সিনে নস্টাল ... ...
আমি আমার ছেলের শরীরে সুখী। খুশি কিনা আজও ভাবিনা। ছেলে হয়ে জন্মানোর সুবিধা ভোগ করতে করতে অভ্যেস হয়ে গেছে। মনে মনে কখনও কখনও নিজেকে নারী ভাবলেও ছেলের শরীরটার পরিবর্তন আমি চাইনি কখনও । মেয়েদের "মত" হওয়া আর মেয়ে হওয়া এক না। আমার সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গের খামতি, অনেক ত্রুটিবিচ্যুতি থাকলেও আমি তা নিয়ে ভাল আছি। আমি আমার জন্মগত লিঙ্গচিহ্ন পরিবর্তনের কথা আজও ভাবিনা। অথচ হ্যাঁ একথাও সত্যি আমিও মনে মনে নিজেকে মেয়ে ভাবতেই ভালবাসি, তথাকথিত হেটারোনর্ম্যটিভ মানুষদের মতই বিছানা ও জীবনে আমার পুরুষ সঙ্গীর জন্য তার তথাকথিত স্ত্রী হয়ে থাকতে চাই। তারপরেও আমি চাইনা আমার স্তন নারীর মত হোক, বা আমার প্রশস্ত যোনি পথ থাকুক। শাড়ী আমার প্রিয় পোষাক আবার তার জন্য দাড়িও থাকবেনা এ ভাবনা আমার নেই। চিরকাল মনে ভেবে এসেছি পোষাক আমার পরিচয় না। যে গয়না আজ পড়লে লোকে হাসে, তাইই তো দেখি মন্দিরের দেবতার গায়ে। তবে কেন এ সামাজিক দ্বিচারিতা আজও বুঝিনা ... ...
ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও সিপিএম নেতা মানিক সরকার যদিও প্রচারে এসে তাঁর বক্তব্যে বার বার সাবধান করেছেন যে, বিজেপির ক্ষমতায় আসার মারাত্মক ভুল যেন না করা হয়। কারণ, ত্রিপুরার মানুষ এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন যে, বিজেপি ক্ষমতায় বসলে মানুষের কি পরিমান সর্বনাশ হয়। অমর্ত্য সেন সহ বহু বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, সমাজবিজ্ঞানী ও রাজনৈতিক অভিজ্ঞ পন্ডিত মানুষেরা সবাই বিজেপিকে প্রতিহত করাই প্রধান কর্তব্য বলে বার বার উল্লেখ করেছেন। কিন্তু ভবি যে ভুলবার নয় এবং চোরের সাক্ষী মাতালের মতো জুটে গেল রাজ্য কংগ্রেস নেতৃত্ব। ... ...
আমার ছোট বেলা থেকে বড় হওয়ার মধ্যেও বেশ কিছুটা মেয়েলিপনা ছিল। একটা বয়স পর্যন্ত সেগুলো নিয়ে বাড়ীর লোকে প্যাম্পার করলেও বড় হওয়ার সাথে সাথে নিজের সাজগোজের ইচ্ছেটা মনের মাঝেই লুকিয়ে ছিল। রণ র সঙ্গে সম্পর্কের কারণে সেটা আরও চাপা পড়ে গেছিল। আসলে বিছানায় নারীত্বকে নিয়ে আদিখ্যেতা করলেও বাইরে যে সেটা করা যায় না। তারপরেও মেয়েলি পুরুষের সঙ্গে চলাফেরায় যদি নিজের সম্পর্কে লোকে কিছু বলে! যদি গোপন কথা গোপন না থাকে। নিজেকে তো মেয়ে মনে করে মেয়েলি হতে চাইতাম না। সেবার চন্দননগর থেকে বাড়ী ফেরার সময় ছলবলে কয়েকটা বাচ্চার সাথে আলাপ হল। এতদিন দূর থেকে দেখলেও সামনাসামনি আড্ডা দিতে দিতে একসঙ্গে ফিরলাম সেদিন। একসাথে ফিরতে গিয়ে আরও একটু জ্ঞান অর্জন হল। বুঝলাম আসলে কতি মানে মেয়েলি পুরুষ। এটা উল্টি ভাষা সে ভাষায় আরও কিছু বিশেষ শব্দ যোগ হল আমার ঝুলিতে, সবগুলো শব্দই যৌনতায় মাখামাখি। কিন্তু সাহিত্যের ছাত্তর হয়েও এমন ভাষার কথা কোনদিনও শুনিনি। ভাবলাম হবে হয়তো কোনও আঞ্চলিক ভাষা। ওরা আমাকেও "কতি" বলতেই রিয়্যাক্ট করে উঠলাম, "আমি কতি নয়"। তখনও জানতাম না এই মানুষ গুলোই একদিন আমার ভবিষ্যতের হাসিকান্নার সাথী হতে চলেছে। ... ...
