এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  রাজনীতি

  • আফগানিস্তান নিয়ে তসলিমা নাসরিন 

    সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ২৬ আগস্ট ২০২১ | ১৫৭২৭ বার পঠিত | রেটিং ৪.৪ (৫ জন)
  • তসলিমা নাসরিন বাংলাদেশ প্রতিদিনে আফগানিস্তান ইত্যাদি নিয়ে একটি লেখা লিখেছেন। তার সারকথা মোটামুটি এইঃ
     
    ১। আমেরিকা আফগানিস্তানে গণতন্ত্র গড়ে দিতে গিয়ে অশ্বডিম্ব প্রসব করেছে।
    ২। সাধারণ মুসলমানরা এখন আফগানিস্তান থেকে পালাচ্ছেন, বা পালাতে চাইছেন, কারণ মুসলমানরাই সপ্তম শতাব্দীর ধর্মীয় আইনকে খুব ভয় পায়। 
    ৩। তালিবানি আইন চূড়ান্ত নারীবিরোধী। সামান্য স্বাধীনতা উপভোগ করতে গেলেই মেয়েদের তারা পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলে। এবারও ফেলবে। বিয়ের নামে যৌনদাসী বানাবে। 
    ৪। এই তালিবানি আইন এক দেশের ব্যাপার না। সিরিয়া এখন এসে গেছে আফগানিস্তানে, আফগানিস্তান বাংলাদেশে। এ হল প্যান ইসলামিজম। গোটা উপমহাদেশকে তার ফল ভুগতে হবে। 
    ৫। বর্বর এই জঙ্গীরা নারীর সর্বনাশ করবে। তাদের মদত দেবার দায় পাকিস্তান, চিন, রাশিয়ার। 
    ৬। দুনিয়ার মুসলমানরা নারীর এই অবমাননার বিরুদ্ধে তেমন প্রতিবাদ করছেনা, যেমন তারা করে থাকে পালেস্তাইনের ক্ষেত্রে। মুসলমান মৌলবাদীরা তো জায়গায় জায়গায় তালিবানের নামে জয়ধ্বনি দিচ্ছে।
    ৭। নারীর পরনে যে দাসত্বের শৃঙ্খল, তা ভেঙে ফেলতে কয়েক শতাব্দী লেগেছে। এখন দুদিনেই আবার পরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ধর্মের আরেক নাম পুরুষতন্ত্র। কিন্তু ধর্মন্ধতা, মৌলবাদ, নারীবিদ্বেষ পুরুষকে রক্ষা করবেনা।
     
    এই সারসংক্ষেপ আমার তৈরি (শুধু পরের মুখে ঝাল না খেয়ে আসল লেখাটি অবশ্যই পড়ুন -- https://www.bd-pratidin.com/editorial/2021/08/19/681973 ) । আলোচনার জন্য। না, তসলিমাকে নিয়ে কিছু বলার নেই, বরং ধন্যবাদই দেবার আছে। এই ধরণের একটি ন্যারেটিভ আভাসে ইঙ্গিতে টুকরো-টাকরায় পশ্চিমী এবং প্রাচ্যের মিডিয়া এবং সোশাল মিডিয়ায় ঘুরছে, সেটাকে গুছিয়ে স্পষ্ট করে লিখে ফেলার জন্য। না লিখলে আলোচনাটাই করা যেতনা। 
     
    তা, এই ন্যারেটিভের কয়েকটি সুনির্দিষ্ট লক্ষণ নিয়ে কথা বলা যাক। এই ন্যারেটিভের প্রথম লক্ষণ হল, আফগানিস্তানকে আফগানিস্তান বানানোর জন্য পাকিস্তান, চিন এবং কখনও সখনও দুষ্টু রাশিয়াকে দায়ী করা। আর আমেরিকাকে স্রেফ একটু ব্যর্থতার জন্য সমালোচনা করা। আমেরিকা আফগানিস্তানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে লাট করেছে, সে নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই, কিন্তু উদ্দেশ্য তো ভালোই ছিল, গণতন্ত্রই তো গড়তে গিয়েছিল। মানুষকে ধর্মান্ধতা থেকে স্বাধীনতা দিয়েছিল, মেয়েদের দিয়েছিল ওড়ার আকাশ। কাইট রানার সেই পশ্চিমী স্বাধীনতার প্রতীক, মালালা হল মুখ। এখন আমেরিকার পিছিয়ে আসায় সে আকাশ ভেঙে পড়ে যাচ্ছে, এবার অ্যাসিড বৃষ্টি আসন্ন -- এরকম একটা ভাব। 
     
    তো, এ ন্যারেটিভ এতই মোটাদাগের, এবং এতটাই অলীক, যে, আলাদা করে সমালোচনা করার এমনি কোনো কারণই নেই। তবু লেখা যখন হচ্ছে, তখন সংক্ষেপে, স্পষ্ট করেই বলা যাক, বাস্তবতা থেকে এসব অনেক দূরে। ইন্দোনেশিয়া থেকে আফগানিস্তান হয়ে আরব পর্যন্ত মৌলবাদীদের উত্থানে সক্রিয় ভূমিকা, মদৎ ছিল কাদের তা কোনো গোপন তথ্য নয়। আফগানিস্তানে মুজাহিদিনদের প্রশিক্ষণ, সৌদি আরবের অগাধ কনট্র‌্যাক্ট, এবং তালিবানদের সঙ্গে চলমান আলোচনা, এসব নিশ্চয়ই গণতন্ত্র এবং নারীর অধিকারের স্বার্থে করা হয়নি। বস্তুত জঙ্গী ইসলাম, মূলত প্রত্যক্ষভাবে পশ্চিমের তৈরি।  
     
    এই ন্যারেটিভের দ্বিতীয় লক্ষণটি আরও কৌতুহলোদ্দীপক। লেখাটিতে, এই ধরণের লেখাগুলির সবকটিতেই, দুইটি বর্গের রমরমা। নারী এবং ইসলাম। এই দুটিকে ঘিরেই চর্চা চলে অবিরত। তা, এই নারী বর্গটি নিয়ে বিস্ময়ের কিছু নেই। গোটা পশ্চিমী মিডিয়াতেই এখন তথাকথিত 'অপর'দের প্রাধান্য। নারী হোক বা কালো রঙের লোক। এও এক নির্মিতি। কিন্তু তার গতিবিধি আলোচনা এখানে করা হচ্ছেনা। যেটা আকর্ষণীয়, সেটা হল, অন্য এক 'অপর'এর ক্ষেত্রে এই অপরবান্ধবতা একেবারেই ভেঙে পড়ছে। সেই অপর হল 'ইসলামিজম'। ইসলামও পশ্চিমের এক 'অপর'। পশ্চিমী সভ্যতার আলোর উল্টোপিঠ। কিন্তু এই 'অপর'কে গৌরবান্বিত করার ব্যাপার তো নেইই, বরং পুরোটাই ভিলেনের রঙে আঁকা। প্যান ইসলামিজম এখানে ভিলেন। দুষ্টু লোক। 
     
