এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  গপ্পো

  • বামনা 

    Jeet Bhattachariya লেখকের গ্রাহক হোন
    গপ্পো | ০৪ অক্টোবর ২০২০ | ২২১৫ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • “এই বামনা একটা চা দে। চিনি ছাড়া দিবি , বদ্দ বেশী চিনি দিস তুই " , বলেই হাজারি দোকানের সামনে পাতা ইস্কুলের বেঞ্চে বসে পড়লো ।
    “চা তে আগে থেকেই চিনি দেওয়া আছে । নতুন করে বানিয়ে দিব?”
    হাজারি একটা বিড়ি ধরাতে ধরাতে দাঁত চিবিয়ে বলল,” তা নতুন করে বানাবি না তোঁ কি ? জানিসনা আমার সুগার আছে "
    বামনা দাঁত খেঁচানি টা হজম করে নিল । এইরকম অনেক দাঁত চিবানো কথা প্রত্যেকদিন হজম করতে হয় । হাওয়ার সাথে গিলে নেয় আর জল দিয়ে ধুয়ে দেয় । এইভাবেই তোঁ ওর চোখের তলায় কালি এসেছে । দাড়ি গোঁফ কোনদিন রাখেনি । লোকে বলে দাড়ি নাকি বামনাদের মানায় না । শরীর মোটামুটি ঠিক ঠাক হলেও উচ্চতা আর বাড়েনি । উচ্চতা না বাড়লে কি আর বড় হওয়া যায় ? সেই দশ বছর বয়সে শেষবারের মতো বড় হয়েছিল তারপর থেকে বড়দের বা ছোটদের , কোন দলেই আর যায়গা হল না । বাপ মরে যাওয়ার পর এই চায়ের দোকান খুলেছিল মা । সেও চলে গেল কয়েক বছর আগে । সেই থেকেই দোকান চালাচ্ছে , আর দুমুঠো খাবার সকালে বিকেলে উদরে যাচ্ছে ।
    ঢাকুরিয়াতে রেল লাইনের ধারে একটা ছোট বস্তির ঘরে থাকে বামনা। বাড়িতে পায়খানা নেই, তাই গভীর রাত আর ভোর সকাল ছাড়া রেল লাইন ধারে দাঁত চেবান কথাগুলোকে পরিত্যাগ করার উপায় নেই । একদিন ঘুম থেকে উঠতে দেরী হয়ে গেছিল । লাইনের এক কোনে যখন বসেছে সবে ওমনি ভোঁ ভোঁ আওয়াজ করে সাতটা পনেরোর সোনারপুর লোকাল দৌড়ে এলো । কিন্তু তাতে বামনার মাথা ব্যথা নেই । উচ্চতা কম হওয়ার এই একটা সুবিধা আছে । বাচ্চা বলে চালিয়ে দেওয়া যায় । মাঝে মধ্যে ভাবে আর হাসে । কিছু তো সুবিধা হল ।
    “কি রে বানালি চা টা ?”, হাজারি আবার চমকে দিল ।
    “হচ্ছে হচ্ছে । একটু টাইম দেবে তো , নাকি "
    “দামাদাম মাস্ত কালান্দার, আলি দা দাম দে আন্দার ", গানটা গাইতে গাইতে রিন্টু এগিয়ে আসছে । কানে একটা সাদা ইয়ারফন । রোগা , প্যংরা ছেলে। হাতে এক ব্যাগ রুমাল ।
    বামনার কাছে এসে বলে ,” এই নতুন গানটা শুনেছ বামনাদা ? জিরো বইয়ের । সাহ্রুখ খান নিজে বামনা সেজে অভিনয় করেছে । একেবারে মাস্ত মেজাজ হয়ে যাবে।"
    “সাহ্রুখ খান , বামনা সেজেছে?”
    “আর বল কি ? এখন তোঁ তোমাদেরই যুগ বাবা । এই তোঁ কিছুদিন আগে ট্রেনে কতগুলো কলেজের ছোকরা নিজেদের মধ্যেই কোন একটা ইংরেজি সিরিয়াল নিয়ে কথা বলছিল । সেখানে নাকি আবার একটা বামনা হিরো । কিছু বুঝলে ?”
