এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  সমাজ

  • কয়েক দশকে সঙ্ঘ ভেঙ্গে যায়?

    Anirban M লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | সমাজ | ২৭ অক্টোবর ২০২০ | ২৪০৩ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • আমার আগের লেখা আয় তবে বেঁধে বেঁধে থাকি’র সূত্রে এল আরো কিছু ভাবনা যার কিছুটা আমার পরিচিত দুএকজন মানুষের পাঠ প্রতিক্রিয়া সঞ্জাত আর বাকিটা  হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগানোর নিরন্তর প্রক্রিয়ার পরিণতি। আগের লেখাতে যূথবদ্ধতার একাল-সেকাল আলোচনা করতে গিয়ে বলেছিলাম কয়েক দশকে সঙ্ঘ ভেঙ্গে যাওয়ার মূল চাবিকাঠি লুকিয়ে আছে প্রযুক্তির মধ্যে, মানুষের কোন বিরাট চারিত্রিক পরিবর্তন এর জন্য দায়ী নয়। এ প্রসঙ্গেই বলেছিলাম বিগত দশকের সঙ্ঘনির্মাণের মূলেও রয়েছে এক ধরনের অহং বোধের উদযাপন যা একালের সংস্কৃতি চর্চারও মূলমন্ত্র। পরে আমার মনে হল এই যে অহং শব্দটির ব্যবহার তার আরেকটু বিশদ ব্যাখ্যা প্রয়োজন, এছাড়াও আমার বক্তব্যের মূল সুরটি (এবং তার সীমবদ্ধতা) নিয়েও কিছু কথা বলা যেতে পারে।

       বাংলায় অহং শব্দটি কিছুটা নঞর্থক ব্যঞ্জনা বহন করে, প্রায়শই ব্যবহৃত হয় আত্মম্ভরিতার প্রতিশব্দ হিসেবে। আমি কিন্তু অহং শব্দটি ব্যবহার করেছি সদর্থে। আমি মনে করি এই অহং বোধই শিল্পীকে তাড়িত করে নতুন কিছু সৃষ্টি করতে যা আসলে নিজেকে বাইরের জগতের সামনে তুলে ধরার এক একনিষ্ঠ প্রয়াস। শিল্পীর অহংবোধ না থাকলে কোন ক্যানভাসের তলায় বা বইয়ের মলাটে কখনো স্রষ্টার নাম পাওয়া যেত না, ভ্যান গঘ বা জীবনানন্দেরা দগ্ধে মরতেন না স্বীকৃতি না পাওয়ার কষ্টে। অহং যাঁর নেই তিনি সন্ন্যাসী, তাঁর কাছে এই বিশ্বচরাচর ইশ্বরের প্রকাশ; ব্যক্তি মানুষের সৃষ্টি বা তার স্বীকৃতি সেখানে অপ্রাসঙ্গিক। সৃষ্টির স্বীকৃতি আসলে একধরণের মোহ যা সন্ন্যাসের মূল শিক্ষার পরিপন্থী। এখানে বলে নেওয়া ভাল আমি সন্ন্যাসী বলতে আমি কোন বিশেষ ধর্মের প্রাতিষ্ঠানিক সন্ন্যাসীদের কথা বলছি না। আমি বলছি সেই সব মানুষদের কথা যাঁরা মোহের আবরণ ছিন্ন করে যেখানে পৌঁছেছেন সেখানে অহং তাঁদের নাগাল পায় না। তাঁদের কেউ কেউ প্রাতষ্ঠানিক অর্থে সন্ন্যাসী হতেও পারেন, কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক সন্ন্যাস মোহমুক্তির কোনরকম শর্ত নয়। আমি এমন অনেক গৃহীমানুষকে চিনি যাঁরা স্বীকৃতির মোহমুক্ত, আবার এমন প্রাতিষ্ঠানিক সন্ন্যাসীকেও চিনি যাঁরা তা নন। এই সব প্রকৃত সন্ন্যাসীদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাবোধ আছে, হয়ত আমরা অহং এর হাতছানিকে দূরে সরাতে পারিনা বলেই। কিন্তু যিনি সব মোহ থেকে মুক্তি পেয়েছেন, তিনি কিন্তু নতুন কিছু সৃষ্টিও করেন না। প্রকৃত সন্ন্যাসীদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা থাকতে পারে, কিন্তু সব মানুষ যদি সন্ন্যাসী হত, সভ্যতার কোন অগ্রগতি সম্ভব ছিল না। সভ্যতার যে অগ্রগতি তা মূলগত ভাবে সৃষ্টিশীল মানুষের- তা তিনি শিল্পী, বিজ্ঞানী, সমাজতাত্ত্বিক যেই হোন না কেন -- অহংবোধের ফলশ্রুতি। আমি তাই যে অহংবোধের উদযাপনের কথা বলেছি তার মূল সুরটি কিন্তু সৃষ্টিশীলতাকে এগিয়ে নিয়ে যায়। যদিও কখনো কখনো সেই উদযাপন দৃষ্টিকটু, কখনো কখনো সৃষ্টির থেকে স্রষ্টার প্রচার হয়ত বেশী হয়ে দাঁড়ায়, তবুও সৃষ্টিশীলতার জন্য অহংবোধ আবশ্যিক।