    এটা একটু কঠিন করে বলা হয়ে গেল। সোজা করে বললেই ব্যাপারটা বোঝা যাবে। ধরুন, হিলারি ক্লিন্টন ছিলেন যুদ্ধবাজ। বা মার্গারেট থ্যাচার উজিয়ে ফকল্যান্ডে যুদ্ধ করেছিলেন। কিন্তু এঁদের জন্য নারীবাদকে বা নারীকে পশ্চিমী মিডিয়ায় কেউ ভিলেন ঠাওরায়না। যদি আদৌ কথাটা ওঠে, তখন বলা হয়, ওগুলো ব্যক্তির লক্ষণ, নারী নামক বর্গের নয়। কথাটা অবশ্য ওঠেইনা, বস্তুত এঁদের গৌরবের প্রশ্নে এই লক্ষণগুলোকে সযত্নে আড়াল করা হয়। যেমন হিলারি ক্লিন্টনের পক্ষের মিডিয়া ন্যারেটিভ ছিল 'গ্লাস সিলিং ভাঙা'। যুদ্ধ টুদ্ধ তার অনেক পিছনে। এই সমর্থন  বা সহমর্মিতা কিন্তু ইসলামিজম পায়না। আড়াল করার তো প্রশ্নই নেই, বরং হিলারির সম্পূর্ণ উল্টোদিকে গিয়ে লাদেন একজন বিচ্ছিন্ন মানুষ নন, একটি প্রতীক হয়ে যান, যদিও হিসেব করলে দেখা যাবে, লাদেনের আদেশে একটি শহরের একটি বহুতল ভেঙেছে, হিলারির আদেশে হয়তো একশটি। মুসলমানরা সদলবলে তালিবানদের নিন্দে না করে ভিলেন হয়ে যান, কিন্তু দুনিয়ার পশ্চিমীরা, মিডিয়া সহ, বুশ নামক এক রাষ্ট্রনায়কের স্রেফ গুলবাজি করে ইরাক নামক একটি গোটা দেশকে ধ্বংস করে দেবার নিন্দে সজোরে কখনই করে উঠতে পারলনা, তাই তারা গণতন্ত্রের ধারক ও বাহক। এই অন্তর্নিহিত দ্বিচারিতা, আলোকজ্জ্বল পশ্চিমে আছে। ফলে লিঙ্গ বা গাত্রবর্ণ নিয়ে যতই ঢক্কানিনাদ চলুক, আদতে অপরবান্ধবতা, বোঝা যায়, পশ্চিমের আর পাঁচটি গিমিকের মধ্যে একটি।
     
    তৃতীয় এবং সর্বশেষ লক্ষণটি এখানে লক্ষ্যণীয়, যে, শুধু ইসলামিজম-বনাম-নারী দ্বৈত নয়, আরও একটি দ্বৈতও এখানে প্রকট। সেটি হল নারী বনাম পুরুষ। নারীকে শুধু জঙ্গী ইসলামই পীড়ন করছে তা নয়, সামগ্রিক ভাবে পুরুষও একই দোষে দুষ্ট। অর্থাৎ শুধু 'ঐস্লামিক' পুরুষ নয়, এই ক্ষেত্রে বৃহত্তর ভিলেনটি হল পুরুষ। এর জন্য নির্মান করা হয়েছে একটি নতুনতর বর্গ, পুরুষতন্ত্র। ইংরিজিতে যে কথাটি ব্যবহৃত হত, বা এখনও হয়, তার বাংলা হল পিতৃতন্ত্র। সেটা ব্যবহার করা হত, বা হয়, একটি নির্দিষ্ট কারণে। পিতৃতন্ত্র একটি ব্যবস্থা, যা পুরুষ এবং নারীর জন্য অসমঞ্জস অবস্থান নির্ধারণ করে। অর্থাৎ, পুরুষ যুদ্ধ করবে, দেশনেতা হবে, নারী বাড়ির কাজ করবে, নার্স ও শিক্ষিকা হবে -- মোটাদাগে বললে, এইরকম। নারীর স্বার্থে এই ব্যবস্থাটা বদলানো দরকার, বিংশ শতকের নানা ঢেউএর নারীবাদ, সেই কথাই বলত, আভ্যন্তরীন নানা বিতর্ক এবং মতভেদ সত্ত্বেও। এখানে কাঠামোগতভাবে কোনো ভিলেন ছিলনা। কিছু পুরুষ নিশ্চয়ই বদ, পুংরা জাতিগতভাবেই ভিলেন না, ভিলেন হল কাঠামোটা। একবিংশ শতকে জনপ্রিয় আখ্যানে বিষয়টা বদলাতে শুরু করে। ব্যবস্থা নয়, সরসরি 'ম্যান'কে ভিলেন তৈরি করা হয়। পুরুষের বৈশিষ্ট্য আলাদা করে চিহ্নিত করে তাকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়। তৈরি হয় 'টক্সিক ম্যাসকুলিনিটি' বা 'ম্যানসপ্লেনিং' এর মতো বর্গ। বিংশ শতকের 'এমসিপি' জাতীয় বর্গের সঙ্গে এর তফাত হল, এমসিপি বা মেল-শভিনিস্ট-পিগ বলা হত কিছু ব্যক্তিকে। কিন্তু 'বিষাক্ত পৌরুষ' জাতীয় বর্গ সামগ্রিকভাবে পুরুষের লক্ষণকে উদ্দেশ্য করে তৈরি। ইংরিজিতে পিতৃতন্ত্র বর্গটি এইভাবেই তার পুরোনো অর্থ থেকে নড়েচড়ে গেছে। শব্দটি যদিও বদলায়নি। বাংলায় সোজাসাপ্টা ভাবে শব্দটিই বদলে পিতৃতন্ত্রের জায়গায় পুরুষতন্ত্র করে ফেলা হয়েছে। এই বর্গের ব্যবহার একটুও আপতিক না, কারণ তসলিমার আখ্যানও এই একই লক্ষ্যে ধাবিত। 
     
    এটাও একটু কঠিন করে বলা হয়ে গেল। সোজা করে বললে, ধরুন, আপনার চারদিকে 'প্রগতিশীল' মনে করেন এমন একজন মানুষকেও দেখেছেন, যিনি তালিবানদের সমর্থক? লিঙ্গ বা ধর্ম নির্বিশেষে? খবরের কাগজে এরকম লোকেদের কথা নিশ্চয়ই পড়েছেন, কিন্তু কাছে পিঠে? সম্ভবত দেখেননি। কারণ তালিবানি কথাটিই প্রায় সর্বজনস্বীকৃত নিন্দাসূচক শব্দ। খোদ আফগানিস্তানেও পুরুষরা কি খুন হচ্ছেন না, না লড়ছেন না? নিশ্চয়ই তালিবানরা সংখ্যায় অনেক, কিন্তু উল্টোদিকটাও, কম হলেও তো আছে। তার মরছে টরছেও। তাহলে ধর্ম পুরুষদের রক্ষা করছে, বা চিরকাল করবেনা, এই কথাটার মানে কী? 
     
    মানে একটাই। এই কথাটা শুধু নয়, সামগ্রিক ভাবে তিনটি লক্ষণেরই। একবিংশ শতকে রাজনীতির নতুন বয়ান তৈরি হচ্ছে। এগুলো তার অংশ। সেখানে আমেরিকা বা সামগ্রিক ভাবে পশ্চিমী সাম্রাজ্যবাদ আর ভিলেন নয়। মূল ভিলেন সন্ত্রাসবাদ, বা পড়ুন প্যান ইসলামিজম। খুচরো ভিলেন সামগ্রিকভাবে পুরুষরা। এবং সহমর্মিতা ধাবিত হবে, নারী, কালো, নিচু জাত এই বর্গগুলির দিকে। বিংশ শতকের রাজনীতির থেকে যা অনেকটাই আলাদা। 
     
    বিংশ শতকের রাজনীতির এরকম নির্দিষ্ট কেন্দ্রিকতা ছিলনা। পশ্চিমী দুনিয়ায় মূল শত্রু ছিল কমিউনিজম। নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত। তৃতীয় বিশ্বে পরিস্থিতি ঠিক উল্টো ছিল। সেখানে চিরশত্রু ছিল পুঁজিপতিরা এবং আমেরিকা। দুই জায়গাতেই এই রাজনীতিই মূল প্রাধান্য পেত। নারী বা কৃষ্ণাঙ্গ বা সমকামীদের ইস্যু ছিল পিছনের সারিতে। তারা মাঝেমাঝে উপচে পড়ত মূল ধারায়। চলত বিতর্ক। এখন হয়েছে ঠিক উল্টো। লিঙ্গ-বর্ণ-জাত -- শুধু উপচে পড়েছে নয়, নির্ণায়ক জায়গা নিয়ে নিয়েছে রাজনীতিতে। অবাস্তবরকম চরম জায়গায়ও চলে যাচ্ছে থেকেথেকেই। উল্টোদিকে পুঁজিবাদ আর ভিলেন নয়, নতুন ভিলেন হয়েছে, আগেই যা বলা হল, সন্ত্রাসবাদ, পুং ইত্যাদি। 
     