    বামনা একটু অবাক হয়ে যায় । এতো সব যায়গায় বামনারা হিরো হচ্ছে ? সে জানতোই না । আর জানবেই বা কি করে ? ইংরেজি বোঝার ক্ষমতা নেই । পেটে বিদ্যা নেই । বাড়ির টিভিটাও খারাপ হয়ে গেছে গেল বছরে। আর সারানো হয়নি । মোবাইলটাও ওর মতোই আনস্মার্ট ।
    “ঐসব সিনেমা গল্পেই হয় বুঝলি । নাহলে এমনিতে আমরা অদৃশ্য। লোকে দেখতে পায়না।"
    “অদৃশ্য?”
    “হ্যাঁ একেবারে "
    চায়ের জলটা টগবগ করে ফুটে উঠল । একেবারে রেস কোর্সের ঘোড়া দৌড়ানোর মতো আওয়াজ।
    “আমার তো মনে হয় একেবারে অদৃশ্য হয়ে যাওয়াই ভালো । পিছনে কেউ কাঠি করতে পারবেনা। কারুর চোখে পড়ব না । খালি দেখে যাবো সবকিছু ।"
    রিন্টু একটু দাঁত বের করে বলল,” বুঝেছি তোমার পানু দেখার শখ"
    “মানে ?”
    “মানে আবার কি ? মেয়েরা ল্যংত হয়ে স্নান করবে , সেটা তুমি বাথ্রুমে বসে বসে মজা দেখবে"
    বামনার মুখে একটু হাসি ফুটে ওঠে। এরকম চিন্তা যে তার মাথায় সারাক্ষণ ঘুরত একসময় । আজ পর্যন্ত জলজ্যন্ত কোন মেয়েকে চোখের সামনে জামা কাপড় খুলতে দেখেনি । বস্তিতে মেয়েদের স্নানের জন্য একটা ছোট বাথ্রুম ধরনের আছে । টিন দিয়ে বানানো বহুযুগের পুরানো । শত শত ছোট ছোট ছিদ্র আছে সেখানে । কিছু ছিঁচকে ছেলেরা মাঝে মধ্যেই সেই ফুটো দিয়ে উঁকি ঝুকি মারে । বামনা দেখেছে এই সব ছেলেগুলর কাণ্ড কীর্তি । মাঝে মধ্যে মুখ টিপে হেসেওছে ।
    পাশের ঘরের ময়নাকে খুব ভালো লাগে বামনার । যাদবপুরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাসন মাজার কাজ করে ময়না। হেব্বি খাটিয়ে মেয়ে । মাঝে মধ্যেই বামনা আর চোখে মেপে নিতো । কি মিষ্টি মুখখানি। সেই ময়না যখন ঐ বাথ্রুমে যায় তখন মনটা নেচে ওঠে বামনার । ফুটোতে চোখ রাখতে ইচ্ছে করে । কিন্তু হয়ে ওঠেনা , ফুটগুলো অব্দি যে বামনার চোখ পৌছয় না । তাই মনে মনে নিজেকে সান্তনা দেয় , একবার ভাবে যদি কোন দিন বিয়ে হয় তাহলেই দেখবে ।
    হঠাৎ করে ময়নার কথা ভাবতে ভাবতেই ওর চোখ চলে গেল স্টেশনের উলটো দিকে । ময়না হেটে যাচ্ছে প্লাটফর্মের উপর দিয়ে । ওর মাথা থেকে ঝুলতে থাকা একগুছ চুলের বিনুনি কোমরের স্রোতের সাথে একবার এদিক আর একবার অদিক দুলছে ।
    “এই বামনা , চা টা দে"
    ময়না যেন নিমেষের মধ্যে ফুড়ুৎ করে পালিয়ে গেল বামনার চোখের সামনে দিয়ে ।
    “হ্যাঁ, হ্যাঁ দিচ্ছি।"
    রিন্টু আবার গানের মধ্যে হাড়িয়ে গেছে। হানি সিঙ্গের একটা গান চলছে হয়ত । ইয়ারফনে বাজলেও বামনা সেটা শুনতে পারছে । ময়নাকে দেখে বামনার মনটা কেমন যেন ভালো হয়ে গেল । মুখে হাসি ফুটেছে গাঁদা ফুলের মতো। মনটা খুব চনমনে হয়ে গেছে ।
    এইদিকে হাজারি চায়ের অপেক্ষায় বসে ট্যারা চোখে তাকিয়ে আছে রিন্তুর দিকে । রিন্টু ছেলেটা একটু মেয়েবাজ হলেও মনটা খুব ভালো । দোকানে আসলেই একেবারে আদ্দা জমিয়ে দেয় । আর বামনার মনটা সাহ্রুখের গান না শুনেই মাস্ত হয়ে যায় । আসলে রিন্তুই একজন আছে যে বামনাকে কখনও হেয়ও করে না ।
    “চা খাবি তোঁ ?”
