এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • একটা অ-সমাপ্ত গল্প (পর্ব: ২৫ - ২৭)

    Kaushik Ghosh লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২৯ জানুয়ারি ২০১৪ | ১৬০৭ বার পঠিত
  • ২৫।

    অনেকদিন পর রেকর্ড প্লেয়ারটা চলছে। পঙ্কজ মল্লিকের রবীন্দ্র সংগীতের এই রেকর্ডটা কাকা দিয়েছিলেন ছবিকে। এই পিঠে সঘন গহণ রাত্রি গানটা রয়েছে। বড় সুন্দর গেয়েছিলেন গানটা! তখন অবশ্য এ ধরনের গান ছবি শুনতেন না। আজকাল কিন্তু বেশ লাগে রবিবাবুর গান গুলো। রবিবাবুর গানের রেকর্ড উপহার দিলেন রবি কাকা - ভাবনাটা মনে আসতে নিজের অজান্তেই ঠোঁট দুটোতে হাল্কা হাসির ছোঁয়া লাগল।

    সত্যি, রবিকাকার দৌলতে অনেক রকমের গান যেমন শোনা হয়েছে তেমনই অনেক গুণী মানুষের সাথে আলাপও হয়েছে ছবির। পঙ্কজ বাবুর কথাই ধরা যাক না, তাঁর সাথেও তো কাকাই দেখা করিয়েছিলেন! টালিগঞ্জের স্টুডিও পাড়ায় কাকার তখন খুব যাতায়াত। সুরকার রবি রায়কে এক ডাকে সকলেই চেনে। পঙ্কজবাবুকে তো এখনকার ছেলেমেয়েরা গায়ক হিসেবেই চিনল! উনি যে কত বড় অভিনেতা তা সেই প্রথম আলাপের দিনেই জানবার সুযোগ হয়েছিল ছবির। ওনার অভিনীত 'ডাক্তার' ছবিটার প্রথম প্রদর্শনী ছিল সেদিন স্টুডিওতে। কোন বছর সেটা? '৪১ না কি '৪২?না, না, '৪১ ই। পরের বছর তো কলকাতা ভীষণ অশান্ত, ছবির বাড়ির বাইরে যাওয়া একরকম বন্ধই ছিল। স্কুল, বাড়ি আর স্কুল। কখনও সখনও হয়ত মিসেস ও'ব্রায়ান-এর রয়েড স্ট্রীটের বাড়িতে। ওই, কখনও সখনওই।

    ভাবলে অবাক লাগে। সিনেমাটা দেখবার কোন ইচ্ছেই ছিলনা ছবির। বাংলা সিনেমা খুব একটা দেখেনওনি তার আগে। সেদিন সকালে দাদারা নিউ এম্পায়ারে সিনেমা দেখতে যাওয়ার প্ল্যান করছিল - ভার্জিনিয়া ডেল অভিনীত অল উম্যান হ্যাভ সীক্রেটস । ছবিরও যাওয়ার কথা ছিল। হঠাৎ করে রবিকাকা এসে বলেছিলেন, "বিকেলে রেডি থাকিস, এক জায়গায় যাওয়ার আছে!" কথাটা শুধু ছবিকেই বলা। দাদারা খুব একটা মাইন্ড করত না; রবিকাকার ডার্লিঙ বলে কথা! আর ছবিও বিনা বাক্য ব্যয়ে শুনত কাকার কথা।
    তবে ভার্জিনিয়া ডেলের অমন ফাটাফাটি কমেডি ছেড়ে বাংলা সিনেমা দেখতে যাওয়া হবে এটা আগের থেকে জানলে ছবি সেদিন কাকার সাথে যেতে রাজি হতেন কি?

    রবিকাকাও নিশ্চয়ই ব্যাপারটা আঁচ করেই আগে থেকে ছবিকে জানাননি কিছু, গাড়িতে উঠে বলেছিলেন। খানিকটা নিমরাজি হয়েই গেছিলেন ছবি সিনেমাটা দেখতে। ভাগ্যিস গেছিলেন! না গেলে পঙ্কজ বাবুর সাথে কোনদিন হয়ত আলাপই হতনা! আর তা না হলে কোনদিন হয়ত ছবির আলাপ হতনা রবীন্দ্রনাথের গানের সাথেও!