    রাজনীতি এভাবেই বদলায়। বিতর্ক হয়। আবার বদলায়। তাতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু একবিংশ শতকের রাজনীতির একটা জায়গাই খুবই বিপজ্জনক। তার রাজনীতির এককেন্দ্রিকতা। বিতর্কের অভাব। বিংশ শতকের রাজনীতি, তার সমস্ত সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও, বিতর্কের অভাবে কখনও ভোগেনি। বিতর্কের অভাব, পৃথিবীর ইতিহাসে, বরাবরই টোটালিটারিয়ান বা প্রায়-টোটালিটারিয়ান ব্যবস্থা ডেকে এনেছে। সে ম্যাকার্থির আমেরিকাই হোক, বা হিটলারের জার্মানি। শুধু তসলিমা তো নন, তাঁর লেখায় যে তিনটি লক্ষণের কথা বলা হয়, বাম-দক্ষিণ নির্বিশেষে সেগুলি সকলেরই গ্যান্ড ন্যারেটিভ হয়ে উঠছে। ভয়টা সেখানেই। গ্র‌্যান্ড ন্যারেটিভের ভয়। দেয়ার ইজ নো অল্টারনেটিভ এর ভয়। যে ভয়, বিংশ শতকে কেউ কখনও পায়নি। 

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ২৬ আগস্ট ২০২১ | ১৫৭২৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Amit | 103.60.200.23 | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১২:০০497574
  • "কথা বলার সাহস" এটা বুঝলাম না গুরু কি বলতে চাইছেন। সভ্য দুনিয়ায় আমরা তো সবাই এটাই চাই কমপ্লিট এন্ড  ১০০-% সেপারেশন অফ চার্চ এন্ড স্টেট্। যার যার ধর্ম সে নিজের ঘরের মধ্যে যত ইচ্ছে পালন করুক। কিন্তু প্রতিটা দেশের প্রতি টা আইন কানুন যেন পুরোপুরি সেকুলার হয়। ঘরের মধ্যেও যেন কারোর ওপর জোর করে ধর্ম না চাপানো হয়। সেটা কি আপনিও চান ?
     
    আর শুধু সৌদি কেন, আমার নিজের অন্যান্য ইসলামিক দেশের ডিসক্রিমিনেশন দেখা এবং থাকার অভিজ্ঞতা নিয়ে অলরেডি লিখেছি. সেগুলো হোক বা আজকের ইন্ডিয়ায় গোরক্ষকদের তান্ডব -এর কোনোটাকেও আমি সভ্য দেশের প্যারামিটার মানিনা। সুতরাং শরিয়া হোক আর হিন্দু আইন বা খ্রীষ্টান আইন - এসব আপদ প্রতিটা দেশ থেকে বিদায় হোক কুলোর বাতাস দিয়ে। কিন্তু রাস্তা টা কি ? শুধু নিরাপদ দূরত্বে বসে আমরা  চাইলেই তো হবেনা.
  • guru | 103.135.228.241 | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৪:৩৭497592
  • "কিন্তু প্রতিটা দেশের প্রতি টা আইন কানুন যেন পুরোপুরি সেকুলার হয়। ঘরের মধ্যেও যেন কারোর ওপর জোর করে ধর্ম না চাপানো হয়। সেটা কি আপনিও চান ?"                                                                                                               
     
    এটা তো উটোপিয়ান  ইডিওলজি হয়ে গেলো | সেক্যুলারিজম কি কোনো ধর্ম নাকি ? আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে আপনি সেক্যুলারিজম ধর্মবিশ্বাসী | "পুরোপুরি সেকুলার" এর ডেফিনেশন কি ? এককালে কমিউনিস্ট বা ইসলামিস্টরা তো এইরকমই চাইতেন যে সারা বিশ্বে তাদের জয়পতাকা উড়বে | আপনার চাহিদাটাও সেইরকমই হয়ে গেলোনাকি ?ব্যাপারটা কি অতৈ সোজা নাকি ?আপনি নিজেই তো আপনার ধর্ম সেক্যুলারিজম অন্যের উপর চাপাতে চাইছেন দাদা | ধরুন আপনার ছেলে আজকে মুসলমান মেয়ে বিয়ে করে ধর্মান্তরিত হয়ে গেলো তখন কি করবেন দাদা ?তার উপর কি সেক্যুলারিজম চাপাতে চাইবেন না ?
     
    "সুতরাং শরিয়া হোক আর হিন্দু আইন বা খ্রীষ্টান আইন - এসব আপদ প্রতিটা দেশ থেকে বিদায় হোক কুলোর বাতাস দিয়ে। কিন্তু রাস্তা টা কি ? শুধু নিরাপদ দূরত্বে বসে আমরা  চাইলেই তো হবেনা। "
     
    দেখুন মানুষ ইতিহাসের প্রয়োজনে প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের সৃষ্টি করেছে আবার মানুষ তার প্রয়োজনেই নব্য প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মসমূহ যেমন ফেমিনিজম , wokism, লিবেরালিজম এই সব বানিয়েছে | দুটি বিশ্ব্যযুদ্ধে প্রচুর জোয়ান ছেলেরা মারা গেলে ইউরোপ আমেরিকা মেয়েদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোডাক্শনে ঢোকায় যাতে ইকোনোমিক গ্রোথ বজায় থাকে | সেই থেকে ফেমিনিজম এর চালু হওয়া | সার সত্য হলো ইতিহাসের গতি ঠিক করে দেবে কোনটা থাকবে কোনটা যাবে তাতে আমি আপনি চাইলেও কিছু হবে কি ? ইতিহাস আর মানুষের উপর ছেড়ে দিন আমার মনে হয় মানুষ চাইলে সে তার প্রয়োজনে সব কিছুই করে নেবে |
  • deep | 103.232.241.7 | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৫:৩৯497595
  • সেকুলারিজম বা এথেয়িজমকে কেন জাস্ট আরেকটা ধর্ম হিসাবে ধরা হবেনা এই প্রশ্ন অনেক সময়ই আসতে দেখি। কিন্তু এর যথাযত উত্তরও বেশ কিছু দেখেছি। যদি কেউ এখনো এবিষয়ে কোনো স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছে গিয়ে না থাকেন, তাহলে দুদিকের যুক্তিই শোনা যেতে পারে।  আমার "এগুলোকে ধর্ম বলা উচিত না" এই মত বেশি যুক্তিযুক্ত মনে হয়েছে, গুরুর সম্ভবত অন্যটা।
  • নিননি-কিছু একটা | 103.220.209.93 | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৫:৪১497596
  • ইয়ে মানে আপনি বলতে চাচ্ছেন জোর কোরে চাপিয়ে না দেওয়া টাও একরকম চাপিয়ে দেওয়া?
  • Amit | 103.60.200.23 | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৫:৫৮497597
  • সেক্যুলারিজম কে কোথায় কার ওপর চাপাচ্ছে ? প্রথম কথা আমার ছেলে বা মেয়ে মুসলিম বিয়ে করলে কি তাদের ধর্মান্তরিত হওয়ার আদৌ প্রয়োজন আছে ? থাকলে কেন ?
     
    দ্বিতীয় কথা - তারা স্বেচ্ছায় যা খুশি ধর্মে ধর্মান্তরিত হতে চাইলে হোক না গিয়ে , আমরা কেও বারণ করবোনা। কিন্তু তাদের ওপর সেটা জোর করে বা বিয়ের কন্ডিশন হিসেবে চাপানো কেন হবে ?
     