    “হ্যাঁ, দাও দেখি একটা ।", বলে রিন্টু পকেট থেকে সিগারেট বার করে মুখে ধরে । ইয়ারফনে একটা নতুন গান শুরু হয়েছে , আর রিন্তুর ঘাড়টাও তার সাথে দুলে যাচ্ছে ।
    “কি ব্যপার সিগারেট খাচ্ছিস? মাল আসছে নাকি খুব?”, হাজারি একটু দাঁত চিবিয়ে বলল ।
    রিন্টু ইয়ারফনটা বাইরে বার করে বলল,” মাল তোঁ সব তুমি কামাচ্ছ গুরু। বিকেলের ট্রেনে মুড়ি বিক্রি করে তোঁ দোতলা বাড়ি বানিয়ে নিলে "
    “আর তুইও তো কম যাস না । বেছে বেছে তো শিয়ালদা থেকে বালিগঞ্জ নিয়েছিস । যাতে মাঝে পার্ক সার্কাস পরে আর উটকো চামড়া শুকানোর গন্ধে লোকে পাগল হয়ে গিয়ে রুমাল কিনে নেয়। কিছু বুঝিনা ভাবছিস ?”
    “গুরু তুমি মহান । এই জন্যই তো দোতলা বাড়ি হয়েছে তোমার "
    “এই যা যা , বেশী কথা বলিস না । দোতলা বাড়ি আবার আমার ? এই বামনা তোর চা হল রে? আমার এই দিকে দেরী হয়ে যাচ্ছে। ট্রেনটা ঢুকল বলে "
    বামনার চা একেবারে রেডি । সে পেয়ালাতে চা ঢেলে এগিয়ে দিল হাজারির দিকে ।
    হাজারি চায়ে চুমুক দিতে না দিতেই রিন্তুকে বলল,” সিগারেটের একটা টান দিস তোঁ । ফার্স্ট কাউন্তার "
    “না গুরু, ঐসব হবে না । দিনে দুটো সিগারেট খাই। সকালে আর রাতে। তোমার মতো প্যকেত প্যকেত মারি না , বুঝলে ?”
    হাজারির মুখটা ফাটা বেলুনের মতো চুপসে গেল ।
    রিন্টু সেটা লক্ষ্য করেই জলন্ত সিগারেটটা এগিয়ে দিয়ে বলল,” গুরু , রাতে মাল খাওাবে?”
    হাজারি সিগারেট টা হাতে নিয়ে একটা টান মারতেই যাবে , ওমনি এরকম আবদার শুনে বিগরে গেল।
    “রাখ তোর সিগারেট। ঐসব মাল ফাল খাওাতে পারবোনা ।"
    “গুরু , প্লীজ । একটু খানি। তুমি খাও না সিগারেট টা। কোন অসুবিধা নেই । অনেক দিন পেটে তেল পরেনি । "
    বামনার রিন্টুর এই আবদার শুনে মায়া হল । ছেলেটা ভালো , বন্ধুর থেকেও ভালো ।
    “আমি খাওয়াবো । কখন আসবি?”
    রিন্টু একটু অবাক ভাবে বামনার দিকে তাকিয়ে বলল,” তুমি খাওয়াবে ?”
