পৃথিবীর ইতিহাসে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে, রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে গণচেতনার উন্মেষ, গণজাগরণ, গণসংগ্রাম কতবার হয়েছে তার সংখ্যা গুনে শেষ করা যাবে না। আবার সহিংস আন্দোলন ছাড়া যে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে বা রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে জয়ী হওয়া যায়নি কোনদিনই তার প্রমাণও হাতে গুনে শেষ করা যাবে না। বরং গান্ধীজির অসহযোগ আন্দোলনের মত অহিংস আন্দোলনের সংখ্যা পৃথিবীর ইতিহাসে সেরকম খুঁজে পাওয়া যায়না বললেই চলে (দক্ষিণ আফ্রিকার কথা বাদ দিয়ে)। ১৭৫৭ সালে পরাধীনতার শুরুর ... ...
বেনারস পর্ব ৪ দুপুরের খাওয়া সেরে একটু বিশ্রাম নিয়ে একটি রিক্সা নিয়ে বেরোন হল। উদ্দেশ্য নৌকাবিহার। একটি রিক্সা নিয়ে পৌঁছলাম অসি ঘাটে। বিকেল হয়ে আসছে তখন। দরাদরি করে একটি নৌকায় গিয়ে বসা হল। নদীতে নানা আকারের নৌকার ভীড়। একে একে পার হয়ে যাচ্ছে এক একটি ঘাট। নতুন করে সংস্কার হওয়া সত্ত্বেও প্রাচীনতা এতটুকুও হারায় নি যেন ! আমার ভিতরের 'আমি' টা যেন বলে উঠল –' আবারও এমনভাবে দেখছ ? কত শতবার এই নদীতে ... ...
ঔরঙ্গজেব জীবনের অধিকাংশ সময় ঘোড়ার পিঠে কাটিয়েছিলেন। উদহারণ দিচ্ছি, ওনাকে কান্দাহার অভিযানে যেতে হয় দুবার। আগ্রায় ওনার বাড়ি থেকে কান্দাহারের দূরত্ব গুগল ম্যাপে পনেরোশো তিপান্ন কিমি। জোস্ গম্মনসের মতে শাহী ফৌজের এভারেজ গতি ছিল দিনে আট কিমি। তার মানে একবার কান্দাহার যেতে ওনার সময় লেগেছিল কমবেশি ছ মাসের বেশি। একবার যাতায়াতেই এক বছর। দুবারে দু বছর। এ ছাড়াও উনি বাপের বাবরের জন্মভূমি উদ্ধারের ... ...
এটা চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের হোম টার্ফ। এখনো কলকেতা মানে হিন্দু কালেজের উচ্চবর্ণের উকিল ব্যারিস্টারি ডাক্তারি মোক্তারির অটুট প্রকল্পনা। সেই ব্যারিস্টার কোম্পানির একাংশ কমিউনিস্ট হয়ে জেলে গেল। খেত মজুর কোথায় যায়? ষাটে অরবে সরবে বাংলা খাওয়া, তেভাগার নেতা চারুবাবু ব্যারিস্টার জমিদারদের বাইরের পার্টি তৈরি করলেন। একটু আগ বাড়িয়ে খেলে হারলেনও। একটা অংশ চারুবাবুর রাজনীতিকে বিহারের প্রাচীন কিসান আন্দোলনের ... ...
- স্যার, চুলটা রং করে দিই? - না, দরকার নেই। - ভালো রং ছিল। - না, থাক।- করেই দেখুন না একবার, মাত্র দেড়শো টাকায় তিন মাসের গ্যারেন্টি। - পকেটে পয়সা নিয়ে বেরোইনি, পরে হবে। - পয়সা পরে দেবেন, আপনি কি আর পালিয়ে যাচ্ছেন! - আরে আমার পাকাচুলও কি আর পালিয়ে যাচ্ছে! পরের বার হবে। সেলুনে গিয়ে চুল কাটার শেষ পর্যায়ে প্রতিবারই এমন প্রস্তাব আসে ভোলাবাবুর কাছে, ভোলাবাবু এটা ওটা বলে এড়িয়ে যান। - দাদা, চুল যে সব সাদা হয়ে ... ...
তুষার ধবল হিমালয় উষ্ণায়নের প্রভাবে হিমশূন্য হলে ভারতের আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনে এক চরম বিপর্যয় নেমে আসবে। হিমালয় থেকে নিঃসৃত জলধারাগুলো হিমবাহ পুষ্ট। ফলে নিত্যবহ। এই সব নদীর জলে পূর্ণতা পেয়েছে ভারতীয় কৃষি। নদীর পলিবাহিত গঙ্গা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার বিস্তীর্ণ প্লাবন সমভূমিকে আশ্রয় করেই গড়ে উঠেছে ভারতের কৃষি অর্থনীতির বনিয়াদ। হিমালয়ের হিমবাহরাজি, যারা যুগ যুগ ধরে ভারতীয় জনজীবনের ... ...