     

    প্রযুক্তি উদ্ভাবন একটি সামাজিক প্রক্রিয়া

      এবার আমার আমার আগের লেখার বক্তব্যের মূল সুরে ফিরি, যার অনেকটাই সেই পরিসরে সেভাবে বলা হয় নি। ইংরিজিতে কালচার শব্দটা অনেক কিছু বোঝায়—মূল্যবোধ, সংস্কৃতি ইত্যাদি। সুবিধের জন্য আমি মূল্যবোধ শব্দটিই ব্যবহার করি বরং। প্রযুক্তির সঙ্গে মুল্যবোধের সম্পর্ক বেশ গভীর এবং আগের লেখাটিতে আমি দেখিয়েছিলাম প্রযুক্তি কিভাবে মূল্যবোধ পালটে দিতে পারে। কিন্তু এর উল্টোটাও কিন্তু একই ভাবে সত্যি—প্রযুক্তির উদ্ভাবন এবং তার ব্যবহার সামাজিক মূল্যবোধের ওপর নির্ভরশীল। কেন কিছু দেশ নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন বা বিদেশী প্রযুক্তির ব্যবহার করতে পারে আর অন্যরা পারে না তা নিয়ে অনেক গবেষণা রয়েছে যা বিভিন্ন কারণের দিকে নির্দেশ করেছে। এই কারণগুলির মধ্যে যেমন বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যেকার ভৌগলিক  বা প্রাতিষ্ঠানিক পার্থক্য রয়েছে (ভৌগলিক পার্থক্য কিভাবে প্রযুক্তি উদ্ভাবনের তফাত করে দেয় সে বিষয়ে জানতে কৌতুহলি হলে Jared Diamond এর Guns, Germs and Steel পড়ে দেখতে পারেন, একটি অসামান্য বই), তেমনই রয়েছে মূল্যবোধগত পার্থক্যের বিষয়টি। আমরা সাধারণত প্রযুক্তি উদ্ভাবন বিষয়টিকে একটি বৈজ্ঞানিক ফর্মূলা আবিষ্কার হিসেবে ভাবি। ফর্মূলা নিশ্চয়ই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু ফর্মুলার ব্যবহারযোগ্য প্রযুক্তি হয়ে ওঠার পদ্ধতিটি একান্তই সামাজিক। প্রযুক্তি যে মূলত একটি গবেষণাগার কেন্দ্রিক ব্যাপার, এই ধারণা আসলে এসেছে উনবিংশ শতকে আমেরিকার অভিজ্ঞতা থেকে। কিন্তু সব দেশে, সব কালে এই ধারণা সমান ভাবে প্রযোজ্য নয়। শিল্পবিপ্লবের বৃটেনে প্রযুক্তি উদ্ভাবন কিন্তু গবেষণাগান কেন্দ্রিক ছিল না। সেখানে হাতে কলমে কাজ করেন যাঁরা, তাঁরা ওয়র্কশপে প্রচলিত প্রযুক্তির এদিক ওদিক পরিবর্তন (এক্ষেত্রে সঠিক শব্দটি  Tinkering , কিন্তু তার লাগসই প্রতিশব্দ আমার জানা নেই) করতে করতে গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন করেছেন।

