পহেলে দর্শনধারী, পিছে গুণবিচারী—এই মত নিয়ে চললে ফসকে যাবে ভূভারতের নানা সেরা খানা। চেহারা উপেক্ষা করিয়া ছাই ঘাঁটাঘাঁটি করিতে পারিলে, পাইলেও পাইতে পারেন রসনার বেমিসাল শিহরণ। যেমন লখনউয়ের ইদ্রিস বিরিয়ানি। বিষাণ বসু ... ...
ডেভিড লিভিংস্টোন। আফ্রিকায় বেপাত্তা। কিংবদন্তি মানুষটির খোঁজে আফ্রিকা পৌঁছেছেন মার্কিন সাংবাদিক হেনরি মর্টন স্ট্যানলে। জাঞ্জিবার থেকে শুরু হল আফ্রিকার গভীরে অভিযান। প্রথম লক্ষ্য বাগামোয়ো শহরে পৌঁছে আটকে গেছে অভিযান। মোদ্দা কথা মাল বওয়ার কুলি জোগাড় আর হচ্ছে না। শেষে লোক পাঠিয়েছেন জাঞ্জিবারের প্রভাবশালী বণিক তারিয়া টোপনের কাছ থেকে সুপারিশ পত্র নিয়ে আসতে। যদি তাতে বাগামোয়ো-র প্রভাবশালীদের নড়ানো যায়। স্ট্যানলের সেই বিখ্যাত সফরনামা ‘হাও আই ফাউন্ড লিভিংস্টোন’। এই প্রথম বাংলায়। তরজমায় স্বাতী রায় ... ...
শরৎ চাটুজ্জের শ্রীকান্ত রেঙ্গুনের রাস্তায়, খুঁজছেন, বাঙালি কিধার হ্যায়? দেখে শেষে ল্যাজ খান, বাঙালিকে চিনে যান। বাঙালির নয়, ছি-ছি, মৎসের ল্যাজা সেটি, হাতে থলি বাজারের, তাতেই প্রমাণ ঢের—বাঙালিকে দুনিয়ায়, মাছ দিয়ে চেনা যায়। এইবার যদি চাও, চিংড়ি-পুলাও তাও রেঁধে ফেল, ভয় কী?, এই নাও রেসিপি, পড়বে না আর ঢিঢি, হেঁশেলে যে হুঁশিয়ার স্বয়ং হাজির ডিডি ... ...
কোনো এক বিশেষ ব্যক্তির নামাঙ্কিত চার শতাধিক বছর প্রাচীন খিচুড়ি—যেমন উদাহরণ আর দ্বিতীয়টি নেই—আসলে কী, সেরহস্যের কিছুটা সমাধান হল। এবার শুরু এ খানা কত প্রাচীন এই মহাখোঁজ। নীলাঞ্জন হাজরা ... ...
প্রতিবন্ধকতা নিয়ে ততক্ষণই মাথা ঘামাব, যতক্ষণ তা সেলেবল, এবং যতক্ষণ তা টোকেনিজমের গন্ডীর ভেতরে থাকে- উৎসবের প্রাঙ্গনে এর চেয়ে বড় বৈষম্য আর কী হতে পারে? যাক্, যেকথা দিয়ে শুরু করেছিলাম, "অন্যরকম পুজো" বা চলতি কথায় নিউ নর্মালের পুজো, অনেক নেই-এর পুজো -এ আমাদের, প্রতিবন্ধী মানুষদের বাৎসরিক অভিজ্ঞতা। ... ...