ষোলোশো ছত্তিরিশের প্ৰথম দিক দ্বিতীয় বুন্দেলা বিদ্রোহ দমন অভিযানে সফল নেতৃত্ব দেওয়ার পর বাবার সঙ্গে ওরচা থেকে দাক্ষিণাত্যে আসছেন শাহাজাদা ঔরঙ্গজেব। পথে কত কেল্লা, পাহাড়ে ঘেরা সব আঁকাবাঁকা দুর্গম রাস্তা, অপূর্ব লেক, শ্বাপদ সংকুল অরণ্য পড়েছিল। একবার আগে কখনো দেখা যায়নি এমন আশ্চর্য এক জায়গায় বিশাল লেকের ধারে শাহী তাঁবুর পাল পড়েছে। গান বাজনা শুরু হয়েছে দুপুরের পর থেকে। খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে স্থানীয় ... ...
অনুরোধ ——— সুপ্রিয়া চৌধুরী ——— কে তুমি এসেছো ওগো ! শ্বেত শুভ্র বেশে, আমারে নিয়ে যেতে, কোন সুদূর কবিতার দেশে ! তোমায় নিরখি আমার এ
ফেবুর বিখ্যাত তাত্ত্বিক যাদবদা হঠাৎই কাল বললেন কথা বলবেন। আমি তো অবাক, কারণ এর আগে উনি আমার মুখদর্শন করবেননা বলেছিলেন। সঙ্গত কারণেই। আমি উনিজিকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বিপদ ঠাউরে সেই নিয়ে অনেক বাকতাল্লা দিয়েছিলাম। পরে ভুল বুঝতে পারি, সরি চাইবার চেষ্টাও করি, কিন্তু তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। তারপর থেকে যাদবদার শিক্ষা একলব্যের মতো মুখস্থ করেছি, কিন্তু পরীক্ষা দেবার সুযোগ পাইনি। আজ আবার সুযোগ এসেছে বলে পুরোটা ... ...
গুরুচণ্ডা৯র বিশাল পাথারে দিগদর্শনের নানা উপকরণ থাকলেও আমার মতো আনাড়ী নাবিক গুরুসাগরে দিগভ্রান্ত হতে পারে। তবু কীভাবে প্রথম সেখানে গিয়ে পড়লুম সেই কথা বলি। সময়ের আড়াই বছর আগে সাড়ে পঞ্চান্নয় মে ২০১৬তে কর্মজীবনে ইতি টেনেছি। আমাদের একমাত্র পুত্র - মা ন্যাওটা ছ ফুটিয়া ধেড়ে খোকা তখন মনিপাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ব্যাচেলর অফ ফার্মাসিউটিক্যালস সায়েন্সের ছাত্র। স্নেহময়ী বঙ্গজননীর বক্তব্য, আমরা দুজনে কলকাতায় গিয়ে থেকে ... ...
শহরের একটি মাঝারি স্তরের বেসরকারি স্কুলে কেজি ক্লাসে ভর্তির ফর্ম তোলার লাইনে দাঁড়িয়ে সত্যিই মনে হল এক রঙ্গমঞ্চে পুতুল হয়েই দাঁড়িয়ে আছি। আমায় কেউ গ্যারান্টি দিতে পারবেনা যে কলেজস্ট্রিটের তিনটে স্কুলের কোনও একটিতে আমার ছেলের নাম লটারিতে উঠবেই। অগত্যা কিছু বেসরকারি স্কুলেও ফর্ম তুলতে হচ্ছে, যেগুলিতে বাংলা প্রথম ভাষা হিসেবে পড়ান হয় । সেন্ট জেভিয়ার্সে ওয়েবসাইটেই বড় বড় করে লেখা আছে স্বামী-স্ত্রী একসাথে ইন্টারভিউতে আসতে হবে সব অরিজিনাল ... ...
আজ, এই বিশ্ব স্বীকারোক্তি দিবসে, আমার মনে পড়ছে কুড়ি বছর আগে, আমার (বা গুরুচণ্ডালির) প্রথম করা পাপের কথা। গুরু প্রথম পয়সা খায় মিঃ পাল নামক (পুরো নাম বললাম না, অকারণে নাম নিয়ে কী হবে) এক অনাবাসী বাঙালি ব্যবসায়ীর কাছে। ক্যাশে নয়, কাইন্ডসে। তাঁর সার্ভারের ব্যবসা ছিল, দাতব্য করে একটা সার্ভার গুরুর সাইটের জন্য ব্যবহার করতে দিয়েছিলেন। এইটা আমি প্রায় চেপে দিতে পেরেছিলাম। কিন্তু পুরো থ্রিলারের মতো হঠাৎ করে আমার একটা মেলের অংশবিশেষ ফাঁস হয়ে ... ...
