এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • পেত্নীর অতৃপ্ত ভালোবাসা আদায়। ভৌতিক গল্প।

    লেখক শংকর হালদার লেখকের গ্রাহক হোন
    ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ২০১ বার পঠিত
  • পেত্নীর অতৃপ্ত ভালোবাসা আদায়।
     
    লেখক :- শংকর হালদার শৈলবালা।
     
    শ্রেণী :- ভৌতিক গল্প।
     
    ◆ রাতের বার বগির কৃষ্ণনগরের শেষ ট্রেন নৈহাটি স্টেশন দাঁড়িয়ে আছে। মৃত্যুঞ্জয় ট্রেন ধরার জন্য ছুটতে ছুটতে সাত নম্বর বগীর জানলার কাছে গিয়ে ভিতরে ফাঁকা জায়গা আছে কিনা উঁকি মেরে দেখতে থাকে।
     
    ◆ ট্রেনের মধ্যে জানালার পাশে বসা এক মহিলা বলে :- আসুন; এখানে সিট ফাঁকা আছে। বলে ভ্যানিটি ব্যাগ রেখে জায়গা দখল করে।
     
    ◆ মৃত্যুঞ্জয় একবার মুখ ঢাকা বোরকা পরা মহিলার দিকে তাকায় আর মহিলা হাত নেড়ে তাড়াতাড়ি টেনে উঠার জন্য আহ্বান করে।
     
    ◆ ট্রেনের হুইসেল শুনে মৃত্যুঞ্জয় তাড়াতাড়ি উঠে পড়ে আর ট্রেন ধীরে ধীরে গতি বাড়তে থাকে। মৃত্যুঞ্জয় আশা মাত্রেই উক্ত মহিলা তার পাশে বসার জায়গা করে দেয়। মৃত্যুঞ্জয় সিটে বসে চারিদিকে তাকিয়ে ভাবে, ট্রেনের মধ্যে তেমন ভিড় নেই কিন্তু সবকিছু আজ কেমন অদ্ভুত মনে হচ্ছে কেন! ট্রেনের মধ্যে ওঠার পর যাত্রীরা আমার দিকে কেমন যেন করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল। আবার কামরার মধ্যে আলো উজ্জ্বল নয় কেমন যেন আলো-আঁধারি খেলা চলছে। আর বেশিরভাগ মহিলারা বোরকা পড়ে আছে কেন! তাহলে সবাই কি মুসলমান?
     
    ◆ বোরকা পরা মহিলা তার কনুই দিয়ে হালকা খোঁচা দিয়ে বলেন :- এত কি ভাবছেন! আপনি কোথায় যাবেন?
     
    ◆ মৃত্যুঞ্জয় চমকিত হয়ে বলে :- রানাঘাট।
     
    ◆ বোরকা পরা মহিলা বলেন :- আমি পায়রাডাঙ্গা যাব। একসাথে অনেক সময় পর্যন্ত থাকা যাবে কিন্তু চুপচাপ থাকলে কি আর সময় কাটবে?
     
    ◆ মৃত্যুঞ্জয় বলে :- আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ কিন্তু আপনার বেশভূষা দেখে মনে হচ্ছে আপনি মুসলিম আর বোরকা পরা মহিলা গুলো কি আপনার সাথে?
     
    ◆ বোরকা পরা মহিলা বলেন :- আরে মশাই; নারীগণের কোন জাতের ধর্মের সম্প্রদায়ের হয় না, নারী হলো জলের মতো স্বচ্ছ কিন্তু যে পাত্রে রাখবে সেই পাত্রের রং ধারণ করবে।
     নারীগণের একমাত্র ধর্ম হলো তার স্বামী ও সংসারের সবাইকে সেবা করা। আমি এখনো অবিবাহিত আর জাত পাত ধর্মের বহু ঊর্ধ্বে।
     
    ◆ দুজনের মধ্যে কিছু সময় কথাবার্তা বলতে বলতে লজ্জা ভাব কেটে যায়। মন খুলে কথা বলতে থাকে আর অন্যান্য যাত্রীরা কেউ ঘুমিয়ে পড়ে কেউ ঝিমাতে শুরু করেছে।
     
    ◆ কোন এক কথা প্রসঙ্গে বোরকা পরা মহিলা মৃত্যুঞ্জয়ের শরীরের সাথে তার শরীর স্পর্শ করে হাসতে হাসতে বলেন :- আচ্ছা মশাই; আপনি বিয়ে করেছেন?
     