    নাম ভূমিকায় অসাধারন অভিনয় করেছিলেন পঙ্কজ বাবু। সিনেমাটায় এক যায়গায় দেখিয়েছিল ডাক্তারের স্ত্রী সন্তান প্রসব করতে গিয়ে মারা গেলেন আর ঠিক ওই সময়ই ডাক্তার ব্যস্ত ছিলেন অন্য এক প্রসবিনীর জীবন বাঁচাতে।

    দৃশ্যটা দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি ছবি। বয়স তখন অল্প - চোদ্দ কি পনের হবে - বড় অল্পেই কাতর হয়ে পড়তো মন! দৃশ্যটা দেখতে দেখতে কাকার পাশে বসা পঙ্কজ বাবুর দিকে উঁকি মেরে তাকিয়েছিল ছবি। ওনার মুখে তখন খেলে বেড়াচ্ছিল স্মীত হাসি। তখন অবাক হয়েছিলেন এখন এখন ছবি বোঝেন ওই হাসির অর্থ - শিল্পির নিজের সৃষ্টিকে সার্থক হতে দেখার তৃপ্তি ধরা ছিল ওই হাসিটাতে।

    গানটা শেষ হতে পিনটা তুলে রাখলেন ছবি। আজকাল একধরনের প্লেয়ার বেড়িয়েছে যেগুলো ইলেক্ট্রিসিটিতে চলে। তার রেকর্ডকে বলে ক্যাসেট। আকারে বেশ ছোট। গতবার বড়দার ওখানে গিয়ে দেখেছিলেন। গত বছর বড়দার মেয়ে ঝিমলি আমেরিকায় গেল পড়তে। হার্ভার্ডে। ওখান থেকেই এসেছে জিনিসটা। এ দেশে তেমন চালু হয়নি এখনও। কতকিছুই তো নতুন বেরুচ্ছে, আজকাল আর খবর রাখা হয়না কোনো কিছুরই, সব অর্থহীণ মনে হয়। তবে এরই মধ্যে একটা ভালো থাকার রসদ পেয়েছেন ক'দিন হল; খোকনের বিয়ে দিতে হবে। সত্যি! কেমন যেন হঠাৎ করে ঘটতে চলেছে ঘটনাটা। কর্তার সঙ্গে করছিলেন লিপির বিয়ের কথা আর খোকন এসে জানাল চাঁপার দাদারা ওর বিয়ের জন্য তাড়া লাগাচ্ছে। খোকাকে বলেছে, "কমল, তোর আমাদের বোনকে পছন্দ জানি কিন্তু আর মাস ছয়েকের বেশি ওকে আমরা ঘরে ফেলে রাখতে পারব না। তুই তোর বাড়িতে কথা বল।"
    কথাটা শুনে বেশ অবাকই হয়েছিলেন ছবি। কত বয়স হবে চাঁপার? বড় জোর পনের। আজকালকার মেয়েদের এত অল্প বয়সে বিয়ে হয় নাকি! কিন্তু খোকার কাছ থেকে জেনেছিলেন যে চাঁপাদের বাড়ি একটু প্রাচীনপন্থী । ষোলো বছরের মধ্যে ওদের বাড়ির সব মেয়েদেরই বিয়ে হয়ে যায়। আর চাঁপার বেলাতেও সেই নিয়মের ব্যত্যয় হবে না। ছবি বলেছিলেন উনি নিজে গিয়ে নাহয় চাঁপার বড়িতে কথা বলবেন, কিন্তু খোকা বারন করেছিল। বলেছিল, "কোন লাভ নেই মা, ওদের ডিসিশন পাল্টাবে না"।

    খোকনের বাবা অবশ্য একটু আপত্তি তুলেছিলেন, "বড় মাইয়াটার বিয়া না দিয়া খোকার বিয়া দিমু?" কথাটা যে ছবির মনেও আসেনি তা নয়, কিন্তু খোকনের সুখের চাইতে পৃথিবীতে বড় কিছু আজকে আর ছবির কাছে নেই। তাছাড়া চাঁপা মেয়েটিকে খোকার পছন্দ, সব কিছু জেনে শুনে ছেলেটাকে অসুখী করেন কি ভাবে? চাঁপাকে না পেলে খোকা যদি ছবির মতই সারা জীবনের মতন অসুখী রয়ে যায়, তখন কি নিজেকে ক্ষমা করতে পারবেন ছবি? লিপির বিয়ের বয়স পেরিয়ে যায়নি মোটেই। খোকার বিয়ের কয়েকদিন পর থেকে খোঁজ খবর করলে একটা সুপাত্র নিশ্চয়ই পাওয়া যাবে লিপির জন্য!