       কিন্তু গবেষণাগারে তৈরি (এমনকি কি অন্য দেশে ব্যবহৃত) ব্লু-প্রিন্ট যে সবসময় ব্যবহারযোগ্য প্রযুক্তি হয়ে ওঠে না, সেটি ইতিহাসবিদরা বিষয়টি নানাভাবে দেখিয়েছেন। সেইরকমই একটি আখ্যান হল কোরিয়ান জাহাজ নির্মাতা হিউন্ডাই-এর। হিউন্ডাই ১৯৭০ এর দশকে স্কটিশ কোম্পানি স্কটলিথগোর থেকে জাহাজ নির্মাণের ব্লু-প্রিন্ট কেনেন। স্কটিশ কোম্পানিটি জাহাজের খোল দুটি ভাগে বানিয়ে তারপর তা জোড়া দিত। সেই পদ্ধতির সমস্ত খুঁটিনাটি বিবরণ থাকা সত্ত্বেও কোরিয়ানরা দুটি অর্ধ ঠিকঠাক জোড়া দিতে ব্যর্থ হয়। হিউন্ডাই পরে পৃথিবীর প্রথম সারির জাহাজ নির্মাতা হয়ে ওঠে, কিন্তু তা নিজেদের গবেষণাগারে উদ্ভাবিত প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে, বিদেশী প্রযুক্তির সাহায্যে নয়। এই কাহিনীর মূল প্রতিপাদ্য হল একটি সামাজিক অবস্থায় উদ্ভাবিত প্রযুক্তি অন্য দেশে, অন্য সামাজিক অবস্থায় একই রকম ফল দিতে নাও দিতে পারে। এর আরো অনেক উদাহরণ আছে ইতিহাস জুড়ে; ঐতিহাসিকরা দেখিয়েছেন বিংশ শতাব্দীর গোড়ায় উৎপাদন শক্তির শীর্ষে থাকা বৃটিশ বস্ত্রশিল্পের প্রযুক্তি অন্যদেশে (ভারত তার মধ্যে অন্যতম) সেভাবে কার্যকর হয় নি। সামাজিক মূল্যবোধ কীভাবে প্রযুক্তির উদ্ভাবনকে সাহায্য করে তার খুব ভালো উদাহরণ শিল্প বিপ্লবের সময়কার বৃটেন। শিল্প বিপ্লব কেন ইউরোপের অন্য কোন দেশে না হয়ে বৃটেনে হল, এটা ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাঁধা। বিভিন্ন গবেষক এর বিভিন্ন উত্তর দিয়েছেন এবং তার সবগুলি আংশিক সত্যি; সম্ভবত এই প্রশ্নের কোন একটি উত্তর নেই। সেরকম একটি মান্যতাপ্রাপ্ত উত্তর হল ফ্রান্সের সঙ্গে বৃটেনের সামাজিক মূল্যবোধগত পার্থক্যের। ঐতিহাসিকরা মূলতঃ দুধরণের মূল্যবোধের কথা বলেছেন যা ফ্রান্স ও বৃটেনের মধ্যে পার্থক্য করে দেয়। প্রথমটি হল