এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • প্লাস্টিক দূষণ: এবারের বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রধান ফোকাস- পর্ব ২

    Sumit Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৪ জুন ২০১৮ | ২১১৪ বার পঠিত
  • (গত ৫ জুন পরিবেশ দিবস উপলক্ষে এই এই সিরিজের প্রথম পর্বটি লিখেছিলাম। সিরিজের বিষয়বস্তু হিসেবে প্লাস্টিককেই চিহ্নিত করি কারণ প্লাস্টিক দূষনই ছিল এই পরিবেশ দিবসের প্রধান ফোকাস। এরই ধারাবাহিকতায় এখন দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে হাজির হচ্ছি। যাই হোক, গত গত পর্বের লেখাটায় আমার শেষ কথাটি ছিল "গবেষণা এও বলছে যে, যদি এর প্রতিকারের জন্য কিছুই না করা হয়, বা এখন যা চলছে তেমনি যদি চলতে থাকে, তাহলে সামনের ১০ বছরের মধ্যে মহাসাগরে প্লাস্টিকের পরিমাণ তিনগুণ বৃদ্ধি পাবে, আর ২০৫০ সালে এই প্লাস্টিকের ভর সকল সামুদ্রিক মাছের ভরের চেয়ে বেশি হবে। তখন মহাসাগরের পরিবেশের কী অবস্থা ঘটবে, আশা করি বুঝতেই পারছেন।" এবার এই দুটি বিষয় দিয়েই পর্বটি শুরু করছি... )

    *২০২৫ সালে মহাসাগরে প্লাস্টিক দূষণ হবে আজকের দূষণের মাত্রার তিন গুণ!



    যুক্তরাজ্যের অফিস ফর সায়েন্সে "Foresight Future of the Sea" শিরোনামে একটি নতুন রিপোর্ট প্রকাশিত হয়, যেখানে মহাসাগরগুলোর স্বাস্থ্যের অবস্থা তুলে ধরা হয়, সেই সাথে দেখানোর চেষ্টা করা হয় যে এটা বৈজ্ঞানিক গবেষণা, প্রযুক্তি ও বাণিজ্যে যুক্তরাজ্যের ভূমিকাকে কিরকম প্রভাবিত করবে। রিপোর্টটির মূল কথা এই যে, বর্তমানে সারা বিশ্বের মহাসাগরে ৫.২৫ ট্রিলিয়নেরও বেশি প্লাস্টিকের টুকরা আছে আর এই হারেই প্লাস্টিক সেখানে বাড়তে থাকবে এই বিবেচনায়, ২০২৫ সালে মহাসাগরে প্লাস্টিকের পরিমাণ তিনগুণ হবে।

    এই রিপোর্টিতে এটাও উঠে আসে যে, মহাসাগরের বর্তমানে যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে, তা জীববৈচিত্র্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে আসতে পারে। এছাড়া ১৯৭০ সাল থেকে ২০১২ সালের প্লাস্টিক দূষণের কারণে ইতিমধ্যেই সামুদ্রিক মেরুদণ্ডী প্রানীদের সংখ্যা ৪৯ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এই রিপোর্টটির একজন লেখক ইয়ান বয়েড বিবিসিতে বলেছেন, "The ocean is out of sight, out of mind"। অর্থাৎ মহাসাগরকে আমরা দেখি না, তাই এটা নিয়ে আমরা ভাবিও না। একই সুরে কথা বলেছেন এর আরেকজন লেখক ইউকে ন্যাশনাল ওশিনোগ্রাফি সেন্টারের প্রফেসর এডওয়ার্ড হিল। তিনি বলেন, "আমরা স্পেসের বিভিন্ন মিশনের জন্য প্রচুর অর্থ ইনভেস্ট করি, কিন্তু সেখানে কেউই থাকে না। অথচ মহাসাগরের সিবেড প্রাণের সঞ্চারে পরিপূর্ণ, আমরা সেখানে তেমন ইনভেস্টই করছি না। আমাদের "প্লানেট ওশিন" নিয়েও মিশন হাতে নিতে হবে।"

    প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে সচেতন হবার সময় এখনই। কারণ এভাবে চলতে থাকলে মাত্র ৭ বছর পর কী ক্ষতিটা হবে তা এই রিপোর্টটাই বলে দিচ্ছে। রিপোর্টটির প্রাইমারি রিকমেন্ডেশনের একটি হচ্ছে নতুন বায়োডিগ্রেডেবল প্লাস্টিক তৈরি করে এবং জনসচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন করে প্লাস্টিক দূষণকে কমিয়ে আনা। আর এটা শুধু যুক্তরাজ্য না, সকল রাষ্ট্রের জন্যই প্রযোজ্য। যাই হোক, এই এতটা কষ্ট করে বানানো রিপোর্ট এর ফলাফল খুব একটা ভাল ছিল না। এই রিপোর্ট পাবলিকেশনের পর তা নিয়ে ইউকে সরকার একটা অফিশিয়াল প্রেস রিলিজ ডাকে, আর সেখানে বিশ্বের প্লাস্টিক পল্যুশন নিয়ে তেমন কিছু তো বলাই হয়নি, বরং বলা হয়েছে, "যুক্তরাজ্য সমুদ্র থেকে আরও কি কি মহান সুযোগ সুবিধা (“great opportunities”) লাভ করতে পারে, সেখানেই তারা নজর রাখবে।" (তথ্যসূত্রে প্রেস রিলিজটির লিংক দেয়া হয়েছে) প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে সরকারী মহলের এরকম অনীহা নতুন নয়। এরকম ঘটনা প্রায়ই দেখা যায়, এই পর্বেই এর প্রমাণ পাবেন।

    মহাসাগরে প্লাস্টিক দূষণ আউট অফ সাইট বলে আউট অফ মাইন্ড হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু প্লাস্টিক দূষণের পরিণতি যে কেবল মহাসাগরেই ঘটছে তা নয়। আমাদের দৈনন্দিন জীবনেই এর ফল আমরা ভোগ করছি। কিছুদিন আগেই স্টেট ইউনিভার্সিটি অফ নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত হয়েছে চাঞ্চল্যকর আরেকটি রিপোর্ট। সেটা বলছে, বোতলজাত জলের ৯৩ শতাংশতেই নাকি মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ পাওয়া গেছে। মাইক্রোপ্লাস্টিক কী জিনিস তা গত পর্বে আলোচনা করেছিলাম, দেখা যাচ্ছে মানুষ এখন দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় পানীয় জলের সাথে পলিপ্রোপিলিন, নাইলন আর পলিএথিলিন টেরেফথ্যালেটও গ্রহণ করছে। তাই শুধু সামুদ্রিক পাখি আর মাছকেই এই পল্যুশন এফেক্ট করে, তা নয়। এফেক্ট করছে মানুষকেও। তাই এটা বোধ হয় আর খুব বেশি দিন আউট অফ সাইট এন্ড আউট অফ মাইন্ড থাকবে না। যাই হোক, এই বিশেষ রিপোর্ট নিয়ে একটু পরেই বিস্তারিত লিখছি।

