এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  ইতিহাস

  • "আদাব, খবর পড়ছি সাঈদা বানো"...

    Suchetana Mukhopadhyay লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | ইতিহাস | ০৩ এপ্রিল ২০২৩ | ৮৩১ বার পঠিত | রেটিং ৪.৩ (৩ জন)
  • " সম্ভবত আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে টালমাটাল সময়ে, ১০ আগস্ট ১৯৪৭-এর সকালে আমি দিল্লি পৌঁছলাম। ২০০ বছরের ঔপনিবেশিক শাসনের শেষে হিন্দোস্তান আর পাকিস্তান নামের দুটি স্বশাসিত ডোমিনিয়নে চিরতরে ভেঙে যাওয়া ভারত ১৯৪৭-এর ১৫ আগস্ট নিজের প্রথমতম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের জন্য অস্থির উদ্দীপনা নিয়ে অপেক্ষা করছিল। আমিও অবশ্য ভাঙছিলাম...।আমি ভাঙছিলাম আমার সুরক্ষিত আর গতানুগতিক জীবনের সমস্ত শিকলগুলোকে। ... পরিবারের তামাম তির্যক কানাঘুষো, সমাজের সব নিষ্ঠুর নিন্দামন্দ আর লখনৌয়ের স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবনের যাবতীয় অভ্যেসের বন্ধন ভেঙেছিলাম আমি আর পুরুষের কোনরকম সহায়তা আর অনুমোদন বিনে আমার জীবনটাকে নতুন করে গড়ে তোলার জন্য বেরিয়ে এসেছিলাম একদম একলা। আশ্চর্য ধৈর্য্য আর সহিষ্ণুতা দিয়ে আমার ঘটানো এমন অভূতপূর্ব কান্ডকে পারিবারিক আর সামাজিকভাবে সামলানোর জন্য আমি আমার মা আর শাশুড়ি মায়ের কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকব...।"

    কেবল এই দেশই নয়, পৃথিবীর প্রথম পেশাদার মহিলা সংবাদপাঠক সাঈদা বানোর আত্মজীবনী 'ডগর সে হঠ কর'-বইটির কয়েক লাইন দিয়েই না'হয় শুরু হোক এই লেখা...।
    .......

    ১৩ আগস্ট, ১৯৪৭। ভোর ৬টায় অফিস পৌঁছে গেছেন উদ্বিগ্ন সাঈদা। ঠিক দুঘন্টা পর, অল ইন্ডিয়া রেডিওর দিল্লি স্টেশন থেকে রোজ সকাল ৮টায় লাইভ সম্প্রচারের উর্দু খবরে কানপাতা শতেক দিল্লীবাসী ভীষণ অবাক হয়ে প্রথমতম বারের জন্য শুনলেন এক মার্জিত নারীকণ্ঠ। "আদাব, খবর পড়ছি সাঈদা বানো।" কেবল ভারতের অল ইন্ডিয়া রেডিওতেই নয়, খোদ পশ্চিমেও এর আগে কোন মহিলাকে সংবাদপাঠের দায়িত্ব দেয়নি বিলিতি বিবিসি বা আমেরিকান সংবাদ সংস্থাগুলি। মজার কথা, 'ডেভেলপড' সেসব দেশে ন্যান উইন্টনের মতো পথিকৃৎ সংবাদপাঠিকাদের যুগ শুরু হয়েছিল ১৯৪৭ এর প্রায় দেড় দশক পরে, ১৯৬০ থেকে। যে অর্থে বলা যায়, কেবল ভারতের নয় পুরো দুনিয়ারই প্রথম পেশাদার মহিলা সংবাদপাঠিকা হিসাবে ১৯৪৭এর ১৩ আগস্ট এক অজেয় ইতিহাস রচে ফেলেছিলেন সাঈদা বানো।
    .....
    এবার বরং আমরা দু'দশক পিছিয়ে যাই আর একটু ফিরে দেখে নিই সাঈদা বানোর প্রারম্ভিক জীবনকে। ভূপালের শাসিকা নবাব সুলতান জাহানের উদারপন্থী রাজপাটে ১৯১৩ (মতান্তরে ১৯১২) এক উচ্চবিত্ত অভিজাত পরিবারে জন্মেছিল সে। দিদির মতো শান্ত-বাধ্য-ঘরোয়া নয়, বরং সাঈদা ছিল তুমুল মজারু, হুজুগে আর পড়াশুনোর তুলনায় খেলকুদেই বেশি পারদর্শী। ভূপাল জুড়ে টেনিস আর ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নাম করে ফেলা অথচ পড়ালেখায় মোটামুটি মেয়েটি স্বপ্ন দেখত এক স্বাধীন আর স্বনির্ভর আগামীর..। 