সামাজিক সম্মানের মূল্যবোধ এবং দ্বিতীয়টি হল বিজ্ঞান চর্চার মূল্যবোধ। গবেষকরা দেখিয়েছেন ১৮-১৯ শতকের বৃটেনে সামাজিক সম্মান শুধুমাত্র বংশপরিচয়ের ওপর নির্ভরশীল ছিল না, উদ্ভাবকরা আর্থিক সাফল্যের পাশাপাশি সামাজিক সম্মানও পেতেন। উদাহরণ স্বরূপ রিচার্ড আর্করাইটের কথা বলা যায় যাঁর বাবা ছিলেন দর্জি। কিন্তু বস্ত্রশিল্পের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে তিনি শুধু যে আর্থিক সাফল্য পেয়েছিলেন তাই নয়, তিনি নাইটহুড এবং ডার্বি কাউন্টির শেরিফের পদ লাভ করেন। একই সময়ে ফ্রান্সে কিন্তু সামাজিক ভাবে ওপরে ওঠার জন্য বংশপরিচয়ের গুরুত্ব অনেক বেশী ছিল। গবেষকরা মনে করেন বৃটেনের সমাজে উদ্ভাবকরা আর্থিক সাফল্যের পাশাপাশি যে সামাজিক সম্মান পেতেন তা উদ্ভাবকদের নতুন আবিষ্কারের পথে যেতে উৎসাহিত করত। দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল বিজ্ঞান চর্চার সংস্কৃতি। ১৮-১৯ শতকের বৃটিশ বিজ্ঞান চর্চা অনেক বেশী প্রভাবিত ছিল বেকনের ভাবধারায় যার মূল বক্তব্য ছিল যে বিজ্ঞানের কাজ হল জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং জীবনযাত্রাকে আরও আরামপ্রদ করে তোলা। অন্যদিকে ফ্রান্সের বিজ্ঞানচর্চার সংস্কৃতি ছিল কার্তেসিয়ান ভাবধারায় প্রভাবিত যা বিশুদ্ধ জ্ঞানচর্চায় বিশ্বাস রাখত। অনেক গবেষকই মনে করেন যে শিল্পবিপ্লবে বৃটেনের সাফল্যের মূলে আছে বিজ্ঞান চর্চার এই সংস্কৃতি। এই নিয়ে আরো বিস্তারিত আলোচনা করা আমার লেখার উদ্দেশ্য নয়। আমি আসলে দেখাতে চাইছিলাম সামাজিক মূল্যবোধের সঙ্গে প্রযুক্তির সম্পর্কটি বড়ই নিবিড়। আমি এতক্ষণ আলোচনা করলাম সামাজিক মূল্যবোধ কীভাবে প্রযুক্তির উদ্ভাবনকে প্রভাবিত করে। কিন্তু এর উল্টোটাও সত্যি অর্থাৎ প্রযুক্তিও সামাজিক মূল্যবোধকে পালটে দিতে পারে যা আমরা এর পরের অংশে আলোচনা করব।