অ্যাম্বুলেন্সের তীব্র শব্দটা বদলে গেল মাইকের চটুল ভোজপুরি গানে। সাথে কেমন একটা ঘোর লাগা অনুভূতি। আসন্নপ্রসবা স্ত্রী-র আর্ত চিৎকার, সদর হাসপাতাল থেকে রেফার হয়ে মেডিকেল কলেজের দিকে ধাবমান অ্যাম্বুলেন্স – সব কিছুই কী তাহলে স্বপ্ন ছিল? গতকাল রাতের হাসপাতালের ঘণ্টা কয়েক হুজ্জুতি, ভাঙচুর, ডাক্তারের কলার ধরে কষিয়ে থাপ্পড়, এমার্জেন্সির টেবিল চেয়ার ভাঙচুর এসবের ঠিক পর দিন কী করে আবার স্বপ্নে আসে সেই হাসপাতাল, ডাক্তার ... ...
সদ্য ভাইরাল হওয়া এক ভিডিও ক্লিপে দেখা গেছে কিভাবে উত্তর প্রদেশের এক শিক্ষিকা ক্লাসের সব ছাত্রকে ডেকে একটি নির্দিষ্ট ছাত্রকে মার খাওয়াচ্ছেন। কি দোষ বাচ্চাটির ? না, সে ধর্মে মুসলিম। কোনো বাচ্চা সঠিক ভাবে তাকে প্রহার না করতে পারলে শিক্ষিকা উৎসাহ যোগাচ্ছেন, আরেক ঘা বসাতে। পাশের সহকর্মীর সাথে হেসে হেসে বলছেন, "এদের" এভাবেই তাড়াতে হয়। ভিডিওটি দেখে শিক্ষিকাটির প্রতি তীব্র ঘৃণা ও আশঙ্কায় শিউরে ... ...
এখন সময় ———— সুপ্রিয়া চৌধুরী ———— মরে গেলে নয়, এখন সময়,- বলো তারে ভালবাসো, পরে বলে কি হবে ? আফসোস্ ছাড়া ? অহংকারের মুখোশ টা আজ নাশো ! মরে গেলে নয়, এখন সময়,- ক্ষমা চাও
ঈশ্বর একা সব যুদ্ধ, দাঙ্গা লাগাতে পারেন নি - তিনি সৃষ্টি করেন হিটলার, তোজো, মুসোলিনি; হ্যারি ও যোসেফ মানবতার কফিন তৈরি করে শত্রু মিত্র নির্বিশেষে সবাই এখন দামোদরে।।
জীবন তরঙ্গের দোলায়: অম্লান সরকার "কি রে তুই কোন প্রতিক্রিয়া দিলিনা এই ব্যাপারে।" "রতিক্রিয়া? নাহ্, ওটা এখন আর হয় না। বয়স হয়ে গেছে। তার ওপর আবার প্রোস্টেট গ্রন্থির সমস্যায় অনেক দিন ধরেই যন্তরটা উত্থান শক্তি রহিত। কাজেই বুঝতেই পারছিস।" কথা হচ্ছিলো ষাটোর্ধ্ব দুই পুরনো বন্ধুর মধ্যে। বরুণ ঘোষাল আর বাদল মৈত্র। এক জমানায় দুজনে কলেজে একসঙ্গে পড়াশোনা করার সঙ্গে সঙ্গে ... ...
গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে একটি সুপরিচিত সর্বভারতীয় ইংরেজি সংবাদপত্রের পাতায় গ্রীন হিউমার বা সবুজ রসিকতা শিরোনামে একটি কার্টুন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। ব্যঙ্গচিত্রীরা তাঁদের চিত্রভাষ্যের মধ্য দিয়ে খুব জটিল কোনো বিষয়কে হালকা চালে প্রকাশ করেন। যে কার্টুন প্রতিবেদনটির কথা দিয়ে কথকতা শুরু করেছি সেই কার্টুন মালা খুব জটিল
ভারত এবং ইণ্ডিয়া দুটোই আমাদের উত্তরাধিকারইমানুল হক১সমাজমাধ্যমে একটা মিম খুব ঘুরছে -- ২০১৪তে ওরা সরকারি প্রকল্পগুলোর নাম বদলে ছিল, ২০১৯-এ বদলায় রাস্তা এবং শহরের নাম, এবার অরা দেশের নামই বদলিয়ে দিতে চায় ২০২৪এর লক্ষ্যে। ২অনেক 'মিথ' দেখা যায় মিথ্যা। ছোটদের বিদ্যালয় পাঠ্য বই লেখানো উচিত সবচেয়ে জ্ঞানী পণ্ডিতদের দিয়ে। কিন্তু আমাদের দেশে হয় উল্টোটা। এবং প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতনক্রম ... ...
আমাদের ওখানে তখন ঘাস গরম ছিল হয়ত। সে ঘাস গরুতে খাবে কী করে, কী করেই বা গুলির আওয়াজ শুনে বোঝা যাবে ঘাসেরা গরম হলই বা কেন। আমাদের ওখানটা তখন সাত রাইফেল দিয়ে সুরক্ষিত রাখা হত আর ছিল সতেরোটা দানা, রাইফেল কয়েল রিকয়েল করে থেমে যাবে আর দানা ভরার জন্য হাত এলে আর দানা পাবে না এমনই রেশনিং। এমনই অবস্থা এ্যামুনিশনের। এ পরিস্থিতির এক পরের কথা হল- যখন দানা থাকে না আর না থাকলে রাইফেলও ... ...