    “হ্যাঁ , বললাম তোঁ"
    ” চাটের খরচা আমার ",রিন্টু একগাল হেসে চায়ের পেয়ালাতে চুমুক দিয়ে বলল ,” তোমার ঐ ফুটো হাঁতে কিন্তু দারুন চা বানাও । "
    বামনার হাতে একটা ছোট ফুটো আছে । সেই ছোটবেলা থেকেই রয়ে গেছে । বাবার আশীর্বাদ পরেছিল কোন এক কালে । শেষ উপহার বললেও ভুল হবেনা । প্রথমে একটু ছোট ছিল, কিন্তু এখন বেশ অনেকটা বড় হয়েছে ।
    “ভোঁ ভোঁ " করে ক্যানিং লোকাল টা ঢুকে যেতেই রিন্টু আর হাজারি ছুট দিল । ব্যবসার টাইম । আর বামনা চুপচাপ বসে রইল ট্রেনের দিকে তাকিয়ে । এইভাবেই মাসের পর মাস কেটে যায় বামনার । "বামনা", নামটা হয়ত বামন থেকেই এসেছিল । আসল নাম কি রেখেছিল তা ওর আর মনে নেই । মনে রাখার দরকারও নেই । সেই যে দশ বছর বয়সে নামটা জুড়েছে সেই থেকে জুড়েই রয়েছে । এক চুল এদিক অদিক হয়নি । আর হবেই বা কেন ? অতিরিক্ত স্বাস্থ্যবান লোকেরা যেমন ভম্বল, মোটা হয়ে যায় তেমনি বেটেমানুষরাও কোথাও নাটা বা কোথাও বামনা হয়ে যায় । এতে লজ্জা বা রাগের কিছু নেই । এগুলই তো সমাজ থেকে প্রাপ্য এক একটা ময়ুরের পালক , যেগুলো মাথায় করে সারাজীবন চলতে হয় । আগেকার দিনে যেমন রায় বাহাদুর হত । বিদেশী লোকেরা খেতাব দিত আর মূর্খ দেশীরা মাথায় তুলে রাখত , ঠিক সেরকমই বামনা মাথায় তুলে রাখে । এই উপাধি তো আর সবাই পায় না ।

    (২)
    বেলা বারোটা বাজতে যায়, দোকান বন্ধ করে বামনা চলল বস্তির দিকে চান , খাওয়া করতে । বাড়িতে তো আর কেউ নেই । তাই নিজেকেই রান্না করে সব কিছু করতে হয় । রেল লাইন ধরে ধরে এগিয়ে গিয়ে বাম দিকের বস্তিতে তিনটে ঘর পেড়িয়েই তার ঘর। সেইদিকে যেতেই হঠাৎ দেখে ময়না স্নানঘর থেকে বেরোচ্ছে । মাথায় একটা গামছা বাধা, একটা সারি কোনরকমে বুক অব্দি টেনে কিছুটা লজ্জা ঢেকেছে , আর বাকিটা বামনার চোখে ধরা দিয়েছে ।
    মন্ত্র মুগ্ধের মতো তাকিয়ে রইল সে ময়নার দিকে ।
    ময়না ওর পাশ দিয়ে দিব্বি ঐরকম ভাবে চলল। লাক্স সাবানের একটা বুদবুদে গন্ধ ছড়িয়ে দিয়ে নিজের ঘরে ঢুকে পড়লো । কিন্তু বামনার নাকে এক অন্য গন্ধ ঠেকল । সেই নব বসন্তের গন্ধ, যার জন্য পৃথিবীর আদিকাল থেকে পুরুষরা পাগল হয়ে এসেছে ।
    তবে এই পুরুষের পাগলামি ময়না বোঝেনা । কারন এই পুরুষের অস্তিত্ব ময়নার টানা টানা চোখে ফাকে ধরা পরে না, আটকে যায়না ওর লম্বা চুলের বিনুনির খাঁজে ।
    দুপুরের খাওয়া হল না আর বামনার, দুপুরটা সে ময়নানগরীতেই ডুবে রইল । এরকম মাঝে মধ্যেই হয়ে থাকে । অনেক অনেক একাকিত্তের রাত কাঁটায় বামনা ময়না নগরীতে । এ যে একেবারে নিজের, কোন বাধা নেই , কোন নিষেধ নেই। এখানে কেউ তাকে হেও করে না । কেউ তাকে বামনা বলে ডাকে না । বাবা মায়ের দেওয়া নামটা শুনতে পায় মাঝে মধ্যে। রোজ শোনে আর রোজ সকালে লাইনের ধারে যেতে যেতে ভুলে যায়। কি নাম ছিল যেন ওর ?
