এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  গপ্পো

  • রথসচাইল্ডের জিরাফ

    ইন্দ্রাণী লেখকের গ্রাহক হোন
    গপ্পো | ২৯ জুলাই ২০২০ | ২৪০২ বার পঠিত

  • ঝুপ করে সন্ধ্যা নামল। আলো মরে গিয়ে বেশ ঠান্ডা। এখানে ঈষৎ উঁচুতে দাঁড়িয়ে গাছের মাথা থেকে শিকড়ের দিকে সূর্য নামা দেখা যায়। হঠাৎ হঠাৎ সাদা বক উড়ে যায় পায়ের তলা দিয়ে- তখন সাঁৎ সাঁৎ করে সাইকেল চড়ে কেউ গেল মনে হয় - মাথায় সাদা হেলমেট।
    আরো নিচে হ্রদ দেখা যাচ্ছিল - নীলচে রং এখন ঘন বেগুণী। জলের নাকি একটা হীলিং পাওয়ার আছে- রেণু কোথাও পড়েছে। শব্দটা যখন উপশম নয়, হীলিং পাওয়ার - মানে ইংরাজি বইতেই পড়েছিল। কিম্বা কোনো কোটেশন- হয়ত হোয়াটস্যাপে। সে যেন পড়েছিল, যত দুঃখ তত জল লাগে হীলিংএর জন্য। কেউ হয়ত টুক করে স্নান করে নিল, কারোর লাগলো গোটা সমুদ্র । আপাতত তার মনের কোনো শুশ্রূষার প্রয়োজন ছিল না - জলের দিকে তাকিয়ে একমনে স্মৃতিকে খেলিয়ে তোলার চেষ্টা করছিল রেণু। সুবর্ণ পাশে দাঁড়িয়ে। কব্জিতে বিয়ের লাল সুতো - হনিমুনে এসেছে ওরা।
    বঁড়শিতে স্মৃতির টুকরো টাকরা গাঁথলেই রেণু তা টেনে আনছিল - নেড়ে চেড়ে পরখ করে জলে ফেরত পাঠাচ্ছিল, কিম্বা আঁচলে বাঁধছিল, অথবা সুবর্ণর পকেটে ভরে দিচ্ছিল।স্কুলের গেটের সামনের ফুচকা, চুরমুর, হজমিগুলি, বন্ধুরা, ওর তানপুরা, হারমোনিয়াম, ওস্তাদজী, ডোভার লেনে ভোর হচ্ছে- আমজাদ খান সিন্ধু ভৈরবী ধরেছেন - একটা টুকরো শুধু, জলে ফেলছিল অথচ বঁড়শিতে উঠে আসছিল বারবার। একটা ছবি - নেটেই দেখেছিল ; ক্যাপশান ছিল - রথস্চাইল্ডস জিরাফ, বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতি। রেণু পড়েছিল, এই জিরাফরা চুপচাপ- নাকি ইনফ্রাসোনিক সাউন্ড দিয়ে কমিউনিকেট করে। ছবিতে জলের সামনে জিরাফ আর অজস্র পেলিক্যান ছিল- যতটুকু জল, তাতে কেবলই পেলিক্যানের ছায়া। জিরাফের প্রতিবিম্ব স্বভাবতই ক্যামেরার ফ্রেমের বাইরে ।
    আজ হনিমুনের তৃতীয় দিনে ছবিটা বারে বারে সুতো ধরে টেনে তুলছিল সে । সেই সঙ্গে আরও একটা ছবি - রিসেন্ট।
    ওদের বৌভাতের রাতে, ভীড় টীড় যখন পাতলা, লোকজন পান মুখে দিয়ে ফিরে যাচ্ছে, ডেকরেটরের লোক বালতি গামলা গোছাচ্ছিল আর রেণুকে ফুল সাজানো ঘরে নিয়ে যাচ্ছে ওর ননদ জা; জেঠি শাশুড়ি বললেন, ' পিন্টু কোথায় গেল? '
    সুবর্ণকে কিছু আগে খেয়াল করেছিল রেণু -স্পীকারে তখন মালকোষ - সানাই; রেণুর পাশে সুবর্ণ পোজ দিয়ে ছবি তুলছিল- সামনে সুবর্ণর পিসেমশাই , পিসিমা; গা মা ধা মা গা মা গা সা শুনতে শুনতে অন্যমন্স্ক হচ্ছিল রেণু। পিসেমশাইয়ের জামাই বলছিল- 'একটু কাছাকাছি দাঁড়ান বৌদি। ও বৌদি? বৌদি বুঝি গান বাজনা খুব ভালোবাসেন?'
    সেই ফোটোসেশনের পরে সুবর্ণকে আর ওখানে দেখে নি রেণু।
    জেঠিশাশুড়ি আবারও বললেন, 'পিন্টুকে ডাক তো। ফুলশয্যার ধুতি পাঞ্জাবি বের করে রেখেছি, হাত মুখ ধুয়ে পরে নিক, রাত হয়েছে-'
    ডাকাডাকি শুরু হ'ল এর পর। বড় ভাসুরের ছেলে মোবাইল নাচাতে নাচাতে দৌড়ে এল- 'ও ঠাকুমা, দেখবে এস , কাকু কত খাচ্ছে। কাকিমা, ভিডিও করেছি মোবাইলে, দেখবে?'
    সাড়ে ছ ইঞ্চি স্ক্রীনে সবার সঙ্গে রেণুও দেখেছিল, খানিক আগের জমজমাট জায়গা এখন লম্বাটে আর নিঃঝুম। খাওয়ার টেবিলে উল্টোনো ফুলদানি, খালি জলের বোতল, হাত মোছার রঙীন কাগজ গড়াগড়ি যায় । সেইখানে সুবর্ণ বসে- সামনে পাঁজা করা রাধাবল্লভি; কোনোদিকে দৃকপাত নেই, বিয়েবাড়ির আলো সানাই ডেকরেটরের লোকজন, দোতলায় নতুন বৌ- সমস্ত যেন লুপ্ত তার চেতনা থেকে -ঘিয়ে পাঞ্জাবি, ধুতিতে দীর্ঘদেহী সুবর্ণ রাধাবল্লভি আর আলুরদম খাচ্ছে গোগ্রাসে, যেন কতকালের খিদে নিয়ে সে বসে- তার গায়ে,হাতে রাধাবল্লভির টুকরো, চিবুক গড়িয়ে , লম্বা গলার অ্যাডামস অ্যাপেল বেয়ে হলুদ একটা লাইন টপ টপ করে পাঞ্জাবি ভিজিয়ে দিচ্ছে ।
    জেঠিশাশুড়ি বলেছিলেন- 'আহা কখন থেকে উপোস টুপোস -বয়সের ছেলে -খাবে না? তোদের সবেতেই বাড়াবাড়ি - এই তুই আবার মোবাইল নিয়ে খেলছিস?'। বাকিটা মুচকি হাসি আর গা ঠেলাঠেলিতে চাপা পড়ল। বাচ্চাটাও মোবাইল লুফতে লুফতে সিঁড়ি বেয়ে নেমে গেল।
    সে রাতে সুবর্ণ অসাড়ে ঘুমোলে নতুন বালিশ চাদর ফুলের গন্ধে শুয়ে রেণু ঐ জিরাফ আর পেলিক্যানের ছবিটা স্বপ্নে দেখেছিল।
    তারপর গত সাতদিনে কথা চুমু শরীর সবই হয়েছে – তবু, হনিমুনের তৃতীয়দিনে এই হ্রদের ধারে বেগুনী আকাশের তলায় পেলিক্যানের পাশে ল্যাগব্যাগে জিরাফের ছবি মন থেকে সরাতে পারছিল না রেণু।