    চাঁপাদের বাড়ির অবস্থা সচ্ছল। খোকার বিয়েতে তাই নিজেদের সাধ্যের অতিরিক্তই ব্যবস্থা করতে হবে। সামান্য যা কিছু সঞ্চয় আছে উজাড় করতে হবে হয়ত। কি আর করা। বাবাকে নিয়ে আসতে হবে ফুলিয়া থেকে। বরাবরের মতন বাবা আর্থিক সাহায্য করতে চাইবেন আর ছবিকেও তা প্রত্যাখান করতে হবে বরাবরের মতই। বাবা ভাবেন ছবি নিষ্ঠুর; প্রতিশোধস্পৃহা চরিতার্থ করতেই বোধহয় বারেবারে ফিরিয়ে দেন ওনাকে। কথাটা হয়ত পুরোপুরি মিথ্যে নয় আবার পুরোটা সত্যিও নয়।

    বাবাকে কিভাবে বোঝাবেন ছবি! একটা প্রকৃত ভালো মানুষকে স্ত্রী হয়ে কিচ্ছুটি দিতে পারেননি; আর তাই অসম্মানও করতে পারবেননা কোনমতেই।

    ২৬।

    অনেকগুলো চিন্তা এক সাথে কোনদিনই করতে পারেনা বিশ্বনাথ। কিন্তু কপালের ফেরই হবে হয়ত,নইলে করতে হচ্ছে কেন এতগুলো চিন্তা একসাথে?

    জমি সংক্রান্ত কাজে আজ নাদনঘাটে গেছিল ম্যানেজার কাকার সাথে। একটা বাগান নিয়ে ঝামেলা চলছিলই অনেকদিন ধরে, আজ ওখানে গিয়ে মাথায় আগুন ধরে গেল। পাকড়াশিরা গতকাল রাত্রে চৌকিদারকে মারধোর করেছে, বাগানের বেশ কিছু গাছও কেটে দিয়েছে। দলে ভাড়ি ছিল না বলে আজ চুপচাপ চলে আসতে হল ওখান থেকে। আর তা ছাড়া ম্যানেজার অবিনাশ কাকা মাথা ঠান্ডা রাখতে বলেছেন এ জাতীয় পরিস্থিতিতে, তাই চাইলেও এই মূহুর্তে কিছু করা সম্ভব নয়। এরই মধ্যে আজকে আবার শোভাদের বাড়ি একবার যেতে হবে; সুবোধ বাবু একবার ডেকেছেন। কোন দরকার আছে হয়ত।

    মাথাটা এখনও পুরোপুরি ঠান্ডা হয়নি, এমত অবস্থায় সুবোধবাবুর সাথে কথা বলা বা কোন গভীর আলোচনা করা - অসম্ভব না হলেও দূরুহ তো অবশ্যই।

    খাটের ওপর চিৎ হয়ে শুয়ে চোখ বুজল বিশ্বনাথ। শোভাদের বাড়ি যাওয়ার আগে মনটাকে শান্ত করতে হবে। শোভাদের বাড়ি - নিজের মনেই আশ্চর্য হল বিশ্বনাথ। বাড়িটার মালিকানা বিশ্বনাথের বাবার। সুবোধ বাবুরা ভাড়াটে, বহু বছর রয়েছেন। প্রথম প্রথম তাই ওঁনাদের ওখানে যাওয়ার কথা হলে বিশ্বনাথের মনে হত সুবোধ বাবুদের বাড়ি যাচ্ছে, আর আজকাল ওটাকে শোভাদের বাড়ি মনে হয় - নিজের মনের ভেতর থেকেই বেড়িয়ে আসে ভাবনাটা, কোন রকম প্রচেষ্ঠা করতে হয়না। ভালোবাসার জোর কি একেই বলে?