    * ২০৫০ সালে মহাসাগরে প্লাস্টিক ছাড়িয়ে যাবে মাছের ভরকেও, দরকার প্লাস্টিক রিসাইকলিং, রিইউজিং ও প্লাস্টিক প্রোডাকশনের নতুন পদ্ধতি



    এবার আরেকটি রিপোর্টে যাচ্ছি। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, যদি প্লাস্টিক রিসাইকলিং-এ দ্রুত পরিবর্তন না আসে, তাহলে ২০৫০ সালে মহাসাগরে প্লাস্টিকের ভর মাছের ভরের চেয়েও বেশি হয়ে যাবে। হ্যাঁ, এটা বলছে বর্তমান অবস্থাই চলতে থাকবে, এরকম ক্ষেত্রে ২০২৫ সালে মহাসাগরে প্রতি তিন টন মাছের জন্য এক টন প্লাস্টিক পাওয়া যাবে, আর ২০৫০ সালে মাছের ভরের চাইতেও প্লাস্টিকের ভরই বেশি হয়ে যাবে! এলেন ম্যাকআরথার ফাউন্ডেশন থেকে এই রিপোর্টটিই ২০১৬ সালে প্রকাশ করা হয়, আর একে লাঞ্চ করা হয় ডাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে।

    ইকোনমিক ফোরামে প্রকাশিত রিপোর্ট যেহেতু, তাই এখানে প্লাস্টিক পল্যুশন বিষয়ক অর্থনীতিই বেশি ফুটে উঠেছে। এই বিষয়েই আলোচনা করা যাক। রিপোর্টটি বলছে, প্রতি বছর ৯৫ শতাংশ প্লাস্টিক প্যাকেজিং এর ইকোনমি শুধু মাত্র একবার ব্যবহারের পরেই হারিয়ে যায়, যার মূল্য হবে ৮০ থেকে ১২০ বিলিয়ন ইউএস ডলার। মাত্র ৫ শতাংশ প্লাস্টিককে রিসাইকল করে আবার ব্যবহারের উপযোগী করে ফিরিয়ে আনা হয়। ৯৫ শতাংশ হারানো প্লাস্টিক এর মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ চলে ল্যান্ডফিলে যেখানে প্লাস্টিককে মাটি চাপা দেয়া হয়। অন্যদিকে প্রতি বছর মোট যে প্লাস্টিক উৎপাদন হয়, তার এক তৃতীয়াংশ কোন না কোনভাবে মহাসাগরে চলে আসে।

    ১৯৬৪ সাল এর পর প্লাস্টিক উৎপাদন ২০ গুণ বৃদ্ধি পায়, আর বর্তমানে এটি বছরে হয়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪৩ মিলিয়ন টনে। এভাবেই চলতে থাকলে ২০ বছর পর এই উৎপাদন দ্বিগুণ হবে, আর ২০৫০ সালে এটি চারগুণ হবে, কারণ উন্নয়নশীল দেশগুলো অনেক বেশি প্লাস্টিক ব্যবহার করছে, আর ভবিষ্যতে এটা আরও বৃদ্ধি পাবে। এই প্লাস্টিক যেভাবে মহাসাগরে গিয়ে বন্যপ্রাণকে ক্ষতি করে ও প্লাস্টিকগুলো এদের পাকস্থলিতে দেখা যায়, তেমনি মাইক্রোপ্লাস্টিক, যেগুলোকে চোখে দেখা যায় না, সেগুলোকেও মাছেরা গ্রহণ করে, যেগুলোকে আমরা খাই। এছাড়া এরকম অপ্রত্যক্ষভাবে ছাড়াও প্রত্যক্ষভাবেও আমরা মাইক্রোপ্লাস্টিক দ্বারা আক্রান্ত হই, যা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে।

    কিন্তু অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখলে কেবল প্লাস্টিকই কিন্তু মহাসাগরে হারিয়ে যাচ্ছে না, সেই সাথে যাচ্ছে বিশাল পরিমাণে ফসিল ফুয়েলও যা এইসব প্লাস্টিক তৈরিতে ব্যবহৃত হয়েছিল। বর্তমানে তেলের মোট গ্লোবাল কনজাম্পশনের ৬ শতাংশ ব্যবহৃত হয় প্লাস্টিক উৎপাদনের কাজে। এভাবে চলতে থাকলে, আর সব অপরিবর্তিত থাকলে, ২০৫০ সালে তেলের মোট গ্লোবাল কনজাম্পশনের ২০ শতাংশ যাবে এই প্লাস্টিক উৎপাদনে। আর এর ৯৫ শতাংশ হারিয়ে ফেলা মানে হচ্ছে, এই বিশাল পরিমাণে ফসিল ফুয়েলেরও ৯৫ শতাংশ হারিয়ে ফেলা। অর্থাৎ ২০৫০ সালে মোট প্রতি বছর মোট ফসিল ফুয়েলের ২০ শতাংশই প্লাস্টিকের মাত্র একবার ব্যবহারের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে, যাকে পুনর্ব্যবহার করতে পারলে প্লাস্টিকের সাথে ফসিল ফুয়েলও অনেকটাই বেঁচে যেত, কার্বন এমিশনও অনেকটাই কমে যেত। আর এসব কারণেই রিপোর্টটি প্লাস্টিকের ব্যাপারে আমাদেরকে আবার চিন্তা করতে বলছে। এই বিশাল প্লাস্টিক বর্জ নিয়ে আমরা কি করব, আর প্লাস্টিক উৎপাদন ঠিক কোন পথে করব তা নিয়ে আমাদেরকে ভাবতে বলছে।

    ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের Dominic Waughray ব্যাখ্যা করেন, এই রিপোর্টটি দেখাচ্ছে প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোসিস্টেমে শীঘ্রই একটা বিপ্লব ঘটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, আর প্লাস্টিক আমাদের অর্থনীতিকে যেভাবে প্রভাবিত করছে তার অবস্থা কিভাবে পালটে দেয়া যায় তা অনুসন্ধানে এই রিপোর্টটি প্রথম পদক্ষেপ। এই অন্তর্দৃষ্টিকে বৃহৎ কার্যক্রমে পরিণত করতে গেলে কারও একার অবদান যথেষ্ট নয়। পাবলিক, প্রাইভেট উভয় সেক্টর, সিভিল সোসাইটি সকলকেই নতুন সারকুলার প্লাস্টিক ইকোনমি তৈরি করার কাজে এগিয়ে আসতে হবে।"

    এর সমাধানটি সহজ নয়। সমস্যাটা হচ্ছে, এখন তেলের দাম অনেক কম, যেকারণে পুরনো প্লাস্টিককে রিসাইকল করার চেয়ে নতুন প্লাস্টিক উৎপাদন করাটা সাশ্রয়ী হয়। আর এখন উন্নয়নশীল বিশ্বে ইকোনমি বৃদ্ধি পাবার সাথে সাথে সমান তালে প্লাস্টিকের মারকেটও বৃদ্ধি পাচ্ছে, যেকারণে এখন প্লাস্টিকের চাহিদা তুঙ্গে। আর এসব কারণে প্লাস্টিক রিসাইকলিং-এ ব্যাপক উৎসাহ তৈরি করা যাচ্ছে না। তবে এর কিছুটা সমাধান আসতে পারে যদি কিভাবে প্লাস্টিককে আমরা ব্যবহার করব, এটা নিয়ে সাধারণ মানুষ নতুন করে ভাবে। প্যাকেজিং এর ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের ব্যবহার যদি কমিয়ে ফেলা হয়, আর আমরা যদি যতটা সম্ভব প্লাস্টিক এর রিইউজ করি (একবারের বদলে বারবার ব্যবহার, রিইউজ ও রিসাইকল এক নয়) তাহলে প্লাস্টিকের ব্যবহার ও ডিমান্ড অনেক কমে আসবে, আর তাতে কমে আসবে প্লাস্টিক প্রোডাকশনও। প্লাস্টিক উৎপাদকরাও এমনভাবে প্লাস্টিক তৈরি করতে পারেন, যাতে একে রিইউজ বা পুনর্ব্যবহার করা যায়, এছাড়া এরা পচনযোগ্য প্লাস্টিকও প্রস্তুত করতে পারে। যেভাবেই হোক, আমরা আজ যেভাবে প্লাস্টিক ব্যবহার করছি, এই সমাধানগুলো তার বিশাল পরিবর্তন সাধন করতে পারে।

    খেয়াল করে দেখুন, এখানে প্লাস্টিক ব্যানিং, প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করার উপর জোড় দেয়া হয়নি। প্লাস্টিক আমাদের দৈনন্দিন জীবনে একরকম অবিচ্ছেদ্য। প্যাকেজিং এর জন্য বা বিভিন্ন টেকনোলজির সুবিধা পেতে আমাদেরকে প্লাস্টিক ব্যবহার করতেই হয়। এখান থেকে বের হয়ে আসার কোন উপায় নেই। আর তাই রিপোর্টে রিকমেন্ড করা হচ্ছে প্লাস্টিক রিইউজ, রিসাইকলিং ও কম্পোস্টেবল বা পচনশীল অ রিইউজেবল বা পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক উৎপাদনেই। শুধু এই রিপোর্ট নয়, এখন এরকম সমাধানের পথে এগোনই লক্ষ্য করা যাচ্ছে সব জায়গায়। একটু পরে জি৭ সম্মেলনে উঠে আসা ওশিন প্লাস্টিক চার্টারেও এটাই দেখা যাবে। সমাধানের এই পথগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে পৃথিবী ধীরে ধীরে প্লাস্টিক দূষণ থেকে রক্ষা পেতে পারে।

    *প্রধান ব্র্যান্ডগুলোর বোতলজাত জলের ৯৩ শতাংশ ক্ষেত্রেই পাওয়া গেছে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ



    একটু আগেই বলেছিলাম, প্লাস্টিক দূষণ কেবল মহাসাগরের প্রাণীরই ক্ষতি করছে না, ক্ষতি করছে আমাদেরও। নিউ ইয়র্কের স্টেড ইউনিভার্সিটি এর একটি রিপোর্টে এটাই সামনে উঠে আসছে। এখানে উঠে এসেছে যে বোতলজাত জলের ৯৩ শতাংশ ক্ষেত্রেই মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ এর চিহ্ন ধরা পড়েছে! এই দুষণীয় পদার্থগুলোর মধ্যে রয়েছে পলিপ্রোপিলিন, নাইলন এবং পলিথিলিন টেরেফথেলেট। ৫টি ভিন্ন ভিন্ন মহাদেশে পাঠানো ১১টি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোট ২৫৯টি বোতল পরীক্ষা করে এটা পাওয়া যায়।

    গবেষকগণ ইনফ্রারেড মাইক্রোস্কোপ ব্যবহার করে জলে মাইক্রোপ্লাস্টিক অনুসন্ধান করেছেন। দেখা যায় এখানে প্রতি লিটারে গড়ে ১০.৪টি করে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া যায় যার আকার মোটামুটি ০.১ মিলিমিটার মাত্রার। পূর্বে ট্যাপের জলের মাইক্রোপ্লাস্টিক এর সন্ধান করে যে রেজাল্ট পাওয়া গিয়েছিল বোতলজাত জলে মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ দেখা যাচ্ছে তার চেয়েও বেশি (ট্যাপের জল নিয়ে পরে লিখব)। অবশ্য এই সংখ্যাটা গড়ে বের করা, কোন কোন ক্ষেত্রে এর চেয়ে কম মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে, আবার কোন কোন জায়গায় এর চেয়েও বেশি।

    রিপোর্টটিতে অবশ্য আরেক ধরণের ক্ষুদ্র পারটিকেলের কথা বলা হয়েছে। প্লাস্টিক এর সাথে লেগে যায় এমন রঙ ব্যবহার করে একে চিহ্নিত করা গেছে। বোতলজাত জলে এর পরিমাণ মাইক্রোপ্লাস্টিকের চেয়েও অনেক বেশি, প্রতি লিটারে প্রায় ৩২৫টি করে। কিন্তু এখনও এটা পরিষ্কার নয় যে এগুলো আসলেই প্লাস্টিক কিনা, এরা আসলে যে কী তাও মাইক্রোস্কোপে নিশ্চিত করা যায় নি।

