখন বোঝে যে তার গালাগালেও কোনো কাজ হচ্ছে না, তখন আবার গোঁয়ারের মতো রেগে চুপ করে যায়। দোভাষী ছাড়া যত টাকাই দেওয়া হোক না কেন লিউকোল এই দায়িত্ব নিতে নারাজ। ফারকুহরের মতো মানুষকে অভিযানে নেওয়ার নির্বুদ্ধিতার জন্য এখন আর শোকপালন করে কোনো লাভ নেই। সে আফ্রিকার অন্দরে চলে এসেছে আর অসুস্থ, তার যত্নআত্তির দিকটা দেখা আমার দায়িত্ব। সেই অনুসারে আমি বোম্বের সঙ্গে পরামর্শ করতে গেলাম যে ফারকুহরের সঙ্গে কাকে রেখে যাওয়া সবচেয়ে ভালো হবে। আমার অবাক করে দিয়ে বোম্বে বলল, ‘‘হে প্রভু, আপনি কি আমাদের আফ্রিকার ভিতরে নিয়ে এসেছেন এভাবে ছুড়ে ফেলে দেওয়ার জন্য? আমরা তো কোথাও থেকে যাওয়ার জন্য আপনার সঙ্গে চুক্তি করিনি, আপনার সঙ্গে উজিজি, উকেরেওয়ে বা কায়রো অবধি যাব বলেই তো চুক্তি করেছি। যদি আপনি সৈন্যদের কাউকে থেকে যেতে বলেন, সে শুধু আপনি চলে না যাওয়া পর্যন্ত আপনার কথা মানবে—তারপরই পালিয়ে যাবে। না না প্রভু— এটা চলবে না!” বোম্বের কথায় সন্দেহ করার কোনো কারণ ছিল না, তা সত্ত্বেও প্রতিটা লোককে ব্যক্তিগতভাবে জিজ্ঞাসা করলাম যে সে অসুস্থ মুসুঙ্গুর সেবা করার জন্য থেকে যেতে ইচ্ছুক কি না।

    সকলেই একদম অটলভাবে না বলল। বাগামোয়ো থেকে কাফেলার সঙ্গে আসা তিন সৈন্যের প্রতি মুসুঙ্গুর হিংস্র আচরণই তার কারণ। তারা তাকে ভয় পেত, কারণ মুসুঙ্গু সবসময় তাদের গালাগাল দিতেন; উলিমেঙ্গো এত নিখুঁত অথচ এত হাস্যকরভাবে তাকে নকল করত যে, না হেসে থাকা দায়। তবে যাই হোক, অসুস্থ লোকটার জন্য একজনকে রেখে যাওয়া নিতান্তই দরকার, তাই আমি হুকুম জারি করতে বাধ্য হলাম—যেহেতু বোম্বে আর সেলিম নামের আমার আরব দোভাষী ছাড়া দলের মধ্যে একমাত্র জাকোই ইংরেজি বলতে পারে, তাই জাকোর অনেক প্রতিবাদ আর কাকুতিমিনতি সত্ত্বেও তাকেই এই কাজে লাগানো হল আর গ্রামপ্রধান লিউকোলও খুশি। ছ-মাসের মতো সাদা পুঁতি, মার্কিনি ও কানিকি কাপড় আর সুস্থ হয়ে ওঠার পর লিউকোলকে নজরানা দেওয়ার জন্য দুই ডটি সুন্দর কাপড় বোম্বেকে দিয়ে ফারকুহরের কাছে পাঠানো হল। এ ছাড়াও দেওয়া হল একটা স্টারের কার্বাইন সহ ৩০০ রাউন্ড কার্তুজ, রান্না করার বাসনপত্র, আর তিন পাউন্ড চা।