    সন্ধের সময় এক ফাকে গিয়ে বাংলার বোতল টা তুলে আনে । মনটা বেশ ভালো লাগছে আজকে ।
    রাত বাড়তে বালিগঞ্জ স্টেশন আর ঢাকুরিয়ার মাঝের বিলের সামনে গিয়ে বসে রিন্টু আর বামনা। চাট হিসেবে রিন্টু আবার দুটো বিরিয়ানি নিয়ে এসেছে।
    “করেছিস কি ? বিরিয়ানি দিয়ে মদ খাবো ? বমি হয়ে যাবে।"
    রিন্তুর মেজাজ আজ খুবই ভালো ।
    “আরে বামনাদা খাও না । ওত ভাববে না। এই নাও , সিগারেট খাও ", বলে একটা সিগারেট এগিয়ে দিল বাম্নার দিকে ।
    বামনা মাঝে মধ্যে সিগারেট খায়। বাংলা খেলেই সিগারেট ধরায়। এরকমি এক সিগারেট ওর বাবা খেত । এরকমি কোন এক যায়গায় বসে বাংলাও খেত। আর তারপর একদিন বাড়ি ফিরে বামনার ডান হাতে জলন্ত সিগারেট টা গুজে দিয়েছিল । জ্বলুনি যে কি হয় সেইদিন বুঝে ছিল বামনা । চীৎকার করেছিল খুব । খুব ভয়ঙ্কর চীৎকার । ফোস্কা পরেছিল হাতের উপর ।
    আর এই ঘটনার কিছুদিন পরে বামনার বাবা নিজেও আগুনে জ্বলেছিল । গলগল করে হাড়ের উপর থেকে মাংসগুলো ঝরে পরেছিল। তবে সেইদিন বামনা আর একটা জিনিস বুঝতে পারে । তার হাতের ফোস্কা আর ফোস্কা নেই । এখন গর্ত হয়ে গেছে । একেবারে ইস্পার উস্পার । একদিক থেকে দেখলে অন্যদিকে স্পষ্ট দেখা যায় , যেন কোন বন্দুকের গুলি এফোঁড় ওফোঁড় করে বেড়িয়ে গেছে ।
    আজগে মদের নেশায় সেটা যেন আরও একটু বড় দেখাচ্ছে । সে আর একবার ভালো করে দেখে নিল । রেল লাইনের ধারে পোস্টগুলো থেকে এক ঝাক আলো এসে পড়েছে তাদের মদের গেলাসে ।
    “গান চালাই ?”, রিন্টু জিজ্ঞেস করলো ।
    বামনা নেশায় টইটুম্বুর ,”চালা"
    রিন্তুর মবাইল থেকে গান বেজে উঠল ,” প্রেমে পড়া বারন , কারনে অকারণ "
    বামনা আলতো ভিজে ঘাসের উপর শুয়ে পড়লো । গানটা আগেও শুনেছে সে । ভালো লেগেছে , এখন যেন আরও বেশী ভালো লাগছে ।
    “গানটা হেব্বি না ?”
    বামনা কিছু না বলে একটা আঙ্গুল দিয়ে মুখের উপর রাখল । চুপ করার ইঙ্গিত পেয়ে রিন্টু একটু মিচকে হেসে উঠল । তারপর বামনার পাশে গা এলিয়ে দিল । দুইজনে শুয়ে শুয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে রইল । খোলা আকাশে তারাদের আনাগোনা বড় ভালো লাগছিল । ধিরে ধিরে ট্রেনের আওয়াজগুলো থেমে গেল আর মোবাইলের গানটা রাত টাকে আরও গাড় করে দিল । আজ যেন এই তারাময় রাতটাও এক বোতল বাংলা টেনেছে । ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে আছে বামনা আর রিন্তুর মতো ।
    রিন্টু বলে উঠল ,”বামনাদা এবার একটা বিয়ে কর। "
    “আমাকে লোকে দেখতেই পায় না । বিয়ে করবো কাকে?”