    গুরুজীর বাড়িতে যাওয়ার সূত্রে শোভার কাছাকাছি এসেছে ও। মন দেওয়ার কাজটা শোভাই আগে সেরে রেখেছিল কিন্তু বিশ্বনাথকে মুখ ফুটে কিছু বলেনি; বাচ্চা মেয়ে, লজ্জা পেয়েছে বোধহয়। বিশ্বনাথকেই তাই উদ্যোগী হয়ে কথাটা পাড়তে হয়েছিল। দু এক কথায় ভূমিকা সেরে সোজা সুজি শোভার চোখের দিকে তাকিয়ে বলেছিল - আমিও তোমাকে ভালোবাসি। শোভার শ্যামলা মুখে খেলে গেছিল লজ্জা ব্রীড়া আবেশ আর আনন্দের রামধনু। তা প্রায় মাস খানেকের ওপর হতে চলল ঘটনাটা কিন্তু চোখ বুজলে সেদিনের প্রতিটি মূহুর্ত স্পষ্ট দেখতে, অনুভব করতে পারে বিশ্বনাথ।

    মনটা অনেকটাই শান্ত হয়ে এসেছে। শোভার কথা মনে করলেই আজকাল মনটা একটা অদ্ভূত প্রশান্তিতে ভরে যায়! রাগ বিদ্বেষ মনের মধ্যে বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেনা। তা ছাড়া জমি-জমা নিয়ে এহেন অস্থিরতা ওদের জীবনে নতুন কিছু নয় - আগেও হয়েছে, জমি থাকলে ভবিষ্যতেও হবে। ও নিয়ে খুব একটা অস্থির ও হয়ও না। আসলে নাদনঘাট থেকে ফেরার পরে বাড়িতে ঢুকবার মুখটাতেই ওই হাঘরে পার্টির একটা মিছিল ওদের পথ আটকেছিল। ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরোধীতায় মিছিল। ভিয়েতনামের যুদ্ধ বিশ্বনাথও সমর্থন করে না। কিন্তু মিছিলের লোক গুলোর হাবে ভাবে গা জ্বলে গেছিল ওর। ভাব খানা এমন, যেন ভিয়েতনামের যুদ্ধ বাবুরা নবদ্বীপেই শুধু স্লোগান দিয়ে জিতে নেবেন! "তোমার নাম আমার নাম ভিয়েতনাম ভিয়েতনাম"। বাঞ্চোত!

    মাস কয়েক আগে শাস্ত্রীজী মারা গেলেন, দেশের প্রধান মন্ত্রী। কই তখন তো মিছিল করবার কথা মনে ছিল না!
    নিমক হারামের জাত শালারা! দেশের আভ্যন্তরীণ সমস্যায় এদের আগ্রহ নেই। স্তালিনের পিসির নাত জামাইয়ের দুঃখে এক ঘটি কাঁদতে পারে, কিন্তু নিজের দেশের প্রধান মন্ত্রীর ওরকম আকস্মিক মৃত্যুতেও ওদের কিছু যায় আসে না। এই জন্যই তো কংগ্রেস ওদের নামে ছড়া কেটেছে - "চিনের প্রতীক কাস্তে হাতুড়ি, পাকিস্তানের তারা/ এর পরেও কি বলতে হবে দেশের শত্রু কারা?"

    শাস্ত্রীজীর মৃত্যুটার কোন কিনারা হল না! কেউ কেউ আবার বলছে তাসখন্দে নেতাজী কে নাকি দেখতে পেয়েছিলেন উনি আর তাতেই নাকি হার্ট এটাক হয়েছে। যত্তসব গুজব! একা শাস্ত্রীজীই দেখতে পেলেন নেতাজী কে? বাকিরা কি সব চোখ বুজে ছিল?

    তৈরি হয়ে রাস্তায় বেড়িয়ে এল বিশ্বনাথ। বেলাবেলি ঘুরে আসা যাক সুবোধ বাবুর কাছ থেকে। শোভাদের বাড়ি গেলে হেঁটেই যায় বিশ্বনাথ। পথ চলতে চলতে নিজেকে গুছিয়ে নেয় হয়ত।
    কি এমন গুরুত্ব পূর্ণ কথা? গতকাল গুরুজীর ওখানে শোভাকে দিয়ে খবর পাঠিয়েছিলেন সুবোধ বাবু - একটিবার যদি বিশ্বনাথ আসতে পারে তো খুব ভালো হয়। না যাওয়ার প্রশ্ন ওঠে না, কিন্তু কথাটা কি শোভা কে দিয়ে বলানো যেত না? শোভার দাদার বিয়ে ঠিক হয়েছে, শুনেছে বিশ্বনাথ কিন্তু সে সঙ্ক্রান্ত আলোচনায় বিশ্বনাথের কি ভূমিকা?
    অবশ্য সুবোধ বাবুকে বিশ্বাস নেই! হয়ত গিয়ে শুনবে - এই তো আইস, আইস! ওথেলোর এই জায়গা খান একবার শোন দেহি।।।।

    সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে শোভাদের বাড়ির দড়জায় পৌঁছল বিশ্বনাথ। ভেতরে ঢুকে মাসিমা আর সুবোধ বাবুকে প্রণাম করে চেয়ারে বসল। মন শোভাকে খুঁজলেও চোখ মাসিমা আর সুবোধ বাবুর ওপরেই নিবদ্ধ রাখল।

    মাসিমাই বললেন কথা। "দেখ, কমলের বিয়ের কথা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের তো ঘরের অসুবিধে, তাই ভাবছিলাম কলতলার কাছটায় চাঁপা গাছটাকে কেটে যদি একটা ঘর বানানো যায়। তুমি তোমার বাবাকে একবার একটু বুঝিয়ে বোলোনা, বাবা! অবশ্য উনি যাবেন তোমার বাবার কাছ থেকে অনুমতি নিতে,কিন্তু তুমি নিজে বললে আমরা একটু বল পাই।" একটু হেসে তারপর বললেন, "আরেকটা মজার কথা শুনবে? আমার হবু বউমার নাম ও চাঁপা!"

    মনে মনে হাঁফ ছাড়ল বিশ্বনাথ। সুবোধ বাবু কি জন্য ওকে ডেকেছেন তা নিয়ে মনের ভেতরে এতক্ষণ জল্পনা চলছিল ওর। বলল, "ও নিয়ে আপনারা নিশ্চিন্ত থাকুন, আমি বললে বাবা কোন মতেই আপত্তি করবেন না। তবে আর সব ব্যাপার গুলো নিয়ে মেসোমসাই যদি একবার অনুগ্রহ করে বাবার সাথে কথা বলে নেন...." আর সব ব্যাপার মানে, ঘরটা তৈরির খরচ, বর্ধিত ভাড়া ইত্যাদি। কথা গুলো সরাসরি উচ্চারন করতে সঙ্কোচ হল বিশ্বনাথের।
    হাঁ হাঁ করে উঠলেন সুবোধ বাবু - আরে, সে তো নিশ্চয়ই! তবে তোমার কথাডা শুইনা আমি যে কি আশ্বস্ত হইলাম.... আরে কিরণ-শোভারে কও বিশ্বনথের লিগা চা বানাইতে!

    বাড়িটাতে যে একটা চাঁপা গাছ আছে তাই জানত না বিশ্বনাথ। বাবার সাথে কথা বলবার আগে ঘর বানানোর জায়গাটা একবার তাই দেখে নিতে চাইল ও। সুবোধ বাবু নিজেই আসছিলেন ওর সাথে, কিন্তু নিরস্ত্র করল বিশ্বনাথ।

    কলতলার সামনেটায় খানিকটা জায়গা আছে, চাঁপা গাছটা কাটলে আরো খানিকটা জায়গা বাড়বে। নববিবাহিতের ঘরটার আয়তন নেহাত মন্দ হবে না তা হলে! ফিরে আসার জন্য পেছন ঘুরতেই শোভার বড় দিদি লিপির সাথে চোখা চোখি হল। বিশ্বনাথকে দেখে ঠোঁটে একটা বিষন্ন হাসি টেনে নিল লিপি তারপর পায়ে পায়ে চাঁপা গাছটার তলায় গিয়ে দাঁড়াল। গাছটার কান্ডে হাত বোলাতে বোলাতে যেন নিজের মনেই বলল, "এক চাঁপা আসবে বলে এই চাঁপাকে সরে যেতে হবে, তাই না বিশ্বনাথ দা?"

    ২৭।

    "...আর কত যুদ্ধ দেখবে এই পৃথিবী? চারিদিকে শুধু রক্তের নদী। একটা যুদ্ধ শেষ হলে পরে আরেকটা যুদ্ধ জাঁকিয়ে বসে। গত বছর পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ লাগল, শেষ হতে না হতেই ভিয়েতনাম। যদিও এই যুদ্ধে ভারত লিপ্ত নেই, কিন্তু তবু, যুদ্ধই তো! সময় সময় হয়ত দেশ কাল পাল্টে যায়, কিন্তু সব যুদ্ধেরই এক দস্তুর - রাষ্ট্র কর্তৃক অপর রাষ্ট্রের মানুষদের খুন করবার অবাধ লাইসেন্স প্রদান।