    পাঁচশো কুলি আর তাকে ঘিরে থাকা একদল আরব ও ওয়াসাওয়াহিলি সাঙ্গোপাঙ্গো নিয়ে আবদুল্লাহ বিন নাসিব এখানে শিবির বানিয়ে ছিল। হামেদ বিন সুলেমান ক্যাসেঞ্জেতে (আফ্রিকায় ১৮৫৬ সালে ব্রিটিশ অভিযাত্রী জন হ্যানিং) স্পেকের সঙ্গে যেরকম আচরণ করেছিল, সেও আমার সঙ্গে খানিকটা সেইরকমই আচরণ করেছিল। সে একদিন দলবল নিয়ে আমার শিবিরে এল, লম্বাপানা, ভয়কাতুরে মতন দেখতে বছর পঞ্চাশেক বা তার আশেপাশের বয়সের মানুষ। আমাকে জিজ্ঞাসা করল যে আমি গাধা কিনতে চাই কি না। আমার সকল প্রাণীই তখন হয় অসুস্থ না হলে মৃতপ্রায়, তাই আমি সঙ্গে সঙ্গে হ্যাঁ বললাম, তাতে সে খুবই সদয়ভাবে বলল যে আমার য-টা লাগবে সে আমাকে ত-টাই বিক্রি করবে আর দাম হিসেবে আমি তাকে জাঞ্জিবারের ড্রাফট দিতে পারি।

    আমার তো লোকটাকে বেশ বুঝদার আর অমায়িক বলেই মনে হল। (রিচার্ড ফ্রান্সিস) বার্টন তাঁর লেক রিজিয়নস অফ সেন্ট্রাল আফ্রিকা বইতে লোকটার সম্বন্ধে যা সব স্তুতি গেয়েছেন সেগুলোও বেশ ঠিকঠাকই মনে হল। সেই অনুসারে একজন মহান ও ভালো মানুষের সঙ্গে যেমন ব্যবহার করা উচিত তেমনই করলাম। পরের দিন সে আবার এল আর তার সঙ্গে সঙ্গে আবদুল্লাহ বিন নাসিব, যাকে ওয়ান্যাময়েজির লোকেরা ‘কিসেসা’ বলে ডাকে, তার সব কুলি, দলবল আর প্রত্যেকটা গাধা নিয়ে বাগামোয়োর দিকে চলে গেল, একবার ‘কোয়াহেরি’বা বিদায়সম্ভাষণ জানানোর সৌজন্যটুকুও না দেখিয়ে।

    এই সব জায়গায় সাধারণত দশ-তিরিশজন মুটে পাওয়াই যায়, তারা আরও ভিতরদিকে যাচ্ছে এমন কাফেলার প্রতীক্ষায় থাকে। আমার সৌভাগ্য যে আমি বারোজন ভালো লোক পেয়েছিলাম, উন্যানয়েম্বেতে পৌঁছানোর পরে যারা সকলেই স্বেচ্ছায় উজিজি অবধি যেতে চেয়েছিল। আসন্ন মারেঙ্গা এমকালির ভয়ানক পদযাত্রার কথা চিন্তা করে আমি এই সৌভাগ্যের জন্য খুবই কৃতজ্ঞ, এর ফলে আমি যেসব সমস্যা হবে বলে ভয় করছিলাম সেসব ঝামেলাও আর হল না। কারণ আমার দলে আর মাত্র দশটা গাধা ছিল আর তার মধ্যে চারটে এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছিল যে মাল-বওয়ার কাজে তাদের আর লাগানো সম্ভব নয়।

    আরবরা প্রায় প্রতিটা দেশীয় শব্দকেই কলুষিত করে দিয়েছে। তারা যাকে এমপাওয়াপাওয়া বলে ওয়াসাগারারা সে জায়গাকে বলে এমবাম্বওয়া। এটা একটা পর্বতশ্রেণি, সমুদ্রতলের থেকে ৬০০০ ফুটের উপরে, এর উত্তর সীমানায় এক বিশাল সমতল যার শুরু উগোম্বো হ্রদের থেকে, পূর্ব দিকে উহুম্বার সীমানাও ছাড়িয়ে আরও দূরে বিস্তৃত এক সমভূমি, যা মারেঙ্গা এমকালি নামে পরিচিত। এমপাওয়াপাওয়ার বিপরীতে মাইল তিরিশেক দূরে, মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে রুবেহোর আনক শিখর, এ ছাড়াও আছে উগোম্বো ও মারেঙ্গা এমকালির সমতলের থেকে উঠে আসা, সোজা খাড়াই এর মাথায় মাথায় আরও অনেক উঁচু, লম্বা বেরাদরের দল। এতই সুষম তারা যেন বহু জন্ম ধরে রাজমিস্ত্রি আর পাথর-খোদাই-করিয়েদের দল পাথর কুঁদে তাদের বানিয়েছে।