    সেটা না থাকাটাই সেক্যুলারিজম। কেও কাওকে নিজের মত নিজের ঘরে ধর্ম পালন করতে আটকাচ্ছেনা. জাস্ট  অন্যের ওপর চাপাতে বারণ করছে. সিম্পল। 
     
    আর মানুষের ওপর ছেড়ে দেওয়া টাও বুঝলাম না। একজন মানুষ হিসেবেই এই ওপেন প্রিন্সিপাল গুলো যেকোনো সভ্য দেশে থাকা উচিত বলে আমি মনে করি এবং যে দেশে এগুলো নেই সেগুলোকে জাস্ট সভ্য দেশ হিসেবে মনে করিনা। 
  • guru | 103.135.228.241 | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৯:৫৮497608
  • অমিত বলেছেন "সেটা না থাকাটাই সেক্যুলারিজম। কেও কাওকে নিজের মত নিজের ঘরে ধর্ম পালন করতে আটকাচ্ছেনা. জাস্ট  অন্যের ওপর চাপাতে বারণ করছে. সিম্পল।"
     
    আচ্ছা দাদা তালিবান তো সেটাই চাইছে |tara তো বলছেই যে যখন তারা অন্য দেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করেনা তখন তাদের মত করে তাদের দেশে  তাদের থাকতে দিলেই হলো | আপনার সেক্যুলারিজম অনুযায়ী তাহলে এটাকে আপনি মেনে নিন | ইনফ্যাক্ট আম্রিগা বা ভারত সেটাই মেনেও নিতে চলেছে ধরে নিন | তাহলে তালিবান নিয়ে আপনার আপত্তিটা কোথায় ?
     
    অমিত আরো বলেছেন যে "আর মানুষের ওপর ছেড়ে দেওয়া টাও বুঝলাম না। একজন মানুষ হিসেবেই এই ওপেন প্রিন্সিপাল গুলো যেকোনো সভ্য দেশে থাকা উচিত বলে আমি মনে করি এবং যে দেশে এগুলো নেই সেগুলোকে জাস্ট সভ্য দেশ হিসেবে মনে করিনা।"
     
    দেখুন আম্রিগর সংবিধান অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি যার আম্রিগাতে জন্ম হয়নি তিনি আম্রিগার প্রেসিডেন্ট হতে পারবেননা . অস্ট্রেলিয়ার সংবিধান অনুযায়ী অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান হলেন ইংল্যান্ডের রানী যিনি কিনা অ্যাঙ্গলিকান চার্চের সর্বোচ্চ নেতা . আমার মনে হয় এইগুলি প্রকৃত সেক্যুলারিজমের বিরোধী নীতি |আপনার কি মনে হয় এইগুলি অসভ্য দেশের অসভ্য নীতি ?যদি এইগুলি সভ্য দেশের নীতি না হয় তাহলে জোর করে যুদ্ধ করে আপনার কি মনে হয় আম্রিগা আর অস্ট্রেলিয়াকে তাদের নীতি পরিবর্তন করতে বাধ্য করা উচিত ?
     
    অমিত আরো বলেছেন যে "সেক্যুলারিজম কে কোথায় কার ওপর চাপাচ্ছে ?কেও কাওকে নিজের মত নিজের ঘরে ধর্ম পালন করতে আটকাচ্ছেনা. জাস্ট  অন্যের ওপর চাপাতে বারণ করছে. সিম্পল।"
    এবং "কিন্তু প্রতিটা দেশের প্রতি টা আইন কানুন যেন পুরোপুরি সেকুলার হয়।" এখন এই দুটি বক্তব্য তো আমার মনে হয় একে অন্যের বক্তব্যকে খণ্ডন করছে | আপনি চাপাতে চাইছেননা আবার চাপাতে চাইছেন | ভীষণ ইন্টারেষ্টিং ব্যাপার |
     
    দীপ আমার এখনকার সময়ের ফেমিনিস্ট , সেক্যুলারিস্ট লিবারেল দেখে মনে হয় এরা নিজেরাও নিজেদের ধর্ম বলেই মনে করেন যদিও সেটা স্বীকার করেননা |
     
    নিননি-কিছু একটা সেক্যুলারিজমকে একটা ধর্ম মেনে নিলে সেটাও কিন্তু সবসময় চাপিয়ে দেওয়ার কথাই বলে |
  • aranya | 2601:84:4600:5410:3d7f:768e:9b86:b8c | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২৩:০৫497619
  • @ গুরু, তালিবানরা অন্য দেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ না করলেও, নিজের দেশের মানুষদের ওপর যেমন মেয়েদের ওপর, গায়ক - শিল্পী দের ওপর , সমকামী দের ওপর বহু নিষেধাজ্ঞা চাপায়, সেই নিষেধ না মানলে অত্যাচার করে, খুনও করে। 
    এই চাপিয়ে দেওয়াটার বিরুদ্ধেই অমিত লিখছে, আমিও লিখেছি এবং মনে হয় আপনিও এর বিরোধিতাই করবেন। 
  • aranya | 2601:84:4600:5410:3d7f:768e:9b86:b8c | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২৩:২৫497621
  • দেখুন, আমেরিকা সরকারের বিদেশ নীতি খুবই ভয়াবহ, বিভিন্ন যুদ্ধে , অকুপশনে বহু মানুষ মেরেছে।  কাশ্মীরে ভারতীয় আর্মি মানুষ মারছে। এগুলো অপছন্দ করি, এদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করি। 
    হিন্দু মৌলবাদের বিরোধিতা করি, মুসলিম মৌলবাদ, শরিয়া আইন -এসবেরও বিরোধিতা করি।  স্কেলের দিক থেকে হিন্দু মৌলবাদ এখনও ইসলামিক মৌলবাদের সাথে তুলনীয় নয়, যদিও স্বরা ভাস্করের মত লোক তালিবান টেরর আর হিন্দু টেরর - কে একই লেভেলে রেখেছেন, কিন্তু সেটা ঘোলা জলে মাছ ধরা। তবে হিন্দু টেরর , হিন্দু মৌলবাদ বাড়ছে এবং তার বিরুদ্ধে অনেক লেখা গুরুচন্ডালীতেও বেরিয়েছে 
     বিভিন্ন  অনাচার, অত্যচারের বিরুদ্ধে বলছি , এবং সেটা তো ঠিকই মনে হয়। তালিবান এবং আমেরিকান বিদেশ নীতি, আর এস এস এবং জামাত - এদের সবার কাজকর্মেরই  তো বিরোধিতা করা যায়, একই সাথে। 
    এই আর্টিকলে আফগানিস্তান নিয়ে কথা হচ্ছে বলে, কাশ্মীর নিয়ে এখানে কিছু লিখি নি, তার মানে এই নয় অন্য কোথাও পেলেট ছুঁড়ে মানুষকে অন্ধ করে দেওয়ার বিরুদ্ধে লিখি নি 
  • Amit | 203.0.3.2 | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০১:৫১497626
  • অরণ্য অলরেডি গুছিয়ে বলে দিয়েছেন। নতুন কিছু বলার নেই। এই পুরো আলোচনাটাই শুরু হয়েছিল কোনো দেশে গ্রস হিউমান রাইটস ভায়োলেশন হলে ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটি সাইলেন্ট দর্শক হয়ে থাকা উচিত কিনা নাকি স্টেপ ইন করা উচিত। অরণ্য , আমি বা আরো অনেকেই ভেবেছেন করা উচিত।কেউ কেউ সেটা  ভাবেন নি। 
     
    গুরুর তোলা দুটি পয়েন্ট ই একেবারে ইরেলিভ্যালেন্ট লাগলো। কোনোটার সাথেই ধর্মের সম্পর্ক নেই। সেটা চেয়ার এর সাথে। 
    যেমন বিশ্বভারতী র আচার্য প্রধানমন্ত্রী। সেটা নেহেরু হলেও তাই। মোদী হলেও। এবার কি আপনি প্রশ্ন তুলবেন মোদী কেন বিশ্বভারতী র আচার্য এবং আরএসএস প্রবক্তা একসাথে ? 
     
    আর ওবামার বাবা মুসলিম ছিলেন।আজ অবধি কোনো ইসলামিক দেশে অমুসলিম বা সংখ্যালঘু প্রধানমন্ত্রী হয়েছে ? উদা থাকলে দেবেন.
     