পঁয়ষট্টি বছর ধরে যার সঙ্গে প্রত্যক্ষ পরিচয় আর ষাট বছর জুড়ে যার সঙ্গে প্রতিদিনের নিবিড়তম সখ্য, প্রায় পঞ্চাশ বছর বিদেশবাসের দূরত্ব সত্ত্বেও যার সঙ্গে সংযোগ থেকে গেছে প্রায় প্রাত্যহিক সম্পর্কের মতো, তার আকস্মিক এই প্রয়াণ কী বিমূঢ়তায় রেখে গেছে আমাকে, আশা করি পাঠকমাত্রেই সেটা অনুমান করতে পারবেন। এই সময়টায় আমার পক্ষে নীরব থাকাও যেমন শক্ত, তেমনই কঠিন কিছু বলাও। তবু সম্পাদকের আগ্রহের কাছে পরাভূত হয়ে কোনোমতে এই সামান্য-কটি কথা লিখতে হলো। পাঠকেরা আমাকে যেন মার্জনা করেন। ... ...
অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত। কেবল সুকবি নন, মহৎ কবি। গভীর খেদ এই যে, বাংলা সাহিত্যের বৃহত্তর পাঠকসমাজ এবং গ্রন্থপ্রকাশকরা মধ্যমানের পক্ষেই তাঁদের রায় দেওয়ায় তাঁর লেখার কপালে যে উপেক্ষা জুটল, তা অবমাননার নামান্তর। লিখছেন কবি গৌতম বসু ... ...
অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত। কেমন ভাবে পাঠ করব আমরা তাঁর কবিতা? সে কবিতা একদিকে যেমন ভুবনায়নের কাউন্টার কালচার তৈরি করছে, তেমনই নিজে হয়ে উঠছে বিশ্বের মাইক্রোকজম। ‘কবিদের সমস্ত জায়গায় একটা সমান্তরাল এবং আদিগন্ত রাখিবন্ধনের ব্যাপার আছে। সেই জায়গাতে আমাকে শনাক্ত করার কাজটা কিন্তু তোমাদেরই করতে হবে,’ এমনই ছিল কবির নিজের অভিপ্রায়। লিখছেন হিন্দোল ভট্টাচার্য ... ...
অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত। সংকীর্ণতার পরিধি অতিক্রম করে কবিতার দুনিয়ায় তিনি বিশ্বনাগরিক। দুঃখী মানুষের মুখ নিরন্তর সঙ্গে রেখে বারবার ফিরে আসতে চেয়েছেন দেশ ও মাটির কাছে। আবার পরিভ্রমণ করেছেন গোটা বিশ্বে। আলোচনায় লেখক রাহুল দাশগুপ্ত ... ...
অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত। তাঁর কোলাজ-নাট্য আলোড়ন তুলেছিল কলকাতায়। সেই সূত্রেই তাঁর সঙ্গে পরিচয়। পরবর্তী চার দশক জুড়ে রয়েছে এক সৃষ্টিমোহিত সম্পর্ক। স্মৃতিচারণে তরজমাকার রাজা মুখোপাধ্যায় ... ...
আমরা এক সচেতন প্রয়াস-এর পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গে বিগত চার বছরে রামনবমী উত্তর পর্বে সাম্প্রদায়িক হিংসার স্বরূপ বুঝতে বিভিন্ন জনপদে তথ্যায়ন করা হচ্ছে। ২০১৮-২০২০ এই তিন বছর আমরা উত্তর ২৪ পরগণা জেলার ভাটপাড়ায় ক্ষেত্র গবেষণা চালিয়েছি, ইতিমধ্যে তার প্রতিবেদন প্রকাশিত। সেই ধারাবাহিকতায় তেলেনিপাড়া হোল দ্বিতীয় প্রতিবেদন। ... ...
অমলকান্তি সব শুনে বলে উঠল, “আমি শুধু একটা কথাই বলব, কাজের সঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে এবার থেকে বাবাকে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে, সার্টিফিকেট দেওয়ার মতো কাজ। তিনি প্রাজ্ঞ, মহৎ, দূরদর্শী ও বিচক্ষণ, গোটা দেশ একথা জানে। তিনি যে এই ধরনের হঠকারিতা করতে পারেন না, সেকথাও সবার জানা। তিনি এখন অন্যের ওপরে নির্ভরশীল। কিন্তু সেই নির্ভরতা যেন তাঁর পক্ষে আশঙ্কাজনক না হয়ে ওঠে, সেটা আমাদের সবাইকেই দেখতে হবে...” ... ...
