বর্তমান করোনা সংক্রমণের বিষয়টি মানবসমাজের সামনে এক জটিল সমস্যা হিসাবে হাজির হয়েছে! 'লকডাউন' করলে লক্ষ লক্ষ মানুষের রুটি-রুজি, দেশের কৃষি, শিল্প, অর্থনীতি... সবকিছুই ভয়ঙ্কর ক্ষতির সম্মুখীন; আবার লকডাউন না-করলে ১৩০-কোটি নাগরিকের দেশটির সামনে বিপুল সংক্রমণের বিপদ! অভূতপূর্ব সামাজিক অস্থিরতা ও বিপর্যয় যেন অবশ্যম্ভাবী! এই পরিস্থিতিতে, নৃতত্ত্বের হোলিস্টিক সহযোগিতা ছাড়া ভারতবর্ষ নামক রাষ্ট্রটির উদ্ধার পাবার আশা নেহাতই দুরাশা মাত্র। ... ...
সপ্তম শতাব্দীর প্রথমভাগ। পরিব্রাজক হিউএন সাং বা জুয়্যাং জ্যাং পা রাখলেন ভারতের মাটিতে। এদিকে নালন্দার নাম যশ সারা পৃথিবী জুড়ে। বাংলায় রাজা শশাঙ্ক। কামরূপে ভাস্করবর্মন। ওদিকে কান্যকুব্জে শিলাদিত্য হর্ষবর্ধন। আর দক্ষিণে নর্মদার নীচে চালুক্যরাজ দ্বিতীয় পুলকেশী। সবাই নিজের নিজের রাজ্য বিস্তারে ব্যস্ত। আর মাথার ওপরের হিমালয় পার হলেই তিব্বত। সেখানেও আর এক প্রবল পরাক্রমশালী রাজা স্রোংচান গামপো। বিস্তার করে চলেছেন তিব্বত সাম্রাজ্যের। শুধু তো সাম্রাজ্য বিস্তার নয় - শিক্ষা এবং জ্ঞানের আলো নিয়ে আসছেন নিরক্ষর তিব্বতি মানুষদের মাঝে... ... ...
নিউ ইয়র্ক নিবাসী ডঃ পার্থ ব্যানার্জী বিগত একমাস ধরে লিখে চলেছেন নিউ ইয়র্কে ঘটে চলা ভয়াবহ করোনা সংকটকে তিনি কীভাবে দেখছেন - সেই অভিজ্ঞতা। সঙ্গে রয়েছে এই বিপর্যয়ের কার্যকারণ প্রসঙ্গে তাঁর বিশ্লেষণ। তাঁর অনুমতি নিয়ে লেখাটি ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করা হবে। এটি দ্বিতীয় কিস্তি। এখানে রইল ওনার লেখার পর্ব ৫-৮। ... ...
শত ব্যস্ততা, নিত্যকর্ম, আর কর্পোরেট কার্টিসির ব্যুহ ভেদ করে বার বার মনের গহিনে গোপনে হানা দেয় পাহাড়ের গণহত্যা, গণধর্ষন, ত্রিপুরার শরণার্থী শিবির, কল্পনা চাকমা অপহরণ, মেশিন গানের গুলির ভেতর পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের মিছিল-- আরো অসংখ্য রক্তাক্ত অতীত স্মৃতি… কেউ জানে না সে এক গোপন হরর থ্রিলার যাত্রা, ব্যাং ব্যাং ক্লাবের একই কেভিন-যন্ত্রণা! আর ঘুমের ঘোরে এখনো ফিরে ফিরে আসে বাঘাইছড়ির সেই আশ্চর্য দেবশিশুর দল।... ... ...
আমাদের আগের প্রজন্ম হয়ত সরাসরি উনার সংস্পর্শ পেয়ে ধন্য হয়েছে। কাজ করার সুযোগ পেয়েছে। আমরা ধন্য হয়েছি বই পড়ে। বইয়ের মাধ্যমেই উনি আমাদের এত কাছের হয়ে ছিলেন যে আমরা যখন ২০১৩ সালে শাহবাগে বিশাল ক্যানভাসে উনার অদ্ভুত জ্যোতির্ময় ছবিটা দেখি তখন বিন্দুমাত্র অবাক হইনি। রাতের বেলা যখন ছবিটার দিকে তাকাতাম তখন মনে হত ওই তো শহীদ জননী তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে, আমাদের ভয় কী? ... ...
আপনার নির্বাচিত সরকার। আপনার দ্বারা, আপনার জন্য আপনার সরকার। আপনি আমি আলাদা কেউ নই, ভীড়ের একজন মাত্র। দায় কি নেব আমরা? ... ...
