এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  উপন্যাস

  • হারানো নদীর উপকথা 

    জীৎ ভট্টাচার্য্য লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ২১ ডিসেম্বর ২০২১ | ১২৫৪ বার পঠিত
  • ভোর চারটে নাগাদ ঘুম ভেঙে গেলো অর্কর। কিসের একটা ঠক ঠক আওয়াজ তার পাতলা ঘুমে বাধা দিয়েছে। ঘুম চলে গেলে চোখ বন্ধ করে আর শুয়ে থাকা যায়না। তাছাড়া রোজ রোজ সেই একই স্বপ্ন তাকে ঠিক করে ঘুমতেও দিচ্ছে না। প্রায় প্রতিদিনই সেই একইভাবে তার মা অনামিকা আসছে আর বাড়িয়ে দিচ্ছে একটা কাগজ। ব্যাস, এইটুকুই। এর থেকে বেশী আর এগোয় না। কি বলতে চাইছে তার মা? বাবার কথা? নাকি অন্য কিছু?

    ঠক ঠক শব্দটা যেন আরো গভীর হলো। আর শুয়ে থাকতে পারলোনা বিছানাতে। অপরাজিতা ফুল ছাপা চাদরটা সরিয়ে বিছানা থেকে নেমে পড়লো শব্দ অনুসন্ধানে। আওয়াজটা কোন এক জানলার দিক থেকে আসছে। ব্যাপারটা সহজ হয়ে দাঁড়ালো। তার এই থ্রী বেডরুম ফ্ল্যাটের ভিতরে প্রতিটা ঘরে দুটো করে জানলা। কলকাতার সমস্ত স্ট্যান্ডার্ড ফ্ল্যাটগুলো এরকম ভাবেই তৈরী।

    তবে একা মানুষের জন্য থ্রী বেডরুম একটু বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে। কেনার আগে অনামিকা অনেকবার বারণ করেছিল, "এতো বড় ফ্ল্যাট সামলাতে পারবি তো?" মায়ের কথায় সেই সময় একটু হেসেছিল খালি। তারপর আর কিছু না বলে, এই ফ্ল্যাটটাই বুক করেছিল। যদিও অনেক ভেবে চিনতেই ডিসিশান নেওয়া। একটা ঘর ষ্টুডিও কাম বৈঠকখানা, একটা মায়ের জন্য আর একটা নিজের জন্য। কিন্তু মা আর রইলো কদিন? সারাজীবন কষ্ট সহ্য করে যখন দু দন্ড বিশ্রামের সময় এলো তখুনি ফুড়ুৎ করে চলে গেল। ঠিক যেন শালিকের প্রাণ।

    "ঠক !ঠক!", করে আওয়াজটা আরো দৃঢ় হলো।

    অর্ক জানালার খুব কাছে গিয়ে দেখে একটা শালিক পাখি। জানালার সাটার পাল্লাগুলোর মধ্যে দিয়ে সম্ভবত নিজের প্রতিচ্ছবি দেখে রেগে গেছে। ছোট হলুদ ঠোঁট দিয়ে ক্রমশ ঠুকরে যাচ্ছে।

    সে হাসিমুখে সাটারটা সরিয়ে দিতেই শালিকটা ভয় পেয়ে করে উড়ে গেল আর এক টুকরো উষ্ণ বাতাস ঘরের ভেতরে ঢুকে পড়লো। অর্কর খুব একটা গরম সহ্য হয় না। তাই বাড়িতে যতক্ষণ থাকে ততক্ষন এ সি টা চলতে থাকে। আর আজকাল তো একটু বেশীই বাড়িতে থাকে। কাজের চাপ যে অনেকটাই। তাছাড়া দুদিন ধরে একটু ঠান্ডা গরম লেগে গেছে। এমনিতেই তার ইমিউনিটি একটু কম। ছোট থেকেই একটু ওয়েদার চেঞ্জ আর অর্ক অসুস্থ। মা অনামিকা যে কত সহ্য করেছে তা আর বলবার নয়।