    শীত শীত করছিল। চাদর টানল সে।
    সুবর্ণ বলল- 'এবার ওঠা যাক। সাড়ে আটটায় শুরু হবে বলেছিল না? মিনিট দশেক লাগবে এখান থেকে অটো নিলে। তার আগে রাতের খাওয়া সেরে নি? '
    সারাদিন ঘোরাঘুরির পরে স্বাভাবিক ভরপেট খেলো দুজনে। রেণু আড়চোখে তার বর কে দেখছিল। ন্যাপকিন, টেবল ম্যানার্সে সুবর্ণ যথাযথ । ওরা অটোয় উঠল-পরদেশি পরদেশি যানা নেহি বাজছে। সুবর্ণ বলেছিল-'এখনও এই সব গান লোকে শোনে? এ তো আমাদের ছোটোবেলার গান-'
    -' আহা কত যেন বুড়োমানুষ'- রেণু সুবর্ণর গা ঘেঁষে বসল।
    হ্রদের পাশ দিয়ে চওড়া রাস্তা গিয়েছে, জল পেরোলেই সরু গলি , অনুজ্জ্বল দোকানপাট , ঘর বাড়ি মানুষজন - দেওয়ালে, দরজায় ছবি আঁকা। সেই সব ঘর দোরের গা ঘেঁষে অটো চলেছে। ছোটো ছোটো দোকানে দুধ উথলাচ্ছে কড়াইতে, ডাঁই করা জিলিপি, কচুরি, ইয়াব্বড়া লংকাভাজা - পাগড়ি পরা , চুমড়োনো গোঁফ দোকানদার- রেণু বলছিল- 'দেখো, যেন রাজপুত্র, না?' ওরা নাক টেনে গন্ধ নিচ্ছিল, হাসছিল অকারণ।
    -'উফ যা খেয়েছি আজ। ' সুবর্ণ হাল্কা হেউ করল।
    রেণু ব্যাগ হাতড়ে বলল- 'হজমের ওষুধ আছে, খেয়ে নেবে ?'
    -'আরে না। ওষুধ খাওয়ার মত কিছু নয়'
    সুবর্ণ হাত ধরল রেণুর, আঙুল জড়িয়ে নিল।
    অটো থেমেছিল। ওরা গেট পেরিয়ে ভিতরে এলো । ছোটো একটা ঘাসজমি পেরিয়ে পুরোনো হাভেলি। ভিতরের উঠানে খোলা মঞ্চ ঘিরে শতরঞ্জি , মশা, লোকজন, আলো জ্বলছিল - এই শহরে এসে পুতুল নাচ না দেখে কেউ ফেরে না। ওরা টিকেট কেটে মাটিতে বসল।
    ম্লান অনুজ্জ্বল আলো, ঠান্ডা কনকনে মাটি - রেণুর সামান্য হতাশ লাগছিল- হ্রদের ধারে অনেক আলো লোকজন- ঐখানেই ফিরে যেতে ইচ্ছে করছিল রেণুর। ঠিক সেই সময় জোরালো স্পটলাইট পড়ল মঞ্চে। সারেঙ্গিতে ছড় -সঙ্গে রাবণহাত্তা আর ঢোল- রেণুর মনে হচ্ছিল কোথাও যেন একটা ঢাকনা খুলে যাচ্ছে- প্রথমটায় টাইট ঢাকনা খুলতে যেমন হয় একটু ধীরে ঘটছিল ব্যাপারটা তারপর বয়ামের প্যাঁচের সুতো আর ঢাকনার প্যাঁচ একসঙ্গে চলতে শুরু করল; জোরালো পুরুষালি গলায় গান উঠল পধারো মেরে দেশ - কেশরিয়া-
    অমনি খুট করে খুলে গেল ঢাকনা আর বন্যার জলের মত সুর ঢুকতে লাগল রেণুর শরীরে; তোলপাড় করছিল রক্ত -এই মশা ধুলো ঠান্ডা মেঝের ড্যাম্প লাগা গন্ধ ছাপিয়ে রাগ মান্ড ওকে ভাসিয়ে নিচ্ছিল - সুরে সুরে দুলছিল রেণু , ভাসছিল, স্নান করছিল।
    একের পর এক গান , নাচ হচ্ছিল সামনে- রেণুর চোখ সরছিল না- এত সুর এত আলো এত গান এই শীতের রাতে কল্পনাও করেনি।
    অনুষ্ঠান শেষ হতে, সে তখনও সুরে সুরে মজে - সুবর্ণর হাত ধরতে গেল রেণু ; সুবর্ণ ভীড় ঠেলে সামনে এগিয়ে গেল-একটু দ্রুতই। তারপর রাস্তায় নেমে গতি আরো বাড়িয়ে দিল - যেন দৌড়োবে। রেণু তাল রাখতে হিমসিম খাচ্ছিল।
    সে চেঁচিয়ে বলল, 'কি হ'ল? শরীর খারাপ লাগছে? বাথরুম যাবে?'
    গলিতে তখন লোকে লোকে ছয়লাপ - সুবর্ণকে আর দেখতে পাচ্ছিল না রেণু। অস্বস্তি, দুর্ভাবনা আর বিষাদ জেঁকে বসছিল ওর মনে - কান্না পাচ্ছিল, ঘাম - চাদর খুলে ফেলল সে। গা ঘেঁষে মানুষ, অটো, শিংওলা গরু- অনুজ্জ্বল আলোয় হোঁচট খেতে খেতে যে পথে এখানে এসেছিল সেই পথ খুঁজে ফিরছিল রেণু। সুবর্ণ কোথায় যেতে পারে স্পষ্ট কোনও ধারণা ছিল না তার। সে হাঁটছিল, দ্রুত হাঁটতে গিয়ে তার পায়ে টান ধরছিল, হাঁটু অবশ লাগছিল, মাথার মধ্যে হাতুড়ি পিটছিল কেউ। তবু হাঁটার জোর বাড়িয়ে দিল রেণু।