     

    প্রযুক্তি ও মূল্যবোধের একাল-সেকাল

    ধান ভানা হল অনেক, এবার শিবের গীতে আসা যাক। মূল্যবোধের যে একটা পরিবর্তন যে আমাদের প্রত্যেকের জীবনে দীর্ঘ ছায়া ফেলছে সেটা আমরা সবাই বুঝতে পারছি। এই পরিবর্তনের নানান দিক রয়েছে, কিন্তু একটা বড় বিষয় হল মানুষের ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়ে যাওয়া। এখন বিষয়টিকে দু’ভাবে( বা হয়ত আরো অনেকভাবে) দেখা যেতে পারে। এক হতে পারে যে হঠাৎ মানুষের মানসিকতার পরিবর্তন হয়েছে আবার এমনও হতে পারে যে মানুষ একইরকম আছে, কিন্তু প্রযুক্তিগত পরিবর্তন এমন অনেক কিছু সম্ভব করে দিয়েছে যা আগে সম্ভব ছিল না। আমি ব্যক্তিগত ভাবে দ্বিতীয় ব্যাখ্যাটিকে বেশী গ্রহণযোগ্য মনে করি, এবং সেটা হয়ত আমার দার্শনিক অবস্থান অর্থাৎ আমি সমাজকে কিভাবে দেখি তার থেকেই আসছে। একটু খেয়াল করলে বুঝতে পারবেন একা থাকা ব্যাপারটা বেশ ব্যয় সাধ্য। তাই ইচ্ছে থাকলেও, আর্থিক স্বাচ্ছল্য না থাকলে সেটি সম্ভব নয়। একবার “গল্প হলেও সত্যি” ছবির সেই দৃশ্যটি মনে করুন যেখানে মেজভাই, বড়ভাই এর সাথে তর্ক করতে করতে বলে যে সেরকম রোজগার করতে পারলে সে সপরিবার অন্য কোথাও চলে যেত। আসলে জীবনধারণের ব্যয়ের একটা বড় অংশ স্থির ব্যয়; পরিবারে লোকের সংখ্যা বেড়ে গেলে মাথা পিছু স্থিরব্যয় কমে যায়। যেমন ধরুন দশজনের পরিবারে মাথা পিছু যা খাওয়ার খরচ, একজনের পরিবারে তার থেকে তা বেশী হবে। তার সবচেয়ে বড় কারণ রান্নাঘর সেট-আপ এর একটা খরচ আছে, একজনের জন্য একটা ফ্রিজ, একটা গ্যাস কানেকশন অন্তত লাগে। কিন্তু দশজনের জন্য দশটা ফ্রিজ, দশটা গ্যাস কানেকশন লাগে না। একটা ফ্রিজ বা একটা গ্যাসেই হয়। হয়ত একটু বড় ফ্রিজ লাগে বা বেশি গ্যাস লাগে। কিন্তু সেই খরচটা একজনের খরচের ১০ গুণ নয়, তার চেয়ে কম। এটা একটা উদাহরণ। এরকম আরো নানারকম বিষয়ের কথা বলা যেতে পারে।

    কিন্তু মোদ্দা কথাটা হল যূথবদ্ধতা জীবনযাপনের (যার মধ্যে সংস্কৃতি চর্চাও পড়ে) মাথাপিছু ব্যয়কে কমিয়ে দেয়। কিন্তু যখনই সুযোগ এসেছে আমরা গোষ্ঠী থেকে যৌথ পরিবারে এবং যৌথ পরিবার থেকে নিউক্লিয়ার পরিবারে ভেঙ্গে এসেছি। এখন সেই নিউক্লিয়ার পরিবার থেকেও ভেঙ্গে তৈরি করছি ব্যক্তিগত যাপনের পরিসর। এই ভাঙ্গনের কোন ভাল-মন্দ নেই,অন্তত আমার বিচারে, এটা উন্নয়নের একটি অপরিহার্য শর্ত। যূথবদ্ধতা ভেঙ্গে বেরনো মানে জীবনযাপনের এই বাড়তি ব্যয়কে মেনে নেওয়া। সেটা দুভাবে হতে পারে – এক, যদি ব্যক্তির আয় বেড়ে যায় আর দুই, যদি জীবন যাপনের স্থিরব্যয় কমে যায়। প্রথমটা হয়েছে লিবেরালাইজেশনের প্রথম ভাগে, ১৯৮০’র দশকের শেষ থেকে ২০০০ এর মাঝামাঝি অবধি—আমরা যৌথ পরিবারকে ক্রমান্বয়ে ভাঙতে দেখেছি। আর দ্বিতীয়টা হচ্ছে লিবেরালাইজেশনের দ্বিতীয় পর্যায়ে, গত ১৬-১৭ বছর ধরে যখন আমরা ব্যক্তির যাপনকে অনেক বেশী প্রচলিত হতে দেখছি। যদিও ব্যক্তির যাপনটা অনেক সময় সাদা চোখে ধরা পড়ে না, অন্য মানুষের সাথে একই ছাদের তলায় থেকেও ব্যক্তি-যাপন করা সম্ভব।