    ◆ মৃত্যুঞ্জয় বলে :- বউ আমার কপালে নেই কিন্তু সংসার আমার পিছু ছাড়ছে না। ছোটবেলায় বাবা-মাকে হারিয়ে মামা বাড়িতেই মানুষ। আর মামার সংসার আমাকে চালাতে হয়।
     
    ◆ বোরকা পরা মহিলা করুণ স্বরে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন :- আপনার বউ কি মারা গিয়েছে?
     
    ◆ মৃত্যুঞ্জয় বলে :- সে এক বিরাট করুণ দুঃখজনক কাহিনী।
     
    ◆ বোরকা পরা মহিলা বলেন :- কি দুর্ঘটনা ঘটেছিল! বলুন শুনতে শুনতে গন্তব্যস্থলে পৌঁছে যাবে।
     
    ◆ মৃত্যুঞ্জয় বলে :- আমার এক বন্ধুর মাধ্যমে বিয়ে ঠিক হয়েছিল কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে তার সাথে বিয়ে হয়নি। বিয়ের আগে তার ছবি দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম ও কয়েকবার ফোনে কথা হয়েছিল।
     
    ◆ বোরকা পরা মহিলা বলেন :- এমনকি ঘটনা ঘটলো বিয়ে ভেঙে গেল।
     
    ◆ মৃত্যুঞ্জয় বলে :- বিয়ের দিনক্ষণ সব ঠিকঠাক হয়ে যায়। আমি বর সেজে বিয়ে করতে গিয়েছিলাম কিন্তু আমার মামা অর্থের ভীষণভাবে পিশাচ। বিয়ের দিন আমার শশুর মশাই কে ডেকে বহু মানুষের মাঝে বলেছিল, বিয়ের আয়োজন দেখে তো আমার ভালো মনে হচ্ছে না। বরযাত্রীদের কাছে আমার মান সম্মান সব ধুলোর সাথে মিশিয়ে দিলেন। আমার আভিজাত্যের কথা দশ গ্রামের লোকে জানে। আমাদের সাথে জোর চুরি করছেন না তো! গয়না গুলো ঠিকঠাক ভাবে দিয়েছেন তো? রুপোর গয়না সোনার জলে ডুবিয়ে আনেননি তো?
     
    ◆ মামা জোর করে বিয়ের কনের শরীর থেকে সব গয়না খুলতে বাধ্য করায়। তারপর সাথে করে নিয়ে আসা স্বর্ণকারের দিয়ে পরীক্ষা করতে থাকে। কিন্তু স্বর্ণকার পরীক্ষা ও ওজন করে বলেন সবকিছুই ঠিক আছে। এই মুহূর্তে আমি একবার প্রতিবাদ করেছিলাম কিন্তু মামা আমাকে ধমক দিয়ে থামিয়ে দেয়।
     
    ◆ আমার শ্বশুর মশাই অপমানিত হয়ে উত্তেজিত হয়ে আমার মামাকে বলেছিলেন, আপনার মত ঠকবাজ জোচ্চোর অভিভাবকের ভাগ্নের সাথে আমার মেয়েকে বিয়ে দেবো না, দরকার হলে মেয়েকে কেটে নদীর জলে ভাসিয়ে দেবো। যে ব্যক্তি বিয়ের কনের শরীর থেকে গয়না খুলে নিতে পারে, সেই পরিবারে আমার মেয়ে কে বিয়ে দিলে কোনদিন শান্তি লাভ করতে পারবে না। তারপর চিৎকার করে বলে উঠে, অবন্তিকা এই ছেলের সাথে তোকে আমি বিয়ে দেবো না। এই পরিবারে গিয়ে কোনদিন নিজে তো শান্তি পাবে না আবার আমাদের শান্তিতে থাকতে দেবেনা।
     