    উগোম্বো হ্রদ ও পর্বতশিখর


    অজস্র ঘন পাতায় ছাওয়া গাছের ছায়ায় ছায়ায় আঁধার নেমে আসা এমপাওয়াপাওয়ার সবুজ রঙের ঢাল; অসংখ্য মিষ্টি ও স্বচ্ছ নির্ঝরিণীর দল, ঘন গঁদ গাছের চাপড়া আর কাঁটাঝোপ ছাড়াও সেই সব জলধারা বিশালাকৃতি সিকামোর ও পাতার ছাতা মাথায় দেওয়া মিমোসারও পুষ্টি জোগায়। ওই উঁচু শৃঙ্গের পিছনের অপরূপ দৃশ্য কল্পনা করে, অনবদ্য দৃশ্যের টানে আমি পাহাড়চূড়ায় চড়ার ক্লান্তিকেও পরোয়া না করার সাহস পেলাম। হতাশ হতে হয়নি। একবার চোখ বুলিয়ে দেখতে পেলাম শত শত বর্গ মাইল জায়গা জুড়ে সমতল ও পাহাড়—উগোম্বোর পাহাড়চূড়া থেকে সেই সুদূর উগোগো অবধি, রুবেহো ও উগোগোর থেকে বুনো, পোষ-না-মানা ওয়াহুম্বার ম্লান, বেগুনি চারণভূমি অবধি তার বিস্তৃতি।

    উগোম্বো ও তার পাশের মারেঙ্গা এমকালির সমতল উচ্চতায় সমুদ্রতলের বরাবর। এখানে ওখানে ‘প্রকৃতির আনমনা তাড়াহুড়োয় খসে-পড়া পাথর’ দিয়ে সাজানো, ধূসর ও সবুজ বিস্তারের মাঝে দ্বীপের মতো তাদের উপস্থিতি। সেখানে জঙ্গল ঘন, সবুজ ও ঘন-বাদামি রঙের পাশাপাশি বাস—সমতলটি ঝোপঝাড়মুক্ত, একটা সাদাটে-বাদামি চেহারাওলা, ভাসমান মেঘের দল যখন তখন সেই জমির উপর গভীর ছায়া ফেলে। সব মিলিয়ে ছবির এই দিকটা যে খুব আকর্ষক তা নয়। একটা সত্যিকারের জনহীন প্রান্তরের সবথেকে কঠোর দিকটি বড়ো বেশি স্পষ্টভাবে দেখায় যেন। তবে, সামনের এই বিশাল সমভূমির বুকে এক ফোঁটা জলও নেই যা কিনা নাইটারের মতন তিতো না বা প্রস্রাবের মতো অপেয় নয়, এই জানাটাই হয়তো আমাকে এর বিরুদ্ধে বিদ্বিষ্ট করে তুলেছিল। শিকারির কাছে হয়তো এই জায়গাটা স্বর্গতুল্য, কারণ তার তীক্ষ্ণতম স্বভাবকে চাগিয়ে তোলার মতো সব রকমের শিকার এই এলাকার গভীরে মেলে—তবে আমার মতো পথিকের কাছে এটা বড়োই কঠোর। অবশ্য এমপাওয়াপাওয়ার পায়ের কাছে সমতলের ধরনটি বদলাল। প্রথমে জঙ্গল পাতলা হল, বনের মধ্যে এক চিলতে ফাঁকা জমি দেখা দিতে শুরু করল, ক্রমশ চওড়া, উদোম জমি দেখা দিল, তারপর দেখা দিল কষ্টসহিষ্ণু হলকাস, ভারতীয় ভুট্টা ও মাওয়ারি বা বাজরার ছড়ানো খেত আর তার মাঝে এখানে ওখানে এক-একটা চৌকোনো গ্রাম বা টেম্বে। আরও কাছে রয়েছে তরতাজা কচি ঘাসের সরু রেখা, এক খণ্ড উর্বরা তৃণভূমিকে ঘিরে রয়েছে বিশাল গাছের দল। একটা চওড়া নদীখাত, অনেকগুলো জলধারা তার তৃষ্ণার্ত বুক চিরে ছুটে চলেছে, একটা ভারী প্রাণবন্ত ব্যাপার, উসাগরার এই অংশে অতি দুর্লভ ও অমূল্য একটি দৃশ্য। নদীখাতের থেকে এমপাওয়াপাওয়ার ঢাল শুরু, উঁচু খাড়াই থেকে খসে পড়া ব্যাসল্টের বড়ো টুকরো বা শিলাখণ্ডের ঘষায় কোথাও কোথাও অমসৃণ। খাড়া ঢালে নিশ্চিতভাবে পা দিয়ে আঁকড়ে দাঁড়িয়ে আছে কোলকাল গাছ, যেখানে আর কোনো গাছ টেঁকে না সেখানেও সে পুষ্টি জোগাড় করে নেয়। অন্যত্র পাহাড়কে জড়িয়ে আছে কঠোর-প্রাণ মিমোসা, বাঁধ-উপচানো সবুজ সতেজ শ্যামলিমা যেন প্রায় শীর্ষ ছুঁয়েছে। আর এতদিনের অদর্শনের পর দেখে বড়ো ভালোলাগল যে এখানে শয়ে শয়ে গবাদি পশু চরছে, পর্বতশ্রেণির গভীর কন্দরের নিঃসঙ্গতায় যেন এক মনোরম সজীবতার ছোঁয়া।