    আর আপনি কি ইচ্ছে করেই আমার  ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৫:৫৮ তোলা প্রশ্ন গুলো এড়িয়ে গেলেন ?
  • Kallol Dasgupta | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১১:০১497663
  • অরণ্য লিখেছো, "তালিবানরা অন্য দেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ না করলেও, নিজের দেশের মানুষদের ওপর যেমন মেয়েদের ওপর, গায়ক - শিল্পী দের ওপর , সমকামী দের ওপর বহু নিষেধাজ্ঞা চাপায়, সেই নিষেধ না মানলে অত্যাচার করে, খুনও করে। 
    এই চাপিয়ে দেওয়াটার বিরুদ্ধেই অমিত লিখছে, আমিও লিখেছি এবং মনে হয় আপনিও এর বিরোধিতাই করবেন। "
    তালিবানের বিরোধীতা করা আর আমেরিকার অকুপেশনের সমর্থন করা কি এক জিনিস ?  অমিত যেমন দুটোকে এক মনে করে। 
    যেমন বলা হলো শিক্ষা স্বাস্থ্যের বিষ্যে নরওয়ে বা আমেরিকা আফগানিস্তনের চেয়ে অনেক এগিয়ে - এর মানে কি তালিবাদ বিরোধীতা নাকি আমেরিকার অকুপেশন সমর্থন। অনেকে সেটাও মনে করে। 
    লোকে কেন এতো এটা-না-হলে-ওটা ভাবে কে জানে ? এটা ওটার বাইরে, আশেপাশে বহুকিছু থাকতে পারে সেটা ভাবেই না। 
  • guru | 103.135.228.155 | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১২:৫৯497671
  • amit বলেছেন  "আজ অবধি কোনো ইসলামিক দেশে অমুসলিম বা সংখ্যালঘু প্রধানমন্ত্রী হয়েছে ? উদা থাকলে দেবেন." উদাহরণ তো আছেই হাতের কাছে ।লেবাননের প্রেসিডেন্ট সবসময় খ্রীষ্টান হয় . ইরাকের একজন বড় নেতা ছিলেন তারিক আজিজ একজন খ্রীষ্টান | আর কতগুলি উদাহরণ লাগবে ? আচ্ছা এংলোসাক্সন দেশগুলিতে অখৃষ্টান কেউ কবে রাষ্ট্রপ্রধান হয়েছে কি ?
    amit আরো বলেছেন 'এই পুরো আলোচনাটাই শুরু হয়েছিল কোনো দেশে গ্রস হিউমান রাইটস ভায়োলেশন হলে ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটি সাইলেন্ট দর্শক হয়ে থাকা উচিত কিনা নাকি স্টেপ ইন করা উচিত। অরণ্য , আমি বা আরো অনেকেই ভেবেছেন করা উচিত।কেউ কেউ সেটা  ভাবেন নি।" আমি আগেই বলেছি যে কোনো দেশে মিলিটারি ইন্টারভেনশন হয় দুটো জিনিসের উপর নির্ভর করে এক স্বার্থ দুই ক্যাপাবিলিটি . পূর্ব পাকিস্তান , ইরাক  বা আফগানিস্তানের মতো দরিদ্র দেশে ইন্টারভেনশন করা সোজা tai ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটি সেখানে স্টেপ ইন করে কাশ্মীর তাইওয়ানে বা আম্রিগা অস্ট্রেলিয়াতে মিলিটারি ইন্টারভেনশন করা কঠিন তাই seikhankar গ্রস হিউমান রাইটস ভায়োলেশন হলে ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটি সাইলেন্ট দর্শক হয়ে থাকা উচিত বলেই মনে করে |
     
    এখন যেহেতু এইখানে আলোচনা হয়েছে আফগানিস্তান নিয়ে তাই আমার মনে হয় প্রথমে দেখতে হবে সেইখানে সত্যি "গ্রস হিউমান রাইটস ভায়োলেশন" হচ্ছে কি না আদৌ তালিবানের আমলে . রাষ্ট্রসঙ্ঘ এখনো কিছুই বলেনি এই ব্যাপারই। কাজেই আগে দেখতে হবে সত্যিসত্যি তালিবান "গ্রস হিউমান রাইটস ভায়োলেশন" করছে কি না ? "গ্রস হিউমান রাইটস ভায়োলেশন" যদি করেই থাকে তখন রাষ্ট্রসঙ্ঘ পাকিস্তান ইরান রাশিয়া ও চীনের সাহায্যে আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করতে paare. এছাড়া আর কোন অপশন নেই | আপনারা কি বলেন ?
     
  • guru | 103.135.228.155 | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৩:০২497672
  • আর আপনি কি ইচ্ছে করেই আমার  ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৫:৫৮ তোলা প্রশ্ন গুলো এড়িয়ে গেলেন ? কোন প্রশ্ন বলুন তো ভালো বুঝতে পারিনি |
  • guru | 103.135.228.155 | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৩:০৯497673
  • শেষ পোস্টটি অমিতবাবুকে করা |apnar তো সব প্রশ্নেরই উত্তর দিয়েছি মনে হয়  যদি কিছু ভুলে গিয়ে থাকি প্লিজ একটু বলে দিন | আমার এই আলোচনা খুব ভালোই লাগছে |
  • dc | 122.174.161.85 | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২০:৪২497683
  • আফগানিস্তানে তালিবানরা সাস্টেনেবলি গ্রস হিউম্যান রাইটস ভায়োলেট করছেনা? বা কুড়ি বছর আগে যখন ক্ষমতা দখল করেছিল তখন ভায়োলেট করেনি? ইউএন রাইটস চিফ এ ব্যাপারে কিছু বলেনি? 
  • guru | 103.135.228.155 | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২১:০১497686
  • ডিসি বলেছেন "বা কুড়ি বছর আগে যখন ক্ষমতা দখল করেছিল তখন ভায়োলেট করেনি?আফগানিস্তানে তালিবানরা সাস্টেনেবলি গ্রস হিউম্যান রাইটস ভায়োলেট করছেনা? "
     
    কুড়ি বছর আগের পৃথিবীটা অন্যরকম ছিল দাদা . এইখানে সেই কথা যদি ওঠে তাহলে তো এটাও বলা যায় যে আফগানিস্তানে ২০ বছর আগে তালিবান প্রথম আফিম চাষ বন্ধ করেছিল | তা আপনি কি দাদা সেটাকেই "সাস্টেনেবলি গ্রস হিউম্যান রাইটস ভায়োলেশন " মনে করেন নাকি ?এখন অনেকেই মনে করেন যে আম্রিগার 2001 সালে আফগানিস্তান আক্রমণের ওটাই মূল কারণ ছিল ।ঘটনা হলো যারা দাবি করেন যে গত ২০ বছরে আম্রিগা বিশাল আর্থিক উন্নয়ন করেছে আফগানিস্তানে তাদের উদ্দেশে জানাই যে গত ২০ বছরে আফগানিস্তানে আফিম চাষের মাত্রা বেশ কয়েক গুণ বেড়ে গেছে .
     
    পরিশেষে বলি রাষ্ট্রসঙ্ঘ এখন তালিবানকে আর সন্ত্রাসবাদী সংঘটন বলেও মনে করেনা | আম্রিগা আর ইন্ডিয়াও তা মনে করেনা | সাস্টেনেবলি গ্রস হিউম্যান রাইটস ভায়োলেট বলতে যেটা বোঝায় সেটা গত ২০ বছর ধরেই হচ্ছিলো তাহলে আর নতুন করে কি হবে ?
  • guru | 103.135.228.155 | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২১:০১497687
  • ডিসি বলেছেন "বা কুড়ি বছর আগে যখন ক্ষমতা দখল করেছিল তখন ভায়োলেট করেনি?আফগানিস্তানে তালিবানরা সাস্টেনেবলি গ্রস হিউম্যান রাইটস ভায়োলেট করছেনা? "
     
    কুড়ি বছর আগের পৃথিবীটা অন্যরকম ছিল দাদা . এইখানে সেই কথা যদি ওঠে তাহলে তো এটাও বলা যায় যে আফগানিস্তানে ২০ বছর আগে তালিবান প্রথম আফিম চাষ বন্ধ করেছিল | তা আপনি কি দাদা সেটাকেই "সাস্টেনেবলি গ্রস হিউম্যান রাইটস ভায়োলেশন " মনে করেন নাকি ?এখন অনেকেই মনে করেন যে আম্রিগার 2001 সালে আফগানিস্তান আক্রমণের ওটাই মূল কারণ ছিল ।ঘটনা হলো যারা দাবি করেন যে গত ২০ বছরে আম্রিগা বিশাল আর্থিক উন্নয়ন করেছে আফগানিস্তানে তাদের উদ্দেশে জানাই যে গত ২০ বছরে আফগানিস্তানে আফিম চাষের মাত্রা বেশ কয়েক গুণ বেড়ে গেছে .
     