    সাত দিনে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার রেণুকে কুহেলির সন্ধ্যা রায় মনে হ'ল সুবর্ণর। আজ প্রথমে যখন গান শুরু হ'ল - ঢোলক, সারেঙ্গি, রাবণহাত্তা আর রেণু দুলতে শুরু করল, অনেক দূরের মনে হ'ল রেণুকে। ঠিক সেদিনের মত। পিছনের দিক থেকে রেণুকে ব্যান্ড মাস্টারের মত লাগছিল অথবা অপেরার কন্ডাক্টর। সারেঙ্গির সুরে সুরে মেরুন শাড়িতে রেণু দুলছে, আর সুবর্ণর মনে হচ্ছে রেণু সম্পূর্ণ অন্য কিছু শুনছে ; সম্ভবতঃ রেণুর কান বেয়ে একটা পিয়ানোর গমগমে আওয়াজ পৌঁছে যাচ্ছে - রেণু ক্রমশ দূরের হয়ে যাচ্ছে -দূরের এবং রহস্যময়। এরপর একটা ঘোরানো সিঁড়ি বেয়ে রেণু নামবে; পিয়ানো যেখানে বাজছে সেদিকেই যাবে রেণু- নামতেই থাকবে -তাকে আর আটকাতে পারবে না সুবর্ণ- আস্তে আস্তে রেণু কুহেলির সন্ধ্যা রায় হয়ে যাবে।

