এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • বুদ্ধিমুক্তি আন্দোলনের অগ্রতাপস―ডিরোজিও # দুই

    Ashoke Mukhopadhyay লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১০ আগস্ট ২০১৬ | ১৮২৩ বার পঠিত
  • ।। ৩ ।।
    “Truth is the goal; reason is thy way.” কত সহজেই এই কথাটা বলতে পেরেছিলেন সতের বছরের এক কিশোর শিক্ষক প্রায় তাঁর সমবয়সী ছাত্রদের কাছে। শ্রেণিকক্ষের দরজা বন্ধ করে। অনুচ্চ কণ্ঠে। ১৮২৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি এসে যোগ দিলেন এই কলেজের চতুর্থ শিক্ষক হিসাবে। হিন্দু কলেজে ডিরোজিওর অভিমন্যূ-ভূমিকা এই ভাবেই শুরু হয়েছিল। শুনতে আজ আশ্চর্য লাগলেও দরজা বন্ধ করেই এসব কথা সেদিন বলতে হত। চার বছরের মাথায় এটাই তাঁর বিরুদ্ধে ধর্মীয় মাতব্বরদের একটা বড় অভিযোগ হয়ে উঠ্ববে। তারা দাবি জানাবে দরজা খুলে ক্লাশ নেবার জন্য।
    আসলে এক মহা সংগ্রাম তখন শুরু হয়ে গেছে। দুরকম দরজা—কে কোনটা খোলা রাখবে আর কে অন্য কোনটা বন্ধ রাখবে, তা নিয়েই দ্বন্দ্ব। ক্লাশরুমের দরজা বন্ধ রেখে কিশোর শিক্ষক ডিরোজিও চাইছিলেন কিশোর ছাত্রদের মনের দরজা জানালা সব খুলে দিতে। মাতব্বরদের ইচ্ছা ছিল সম্পূর্ণ অন্যরকম। তারা চায়, শিক্ষকের পড়ানো সত্ত্বেও ছাত্রদের মনের দরজা জানালা সব বন্ধ থাকছে কিনা সেটা খোলা দরজা দিয়ে লক্ষ রাখতে। ইতিহাসের বোধ হয় মাঝে মাঝে এই রকম অদ্ভূত সব সমস্যা নিয়ে রসিকতা করার ইচ্ছা হয়।
    সমস্যা জটিল হয়ে উঠেছিল আরও এই কারণে যে এই তরুণ শিক্ষক তাঁর ছাত্রদের মধ্যে উত্তরোত্তর জনপ্রিয়তা অর্জন করে চলেছিলেন। যে সব ক্লাশে তিনি পড়াতেন না, তার ছাত্ররাও তাঁর বক্তৃতা শুনতে আগ্রহী হয়ে পড়ছিল। কিছু দিনের মধ্যেই অবস্থা এমন দাঁড়াল যে তাঁকে ছুটির পরেও থাকতে হয় কলেজে, আলোচনা করতে হয় ছাত্রদের সঙ্গে, নানা বিষয়ে। ফলে ছাত্ররা বাড়ি ফেরে দেরি করে।
    সমস্যাটা আরও জটিল হয়ে গেল আর একটা অদ্ভূত কারণে। এযাবত হিন্দু কলেজের ছাত্রদের নিয়ে বৃহত্তর সমাজের মুখপাত্রদের খুব একটা মাথাব্যথা ছিল না। ছাত্রদের বার্ষিক পরীক্ষার ফল অথবা তাদের শিক্ষার আয়তন তেমন একটা আহামরি হচ্ছিল না। এখানেও ড্রামন্ডের অনুসরণে বার্ষিক পরীক্ষা উৎসব হত। সেখানে ছাত্ররা কী কী শিখেছে তার এক রকম ডেমো দিত আবৃত্তি নাটক স্বরচিত কবিতা পাঠ ও বক্তৃতার মাধ্যমে। অভিভাবকরাও আসতেন শুনতে এবং দেখতে। সাদামাটা