    জানালাটা খুলে আর বন্ধ করলোনা অর্ক। উল্টোদিকের বিল্ডিং এর দিকে চোখ চলে গেল। সেটাও অবশ্য তাদের সোসাইটির কম্পাউন্ডের ভেতরেই। একই হাইট। প্রত্যেকটি বিল্ডিং পনেরো তলা করে। অর্কর ফ্ল্যাট দশ তলায়। A ব্লকে।

    অনামিকার এতো উঁচুতে ফ্ল্যাট পছন্দ ছিল না। তার আবার এক্রোফোবিয়া ছিল। না না, সেরকম ভয়ের কিছু না। খালি বেশী উঁচুতে গেলে মাথা ঘুরতো। সেটাও অবশ্য তার মনের ধারণা। কোন ডাক্তার এই ব্যাপারে সার্টিফিকেট দেয়নি।

    কিন্তু অর্কর জীবনে দশ সংখ্যাটা খুব বেশি গুরুত্ত্বপূর্ণ ছিল। তার স্কুলের দশবছরের রোল নাম্বার দশ ছিল। কোন দিন নয় বা এগারো কোন কিছুই হয়নি। একমাত্র দশ। তাই লটারি কাটতে গেলেও সে বেছে বেছে দশ সংখ্যাটিই খুঁজতো।

    অর্ক জানলাটা বড় করে খুলে বাইরের দিকে একটু তাকিয়ে রইলো। সূর্য তখনও ঘুম থেকে ভালো করে ওঠেনি। পুব আকাশে হালকা সিঁদুর আলো নতুন বৌয়ের মতো লজ্জা পাচ্ছিল আর সেই সিঁদুর আলো মেখে উল্টো দিকে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়েছিল একটা মেয়ে।

    অর্কর কেমন একটা কৌতূহল অনুভব করলো বুকের ভেতরে। সে মাথা ঘুরিয়ে একবার ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে নিলো। চারটে পাঁচ। এই সময়ে ব্যল্কনিতে একলা একটা মেয়ে? মনে কেমন যেন খটকা লাগলো। তাই সে জানলা দিয়ে ভালো করে তাকাতেই তার চোখ বড় বড় হয়ে গেল। মেয়েটা সম্পূর্ণ নগ্ন ভাবে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছে।

    অর্ক চুপ করে এক দৃষ্টিতে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে রইলো। চোখ সরাতে পারছিল না। এক অশান্ত ঝড়ে তার বুক দুলছিল। ভোরের বেলায় স্বপ্ন দেখছে না তো সে?

    হঠাৎ করে মেয়েটা তাকিয়ে দেখলো অর্কর দিকে। ক্লেশহীন, বিতৃষ্ণাহীন একটা চাহুনি ছিল সেই চোখে। অর্ক কিন্তু চোখ সরালো না। সেও একইভাবে তাকিয়ে রইলো। কেন সে জানে না। হাল্কা আলোতে যতদূর বোঝা যাচ্ছিল মেয়েটি এমন কিছু সুন্দরী নয়, চাপা গায়ের রঙ। তবুও কেন যেন তার চোখ আটকেছিল। এমনসময় মেয়েটির পিছন থেকে ব্যালকনির দরজা খুলে একটা ছেলে বেরিয়ে এলো।

    খালি গা, অর্ধ উলঙ্গ দেহ, মুখটা ঠিক দেখতে পেলো না। সে এসে মেয়েটিকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো। তার ঘাড়ে, গলায় চুমু খেতে খেতে একেবারে কোলে তুলে নিয়ে চলে গেল ঘরের ভেতরে। অর্কর আর বুঝতে বাকি রইল না কি হতে চলেছে।

    মেয়েটি যেখানে দাড়িয়ে ছিল সেখানে ফোটা ফোটা জলের দাগ লেগে আছে। তার ভেজা চুলের ছাপ। ওর মধ্যেই কোথা থেকে একটা শালিক পাখি এসে বসলো। তারপর আসতে আসতে এগিয়ে গেল ব্যালকনির দরজার দিকে আর ঠক ঠক করে নিজের প্রতিবিম্বের সাথে ঝগড়া শুরু করলো।