    পরিশেষে বলি রাষ্ট্রসঙ্ঘ এখন তালিবানকে আর সন্ত্রাসবাদী সংঘটন বলেও মনে করেনা | আম্রিগা আর ইন্ডিয়াও তা মনে করেনা | সাস্টেনেবলি গ্রস হিউম্যান রাইটস ভায়োলেট বলতে যেটা বোঝায় সেটা গত ২০ বছর ধরেই হচ্ছিলো তাহলে আর নতুন করে কি হবে ?
  • dc | 122.174.161.85 | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২১:১৭497690
  • ব্যাপক উত্তর দিয়েছেন। জন স্টুয়ার্ট আর বিল ও রাইলির একটা ডিবেটের কথা মনে পড়ে গেল :d
  • aranya | 2601:84:4600:5410:5970:dc2f:143a:ee2d | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৪:৩০497705
  • আফগানিস্তানে গ্রস হিউম্যান রাইটস ভায়োলেশন নিয়েও সন্দেহ!! 
    নাঃ, গুরু-কে আরে গুরুত্ব দেওয়া যাচ্ছে না :-)
  • aranya | 2601:84:4600:5410:5970:dc2f:143a:ee2d | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৪:৫৩497706
  • 'এটা ওটার বাইরে, আশেপাশে বহুকিছু থাকতে পারে সেটা ভাবেই না'
    - কল্লোল-দা, এটা ঠিকই লিখেছেন। বাইনারী কিছু ​​​​​​​হয় ​​​​​​​না, আমেরিকান ​​​​​​​অকুপেশনের ​​​​​​​বিরোধিতা করা ​​​​​​​মানেই ​​​​​​​তালিবান ​​​​​​​সমর্থন ​​​​​​​নয়। ​​​​​​​আমিও ​​​​​​​এমনই ​​​​​​​ভাবি। 
    তবে, এক দেশের মানুষের লড়াই-এ অন্য দেশের অংশগ্রহণ জায়েজ কিনা সেটা, আমি কেস বাই কেস দেখব। ৭১-এ বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অংশ গ্রহণ যেমন ১০০% সমর্থন করি। বস্তুতঃ ভারতীয় সৈন্য আরও অনেক আগে বাংলাদেশে গেলে বহু সিভিলিয়ান ডেথ এড়ানো যেত। 
    এখানে একটা জিনিস খেয়াল করবেন - খান সেনারা মালাউন হিন্দু তো যত পারে মেরেছে, বহু বাংলাদেশী মুসলিম কে মেরেছে, কারণ তারা সহি মুসলিম নয়। এই যে ধারণা - বিধর্মী-কে মারা জায়েজ, সহি মুসলিম না হলে মেরে ফেলা জায়েজ, এ কিন্তু ইসলাম ধর্মেরই একটা ইন্টারপ্রিটেশন। কোরান পড়তে গিয়ে দেখলাম -  বিধর্মীকে আল্লা শাস্তি দেবেন , এ অনেক জায়গায় লেখা রয়েছে। এদিকে কোরান আশমানী কিতাব, তার একটা শব্দ-ও বদলানো যাবে না। 
    এমত অবস্থায় ইসলামের রিফর্ম কিভাবে হবে জানি না, তবে রিফর্ম যে ১০০% দরকার, তা নিয়ে সন্দেহ নেই। 
    আর এই পাক আর্মির ম্যাসাকার - ৩০ লক্ষ শহীদ, অসংখ্য নারী ধর্ষিতা, যাদের পরবর্তী কালে মুজিব বীরাঙ্গনা নাম দেবেন  - এটার জন্য আমেরিকা দায়ী, গ্লোবাল সাম্রাজ্যবাদ দায়ী, এ সবও বলা যাচ্ছে না। 
    প্যান্ট খুলে খৎনা-র নিদর্শন দেখে ধর্ম চেনা, কলমা মুখস্ত না বলতে পারলে গুলি করা - পাক সেনার এসব কাজ মৌলবাদী ইসলামের লক্ষণ। মুসলিমদের ভিতর থেকেই এর প্রতিবাদ দরকার, সংস্কার দরকার। 
    এবং প্রতিবাদ হয়ও। আফগানিস্তানে এখন পঞ্জশিরে যারা তালিবানের বিরুদ্ধে লড়ছে, তারা যেমন মৌলবাদের বিরুদ্ধেই কথা বলছে।  
  • aranya | 2601:84:4600:5410:5970:dc2f:143a:ee2d | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৫:৩৬497710
  • আর একটা কথা লেখা উচিত - আমেরিকান  সরকার আফগান জনগণ-কে  সাহায্য করার জন্য সে দেশে সৈন্য পাঠায় নি, নিজের স্বার্থে পাঠিয়ে ছিল। সেই আক্রমণ এবং অকুপেশন সমর্থন করি না। এর জন্য ​​​​​​​বহু ​​​​​​​মানুষ ​​​​​​​মারা ​​​​​​​গেছে, ​​​​​​​অত্যন্ত ​​​​​​​করাপ্ট ​​​​​​​একটা ​​​​​​​পাপেট ​​​​​​​গভর্ণমেন্ট ​​​​​​​শাসন ​​​​​​​করেছে ​​​​​​​এতদিন। 
    আবার ​​​​​​​মেয়েদের ​​​​​​​স্বাধীনতা ​​​​​​​বেড়েছে, ​​​​​​​স্কুল-্কলেজে অনেক ​​​​​​​বেশি ​​​​​​​মেয়ে পড়তে ​​​​​​​গেছে, বিভিন্ন ​​​​​​​প্রফেশনে ​​​​​​​কর্মরত ​​​​​​​মেয়ের ​​​​​​​সংখ্যা ​​​​​​​বেড়েছে, তরুণ প্রজন্ম ধর্মীয় উগ্রতা, অনুশাসনের বাইরে স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছে  - এগুলো ​​​​​​​ভাল ​​​​​​​দিক । 
    আরও ​​​​​​​অনেক ​​​​​​​কিছুর ​​​​​​​মত, আফগান মাটিতে ​​​​​​​আমেরিকান অকুপেশন সম্পর্কেও বাইনারী - ভাল ​​​​​​​বা খারাপ , ​​​​​​​নিদান ​​​​​​​হাঁকা মুশকিল 
     
  • guru | 103.211.20.172 | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১২:২৭497728
  • অরণ্য লিখেছেন "এবং প্রতিবাদ হয়ও আফগানিস্তানে এখন পঞ্জশিরে যারা তালিবানের বিরুদ্ধে লড়ছে, তারা যেমন মৌলবাদের বিরুদ্ধেই কথা বলছে"

     

    পঞ্জশিরে যে দুটি আফগান গ্রুপ তালিবানের বিরুদ্ধে লড়ছে তাদের মধ্যে আহমদ মাসুদ এবং আমরুল্লাহ সালেহ দুজনেই ইতিহাসের দুর্দান্ত গেরিলা মুজাহিদিন যোদ্ধা আহমেদ শাহ মাসুদ এর উত্তরসূরী | এরা দুজনেই আহমেদ শাহ মাসুদের কট্টরপন্থী দল জামিয়াত ই ইসলামী এর আদর্শে বিশ্বাসী . আহমেদ শাহ মাসুদ তার সারাজীবন ধরে ইসলামের একজন জেহাদি হিসেবে সোভিয়েতের বিরুদ্ধে লড়েছেন সিআইএ এবং পাকিস্তানের সাহায্য নিয়ে | এইজন্য তার জগৎজোড়া নাম | এই রকম একটি মানুষ বা তার দল কি করে মৌলবাদী নন বুঝতে পারলামনা .মুসলিম মৌলবাদী এবং মুসলিম মৌলবাদবিরোধী বলতে আপনি কি বোঝেন বুঝতে পারলামনা দাদা ।আপনার চোখে এরা যদি মুসলিম মৌলবাদের বিরোধী হন তাহলে মুসলিম মৌলবাদী আসলে কে ?