ব্যাপার। বলার মতো কিছু নয়। সেই ১৮১৭ সাল থেকেই চলে আসছে। কিন্তু ১৮২৮ সাল থেকে ঘটনা একেবারে অন্যরকম হয়ে গেল। ছাত্রদের পাঠ বা বক্তৃতার বিষয়বস্তু সম্পূর্ণ পালটে গেল। তারা সামাজিক রাজনৈতিক ধর্মীয় নানা বিষয়ে যুক্তি তর্কের সুরে বলতে শুরু করেছে। ইতিহাসে তাদের বেশ ভালো রকম ব্যুৎপত্তি জন্মেছে। ভূগোল তারা ঠিক ঠিকভাবে ধরতে পারছে। আধুনিক বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় স্বচ্ছন্দে ব্যাখ্যা করছে। পত্রপত্রিকায় তাদের উচ্চ প্রশংসা করছে। সুরেশ চন্দ্র মৈত্র লিখেছেন, “১৮২৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে নতুন ছাত্রগোষ্ঠীর সাক্ষাৎ পাচ্ছি। নতুন পর্ব শুরু হয়ে গেছে। আগামীকালের বামপন্থী সমাজের নেতৃবৃন্দের উদ্ভব ঘটছে।” বলাই বাহুল্য, এই ভবিষ্যত নেতাদের বর্তমান নেতা কে, এই পরিবর্তনের অন্যতম রূপকার কে।
    অভিভাবকরা বাড়িতেও ছাত্রদের মতিগতি দেখে চিন্তায় পড়ে যায়। তাদের কথা শুনে অনেক সময় বুঝতে পারে না। তবে সন্দেহ করে, এরা শাস্ত্রের চিরসত্যতায় আস্থা হারিয়ে ফেলছে। যাজ্ঞবল্ক্য মনু পরাশর রঘুনন্দন মেধাতিথি সব বলে গেছেন, সব সমস্যার সমাধান করে গেছেন—এমনটা আর মানতে চায় না। সাংসারিক নানা রকম আচার অনুষ্ঠান পালনের কথা উঠলেই তারা কী সব আবোল তাবোল যুক্তি করতে শুরু করে দেয়। বামুনের ছেলেরা পৈতে রাখতে চায় না। বাবার সাথে কালীঘাটের মন্দিরে গিয়ে মা কালীকে প্রণাম করে না, বলে, “গুড মর্নিং, ম্যাডাম”। কথাগুলো কানাকানি হয়। পাঁচ কান হতে হতে হিন্দু কলেজের মাতব্বরদের কানেও ওঠে। রাধাকান্ত দেব কৃষ্ণ কমল সেন প্রমুখ কলেজ কর্তৃপক্ষকে বলেন ব্যবস্থা নিতে।
    তাঁদের অভিযোগের তালিকা থেকে বুঝতে পারি ছাত্রদের আচরণের মধ্যে কী ধরনের পরিবর্তন ঘটছিল। মাতব্বররা প্রত্যেক ক্লাশের ছেলেদের কে কোথায় বসবে জাত অনুযায়ী তা বেঞ্চি ধরে ধরে নির্দিষ্ট করে দিলেও তারা যে যার পাশে ইচ্ছামতো বসে ক্লাশ করছে। অর্থাৎ, তারা চোদ্দ পুরুষের জাতপাতের সীমা রেখা অগ্রাহ্য করছে। তাঁরা অভিযোগ করেন, কলেজের ভেতরে কচুরি বিক্রি হচ্ছে, আর ছেলেরা সেই খাবার কিনে একে অপরের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে খাচ্ছে। অস্যার্থ, তারা খাদ্য ও জলস্পর্শের ব্যাপারে ঐতিহ্যগত ছোঁয়াছুঁয়ির আচার-বিচার বিধিনিষেধ মানছে না। ১৮২০-র দশকের নিরিখে এসব যে সাংঘাতিক দুষ্কর্ম তা কি আর বলে দিতে হবে? মাতব্বররা আরও একটা কথা অত্যন্ত সঠিকভাবে বুঝেছিলেন। এই সব ঘটনাই ঘটছে এক বিশেষ ধরনের শিক্ষাদান ও শিক্ষাপ্রাপ্তির ফলে। তাঁরা উঠে পড়ে লাগলেন এই জাতধর্ম নাশকতা শুরুতেই নাশ করতে।