করোনা'র দিন একদিন শেষ হবেই। মাড়ি-মড়ক- মহামারিকে হারিয়ে সভ্যতা এগিয়ে চলবে। লকডাউন উঠে যাবে। রাস্তা -ঘাট,বাজার, স্টেশন আবার আমরা ধূলি-ধূসরিত করে তুলব, মাঠে ফসল বুনব,ফুল ফোটাব আবার আমরা শেতলা পূজা -মহোৎসব,দূগ্গা পূজা,নামাজ -আজান নিয়ে মেতে উঠব,পাল ঘরে সাধু হত্যার প্রতিশোধ নেব। আবার ভোট উৎসবে মেতে উঠব। আবার NRC র জিগির তুলে আধপেটা ভারতবর্ষকে ভোলানোর চেষ্টা হবে। আবার হিন্দু-মুসলিমের খেলায় মাতিয়ে বেকার ভারতবর্ষকে ভোলানোর চেষ্টা হবে,আবার দেশপ্রেমের পেটেন্ড দেখিয়ে ফসলের মুল্য না পাওয়া শরীর নিংড়ানো কৃষকের ভারতবর্ষকে ভোলানোর চেষ্টা হবে। সীমান্তে গোলাবারুদের ধোঁয়ায় হাজার হাজার মাইল পায়ে হাঁটা ভারতবর্ষকে ঢেকে দেওয়া হবে। আমরা শান্তশিষ্ট ভদ্রলোকেরা টিভিতে মহাভারত দেখতে-দেখতে "আচ্ছে দিন" আসার স্বপ্ন নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ব। প্রশ্ন গুলোর উত্তর আসবে না। ডিলিটও হবেনা, থেকে যাবে সময়ের আর্কাইভে। "যাহাদের কথা" সবাই ভুলে যায় ইতিহাস তার কিছুই ভোলেনা,প্রশ্ন কিন্তু থাকবেই যতদিন এই পচাগলা ব্যবস্থার শব আমরা বয়ে চলব ! ... ...
“গারো আদিবাসীর ফসলের বীজ বোনার উৎসব রংচুগালার আয়োজন ক্রমেই কমে আসছে, সংক্ষিপ্ত হচ্ছে। এর কারণ, সাংসারেকরা ধর্মান্তরিত হচ্ছেন, বা খ্রিস্টান হচ্ছেন, এমন নয়. সাংসারেকদের যে প্রবীন প্রজন্ম এই রীতিনীতি পালন করেন, তারা প্রত্যেকেই অনেক বয়স্ক, তাদের বয়স ৭০ বা ৮০ বছর। প্রতি বছরই একজন-দুজন করে তারা মারা যাচ্ছেন। সাংসারেক ধর্মটি এমন নয় যে, কাউকে দীক্ষা দেওয়া যায়। তাকে আসলে জন্মগতভাবেই সাংসারেক হতে হয়। আবার অনেকে নতুন করে খ্রিস্টান ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন।” ... ...
তিব্বতের প্রাচীন ধর্ম-বিশ্বাস ছিল 'বোন'। রাজারাও মেনে চলতেন। তারপর একদিন আকাশ থেকে এক স্বর্ণপেটিকা নেমে এলো রাজপ্রাসাদের ছাদে। তার মধ্যে 'ওঁ মনি পদ্মে হুঁ' মন্ত্র। রাজা ল্হাথো থোরি ঞাংচান নিরক্ষর। কী লেখা উদ্ধারই করতে পারলেন না। কিন্তু তিব্বতভূমে সেইদিনই প্রথম পা রাখলেন তথাগত... ... ...
লকডাউনের মধ্যেই দিল্লি থেকে স্পেশাল ট্রেনে অস্ত্র বোঝাই করে আনানো হলো ২৮ জন রেলরক্ষীকে। যার মধ্যে ৯ জনই আক্রান্ত। আহা আহা অস্ত্র দিয়ে তারা করোনার মোকাবিলা করবেন। শুধু ৯ জন আক্রান্তই নন, তাদের লুকিয়ে রাখা হলো, কাউকে কাউকে তো আবার উড়িশ্যায় ফেরতও পাঠানো হলো। এবং পরে দেখা গেলো তারা আক্রান্ত। আহা। আর খড়গপুরে যাদের রেখে দেওয়া হলো তাদের কোয়ারেন্টাইন হোমে তো পাঠানো হলোই না বরং ব্যারাকেই রেখে দেওয়া হলো পর্যবেক্ষণের জন্য। আ বেল মুঝে মার। শুধু কী তাই! রোজ রোজ ব্যারাকে তাদের নিয়মিত প্র্যাকটিসও হয়েছে। ... ...