    যাই হোক, এই রিপোর্টটি বলছে, বোতলজাত জলের এই দূষণের একটা অংশ আসছে বোতলের প্যাকেজিং ও প্রোসেসিং বা উৎপাদন থেকেই। যেসব ব্র্যান্ডের জলে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে, তাদের মধ্যে আছে Nestle Pure Life, Dasani, Gerolsteiner, E-Pura, Evian, Aquafina এর মত আরও বিখ্যাত সব ব্র্যান্ড।

    প্লাস্টিক দূষণের ব্যাপারে আমরা এখন কমবেশি সকলেই অবগত হলেও, মানুষের স্বাস্থ্যে এই মাইক্রোপ্লাস্টিক গ্রহণ কী প্রভাব ফেলে তা এখনও অনিশ্চিত। এর কারণ হচ্ছে মানুষের স্বাস্থ্যে এর প্রভাব নিয়ে খুব একটা গবেষণা হচ্ছে না, আর এখনও আমরা জানিনা যে দীর্ঘ দিন ধরে মাইক্রোপ্লাস্টিক গ্রহণ করতে থাকলে মানুষের স্বাস্থ্যে কী প্রভাব পড়ে। কিন্তু এটা বোঝাই যায় যে, এই মাইক্রোপ্লাস্টিকের সর্বব্যাপীতা, সব পানীয় জলে, এমনকি নুন বা খাবার লবনেও এর উপস্থিতি (পরে এটা নিয়ে লিখব) ভাল কিছু নয়। সৌভাগ্যের কথা এই যে, এই রিপোর্ট দেখে ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগানাইজেশন (WHO) ঘোষণা করেছে যে, তারা খাবার জলে মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতির দীর্ঘ মেয়াদী ঝুঁকি নিয়ে গবেষণা করবেন।

    বর্তমানে শুধু মানুষের উপর মাইক্রোপ্লাস্টিকের প্রভাব নয়, সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রে মাইক্রোপ্লাস্টিকের প্রভাব নিয়েও আমাদের ধারণা খুব একটা স্পষ্ট নয়। গবেষকগণ এখন সামুদ্রিক প্রাণী কতটা মাইক্রোপ্লাস্টিক গ্রহণ করছে, আর এটা তাদের স্বাস্থ্যে কী প্রভাব গেলে সেটা নিয়ে গবেষণা করে যাচ্ছেন। প্রাণীদের স্বাস্থ্যের উপর মাইক্রোপ্লাস্টিকের বিষাক্ত প্রভাবের সম্ভাবনা আছেই, কিন্তু এটা এদের জন্য কতখানি বিপজ্জনক তা বের করার জন্য আরও গবেষণা দরকার।

    *প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে তৈরি জি৭ এগ্রিমেন্টে স্বাক্ষর করল না যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান



    জি৭ সম্পর্কে আমরা মোটামুটি সবাই অবগত। কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে জি৭ (Group of Seven) গঠিত। পৃথিবীর ৬২% গ্লোবাল নেট ওয়েলথ (২৮০ ট্রিলিয়ন ইউএসডি) ও ৪৬ শতাংশ জিডিপি (পিপিপি বিবেচনায় নিলে ৩২%) এই কয়েকটি দেশ রিপ্রেজেন্ট করে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নও এখানে যুক্ত। পূর্বে রাশিয়া এখানে যুক্ত ছিল, তখন একে জি৮ বলা হত, কিন্তু ২০১৪ সালে রাশিয়া এখান থেকে বের হয়ে যায়। যাই হোক, এই মাসের (জুন, ১৮) ৮-৯ তারিখ কানাডার লা মালবেতে অনুষ্ঠিত হয় ৪৪তম জি৭ সম্মেলন। এখানে এই ৭ দেশের প্রধান, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রধানদ্বয় উপস্থিত ছিলেন। আমন্ত্রিত অতিছি ছিলেন বাংলাদেশ, আর্জেন্টিনা, হাইতি, নরওয়ে সহ ১২টি দেশের প্রধানগণ, ইউনাইটেড ন্যাশনস, বিশ্বব্যাংক, ওইসিডি, ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ড এর প্রধানগণও।

    দুইদিনের এই সম্মেলন কেমন ছিল তা হয়তো এতক্ষণে জেনে গেছেন। সম্মেলন বিষয়ক আলোচনাগুলোর কেন্দ্রে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সাথে অন্যান্য দেশের বাণিজ্যবিরোধ, ট্রাম্প-ট্রুডো দ্বন্দ্ব, ট্রাম্পের সম্মেলন ছেড়ে চলে যাওয়া ও তার টুইটবার্তা। এখানে যে ছবিটি দেয়া হল তা পৃথিবীর ডিপ্লোমেটিক ইতিহাসের এক অমূল্য সম্পদ হয়ে থাকবে। ভাইরাল হয়ে যাওয়া এই ছবিকে অনেকেই তুলনা করছেন রেনেসাঁর চিত্রকর্মের সাথে।

    যাই হোক, এই চাঞ্চল্যকর সব আলোচনার মধ্যে যে বিষয়টি একরকম হারিয়ে গেছে তা হল, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান জি৭ এর ওশিন প্লাস্টিক চার্টারে স্বাক্ষর করেনি, যেটা পূর্ণাঙ্গ জি৭ ব্লুপ্রিন্ট এর একটি অংশ ছিল। মিডিয়ায় এই ওশিন প্লাস্টিক চার্টার জি৭ এগ্রিমেন্ট নামে পরিচিতি পেয়েছে (অনেকটা প্যারিস এগ্রিমেন্ট এর সাথে মিলিয়ে)। এই চার্টারের ফুটনোটে যুক্তরাষ্ট্রের সামান্য কিছু প্রতিনিধিত্বের কথা লেখা হয়েছে এভাবে, "যুক্তরাষ্ট্র মহাসাগর, সাগর এবং উপকুলীয় গোষ্ঠীকে সাপোর্ট করে।" যাই হোক, যুক্তরাষ্ট্র এরকম কিছু করবে তা হয়তো আঁচ করা গিয়েছিল, ট্রাম্প প্রশাসন বলে কথা, কিন্তু হতাশার খবরটি হল জাপানও এটি স্বাক্ষর করা থেকে বিরত থেকেছে। কানাডা এর সংবাদ সংস্থা দ্য গ্লোব এন্ড মেইল জানায়, জাপানের এই স্বাক্ষরে প্রত্যাখ্যানের বিষয়টি এই মুহূর্তে অস্পষ্ট।