গত পঞ্চায়েৎ নির্বাচনে স্বৈরাচারী কাজকর্মের চূড়ায় পৌঁছে গেছিলো শাসকদল হিসাবে তৃণমূল। বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েৎ-এর কদর্য ভাবনায় বিরোধীদের মনোনয়ন না দিতে দেওয়া থেকে বিরোধী সন্দেহে মানুষকে ভোট দিতে না দেওয়া, ছাপ্পাভোট, বুথ দখল এইসব কাজের ফলে সাধারণ মানুষের মনে ক্ষোভ জমে উঠেছিলো। সেই সাথে আমফান ত্রান ও তার আগেকার নানান দুর্নীতি তো ছিলোই। কাজেই প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া ছিলোই তা নিয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু পাশাপাশি অন্য অনেক কাজের ফলে গ্রামীণ মানুষের কাছে তৃণমূলের গ্রহনযোগ্যতাও ছিলো সন্দেহাতীত। সেগুলো নিয়ে পরে আলোচনা করবো। ... ...
দুর্গোপূজো শেষ, বিজয়াদশমীর বিসর্জন সবে শুরু। বিকেল পাঁচটা নাগাদ অন্ধকার ঘনিয়ে আসার সময় দূর থেকে কোথাও অবাঙালী পাড়ায় রাবণ জ্বলছে, বাজি পুড়ছে। তার দূরাগত গুরুগুরু ধ্বনি মিলিয়ে যাবার সঙ্গে সঙ্গে প্রায় ঘড়ি ধরে দরজায় কড়া নড়ে উঠত। বাচ্চারা টের পেতাম ঢাকুরিয়া থেকে দুই জোড়া পিসিমা-পিসেমশায়রা এসেছেন! যাঁদের পদবি ছিল মজুমদার, বাঙাল উচ্চারণে মন্দার!দরজা খুলতেই ধোপদুরস্ত ধুতিপাঞ্জাবি পরা বিপুলবপু... ... ...
এতো শুধু বেড়াতে যাওয়া নয়, মনের মধ্যে কুড়কুড়িও। অনেকটা সময় বিপ্রদাসকে নিজের মত করে পাওয়া, অনেকরকম ভাবনা, উত্তেজনাও। আমার কাছে ডায়মন্ড হারবার বা বকখালি মানেই তখন বইয়ে পড়া জগত, "সপ্তপদী" সিনেমার এই পথ যদি না শেষ হয়। রাস্তায় যেতে যেতে অনর্গল বকবক। কথায় কথায় বেড়িয়ে গেল আমি সাঁতার জানিনা। শুরু হল স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বিপ্রদাসের ভয় দেখানো। বকখালি যেতে হলে পার হতে হয় হাতানিয়া দোয়ানিয়া নদী, আর সেটা নাকি পার হতে হয় ডিঙি নৌকাতে। এ নদীতে কামঠের প্রকোপ অনেক বেশি। যদিও কার্যক্ষেত্রে দেখলাম নদীটা অত চওড়া না তবে গভীরতা বেশি। আর ডিঙি নৌকা না সাধারণ দাঁড় টানা নৌকায় পারাপার। যদিও ভেসেলে করে বাস বা গাড়ী সমেত পার হওয়া যায়। তবে তার নির্ধারিত সময় আমরা অনেক আগেই পেরিয়ে গেছি। এরপর আঁধার নামতেই শুরু হল লোডশেডিং, গ্রাম্য রাস্তায় সাপখোপ আর তেনাদের গল্প। এ যেন নতুন করে ইন্দ্রনাথের সাথে শ্রীকান্তর অ্যডভেঞ্চারে যাওয়া ... ...
তিনি বুঝতে পারেন শেষ হাসিটা পর্দা থেকে বেরিয়ে, তাঁর মাথার ওপর দিয়ে গিয়ে ব্যালকনি দিয়ে বেরিয়ে যায়। সুবিনয়ের মনে হয় শহরের সমস্ত বাড়ির জানলা, ব্যালকনি দিয়ে হাসিরা বেরিয়ে আসছে। শেষ হাসি। ... ...
ফাদার্স ডে ইস্পেশাল ... ...
এখন পর্য্যন্ত যা নমুনা দেখা গেছে তাতে মনে হচ্ছে ছোটে পালোয়ানের বংশটি বেশ খানদানি। ওর প্রপিতামহের নাম পর্য্যন্ত মনে আছে! আর সমস্ত খানদানি বংশের ছেলেদের মত ও নিজের পরিবারের গৌরবগাথা শোনাতে ভালবাসে। কখনও কখনও কুস্তির আখড়ায় সাথিদের কিসসা শোনাতে থাকেঃ ... ...