    আর তা ছাড়া পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধের সঙ্গে ভিয়েতনামের যুদ্ধের একটা গুণগত পার্থক্য রয়েছে। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যেটা হয়েছে তাকে যুদ্ধ বলা চলে, কারন এখানে প্রায় সম ক্ষমতাবান দুটো দেশের মধ্যে লড়াই হয়েছে। কিন্তু ভিয়েতনামে যেটা হচ্ছে তা তো স্রেফ হানাদারি! এমন একটা দেশের হানাদারি, যারা কিনা ভিয়েতনামিদের চাইতে লাখো গুণ বেশি শক্তিধর। আর কি নির্লজ্জ সব আক্রমণ!
    সামনা সামনি লড়াইতে না গিয়ে মাইলের পর মাইল শস্য ক্ষেত্র নষ্ট করে দেওয়া হল এরোপ্লেন থেকে রাসায়নিক পদার্থ ছড়িয়ে। শুধু এ বছর মার্চ মাসেই পঞ্চাশ হাজার টন আমেরিকান বোমা পড়েছে ভিয়েতনামে। বলাই বাহুল্য, তাতে প্রাণহানী হয়েছে শয়ে শয়ে অসামরিক মানুষের।

    পুঁজিবাদের সর্বশেষ প্রকাশ হল সাম্রাজ্যবাদ - এর চাইতে খাঁটি কথা আর হয় না। আর সে কথা আমেরিকাও অস্বীকার করে না। ১৯৫৪ সালেই তাদের প্রেসিডেন্ট আইজেনহাওয়ার বলেছে - লেট এসিয়ানস ফাইট এসিয়ানস- এই না হলে সভ্য দেশের সভ্য প্রেসিডেন্ট!"

    এই পর্যন্ত লিখে খাতাটা মুড়ে রাখল অশোক। দাঁড়াচ্ছে না লেখাটা। খবরের কাগজে আর রেডিওতে ভিয়েতনাম যুদ্ধ সম্পর্কে রোজই প্রায় কিছু না কিছু থাকে। কি নির্লজ্জ নৃশংশতা! মাই লাই নামে একটা গ্রামে তো একটাও মানুষ বাঁচেনি! এ শতাব্দীর প্রথমার্ধ যদি দেখে থাকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বীভৎস মুখ, তবে দ্বিতীয়ার্ধে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ মেলছে তার ডাল পালা। অসহায় নিরস্ত্র মানুষদের সুসজ্জিত সৈন্যদল দিয়ে প্রতিদিন শেষ করে দিয়ে কি প্রমাণ করতে চাইছে মার্কিন প্রশাসন?

    তবে অশোক সেলাম জানায় ভিয়েতকং এর সেই সব বীর যোদ্ধাদের, যারা সমানে টক্কর দিয়ে চলেছে নিজেদের চাইতে অস্ত্রবলে বহুলাংশে বলীয়ান বিদেশি হানাদার বাহিনী কে।
    হিসেব বলে, দক্ষিণ ভিয়েতনামে একজন শত্রুকে মারতে আমেরিকার খরচ হয় পঁয়ত্রিশ হাজার ডলার,মানে ভারতীয় মুদ্রায় সাড়ে তিন লক্ষ্য টাকা! এত টাকায় কত উন্নয়ন মূলক কাজ করা যেত! অর্থ ও শক্তির কি বিপুল অপচয়! আসলে মানুষের কাছে যখনই কোনও কিছু অতিরিক্ত হয়ে যায়, তখনই বোধহয় শুরু হয় অপচয়।

    মাথাটা দপদপ করছে। লেখাটায় কিছু কাটাকুটি করে খাতাটা টেবিল থেকে তাকে তুলে রাখল অশোক। পার্টির একটা মিটিঙ আছে আগামীকাল। তার মধ্যে বক্তৃতার একটা খসড়া তৈরি করে ফেলতে হবে,বাবা বলেছে। অন্য কেউ একজন লেখাটা পরিমার্জন করে বলবে মিটিঙে। ওর খুব ইচ্ছে বক্তৃতা দেওয়ার, কিন্তু আরেকটু বড় না হলে তা সম্ভব নয়।