মেঘের মত আওয়াজ ছিল লম্বা একটা লোকসময় থেকে অনেক আগে, ভাবতো নতুন হোকবুকের ভেতর কিশোর ছিল অপাপবিদ্ধ সরলস্বপ্ন ছিল শিল্প সৃজন দিগন্ত তাঁর বড় ... ...
সে ছিল এক রংদার কফি হাউসের দুনিয়া– এক টেবলে ভাগাভাগি করে পাশাপাশি বসে সত্যজিৎ রায়, চিদানন্দ দাশগুপ্ত, কমলকুমার মজুমদার, মৃণাল সেন, সমর সেন, ও পাশের টেবলে গর্জন করছে সদ্য-ছাপা কৃত্তিবাস গোষ্ঠীর প্রথাচ্যুত জোয়ান কবিদের দঙ্গল! এই ধরতাইটুকু, এই দীপ্ত আধুনিকতা এবং পঞ্চাশের দশকের কলকাতার প্রেক্ষাপট বুঝে না-থাকলে আজকের কবরখানা কলকাতায় দাঁড়িয়ে সত্যজিতের শতবর্ষ-সেলিব্রেশন অর্থহীন হয়ে যায়। ... ...
অবশ্য শুধু রান্না কেন, জুঁইএর শেখা সেলাই ফোড়াই-ই বা কোন কাজে লাগল! বিয়ের পরের অনেকগুলো দুপুর না ঘুমিয়ে ফ্রেঞ্চ নটের গোলাপফুলে সাজিয়ে তোলা বিছানার চাদর বিছিয়ে সবাইকে চমকে দিতে চেয়েছিল একবার। শুনেছিল, "ভালোই, তবে এ ঘরের মিনিম্যালিস্ট ডেকরের সঙ্গে যাচ্ছে না।" উলের কাঁটা, কুরুশের সুতোর গুলি এরপর আর বাক্স থেকেই বেরোয় নি। বাবুই এর ঈষৎ অনিচ্ছুক মুখটার দিকে তাকায় জুঁই। ভাবে, আমি ওকে যা শেখাব, সেগুলো ওর ও কি কোনদিনই কাজে লাগবে? ... ...
ঐশ্বর্য নেই, গৌরব নেই। নেই ভাষা, ভাষ্য। তবু এক অধিকার থাকে। এমন এক অধিকার যা থেকে কাউকে বঞ্চিত করা সম্ভব নয়। এটি হলো ছেড়ে যাবার, বিলুপ্ত হবার একান্ত অধিকার। চলে যাবার এই একটি অধিকার আছে বলেই ভূমিস্পর্শ করে শুয়ে আছে কেউ। উপুড় হয়ে। ... ...
সামাজিক ওলোট-পালোট ... ...
খ্রীষ্টপূর্ব দেড় হাজার বছর আগে থেকে খ্রীষ্টের জন্মের পরে প্রায় আরো এক হাজার বছর পর্যন্ত ভারতের লোহা এবং তার বানানোর জ্ঞান-জন্মি একদম স্টেট অব্ দ্যা আর্ট ছিল। অনেক বিষয়ে ভারতে সেই সব পৃথিবীতে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিল। মিশরের পাবলিক যে সব মন্দির, পিরামিড এই সব বানিয়ে তাতে হেয়ারোগ্লিফিক্স নাকি কি সব দিয়ে ঢেকে দিয়েছিল, সেই সব বানাতে যে যন্ত্রপাতি ইত্যাদি লেগেছিল তা বানাতে নাকি ব্যবহার করা হয়েছিল ভারতীয় ইস্পাত। বলা হয়ে থাকে যে সেই সময়ে ভারত ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোন সভ্যতায় এমন লিখিত প্রমাণ পাওয়া যায় নি যে তারা ভারতের মতন এত উন্নত মানের ইস্পাত তৈরী করতে পারত। সেই সময়কার গ্রীক এবং ল্যাটিন লেখা লিখি পড়লে এটা বোঝা যায় যে এই লোহা-ইস্পাত ইত্যাদির ডিটেলস্ সম্পর্কে তারা বেশ অজ্ঞই ছিল। অবশ্যই তারা জানত কি ভাবে লোহা-ইস্পাত ব্যবহার করতে হয়, কিন্তু কি ভাবে লৌহ আকরিক থেকে লোহা নিষ্কাষণ করে তার থেকে ইস্পাত ইত্যাদি বানাতে হয় সেই সম্পর্কে তারা তেমন কিছু জানত না। ... ...