    কুছ পরোয়া নেহি। ১৮২৮ সালে ডিরোজিও তাঁর ছাত্রদের নিয়ে একটি সমিতি গঠন করলেন—অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন। সম্পাদক উমাচরণ বসু; সভাপতি মাস্টারমশাই নিজে। অল্প দিনের মধ্যেই সভা খুব জমে উঠল। ছাত্রদের ভিড় বাড়তে লাগল। তাঁরা নানা বিষয়ে আরও খোলামেলা তর্কবিতর্ক করতে সক্ষম হলেন। ডিরোজিও তাঁদের বললেন, তর্কের জন্য তর্ক কোরো না। সত্য জানবার জন্য তর্ক কর। তুমি এখন যে পক্ষের হয়ে কথা বলছ, বল। কিন্তু চোখ কান খোলা রেখ। যদি দেখ অপর পক্ষের যুক্তিই ঠিক তবে তাই গ্রহণ কর। সভায় নতুন কেউ আলোচনার মাঝখানে এসে পড়লে তাকেও সবাই উৎসাহিত করে কিছু বলার জন্য। অনেক সময় যা নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত হয়েছিল বিতর্ক গড়াতে গড়াতে তার থেকে অন্য প্রসঙ্গ এসে যায়। মুক্ত মন তো! যুক্তিতেও মুক্ত, বিষয়বস্তুতেও মুক্ত। অবাধ মনের মনন চর্চা, খোলা মনে একে অপরের কাছ থেকে নেয় এবং একে অপরকে দেয়। ভারতবাসীর জীবনে এ এক নতুন অভিজ্ঞতা। ভারতীয় মননের এ এক নতুন পথে যাত্রারম্ভ।
    ওরা মুষ্টিমেয়। ঠিক কথা। কিন্তু ওরাই ভবিষ্যতের প্রতিনিধি। ওরাই আগামী দিনে বহু লোককে পথ দেখাবে। যারা সংখ্যাগরিষ্ঠ, তারা হচ্ছে আদিম যুগের আদিম বিশ্বাসের সংরক্ষিত মমি। অনেক দিন ধরে টিকে আছে, আরও কিছু দিনও হয়ত টিকে থাকবে। চোখ পাকাবে, মুখ ভ্যাংচাবে। কিন্তু এত বড় এই পৃথিবীতে কয়েকটি যাদুঘর ছাড়া আর ওদের জন্য শেষ পর্যন্ত বিশেষ কোনো জায়গা থাকবে না।
    জীবন থেকেই নতুন জীবনের জন্ম হয়। মনন থেকেও নতুন মননের জন্ম হতে থাকে। অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন গঠিত হওয়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই আরও কিছু কিছু সভাসমিতির জন্ম হতে থাকে। সমসাময়িক কালে অন্তত সাতটি সমিতির নাম পাওয়া গেছে। প্রায় প্রত্যেকটির সাথেই ডিরোজিওর সম্পর্ক আছে বলে শোনা যায়। হ্যাঁ, এই সমিতিগুলিতে আলোচনা সবই ইংরেজিতে হত। বাঙালি ছাত্ররাও ইংরেজিতেই কথা বলত। কিন্তু প্রেরণাটা যে বহুমুখী তা বুঝতে পারি যখন দেখি, এমনকি বাংলা ভাষায় চিন্তাভাবনা করার জন্যও একটি সভার নাম সমকালে উঠে আসে—বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা। তখন এও বুঝতে পারি, ব্যক্তিস্বাধীনতা, চিন্তার স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, আর সভাসমিতি গঠনের স্বাধীনতা—ইউরোপের বুর্জোয়া বিপ্লবের সময় উত্থিত এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে রূপায়িত দাবিগুলি ভারতের মাটিতেও উর্বর ভূমি খুঁজে বেড়াচ্ছে।