    তানজানিয়ার ইস্টার্ন আর্ক পর্বতমালা, এরই অন্তর্গত রুবেহো পর্বত


    তবে সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্যটি দেখা যেত রুবেহোর দিকে মুখ করে উত্তরদিকে ঘন-সন্নিবদ্ধ পাহাড়ের শ্রেণির দিকে তাকালে—সামনের সারির পাহাড়দের যেন ঠেকনা দিয়ে রেখেছে তারা। এলাকাটা বাতাসের উৎসস্থল, এখান থেকে জন্ম নিয়ে, পশ্চিমদিকের সটান খাড়াই আর নিঃসঙ্গ শীর্ষ দ্রুত ছুঁয়ে, প্রেইরির তুল্য মারেঙ্গা এমকালির মধ্য দিয়ে ছুটতে ছুটতে বাতাস আরও শক্তি সঞ্চয় করে আর তারপর উগোগো ও উন্যাম্বেজির মধ্য দিয়ে ঝড়ের তীব্রতায় গর্জন করে সে হাওয়া। শিশিরেরও আবাস এই অঞ্চল, এখান থেকে স্বচ্ছ ঝরনার সূচনা, যারা তাদের কলকল গানে নীচের বৃক্ষময় উপত্যকাকে আনন্দ দেয় আর এমপাওয়াপাওয়ার জনবহুল এলাকাকে সমৃদ্ধ করে। এখানে চোখ মেলে তাকালেই বিচিত্র প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখা যায়। তৃণভূমিখণ্ডের মতো সবুজ, ছড়ানো মালভূমি, মসৃণ গোল পাহাড়ের মাথা, পাহাড়ি উপত্যকার মধ্যে লুকিয়ে থাকা সাধুদের মন ভোলানো গুহা, গোধুলির বিষাদ-মাখা গভীর ভয়ংকর গিরিখাত, এবড়োখেবড়ো খাড়া উঁচু গিরিচূড়া, আশ্চর্যভাবে ক্ষয়ে যাওয়া বিশাল পাহাড়ের মাথায় বসে থাকা পাথরের টুকরো, ছবির মতন এক অঞ্চল যা প্রকৃতির বন্য ও কবিত্বময় সব কিছুকেই জড়িয়ে আছে। এই হাওয়া-বহুল উচ্চতায় দাঁড়িয়ে বিশুদ্ধ বাতাসে শ্বাস নিয়ে আর এইসব দৃশ্য দেখলে যে কারওই নিজেকে আরও সুস্থ, আরও শক্তিমান লাগবে।