    হাফ ইয়ার্লি পরীক্ষার এখনও দেরী আছে। পড়ার চাপ এখন তাই অপেক্ষাকৃত কম। তবে এ বছর থেকে পড়ার বিষয় গুলো সব পাল্টে গেছে। ক্লাস নাইনে উঠে স্ট্রীম চেজ্ঞ হয়েছে সকলের। ওরা তিন বন্ধু এখন তিনটে আলাদা বিষয় নিয়ে পড়ে। কিরণ আর্টস, গণেশ সায়েন্স আর অশোক কমার্স। অশোকের নিজের অবশ্য ইচ্ছে ছিল আর্টস নিয়ে পড়বার কিন্তু বাবা বলেছে কমার্স নিতে। গণেশটা আজকাল অন্য ক্লাসে বসে, ভারি বাজে ব্যাপার এটা! এক সাথে স্কুলে যাওয়া-আসা করলেও ক্লাসে পাশাপাশি না বসার কারনে সেই আগের মজা গুলো আর হয়না। নতুন ক্লাসে অশোককে একদিনও বাইরে বেড়িয়ে যেতে হয়নি, গণেশ কেও না। কিন্তু সেটা কি গণেশের ভালো লাগে? অশোকের তা মনে হয়না!

    কিরণ টা বরাবরই চুপচাপ। ওর সাথে সেই আগের মতই বিকেল বেলায় দেখা হয় বটে, কিন্তু আজকাল ও শুধু চুপচাপই থাকে তা নয়, কেমন যেন একটু মনমরাও লাগে ওকে। অবশ্য এটা অশোকের বুঝবার ভুলও হতে পারে। কারন, কিরনের এখন চুপচাপ থাকার কোন কারন নেই, সামনেই কমলদা'র মানে কিরনদের দাদার বিয়ে।

    গত সপ্তাহে রতনদা শিবপুর চলে গেল। ইজ্ঞিনিয়ারিং পড়তে। ইস্, কমলদা'র বিয়ের নেমতন্নটা খুব ফস্কালো বেচারার! রতন'দা সিভিল নিয়েছে। রতনদা'র বন্ধু অপুদাও ওই একই কলেজে ভর্তি হয়েছে। বেশ মজা! অপুদা'র অবশ্য মেক্যানিক্যাল, কিন্তু তবু একই কলেজ তো! বাড়ির বাইরে দুই বন্ধু এক সাথে থাকলে মনে একটা ভরসা থাকে।

    গনেশটাকে এখন অঙ্ক দেখিয়ে দেওয়ার কেউ নেই। স্কুলের আর প্রাইভেটের মাস্টাররা আছে বটে,কিন্তু তারা রতনদা'র মতন যত্ন নিয়ে ওকে অঙ্ক কষাবে কি?

    হায়ার সেকেন্ডারি পাশ করবার পর অশোকও কলকাতার কলেজে ভর্তি হবে! ওখানকার কলেজ গুলোতে ছাত্রেরা অনেক বেশি রাজনীতি সচেতন - এই লোভটা ওর আছে ষোলো আনা! গণেশের যেমন ফুটবল, ওর তেমনি রাজনীতি ।

    বইয়ের তাক থেকে "রাশিয়ার চিঠি" নামিয়ে পাতা ওল্টাতে লাগল অশোক। রাশিয়ার কৃষকদের তৈরি সমবায়ীকা, ওখানকার কম্যুন, কৃষি পদ্ধতি পড়তে পড়তে এক এক সময় নিজের দেশের কৃষকদের জন্য বড় খারাপ লাগতে থাকল ওর। সমবায়ীকা দূরে থাক - আজ অবধি এ দেশে চাষিকে জমির মালিকানা টুকু দেওয়া গেল না। তেভাগা আন্দোলনেরও ও বিশ বছর হতে চলল, কিন্তু ওই টুকুই! তার বেশি কিছু এখানকার চাষিরা পেলনা আজও।

    অবশ্য ১৯১৭-র বিপ্লবের আগে রাশিয়াতেও একই অবস্থা ছিল। ওখানকার চাষিরাও তখন মান্ধাতার আমলের হাল দিয়েই কৃষি কাজ করত। অথচ রবীন্দ্রনাথ যখন রাশিয়ায় যান, মানে ১৯৩০ সালে, তখন সেখানকার চাষিরা ট্র্যাকটর ব্যবহার করছে, অপেরা হাউসে গিয়ে তলস্তয়ের রেসারেকশন-এর নাট্যরুপ দেখছে, নারী স্বাধীনতার কথা বলছে। বিপ্লবের মাত্র তের বছরের মধ্যে মানুষের চিন্তনে কি বিশাল পরিবর্তন!
    ভারতবর্ষে বিপ্লবের আশু প্রয়োজনীয়তা আছে, কিন্তু এ পোড়া দেশে কি বিপ্লব হওয়া সম্ভব? কোনোওদিন?