    অন্য নানা সভাসমিতিতে ডিরোজিওর আমন্ত্রণ আসে, বক্তৃতা দেবার জন্য। দর্শন নীতিশাস্ত্র সাহিত্য ও অন্যান্য বিষয়ে। কুড়ি বছর অনুত্তীর্ণ এক যুবকের এই রকম সামাজিক প্রতিষ্ঠা বা গ্রহণীয়তা শুধু আজ নয়, সেদিনকার পরিস্থিতিতেও আমাদের বিস্মিত করে। কারণ, সেকালের কলকাতায়ও এর আর খুব বেশি উদাহরণ দেখতে পাই না।
    প্রথম প্রথম সমিতির সভা কলেজেই বসত। ছুটির পরে কোনো একটা ক্লাশ রুমে। তা নিয়েও আপত্তি এল সেই হুজুরদের থেকে। ক্লাশ শেষ হয়ে গেলেও কেন ছাত্ররা কলেজে পড়ে থাকবে? অবিলম্বে এর বিহিত করতে হবে। অবশেষে একদিন কলেজের অধ্যক্ষ ড: হোরেস হিম্যান উইলসন (১৭৮৬-১৮৬০) সাহেব নোটিশ দেন, ক্লাশের ছুটির পর ছাত্রদের আর কলেজে থাকা চলবে না। বেরিয়ে যেতে হবে। শিক্ষকদের বলেন, ক্লাশ নেবার সময় দরজা খুলে রাখতে।
    সমিতি হলে তার মুখপত্রও হবার কথা। অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন-এর বেলায়ও এর কোনো ব্যত্যয় দেখা গেল না। ডিরোজিওর ছাত্ররা মেতে উঠল ইংরেজিতে একখানা নতুন পত্রিকা প্রকাশের জন্য। নাম ঠিক হল পার্থেনন। নামটা খুব তাৎপর্যপূর্ণ। এমনিতে পার্থেনন হল প্রাচীন গ্রিসের এথেন্স নগর রাজ্যের অধিষ্ঠাতৃ দেবী অ্যাথেনার মন্দির। এটি খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দে নির্মিত হয়েছিল। এখনও এর ভগ্নাবশেষ টিকে আছে। সাধারণভাবে একে ইউরোপীয় বা পশ্চিমী সভ্যতা ও সংস্কৃতির উন্নত পর্যায়ের এক আদি প্রতীক হিসাবে দেখা হয়। এই প্রতীকী অর্থেই তাঁরা নামটা বেছে নিলেন।
    ১৮৩০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথম সংখ্যা বের হল। সাপ্তাহিক বুলেটিন আর ত্রৈমাসিক সঙ্কলন প্রকাশনার পরিকল্পনা নিয়ে। সেই সংখ্যার বিষয় বৈচিত্র্য ছিল এই রকম: ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক নীতি, হিন্দু কুসংস্কার, স্ত্রী শিক্ষা, বিচার ব্যবস্থার ব্যয় বাহুল্য, ইত্যাদি। শিরোনাম দেখেই বোঝা যায়, কাদের এই পত্রিকা অখুশি করতে শুরু করে দিল প্রথম থেকেই। প্রথম আর চতুর্থটি আঘাত