আমি গেছি দূর মফঃস্বলে চাকরি করতে। তখন যা দিন, মোবাইল ফোন কেন সেই মফঃস্বলে ইলেকট্রিকের আলো ছিল না, পোস্ট অফিস ছিল না। চিঠি ফেলতে ভিন গাঁয়ে যেতে হত। চিঠি দিলে একমাস আগে কলকাতা পৌঁছত না। বাস থেকে নেমে এক ঘন্টা পঁয়তাল্লিশ মিনিট হাঁটতে হত অফিস মানে হল্কা ক্যাম্পে পৌঁছতে, এমনই সে জায়গা। ছোটনাগপুরের মালভূমির লেজা সেই অঞ্চল। তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্রের একটি কন্যা। বয়স তার আড়াই তিন। সে তার ঠাকমাকে বলল, ছেলেধরা নিয়ে গেছে বাবুজিকাকাকে। হারিয়ে গেছে, আর ফিরবে না। শিশু যা শোনে তাই বলে। তাকে যা বলে ভয় দেখান হয়, সেও তাই বলে ভয় দেখায় ঠাকমাকে। মা তখন পিতামহী। মায়ের ঘুম আসে না। ছুটিতে বাড়ি এলে জিজ্ঞেস করে মা রাধারানি, কী খাই, কেমন জায়গা। ডাল আলু সেদ্ধ আর কুঁদরি পোস্ত ? মাছ হয় না? মাংস ? সকাল বিকেল মুড়ি, কেন পরোটা লুচি করে দিতে পারে না ? জানেই না মা ওসব। আমাদের দেশটা আসলে খুব গরিব। গ্রামটা আরো গরিব। শুনতে শুনতে মা চুপ। বুঝতে চাইছিলেন দেশটাকে আমার চোখ দিয়ে। ধরা গলায় বললেন, তুই বরং চাকরি ছেড়ে দিয়ে আয়, অন্য কিছু দেখ। না, চাকরি আমার কাছে আশীর্বাদ হয়ে এসেছে, দেশটাকে আমি চিনতে পারছি দিনে দিনে। মা চুপ করে থাকলেন, অবশেষে বললেন, দেশ সব জায়গা থেকে চেনা যায়। জমি মাটি মানুষ না চিনলে বড় হওয়া যায় না। মা বলল, বড় হবি তুই ? কী করে, প্রমোশন কবে হবে ? প্রমোশন না মা, লিখতে চাই, গল্প লিখছি, শুনবে? আমি কী বুঝব, কিন্তু তুই যদি নিজে বুঝিস হচ্ছে, তবে ছাড়বিনে, ধরে রাখবি, ছাড়বিনে একদম। মন্ত্র পেয়ে গিয়েছিলাম। ... ...
আমি খেজুর চাচার তাঁতঘর পাড় হয়ে থানার ঘাটের দিকে হাঁটা শুরু করি। তাঁতঘরে একজন দু'জন তাঁতী এরইমধ্যে চলে এসেছে। মাকুরের খটাস খটাস শব্দ সকালের বাতাসে কেমন উদ্দেশ্যহীনভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। আমি মনিপিসির জন্য আর দেরী করি না। দ্রুত হাঁটতে থাকি থানার ঘাটের দিকে, মনিপিসিটা কিচ্ছু বোঝে না। ডলি ফুপুদের বাড়ি থেকে গন্ধরাজ ফুল নিতে হবে তো আমার। কিন্তু থানা ঘাটের মোড় আসতেই মনিপিসি গলা চড়ায়, মনি ওদিকে না, আগে কলমি ফুল নিয়ে আসি চল্। আমি চোখে প্রশ্ন নিয়ে তাকাই। উত্তরে শুধু মনিপিসিকে অনুসরণ করার ইঙ্গিত পাই। আমি পায়ে পায়ে থানা ঘাটের ঠিক পাড়ে এসে দাঁড়াই। ওটা নদী নাকী পুকুর আমি ঠিক বুঝতে পারি না। ... ...