    সুবর্ণ তখন স্কুলে, ওদের টিভি দেখার বড় ঘর, ভনভন মশা, ঠাকুমা পিঁড়িতে বসে মালা জপতে জপতে ঢুলে পড়ছে , এদিকে টিভিতে , গ্র্যান্ড পিয়ানোয় বিশ্বজিৎ আর গলা মেলানোর ঠিক আগে সন্ধ্যা রায় ঢাকাই শাড়ি পরে সিঁড়িতে একলা দাঁড়িয়ে, কাজল পরা বিশাল চোখ - যেন ফিনফিনে চিনেমাটির ডল। পাশের ঘর থেকে মা আর বাবার গলা পাচ্ছিল রোজকার মত। মা খুব জোরে চেঁচাচ্ছিল, পিয়ানোর আওয়াজ, তুমি রবে নীরবে ছাপিয়ে সেই সব কথা সুবর্ণর কানে আসছিল। মা বলছিল চলে যাবে। বলছিল, এ' সংসারে মানুষ থাকে? বলছিল, ' আমার গান, আকাশবাণীর অডিশন- সব সব নষ্ট হ'ল শুধু তোমাদের জন্য।‘
    সুবর্ণর বুক পেট খালি হয়ে গিয়েছিল - তার মানে ও কেউ নয়। কেউ নয় মায়ের? ও তবে কে? মা চলে গেলে ওর কি হবে? ভয় আর শূণ্যতা বালক সুবর্ণ আর কখনও এইভাবে পায় নি - ওর ভয় সেই মুহূর্তে সন্ধ্যা রায়ে শিফট করে গেল- ওর মনে হয়েছিল, যেন একটা ফিনফিনে পুতুল সিঁড়ি দিয়ে নামছে আর নামলেই , অবশ্যম্ভাবী পড়বে আর চুরচুর হয়ে যাবে। হারিয়ে যাবে একদম। ভয়ে কাঁটা হয়ে সুবর্ণ সন্ধ্যা রায় কে সিঁড়ির ধাপেই ফ্রিজ করে দিতে চেয়ে, রিমোট টিপে টিভি অফ করে দিয়েছিল।
    রাত ঘন হতে মা ভাত বসিয়েছিল - চোখ লাল, উস্কোখুস্কো এলোমেলো শাড়ি। রান্নাঘরে তেলকালি, কতদিনের ঝুল। ভাতের হাঁড়ির খুব কাছে কান নিলে শোঁ শোঁ শব্দ কানে আসে। সুবর্ণর বুক ফেটে যাচ্ছিল। সুবর্ণ বলতে চাইল- মা , বড় কষ্ট। বলতে চাইল, মা চলে যেও না। অথচ বলল- 'মা ভাত দাও।'
    -' রান্না শেষ হয় নি তো। শুধু ভাত খাবি নাকি?'
    বালক সুবর্ণ বলেছিল-' খুব যে খিদে পেয়েছে, মা'। তারপর মন্ড মন্ড সাদা ভাত উদ্গলায় খেতে শুরু করেছিল । তার লালায় আর চোখের জলে নোনতা ভাত অস্বাভাবিক দ্রুততায় গলায় ঢুকছিল কখনও আটকে যাচ্ছিল। সুবর্ণর চাইছিল, এই মুহূর্তটা ফ্রিজ করতে - যদি এই ভাবে সে ভাত চেয়ে যায়, চেয়ে যেতেই থাকে, মা আর চলে যেতে পারবে না। কোথায় যাবে মা ওকে ভাত না দিয়ে?
    মা যায় নি সেদিন। পরেও নয়। গেল এই তো সেদিন - বাথরুমে গিয়ে সেরিব্রাল স্ট্রোক।