    আয় বাড়ার ব্যাপারটা বোঝা সহজ, গত ৩০ বছরে তথাকথিত মধ্যবিত্তদের (যাঁরা পরিষেবা ক্ষেত্রের সাথে যুক্ত এবং আসলে উচ্চবিত্ত) আয় বেড়েছে অনেকটাই। আমি একটু ব্যয় কমার বিষয়টা নিয়ে কথা বলি। ব্যয় কমানোর মূল কান্ডারি দুটি – প্রযুক্তি আর বাজার। প্রযুক্তির উন্নতি বিনোদনের বিভিন্ন সামগ্রী যেমন টিভি, ফোন ইত্যাদির দাম কমিয়ে আর দূরের যোগাযোগকে সস্তাকরে কিভাবে একক যাপনকে আরো সহজ করে দিল তা আমরা দেখলাম চোখের সামনেই। এক্ষেত্রে বাজারের ভূমিকাও কিন্তু সমভাবে গুরুত্বপূর্ণযা আমরা অনেক সময় খেয়াল করি না। বাজার যত গভীর হবে, একক যাপন তত সহজ হবে। বাঙ্গালির হেঁসেল থেকে একটা উদাহরণ দিই। কিছু বছর আগেও বাঙালি পাঁঠার ঝোল খাওয়ার একমাত্র উপায় ছিল বাড়িতে রান্না করা। আপনি যদি বাড়িতে একা মানুষ হন, তাহলে শুধু নিজের জন্য রান্না করা বেশ ঝামেলার ব্যাপার (ওই সেই স্থির ব্যয়ের কারণেই)। আপনার রান্নার লোক থাকলে ঝামেলা একটু কম, কিন্তু তাহলেও ঝামেলা থাকছেই আর সেটারও প্রাক-শর্ত হল রান্নার কাজ করার শ্রমের বাজারের উপস্থিতি – অর্থাৎ বাজার লাগছেই। গত কিছু বছর ধরে প্রথমে হোম ডেলিভেরি এবং এখন বিভিন্ন অ্যাপের হাত ধরে বাঙালি খাবারের বাজার শুরু হওয়ার ফলে একা একা পাঁঠার ঝোল খাওয়া খুব সমস্যা নয়। আরেকটা উদাহরণ প্রাত্যহিক রুটি কিনে খাওয়া যেটাও ২০-৩০ বছর আগে এত প্রচলিত ছিল না। বাজারে অংশগ্রহণের প্রাক-শর্ত অবশ্যই টাকা, কিন্তু যে শ্রেণীর মানুষ নিয়ে আমরা কথা বলছি তাদের কাছে সময় অনেক দামী টাকার থেকে। এরকম বহু কিছুর বাজার গত কয়েক বছরে উঠে এসেছে যা একভাবে যূথবদ্ধ জীবনের পরিবর্ত হিসেবে কাজ করে। আরেকটা খুব ভালো উদাহরণ অসুস্থ বা বৃদ্ধ মানুষের সেবার বাজার যার প্রধান কর্মী আয়ারা। এই বাজারের উদ্ভবও তুলনায় অনেক নতুন ঘটনা। এরকম আরো অনেক নতুন বাজার অনেক গভীর ভাবে প্রবেশ করেছে আমাদের জীবনে যা তিরিশ বছর আগেও ভাবা যেত না। সুতরাং একদিকে বাজার আর অন্যদিকে প্রযুক্তি আমাদের প্রতিদিনকার যাপনকেই পালটে দিয়েছে। এই বিষয়টা আসলে আরো বড় একটা আলোচনা, যার পুরোটা একটা প্রবন্ধে করা যাবে না। ইচ্ছে রইল শুধু এই বিষয় নিয়ে পরে দু-এক কথা লেখার ।

