এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  উপন্যাস

  • ওইখানে যেয়ো নাকো তুমি : পর্ব ৬

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ১৩ জুন ২০২২ | ১৪৮৭ বার পঠিত | রেটিং ৪.৩ (৩ জন)

  • তোমার ভাষা বোঝার আশা দিয়েছি জলাঞ্জলি’
     
    পুরো সাতটা দিন লাগেনি। ছ’দিনের মাথায় সন্ধ্যে নাগাদ বসের ফোন এল,- ফিরে আয় হতভাগা! অনেক আরাম করেছিস। আমাদের পেশায় আরাম হারাম হ্যায়!
    --বস,  পারমিন্দরের মার্ডারার ধরা পড়েছে?
    -- হ্যাঁ, জাল গোটানো হয়ে গেছে।
    --কে সেই নোংরা লোক? মানে কতজন? কোন গ্যাং?
    --এত কথা ফোনে বলা যাবে না। এটুকু জেনে রাখ, তুই মোটামুটি নিরাপদ। এক কাজ কর। কাল দুপুরে খেয়ে দেয়ে রওনা দে। সন্ধ্যে নাগাদ অফিসে এসে তোর শ্রীমুখ দেখাস। ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়িস না। অনেক কাজ বাকি।
     
    ইতিমধ্যে জেনে গেছি যে অ্যান্টিসিপেটরি বেইলের গল্পটি পুরো ঢপ। কোসলে স্যার আদৌ কোন পিটিশন জমা করেন নি।
    মানা ক্যাম্প এলাকায় সাতদিন ঘাপটি মেরে থাকার সময় রোজ সন্ধ্যেয় আড্ডা দিতাম আমার পিসতুতো ভাই বিভুর সঙ্গে।  ও নাকি রায়পুর জেলা আদালতে একজন ক্রিমিন্যাল ল’ইয়ার! মানে এখনও জুনিয়র, তবে বিখ্যাত ডিফেন্স ল’ইয়ার রিজভি সাহেবের টিমে যোগ দিয়েছে।
      শালা! সেদিনের স্কুল পালানো এবং দৌরাত্ম্যে পাড়াকে অস্থির করে তোলা ছেলেটা কবে উকিল হল? এখন রোজ  সকাল সাতটায় গম্ভীর মুখে কালো কোট আর সাদা শার্ট প্যান্ট পরে ব্রিফকেস গুছিয়ে একটা হিরো হোন্ডা মোটরবাইকে সওয়ার হয়ে ১৫ কিলোমিটার দূরে রায়পুরে বসের অফিসে যায়। সেদিনের কেস ডায়েরি দেখে শেষবারের মত কিছু ফাইল আর পেজমার্ক করা গাবদা গোবদা আইনের বইগুলো নিয়ে বসের মারুতি এস্টিম গাড়িতে ড্রাইভারের পাশের সীটে বসে বেলা এগারটা নাগাদ আদালতে যায়। আবার সন্ধ্যে সাতটায় বসের বাড়ি থেকে রওনা দিয়ে মানা ক্যাম্প ফিরে আসে।
    তারপর তেল -কাঁচালংকা -পেঁয়াজ- বাদাম দিয়ে মাখা একবাটি মুড়ি ও দাগধরা কাপে লালচে চা নিয়ে আমরা দু’ভাই বারান্দায় বসি। আমি বারমুডায়, ও লুঙ্গিতে । শুরু হয় গল্প, ওর আদালতের আর আমার নানান তদন্তের।
     
    আমরা দু’জনেই নিজেদের গল্পগুলো মনে মনে এডিট করে টিপেটুপে ছাড়ি। কিন্তু কোথায় ধীরে ধীরে একটা পারস্পরিক বিশ্বাস একটা বন্ডিং গড়ে উঠতে থাকে।
    মানা রিফিউজি ক্যাম্পে এসে আমি ছটফট করছিলাম। সন্ধ্যে হলে পাড়াটা বড় শান্ত হয়ে যায়। রাস্তায় আলো কম। ঝিঁঝির ডাক। কখনও মদের ঠেক থেকে ফেরা পেঁচি মাতালের জড়ানো গলায় গান আর শিবমন্দিরের চাতাল থেকে কিছু গানের আওয়াজ। ন’টা নাগাদ গোটা পাড়া যেন ঘুমিয়ে পড়ে। ঝিঁঝিদের বৃন্দগান ক্রমশঃ উচ্চগ্রামে পোঁছে যায়।
        
         দ্বিতীয় দিন সন্ধ্যে নাগাদ ভাই বিভুর মোবাইল থেকে সিমরনকে ফোন লাগিয়ে জানতে পেরেছিলাম যে এখনও বেইল পিটিশন জমা হয়নি, স্যার বড্ড ব্যস্ত।
    এটা কিরকম হোল? পিটিশন তো উকিল তৈরি করবে; স্যারকে শুধু দু’জায়গায় সিগনেচার মারতে হবে। যত কাজই হোক, নিজের অ্যাসিস্ট্যান্টকে ছাড়িয়ে আনা কি প্রায়োরিটির মধ্যে পড়ে না? মনটা তেতো হয়ে যায়।
     