    আজ এই পুরানো হাভেলিতে, হনিমুনের তৃতীয় রাতে সুবর্ণর চোখের ওপর রেণু কুহেলির সন্ধ্যা রায় হয়ে যাচ্ছিল ক্রমশঃ - বড় বড় চোখ মেলে দেখে নিচ্ছিল চারপাশ যেন সুবর্ণর পাশ থেকে উঠে গিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামতে শুরু করবে যে কোন সময়। সুবর্ণর খুব ইচ্ছে করল রেণুকে জাপটে ধরে বিছানায় নেয় -খুলে খুলে দেখে সব। কী গান ঢুকছে রেণুর কানে , কী বিক্রিয়া করে সেই গান রেণুর অভ্যন্তরে- সব জানতে চাইছিল সুবর্ণ।দেখতে চাইছিল রেণুর সবটুকু -সমস্ত জটিল কলকব্জা, বিক্রিয়া ও ফলাফল। ওদিকে পুতুল নাচ শুরু হয়ে গিয়েছিল। রাজা রাণী রাজদরবার আলো করে বসে- আর একটা পেল্লায় সাপ বাঁশিশুদ্ধ সাপুড়েকে জাপটে ধরে গানের সুরে সুরে ওপরে উঠে যাচ্ছিল; এই ভীড় আলো লোকজন আর কাঠপুতলি- সমস্ত ফ্রিজ করে দিতে হবে ঠিক এইখানে- আলো আঁধারিতে পুরোনো টিভির রিমোট হাতড়াচ্ছিল সুবর্ণ, খ্যাপার মত। বার কয়েক উঠে দাঁড়নোর চেষ্টা করেছিল, বসে পড়েছিল তারপর।
    নাচ শেষ হতে লোকজন উঠে বেরোচ্ছে সবে, রেণুর হাত ছাড়িয়ে বড় রাস্তায় নেমে স্প্রিন্ট নিল সুবর্ণ।