    এতো সকালে যে এরকম একটা দৃশ্য দেখবে সেটা কখনো ভাবেনি অর্ক। জানলা বন্ধ করে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লো। ঘন্টা খানেক ঘুমিয়ে নিলে মন্দ হয় না। এ সির হওয়াটা গায়ে লাগতেই চোখ জুড়িয়ে এলো। কিন্তু ঘুম এলোনা। ঘুমটা কেমন যেন হারিয়ে গেল। আর তার পরিবর্তে উল্টোদিকের মেয়েটি এসে বাসা বাধলো তার চোখের পাতায়। তার নগ্ন শরীরের প্রত্যেকটা খাঁজ যেন ভেসে বেড়াচ্ছে তার চোখের সামনে দিয়ে।

    বেলা এগারোটা নাগাদ বিছানা ছেড়ে উঠে পড়লো অর্ক। অনেক কাজ আছে। কমিশন নেওয়া কিছু ছবি বাকি আছে। সেগুলো না শেষ করলে বাকি টাকাটা আর ঢুকবে না। চারটে নতুন ইলাস্ট্রেশান আর একটা পোট্রেট। ছবি এঁকে বেশ নাম কামিয়ে ফেলেছে এই ক বছরের মধ্যেই। আর হবে নাই বা কেন? ছোটবেলা থেকে একটাই তার ধ্যান জ্ঞান ছিল। এই ছবি আঁকা। জগতের সব কিছু একদিকে আর অর্কর ছবির নেশা আর এক দিকে। বন্ধুরা সব পাগল বলতো। বাঙালি সমাজে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার না হয়ে আর্টিস্ট হবে এরকম দুঃসাহস আর কটা ছেলের আছে ?

    তা দুঃসাহস হোক কি ভালোবাসা, এটাই তার রুজি রোজগারের পথ। আর সেই পথে যেকোন ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারের থেকে আজ বেশী রোজকার হয়েছে। স্পেনে তার দুটো ছবি অকশনে বিক্রি করেই এই ফ্ল্যাটের টাকা যোগাড় হয়। বাইরে একটু ভালোই নাম ডাক হয়েছে তার।

    ষ্টুডিও রুমটাতে ঢুকে কানে একটা হেডফোন লাগিয়ে অসমাপ্ত পোট্রেটতার কাছে বসলো গিয়ে। মোবাইলে পাগানিনি ক্যাপ্রিস চব্বিশ চালিয়ে ক্যানভাসটার দিকে তাকিয়ে রইলো। তুলি গুলো পরিষ্কার জলে ভালো করে ধুয়ে নিলো। জলরং ওর স্পেশালিটি। আউটলাইনিং হয়ে গেছে এখন খালি রং ভরার সময়।

    বেহালার সুর গুলোর সাথে তাল মিলিয়ে চলতে থাকলো তার তুলি। টানা, টানা স্বপ্নালু একটা এফেক্ট দিতে বলেছে ক্লাইন্ট। জল দিয়ে প্রথমে পুরো ক্যানভাসটা হালকা ভিজিয়ে কন্ট্রাস্টিং রঙ দিয়ে আলতো করে ছুঁয়ে দিতে লাগলো। রঙগুলো নিজের খেয়ালেই ভেসে যাচ্ছে, চোখ চিবুক বাদামি আর নীলের হালকা ব্রাশ স্ট্রোক।

    মুড্টাকে ধরে রাখতে হবে, তাই ওয়েস্টার্ন ক্লাসিকাল এর এক একটা ভায়োলিন সোনাটা চলছে। মুডের উপরি সব কিছু নির্ভর করে। মুড্ নষ্ট হয়ে গেলে ছবি নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