    এটা পরিষ্কার যে, আমরা মহাসাগরে বর্জ্য ফেলছি আর তার মাধ্যমে মহাসাগরের পরিবেশেরও অনেক ক্ষতি করছি। জলবায়ু পরিবর্তন ও কৃষিজ কীটনাশক-সার ও শিল্পবর্জ্য মিলে মহাসাগরের অক্সিজেন কমিয়ে দিচ্ছে, সেখানকার প্রাণের ক্ষতি করছে, তার উপরে আছে প্লাস্টিক, যা মহাসাগরীয় মোট বর্জ্যের ৭০ শতাংশ, যার পরিমাণ দিনকে দিন বেড়েই চলেছে, এবং মহাসাগরীয় বাস্তুসংস্থানের ক্ষতিও করে চলেছে। সেই সাথে আছে সমুদ্র থেকে অতিরিক্ত পরিমাণে মাছ ধরা, যার ক্ষতিও জীববৈচিত্র্যের জন্য অনেক বেশি, সেই সাথে কোন রাষ্ট্রের তার জনগণের খাদ্যের জোগান দেবার ক্ষমতাও এই অতিরিক্ত মাছ ধরা বা ওভারফিশিং কমিয়ে দেয়। এতগুলো সমস্যার মাঝে প্লাস্টিক সমস্যাটি অনেক দেরি করে সকলের নজরে এসেছে, আর এটার মাতাত্মক প্রভাব দেখে সম্প্রতি অনেক গবেষণা, আলোচনা শুরু হয়েছে এটা নিয়ে। ইউনাইটেড ন্যাশনসও এটা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং আগ্রহের সাথে বিষয়টি দেখছে। যাই হোক, এই সমস্যাটি সমস্ত পৃথিবীরই সমস্যা যার মোকাবেলা করতে হবে সকল রাষ্ট্রকেই, তাই কোন একটি দেশের পদক্ষেপই এর জন্য যথেষ্ট হবে না। উন্নত, উন্নয়নশীল ও অনুন্নত- প্রত্যেকটি দেশকেই এখানে এগিয়ে আসতে হবে, আর তাই জি৭ সম্মেলনের মত আন্তর্জাতিক সম্মেলনগুলো এই সমস্যা মোকাবেলার জন্য এত গুরুত্বপুর্ণ, যেখানে অনেকগুলো রাষ্ট্র একত্রিত হয়ে ঐকমত্যে পৌঁছবে এবং নির্দিষ্ট কিছু চুক্তি সকলেই স্বাক্ষর করে সেই উদ্দেশ্যে নিজেদের কর্মপন্থা ঠিক করবেন।

    গত বছর ডিসেম্বরে (ডিসেম্বর, ১৭) একটি সভা হয়েছিল। জাতিসংঘ মহাসাগরে প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধ করতে একটি রেজোল্যুশনের জন্য রাজি হয়, আর সকল দেশকেই এর জন্য এগিয়ে আসতে বলে। মহাসাগরে প্লাস্টিক দূষণ বন্ধের জন্য এটাই হত প্রথম পদক্ষেপ, সকল দেশের জন্য এটা বন্ধের জন্য একটি সময়সীমা বেঁধে দেয়া হত। কিন্তু এই প্রস্তাবটি দুর্বল হয়ে যায় একটি দেশের প্রতিরোধে... যুক্তরাষ্ট্র, আর কে? (পরের পর্বে এটা নিয়ে আলোচনা করব)।

    জি৭ এর ওশিন প্লাস্টিক চার্টার যে সব দেশে আইনগতভাবে বলবৎ হবে তা নয়, কিন্তু এটা কিছু আশার জন্ম দেয়। প্লাস্টিক আমাদের জীবনে যতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেরকম গুরুত্বপূর্ণ হয়তো কিছুই না, কিন্তু আমাদের এটার ব্যবহার ও পরিবেশে তার পরিত্যাগ করা পরিবেশ, জীবন ও জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। এরই প্রতিক্রিয়ায় জি৭ এর দেশগুলোর মধ্যে কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন প্লাস্টিক নিয়ে আরও কার্যকরী ও টেকশই পন্থা অবলম্বন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

    এই প্রতিশ্রুতিগুলোতে অনেক কিছুই আছে, কিন্তু এগুলোর মধ্যে কিছু যদি বলতে চাই তাহলে প্রথমত বলতে হয়, তারা ২০৩০ সালের মধ্যে প্লাস্টিককে ১০০ শতাংশ পুনর্ব্যবহারযোগ্য (reusable), পুনর্প্রস্তুতযোগ্য (recyclable), পুনরুদ্ধারযোগ্য (recoverable) বানাতে চান, যা ভবিষ্যৎকে একবার ব্যবহার করা প্লাস্টিক থেকে মুক্ত করবে। অনেক দেশই বর্তমানে কিছু ক্ষেত্রে কিছু আকারে প্লাস্টিককে একবার ব্যবহার করা নিষিদ্ধ করেছে। দ্বিতীয়ত, তারা আঞ্চলিক সচেতনতা সৃষ্টি ও গবেষণার দ্বারা প্লাস্টিকের পুনর্প্রতিগ্রহণ (recapture - প্লাস্টিকের ব্যবহার শেষে ফেলে দেবার পরে তা সংগ্রহ করা) ও পুনর্প্রসুত (recycle) করতে এবং সামুদ্রিক ও মানব স্বাস্থ্যে প্লাস্টিকের প্রভাব নিয়ে গবেষণা ও তদন্দকে উৎসাহিত করতে চান।