    রিন্টু হেসে বলল ,” কেন গো ? এতো হ্যন্দসাম তুমি "
    বামনা একটু সিরিয়াস্লি বলে উঠল ,” আমি লোকের চোখে অদৃশ্য রে রিন্টু । তুই বুঝবিনা । কেউ বুঝবেনা "
    মনে মনে আরও অনেক কথা ছিল । কিন্তু মদ খেলে কথাগুলো জড়িয়ে যায় । অবাঞ্ছিত আবেগ গুলো চেতনার একেবারে গভিরে ঢুকে যায় । বেরতে চায় না । আর বামনা সেগুলো বের করতেও চায় না । এই সময়টা সে আনন্দ করতে চায়, ভালো থাকতে চায় । আর ভালো থাকার ঠিকানা হচ্ছে ময়না নগরী ।

    (৩)

    সকাল বেলা ঘুম ভাঙতেই চমকে উঠল বামনা।
    “একি?”
    চাদরের মধ্যে থেকে হাত বের করেই চমক টা লাগলো । হাতের কবজির পর থেকে আর কিছুই দেখতে পাচ্ছেনা । তার সেই ফুটো হওয়া হাত কোথায় গেল?
    ভীষণভাবে ঘাবড়ে গেল । বাম হাত দিয়ে চিমটি কেটে দেখল স্বপ্ন কিনা । কিন্তু এ যে স্বপ্ন নয় , এ যে একেবারে সত্যি । হাত টা তার সত্যি নেই ।
    দরদর করে ঘাম ঝরছে । রাতের সমস্ত ঘটনা বারবার মনে করতে লাগলো । একবার মনে হল লাইনের ধারে পরে যায়নি তো ? কোন একটা ট্রেন এসে কেটে চলে যায়নি তার সেই ফুটো হওয়া হাত ? কিন্তু তাহলে তো বুঝতে পারতো । শরীরের একটা অঙ্গ চলে যাবে আর মানুষ বুঝবেনা? এরকম কি হয় নাকি ?
    না না এটা স্বপ্নই । মনকে বোঝানোর বারবার চেষ্টা করতে লাগলো বামনা । পুরোটাই একটা স্বপ্ন । এই স্বপ্নের জগত থেকে তাকে বেরতে হবে ।
    কিন্তু বেলা বয়ে যায় , তবুও তার স্বপ্ন ভঙ্গ হয় না । হাত আর ফিরে আসেনা । তবে অবাক ব্যপার হচ্ছে হাত টা যে আছে সেটা ও বুঝতে পারছে । পাঁচ আঙ্গুল নাড়িয়ে দেখল একবার । গায়ের উপর থেকে চাদরটাও তুলে দেখল । হ্যাঁ সবই হচ্ছে , খালি চোখে দেখতে পারছেনা ।
    বুঝতে পারছিলনা কি করবে । আজ দোকান না খোলাই ভালো । বাড়িতে সারাদিন বসে রইল আর ভেবে গেল এর পরে কি করা যায় ? কিন্তু কোন ভাবনাই মাথায় স্থায়িত্ত পেল না ।
    দুপুরবেলার দিকে ফোনটা বেজে উঠল । রিন্টু ফোন করেছে । কাঁটা হাত দিয়েই ফোনটা ধরল ।
    “বামনাদা কি ? বেশী হয়ে গিয়েছিল কালকে ?”