    এই সময়টা তার মনযোগের সময়। যে কোন আর্টই হচ্ছে ধ্যানের মতো। এর মধ্যে একেবারে ঢুকে না যেতে পারলে সেই আর্ট কখনো চরম শিখরে উঠতে পারে না। যে সমস্ত ওস্তাদরা গান করে বা যারা বাজিয়ে হিসেবে নাম করেছে বা যে সমস্ত অভিনেতারা জীবনে প্রচন্ডভাবে সাকসেসফুল তারা সকলেই নিজের নিজের জগতে স্বৰ্গ খুঁজে পেয়েছেন। ছোটবেলায় আঁকার ম্যাডাম তাকে বাড়ে বাড়ে বলতো অধ্যাবসায় আর পরিশ্রম না হলে কেউ এগোতে পারে না। ছবি আঁকার ক্ষেত্রেও তাই। রঙ, তুলি শুধু হাতে নিলেই শিল্পী হওয়া যায় না। শিল্পী হতে গেলে অনেক পরিশ্রমের প্রয়োজন।

    মাঝে মধ্যে ভাবে ম্যাডামের কথা। কি ভালোই না লাগতো তার। কিন্তু স্মৃতিগুলো সবই যেন হারিয়ে যাচ্ছে। নামটা তো দূরে থাকে, মুখটাও আর মনে পরে না। খালি একটা ধোঁয়াশা। ভয় লাগে, এরকম ভাবে মায়ের মুখটাও একদিন হারিয়ে যাবেনা তো স্মৃতির ধূসর পাতাগুলো থেকে।

    কানের লতিকার মধ্যে দপদপিয়ে চলছে ক্লাসিকাল সংগীত। আর এরই মধ্যে "টিং টং" করে কলিং বেলটা বেজে উঠলো।

    "মিচ, এখন আবার কে এলো?"

    কান থেকে হেডফোনটা নামিয়ে বেরিয়ে এলো ষ্টুডিও থেকে। কাজের সময় জ্বালাতন তার একেবারে ভালো লাগেনা। এখন আবার মুড্ তৈরী করতে হবে। আবার করে আউটলাইনিং করতে হবে। আবার করে কালার কম্বিনেশন ঠিক করতে হবে। এই সব ভাবতে ভাবতেই সে দরজার কাছে এগিয়ে গেল। মেন্ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে সে জিজ্ঞেস করলো ,"কে?"

    উত্তর কিছু পেলোনা। খালি কলিং বেলটা আবার "টিং টং" করে বেজে উঠলো।

    (২)

    দরজাটা খুলতেই চমকে উঠলো অর্ক। এ যে উল্টোদিকের মেয়েটা, যাকে সকালে দেখেছিল।

    "চিনতে পারছেন?", মেয়েটি বলে উঠলো।

    "হ্যা, মানে। ..আপনি ?"

    "আসতে পারি?", মেয়েটি খুব স্বাভাবিকভাবেই বলল।

    অর্ক বুঝতে পারছিল না কি বলবে। ধরা পরে যাওয়ার ঠিক আগের মুহূর্তে অপরাধীদের যেমন বুক কাঁপে, ঠিক সেরকম ভাবেই কাঁপছিল অর্ক।

    "কি? ভেতরে আসতে বলবেন না?"

    অর্ক একটু ইতস্তত করে বলল, "হ্যা, হ্যা। আসুন ভেতরে"

    মেয়েটি ভেতরে ঢুকতেই তাকে ড্রয়িং রুমে সোফাতে বসার জন্য ইশারা করলো অর্ক। বুঝতে পারছিল না, হঠাৎ এখানে আসার কারণটা কি?

    "আপনিও বসুন।"

    মেয়েটির গলার আওয়াজে এক অজানা আদেশ লুকিয়ে ছিল। অর্ক চুপচাপ লক্ষী ছেলের মতো বসে পড়লো সোফার উপর। মুখে তার কোন কথা নেই। কেমন যেন ভয় লাগছিল। মেয়েটি বলে উঠলো, "আপনি পান্ডুর কথা জানেন নিশ্চয়ই?"

    হঠাৎ করে পান্ডুর কথা শুনে অর্ক একটু চমকে উঠলো। এরকমভাবে মহাভারতের চরিত্র নিয়ে কথা তোলার মানেটা কি? অর্ক একটু চুপ করে থেকে বলল, "জানি, কেন বলুন তো?"