    কিন্তু বিভু দেখছি মিটিমিটি হাসছে।
     
    --ছোড়দা, তুমি খামোকাই এত উতলা হয়ে পড়েছ। তোমার কেসে অ্যান্টিসিপেটরি বেইল হবে না। তোমার বিরুদ্ধে থানায় এফ আই আর হয়নি। থানা থেকে তোমায় ডেকে পাঠায় নি। গ্রেফতারের সম্ভাবনা কোথায় যে – মানে অ্যারেস্টের অ্যান্টিসিপেশনের গ্রাউন্ড ছাড়া অ্যান্টিসিপেটরি বেইল হয় কী করে? তোমাদের পিটিশন সেশন্স কোর্টের জজ ছুঁড়ে ফেলে দেবে। বলবে  -প্রিম্যাচিওর, আগে গ্রাউন্ড তৈরি হোক।
     
    --কী বলছিস?  মেয়েটার নিখোঁজের ডায়েরি লিখিয়ে ওর দাদা পুলিশ নিয়ে আমাদের অফিসে এসে তান্ডব করেছিল। তারপর মেয়েটির ডেডবডি পাওয়া গেছে। গ্যাং রেপের সন্দেহ। ওর দাদা খোলাখুলি আমাকে সন্দেহ করছে। নিখোঁজ হওয়ার আগের দিন সকালেও ওকে আমার সঙ্গে দেখা গেছে। এগুলো কি যথেষ্ট নয়?
     
    --না, কারণ ওটা ছিল জেনারেল ডায়েরি বা জিডি। তারপর এসপি অফিস থেকে কলকাঠি নাড়া হয়েছে, তারবাহার থানা তো চুনোপুঁটি। মেয়েটির গায়েব হওয়া থেকে ডেডবডি পাওয়া পর্য্যন্ত তোমার মুভমেন্ট—সারাদিন কোথায় কোথায় গেছ, কার সঙ্গে , কোন নিরপেক্ষ সাক্ষী আছে কিনা, তোমার পুরনো ক্রিমিনাল রেকর্ড আছে কিনা—সেসব তো তোমার বস ভালো করে এসপি অফিসে রিপোর্ট বানিয়ে জমা দিয়ে থাকবেন। ওটুকুই যথেষ্ট।
           
         আর একটা কথা মনে রেখ ছোড়দা। তুমি একটি নামকরা রেজিস্টার্ড সিকিউরিটি এজেন্সিতে কাজ কর।  তোমাদের বস এক্স-পুলিশ অফিসার। তোমরা সবসময় পুলিশের সঙ্গে ক্লোজ রিলেশন মেন্টেন কর। ফলে তোমরা পুলিশের চোখে প্রিভিলেজড, আইনের চোখে মোর দ্যান ইক্যুয়াল। তোমাদের গ্রেফতার করতে কোর্টের অর্ডার চাই, আর কোর্টকে কনভিন্সড করতে যথেষ্ট সাক্ষীসাবুদ চাই। কেউ এসে সন্দেহের বশে কমপ্লেইন করল, আর পুলিশ তোমাকে ধরে নিয়ে গেল—এরকম হয় না।
     
    ---মেয়েটি কলেজে পড়ত, অ্যাক্টিভিস্ট ছিল। ইন্টেলজেন্ট, ব্রাইট ফিউচার। এমন হবে কে জানত? খারাপ লাগছে, খুব খারাপ লাগছে।
    --লাগারই কথা। কিন্তু অমন মেয়ের তো অনেক চেনাশুনো, অনেক বন্ধু। নিশ্চয়ই শত্রুও ছিল। নইলে এমন বীভৎস মৃত্যু! আর ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশনের দিক থেকে দেখলে তুমি ছাড়া আরও অনেকের সঙ্গে আগে থেকেই চেনাশুনো।
     তুমি বলছ ও ছিল একটা অ্যানার্কিস্ট গ্রুপের সক্রিয় সদস্য। যার মুখিয়া আবার রহস্যজনক ভাবে কিছুদিন আগে মারা গেছে। ওর অন্য বন্ধুটিকে  ক্রমাগত হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। তোমার সঙ্গে তো মাত্র সেদিনের আলাপ, ওই ইনভেস্টিগেশনের সূত্রে। তোমাকে ওর খুনের সঙ্গে জড়ানো কঠিন। আর তোমার মোটিভ কী হতে পারে? জেলাসি? এত অল্পদিনের আলাপে? ধ্যেৎ! পুলিশ এত বোকা নয়।
     