    এবার আমার মূল প্রতিপাদ্যে ফিরি।  এটা আমরা সবাই বুঝি যে গত কিছু বছর ধরে সঙ্ঘকে ছাপিয়ে ব্যক্তি উঠে এসেছে এবং আরো আসছে। এটা বহু ক্ষেত্রেই হচ্ছে, কিন্ত আমার আগের লেখার মূল জায়গা ছিল সংস্কৃতি চর্চা যেখানে গ্রুপ থিয়েটার, লিটল ম্যাগাজিনে অভ্যস্ত বাঙালি যূথবদ্ধতা আশা করে অনেক বেশী। সেখানে ব্যক্তির উত্থান আমাদের কিছুটা বিমর্ষ করে হয়ত। একটু খেয়াল করলে দেখবেন এমনকি রাজনৈতিক প্রতিবাদও কিন্তু অনেক বেশী ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়ে উঠেছে, মিছিলের থেকে বেশী আলোড়ন তুলছে একটা টুইট, ইউটিউব ভিডিও বা ফেসবুক স্ট্যাটাস। মিছিল করে যত লোক জেলে যাচ্ছেন, তার থেকে বেশী লোক জেলে যাচ্ছে টুইট করে। আগের আলোচনার রেশ ধরে বলি এর কারণ এটা নয় যে মানুষের অন্তঃকরণের কোন আকস্মিক পরিবর্তন হয়েছে বা এখনকার মানুষ আগেকার মানুষের থেকে বেশি ভালো বা খারাপ হয়ে গেছে। ব্যক্তির উদযাপন আকাঙ্খা বরাবর ছিল, কিন্তু সহায়ক প্রযুক্তি বা যথেষ্ট গভীর বাজার ছিল না। প্রযুক্তি কীভাবে ব্যক্তি-উদযাপনের ব্যয় কমিয়ে দেয় সে নিয়ে আগেই আলোচনা করেছি। শেষ করি দুটি কথা বলি। প্রথমতঃ সঙ্ঘের ভেঙ্গে যাওয়া নিয়ে আমার কোন নৈতিক মতামত নেই—অর্থাৎ আমি এটা মনে করি না যে সঙ্ঘ ভালো এবং ব্যক্তি খারাপ। সঙ্ঘের ভেঙ্গে যাওয়া, আমার মতে, একটি ঐতিহাসিক অনিবার্যতা। আমি শুধু বোঝার চেষ্টা করছি কিভাবে সেই প্রক্রিয়া তরান্বিত হল গত তিরিশ বছরে। দ্বিতীয়তঃ, আমার এরকম কোন দাবী নেই যে আমার এই ব্যাখ্যাই একমাত্র সত্য --  একমাত্র সত্যে বিশ্বাস তো আমরা কবেই ফেলে এসেছি। তবে অন্যতম সত্য তো বটেই।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ২৭ অক্টোবর ২০২০ | ২৪০৩ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    ইঁদুর  - Anirban M
    আরও পড়ুন
    বটগাছ - Anirban M
    আরও পড়ুন
    লাইক-ইট - Anirban M
    আরও পড়ুন
    বর্ম - Anirban M
    আরও পড়ুন
    প্লাবন - Anirban M
    আরও পড়ুন
    নবীন - Suvasri Roy
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 202.142.75.53 | ২৭ অক্টোবর ২০২০ ১১:১০99141
  • ইন্টারেস্টিং লেগেছে।

  • Sanhita Chatterjee | ২৭ অক্টোবর ২০২০ ১৭:১২99183
  • ভাবনা জাগানো 

  • রমিত | 202.8.114.32 | ২৭ অক্টোবর ২০২০ ১৮:২৯99193
  • খুব গভীর ভাবে বিশ্লেষণ করেছেন ব্যাপারটা খুব ভালো লাগল। আরেকটা ব্যাপার আমার খুব ইন্টারেস্টিং লাগে এবং বুঝতে ইচ্ছে করে সেটা হল তারকা কেন্দ্রিকতা কমে যাওয়া। কিছুদিন আগেও সব কিছুই ভীষন ভাবে তারকা কেন্দ্রীক ছিল। কিন্তু সঙ্ঘ যত ভেঙেছে তত তারকা কেন্দ্রিকতাও কমেছে। বছর দশেক আগেও কিছু লোকে দল বেঁধে মালা নিয়ে সিনেমা হলে ছুটত (যদিও সংখ্যাটা আরো আগের সংখ্যার তুলনায় নগন্য) আর ছোটে বলে মনে হয়না, ছুটলেও সেটা pr টিমের সৌজন্যে ছুটতে পারে, স্বতস্ফূর্ত ভাবে নয়। বিশাল বড় বড় তারকার  ফ্যান হওয়ার বদলে লোকে নিজেই তারকা হতে চাইছে। টিকটিক, ইন্সটা, ইউ টিউবে এদেরই জয়কার। মানছি সেখানেও কিছু বড় তারকা আছে কিন্তু বেশীতাই ছোট ছোট সাবগ্রুপে বিভক্ত। ধরুন ম্যাট প্যাট একজন বিশাল ইউ টিউবার কিন্তু গেমিং বা থিওরিরাজিং কমিউনিটির বাইরে কেউ তেমন নাই চিনতে পারে, veritasiram, ভি সস, টম স্কট এদেরকে এডুকেশনাল কমিউনিটির বাইরে পরিচিতি নাই থাকতে পারে। 