    মেয়েটি একটু রহস্যময়ী হাসি হেসে বলল, "আপনার বাড়িতে প্রথমবার এলাম। আর একটু চা খাবার জন্যও বললেন না? এমনকি বাড়িটা ঘুরেও দেখালেন না?"

    অর্ক একটু থতমত খেয়ে গেল। বেশ অন্যধরণের মেয়ে তো। নিজে থেকেই চা খেতে চাইছে। তবে মেয়েটিকে দেখে যেমন মনে হয়েছিল তেমন না। তার চোখ মুখের গঠন একটু অন্যরকম। কোঁকড়ানো চুল, পরনে একটা সাদা টিশার্ট ও নীল জিন্স।

    অর্ক চোখ সরিয়ে নিলো। মেয়েদের সামনে একটু বেশীই লজ্জা পায়। তার উপর সুন্দরী হলে তো কথাই নেই। সে ব্যস্ত হয়ে বলল, "হ্যা, হ্যা নিশ্চয়ই। কি খাবেন বলুন? চা, না কফি?"

    মেয়েটি সোফাতে বসে ঘরের চারদিকে চোখ বোলাতে বোলাতে বলল, "ব্ল্যাক টি হলে ভালো হয়"

    অর্ক রান্নাঘরের দিকে এগিয়ে গেল। চা সেও ভালোবাসে। কিন্তু দুধ চা না। রান্নাঘরের সেলফে অনেক রকম ফেভারের চা রাখা আছে। র‍্যাস্পবেরি, জিঞ্জার, ক্যামোমাইল, টারমারিক।

    "আপনি কি ফ্লেভার টি পছন্দ করেন?"

    "না, প্লেন ওল্ড ব্ল্যাক "

    অর্ক চা বানাতে বানাতে মেয়েটি পুরো হল জুড়ে ঘুরতে লাগলো। প্রতিটা দেওয়াল সে ভালো করে দেখছে, না জানি কি সম্পদ লুকিয়ে আছে দেওয়াল গুলোর ভেতরে। যে দেওয়ালে টিভি আছে সেই দেওয়ালটা ইন্ডিগো ব্লু দিয়ে পেন্ট করা আর তার ঠিক উল্টো দিকে প্যাটার্ন করে রেড, গ্রিন আর হোয়াইট। রান্নাঘরটার ইন্টিরিয়র টার্কোয়েজ আর গ্রে এর কম্বিনেশন। তার উল্টো দিকের দেওয়ালটায় একটা বড় আকারের ফ্ল্যামিংগো আঁকা। আর মোটামুটি পুরো ফ্ল্যাট জুড়েই ক্যাকটাস, স্যকুলেন্ট আর ইন্ডোর প্ল্যান্টে ভর্তি।

    "এই ফ্ল্যামিংগোটা বেশ ভালো প্রিন্ট পেয়েছেন"

    অর্ক চা টা মেয়েটির হাতের দিকে এগিয়ে বলল, "ওটা প্রিন্ট না। হাতে আঁকা"

    "বাহ্, সুন্দর হয়েছে তো"

    "ধন্যবাদ"

    মেয়েটি চায়ে চুমুক দিতে দিতে বলল, "আপনি করেন কি?"

    "আমি একজন পেন্টার, ইলাস্ট্রেটর"

    পেন্টার কথাটা শুনে মেয়েটির ভুরু কুঁচকে গেল।

    "বাবা, শিল্পী মানুষ তো আপনি। এই আঁকা টা কি আপনার?"

    অর্ক চা খেতে খেতে একবার হুম করে উঠলো। মেয়েটির আসার উদ্দেশ্য তার কাছে এখনো স্পষ্ট নয়। শুধুমাত্র বাড়ি দেখবার জন্যই তো সে নিশ্চয়ই আসেনি। অন্য কোনো ব্যাপার আছে। অবশ্যই সকালের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আসা হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু অর্ক তো ইচ্ছা করে কিছু করে নি। জানলা খুলতেই যদি ওরকম কিছু একটা চোখের সামনে আসে তাহলে কার কি বা করার আছে?