    উপকূলের থেকে আসা ভ্রমণকারীরা এতদিন দুধের দর্শন থেকে বঞ্চিত থাকার পরে এমপাওয়াপাওয়াতে এসে এখানকার দুধের জোগানের জন্য খুবই কৃতজ্ঞ বোধ করবেন, তবে কিনা আসল যে কারণে উল্লেখযোগ্য স্থান হিসাবে জায়গাটাকে মনে থেকে যাবে তা হল কেন্নো। আমার তাঁবুতে হাজারে হাজারে কেন্নো; আমার ঝোলানো বিছানায় তারা শত শত; আমার পোশাকে তারা পঞ্চাশের গুণিতকে উপস্থিত; আর আমার ঘাড় এবং মাথায় ডজন ডজন কেন্নো ছিল। পঙ্গপাল, মাছি ও উকুনের মারাত্মক উৎপাতগুলোও কেমন কেন্নোর নারকীয় উপস্থিতির কাছে নেহাত তুচ্ছ হয়ে যায়। এটা সত্যি যে তারা কামড়ায়নি, আর ত্বকের কোনো জ্বালাও তৈরি করেনি, তবে তাদের উপস্থিতি আর সংখ্যাপ্রাবল্য এমনই ভয়ংকর যে ভাবতে গেলেও পাগল পাগল লাগে। বার্টন ও স্পেকের অভিজ্ঞতা না পড়ে কেই বা পূর্ব আফ্রিকাতে আসবে? এই পোকাদের মোকাবিলার বিষয়ে স্পেকের দেওয়া ভয়াবহ বিবরণ পড়ার পরেও কে সেগুলো মনে করে ভয় পাবে না? আমার তো মনে হয় যে আমার ভয়াতুর সতর্কতার ফলেই আমি একটা সমতুল দুর্যোগ থেকে বেঁচেছি।

    সংখ্যায় আর গুরুত্বে কেন্নোর ঠিক পরেই ছিল উইপোকা, যাদের মারণক্ষমতাটি সোজা কথায় ভয়াবহ। বিছানাপত্র, জামাকাপড়, পোর্টম্যান্টো, সংক্ষেপে, আমার যা কিছু ছিল তার প্রতিটা জিনিসই ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়ে—আর তাদের গোগ্রাসে গেলা দেখতে দেখতে ঘোর চিন্তায় পড়ে গেলাম যে এরা না আমার ঘুমানোর সময় আমার তাঁবুটাকেই পুরো গিলে নেয়! উপকূল ছেড়ে যাওয়ার পর এটাই প্রথম শিবির যেখানে তাদের উপস্থিতি এরকম উদ্‌বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল; এখনও পর্যন্ত যেসব জায়গায় শিবির করেছি সেখানে লাল এবং কালো পিঁপড়েরাই আমাদের মনোযোগের কেন্দ্রে ছিল, তবে এমপাওয়াপাওয়াতে লাল প্রজাতির পিঁপড়ে দেখা যায়নি, আর কালোরাও খুব কম ছিল।



    আজকের এমপওয়াপওয়ার একাংশ


    এমপাওয়াপাওয়াতে তিন দিন বিশ্রামের পরে মারেঙ্গা এমকালির দিকে রওনা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। উগোগোর এমভূমিতে না পৌঁছানো অবধি আমাদের একটানা চলতে হবে—সেখানে পৌঁছে ওয়াগোগো প্রধানদের ভেট দেওয়ার বিদ্যায় আমার হাতেখড়ি হবে। কিসোকওয়ে্র উদ্দেশে প্রথম যাত্রা ইচ্ছে করেই সংক্ষিপ্ত রাখা হল, মাত্র চার মাইল, যাতে শেখ থানি, শেখ হামেদ ও আরও পাঁচ বা ছয়টা ওয়াসাওয়াহিলি কাফেলা মারেঙ্গা এমকালির সীমানার মধ্যে অবস্থিত চুন্যোতে আমাকে ধরে ফেলতে পারে।


    (পঞ্চম অধ্যায়ের এখানেই শেষ। ষষ্ঠ অধ্যায় শুরু হবে পরের পর্ব থেকে)


    ১) স্টারের কার্বাইন ১৮৬৫ সালে ডিজাইন করা একটি নল দিয়ে বারুদ ঢোকানো, একবার গুলি ছোড়া যায় এমন রাইফেল; আমেরিকার সৈন্যদলে ব্যবহার হত।
    ২) স্ট্যানলি এখানে রবার্ট বার্নসের এই পঙ্‌ক্তিটি উদ্ধৃত করেছেন ‘hillocks dropt in Nature’s careless haste’
    ৩) পটাশিয়াম নাইট্রেট