    একই সময়ে, জি৭ সম্মেলনের ইশতেহারে উঠে আসে যে, আমাদের বর্জ্য সংক্রান্ত অভ্যাসগুলো মূল্যবোধ, সম্পদ ও শক্তির জন্য ক্ষতিকর। এটা আসলেই সত্য, এবং এর জন্যই এখন এই বিষয়ে অনেক গবেষণা হচ্ছে। কেউ কেউ যুক্তি দেন বায়োপ্লাস্টিক এর প্রচলন একটা সমাধান হতে পারে, যদিও এখনও এগুলো পরিত্যাগের পর কিছু মাত্রায় বর্জ্য হয়ে থাকে। আবার অনেকে অনুকল্পিত অসীম পুনর্ব্যবহারযোগ্য পলিমার (ইনফিনিটলি রিইউজেবল পলিমার, পরে আলোচনা করব) এর কথা বলে, যা এখনও প্রুফ-অফ-কনসেপ্ট স্টেজে আছে। যাই হোক, এই চার্টার সকল বিকল্প সম্ভাবনা নিয়ে আরও বেশি করে গবেষণার কথাই বলে। তবে একটা বিষয় লক্ষ্যনীয় যে, প্লাস্টিক ব্যান করার কথা কোথাও বলা হচ্ছে না। টেকশই উন্নয়ন বা সাস্টেইনেবল ডেভলপমেন্ট এবং প্লাস্টিক ব্যবহার করেই দুষণহীন পৃথিবী সৃষ্টির কথা ভাবা হচ্ছে। তথ্যসূত্রে এই ওশিন প্লাস্টিক চার্টারের নথিটির লিংক দেয়া হল। সেখানে মহাসাগরে প্লাস্টিক বিষয়ক প্রতিশ্রুতিগুলোকে ৫টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে: 1. Sustainable design, production and after-use markets, 2. Collection, management and other systems and infrastructure, 3. Sustainable lifestyles and education, 4. Research, innovation and new technologies, 5. Coastal and shoreline action. আগ্রহীগণ পুরোটা পড়ে দেখতে পারেন।

    এই চার্টার কিছু আশাবাদী কথা বলছে, কিন্তু উন্নতির জন্য এখন অনেক কিছুই করতে হবে। কোন কোন পরিবেশবাদী ইতিমধ্যেই বলা শুরু করেছেন যে, আইনগত বলবৎ হওয়া নিয়ম ছাড়া এটা পরিবেশের জন্য খুব একটা ভাল হবে না। তবুও দেখা যাক, কিছু হয় কিনা।

    (চলবে)

    তথ্যসূত্র:

    ১। Foresight Future of the Sea : https://assets.publishing.service.gov.uk/government/uploads/system/uploads/attachment_data/file/706956/foresight-future-of-the-sea-report.pdf

    ২। রিপোর্টটি নিয়ে অফিশিয়াল প্রেস রিলিজ: https://www.gov.uk/government/news/great-opportunities-for-uk-from-oceans

    ৩। ম্যাকআর্থার ফাউন্ডেশনের রিপোর্ট: http://www3.weforum.org/docs/WEF_The_New_Plastics_Economy.pdf

    ৪। বোতলজাত জলে মাইক্রোপ্লাস্টিক নিয়ে রিপোর্ট: https://orbmedia.org/sites/default/files/FinalBottledWaterReport.pdf

    ৫। The Charlevoix G7 Summit Communique: https://www.reuters.com/article/us-g7-summit-communique-text/the-charlevoix-g7-summit-communique-idUSKCN1J5107

    ৬। জি৭ ওশিন প্লাস্টিক চার্টার: https://g7.gc.ca/en/official-documents/charlevoix-blueprint-healthy-oceans-seas-resilient-coastal-communities/
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৪ জুন ২০১৮ | ২১১৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • π | 4512.139.122323.129 (*) | ১৪ জুন ২০১৮ ০৪:৫১63326
  • ভাল। কিন্তু প্লাস্টিকের সমস্যা কি কেবল বা মূলতঃ সমুদ্রের জন্যই?

    আর রিইউজিবল প্লাস্টিক, প্লাস্টিকের বারবার ব্যবহার দুটো নিয়েই আরেকটু হোক। এই ধরা যাক, চিপস চানাচুরের প্যাকেট, এর কি রিউইজ সম্ভব? সম্ভব হতে পারে, মনে হল, হয়তো যদি মুখে জিপ রাখা যায়।

    এগুলো বা বিরিয়ানি চাউয়ের প্লাস্টিকের কৌটো না ফেললে শুধু প্লাস্টিকজনিত সমস্যাই কমে তা না, মশাবাহিত অনেক রোগও কমে!
  • | 453412.159.896712.72 (*) | ১৪ জুন ২০১৮ ১২:০৮63325
  • বাহ পরের পর্বটাও চমৎকার।

    কথা হল কিছু বিকল্পের ব্যবস্থা না করে দুম করে প্ল্যাস্টিক পলিথিন বন্ধ করা যাবে না। আর বিকল্প যথেষ্ট সস্তাও হতে হবে। আগে মানে আমাদের ছোটবেলায় সকলের বাড়ীতেই বাজারের ব্যাগ, রেশন আনার ব্যাগ, মাছ মাংসের আলাদা ব্যাগ থাকত। প্রথমে মাছ মাংস পলিথিনের ঠোঙায় দেওয়া শুরু হল, আস্তে আস্তে লোকের বাড়ী থেকে এই ব্যাগগুলো রাখার ও মেন্টেইন করার প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে গেল। এখন এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছে যে যাই কেনা হোক না কেন, সেটা তো দোকান থেকে পলিথিনের ব্যাগেই দেবে। আর জলের বোতল বয়ে নেবার অভ্যেসও কমে গেছে খুব। 'চল রাস্তায় বিসলেরি তুলে নেব' একেবারে স্ট্যান্ডার্ড প্র্যাকটিস।

    মহারাশ্ট্রে প্ল্যাস্টিক ব্যান করেছে কঠোরভাবে। আমাদের অফিসে একটি এন্জিও থেকে তরকারি, শাক সবজি ফল, কাটা তুকরো করা সবজি বিক্রি করতে আসেন এক ভদ্রমহিলা। তা সেখানে প্ল্যাস্টিক ক্যারিব্যাগ বন্ধ করার প্রথম এক সপ্তাহ প্রতিদিন কিছু কর্মী ধুন্ধুমার ঝগড়া করত। বারেবারে নোটিশ, কমন মেলার, বিজনেস ইউনিট ধরে ধরে ৫-১০ মিনিটের সেশান ইত্যাদি করেটরে ক্যারিব্যাগ নিয়ে ঝামেলা বন্ধ করা গেছে।