     

    অরণ্য আরো লিখেছেন "আবার ​​​​​​​মেয়েদের ​​​​​​​স্বাধীনতা ​​​​​​​বেড়েছে, ​​​​​​​স্কুল-্কলেজে অনেক ​​​​​​​বেশি ​​​​​​​মেয়ে পড়তে ​​​​​​​গেছে, বিভিন্ন ​​​​​​​প্রফেশনে ​​​​​​​কর্মরত ​​​​​​​মেয়ের ​​​​​​​সংখ্যা ​​​​​​​বেড়েছে, তরুণ প্রজন্ম ধর্মীয় উগ্রতা, অনুশাসনের বাইরে স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছে  - এগুলো ​​​​​​​ভাল ​​​​​​​দিক । "    রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্ট কিন্তু বলছে যে গত কুড়ি বছরে আফগানিস্তান লেবর ফোর্সে ফিমেল পার্টিসিপেশন রেট ২০ পার্সেন্ট এর মতো . এটা বিশ্বের সবচেয়ে নিম্নতম দেশগুলির মধ্যে একটি . আবার এটাও সত্যি যে আফগানিস্তানে গত ২০ বছরে আফিম চাষের  পরিমান ৩গুণ বেড়ে গেছিলো যেখানে তালিবান কুড়ি বছর আগেই আফিম চাষ প্রায় নিশ্চিহ্ন করে ফেলেছিলো . আবার ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস ইনডেক্স রিপোর্টে আফগানিস্তান বিশ্বের সবচেয়ে দুঃখী ৫ টি দেশের মধ্যে ছিল নিয়মিতভাবে গত ১০ বছর | আমার প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে উন্নতিটা কোথা থেকে এলো ?

    অরণ্য আফগানিস্তানের বিষয়ে জানতে গুরুতেই এই লেখাটি পেলাম ।পড়ে দেখতে পারেন অনেক কিছু জানতে পারবেন আফগানিস্তানের ব্যাপারে https://www.guruchandali.com/comment.php?topic=22273

    অরণ্য হিউম্যানিটেরিয়ান ইন্টারভেনশন নিয়ে অনেক বার ১৯৭১ সালের পূর্ব পাকিস্তানের অথবা বাংলাদেশের গৃহযুদ্ধে ভারতীয় হস্তক্ষেপ এর উদাহরণ তুলে এনেছেন . পাকিস্তানী সেনাবাহিনীতে মুসলিম মৌলবাদের উদাহরণও দিয়েছেন কিছু ।কিন্তু ঘটনা হলো ৭১ সালে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট Yahiya খান কে কোনোভাবেই মুসলিম মৌলবাদী বলা যায়না . ইনি জীবনের বেশিরভাগ সময়টাতে সুরা ও পূর্ব পাকিস্তানের সুন্দরী নারীতে নিমজ্জিত থাকতেন । পাকিস্তানে মৌলবাদ শুরু হয় বাংলাদেশ যুদ্ধের অনেক পরে জেনারেল জিয়া উল হকের শাসনামলে . ১৯৭১ সালে তাহলে পাকিস্তানে মুসলিম মৌলবাদ পেলেন কোথায় আপনি দাদা ?

    মিলিটারি ইন্টারভেনশন নিয়ে কথা উঠলেও বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের তুলনা করা ঠিক নয় কেননা দুটি দেশের ইতিহাস, সমাজ  ও আর্থিক পরিস্থিতি সম্পূর্ণ অন্যরকম . অবশ্য অরণ্য যদি বর্তমানে তালিবানকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে তুলনা করতে চান তাহলে অন্য কথা ।তালিবানরা অবশ্য নিজেদের মুক্তিযোদ্ধা বলেই মনে করে থাকে | অরণ্যও কি তালিবানদের মুক্তিযোদ্ধা মনে করেন নাকি ?

    আচ্ছা একটা কথা ২০০৩ সালে ইরাকে ও 2011 সালে সিরিয়াতে হিউম্যানিটেরিয়ান ইন্টারভেনশন কেন করলো আম্রিগা ?ইরাক বা সিরিয়া দুইটি দেশেই মেয়েরা তো ভয় না পেয়ে স্বচ্ছন্দে স্কুল , কলেজে যেতে পারতো খেলাধুলা করতে পারতো ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হতে পারতো তাহলে এখানে আম্রিগার ইন্টারভেনশন কি কারণে ?

  • Kallol Dasgupta | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৬:৫৮497741
  • অরণ্য। ভারত আপনার নিজের দেশ ও আপনি বাঙ্গালী। তাই বাংলাদেশে ভারতের নাক গলানো আপনার ভালো লাগছে। 
    প্রথমতঃ ভারত পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ গৃহযুদ্ধে পুর্বপাকিস্তানের বাঙ্গালী মুক্তিসেনাদের বাইরে থেকে সাহায্য করেছে। যতদিন না পাকিস্তান জলন্ধরের বিমানঘঁটিতে আক্রমণ করেছে। 
    দ্বিতীয়তঃ পাকিস্তান জলন্ধরের বিমানঘঁটিতে আক্রমণ করর পর ভারত যুদ্ধ ঘোষনা করে ও পূর্ব এবং পশ্চিম সীমান্তে যুদ্ধ শুরু হয়। 
    কাজেই ভারত কখনই পুর্ব পাকিস্তানের আভ্যন্তরীন বিষয়ে নাক গলায় নি। 
    ভারতকে ঐ অপেক্ষাটা করতেই হয়েছে নইলে আন্তর্জাতিক ফোরামে ভারত আক্রমণকারী হিসাবে কোনঠাসা হয়ে যেতো। তৃতীয়তঃ এরকম ধারণা নিতান্তই শিশুসুলভ যে ভারত বাঙ্গালীদের গণহত্যা থেকে বাঁচাতে পুর্ব পাকিস্তান আক্রমন করেছিলো। পূর্ব পাকিস্তানের বাঙ্গালী মরলো কি বাঁচলো তাতে ভারত সরকারের কিস্যু এসে যেতো না। ভারত চেয়েছিলো নির্ঝঞ্ঝাট পূর্ব সীমান্ত, রাশিয়া চেয়েছিলো ভারতীয় উপমহাদেশে তার প্রভাব বাড়াতে, ভারতীয় ব্যবসায়ীরা পুর্ব পাকিস্তানের বাজার চেয়েছিলো। ১৯৭১এর যারা বেঁচে আছেন বাংলাদেশে, তাদের জিজ্ঞাসা করুন, ঠিক স্বাধীনতার পরপর ভারতীয় পণ্যের দাম কেমন ছিলো, বিশেষতঃ লুঙ্গি ও গামছার দাম। 
    আর এগুলো করেছিলো নিজের গা বাঁচিয়ে। গা বঁচিয়ে মানে সৈন্যক্ষয় বাঁচিয়ে নয়। কোন রাষ্ট্রই তার সৈন্যরা বাঁচলো কি মরলো ত নিয়ে মাথা ঘামায় না, যদি না দেশের মধ্যে তাই ইয়ে অসন্তোষ তৈরী হয়। এক্ষেত্রে গা বাঁচিয়ে মানে আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজের মুখ বঁচিয়ে।
    এবার আপনার যুক্তিতে পাকিস্তানের উচিৎ খালিস্তানী দমনের সময় ও ১৯৪৭এর পর সবসময়েই কাশ্মীরে সৈন্য নিয়ে নাক গলানো। বা চীন কি বার্মার উচিৎ মণিপুরে ও নাগাল্যান্ডে তাইই করা। তাই কি ?    
  • guru | 103.135.229.157 | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২২:০২497809
  • কল্লোল লিখেছেন "এরকম ধারণা নিতান্তই শিশুসুলভ যে ভারত বাঙ্গালীদের গণহত্যা থেকে বাঁচাতে পুর্ব পাকিস্তান আক্রমন করেছিলো। পূর্ব পাকিস্তানের বাঙ্গালী মরলো কি বাঁচলো তাতে ভারত সরকারের কিস্যু এসে যেতো না। ভারত চেয়েছিলো নির্ঝঞ্ঝাট পূর্ব সীমান্ত, রাশিয়া চেয়েছিলো ভারতীয় উপমহাদেশে তার প্রভাব বাড়াতে, ভারতীয় ব্যবসায়ীরা পুর্ব পাকিস্তানের বাজার চেয়েছিলো। ১৯৭১এর যারা বেঁচে আছেন বাংলাদেশে, তাদের জিজ্ঞাসা করুন, ঠিক স্বাধীনতার পরপর ভারতীয় পণ্যের দাম কেমন ছিলো, বিশেষতঃ লুঙ্গি ও গামছার দাম।"                                                                     
     