    বামনা কি বলবে বুঝতে পারছিলনা ।
    “হ্যাঁ রে, একটু বেশী হয়ে গেছিল "
    “ঠিক আছে , ঝিমিয়ে নাও আজগে । কালকে দেখা হচ্ছে ", বলে ফোনটা কেটে দিল রিন্টু ।
    বামনা খুব চিন্তায় পরে গেছে । সারাদিন বিছানাতে শুয়ে রইল । শুয়ে শুয়ে বারবার নিজের হাতটার দিকে তাকাতে থাকলো । যদি একবার , একবার ফিরে আসে সেই ফুটো হাত । এতদিন নিজের শরীরকে ঘেন্না করে এসেছে সারাক্ষণ । সারাক্ষণ আকাশের দিকে তাকিয়ে অচেনা কোন এক ব্যক্তিকে অনেক গালাগাল দিয়েছে । অনেক কুকথা শুনিয়েছে । সমাজ ওকে গালাগাল শিখিয়েছে । কেউ কেউ ওকে এসে বলেছে আগের জন্মের কৃতকর্মের ফল । বিশ্বাস করেছে বামনা তাদের কথাগুলোকে । কিন্তু এখন সব মিথ্যে মনে হচ্ছে । সব মিথ্যে , সেও আর দশটা মানুষের মতো একটা মানুষ । রাগ , প্রেম , দুঃখ তার মধ্যেও আছে বাকি মানুষের মতো । সমাজ তাকে মেনে নেয় নি । গতানুগতিক এই সমাজে কি থাকতেই হবে ?
    নিজের প্রতি তার ঘেন্না একটু কমে যেতে লাগলো । এখন যেন এই খুদ্র হাতটাই খুব প্রিয় হয়ে উঠেছে ।
    সে কি সত্যি অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে ? অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে এই সমাজের বুক থেকে ?
    মনে মনে ভাবে আর চিন্তায় ডুবে যায় । অদৃশ্য হয়ে গেলে কি কি করবে সে ? নবান্নে গিয়ে রাত কাটাবে ? শুনেছে বাইপাসের ধারে বিশাল হোটেল আছে । সেখানে গিয়ে কি পায়খানা করবে ? একবার তো করতেই পারে । সারাজীবন লাইনের ধারে বসে বসে হেগে এসেছে , জীবনে একবার তো বিদেশী কমোতে পাছা থেব্রে বসতে পারবে । ভালোই হয় অদৃশ্য হলে । ঝুলন্ত রেস্তোরাতে বসে খাবার খাবে , বিনা টিকিতে প্লেনে চড়বে , যখন যেখানে খুশি সেখানে চলে যাবে । কোন বাধা বিঘ্ন নেই । যখন ইচ্ছে হবে পানু দেখবে । শাহরুখ খানের সাথে ওঠা বসা করবে । এরকম হাজারও চিন্তা তার মাথায় ঘুরতে থাকে ।
    বিকেল গড়িয়ে রাত হয়ে গেল , হাত আর ফিরে এলো না । সে হয়ত চলে গেছে ময়না নগরীতে । বামনা এবার বুঝে গেছে হাত আর আসবেনা , এখন এটাই সত্যি । এই সত্যি নিয়ে বাঁচতে হবে তাকে , যেভাবে বেচেছিল এতদিন নিজেকে বামনা ভেবে। নিজের আসল নাম ভুলে গিয়ে । আধার কার্ড তার নেই । থাকলে হয়ত সেখানেও বামনা লেখা থাকতো । পড়াশুনা হয়নি তার । হলে আর কি হতো ? বড় অফিসার হতে পারতো ? যে স্টেশনে দোকান দিয়েছে সেই স্টেশনের কি স্টেশন মাস্টার হতে পারতো ? না , হয়ত না । হতে পারতো না । কোন এক সার্কাস দলে জোঁকার সেজে চিত্ত বিনোদন করতো । বাচ্চারা দেখে হাসত । আর বড়রা দুটো সিগারেট খেয়ে পলিটিক্স আর কমিউনিসাম নিয়ে আলোচনা করতো । অবশেষে তার মতো হাজারো বামনা খিদের চোটে আরও দুবার সার্কাসের মঞ্চে খেলা দেখাত । জীবন সেই একি যায়গাতেই রয়ে যেতো। তাই এর থেকে ঢের ভালো অদৃশ্য হয়ে যাওয়া ।