করল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন-কর্তাদের সুশাসনের ইগোতে। আর দ্বিতীয় ও তৃতীয়টি শেল বিদ্ধ করল হিন্দু সমাজপতি আর মাতব্বরদের থান-ইট মস্তকে। দুই তরফই সক্রিয় হয়ে উঠল পত্রিকার প্রকাশ বন্ধ করতে। পরের সপ্তাহে দ্বিতীয় সংখ্যা ছাপা হলেও প্রকাশ করতে বা বিলি করতে দেওয়া হল না। কলেজ কর্তৃপক্ষ পার্থেননকে নিষিদ্ধ পত্রিকা ঘোষণা করল। তার সব কপি প্রেস থেকে এনে জব্দ করা হল, আর তারপর হিন্দু উদারতা আর ব্রিটিশ সভ্যতার সম্মিলিত আগুনে তা পুড়িয়ে ফেলা হল। গোটা অপকর্মটি এত নিখুঁতভাবে করা হয়েছিল যে, আজ আর সেই পত্রিকার একটিও কপি কোথাও নেই। কলেজের সংগ্রহশালায়ও নয়। সরকারি মহাফেজখানাতেও কিছু নেই। ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুরা যে কিছু কিছু কাজ বেশ সুসম্পন্ন করতে পারে তার এটি একটি চমৎকার উদাহরণ। তারপর ছাত্রদেরও আরও একবার সাবধান করে দেওয়া হল, তারা যেন আর বাড়াবাড়ি না করে। ব্রিটিশ সওদাগরদের শ্রেণিস্বার্থ অনুগত মুখপত্র ‘জন বুল’ এবং হিন্দু রক্ষণশীলদের বিশ্বস্ত মুখপত্র ‘সমাচার চন্দ্রিকা’ এক সুরে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ডিরোজিয়ানদের এই পত্রিকা প্রয়াসের নিন্দা এবং এর প্রকাশনা বন্ধে সন্তোষ ব্যক্ত করল।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১০ আগস্ট ২০১৬ | ১৮২৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • 0 | 132.176.27.175 (*) | ১১ আগস্ট ২০১৬ ০৯:০১55819
  • পড়লাম। এই পর্বও ভালো হয়েছে। নেক্স্‌ট্‌ পর্বের অপেক্ষায়।
    ডিরোজিয়ান ইয়ং বেঙ্গলদের কাছে নলেজ শুধু 'পাওয়ার' ছিলনা, সেইসাথে ছিল লিবারেশনের উপায়ও।
  • PM | 37.97.119.213 (*) | ১১ আগস্ট ২০১৬ ০৯:১৪55820
  • খুব মোন দিয়ে পড়ছি
  • | 213.132.214.85 (*) | ১১ আগস্ট ২০১৬ ০৯:১৯55821
  • ইয়ে মানে "মন" দিয়ে পড়লে ভালো হতো না ঃ)
  • ashoke mukhopadhyay | 127.194.36.184 (*) | ১৪ আগস্ট ২০১৬ ১০:৫৬55822
  • দুরকম সমস্যা। বাংলায় আমরা "মন"-এর উচ্চারণ করি "মোন" বলেই। আর, তাছাড়া, লেখাটা পড়তে পড়তে কেউ হয়ত ইংরেজিতে moan করার ভাবে উদ্বেলিত হচ্ছেন। সুতরাং ---। আমি পাঠকদের একটা অন্য কথা মনে রাখতে অনুরোধ করব। এক অর্থে এদেশে আমরা যারা মুক্তমন হতে চাইছি, তারা সকলেই কিন্তু কম বেশি ডিরোজিয়ান। পারি বা না পারি, ডিরোজিও-র প্রবর্তিত ঐতিহ্য বহন করতে চাই। সবাইকে ধন্যবাদ!