    অর্ক আর নিজেকে চেপে রাখতে না পেরে বলে উঠল, "দেখুন, আই এম রিয়ালি সরি। আমি এক্সপেক্ট করতে পারিনি। জানালা খুলেছিলাম অন্য একটা কারণে। আমার ভুল হয়ে গেছে। আমাকে ক্ষমা করবেন মিস ..."

    "ওড়না", মেয়েটি চায়ের কাপে আর এক চুমুক দিয়ে বলল, "ওড়না পল "।

    অর্ক ভেতরে ভেতরে কয়েকটা কথা গুছিয়ে নিয়ে আবার বলতে শুরু করলো, "দেখ ওড়না, আমি সত্যি দুঃখিত"।

    ওড়না অর্কর কথার মাঝখানেই তার স্টুডিওর দিকে এগিয়ে যেতে যেতে বলল, "বাট ইউ লাইকড ইট, রাইট?"

    এই প্রশ্নের উত্তর হয় না। পৃথিবীতে থাকা কোন মানুষ এই প্রশ্নের উত্তর মুখ ফুটে দিতে পারবে না। তার ভালো লেগেছিল? হ্যা, লেগেছিল। যৌনতা যেকোন প্রাণীর এক আদিম রিপু। সেই রিপুকে জয় করা সহজ কথা নয়। আর কেনই বা জয় করতে যাবে? অর্ক তো কোনো সাধু নয়। রাগ, দুঃখ, ভালোবাসা, লোভ, কাম নিয়ে গড়া এক নিতান্তই সাধারণ মানুষ।

    অর্ক কিছু একটা বলতে গিয়ে বললনা। ইতিমধ্যে ওড়না ষ্টুডিও রুমে ঢুকে চারদিকে তাকিয়ে বেড়াচ্ছে। আর সেখান থেকেই জিজ্ঞেস করলো, "আমার নামটা তো জানলেন। আপনার নাম কি?"

    অর্ক তার পিছন পিছন গিয়ে দাঁড়িয়ে বলল, "অর্ক"।

    "তা, অর্কবাবু আপনি পাণ্ডুর ব্যাপারে কতটা জানেন?"

    "মানে সেরকম খুব একটা জানি না। পান্ডবদের বাবা, ব্যাস ঐটুকুই। কেন বলুন তো?"

    ওড়না চায়ের খালি কাপটা টেবিলের উপর রেখে বলল,"পাণ্ডু ওয়াস কার্সড। মানে অভিশাপ গ্রস্ত ছিলেন। তার কারণ জানেন?"

    অর্ক একটু চুপ করে রইলো। মহাভারত সম্পর্কে তার জ্ঞান খুবই সীমিত। আর তার মনে হচ্ছিল ওড়না তাকে পান্ডুর অভিশাপ পাওয়ার কাহিনীটা শুনিয়ে ছাড়বে। তাই চুপ করে থাকাটাই শ্রেয়।

    ওড়না আবার বলতে শুরু করলো, "পান্ডু রাজা একদিন শিকারে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু অনেকক্ষন ধরে বোনে ঘোরার পরেও কোন শিকার পান নি। অবশেষে একটা জায়গায় এসে দেখেন দুটি হরিণ নিজেদের মধ্যে যৌনক্রিয়াতে লিপ্ত। পান্ডুরাজা এই সুযোগ হাতছাড়া না করে তিনি দুটো তীর ছুড়ে দেন। আর সঙ্গে সঙ্গে হরিণ দুটি তীরবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পরে। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো সেই হরিণদুটো আসলে কিন্দামা ঋষি ও তার স্ত্রী ছিলেন। যারা হরিণ রূপে নিজেদের মধ্যে রতিক্রিয়া লিপ্ত ছিলেন"।

    অর্ক চুপচাপ শুনে যাচ্ছিল ওড়নার কথা। ওড়না তার দিকে একটা মুচকি হাসি হেসে বলতে লাগলো, "মানুষের শখ ভাবছেন? এমনি হয় না। তারউপর হরিণ সেজে সেক্স করছিলেন তারা। তবে যাই হোক, সেই কিন্দামা ঋষি মারা যাওয়ার আগে পান্ডু রাজাকে একটা অভিশাপ দেন। আপনি জানেন সেই অভিশাপের কথা?"