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
    | | | | | | | | | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ | ৩২ | ৩৩ | ৩৪ | ৩৫ | ৩৬ | ৩৭ | ৩৮ | ৩৯ | ৪০ | ৪১ | ৪২ | ৪৩ | ৪৪ | ৪৫ | ৪৬ | ৪৭ | ৪৮ | ৪৯ | ৫০ | ৫১ | ৫২ | ৫৩ | পর্ব ৫৪ | পর্ব ৫৫ | পর্ব ৫৬ | পর্ব ৫৭ | পর্ব ৫৮ | পর্ব ৫৯ | পর্ব ৬০ | পর্ব ৬১ | পর্ব ৬২ | পর্ব ৬৩ | পর্ব ৬৪ | পর্ব ৬৫ | পর্ব ৬৬ | পর্ব ৬৭ | পর্ব ৬৮ | পর্ব ৬৯ | পর্ব ৭০ | পর্ব ৭১ | পর্ব ৭২ | পর্ব ৭৩ | পর্ব ৭৪ | পর্ব ৭৫ | পর্ব ৭৬ | পর্ব ৭৭ | পর্ব ৭৮ | পর্ব ৭৯ | পর্ব ৮০ | পর্ব ৮১ | পর্ব ৮২ | পর্ব ৮৩ | পর্ব ৮৪ | পর্ব ৮৫ | পর্ব ৮৬ | পর্ব ৮৭ | পর্ব ৮৮ | পর্ব ৮৯ | পর্ব ৯০ | পর্ব ৯১ | পর্ব ৯২ | পর্ব ৯৩ | পর্ব ৯৪ | পর্ব ৯৫ | পর্ব ৯৬ | পর্ব ৯৭ | পর্ব ৯৮ | পর্ব ৯৯ | পর্ব ১০০ | পর্ব ১০১ | পর্ব ১০২ | পর্ব ১০৩ | পর্ব ১০৪ | পর্ব ১০৫ | পর্ব ১০৬ | পর্ব ১০৭ | পর্ব ১০৮ | পর্ব ১০৯ | পর্ব ১১০ | পর্ব ১১১ | পর্ব ১১২ | পর্ব ১১৩ | পর্ব ১১৪ | পর্ব ১১৫ | পর্ব ১১৬ | পর্ব ১১৭ | পর্ব ১১৮ | পর্ব ১১৯ | পর্ব ১২০ | পর্ব ১২১ | পর্ব ১২২ | পর্ব ১২৩ | পর্ব ১২৪ | পর্ব ১২৫ | পর্ব ১২৬ | পর্ব ১২৭ | পর্ব ১২৮ | পর্ব ১২৯ | পর্ব ১৩০ | পর্ব ১৩১ | পর্ব ১৩২ | পর্ব ১৩৩ | পর্ব ১৩৪ | পর্ব ১৩৫ | পর্ব ১৩৬ | পর্ব ১৩৭ | পর্ব ১৩৮
  • ভ্রমণ | ২৭ মে ২০২১ | ২৪২১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • হীরেন সিংহরায় | ২৯ মে ২০২১ ২২:৫০106598
  • অসম্ভব ভালো লিখছেন। স্ট্যানলির কেঠো গদ্যকে প্রানবন্ত করেছেন। এক অসাধারন প্রাকৃতিক দৃশ্যকে সম্যক মর্যাদা দেয় আপনার ভাষা। 


    ভাষাটার বানান সোয়াহিলি এবং কি সোয়াহিলি ও ওয়া সোয়াহিলি লেখা ভালো। 


    উগোমবোর নাম এখন গোমবো। এমবোওয়াওয়া নাম হবে। বাগাময়ো রুবেহো নাম গুলো বদলায়নি। আমার মনে হয় স্ট্যানলি কানে শুনে নাম গুলো লেখেন। তাই অনেক নাম মেলে না! এছাডা তাঁর উপায় ছিল না কারন তিনি ভাষাটি শেখেন নি। রিচার্ড বার্টন অন্তত বিশটি ভাষা জানতেন - এমনকি হিন্দি সংস্কৃত মারাঠি! 

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ প্রতিক্রিয়া দিন