  • Ranjan Roy | 132.180.17.115 (*) | ১৪ আগস্ট ২০১৬ ১১:০৫55823
  • "এদেশে আমরা যারা মুক্তমন হতে চাইছি, তারা সকলেই কিন্তু কম বেশি ডিরোজিয়ান। পারি বা না পারি, ডিরোজিও-র প্রবর্তিত ঐতিহ্য বহন করতে চাই। "
    --- লাখ কথার এক কথা।
  • Ishan | 2390012.189.892312.13 (*) | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৪৩55825
  • আমার কয়েকটা জিনিস জানার ইচ্ছে আছে। দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু কোথাও পাইনি। জানার জিনিসটা খুব নির্দিষ্টভাবে এইঃ

    ড্রামন্ডের ধর্মতলা একাডেমি, এবং ডিরোজিওর সময়ের হিন্দু কলেজের সিলেবাস কী ছিল? (সাল ধরে সিলেবাসের বিবর্তন জানতে পারলে ভালো হত, সঙ্গে একটু সংস্কৃত কলেজের সিলেবাস জুড়ে দিলেও ভালো হয়)।

    এইটা কেন জানতে চাই সেটাও বলি। উনবিংশ শতকের প্রথমাংশে খোদ ইংল্যান্ডের শিক্ষাব্যবস্থা ছিল ধর্মীয় বাতাবরণে মোড়া। কেমব্রিজ এবং অক্সফোর্ডে 'সেকুলার' জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা একেবারেই হতনা। এই নিয়ে টোরি, হুইগ এবং র‌্যাডিকাল ও চার্টিস্টদের মধ্যে প্রচুর তিক্ত সংঘর্ষের সাক্ষী সে সময়ের বিলেত। লন্ডনের প্রথম সেকুলার বিশ্ববিদ্যাল্য হল ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডন, সেও, মোটামুটি ৩০ এর দশকের আগে (সম্ভবত ৩৬ সালে) প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ওদিকে তারও অন্তত বছর দশেক আগে, একটি বৃটিশ কলোনিতে ১৭ বছরের একজন শিক্ষক সেকুলার চিন্তাভাবনা চালু করে দিচ্ছেন একার উদ্যোগে, এটা একটু অ্যাবসার্ড লাগে। ১৭ বছর বয়স মানে, শিক্ষার্থীদের চেয়ে সামান্যই বড়। সেটা বিপ্লব করার উপযুক্ত বয়স হলেও, গুছিয়ে সিলেবাস বানানোর জন্য উপযুক্ত সময় নয়। ফলে আন্দাজ করার যথেষ্ট কারণ আছে, এই সেকুলার, মুক্তচিন্তক, এবং নাস্তিক বা সংশয়বাদী চিন্তাভাবনার একটা ঘরানা ওই এঁদো কলকাতায় তখন তৈরি হয়েছিল। ডিরোজিও নিরপেক্ষভাবেই। সেটা এল কোথা থেকে?

    ডিরোজিও নিজে জন্মেছিলেন ভারতে। কিন্তু ড্রামন্ড স্কটিশ। ডিরোজিওর মাতাও স্কটিশ। ইংল্যান্ডের বিওঅরীতে স্কটল্যান্ডে মুক্তচিন্তার একটা ঘরানা দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। স্কটরা ফ্রান্সে, বিশেষ করে চিকিৎসাবিদ্যা পড়তে আসতেন। অনেকেই রাজনৈতিকভাবে জ্যাকোবিন এবং বিজ্ঞানগতভাবে ল্যামার্কের কাচাকাছি ছিলেন। ইত্যাদি নানা কারণে এডিনবরা লন্ডনের চেয়ে মুক্তচিন্তায় অনেকটাই এগিয়ে ছিল। খুবই সম্ভব সে ঘরানাটিই কলোনির আবর্জনায় কোনোভাবে পঙ্কজ হয়ে ফুটে উঠেছিল। এটা হওয়া খুবই সম্ভব, কিন্তু পুরোটাই হাইপোথিসিস। ড্রাম্নডের ইশকুলের, হিন্দু কলেজের সিলেবাস কী ছিল, তার সঙ্গে এডিনবরার শিক্ষার কতটা মিল, এইটা খুঁটিয়ে না দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া মুশকিল।

    এই কাজ্টা করেছেন, এরকম কোনো লেখা পড়েছেন? অথবা সিলেবাসগুলো কীভাবে পাওয়া যায় কেউ জানেন?
  • Ashoke Mukhopadhyay | 7845.11.5656.15 (*) | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:৫৯55824
  • দারুণ লাগলো, আরো লিখুন, পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ মতামত দিন