    ◆ আমার কাছে এসে হাত জোড় করে বলেছিলেন, ক্ষমা করে দাও বাবা আর এখান থেকে সবাই চলে যাও। আমি মেয়ে বিয়ে দেব না। তোমার মামার সাথে যৌতুকের চুক্তি অনুসারে সবকিছুই আমি আয়োজন করেছি তারপরও আমাকে চরম অপমান করল।
     
    ◆ বোরকা পরা মহিলা বলেন :- তারপর অসহায় মেয়ে অবন্তিকার কোন কথা না ভেবে কিন্তু যৌতুকের নগদ টাকা ও আশীর্বাদের আংটি সহ অন্যান্য জিনিস ফেরত না দিয়ে অবন্তিকা কে লগ্নভ্রষ্টা করে স্বার্থপরের মত চলে গেলেন। আপনি কাপুরুষের মত মামার বিরুদ্ধে কোন কথা বলার সাহস ছিল না। আপনি তো পুরুষ নামের একজন কলঙ্ক। আর সেই মুহূর্তে বিয়ের লগ্নভ্রষ্টা কনে বাবা বলে আত্মচিৎকার করে ওঠে।
     
    ◆ মৃত্যুঞ্জয় বলে :- কে আপনি? আপনার কণ্ঠস্বর টা আমার বিশেষভাবে পরিচিত মনে হচ্ছে। আর আমার অবন্তিকার ঘটনা আপনি জানলেন কি করে? আপনার মুখটা একবার দয়া করে দেখাবেন।
     
    ◆ বোরকা পরা মহিলা বলেন :- আমার বর্তমান রূপ দেখে আপনি সহ্য করতে পারবেন না। হয়তো ভয় পেয়ে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করবেন। এই কলঙ্কিত মুখ আমি আর কাউকে দেখাতে চাই না।
     
    ◆ মৃত্যুঞ্জয় বলে :- তবুও একবার আপনার চেহারা দেখতে চাই, না হলে আমার মনের সন্দেহ দূর হবে না। আপনি আমার সেই অবন্তিকা নয় তো। অবন্তিকা কে হারিয়ে বিরহ জ্বালা যন্ত্রণা ভোগ করে আজও দুঃখের মাঝে তার স্মৃতি বুকে আগলে বেঁচে আছি।
     
    ◆ বোরকা পরা মহিলা তার মুখের উপর থেকে কাপড় সরিয়ে দিয়ে বলেন :- দেখুন; আপনার সেই অবন্তিকার ছায়ামূর্তি। 
     
    ◆ আর সাথে সাথেই কামরার লাইট গুলো বন্ধ হয়ে যায়। মৃত্যুঞ্জয় অন্ধকার কামরার মধ্যে তাকিয়ে কোন লোকজন দেখতে পায় না। বাইরের পূর্ণিমা রাতে জোছনার আলো আঁধারির মাঝে পেত্নী অবন্তিকার ভয়ংকর রূপ দেখে ভয়ে আতঙ্কে চিৎকার করে ওঠে। আর লাফ দিয়ে উঠে ভুত ভুত বলে পালানোর চেষ্টা করে কিন্তু অবন্তিকা তার হাত ধরে টেনে পাশে নিয়ে বসিয়ে বলে, একদম পালানোর চেষ্টা করবে না। তাহলে কিন্তু মামার মত তোমাকে শেষ করে দেবে।
     
    ◆ মৃত্যুঞ্জয় বলে :- আপনি; অবন্তিকা হতে পারেন না। আমার অবন্তিকা এখনো আমার হৃদয়ের মাঝে বেঁচে আছে, কিন্তু আমার অবন্তিকা মরতে পারেনা।
     
    ◆ অবন্তিকা মুখ ঢেকে দিয়ে চিৎকার করে বলে :- আমার মৃত্যুর জন্য আপনার মামা আর আপনি দায়ী। আমি কাউকে ছাড়বো না। আমি কাউকে ছাড়বো না। তারপর ক্রেদিত হয়ে জানালার বাইরে হাত রেখে ট্রেনের কামরার গায়ে জোরে জোরে আঘাত করতে থাকে আর কামরার ভিতরের ঝুলন্ত পাখা নিকট শব্দ করে মাথার উপর পড়ার উপক্রম আর আকাশ থেকে বাজ পড়ার মতো লাইটের আলোর ঝলকানি হতে থাকে। ট্রেন ঝড়ের গতিতে চলার কারণে কামরা গুলো নড়েচড়ে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হতে থাকে। 
     