    বইটা পড়তে পড়তে অশোকের একটা কথা মনে হল। রবীন্দ্রনাথকে অনেকে বুর্জুয়া লেখক বলেন। কিন্তু বুর্জুয়াদের পক্ষে কি সোভিয়েত ইউনিয়নের এই বিশাল কর্মকান্ডের নির্যাসকে বোঝা সম্ভব না তাদের গলায় এই কর্মকান্ডের এমন অকুন্ঠ প্রশংসা শোনা যায়? বইটাতে রবীন্দ্রনাথ স্তালিন জামানার রাশিয়ার যে ছবি এঁকেছেন, তাতে তাঁকে আর যাই হোক বুর্জুয়া ভাবতে পারছেনা অশোক।

    তবে বুর্জুয়া যে সর্বদা সামাজিক বা অর্থনৈতিক দিক দিয়েই হতে হবে তার কোন মানে নেই। সৃষ্টি কর্মের গুণগত মানের নিরিখেও কোন মানুষকে বুর্জুয়া আখ্যা দেওয়া যেতেই পারে। একটা লেখা বা ছবি কে আপাত ভাবে যতটা নির্দোষ মনে হয়, সেটাকে কাটা ছেঁড়া করলে তবেই বোঝা সম্ভব যে সেটা প্রগতীশীল না পশ্চাৎপন্থী। এ সব কথা ও পার্টি ক্লাসে শিখেছে।
    তবে রবীন্দ্রনাথের ওপর ছুড়ি চালানোর মতন যোগ্যতা ওর এখনও হয়নি, কোনোওদিন হবেও না। ও জানে।

    ঘড়ির দিকে তাকাল অশোক। সাড়ে এগারোটা বাজে। অন্যদিন অতক্ষনে ও স্কুলে চলে যায়। আজকে স্কুল কামাই করেছে লেখাটাকে শেষ করবে বলে। নীচে মা রান্না করছে, আওয়াজ আসছে ছ্যাঁক ছোঁক। টেবিল থেকে উঠে নিজের খাটটায় এসে শুল অশোক। কড়িকাঠের দিকে চেয়ে সাত পাঁচ ভাবতে বেশ লাগে! ভাবনাগুলো খানিকটা সিনেমার মতন। নিজের ভবিষ্যৎ জীবনের ঘটনা গুলোকে ও যে ভাবে দেখতে চায়, সে গুলো একে একে ওর চোখের সামনে ভেসে উঠতে থাকে এ ভাবে শুয়ে থাকলে।
    কখনও ও দেখে একটা বি-শাল মিছিলের সামনে লাল ঝান্ডা নিয়ে ও এগিয়ে চলেছে - উল্টো দিক থেকে এক দল পুলিশ তেড়ে আসছে লাঠি উঁচিয়ে। লাঠির আঘাতে ও মাটিতে পড়ে গেছে, রক্ত ঝরছে মাথা ফেটে গিয়ে, তবু প্রাণ পণে লাল-পতাকাটাকে এক হাতে তুলে ধরেছে ও, অন্য হাত দিয়ে ঠেকাতে চাইছে লাঠির মার।
    আবার কখনও বা নিজেকে দেখে জলপাই রঙের পোশাক পড়ে ভিয়েতনামের গেরিলাদের সঙ্গে। মুখে অবিন্যস্ত দাড়ি - অনেকটা চে গুয়েভারার মতন। মেশিন গানের গুলিতে জেরবার করে দিচ্ছে বিপ্লবের শত্রুদের আর তার পর ঘাতকের গুলিতে নিজেই লুটিয়ে পড়ছে মাটিতে।

    এ সব ছাড়াও আরও একটা দৃশ্য আজকাল দেখতে পায় অশোক। অল্প কিছুদিন হল, কিন্তু বেশ নিয়মিতই দেখে দৃশ্যটাকে। কোন একটা নদীর ধারে বকুল গাছের তলায় বসে ও বাঁশি বাজাচ্ছে। নদীতে জলের ছলাৎ ছলাৎ শব্দ। ওর পাশে বসে একমনে বাঁশি শুনছে ওরই বয়সী একটা মেয়ে। গায়ে শাড়ি। নদীর হাওয়ায় শাড়ির আঁচল অল্প অল্প উড়ছে। মেয়েটার মুখটা বড় চেনা ওর। এ সব ভাবতে ভাবতেই এক সময় ওর চোখ বুজে আসে ঘুমে।

    আজও এল।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২৯ জানুয়ারি ২০১৪ | ১৬০৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে মতামত দিন