       আমি গুম মেরে থাকি। ভাবি, এতসব ব্যাপার কি কোসলে স্যার জানতেন না? সারাজীবন দক্ষতার সঙ্গে পুলিশে চাকরি করেছেন। ইন্ডিয়ান পেনাল কোড ও ক্রিমিনাল প্রসিডিওর কোড তো ওঁদের নখদর্পণে। তার ফাঁক ফোকর সবই তো উনি জানেন। তাহলে আমায় ওই মিথ্যে স্তোকবাক্য কেন দিলেন? আমি কি বাচ্চাছেলে? 
        বিভু বোধহয় বুঝতে পারে। আমার হাতে হাত রাখে। বলে মন খারাপ না করতে । কাজের সুবিধে এবং মূলতঃ আমার প্রটেকশনের জন্যেই উনি সাততাড়াতাড়ি সবার চোখ এড়িয়ে আমায় সরিয়ে দিলেন। আমি গোঁয়ার্তুমি করছিলাম। এটাকে প্রেস্টিজ ইস্যু বানাচ্ছিলাম।
     
    --ছোড়দা, তুমি তো ক্রিকেট খেলতে। মনে কর একটু আগে ক্রিজে নেমেছ, আর কোন বোলারের বলের স্যুইং বা বাউন্স বুঝতে অসুবিধে হচ্ছে, তখন কীভাবে ব্যাট করতে? ধর, বোলার ডীপ ফাইন লেগে ফিল্ডার দাঁড় করিয়ে তোমাকে লাগাতার শর্ট পিচ বল করছে, লোভ দেখাচ্ছে। তুমি তখন কী করবে? হুক বা পুল শট মারবে, নাকি মাথা নীচু করে ডাক করবে?
    --ডাক করব।
    --করেক্ট, তাতে কি তুমি সবার চোখে ছোট হয়ে যাবে?
    --তা কেন? এঁড়েপনা না করে ক্রীজে খানিকক্ষণ টিকে থাকব। তারপর মারতে শুরু করব।
    --এবার তোমার স্যারের চাল বুঝতে পারলে? উনি ভাল ক্যাপ্টেন; ম্যাচ রীডিং বেশ ভাল।
     
    আমি একটু  ভাবি। এখানে আরও চার-পাঁচদিন সময় কাটাতে হবে। অখন্ড অবসর।
     
     
    কিন্তু পারমিন্দরকে ভুলতে পারছি না।  ওর সহজ নিঃসংকোচ ব্যবহার, নিজের বিশ্বাসের জন্য স্ট্যান্ড নেওয়া, সব আমাকে টানছিল। আর পার্কে ওর পাশে বসার সময় ওর শরীরের ভাপ থেকে উঠে আসা নিজস্ব গন্ধ। নাঃ  ওর হত্যাকারীরা নরকে পচুক। তাতে আমি যদি কোন সাহায্য করতে পারি তাহলে একটু জ্বালা কমবে।
     
    --বিভু, তুই ক্রিমিন্যাল ল’ইয়ার। পারমিন্দরের কেসটা মোটামুটি শুনলি। তোর কী মনে হয়?
     
    --দেখ, তোমাদের তদন্ত এখনও খুব প্রাথমিক পর্য্যায়ে রয়েছে; ডেটা খুব কম। তাই স্পষ্ট করে কিছু বলা মুশকিল। অনেকগুলো অ্যাঙ্গল হতে পারে। আমার মনে হচ্ছে সোনালী মিশ্র বলে মেয়েটির ব্যাপারে ভালো করে খোঁজ নাও। বোহেমিয়ান কবি লোকেশ জাঙ্গড়েকে শীর্ষবিন্দুতে রেখে মেয়েদুটোর একটা লাভ ট্র্যাঙ্গেল গড়ে উঠেছিল কি?
    না না। আমি খারাপ -ভালো এসব কিছু বলছি না। এটা একটা সম্ভাবনা, অনেকটা গত শতাব্দীর হিপি কলোনির মত।
    *****************************************************************
        
            গতকাল সন্ধ্যেয় ফিরে এসে অফিসে রিপোর্ট করেছি। স্যার বলছেন দু’একদিন পরে আবার সোনালি মিশ্রের সঙ্গে দেখা করতে। লোকেশের সঙ্গে ওর সম্পর্কের গভীরতা এবং পারমিন্দরের সঙ্গে ইদানীং বনিবনা হচ্ছিল কিনা সেসব একটু বাজিয়ে নিতে। 
     
    আমি ফের জিগাই—পারমিন্দরের হত্যাকারীদের ট্রেস করার ব্যাপারটা?
     
    --বলেছি তো দু’একদিন সবুর কর। সবুরে মেওয়া ফলে।  এটুকু তো বলেইছি যে অপরাধীর জন্য জাল বিছানো হয়েছে। শিগগিরই জালে আটকাবে, তখন জানতে পারবি।
    --এত ঢাক ঢাক গুড় গুড় কিসের বস? আমরাও কি পাতি পাবলিকের মত আসামী ধরা পড়িলে খবরের কাগজ হইতে জানিতে পারিব?
     