    আর ফিরে পেতে চায় না সেই বাপের ফুটো করা হাত । যাচ্ছে যাক , এইরকম জীবনের সত্যি কোন মানে হয়না । বুঝতে পারছে এখন আসতে আসতে তার পায়ের পাতাগুলোও গায়েব হয়ে যাচ্ছে ।

    চাদর উলটে দেখল একবার । হ্যাঁ সত্যি , দেখতে পারছে না । পায়ের পাতা দুটো নেই । চলে গেছে । হাওয়ার সাথে মিশে গেছে রক্ত চর্ম । মনে হচ্ছিল হয়ত পার্ক সার্কাসের কারখানাতে তার হাত পায়ের চামড়া গুলো কাল সকালের রোদে হয়ত শুকাবে । আর সকালের সোনারপুর লোকালের যাত্রীরা সেই চামড়ার গন্ধে নাকে রুমাল চাপা দেবে । যাদের কাছে নেই তারা রিন্টুর থেকে কিনে নেবে। যাক কারুর কাজে তো লাগলো ।
    রাত যত গভীর হতে থাকে তত বামনার শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলো এই জগতের দরজা ভেঙ্গে ময়না নগরীতে হাজিরা দিতে থাকছে । মনে মনে প্রথমে ভয় লাগছিল, কিন্তু এখন একটু আনন্দ লাগছে । এখন সে এই তুচ্ছ তাচ্ছিলের সমাজের থেকে বেড়িয়ে যেতে পারছে । কেউ আর তাকে অবজ্ঞা করবে না । এখন সে ঐ ইংরেজি সিরিয়ালের বামনের থেকেও অনেক বেশী ক্ষমতাশালী হয়ে উঠবে । অনেক বেশী উপরে যাবে । এই বৃহৎ পৃথিবীতে আর দশটা মানুষের মতো সেও এক স্বাভাবিক জীবন জাপন করবে ।
    শরীরের অঙ্গগুলো যত অদৃশ্য হচ্ছে ততই নিজেকে বেশী স্বাধীন মনে করছে । আর কোন লোকাচার নেই , আর কোন পিছুটান নেই । এখন খালি আবেশের নদীতে বয়ে যাবে । ভেসে বেড়াবে স্রোতের সাথে , কোন এক অজানা উপকুলে গিয়ে দেখবে এক নতুন শহর । সেখানে বানাবে একটা ছোট ঘর । আর এখানেই গড়ে তুলবে সত্যিকারের ময়না নগরী ।
    রেল লাইনে লাল সূর্যের প্রথম আলোর প্রতিফলনের সাথে সাথে বস্তির লোকেরা রাতের খালি বাংলার বোতলে জল নিয়ে হাজির হয়ে যায় । সোনারপুর লোকাল ভোঁ ভোঁ বাজিয়ে এগিয়ে যায় বালিগঞ্জ স্টেশনের উপর দিয়ে । নিত্য দিনের যাত্রীরা জানে এই সময় জানলার বাইরে তাকানো মানা । লাইনের ধারে সারি সারি লোকেরা বসে থাকে । রাতের বিরিয়ানি আর বাংলার পচা গন্ধ বেরোয়ে ।
    তবে রোজকার মতো আজ বামনা সেই গন্ধ ছড়াতে যায়নি লাইন ধারে । আজ গন্ধ বেরোচ্ছে বাইপাসের ধারে হায়াতের হানিমুন স্যুটে ।
    পেট খালি হওয়ার পরে বুফে ব্রেকফাস্ট , তারপরে আবার ঢাকুরিয়ার বস্তিতে ঠিক বেলা বারোটা নাগাদ টিনের চালের তৈরি সেই বাথ্রুমে । ময়না নগরীতে একটু চমক দরকার । জীবনটা মাস্ত হয়ে যাবে ।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • গপ্পো | ০৪ অক্টোবর ২০২০ | ২২১৫ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    নীল  - Jeet Bhattachariya
    আরও পড়ুন
    সবুজ - Jeet Bhattachariya
    আরও পড়ুন
    লাল - Jeet Bhattachariya
    আরও পড়ুন
    ইঁদুর  - Anirban M
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Ranjan Roy | ০৪ অক্টোবর ২০২০ ২০:৩০98058
  • ভালো লেগেছে।

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। কল্পনাতীত প্রতিক্রিয়া দিন