    ◆ মৃত্যুঞ্জয় ভয়ে ভয়ে মনে মনে রাম নাম জপ করতে করতে বলে :- তোমার এই তাণ্ডবলীলা বন্ধ করো, আমি আর সহ্য করতে পারছি না। আমি তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি গো কিন্তু আমাকে মেরো না। এক আমাবস্যার অন্ধকার রাতে মামা কে বাঁশঝাড়ের মাথায় নাচিয়ে নাচিয়ে কষ্ট দিয়ে মেরেছিল কিন্তু সেই দৃশ্য আমি এখনো ভুলতে পারিনি। আমাকে মেরো না, আমাকে মেরো না, আমাকে মেরো না।
     
    ◆ অবন্তিকা ভাবে মৃত্যুঞ্জয় ভীষণভাবে ভয় পেয়ে গেছে আর প্যান্ট ভরে প্রস্রাব করে দিয়েছে। তারপর শান্ত হয়ে তাণ্ডব বন্ধ করে দিয়ে অভিমানের সুরে বলে :- ভালবাস না ছাই, তাহলে ঐ ঘটনার পর নিশ্চয়ই আমার খোঁজ খবর নিতে।
     
    ◆ মৃত্যুঞ্জয় বলে :- শয়তান মামা কিন্তু আমাকে বহু দিন গৃহবন্দি করে রেখে ছিলে আর জোর করে বাবার সম্পত্তি আমাকে দিয়ে লিখে নিয়েছে। আমি সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম কিন্তু আজ সেই সুযোগ পেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছি।
     
    ◆ অবন্তিকা নাকে নাকে কথা হাসতে হাসতে বলে :- তোমাকে যখন অনেকদিন পর পেয়েছি, তখন আর ছেড়ে দেবে না। বেঁচে থাকতে তো আর আমাদের মিলন সম্ভব হলো না। এবার তোমাকে আমার কাছে নিয়ে ভূত হয়ে মিলন সম্ভব করব।
     
    ◆ মৃত্যুঞ্জয় বাঁচার জন্য ছটফট করতে থাকে আর অবন্তিকা রূপ পরিবর্তন করে যুবতী নারী রূপ ধারণ করে মৃত্যুঞ্জয় কে জড়িয়ে ধরে আদর করে বলে :- ওগো স্বামী; তুমি ভয় পাচ্ছ কেন! আমি তো তোমার স্ত্রী। তুমি মরে গেলে যে আমার বিধবা বেশ ধারণ করতে হবে। না না, আমি সাদা কাপড় পরা একদম পছন্দ করি না।
     
    ◆ মৃত্যুঞ্জয় বুকে সাহস নিয়ে বলে :- ঠিক আছে, তোমাকে স্ত্রী রূপে মেনে নিলাম কিন্তু তুমি আত্মহত্যা করলে কেন! আমার জন্য আরো কিছুদিন অপেক্ষা করার দরকার ছিল। আমি তোমার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছি।
     
    ◆ অবন্তিকা বলে :- তোমার বুকে মাথা রেখে আমি আজ ভীষণ ভাবে শান্তি পেলাম। বিয়ের দিন বর যাত্রী সহ বিয়ের বর চলে যাওয়ার পর বাবা হার্ট অ্যাটাক করে মারা যায়। তারপর লগ্নভ্রষ্টা মেয়ে কে নিয়ে সমাজের বুকে কত না কিচ্ছা কাহিনী আরও অপমানজনক কথা বার্তা শুরু হয়। যুবক ছেলেরা বিভিন্ন ভাবে উত্তেজিত ও সিলতাহানি করার চেষ্টা করে।
     