      খুব ভালো একটা জায়গাকে দেখিয়েছেন|sotti কথা বলতে গেলে ভারতে এখন ১৯৭১ এর পরবর্তী কয়েকটি বছরের ইতিহাস এবং সেই সময়ে বাংলাদেশে ভারতের ভূমিকা নিয়ে প্রায় কোনো ধারণাই নেই| সিরাজ সিকদার , সর্বহারা, কর্নেল তাহির , জাসদ , রক্ষীবাহিনী, বাকশাল এই ব্যাপার গুলি এখন এখানে খুব কম মানুষই জানে . ব্যাপারটা যেন ১৯৭১ সালে পাকিস্তান আত্মসমর্পণ করার সঙ্গে সঙ্গে ইতিহাসের পরিসমাপ্তি | আপনাকে ধন্যবাদ নতুন একটা দিককে দেখানোর জন্য |
     
    আপনি ১৯৭১ এর পরের বছরগুলির বাংলাদেশের ইতিহাস কি ভাবে দেখেন ?                                              
    আমার এখন মনে হয় আম্রিগা ইন্ডিয়াকে চীনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার কথা ভাবছে এবং অনেকটাই সেই দিকে এগিয়ে গেছে | ভারতে এখন রাজনীতি কূটনীতি যুদ্ধনীতি বিষেশজ্ঞরা দুটি স্পষ্ট ভাগে বিভক্ত| একদল মনে করেন চীন মূল শত্রু আরেকদল মনে করেন পাকিস্তান মূল শত্রু | আম্রিগার লবি আছে চীন মূল শত্রু দের পক্ষে ওদিকে বিজেপি আরএসএস এর ভোটে জেতার জন্য পাকিস্থান মূল শত্রু এই তাসটি খেলতে হয় | আমি নিজের ভাষায় এই নীতিটাকে বলি "কিপ পাকিস্থান ডাউন কিপ চীন আউট "পলিসি (KPDKCO).
     
    এখন আমার গত কয়েক বছরে আরেকটা অবজারভেশন সেটি হলো যে দক্ষিণ এশিয়ায়  অন্যান্য ছোট ছোট দেশগুলি চীনের সঙ্গে ইন্ডিয়ার চেয়ে বেশি ব্যবসার চেষ্টা করছে ফলে অনেকগুলি মার্কেট যেইখানে ইন্ডিয়া প্রায় একছত্র কন্ট্রোল ছিল সেইটে কমছে এর সবচেয়ে বড়ো উদাহরণ হলো যে বাংলাদেশ কোবিদ সেকেন্ড ওয়েভ ঠেকাতে প্রথমেইন্ডিয়ার কাছ থেকেই ভ্যাকসিন কিনতে চেয়েছিলো কিন্তু এখন দায়ে পড়ে চীনের কাছ থেকে কিনতে বাধ্য হচ্ছে . এই কারণেই সার্ক ফোরামটিকে ইন্ডিয়া ঠান্ডা ঘরে পাঠিয়ে দিয়েছে কেননা এখন ভারত বাদে প্রায় সবকটি অন্য দেশ চায় চীনকে সার্কের মধ্যে ঢোকাতে যাতে কিছুটা হলেও ইন্ডিয়াকে ব্যালান্স করা যায় | এই কারণেই ইন্ডিয়া গত কয়েক বছর সার্কের মোটামুটি ঠান্ডা ঘরেই পাঠিয়ে দিয়েছে |
     
    আপনার কি মনে হয় এখানে সার্কের অন্যান্য দেশগুলির চীনকে দিয়ে ভারতকে ব্যালান্স করার চেষ্টাকে আপনি কি মনে করেন ?
     
    অন্যান্য পাঠকদের মতামতের অপেক্ষায় রইলাম |                                                                                           
  • avi | 2409:4061:2d8f:d84d:abb3:b7e5:e482:b245 | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:৪৮497825
  • দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সব দেশই চীন ও ভারতকে নিয়ে পারস্পরিক ব্যালান্স বজায় রাখতে আগ্রহী। যেমন সার্ক দেশগুলি চীনকে রাখতে চায় ভারতের ইনফ্লুয়েন্স চেক করতে, একই কারণে আসিয়ান দেশগুলি চীন সামলাতে RCEPতে ভারতের ইনক্লুশন চেয়েছিল। এখন ভারতের অর্থনৈতিক ফিল্ডে বিশেষ আত্মবিশ্বাস না থাকায় এসব ক্ষেত্রে বিশেষ এগিয়ে আসে না, সেটা আলাদা কথা। 
  • lcm | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:৫৩497826
  • Kallol Dasgupta | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২১:৫৭497851
  • গুরু। আমি তেমনভাবে বাংলাদেশ রাজনীতির পুংখনুপুঙ্খ খোঁজ রাখিনা। খবরের কাগজে যা পাই, আর কিছু বাংলাদেশের বন্ধুদের থেকে শুনি। 
    মুজিব-জিয়া-এরশাদ-খালেদা১-হাসিনা১-খালেদা২-হাসিনা২ দেখেশুনে মনে হয়েছে এরশাদের আমল পর্যন্ত রাশিয়া(ভারত)-আমেরিকা(পাকিস্তান ও ঘুরিয়ে চিন) এদের মধ্যে দড়িটানাটানি। অবশ্য এটা বেশ সরলীকরণ হয়ে গেলো। বাংলাদেশের ভিতরের রাজনৈতিক টানাপোড়েন এতে ধরা পড়ে না। পরে খালেদা১ ও হাসিনা১ বা খালেদা২ কি হাসিনা২ আমলে গণতন্ত্র শক্তিশালী হয়েছে। মাথায় রাখতে হবে সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে ইসলামী মৌলবাদ, যেখানে পেট্রো-দিনারের ভূমিকা অনস্বীকার্য। আবার এখথাও ঠিক সমাজের বিভিন্ন অংশের গণতান্ত্রিক স্বরও উঠে এসেছে এই সময়ে। সুন্দরবন ধ্বংস বিরোধী আন্দোলন, খোলামুখের খনি বিরোধী আন্দোলন ঢাবি ও জাহাঙ্গীরনগরের বিভিন্ন ছাত্র আন্দোলন শক্তিশালী হয়েছে। চাকমাদের আন্দোলন একটা জায়গা পেয়েছে। কিন্তু ইসলামী মৌলবাদীদের চাপও বেড়েছে। ভারত এখন দাদাগিরির জায়গায় নেই, চিন দখল নিয়েছে অনেকটা। 
    তবে এসবই উপর উপর দেখা। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে মতামত দিন