    -- হ্যাঁ, একরকম তাই।
    গোপনীয়তা এই জন্যে যে এই কেসটা আমি সলভ করি নি। এটার সম্পূর্ণ কৃতিত্ব পুলিশ বিভাগের, বিশেষ করে বললে ফরেনসিক ডিপার্টমেন্টের। তাই ওদের যা নির্দেশ সেটা মানতে হবে। বুঝেছিস? এবার নিজেদের কেসগুলো নিয়ে ভাবা শুরু  কর দিকি  ।  আচ্ছা, রাত হয়ে গেছে। বাড়ি যা, খেয়ে দেয়ে ভাল করে ঘুমো। কাল ঠান্ডা মাথায় ভাববি।

           আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে চায়ে চুমুক দেবার আগে আতিপাঁতি করে দুটো খবরের কাগজ দেখলাম। আমার ‘দৈনিক ভাস্কর’ আর বাড়িওয়ালি মৌসীর ‘নবভারত’।
     
               নাঃ , কোথাও বিলাসপুর শহরের পারমিন্দরকে নিয়ে কোন খবর বেরোয় নি। যেন সব কিছু আগের মত চলছে। সূর্য পূবে উঠছেন। মেয়র শশীকান্ত আস্থা ভোটে প্রত্যাশা মত জিতেছেন। আগুনে গরম এত তাড়াতাড়ি কমবে না। বর্ষা কেরলে ঢোকার মুখে থমকে দাঁড়িয়ে আছে, যেন কলিং বেল খুঁজে পাচ্ছে না। তবে এই গরমে ডিমের থোক দাম একটু কমেছে।
            
               ধুর, এই শহরে আর থাকতে ইচ্ছে করে না। একটা জোয়ান মেয়ে এমন ভাবে মারা গেল, কারও কোন হেলদোল নেই?  খালি আমাদের—মানে আমার? তাহলে কি বস ফের ঢপ দিচ্ছেন—জাল বিছানো হয়েছে, হত্যাকারীরা ধরা পড়লো বলে! আসলে ওঁরাও ক্লু-লেস?
     
                আজকে একটু তাড়াতাড়ি অফিসে গেলাম।
     কী আশ্চর্য, গিয়ে দেখি অন্যরাও হাজির। টেবিলে বসের সামনে একটা পেটমোটা ম্যানিলা এনভেলপ। আমি তাকিয়ে আছি দেখে বস্‌ ওটা নিজের দিকে আরেকটু টেনে নিলেন। আমার বিরক্তি লাগল, ঠিক যেন আকখুটে ছোট বাচ্চা খেলনা সামলাচ্ছে।
     
    সিমরন সবার কাপে কফি দিয়ে  শুরু করল। মনে হচ্ছে কোসলে স্যার কিছু তালিম দিয়ে রেখেছিলেন। এদের কোন সিক্রেট এজেন্ডা আছে নাকি?
     
    --মার্চ থেকে জুন, প্রায় চারটে মাস। এর মধ্যে বিলাসপুর শহরে তিন তিনটে খুন।  প্রথমে পুলিশের খবরি এবং গাড়িচোর কিস্টাইয়া, তারপর বিদ্রোহী কবি লোকেশের রহস্যময় মৃত্যু। এ’দুটো ঘটনা ঘটেছে একমাসের গ্যাপে। তারপর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে গার্লস কলেজের ডাকাবুকো মেয়ে পারমিন্দরের বীভৎস মৃত্যু। আমাদের চিন্তার বিষয়-- তিনটের মধ্যে কি কোন যোগসূত্র আছে?
     
    সিমরন থেমে যায় , তারপর আমার দিকে তাকায়; যেন আমি কিছু বলব, এক্সপার্ট ওপিনিয়ন দেবার ভড়ং করব। কিন্তু আমি মুখ খুলি না। গম্ভীর মুখে চিন্তা করার ভান করি। তখন আবার শুরু করে।
     
    --আপাতদৃষ্টিতে একটাই কমন ফীচার। তিনটে মৃত্যুই নির্মম হত্যা। কিস্টাইয়াকে প্ল্যান করে মাথার পেছনে  প্রায় খুলি ফাটিয়ে দেবার মত অজ্ঞান অবস্থায় গাড়িতে বসিয়ে গড়িয়ে দেওয়া হয়। লোকেশকে পাঁচতলার হাইট থেকে নীচে ফেলে দেওয়া হয়। আর পারমিন্দরকে গ্যাং রেপ করে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়।
    আবার থেমে যায় । স্যার আমার দিকে তাকিয়ে।
     