  • রমিত | 202.8.114.32 | ২৭ অক্টোবর ২০২০ ১৮:৩৪99194
  • এরপর ওই কমেন্টে আর লেখা যাচ্ছিল না। 


    তো আমি বলেছিলাম এই ভাঙন টাও খুব ইন্টারেস্টিং ।বলিউড , হলিউডে সত্যিই তারকার অভাব চলছে। একটা নামকাওস্তা মেকানিক্যাল ফ্যাানবেস হয়তোো আছে ।    অভিনয় দক্ষতায় পিছিয়ে কোনোভাবেই নয়। ঘেেঁটে সিি।   যাাাএয়য় থাক পরে লিখখখ বো

  • Anirban M | ২৭ অক্টোবর ২০২০ ২০:২৭99208
  • রমিত, এটা একটা ইন্টেরেস্টিং প্রশ্ন তুলেছেন। আমার কাছে এটার একটা উত্তর আছে। কিন্তু সেটাও একটু বিশদে লিখতে হবে। এটা নিয়ে একটা ব্লগ লিখব তাহলে। 

  • Ramit Chatterjee | ২৭ অক্টোবর ২০২০ ২৩:১১99220
  • হ্যাঁ, অবশ্যই। মুখিয়ে রইলাম

  • কুমারজিৎ মণ্ডল | 2402:3a80:a76:37a1:0:4c:7019:5501 | ২৮ অক্টোবর ২০২০ ১৫:৫০99264
  • আসলে  সংঘবদ্ধতার প্রয়োজন আসে নিরাপত্তা হীনতার বোধ থেকে। আর্থিক স্বাচ্ছল‍্য এবং বাজারের প্রসার অবশ্যই সেই নিরাপত্তাহীনতার বোধকে দূর করতে সাহায্য করে। বাঙ্গালীর সাংস্কৃতিক মানচিত্রে গ্রুপ থিয়েটার এক নতুন উদ্ভাবন ছিল ষাটের দশকে। তাকে নিজের জায়গা করে নিতে হচ্ছিল বাণিজ্যিক থিয়েটারের দাপটের মধ্যে। তাই তখন গ্রুপ থিয়েটার সংঘবদ্ধ ছিল। কিন্তু যখন গ্রুপ থিয়েটার আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্যের মুখ দেখল তখন গ্রুপ থিয়েটারের যূথবদ্ধতা ভেঙে গেল। নতুন নতুন থিয়েটার দল তৈরী হল। তাতে কিন্তু থিয়েটার জগতের ক্ষতি হয়নি। বরং অনেক নতুন পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে। থিয়েটার সমৃদ্ধ হয়েছে।

    অনির্বাণ একটা গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রক্রিয়ার ওপর আলোকপাত করেছে। এই লেখাটা পাঠককে ভাবনার খোরাক যোগাবে।

  • Ashoke Mazumder | 2405:201:8007:a00f:a98b:9208:4653:fced | ২৭ নভেম্বর ২০২০ ০৯:২৬100697
  • ভালো  লাগলো . 

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে মতামত দিন