    অন্ধকার রাস্তা ঘাটের খানা খন্দ পেরিয়ে সে দৌড়োচ্ছিল । কনকনে উত্তুরে হাওয়ার ঝাপট লাগছিল মুখে - চোখ বেয়ে জল গড়াচ্ছিল। গলির দোকান পাট সবই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, শুধু ছোটো চায়ের দোকানে একটি ছেলে - সুবর্ণর মতই বয়স- পাকানো গোঁফ ,কানে দুল, মাথায় পাগড়ি - যেন এক শাপগ্রস্ত রাজপুত্র - ঝাঁপ ফেলার আগে বারকোষ খালি করছিল, উনুন, মেঝে মুছে ,পেডেস্ট্যাল ফ্যান চালিয়ে শুকোচ্ছিল। আগুন নিভে গিয়েছিল, শূণ্য কড়াইতে দুধের শুকনো সর পড়েছিল। দোকানের সামনে হাঁফাচ্ছিল সুবর্ণ; ফ্যানের তীব্র হাওয়ায় দোকানঘর কেমন করে শুকায় কোমরে হাত দিয়ে দেখল কিছুক্ষণ। শুকিয়ে যাওয়ার একটা প্যাটার্ন ছিল - সেটা বুঝতে গেলে হাওয়ার গতি, মেঝের মাপ এসব মিলিয়ে একটা অংক কষতে হ'ত। সে শুধু হাঁফাচ্ছিল আর বাঁ দিক থেকে ডাইনে ভেজা অংশের ছিঁড়ে ছিঁড়ে যাওয়া দেখছিল।
    রাজপুত্র ঘর মোছা থামিয়ে দোকান বন্ধ হয়ে গেছে বলেছিল। তারপর কি ভেবে আঙুল দিয়ে নেভানো আগুনের ওপর ছোটো পাত্র দেখিয়েছিল - অগভীর ধাতব , কাচের ঢাকনা বেয়ে জল নামছে ন্যাতানো পরোটায় । তিনটে ঠান্ডা পরোটার প্রথমটি তুলে নিল তারপর ছিঁড়ল - বাঁ থেকে ডানে সামান্য ত্যারছা মত আবার ডান থেকে বাঁয়ে।
    রাজপুত্র থালা এগিয়ে দিয়েছিল। টুকরো ভয়, বিপন্নতা আর দুঃখগুলি খুঁটে খুঁটে খাচ্ছিল সুবর্ণ।

    রেণু এসে দাঁড়িয়েছিল কখন যেন। সুবর্ণ মুখ তুলে ফ্যাঁসফ্যাঁসে গলায় বলল - 'ভাত খাব। ভাত দাও।'

    [প্রথম প্রকাশঃ বাংলা লাইভ, ২০২০]
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • গপ্পো | ২৯ জুলাই ২০২০ | ২৪০২ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    ইঁদুর  - Anirban M
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • de | 59.185.236.53 | ২৯ জুলাই ২০২০ ১৪:৪৯95654
  • অসাধারণ!
    মেন্টাল ম্যাপিংটা খুব সুন্দর!!
  • রঞ্জন | 182.69.171.194 | ২৯ জুলাই ২০২০ ১৬:২৫95655
  • ইন্দ্রাণীর গল্প মানেই অন্যরকম প্রাপ্তি সেই একদশকের বেশি আগে পড়েছিলাম--" খুঁটে খাওয়ার গ্রাফিতি"। মুগ্ধতা আজও যায়নি। আর আমি জানি ঐরকম গল্প আমি কোনদিনই লিখতে পারব না; আমার ডিএনএ তে নেই।

  • b | 14.139.196.11 | ২৯ জুলাই ২০২০ ২১:০৯95665
  • অসাধারণ
  • | ২৯ জুলাই ২০২০ ২২:৫৫95667
  • বাংলালাইভে আগেই পড়েছিলাম। পড়তে পড়তে ১৮র ডিসেম্বরে সিটি সেন্টারের সিঁড়িতে পা ছড়িয়ে বসে ইন্দ্রাণীরভ্লেখা নিয়ে সোনালী আত্রেয়ী কৃশানুর সাথে আলোচনা তর্ক মনে পড়ে গেল।
    পুরুষের বিপন্ন অসহায়তা ধরা পড়েছে নিখুঁত। তবু গল্পটা কেমন খপাৎ করে শেষ হল মনে হল আমার।
  • | ২৯ জুলাই ২০২০ ২২:৫৬95668
  • *ইন্দ্রাণীর লেখা নিয়ে
  • anandaB | 50.125.255.146 | ৩০ জুলাই ২০২০ ০৮:০৪95676
  • লেখার বাঁধুনী এবং/অথবা প্রকাশভঙ্গি ইত্যাদির গুণে ভালোই লাগলো, কিন্তু কি যেন একটা নেই