    --না, আরেকটা কমন ফীচার রয়েছে, সেটা হল হত্যাগুলোতে একাধিক ব্যক্তির ফুটপ্রিন্ট। তিনটে খুনই যেভাবে হয়েছে তাতে বোঝা যায় যে এগুলো কোন একা মানুষের কম্ম নয়।
    যেমন কিস্টাইয়ার কেস।
     
     সেই রাতে দুটো নাগাদ আমরা উলটো দিক থেকে আসা কিস্টাইয়াদের একজোড়া গাড়ির মুখোমুখি হই। তখন কিস্টাইয়া সতেজ স্বাভাবিক ছিল, আমার সঙ্গে হাত লাগিয়ে গাড়ির ট্যাংকে পাঁচ লিটার তেল ভরে দিল। না, আমি তখন ওর মুখ থেকে কোন মদের গন্ধ পাইনি। তেল টেল ভরতে ধরা যাক মিনিট পনের লেগে থাকবে। তার মানে সোয়া দুটো নাগাদ ওরা বিলাসপুরের দিকে রওনা হল।
          জায়গাটা চোরভাট্টি গ্রাম, বিলাসপুরের থেকে মাত্র ১১ কিলোমিটার দুরে। কুড়ি মিনিটের মধ্যে ওদের বিলাসপুর পৌঁছে যাওয়ার কথা। কিন্তু আমরা ওদের অ্যাক্সিডেন্ট হওয়া গাড়িটা দেখতে পেলাম কোনী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ছাড়িয়ে বিলাসপুর থেকে মাত্র সাত কিলো মিটার দূরত্বে, অরপা নদীর ধারে।
    তারমানে ওরা পাঁচমিনিটে ওই জায়গাটায় পৌঁছে গিয়ে সম্ভবতঃ দারুপার্টি করছিল।
     
           রাত তিনটে নাগাদ আমরা ফিরে যাওয়ার মেসেজ পেয়ে রওনা দিয়ে পনের মিনিটের মধ্যে ওই স্পটে পৌঁছে গেছলাম। তারমধ্যে ওদের খাওয়াদাওয়া এবং ওকে মার্ডার করে ফেলে রাখা সব হয়ে গেছে। সেরেফ মিনিট পঁয়তাল্লিশের মধ্যে! একটু কেমন কেমন লাগছে। অন্য সম্ভাবনাটি হল খাওয়াদাওয়া নয়, কিস্টাইয়াকে মেরে ফেলার জন্যেই ওরা ওখানে থেমেছিল- হয়ত মদ খাওয়ার অছিলায়। হয়ত মদের সঙ্গে কিছু সেডেটিভ মিশিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
     
    সিমরনের ভ্রু কুঁচকে ওঠে।
    --আমাদের গাড়ির সঙ্গে দেখা হওয়ার পনের মিনিটের মধ্যে ওরা ওকে মেরে ফেলার জন্য গাড়ি থামালো? এত কাছাকাছি!
     
    উত্তর দিলেন কোসলে স্যার।
    --ওরা তো জানেনা আমরা ওই জোনটায় টহলদারি করছিলাম। ওরা আসছিল অমরকন্টকের থেকে বিলাসপুরের দিকে, আর আমাদের গাড়ির অভিমুখ বিলাসপুরকে পেছনে রেখে অমরকন্টকের দিকে। তাছাড়া আমরা ওদের থেকে মাত্র পাঁচ লিটার তেল নিলাম। বললাম আগের পেট্রল পাম্প থেকে তেল ভরিয়ে নেব। কাজেই ওরা জানত যে প্রতিমূহুর্তে আমরা ওদের থেকে দুরে চলে যাচ্ছি। হ্যাঁ, তুই যা বলছিলি—
     
    সিমরন একটু ভালমানুষ চেহারা বানিয়ে আমার দিকে তাকায়।
     
    --যদি ধরে নিই যে ওরা ওকে মেরে ফেলার প্ল্যান করেছিল তাহলে দুটো প্রশ্ন ওঠে। প্রথম, কেন মারবে? হঠাৎ কী হল? অথবা মারার ছক আগেই কষা হয়ে গেছল, আমাদের সঙ্গে দেখা হওয়াটা নেহাৎ কাকতালীয় ব্যাপার। কোনটার উত্তরই আমাদের জানা নেই।
     
    --স্যার, যদি সৌরভ যা বলছে সেটাই সত্যি হয় তাহলেও দুটো প্রশ্ন ওঠে। এক, দুটো গাড়ি ভর্তি লোক, কিন্তু একটা গাড়ি ও প্রায় মরমর ড্রাইভারকে আপনারা দেখতে পেলেন। অন্য গাড়িটি এবং বাকি লোকজন কোথায় গেল? দুই, ওরা কাজটা আদ্দেক করে গেল কেন? যদি কিস্টাইয়া বেঁচে উঠে সব ফাঁস করে দিত? মনে হয় মারার ব্যাপারটা হঠাৎ হয়েছে, কোন ঝগড়া ঝাঁটি থেকে। অ্যামেচারদের কাজ।
     
    --স্যার, আই বেগ টু ডিফার। ওরা খুব বেশি সময় পায়নি। মরে গেছে মনে করে পালিয়েছে। কিন্তু কীভাবে? আমরা তো ওয়াকি টকিতে দুটো গাড়ির নম্বরই নেহরু চৌকে কম্যান্ড পোস্টকে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। ওদিক দিয়ে কোন গাড়িই যায়নি।
     
    সবাই খানিকক্ষণ চুপ। আমাদের মাথায় আর কিছু আসছে না। খানিকক্ষণ পরে শ্রীবাস্তব স্যার নাক দিয়ে হুমম্‌ গোছের শব্দ বের করলেন। আমরা জানি, এবার উনি কোন থিওরি দেবেন।
    --আমার মনে হয় একটা ভুল হচ্ছে। তিনটে খুনকে আমরা বিচ্ছিন্ন ভাবে ইন আইসোলেশন দেখছি। যদি তিনটে আলাদা না হয়? যদি একটা বড় ব্যাপারের অংশ হয়?
     
    কী বলতে চাইছেন স্যার, তিনটের মধ্যে কানেকশন আর কী হতে পারে?
     
    --দেখ সৌরভ; সেদিন আমরা টহল দিচ্ছিলাম কেন? যাতে ড্রেডেড মাওবাদী বিক্রম জাল কেটে বেরিয়ে না যায়। ওর তিনটে গাড়ির কাফিলার রিপোর্ট ছিল। আমরা দুটো গাড়িকে দেখেছি, তিন নম্বরকে দেখি নি। যদি ওই দুটো  গাড়ির কোন একটায় বিক্রম? মানে কিস্টাইয়া যদি ওর অপারেশনের  ভাড়াটে মোহরা হয়ে থাকে?
     
    --আপনি কি বলতে চাইছেন বিক্রম বা তার লোকেরা আপনাকে চিনতে পেরেছিল? তা কী করে হবে? বিক্রম তো এইদিকের লোক নয়! আর আপনি রিটায়ার করেছেন বেশ ক’বছর হয়ে গেল।
     
    --বিক্রম না চিনুক, ওর এসকর্টের মধ্যে লোক্যাল লোকজন ছিল। কিস্টাইয়াই তো লোক্যাল। আর তোরা না মানতে পারিস, টাকাপয়সা নিয়ে ঘ্যান ঘ্যান করতে পারিস।  বাট, টেক ইট ফ্রম মি,-- আমাদের সিকিউরিটি এজেন্সির পাঁচ বছরে ছত্তিশগড়ে বেশ নাম হয়েছে। প্লাস, কিস্টাইয়া নিজেই পুলিশের খবরি, ও তো জানে যে সময়ে অসময়ে আমরা পুলিশ বিভাগের বি-টিমের মত কাজ করি। হয়ত ও আমাদের গাড়ির নম্বরও আগে থেকেই বিক্রমকে পৌঁছে দিয়েছে।
     
    উত্তেজনায় আমার হার্টবিট বেড়ে যায়। স্যার কী বলছেন? আমরা তাহলে বিক্রমের এত কাছে ছিলাম! যদি ওরা গুলি চালাত? স্যার আমার মুখের চেহারা দেখে হেসে ফেলেন।
     
    --ফালতু চাপ নিস না। আমার ধারণা বিক্রম ওই দুটো গাড়ির মধ্যে ছিল। তিন নম্বর গাড়ি কাছাকাছি রেকি করছিল, একটু দূরত্ব রেখে, আমরা খেয়াল করি নি। আমাদের সম্বন্ধে ওর কাছে খবর ছিল। আমরা গাড়ি থামাতে বলায় ও কিস্টাইয়াকে তেল ভরাতে পাঠাল হয়ত আমাদের থোবড়া ভাল করে দেখে কনফার্ম করতে। ব্যাটা নিশ্চয়ই থানায় আমাদের সম্বন্ধে জেনে আগে থেকেই আমাদের অফিস ও চেহারা চিনে রেখেছে।
     
    -স্যার, যদি আপনাদের উপর গুলি চালাত?
    সিমরনের গলায় এই উৎকন্ঠা আমার ভাল লাগে।
     
    -ধেৎ, ও চেষ্টা করছিল জাল কেটে বেরোনোর , খামোখা গুলিটুলি চালিয়ে নিজের ট্রেইলের দিকে সবার নজর কাড়বে কেন? তাই কিস্টাইয়ার খুনকে একটা অ্যাক্সিডেন্ট সাজাতে  চেষ্টা করছিল। হয়ত আমরা হঠাৎ ফিরে আসায় কাজটা অসমাপ্ত রেখে সরে গেছে। এমনও হতে পারে কাছেই নদীর পাড়ে অন্ধকারে গাছপালার আড়ালে দ্বিতীয় গাড়িটায় ঘাপটি মেরে ছিল। আমরা সরে যেতেই--
     
    আমি আর একবার চমকে উঠি। জোর বাঁচা বেঁচে গেছি। যখন আমি এবং স্যার রিভলবার হাতে গাড়িটার দিকে এগিয়ে গেছলাম তখন যদি ওরা কাছেই ঘাপটি মেরে ছিল , আর আমরা যদি কোন নড়াচড়া টের পেয়ে সেদিকে এগিয়ে গিয়ে চ্যালেঞ্জ করতাম? স্যার যাই বলুন। ওরা বাধ্য হয়ে—নাঃ, আর ভাবতে চাই না।
     
    স্যারের ধমকে চমকে উঠলাম।
    --কোথায় আছেন শ্রীমান? মহাকাশ থেকে এই পৃথিবীতে নেমে আসুন। আমার এটা ভাবার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে তিনটে খুনই সংযুক্ত। এবং  তার যোগসূত্রটি হচ্ছে মোস্ট ওয়ান্টেড ক্রিমিন্যাল বিক্রম। নইলে শান্ত শহর বিলাসপুরে আচমকা তিন তিনটে পেশাদারি কায়দায় খুন হতে পারে না। আমাদের অনুমান ঠিক হলে বিক্রম অন্য দুটো গাড়ির কোন একটায় চড়ে গাঁয়ের অলিগলি দিয়ে শহরে ঢুকে পড়ে। আর তার পরে বাকি দুটো খুন! এসব কাকতালীয়? মনে হয় না।
     
    --স্যার, আপনার কি মনে হয় বিক্রম এখনও বিলাসপুরে আছে?
    --আগে তাই ভাবতাম, কিন্তু এখন ধারণা পাল্টাতে হচ্ছে। খবর এসেছে গতমাসে বাংলা-বিহার-উড়িষ্যা সীমান্তের জেলাগুলো নিয়ে নতুন ছোটনাগপুর জোনাল কমিটি তৈরি হয়েছে। সম্মেলনে 
    বিক্রম উপস্থিত ছিল, সে এখন  কিছুদিন বেঙ্গলে গা ঢাকা দিয়ে থাকবে।
     
    (এর মানে বিক্রম সেই ঘটনার দুয়েক দিনের মধ্যেই জাল কেটে বেরিয়ে গেছে। এসব সম্ভব হয়েছে রায়পুরের বড়কর্তাদের পাকামির ফলে। যদি আমাদের সরিয়ে বাইরের ফোর্স না পাঠাত? স্যার রেগে যাবেন, কিন্তু আমি যেন সর্ষের মধ্যে ভুত দেখছি। কিন্তু গেল কবে?)
     
            একমাস পরের সকালে লোকেশ বিদ্রোহীকে পাঁচতলার থেকে ফেলে দেওয়া হল। তখন কি বিক্রম বিলাসপুরে ছিল? নইলে ও যোগসূত্র হয় কেমন করে? আর পারমিন্দরের মার্ডার তো দশ দিন আগে। তাহলে কী করে তিনটে খুন কানেক্টেড? নাঃ , স্যারের থিওরিটা পুরনো মশারির মত, অনেকগুলো ফুটো।
    আর পারমিন্দরকে যখন বিক্রম নামের গড়চিরোলির কোন অ্যানার্কিস্ট নেতাকে চেনে কিনা জিজ্ঞেস করেছিলাম তখন কেমন করে তাকিয়েছিল। বলেছিল ও নামে কলেজে কেউ নেই।
     
     
    সিমরন ছটফট করছে, জিজ্ঞেস করছে একবার কফি বানিয়ে আনবে কিনা। স্যার অন্যমনস্ক ভাবে হ্যাঁ বললেন। কিছু একটা ভাবছেন, চোখ খোলা, কিন্তু কেমন চাইনিজ বুদ্ধের মত। আমাদের দেখেও দেখছেন না।
     
    এবার উনি বিড়বিড় করছেন -ফর্সা পা, মোজার দাগ। একটা নীল ট্যাটু, সম্ভবতঃ উর্দুতে। এরকম একটা উর্দু ট্যাটু কোথায় যেন দেখেছি।
     
    সিমরন কফি নিয়ে টেবিলে টি -কোস্টারের উপর রেখেছে।
     
     স্যার বড় ম্যানিলা এনভেলপটি খুললেন। তারপর কিছু কাগজ আর ফোটোগ্রাফ বের করে টেবিলের উপর সাজিয়ে অস্বাভাবিক শান্ত গলায় বললেন—মনে হয় যোগসূত্র পেয়েছি। হ্যাঁ, মৃত তিনজনই বিক্রমের সঙ্গে যুক্ত ছিল। দেখ, তিনটে মৃতদেহের কথা আমরা জানি। কিন্তু আরেকটি মৃতদেহ ছিল যার মুখ আমি দেখিনি। পরের দিন বিকেলের সেই বেওয়ারিশ  লাশ।
    রেলওয়ে পুলিশ জানিয়েছিল অমন কোন ঘটনার রিপোর্ট ওদের কাছে নেই। করপোরেশনের শ্মশানে সেই বিকেলে কোন বেওয়ারিশ লাশ জ্বালানো হয় নি। তাহলে? একটাই সন্দেহ, ওই ময়লা ফেলার ঠেলাগাড়ির মধ্যে সত্যি কোন লাশ ছিল কি ?
     
    আমি উত্তেজনায় লাফিয়ে উঠি।  তার মানে বিক্রম ওই ভাবে সবার সামনে দিয়ে বেরিয়ে গেছে! ও এম জি!
     
    কোসলে বিষণ্ণ হাসেন। বলেন লাশের ফর্সা পা, মোজার দাগ এবং উর্দূতে লেখা ট্যাটু দেখে ওনার কিছু সন্দেহ হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ বিভাগ পাত্তা দেয় নি।
    সিমরন ভ্যাবাচাকা। জানতে চায় দু’মাস আগে ওই ভাবে চুক্কি দিয়ে পালিয়ে বেঙ্গল চলে যাওয়া বিক্রমের সঙ্গে বিলাসপুরের পারমিন্দরের মৃত্যুকে কীভাবে মেলানো যায় ?
     
    --ওই একই রকম উর্দুতে লেখা নীল উল্কি পারমিন্দরের পায়েও আছে। ওরা বোধহয় কোন সিক্রেট অ্যানার্কিস্ট গ্রুপের সদস্য। এই ফোটোটা দেখ। পারমিন্দরের ডেডবডির অন্য ছবিগুলো দেখার দরকার নেই, শুধু পায়ের আলাদা ছবিটা দেখ, গোড়ালির কাছে নূপুর পরার জায়গায় উর্দুতে কিছু একটা লেখা। ঠিক সেই মুখঢাকা লাশের পায়ে যেরকম দেখেছিলাম। আমি উর্দূ পড়তে পারি না। সিমরন, এটার স্ক্রীনশট নিয়ে  তোর মোবাইলে বড় করে আমাদের দেখা।
     
      সিমরন কাজটা পুরো করে আমাদের হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দেয়। আমরা ভুরু কুঁচকে দেখতে গিয়ে থ’ হয়ে যাই। মোবাইলের পর্দায় ফুটে উঠেছে যে উল্কির চিহ্ন সেটা উর্দূ নয়।
                   
                                                                                    
       
       
       (চলবে)
       
      পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    • ধারাবাহিক | ১৩ জুন ২০২২ | ১৪৮৭ বার পঠিত
    • আরও পড়ুন
      বকবকস  - Falguni Ghosh
    • মতামত দিন
    • বিষয়বস্তু*:
    • Ranjan Roy | ১৪ জুন ২০২২ ১৯:০২509003
    • হ্যাঁ, অ্যাডমিনকে রিকোয়েস্ট করছি --কীভাবে পোস্ট করলে উল্কিটা এসে যাবে? ওটা ইম্পর্ট্যান্ট, পরেও কাজে লাগবে।
      আমার ওয়ার্ড ফাইলে তো স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
    • Ranjan Roy | ১৫ জুন ২০২২ ১৭:৩৯509032
    • বিপ্লব,
        এবার আরেকবার দেখুন। হুতোর সৌজন্যে উল্কি দেখা যাচ্ছে।
    • Kishore Ghosal | ১৫ জুন ২০২২ ২৩:১৪509042
    •  দুর্দান্ত। আপনার কাহিনী পড়ে বহুযুগ পরে বেশ একটা টেনশন অনুভব করছি।  পরের সংখ্যার অপেক্ষায় রইলাম।   
    • বিপ্লব রহমান | ১৬ জুন ২০২২ ০৫:৫০509048
    • রঞ্জন,  নাহ! মোবাইল ভার্সনে উল্কি ইমেজ নাই। পরে কম্পিউটারে দেখবো। 
       
      রয়েসয়ে জমিয়ে লিখুন heart
    • Kishore Ghosal | ১৬ জুন ২০২২ ২২:১০509076
    • কম্পুতে দেখা যাচ্ছে - ccjlmlbaalb - এরকম ধরনের কিছু। cheeky
    • মতামত দিন
    • বিষয়বস্তু*:
    • কি, কেন, ইত্যাদি
    • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
    • আমাদের কথা
    • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
    • বুলবুলভাজা
    • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
    • হরিদাস পালেরা
    • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
    • টইপত্তর
    • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
    • ভাটিয়া৯
    • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
    গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


    মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
    পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। সুচিন্তিত মতামত দিন