সবচেয়ে আকর্ষণীয় ইভেন্ট স্থানীয় মহিলাদের বেকিং কম্পিটিশন। তা নিউজিল্যাণ্ড বেকিং এর সবচেয়ে তুখোড় উদাহরণ পাভলোভা আর পাই। আমাদের যেমন রোল, পাটিসাপটা, সিঙারা, যাকে সাদা বাংলায় পথের খাবার বা স্ট্রীট ফুড বলা যেতে পারে, নিউজিল্যাণ্ডের স্ট্রীট ফুড বলতে যদি কিছুকে নির্দেশ করতে হয়, সে হবে পাই | যে কোন মাংস (বীফ, পর্ক, ল্যাম্ব, মুরগী, মাছ, মায় মেটে) এবং শাকসবজি আর মিশিয়ে রান্না করে পাইয়ের খোলের মধ্যে ভরে দিন; তারপর তার ওপরে চীজ কুরিয়ে বা কেটে পরতে পরতে রাখুন, এবার পাইয়ের ময়দার খোলের “ঢাকনা” বন্ধ করে দিন, বন্ধ করার পর ২০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে ৩০ মিনিট রেখে বেক করুন | পাই তৈরী। ... ...
১৯৭৫। বাঁকুড়ার ছোট্ট মফস্সল শহর বিষ্ণুপুর থেকে বিশ্বভ্রণে বেরতে চলেছেন দুই তরুণ। এক জন হাল ছাড়েন কিছু পরেই। অন্যজন চলতে থাকেন — ১৭ বছর। ৩ লক্ষ ৮৪ হাজার কিলোমিটার। ১৫৪ টি দেশ। আজও এ কীর্তিতে তিনি অদ্বিতীয়। এই প্রথম দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে সে পরমাশ্চর্য সফরের অনুপুঙ্খ কাহিনি শোনাচ্ছেন জয় মণ্ডল। আলাপে নীলাঞ্জন হাজরা। এ পর্বে অর্থ সংগ্রহের কঠিন পরিশ্রমের কাহিনি। ... ...
ডেভিড লিভিংস্টোন। আফ্রিকায় বেপাত্তা। কিংবদন্তি মানুষটির খোঁজে আফ্রিকা পৌঁছেছেন মার্কিন সাংবাদিক হেনরি মর্টন স্ট্যানলে। জাঞ্জিবার থেকে শুরু হল আফ্রিকার গভীরে অভিযান। প্রথম লক্ষ্য বাগামোয়ো নামের একটি শহরে পৌঁছোনো। সে শহরে পৌঁছে পাক্কা পনেরো দিন বসে আছেন অভিযানের জন্য মাল বওয়ার কুলি জোগাড়ের চেষ্টায়। স্ট্যানলের সেই বিখ্যাত সফরনামা ‘হাও আই ফাউন্ড লিভিংস্টোন’। এই প্রথম বাংলায়। তরজমায় স্বাতী রায়। ... ...
বাংলা রন্ধনশিল্পের যুগপুরুষ বিপ্রদাস মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে ‘পরিমিত’ লঙ্কা নিয়ে সুপ্রাচীন খিচুড়ি প্রবেশ করল বঙ্গীয় রেনেসাঁস-এর যুগে। কিন্তু বঙ্গীয় রেনেসাঁসের কালে রসনা-বিলাসের শ্রেষ্ঠ ফসলে নেই জাহাঙ্গিরি খিচুড়ি বলে কিচ্ছুটি। ঊনবিংশ শতকের শেষে ডুব মেরে একশো বছর পরে এক বঙ্গীয় জমিদারি হেঁশেল ফের ভেসে উঠল সেলিম বাদশার নামাঙ্কিত এই আশ্চর্য খানা। নীলাঞ্জন হাজরা ... ...