    সেটা বিষয়বস্তু সংক্রান্ত নাকি অন্য কিছু বুঝতে পারছি না, দেখি আরও বারদুয়েক পড়ি
  • i | 120.17.219.221 | ৩০ জুলাই ২০২০ ১৪:৩০95691
  • প্রায় সব লেখাই গুরুচন্ডালিতে দি, অন্যত্র প্রকাশিত হলেও; অনেকেই আগে পড়েছেন , তাও আবার পড়তে বলছি ভেবে একটা দ্বিধা হয় সত্যি। আবার এখানে না দিলে , বাড়িতে না বলে সিনেমায় গেছি গোছের অস্বস্তি।

    যাই হোক, আপনাদের ভালো লাগা , মন্দ লাগা, দ্বিধা, দ্বন্দ্ব সমস্তই ঝুলিতে ভরলাম।
    পাঠককে নমস্কার।
  • Prativa Sarker | ৩০ জুলাই ২০২০ ১৫:৪৮95695
  • গল্পটা আমাকে খুব অভিভূত করেছে। শেষ হবার পর কেমন একটা মমতায় ছেয়ে গেল মন। মনস্তত্ত্বের এমন সুঠাম প্রয়োগ বহুকাল চোখে পড়ে না। 

  • Prativa Sarker | ৩০ জুলাই ২০২০ ১৫:৪৮95694
  • গল্পটা আমাকে খুব অভিভূত করেছে। শেষ হবার পর কেমন একটা মমতায় ছেয়ে গেল মন। মনস্তত্ত্বের এমন সুঠাম প্রয়োগ বহুকাল চোখে পড়ে না। 

  • i | 120.18.111.67 | ৩১ জুলাই ২০২০ ০৩:০৪95713
  • ধন্যবাদ তোমাকে।
  • kaktarua | 2607:fea8:4f1f:e85b:994c:e1f:57ef:a0c2 | ৩১ জুলাই ২০২০ ২০:০৯95763
  • ভালো লাগলো.
  • | 2601:247:4280:d10:e999:c702:f1b7:93de | ৩১ জুলাই ২০২০ ২৩:৪৫95768
  • শেষটা...

  • শঙ্খ | 103.217.235.35 | ০১ আগস্ট ২০২০ ০০:২৪95773
  • আমার মন্তব্যটাও চিপকে দেই এখানেঃ

    দুই পর্বের একদম নির্মেদ আখ্যান। এক নম্বরে রেণুর চোখে পাঠক গল্প দ্যাখেন। পর্ব দুইতে ক্যামেরা ফোকাসে রাখে সুবর্ণকে। দুটো ভ্যান্টেজ পয়েন্ট থেকে দুই মুখ্য কুশীলবের খুঁটিনাটি অভ্যেস আর মানসিকতা দরকার মতো এসেছে গল্পের প্রয়োজনে।
    একটা কথা কোথাও পড়েছিলাম আগে, যে আমরা সবাই স্পেকট্রামে বিলং করি, কেউ একটু বেশি লাউড, কেউ কম। এটাই কি সেই জীবনানন্দের আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভিতরে খেলা করা এক বিপন্ন বিস্ময়? জানা নেই উত্তর, শুধু পাঠকের জন্য কথকের একটি ইঙ্গিতবাহী লাইনঃ কেউ হয়ত টুক করে স্নান করে নিল, কারওর লাগল গোটা সমুদ্র।

    খুব কম পরিসরে মিনিমালিস্ট কয়েকটি লাইন আঁকা, দু এক জায়গায় হয়ত পেনসিল ঘষে একটু শেড যেমন সুবর্ণর ব্যাকস্টোরি, কোথাও তাও নেই, শুধু এক দুটো ফুটকি, যেমন রেণুর 'বঁড়শিতে স্মৃতির টুকরো টাকরা'।

    আর শব্দ একটা আলাদা চরিত্র হিসেবে আছে এই লেখায়, অনুঘটকের মত কখনো তা ট্রিগার করে কুশীলবদের পরবর্তী ক্রিয়া বা পাঠকের ইমারসিভ রিডিং এক্সপিরিয়েন্স।