    এখনও কাটা তরকারি প্যাক হয়ে আসে পাতলা ফিনফিনে পলিথিন ব্যাগে। এবার বন্ধ করতে যে বলা হবে, এর বিকল্প খুঁজে পেতে হবে তো আগে।
  • Sumit Roy | 340112.244.3412.59 (*) | ১৫ জুন ২০১৮ ০১:৩১63330
  • কল্লোল,
    হুম আপনার চিন্তা প্রাসঙ্গিক। শিল্পায়ন জনিত রোগ, এনার্জি এর লোভ মার্ক্স এর কমোডিটি ফেটিশিজমের মতই, যেখানে কমোডিটি হচ্ছে এনার্জি। আর এই বিশেষ কমোডিটির মারকেট এক্সচেঞ্জ প্রোডাকশনের হিউম্যান রিলেশন বা মানব সম্পর্ককেই অস্পষ্ট করে দেয়। মানুষ এজন্য শুরু করে শক্তির অপচয়। একটা সমীক্ষা বলে একজন আমেরিকানের বাড়িতে কনসিউম করা বিদ্যুৎ এর সমপরিমাণ কনসিউম করে
    ১.৫ জন ফ্রেঞ্চ
    ২.২ জন জাপানিজ
    ২.২ জন ব্রিটিশ
    ২.৬ জন জার্মান
    ১০ জন চাইনিজ
    ৩৪ জন ভারতীয় এবং
    ৬১ জন নাইজেরীয়।
    উন্নত বিশ্বের সবটাই তো প্রয়োজনের তাগিদে করে না, অনেকটাই এখানে অপচয়। আর মানুষের কনজিউমারিজমের অভ্যাস কি নিয়ন্ত্রণ করা এতটাই সহজ? কিন্তু সাস্টেইনেবল ডেভলপমেন্টের উদ্দেশ্যে আনুষের এই কনজিউমারিস্ট আচরণ, তাদের অভ্যাসকেই টারগেট করতে হবে। হয়তো উৎপাদন ও বণ্টনকেই নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজন দেখা দেবে একসময়...
  • কল্লোল | 670112.203.784512.149 (*) | ১৫ জুন ২০১৮ ০৪:২৬63331
  • ধন্যবাদ সুমিত, বিষয়টাকে এতোটা গুরুত্ব দেবার জন্য।
    আসলে শিল্পায়নের বিরুদ্ধে কথা বললেই একটা গেল গেল আওয়াজ ওঠে। শিল্পায়নের বিরুদ্ধে কথা বলা মানেই, আগামীকাল থেকেই সব শিল্প চুলোয় দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে বলে ধরে নেওয়া হয়। বিশিল্পায়ন যে ধাপে ধাপেও হতে পারে এটা ভাবার মতো ধৈর্যই মানুষের হারিয়ে গেছে, আর এই ধৈর্যের অভাবটাও শিল্পায়নেরই ফল।
    সম্প্রতি একটা বই হাতে এসেছে Sapiens – A Brief History of Humankind - Yuval Noah Harari
    অনেককিছু নতুনভাবে ভাবতে সাহায্য করছে।
    বইটা নিয়ে লিংক দিলাম
    http://www.ynharari.com/book/sapiens/
    একএক সময় মনে হয়, এসব বলে/লিখে কিইই বা হবে। তবু মনে হয় এসব নিয়ে কথা বলাটা মানুষ হিসাবে আমার দায়।
  • Sumit Roy | 340112.244.3412.59 (*) | ১৫ জুন ২০১৮ ০৫:১৮63332
  • হ্যাঁ, পড়ুন, খুব ভাল বই। মানুষের বৌদ্ধিক বিকাশ, কৃষির উদ্ভব, অর্থ, ক্ষমতা, ধর্ম, সাম্রাজ্যবাদ, বিজ্ঞান সবকিছু নিয়েই একসাথে খুব সুন্দর করে লেখা হয়েছে।

    কথা তো বলতেই হবে, কেউ বলবে ব্যক্তিগত প্রবণতা থেকে, কেউ বলবে দায়বদ্ধতা থেকে।
  • π | 7845.29.014523.203 (*) | ১৫ জুন ২০১৮ ০৫:৫৫63333
  • আরে! এ বই এখন আমিও পড়ছি!
  • Sumit Roy | 340112.244.3412.59 (*) | ১৫ জুন ২০১৮ ০৮:০৬63328
  • দ,
    ভাল বলেছেন। আমি এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ছাত্র। ক্লাসে স্যার মুম্বাই এর প্লাস্টিক ব্যান নিয়ে বলেছিলেন। আর সেটা উল্লেখ করে এও বলেন যে এভাবে প্লাস্টিক দূষণ সমস্যার সমাধান হবে না, এটা সাস্টেইনেবল হবে না। তিনি এপ্রসঙ্গে গ্র্যান্ডফাদার ক্লজ নামে আইনের একটি কনসেপ্টের কথা বলেন, যেটা বলে কোন নতুন আইন চালু করতে চাইলে কিছুটা বর্তমানে চালু করা উচিৎ, আর বাকিটা ভবিষ্যতের জন্য রাখা উচিৎ। কারণ এটা না করলে অনেকেই ভুক্তভোগী হতে পারে। আর এই ভুক্তভোগীদের পক্ষের সবচেয়ে জোড়ালো লজিকটি হচ্ছে, আমি যখন এই কাজের মাধ্যমে উপার্জন শুরু করেছিলাম, বা একে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছিলাম, তখন এই নতুন নিয়মটি ছিল না। তাই এই নতুন নিয়মে এডাপ্ট করতে গেলে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিকল্প ব্যবস্থা ও সময় দিতে হবে... একটি আদর্শ রাষ্ট্রের সমস্ত প্রোজেক্টেই সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা থাকা উচিৎ, যাতে সেই নিয়মটা টিকে যায়, আর এর ফল ভবিষ্যৎ প্রজন্মগুলোতেও পাওয়া যায়। কিন্তু প্লাস্টিক একেবারে ব্যান করে দিলে লাভ হবে না, বরং কোন না কোনভাবে এটা আবার ফিরে আসবে, বৈধভাবে না হলে অবৈধভাবে আসবে।

    π,
    আচ্ছা, সিরিজের বাইরে আলাদাভাবে রিইউজেবল প্লাস্টিক ও প্লাস্টিকের বারবার ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব। চিপস-চানাচুরের মত সবরকম প্লাস্টিক হয়তো রিইউজ করা সম্ভব নয়, সেগুলোকে সংরক্ষণ করে রিসাইকলিং এর ব্যবস্থা করতে হবে।