    অর্ক অকপটে বলল ,"না"।

    ওড়না একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস নিয়ে আবার বলতে শুরু করলো, "সেই অভিশাপটা খানিকটা এইরকম, যে যেহেতু তারা নিজেরা যৌনক্রিয়াতে লিপ্ত হতে গিয়ে মারা গেছেন তাই পান্ডু রাজা যদি কোনোদিন যৌনক্রিয়াতে লিপ্ত হন তাহলে তিনিও মারা যাবেন"।

    অর্ক নিজের হাতে থাকা কাপটাকে দুহাত দিয়ে চেপে ধরলো। একটা উষ্ণ অনুভূতি তার তালুতে হচ্ছিলো।

    ওড়না নিজের কথা শেষ করে অসমাপ্ত পোট্রেটটার দিকে তাকিয়ে বলল, "ভাবছি, এরকম একটা অভিশাপ আপনাকে দেব"।

    অর্ক একটু হেসে ফেলল।

    "আপনি বিশ্বাস করেন এইসব অভিশাপের্ কথা? আর তাছাড়াও আমি তো আপনাকে বা আপনার সঙ্গীকে প্রাণে মারি নি বা কোনরকম বাধাও দিই নি । তাহলে এরকম অভিশাপ আমাকে দেবেন কেন?"

    ওড়না একটু জোরে জোরে হাসতে লাগলো।

    "মৃত্যু অভিশাপ তো বলি নি। আমার অভিশাপ হবে অন্য রকম"।

    "কি রকম?"

    ওড়না একটু ভেবে তারপর বলল, "যখন আপনাকে আমি সকালে দেখলাম তারপর থেকে আমার পার্টনারের জায়গাতে আপনার মুখটাই ভাবতে থাকলাম। মনে হচ্ছিল সারাক্ষন আপনি আমাকে ওয়াচ করছেন। আমার প্রাইভেসি নষ্ট করছেন। ঠিক সেরকমই কিছু একটা। আপনি যখুনি কারুর প্রেমে পড়বেন তখুনি আমার কথা ভাববেন। ভেরি সিম্পল"।

    অর্কর মনে হচ্ছিল ওড়না তার সাথে ফ্লার্ট করছে ,আর এইসব ভনিতা নতুন কোন ট্যাকটিকস। তবে ওর মন্দ লাগলোনা। ওড়নাকে এমনিতে বেশ ভালোই লাগছিলো । ওর টানা টানা চোখ, মেঘের মতো ঘন কালো চুল, পান পাতার মতো মুখশ্রী সব কিছুই অর্কর শিল্পী চোখে আগে ধরা পড়েছিল। ও এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো ওড়নার দিকে।

    "কি দেখছেন? সকালবেলা দেখে চোখ ভরেনি মনে হচ্ছে?"

    ওড়নার এই কথাতে অর্কর কানটা লাল হয়ে উঠলো।

    "আপনি ভগীরথের কথা শুনেছেন? মানে তার গল্প জানেন?", ওড়না জিজ্ঞেস করলো।

    "না, আপনি কি আমার পুরানের পান্ডিত্যের পরীক্ষা নিচ্ছেন?"

    ওড়না হেসে বলল, "না না তবে কিছু জিনিস জানা দরকার। যাক, আমার অভিশাপের কথায় আসি।"

    মনে মনে কয়েকটা শব্দ এক করে বাক্য রচনা করতে করতে ফোঁস করে বলে ফেলল, "আর এই অভিশাপের থেকে বাঁচার উপায় কি?"

    ওড়না ওর প্রশ্নটা শুনে যেন একটু ক্লান্ত হয়ে পড়লো। হয়তো অন্য কিছু আশা করছিল। এমনকি অর্কও সেটা বুঝতে পেরেছিল। তাই প্রশ্নটা করেই প্রায় জিভ কাটতে যাবে। অন্য কোনো পরিপক্ক লোক হলে হয়তো বলতো, "না ভরে নি চোখ। আর একবার দেখতে চাই, রোজ রোজ দেখতে চাই"। কিন্তু অর্ক জন্মগতই শান্ত। কথার পৃষ্ঠে সে কথা বলতে জানে না। তাই জন্যে এখনো অব্দি কারুর সাথে সেরকম প্রাণের সম্পর্ক গড়ে ওঠে নি।

    ওড়না একটু চোখ উঁচিয়ে বলল, "উপায় আছে। আমার একটা এরকম পোট্রেট এঁকে দিতে হবে।"

    "হ্যা?"

    "পোট্রেট। এমনভাবে আঁকবেন যেন মনে হয় কোন স্বপ্নের দেশ থেকে এসেছি"।

    "কিন্তু। ..আমার যে হাতে অনেক কাজ এখন"

    "সে আপনি দেখে নিন। যদি না আঁকেন তাহলে কিন্তু আমার অভিশাপ ফলে যাবে"।

    অর্ক ওড়নার কথা শুনে মনে মনে একটু হাসলো। তবে পোট্রেট আঁকতে গেলে তো একটা প্রিপারেশান দরকার। বলল আর দুম করে তো হয়ে যাবে না। এটা তো ফটোগ্রাফি নয়। তাছাড়াও,
    এখন হাত একেবারে ভর্তি। ইলাস্ট্রেশনগুলো দিতে হবে, আবার ইউটিউবে টিউটোরিয়াল বানাতে হবে।

    "ভাবছেন কি? সিটিং দিতে হবে নাকি?"

    "না মানে, এখন আর সিটিং লাগে না। আপনার একটা ছবি লাগবে। ঐটারি রেপ্লিকা রঙ তুলি দিয়ে হবে।"

    ওড়না একটু হেসে বলল, "আপনি তো আমাকে দেখলেন। এবার এটারই রেপ্লিকা করুন। কোন ছবি আমি দিতে পারব না।"

    "কিন্তু?"

    "কিন্তু কিছু না। আমি আসছি এখন। ঠিক সময় পোট্রেট নিয়ে যাবো", বলেই সে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।

    অর্ক বেশ ফাঁপরে পড়লো। কি যে হলো কিছুই বুঝতে পারছিল না। কোথাকার কোন মেয়ে এসে পান্ডুর গল্প শুনিয়ে তাকে ট্রিক করে পোট্রেট আকার বায়না দিয়ে গেল। এইদিকে পারিশ্রমিকের ব্যাপারেও কিছু বলল না । হাজার হোক, ওড়না ওর গার্লফ্রেন্ড নয় আর ছবি আঁকাটা ওর পেশা।

    মেন্ দরজাটার সামনে যেতেই ওড়না বলে উঠলো, "ও হ্যা, পোট্রেট আমার পছন্দ হলে আপনাকে আপনার সম্বন্ধেই একটা সিক্রেট বলবো। যেটা আপনি জানেন না"।

    অর্ক একটু চমকে উঠলো, "আমি আমার সম্পর্কে জানি না, আর আপনি জানেন?"

    ওড়না দরজাটা খুলতে খুলতে খুব দৃঢ়ভাবে বলল, "আমার অলৌকিক ক্ষমতা আছে। চলি?"

    অর্ক বোবার মতো দাঁড়িয়ে রইলো আর তার চোখের সামনে দরজাটা ঠক করে বন্ধ হয়ে গেল।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ২১ ডিসেম্বর ২০২১ | ১২৫৪ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    নীল  - Jeet Bhattachariya
    আরও পড়ুন
    সবুজ - Jeet Bhattachariya
    আরও পড়ুন
    লাল - Jeet Bhattachariya
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে মতামত দিন