    এ গল্পের শুরু একদম তোমার সিগনেচার স্টাইলে। কিন্তু পরের দিকে ট্রিটমেন্ট বেশ আলাদা, অন্যরকম। চরিত্রদের শূন্যতা পাঠকের মধ্যেও সঞ্চারিত করতে আলাদা জোর লাগে, কিন্তু এ লেখায় তা সম্ভব হয়েছে। এবং ঐ একই সঙ্গে পাঠক রিলেট করতে পারে জিরাফের রেফারেন্স, জলের হিলিং পাওয়ার, রিশেপশানের ঘটনা। প্রতিটি জিনিস যেন হিসেব কষে, দরকার বুঝে সাজানো, উদবৃত্ত বাঁচিয়ে।
  • i | 124.171.235.47 | ০১ আগস্ট ২০২০ ০৪:৫৮95781
  • পড়ার জন্য, জানানোর জন্য ধন্যবাদ সবাইকে। আবারও।
    যদিও টেখকের হাঁড়ির খবর পাঠকের সামনে আসার দরকার নেই, তবু গুরুতে বলাই যায়, বলেও থাকি। এই গল্পটার বীজ মাথায় ঢুকে গিয়েছিল অজান্তেই যখন আমি কলেজ নাকি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ট্রেনে মহিলা কামরায় ঝুলতে ঝুলতে যাই আসি- উকুন, ঝগড়া, হাতাহাতি, পকেটমার, ঝালমুড়ি, পেয়ারা, চুড়ি নেবে গো চুড়ি বালা নেবে গো বালা- এই সবের মধ্যে একদিন সন্ধ্যার দিকে ট্রেন থেমে গিয়েছিল বাগজোলা খালের ওপর- কী হয়েছিল সেদিন বাদুড়ঝোলা মহিলাদের- হনিমুনের গল্প বলছিলেন তাঁরা একে একে-
    নানা গল্প ছিল, আদিরস, হাস্যরস - আমাদের কান খাড়া হয়ে গিয়েছিল- ট্রেন থেমে থাকলেই ভালো এইরকম ভাবছিলাম- যদিও খালের উৎকট গন্ধ ভেসে আসছিল, অন্ধকার নামছিল দ্রুত। একজন মহিলা বলেছিলেন, তাঁর হনিমুনে, সমুদ্রের ধারে বসে থাকতে থাকতে হঠাৎ তাঁর নতুন বর এই আসছি বলে চলে যান, বহুক্ষণ কেটে গেলে তাঁকে খুঁজতে খুঁজতে মহিলা কেঁদে ফেলেন- তাঁকে ফেলে নতুন বর একা একা দোকানে বসে খাচ্ছেন! আর কিছু বলেন নি মহিলা সেই সন্ধ্যায়। ট্রেনও ছেড়ে দিয়েছিল।
    কত বছর কেটে গেছে তারপর, হঠাৎই সেদিন জিরাফ আর পেলিক্যানের ছবি দেখে বাগজোলা খালের ওপর সন্ধ্যে মাথার ভিতর বুড়বুড়ি কেটে ভেসে উঠল আমিও টাইপ করতে বসে গেলাম।
    এই ছিল টেখার বীজ।
    আর বাকি আছে নিজের সমালোচনা। এ' টল্পে অনেকটাই বলে দেওয়া- বাগজোলার সন্ধ্যে আর জিরাফের ছবি গাঁথতে গেলে যতখানি সুতো লাগে , তা সম্পূর্ণই দৃশ্যমান- অর্থাৎ পাঠকের স্পেস কম, বেশ কম -এটাই কি আনন্দবিও ভেবেছেন?

    আরো লিখতে হবে, আরো ভালো লিখতে হবে। চেষ্টা করে যেতে হবে অন্ততঃ।
    যেখানেই প্রকাশিত হোক, হরিদাস পালে এসে আপনাদের পড়াতে পারলে আমার ভালো লাগবে।
  • i | 124.171.235.47 | ০১ আগস্ট ২০২০ ০৫:০০95782
  • আর এই টল্পে বিপন্নতা ছাড়াও আরও একটা অ্যাঙ্গেল পাঠকের আবিষ্কারের জন্য তোলা থাক-
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে প্রতিক্রিয়া দিন