    প্লাস্টিকের সমস্যা শুধু সমুদ্রের জন্যই না, ল্যান্ডেও এর গুরুতর প্রভাব রয়েছে। যেমন, ক্লোরিনেটেড প্লাস্টিক আশেপাশের মাটিতে ক্ষতিকর কেমিকেল ছড়াতে পারে, এটা আবার মাটিতে ইনফিল্ট্রেটেড হয়ে মিশতে পারে গ্রাউন্ড ওয়াটারে বা আশেপাশের সারফেস ওয়াটারে। সারফেস ওয়াটারে গিয়ে এটা ইকোসিস্টেমের ক্ষতি করবে, আর গ্রাউন্ড ওয়াটারে গিয়ে খাবার জলের সাথে মিশে মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করবে। জমিভরাট বা ল্যান্ডফিলের মাধ্যমে প্লাস্টিক এর একটা অংশকে ডিসপোজ করা হয়, সেটা এই পর্বে উল্লেখ করেছি। ল্যান্ডফিল পদ্ধতিতে ডিজপোজ করলে সুবিধা হচ্ছে ব্যাক্টেরিয়াগুলো দ্রুত বেগে প্লাস্টিককে ভেঙ্গে ফেলতে পারে। কিন্তু এখানে একটা সমস্যা আছে। এই ব্যাক্টেরিয়াগুলোর মধ্যে আছে নাইলন ইটিং ব্যাক্টেরিয়া যারা নাইলনেজ এনজাইম নিঃসৃত করে বায়োডিগ্রেডেবল প্লাস্টিকের নাইলনকে ভেঙ্গে ফেলে তারপর মিথেন গ্যাস তৈরি করে। মিথেন একটা শক্তিশালী গ্রীনহাউজ গ্যাস, গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এ যার উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে।

    আমি আসলে এখানে প্লাস্টিকের রিসেন্ট আলোচনায় আসা সমস্যাগুলোতেই সবথেকে বেশি জোড় দিচ্ছি, যা মোটামুটি ২০১৫ থেকে ২০১৮ তেই উঠে এসেছে, কারণ এইসময়টাতেই প্লাস্টিক বিশ্বের অন্যতম সমস্যা হিসেবে বিজ্ঞানমহলের নজর কেড়ে নেয়। এই সময়ে প্লাস্টিক নিয়ে উঠে আসা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো এত বেশি যে লিখে শেষ করা যাচ্ছে না, আর তাই ল্যান্ড এর ব্যাপারটায় খুব একটা জোড় দেয়া হয়নি। তবে শেষের দিকে নিয়ে আসব। আর হ্যাঁ, মশার কামড় খেতে খেতেই এই মন্তব্যটি করছি...

    কল্লোল,
    লিংকটি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ। এটা নিয়ে পড়েছিলাম। ক্লাইমেট কাউন্সিল ভুটানকেই বিশ্বের প্রথম কার্বন নেগেটিভ কান্ট্রি হিসেবে ঘোষণা করেছে। ভুটানের অনন্য পরিস্থিতি একে এই অবস্থায় যেতে সহায়তা করেছে। দেশটি পাহাড়ী ও অশিল্পায়িত দেশ, যেখানে প্রায় মাত্র আট লক্ষ মানুষের বাস। আর তাই ইলেক্ট্রিসিটি ও এনার্জি ডিমান্ড তুলনামূলকভাবে কম। একই সাথে এই দেশের রিভার নেটওয়ার্ক খুবই রিচ, যেকারণে এরা প্রচুর পরিমাণে হাইড্রোইলেক্ট্রিসিটি তৈরি করতে পারে। শুধু নিজেদের বিদ্যুতের চাহিদাই এরা পুরণ করে না, এরা বিদ্যুৎ রপ্তানিও করে।

    এছাড়া এই দেশে আছে সমৃদ্ধ ও জীববৈচিত্র্যপূর্ণ বনাঞ্চল, যা এই দেশে তৈরি হওয়া সামান্য পরিমাণে কার্বনকে শুষে নেয়, আর তাই এই দেশ থেকে কার্বন ঊর্ধ্বে পালিয়ে যেতে পারে না। এছাড়াও দেশের আইনই এরকম যে এর মোট ভূমির শৎকরা ৬০ ভাগকে অবশ্যই বনাঞ্চলে পরিপূর্ণ থাকতে হবে।

    তবে ভুটানের এই অবস্থার জন্য তাদের অনুকূল পরিবেশকেই শুধু ক্রেডিট দেয়া যায় না। এদের পলিসিমেকার, সাধারণ জনগণের অবদানকে স্বীকার করতেই হয়। ভুটানে ইলেকট্রিক কারে প্রচুর বিনিয়োগ করা হয়েছে। সেই সাথে আছে এদের কঠোর বন ব্যবস্থাপনা। তাই ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকও বলেছে, যে, "ভুটান সাসটেইনেবিলিটিকে তাদের জাতীয় পরিচয়ে পরিণত করেছে।" সকল রাষ্ট্রেরই এই ছোট দেশটির থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।
  • কল্লোল | 670112.203.127812.170 (*) | ১৫ জুন ২০১৮ ১১:৩৪63329
  • সুমিত রায়। এই লেখাটা এখানে দিয়েছিলাম শুধুমাত্র দুষণ রোধের কথা মাথায় রেখে নয়। আরও অনেক বড় একটা প্রেক্ষিত আছে বলে মনে হয়েছে।
    আপনি লিখেছেন - "ভুটানের অনন্য পরিস্থিতি একে এই অবস্থায় যেতে সহায়তা করেছে। দেশটি পাহাড়ী ও অশিল্পায়িত দেশ, যেখানে প্রায় মাত্র আট লক্ষ মানুষের বাস।"
    পৃথিবীর সব রাষ্ট্র পাহাড়ে হতে পারে না। কিন্তু অন্য দুটি পরিস্থিতি? ১) অশিল্পায়িত দেশ, ২) মাত্র আট লক্ষ মানুষ।
    এখানেই কি চাবিকাঠি?
    শিল্পায়নের কুফল শুধুই দুষণ নয়। শিল্পায়ন যেমন মানুষকে আরাম দিয়েছে, মৃত্যুহার কমিয়েছে(এই বিষয়টি সুফল কিনা তা নিয়ে আমার বিস্তর প্রশ্ন আছে), মানুষের "জ্ঞানের" পরিধি বেড়েছে, তেমনিই মাত্রাছাড়া লোভ, বৈষম্যের পাহাড় তৈরী করেছে, আমদানী করেছে নানান শিল্পায়ন জনিত রোগ।
    এবং এই শিল্পায়নই জনসংখ্যার অস্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য দায়ী।
    তাই বলছিলাম - আমাদের কি কিছু ভাবার আছে?
  • pi | 7845.29.896712.107 (*) | ০৫ জুন ২০১৯ ০৮:৩৮63334
  • এটা শেষ হলনা?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে প্রতিক্রিয়া দিন