রাতের জঙ্গলে বন-ফায়ারের আয়োজন হয়েছে; কাবাব ঝলসে উঠছে সেই আগুনে, ফটাফট কাঠ ফাটছে। আগুন ঘিরে চেয়ারে গোল হয়ে বসে আছে মাঝবয়সী বন্ধুরা, হাতে হুইস্কির গ্লাস। এক বন্ধু বলছে, "একবার একজন লোক আরেকজনকে জিজ্ঞেস করলো, 'জঙ্গলে যাচ্ছ, যদি পথে বাঘ এসে যায়, কী করবে?'" ... ...
ইতিহাস বলে, অতিমারী মানুষকে বাধ্য করেছে অতীত থেকে নিজেকে ছিন্ন করে নতুনভাবে জগৎকে ভাবতে। এটিও তার ব্যতিক্রম নয়। এই প্যান্ডেমিক একটি পোর্টাল, একটি প্রবেশপথ -- এক পৃথিবী ছেড়ে অন্য পৃথিবীতে যাওয়ার। ... ...
ভোজনরসিক বাঙালি ... ...
মানুষের চোখ যে এত সুন্দর তা এই অতিমারী না হলে হয়তো জানতেই পারতাম না। মহিলা, পুরুষ, শিশু, কিশোর, বৃদ্ধ - সবার চোখ দৃশ্যমান। নাকের নিচ থেকে ঢাকা মুখোশে, মাথা আর কপালও অনেকেরই টুপির নিচে চলে গেছে। বাজারে ঢোকার মুখের রাস্তায় পাঁচটা মিনিট দাঁড়িয়ে যান, দেখুন আশপাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া মানুষের চোখ। কারও চোখ যামিনী রায়ের ক্যানভাসের মত, কারোর আবার রবি ঠাকুরের কালোহরিণ। কারও চোখে সরু কাজলের টান, কারোর চোখের উজ্জ্বলতা আবার চশমার ভিতর দিয়েও স্পষ্ট। কারও চোখ আবার অন্য গল্পও বলে। ... ...
একদিন গঙ্গার ঘাটে বসে বসে অনেক ভাবলাম, মনে হল, আচ্ছা ছোটবেলা থেকে শেখা মুল্যবোধ আর সংস্কারের বিসর্জনও তো আত্মহত্যারই নামান্তর। তাহলে আর সতীত্বের সংস্কারে নিজেকে বেঁধে, বেঁচে থেকে কি লাভ! তাই একগামিতা-সতীত্ব-সংস্কার বিসর্জন দিয়ে শুরু করলাম সেক্স ওয়ার্ক। ম্যাসাজ পার্লার, টয়লেট, হাইওয়ে যা এতদিন দূরে ছিল সেই সব জায়গায় যাওয়াও শুরু হল আমার। ভাষা ভাষা ধারণা ছিল "বহুজনের সাথে সেক্স করলে এডস হয় আর এডস হলে মানুষ মরে যায়।' আর তাই এই সহজ ও পেইনলেস আত্মহত্যার এই রাস্তাই বেছে নিয়েছিলাম সেদিন।তখনও এত ম্যাসাজপার্লারের ছড়াছড়ি কোলকাতা শহরে হয়নি। দক্ষিণ কোলকাতার সদ্যগজানো সেসব পার্লারে পয়সা ওয়ালা অভিজাত লোকেদের আসর।যদিও আজন্মলালিত সংস্কার বিসর্জন দেব বললেই দেওয়া যায় না। আর তাই একদুদিন যেতে না যেতেই ম্যাসাজ পার্লারের ম্যাসিওর কাম পুরুষ যৌনকর্মী হওয়া মোটেই শান্তি দিচ্ছিল না আমাকে। ... ...
গত শতাব্দীর শেষভাগ থেকে লাতিন আমেরিকায় বিভিন্ন দেশে বামপন্থী নানা দলের অগ্রগতি এবং অনেক ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা লাভ গোটা পৃথিবীর বামপন্থার আগ্রহের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। খুব সম্প্রতি পেরু এবং চিলিতেও এরকম কিছু অগ্রগতি লক্ষ করা গেছে । সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তি এবং পূর্ব ইওরোপের সমাজতন্ত্রের বিলুপ্তির পর এই দেশগুলিই হয়ে উঠেছে বামপন্থী এবং প্রগতিশীলদের ভরসাস্থল। কিন্তু এটা মনে রাখতে হবে যে রাষ্ট্র পরিচালনার বিংশ শতকীয় সমাজতান্ত্রিক মডেল অর্থাৎ তথাকথিত সর্বহারার একনায়কত্ব এদের রাষ্ট্র পরিচালনায় অনুপস্থিত। তার জন্য সাময়িক কিছু মূল্য চোকাতে হলেও শেষ বিচারে তা গণতন্ত্রের অন্তর্বস্তুকে রক্ষা করতে বেশি কার্যকরী। এটা আমাদের দেশের বামপন্থীদের উপলব্ধি করা উচিত। ... ...