    ◆ দুঃখ কষ্টের মাঝে একদিন হঠাৎ করে মা মারা যায় আর ভীষণভাবে একা হয়ে পড়ি। কয়েকটি ছেলের কুস্তাবে সারা না দিয়ে তাদের কে চড় মেরেছিলাম আর সেটাই আমার জীবনের কাল হয়ে দাঁড়ায়। প্রকাশ্যে রাস্তা থেকে আমাকে তুলে নিয়ে এক পুরনো বাগান বাড়িতে নিয়ে যায়।
     
    ◆ তারপর কয়েকজন মিলিত হয়ে কয়েকদিন ধরে নিয়মিত ধর্ষণ করতে থাকে। একদিন সুযোগ বুঝে একজনকে খুন করে ফেলি। তারপর তিনজন মিলিত হয়ে বাগানের একটি আম গাছের ডালে ঝুলিয়ে দিয়ে শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে কয়েক দিন পর আমার মৃত্যু ঘটে।
     
    ◆ মৃত্যুঞ্জয় বলে :- মর্মান্তিক ঘটনা কিন্তু সমাজের বুকে সৎ ও ভালোভাবে বেঁচে থাকার অধিকার তোমাকে দিল না।
     
    ◆ অবন্তিকা বলে :- অপমৃত্যু হওয়ার কারণে আমার শ্রাদ্ধ শান্তি হয়নি কিন্তু গয়া ঘামে গিয়ে আমার নামে পিন্ডদান করে আসবে। যদি হিন্দু ধর্মের শাস্ত্রের কথা ঠিক হয় তাহলে আবার পূর্ণ জন্ম লাভ করবো।
     
    ◆ হঠাৎ করে শান্ত পরিবেশে গাড়ি থেমে যাওয়ার ক্যাচ ক্যাচ শব্দ হয়, আর পাশে থাকা অবন্তীকে দেখতে না পেয়ে অবন্তিকা অবন্তিকা অবন্তিকা বলে চিৎকার করতে থাকে।
     
    ◆ রেলের একজন কর্তব্যরত কর্মী ইলেকট্রিক হারিকেন নিয়ে লাইন পরীক্ষা করার সময় ট্রেনের মধ্যে চিৎকার শুনে কামরার ভিতরের কে ঢুকে বলেন :- আরে, ফাঁকা গাড়িতে এখানে কি করছেন?
     
    ◆ মৃত্যুঞ্জয় বলে :- এই গাড়ি তো কৃষ্ণনগর যাচ্ছে আর আমার অবন্তিকা কোথায় গেল।
     
    ◆ রেল কর্মী উত্তেজিত হয়ে বলে :- শালা মাতাল না পাগল। এটা ট্রেনের কামরা ও গাড়ি মেরামতের জায়গা কিন্তু তিন ঘন্টা ধরে গাড়ি এখানে দাঁড়িয়ে আছে আর বলছে, গাড়ি কৃষ্ণনগর যাচ্ছে। গাড়ির বদলে তোকেই মেরামত করতে হবে।
     
    ◆ আর একজন রেল কর্মী মাতাল বলে :- এইতো গো আমি তোমার অবান্তিকা আমার বুকে আসো।
     
    ◆ প্রথম রেল কর্মী তার হাতের লাঠি উঠিয়ে মৃত্যুঞ্জয়কে কয়েক ঘা বসিয়ে দিয়ে বলেন :- দেখাচ্ছি তোর অবান্তিকা কে , শালা এই গভীর রাতে পাগল মাতালের যত আড্ডা।
     
    ◆ মৃত্যুঞ্জয় ট্রেন থেকে লাফ দিয়ে নেমে পাথরের খোয়ার মধ্যে পড়ে গিয়ে দেহে আঘাত লাগে আর দেহের বিভিন্ন জায়গায় জ্বালা যন্ত্রণা হতে থাকে। দ্রুত গতিতে উঠে দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে অবন্তিকা অবন্তিকা বলে চিৎকার করতে করতে লাইন থেকে নেমে পাশের জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে দৌড়াতে শুরু করে। আর সেই মুহূর্তে দ্রুত গতিতে লালগোলা ট্রেন বেরিয়ে যায়।
     ~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
    রচনাকাল :- ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে।
    দীঘা টু শিয়ালদা ট্রেনের মধ্যে থাকাকালীন সময়ে। 
    ~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
     

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন