এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  উপন্যাস

  • ওইখানে যেয়ো নাকো তুমি( রহস্য উপন্যাস)ঃ পর্ব ১২

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ২৫ জুলাই ২০২২ | ১২২১ বার পঠিত | রেটিং ৪.৭ (৩ জন)
  • সৌরভ
    লোকটা চাইলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ভেতরে ঢুকে আসতে পারে। ওর হাতে একটা ব্যাগ, তাতে কী আছে সে নিয়ে আমার কোন কৌতূহল নেই। সম্ভব হলে আমার বাপের বয়েসি এই লোকটির সঙ্গে আমি কোন সম্পর্ক রাখতে চাইনে।
    বুড়োটে লোকটার চেয়ে আমার শারীরিক ক্ষমতা সম্ভবতঃ বেশি। কিন্তু ওকে আমি সেভাবে আটকাতে পারব না। কোন না কোন ধারায় ফাঁসিয়ে কেস খাইয়ে দিতে পারে। নিজে প্রাক্তন পুলিশ অফিসার এবং বর্তমান আই জি ওনার বন্ধু।
    আমি কোন কথা বলতে পারি না, তাকিয়ে থাকি।
    কিন্তু লোকটা  জোর- জবরদস্তি করে না, ঘরে ঢোকে না; ইন্ডিয়ান পেনাল কোড গুলে খেয়েছে যে!
      ভারতীয় দণ্ডবিধির   ‘ধারা ৪৪১ অনুযায়ী ‘যদি কোন ব্যক্তি অন্যের ভবন অথবা জমি, ক্ষেত, বাগান পুকুর আদি স্থাবর সম্পত্তিতে অনধিকার প্রবেশ করে অথবা বিধিসম্মত উপায়ে প্রবেশ করিয়াও  সম্পত্তির মালিকের ইচ্ছার বিরুদ্ধ অতিরিক্ত সময়  থাকে , অথবা তাহাকে ভয় দেখাইতে, অপমান বা ক্রোধিত করার উদ্দেশ্যে অথবা সেই সম্পত্তি হস্তগত করিবার উদ্দেশ্যে প্রবেশ করিয়া থাকে তাহা হইলে  তাহা অপরাধিক কৃত্য বলিয়া বিবেচিত হইবে এবং এই ধারা অনুযায়ী দণ্ডনীয় হইবে’।
    কিন্তু একটা সময় আমি চোখ নামিয়ে দরজা থেকে সরে যাই।
    লোকটা যেন কিছুই হয়নি এমন ভান করে ঘরের মধ্যে ঢুকে আমার কম্প্যুটার টেবিলে নিজের ব্যাগটা নামিয়ে রেখে হাঁফাতে থাকে। ইশারায় এক গেলাস জল চায়।
    আমি রান্নাঘরে গিয়ে জল আনতে আনতে টেবিলের চেহারা পালটে যায় । দেখি ওই ঝোলার থেকে বেরিয়ে এসেছে বিরিয়ানি আর কাবাব। এবং তিনি এরমধ্যেই দুটো ডিস্পোজেবল প্লেটে সেগুলো সাজিয়ে দিয়েছেন।
    আমি নির্লজ্জ লোকটার তামাশা দেখে হতবাক।
    --নেঃ ; খেতে শুরু কর। আমিও খাচ্ছি। আমাদের দুজনেরই আজ খাওয়া হয়নি। বড্ড ক্ষিদে পেয়েছে।
    এইসব বলে কোসলে স্যার খেতে শুরু করলেন।
    আমি না করতে যাচ্ছিলাম।
    হায়ার সেকেন্ডারি পরীক্ষার বছর। বাবা বিলাসপুর জেলার মূলমূলা গ্রামে নতুন চাঁদশীর বাঙালী দাওয়াখানা খুলে বসেছেন।
    আমি রায়পুরের ১৪ কিলোমিটার দূরে এয়ারপোর্টের কাছে বাঙালি রিফিউজিদের মানা ক্যাম্পে মা’র সঙ্গে থাকি। তিনমাস পরে বোর্ড, সেই পরীক্ষার টেনশন।
    সেদিন মা’র জ্বর হয়েছে।
    আমি ডাক্তার ডাকতে গেছি। তখনও মধুসূদন ডাক্তাররা বাড়িতে আসার কল নিতেন। আমি গিয়ে দেখি উনি পরসদা গ্রামে রোগী দেখতে গেছেন। ফিরতে ঘন্টা দুই।  বসে রইলাম। ততক্ষণে চেম্বারে ওঁর  প্রতীক্ষায় বসে থাকা রোগীর সংখ্যা বেশ বেড়ে গেছে।
    উনি এসে সব শুনে একটা ক্যাপসুল আর প্যারাসিটামল মিকশচার দিয়ে বললেন—বাড়ি যা; এই ওষুধ মাকে খাইয়ে দে। আধঘন্টায় জ্বর নেমে যাবে।  আমি আসছি। এরমধ্যে জ্বর বেড়ে গেলে মাথা ধুইয়ে দিস।
    আমি সাইকেল চালিয়ে বাড়ি এসে দেখি বাবা এসে গেছেন। মায়ের মাথা ধুইয়ে দিচ্ছেন, বোধহয় জ্বর বেড়ে গেছল।
    আমাকে দেখে অগ্নিমূর্তি হয়ে জানতে চাইলেন এতক্ষণ বন্ধুদের সঙ্গে কোথায় কোন নরক গুলজার করছিলাম? প্যারাসিটামল ট্যাবলেট বাড়িতেই ছিল। সেটা আনতে দু’ঘন্টা কেন লাগলো? ডাক্তারকে কল দেওয়া? মিথ্যে কথা! কোথায় তিনি?
    আমি কিছু ভাল করে বোঝাবার আগেই টেনে তিনটে চড়!
    উনি এসে দেখেন ঘরের দরজা খোলা, একটা কুকুর রান্নাঘরে ঢুকে গেছে আর মা জ্বরে অচেতন।
    আমার মাথা ঘুরে গেল। ব্যাগ থেকে মিকশচার আর ক্যাপসুল টেবিলের উপর রেখে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলাম।
    রাস্তা দিয়ে উদ্দেশ্যহীন ভাবে হেঁটে যাচ্ছিলাম। দেখি মধুসূদন  ডাক্তারের ভটভটি আমাদের বাড়ির দোরগোড়ায় থামছে।
     সন্ধ্যেবেলা বাড়ি ফিরে দেখি বাবা শুকনো মুখে বসে রয়েছেন। দু’থালা খাবার ঢাকা দিয়ে রাখা। বললেন—চল, খেতে বসি। আমারও আজ খাওয়া জোটে নি। তোর মায়ের জ্বর নেমে গেছে, ঘুমুচ্ছে। ও’ঘরে চল।
    আমি উত্তর না দিয়ে নিজের ঘরে ঢুকে যাই। কিন্তু দরজা বন্ধ করার আগে বাবা এসে ঢুকে পড়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
    --আমি খুব খারাপ রে বাপ! না জাইন্যা না বুইঝ্যা তর গায়ে হাত তুলসি। এইবারের মত মাপ কইর‍্যা দে!
    আমি খেতে বসে যাই।

    কোসলে স্যার খাওয়া শেষ করে হাত ধুয়ে একটা সিগ্রেট ধরান। তারপর ব্যাগ থেকে আর একটা খাম বের করেন।
    আমি খুলে অবাক। তাতে একটা ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট দেওয়া রয়েছে।
    কিন্তু এ কীরকম সার্টিফিকেট! এটা তো বিলাসপুরের লায়ন্স ক্লাবের চেয়ারম্যানের দেওয়া। তাতে বড় করে বলা রয়েছে আমি লায়ন্স ক্লাবের হয়ে বিভিন্ন সামাজিক কার্যে কত সক্রিয়; রক্তদান শিবির, টীকাকরণ, আই -ক্যাম্প, নাইট স্কুলে পড়ানো ইত্যাদি।
    এসব তো কিছুই করিনি। বাপের জন্মে লায়ন্স ক্লাবের আঙিনায় পা রাখি নি। তাহলে এসব কী?
    উনি আর একটা কাগজ বের করে বললেন –“ এই অ্যাপ্লিকেশনটা পড়ে সাইন কর। তারপর আগামী সোমবারে রায়পুর চলে যা। সেখানে আধা সরকারি অ্যাডাল্ট এডুকেশন সেন্টারে  তোর ইন্টারভিউ। কন্সাল্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করবি। বিভিন্ন রিপোর্ট তৈরি করা, অ্যানালিসিস এবং ফিল্ড স্টাডি।
    এসব ফর্ম্যালিটি পুরো করতে হবে। রায়পুরের কলেক্টর ইন্টারভিউ বোর্ডে থাকবেন। তোর হয়ে যাবে, আগামী মাসের ১ তারিখ থেকে ওখানে জয়েন করবি। মাইনে শুরুতে দশ হাজার টাকা”।
    লোকটার স্পর্দ্ধা দেখে আমার হাত পা ঝিমঝিম করছে। ইচ্ছে করছে ওর বিরিয়ানি এখানেই বমি করে উগরে দিই।
    নিজেকে সামলাতে এক গেলাস জল খেলাম, তারপর ওই কাগজ গুলো ঠেলে দিয়ে বললাম—বাড়ি যান, স্যর। এগুলোও নিয়ে যান।
    কোসলে হো হো করে হেসে উঠলেন।
    --বংগালীবাবুর নাকের আগায় গোঁসা! বিরিয়ানি ভালো হয়নি নাকি নতুন চাকরি পছন্দ হয় নি?
    আমার চোয়ালের হাড় শক্ত হয়। উঠে দাঁড়াই।
    তারপর ওনার চোখে চোখ রেখে বলি—তাড়িয়ে দিয়ে আবার ন্যাকামি করছেন? গরু মেরে জুতো দান! আমি এখন কোথায় চাকরি করব  বা আদৌ করব কিনা-- সেটাও আপনি ঠিক করে দেবেন? নিজেকে কী ভাবেন? আমি আপনার দেওয়া কোন চাকরি করব না। রাত হয়েছে, বাড়ি যান।
    কোসলে স্যারের চেহারায় এবার একটা অন্যরকম হাসি যার মানে বুঝতে আমি অপারগ।
    উনি বড় করে নিঃশ্বাস টেনে নিলেন। বুকের ছাতি যেন একটু চওড়া হল। আমার দিকে কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে গলার স্বর পালটে বললেন—মিঃ সৌরভ বিশোয়াস! ইউ মাস্ট ফেস দ্য ইন্টারভিউ অন মানডে নেক্সট! নো এক্সকিউজ, দিস ইজ মাই অর্ডার, ডু ইউ কপি?
    --মিঃ কোসলে স্যার। আই অ্যাম নট ইওর সাবর্ডিনেট। আই রিফিউজ টু টেক এনি অর্ডার ফ্রম ইউ ; ইজ ইট ক্লিয়ার?
    --দিস ইজ ইনসাবর্ডিনেশন! হোয়াট অডাসিটি! মেরে পাস কাম করোগে, হর মাহিনা তনখা ভী লেও গে, ফির ইয়ে বদতমীজি?
    কোন ভাষায় কথা বলছেন উনি? নাকি আমি পাগল হয়ে গেছি?
    কোসলে স্মিতমুখে এগিয়ে এসে আমার দু’কাঁধে হাত রাখেন, তারপর চাপ দিয়ে আমায় বিছানায় বসিয়ে দেন।
    --এখনও বুঝতে পারিসনি? এই বুদ্ধি নিয়ে আমার সঙ্গে কাজ করবি? আরে, দুপুরে অফিসে ওসব ড্রামা ছিল। পিওর ড্রামা। তুই আমার অফিসেই আছিস। তোকে তাড়ানো হয়নি। হরগিজ নহীঁ।
    আমি আর আইজি সাহেব মিলে এই প্ল্যানটা করেছি, একটু রিস্কি। আরে এসব তো আমাদের পেশায় আছেই, তুই পারবি। আগামী মাস থেকে তুই রায়পুরের অ্যাডাল্ট এডুকেশন সেন্টারে কাজ করবি, মাত্র তিনমাসের জন্যে। ধর , তোকে ডেপুটেশনে পাঠাচ্ছি।
    --দুপুরে ওই ড্রামার কি দরকার ছিল? কেন সবার সামনে আমাকে ওরকম --?
    --শোন, দেওয়ালেরও কান আছে যে! বিলাসপুরে বিক্রমের চ্যালাচামুণ্ডাদের পুরো হদিস এখনও পাইনি।  যেভাবে বিক্রম আমাদের বোকা বানিয়ে বেরিয়ে গেল তাতে এটা স্পষ্ট যে ওদের শহুরে নেটওয়ার্ক বা স্লীপার সেল ভালরকম সক্রিয় রয়েছে। তারা কারা? সেটা এখনও ঠিক জানা যায়নি।
    তবে পারমিন্দর, সোনালী এবং লোকেশ যে ওদের হার্ডকোর মেম্বার সেটা জানতে পেরেছি। এটাও জানি যে বিক্রম বেঙ্গলে যেতে পারেনি। ও এখন বস্তারের কোথাও আছে, বীজাপুর বা সুকমায়। দন্তেওয়াড়ায় হলেও হতে পারে। আমরা বেড়াজাল ফেলেছি, একটু একটু করে গুটিয়ে আনছি।
    কিছু কিছু জিনিস এখনও অস্পষ্ট। যেমন,  সোনালিকে ওই থ্রেট মেসেজগুলো কারা পাঠাত? আমার মনে হচ্ছে ওগুলো অন্য  নাম্বার ইউজ করে হয় পারমিন্দর বা লোকেশ পাঠাত; উদ্দেশ্য পুলিশের সন্দেহের মুখ ঘুরিয়ে দেওয়া । তাহলে লোকেশকে কারা মারল, কেন মারল?
    আমাদের খবরি কিস্টাইয়া মারা গেছে। কিন্তু কাউকে ওদের ব্যুহভেদ করে বস্তারে ঢুকতে হবে। তুই পারবি।
    তার প্রথম ধাপ তোকে আমাদের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছেঁটে ফেলে রায়পুরে কাজ করতে হবে। নতুন সিম কার্ড রায়পুরে পাঠিয়ে দেব অন্য নামে, শুধু সেই নম্বর থেকে কথা বলবি।  এ’কমাসের মাইনেও আমার এখানে জমা থাকবে। ফিরে এলে একসঙ্গে পাবি।
    --কিন্তু আমাকে ওইভাবে অপমান?
    --এখনও বুঝিস নি? শোন, এখন যা বলছি সেটা আমার অফিসেও কেউ জানে না। সিমরন , ড্রাইভার দামলে কেউ নয়। তুই বেরিয়ে যাবার একঘন্টা পরে আমার নির্দেশে  দামলে  সামনের পান-সিগ্রেটের দোকান, চায়ের আর কাটলেটের দোকান –সব জায়গায় গেছে। গিয়ে বলেছে সৌরভ ভাইয়া আপনাদের দোকানে কোন বাকিতে কিছু নিয়ে অফিসের নামে লিখিয়ে গেছে কিনা।
      আরও বলেছে, সৌরভ ভাইয়া এর পর এখানে কিছু কিনতে এলে যেন ধারে না দিয়ে নগদ পয়সা চাওয়া হয়। কারণ, ভাইয়াকে স্যার চাকরি থেকে ছাড়িয়ে দিয়েছে। ওরকম করে তাকাস না।
    তোর খারাপ লাগা স্বাভাবিক, কিন্তু আমাদের উপায় ছিল না, আই জি শ্রীবাস্তব স্যারের নির্দেশ। শহরে ছড়িয়ে পড়ূক খবরটা --রাগারাগির পর থেকে তুই আর আমাদের এজেন্সিতে নেই।
    --ঠিক আছে, তবে এই শেষ। এটা আমার লাস্ট অ্যাসাইনমেন্ট। আপনাদের প্রয়োজনে  আমি আর ইজ্জতে বাট লাগাতে দেব না।
    ***********************************************************************

    দু’মাস পর
    রায়পুরের  রেলস্টেশন থেকে চার কিলোমিটার দূরে লাখে নগর এলাকায় যশবন্ত প্লাজা।
    তার দোতলায় একটি স্থানীয় সংবাদপত্রের অফিস। একসময় খুব রমরমিয়ে চলত, এখন কম্পিটিশন বেড়ে যাওয়ায় একটু নড়বড়ে হয়ে গেছে। তাই প্রৌঢ় শিক্ষার রিসোর্স সেন্টারকে ওদের বিশাল অফিস কমপ্লেক্সের একটা অংশ ভাড়া দিয়েছে। অবশ্য সেন্টারের গভর্নিং বডিতে ওই পত্রিকার একজন রিপ্রেজেন্টেটিভ রয়েছে।
    তবে  রিসোর্স সেন্টারের অফিস এরিয়াটাও বেশ বড়। একটা হলঘর, সেখানে সারি সারি টেবিল এবং কম্পিউটার ও প্রিন্টার নিয়ে  বসে অন্ততঃ জনা বারো অল্পবয়েসি ছেলেমেয়ে। পাশের একটি ঘরে লাইব্রেরি এবং গুদাম। আবার কোন বিশেষ ওয়ার্কশপ বা মিটিং এর সময় ওই হলঘরটাই বদলে গিয়ে অন্য চেহারা নেয়।
     কাজটা অল্পদিনেই ভাল লেগে গেল। পরিশ্রম খুব একটা নেই। মূল কাজ হল স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের ওয়ার্কশপ করিয়ে তিন স্তরের প্রাইমার তৈরি করা। তাও শুধু ছত্তিশগড়ি ও হিন্দিতে হলেই হবে না। বস্তার অঞ্চলের মারিয়া মুরিয়া আদিবাসীদের যে উপভাষা –গোণ্ডী, হল্বী, সাদরি ও কুডুক—তাতেও হতে হবে।
    আবার প্রাইমার হবে তিনস্তরের —৫০০ শব্দ, ৮০০ শব্দ এবং ১২০০ শব্দ। সেগুলোতে ছবি থাকা চাই। প্রথম দিকে যুক্তাক্ষর বর্জিত তিন শব্দের বাক্য দিয়ে তৈরি লেসন হতে হবে। এসবের লক্ষ্য ছোটবাচ্চা নয়, খেটে খাওয়া গেঁয়ো বুড়োর দল। যারা সারাদিনের পরিশ্রমের পর রাত্তিরে পড়তে এলেও বসে ঢুলতে থাকে। তাদের বছরে অন্ততঃ তিনশ ঘন্টা পড়া হওয়া চাই।
     তারপর  প্রাইমার বইগুলো ছেপে বের করার আগে দিল্লির বিশেষজ্ঞদের দিয়ে সেগুলো ভেটিং করাতে হবে। আবার এগুলো যারা পড়াবে তাদের আলাদা করে ট্রেনিং দিতে হয়। কারণ বাচ্চারা যা দশ বছরে শিখেছে সেটা বুড়োদের একবছরে শেখাতে হবে। তারপর পরীক্ষায় বসাতে  হবে।
    এরপর পোস্ট-লিটারেটদের জন্যে আলাদা বই বানাতে হবে, নইলে অনভ্যাসে যা শিখেছে তা ভুলে যাবে। মহিলা, দলিত ও আদিবাসীদের দিকে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।
    আমায় প্রথম দিকে কাজ দেওয়া হল—ম্যানুয়াল ও লিটারেচার পড়া এবং সেন্ট্রাল গভর্ন্মেন্টের জন্য রিপোর্ট তৈরি করা। দু’মাসে কাজ মোটামুটি শিখে নিয়েছি। কিন্তু আর একমাস পরেই তো আমার কাজ শেষ, তাহলে? কোসলে স্যার তো তিনমাসের কথাই বলেছিলেন।
    কাজটা ভাল লেগেছে। কয়েকবার ফিল্ডে গেছি।
    এখানে একটা ক্যান্টিন আছে। দিনে দুবার চা, একবার কফি দেওয়া হয়। পয়সা লাগে না। আর যারা বাড়ি থেকে লাঞ্চ আনে না, যেমন আমি, তাদের ওখান থেকে সুলভ দরে দোসা দেওয়া হয়। এদের ডায়রেক্টর ভদ্রলোক বোধহয় খেতে খুব ভালবাসে। 
    এখনও আমাকে কেউ আলাদা করে কোন সিমকার্ড দেয় নি। বিলাসপুর থেকে কারও কোন ফোন আসে নি। একবারও নয়। সিমরনও তো একবার এই অফিসের নম্বরে ফোন করতে পারত।
    না না, কেন করবে?  চাকরি চলে যাবে ভাবছে নিঘঘাৎ।
    আচ্ছা, কোসলে স্যার ঢপ দেননি তো! হয়ত আমাকে তাড়িয়েই দিয়েছে, বাকিটা একটু বিবেকের দংশনের ফল। আমাকে ওনার থেকে কোন কাজ করতে হবে মনে হচ্ছে না। দু’মাসে নো কমিউনিকেশন!

    কিন্তু পরশু দিন একটা ব্যাপার হল। আমার আলাদা করে ডাক পড়ল বড়কর্তার চেম্বারে।
    ডায়রেক্টর ভদ্রলোক মাঝবয়েসি তেলুগু।  সেদিন আমাকে ওর চেম্বারে আলাদা করে ডেকে খুব উৎসাহ দিলেন। বল্লেন যে আমি নাকি অল্পদিনেই কাজ ভালভাবে শিখে নিয়েছি। ছ’মাসের মাথায় স্যালারি রিভিউ হবে, তাতে উনি গভর্নিং বডির কাছে আমার মাইনে বাড়ানোর জন্যে রেকমেন্ড করবেন।

    আমি উঠে আসছিলাম। উনি দেওয়ালের দিকে তাকিয়ে খুব ক্যাজুয়াল ভঙ্গিতে বললেন—আপনি এবার রিসার্চ প্রোজেক্টের দায়িত্ব পাচ্ছেন। নানা জায়গায় কথা বলার এবং যোগাযোগ করতে হলে টেলিফোনের বিল মন্দ হবে না। তাই দরকার হলে আপনি আমার কামরায় এসে ল্যান্ডলাইন ব্যবহার করতে পারেন।
    চমকে উঠলেও চেহারায় সেটা প্রকাশ করি নি। জিজ্ঞেস করলাম কী প্রজেক্ট? কোথায় যেতে হবে? উনি বললেন যে যথাসময়ে জানিয়ে দেওয়া হবে।
    না, আমি কাউকেই ফোন করি নি।  কিন্তু আজ একটু আগে  ল্যান্ডলাইনে ফোন এল। পামগড় থেকে আমার পিতৃদেব চাঁদসীর ডাক্তার ফোন করেছেন।  ডায়রেক্টরের চাপরাশি এসে আমায় ডেকে নিয়ে গেল। উনি খুব মন দিয়ে একটা রিপোর্ট পড়ছিলেন। আমাকে ইশারায় ফোনটা দেখিয়ে ফের পড়ায় ডুবে গেলেন।
    --হ্যালো, কেমন আছেন বাবা? শরীর ভাল আছে তো? তবিয়ত ঠিক হ্যায়?
    --স্টুপিড! আমি কোসলে বলছি।
    --আচ্ছা, আভি ঠিক হুয়া। চিন্তা ন করে। বাকি সব ক্যায়সা হ্যায়?
    --মন দিয়ে শোন। আগামী মাসে, মানে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে দুর্গাপূজো। কিন্তু তুই ছুটি নিবি না। ওই সময় দিল্লি থেকে প্রৌঢ় শিক্ষার ডায়রেক্টর জেনারেল ডক্টর সম্পতলাল পরিদর্শনে আসছেন। তিনদিনের জন্য বস্তার গিয়ে বিভিন্ন সেন্টারের কাজকর্ম সরেজমিনে দেখবেন।
    উনি বিশেষ করে যাবেন দন্তেওয়াড়া এবং ওখানকার সলওয়া জুড়ূম ক্যাম্প।  শোন, তোদের ডিজি সায়েব ধার্মিক হিন্দু, মহা-অষ্টমীতে পুজো দেবেন রাজাদের কুলদেবী দন্তেশ্বরী মাঈয়ের মন্দিরে।
    --আমি কি আসব? মানে পুজোর ক’টা দিন? আচ্ছা নতুন চাকরিতে এ’বছর ছুটি নিতে বারণ করছেন?
    --শোন, ডিজি’র সঙ্গে বিরাট কাফিলা যাবে। তোদের দুটো গাড়ি এবং শিক্ষা ও অন্য কিছু সরকারি বিভাগ আর ক’টা এনজিওদের গাড়ি মিলে মোট ন’টা গাড়ি। তুই এই সেন্টারের টিমের দায়িত্ব পাবি, আমি বলছি।
    একটা কথা, আমরা রিস্ক নেব। কিন্তু ক্যালকুলেটেড রিস্ক। তুই ওই কাফিলার মাঝামাঝি তোদের গাড়িটা নিয়ে যাবি। বুঝলি? ডিজি'র গাড়ির পেছনেও না, আবার গোটা কাফিলার লেজের দিকেও না, ঠিক মাঝামাঝি। এ নিয়ে অন্য কারও কথা শুনবি না, মাই অর্ডার।
    --ঠিক আছে, বাবা। আপনি যা বলছেন তাই হবে।
    --শেষটা শুনে নে। তুই বস্তারে একটা ফিল্ড স্টাডির দায়িত্ব পাচ্ছিস। যে যাই জ্ঞান দিক, তুই নিবি—কোণ্ডাগাঁও, দন্তেওয়াড়া, সুকমা এবং বীজাপুর। এখন ছাড়ছি, তুই ফোন করবি না। আমরাই ল্যান্ড লাইনে করব। কখনও কোন এমার্জেন্সি হলে তবেই আমাকে তোর মোবাইল থেকে ফোন করবি।

    মহালয়া
     এতসকালে ঘুম ভাঙে না, কিন্তু মহালয়ার দিন আমাদের মানা ক্যাম্পের বাঙালী উদ্বাস্তু উপনিবেশে ভোর আসত জেগে ওঠার গান গেয়ে। ঘরে ঘরে রেডিও আর টিভি । সকাল থেকে বেজে উঠত “ জাগো দুর্গা, জাগো দশপ্রহরণধারিণী”।
    এবার  রায়পুরের জয়স্তম্ভ চৌকের দোকান থেকে  কাল “মহিষাসুরমর্দিনী”র ক্যাসেট কিনে এনেছিলাম। আজ সকাল থেকেই মনটা বেশ খুশি খুশি। রিসোর্স সেন্টারে গিয়ে দেখি সাজো সাজো রব। পঞ্চমীর দিন লিটারেসির কাফিলা রওনা হবে। তার আগের দিন রাতে ডিজি সাহেব দিল্লি থেকে প্লেনে রায়পুরে এসে যাবেন। আমরা সবাই দুপুর নাগাদ রওনা হয়ে রাত্তিরে বস্তারের হেডকোয়ার্টার জগদলপুরে বিশ্রাম করব।  
     সপ্তমীর দিন সকালে জলখাবারের পর কালেক্টার , কমিশনারের সঙ্গে মিটিং। বিকেলে আমরা দন্তেওয়াড়া পৌঁছে যাব। উনি দশ কিলোমিটার দূরের  একটি সলওয়া জুড়ুম ক্যাম্পে গিয়ে নবগঠিত সাক্ষরতা কেন্দ্র উদ্বোধন করবেন।
    পরের দিন দন্তেওয়াড়ায় উনি দেবী দন্তেশ্বরীর পুজো দিয়ে কমিশনারের সঙ্গে ওপেন মিটিং করবেন। তারপর নবমীর দিন ফেরার পথে উনি কোণ্ডাগাঁওয়ে আর একটি কেন্দ্রের উদ্বোধন করে রাত্রে রায়পুর ফিরে দশমীর ভোরের প্লেন ধরে দিল্লি।
    কিন্তু আমাদের অফিসে আজ থেকে দফায় দফায় মিটিং চলছে। দু’জন আগে কিছু লিটারেচার ও বইটই নিয়ে কাল দন্তেওয়াড়া রওনা হয়ে যাবে। সলওয়া জুড়ুম লিটারেসি সেন্টারকে আগে ভাগে সাজিয়ে রাখবে।
    আমি বললাম যে ওই টিমে যেতে চাই। কিন্তু ডায়রেক্টর পত্রপাঠ নাকচ করে বললেন—আপনি যাবেন মূল ক্যারাভ্যানে। আমি যাচ্ছি না। আমার প্রতিনিধি হয়ে আপনিই যাবেন। ওখানে আপনাকে শুধু টিমের সিকুরিটি আর আমাদের ডিসপ্লে এসব দেখতে হবে। দুটো গাড়িতে আটজন যাবে। তাতে পাঁচজন মেয়ে। আপনি ওদের থাকাখাওয়ার সুবিধে অসুবিধে এবং ডিসিপ্লিন –সব দেখবেন।
    দিল্লির টিমের সামনে আমাদের ইমেজ যেন ঠিক থাকে। বাজেট ইত্যাদি আমি বুঝিয়ে দেব। দন্তেওয়াড়ার ভারপ্রাপ্ত কো-অর্ডিনেটরের সঙ্গে আজ আমাদের বৈঠক হয়ে গেলে সব  ফাইনাল হয়ে যাবে।
    লাঞ্চের পর সিগ্রেট ফুঁকতে নীচে নেমে গেলাম।
    একটা মোড় পেরিয়ে ডানহাতের গলির মুখে ঠাকুরের পানঠেলার খুব নাম। এক খিলি পান খেলে কেমন হয়? মুখটা কেমন যেন লাগছে।
    মিঠিপাত্তি ও চমনবাহার দেওয়া পান খেয়ে মনটা বেশ ফুরফুরে হল। ঘড়ির দিকে চোখ পড়তেই সর্বনাশ। আধঘন্টার বেশি সময়  কেটে গেছে। এতক্ষণে দন্তেওয়াড়ার প্রতিনিধি এসে গেছে কি? মনে মনে হিসেব কষি। এখান থেকে জগদলপুর  ৩০০ আর সেখান থেকে দন্তেওয়াড়া আরও ৮৫ কিলোমিটার।
    বাসে আসতে আসতে হাড়ভাজাভাজা হবে। তবে ওই হাইওয়েটাই ছত্তিশগড়ের সবচেয়ে ভাল এবং চওড়া রাস্তা। ওখানে সরকারি বাসও ঘন্টায় ৭০-৮০ কিলোমিটার স্পীডে চলে।
    দোতলায় পৌঁছুতেই তলব—স্যারের কামরায় মিটিং শুরু হয়ে গেছে। শিগগির যান।
    ছোট্ট চেম্বারে ঠাসাঠাসি করে অন্ততঃ ১২ জন বসে আছে। স্যারের সামনে বসে একটি শাড়ি পড়া মেয়ে অনেক কিছু বলে যাচ্ছে। আমি ওর পিঠটা দেখতে পাচ্ছি। সবচেয়ে পেছনের সারিতে গিয়ে চুপচাপ চোরের মত দেয়াল ঘেঁষে বসে পড়ি। কিন্তু সবার উশখুশের চোটে ডিরেক্টরের নজর পড়ল আমার দিকে।
    --এতক্ষণ কোথায় ছিলেন? কাউকে বলেও যান নি!
    যাকগে, পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি ইনি সৌরভ বিশোয়াস। আমাদের গোটা টিমের কো-অর্ডিনেটর।  আর ইনি দন্তেওয়াড়ার ভারপ্রাপ্ত সংগঠক, অত্যন্ত প্রমিজিং। আমাদের কাজে চার মাস আগে যুক্ত হয়েছেন।
    মেয়েটি চেয়ার ছেড়ে উঠে আমার দিকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকায়। ওর ভুরু সামান্য কুঁচকে উঠে আবার স্বাভাবিক। কিন্তু আমার গলা শুকিয়ে গেছে।  একে আমি চিনি, যদিও শাড়ি পরা অবস্থায় কখনও দেখি নি।
    আমি জলের গেলাস খুঁজছি। মেয়েটি চোখ সরায় নি।
    -- এর নাম— সোনালি মিশ্র, খুব ব্রিলিয়ান্ট।এম ফিলের পেপার জমা দিয়েছেন।
                                                                                                                               (চলবে)

     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ২৫ জুলাই ২০২২ | ১২২১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • kk | 2601:448:c400:9fe0:dd94:297c:5bcd:713f | ২৫ জুলাই ২০২২ ২০:০৮510320
  • হুঁ, গল্প ইন্টারেস্টিং মোড় নিচ্ছে। একটা জিনিষ জানার কৌতুহল হচ্ছে। রঞ্জনদা, এত ডিটেইল্ড ও কমপ্লেক্স গোয়েন্দা গল্প আপনি কি আগেই পুরো কাহিনীটা মাথার মধ্যে ছকে নিয়ে তারপর লেখা শুরু করেন? পেনসিলে আগে ছবিটা এঁকে নিয়ে রঙ ভরানোর মত? নাকি লিখতে লিখতেই এগোয়? নো আউটলাইন, জাস্ট তুলি নিয়ে ধীরে ধীরে অবয়ব ফুটিয়ে তোলা?
  • Amit Sengupta | 142.120.2.112 | ২৫ জুলাই ২০২২ ২০:২৬510322
  • দুর্দান্ত চলছে। একটা ছোট্ট কথা ছিল। 
    প্রবাদটা "গরু মেরে জুতো দান"। অর্থাৎ কারো বড় ক্ষতি যেমন তার গরুটাকে মেরে ফেলে সান্ত্বনা হিসেবে সেই গরুর চামড়া দিয়ে একজোড়া জুতো বানিয়ে দান করা। 
  • Ranjan Roy | ২৫ জুলাই ২০২২ ২৩:২৯510329
  • অমিত
     একদম ঠিক বলেছেন। শুধরে নিচ্ছি।
    অক্টোবর ১৬তে লুরুতে থাকব। এক ঘন্টার জন্যে আড্ডা হতে পারে কি?
     
    কেকে
      এইটা একটা মজার ব্যাপার।
    প্রত্যেকবার ঠিক করি লেখা পোস্ট করার ঠিক তিনদিন  আগে কম্প্যু খুলে ভাবতে বসব। মাথায় কিছু আসছে না। ঠিক আছে বসে দেখি। কল্পনায় ভিস্যুয়ালাইজ করি।  ভয় পাই, কিন্তু সাহস করে বসলে কিছু হয়ে যায়। তবে কোথায় যাবে, কী হবে তার আগে জানি না। যেমন কিস্টাইয়া কী করে মারা গেল আগে জানতাম না। পরে করেছি। তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে পুরনো কিস্তিগুলো দু'এক জায়গায় খুলে চুপচাপ শুধরে নিয়েছি।
      সৌরভকে বের করে দেওয়া বা এই কিস্তিতে মেয়েটার সঙ্গে দেখা হওইয়া আগে জানতাম না। এবার ভেবেছি।  এই চ্যালেঞ্জে বেশ মজা পাচ্ছি। শেষটা আবছা মত ভেবে রেখেছি।
      আমার সুবিধে?
    রিটায়ার করার পর আমি ওই রিসোর্স সেন্টারে পাঁচ বছর কন্সাল্ট্যান্টের কাজ করেছি। দন্তেওয়াড়া সুকমা গেছি। তার কিছু ডিটেইলস এখানে উঠে আসছে।
  • Amit Sengupta | 142.120.2.112 | ২৫ জুলাই ২০২২ ২৩:৩৭510330
  • আমার ভাগ্য ভাল। কিছুদিন ধরে US, কানাডায় আছি। ১৩ অক্টোবর দেশে  ফিরবো। ১৬ অক্টোবর আড্ডা হবেই। 
  • Ranjan Roy | ২৫ জুলাই ২০২২ ২৩:৪২510331
  • বাঃ
    দেখি যদি একককে রাজি করাতে পারি। 
    আর সায়ন কবির সঙ্গে আজও সাক্ষাৎ হয়নি। 
  • Kishore Ghosal | ২৫ জুলাই ২০২২ ২৩:৫৮510332
  • ওফ্‌, একেবারে "সোনালি" মোচড়? এবার কী হবে? 
  • Kishore Ghosal | ২৫ জুলাই ২০২২ ২৩:৫৮510333
  • ওফ্‌, একেবারে "সোনালি" মোচড়? এবার কী হবে? 
  • স্বাতী রায় | 117.194.38.197 | ২৬ জুলাই ২০২২ ১০:৩৫510362
  • এইরকম  লেখা খুব কম পড়েছি। পরতে পরতে চমক। 
  • রুখসানা কাজল | 59.153.103.20 | ২৬ জুলাই ২০২২ ২২:০৪510384
  • পড়ছি-- 
  • বিপ্লব রহমান | ২৭ জুলাই ২০২২ ০৭:১৩510405
  • সোনালীর এন্ট্রি আলাদা থ্রিল তৈরি করেছে। তারপর? 
  • Sekhar Mukhopadhyay | ২৭ জুলাই ২০২২ ২১:৩৯510424
  • Wait alwaysfor the next
  • বিপ্লব রহমান | ২৮ জুলাই ২০২২ ০৮:৫২510446
  •  আড্ডা হোক বা না হোক পর পর দুই কিস্তি দিন! জনতার দাবি laugh
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে মতামত দিন