    ১৯২৫-এ উজ্জ্বল ভূপালের বাস ছেড়ে নবাবী তেহজিবের শহর লখনৌতে চলে আসেন সাঈদার পরিবার। পর্দার রোকটোকের বদলে শহরের কারামাত হোসেন মুসলিম গার্লস স্কুল আর তারপর ইসাবেল কলেজে তার পড়াশুনো আর খেলাধুলোর জীবন দিব্যি এগোচ্ছিল যখন, ঠিক তখনই বাধ সাধলেন সাঈদার আব্বাজান স্বয়ং। কন্যার শত অনুরোধ, চোখের জলে লেখা চারপাতা লম্বা চিঠি, বিফলে গেল সব। ১৯৩৩-এ একরকম জোর করেই লখনৌয়ের খ্যাতনামা জজসাহেব আব্বাস রাজার সঙ্গে নিকাহ হয়ে গেল তার। এত বছরের খোলা আকাশের বদলে খানদানি রাজা পরিবারের জেনানামহলের চারদিওয়ারির ভিতর এক ধূসর সময় শুরু হল নতুন বউটির।
    .....
    অতি রক্ষণশীল খানদানি বাড়ির রীত-রিওয়াজ পালন কি মুখের কথা! শুধু পর্দার কড়াকড়িই নয়, সেই হাভেলির জেনানামহলের চারদিকে ছিল হাজার না-য়ের কঠিন অবরোধ। উদয়াস্ত সংসারের উনকোটি কাজ আর অন্তহীন মানিয়ে নেওয়ার মাঝে উঁচু স্বরে গপ্প করা, প্রাণ খুলে হাসা, নিজের ইচ্ছেমত নভেল পড়া বা বাড়ির বাইরে একলা বেরোনোর মতো একটার পর একটা সহজ ইচ্ছেকে গলা টিপে মারতে বাধ্য হচ্ছিল প্রাণবতী সাঈদা। একদিকে পুরোনোপন্থী স্বামী-স্বজনদের সঙ্গে নিরন্তর মনান্তর আর অন্যদিকে মুক্তি সম্ভাবনাহীন জীবনের বিষণ্নতা দুই ছেলের জন্মের পর সাঈদাকে আরো প্রবল ভাবে গ্রাস করছিল। নিজের এ সময়কার মানসিক সংকটকে বোঝাতে গালিবের একটি শের ধার করে সাঈদা তাঁর আত্মকথায় লিখেছিলেন, " ফির ওয়াজ-এ-এহতিয়াত সে রুকনে লগা হ্যায় দম.."( "সতর্ক থাকার নিয়ত উদ্বেগে/ শ্বাসরুদ্ধ হয়ে আসছে আমার"..)। 

    তীব্র অবসাদগ্রস্ত সাঈদাকে শেষমেশ বাড়ি থেকে বেরিয়ে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হল। লখনৌয়ে অল ইন্ডিয়া রেডিওর সদ্য স্থাপিত স্টেশনে মহিলা আর শিশুদের একটি অনুষ্ঠান সঞ্চালনার কাজ পেলেন তিনি। এখানে ঘটনাচক্রে তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে উঠেছিলেন কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী আখতারি বাঈ। কিন্তু তওয়ায়েফ আখতারির সঙ্গে বন্ধুত্ব হোক বা আরেক শিল্পী জামিলাকে বাড়িতে নিয়ে আসা(যাঁর স্বামী ছিলেন হিন্দু), সমানেই সাঈদার প্রতিটি প্রগতিশীল পদক্ষেপের বিরোধিতা আসছিল আত্মীয়মহল থেকে। সাঈদা বুঝতে পারছিলেন, সুস্থভাবে বাঁচতে হলে লখনৌ আর বিয়ে, দুটোই তাঁকে ছাড়তে হবে। হঠাৎ সে সুযোগও এসে গেল তাঁর সামনে। জওহরলাল নেহরুর বোন তথা সেকালের বিশিষ্ট সমাজকর্মী বিজয়লক্ষ্মী পন্ডিতের আনাগোনা ছিল তাঁর শশুরবাড়িতে। নারী স্বাধীনতার কট্টর সমর্থক বিজয়লক্ষ্মী পন্ডিতের সাহায্যে দিল্লির অল ইন্ডিয়া রেডিওতে উর্দু সংবাদপঠিকার পাকা চাকরি পেলেন সাঈদা। বড় ছেলে আসাদকে বোর্ডিং স্কুলে ভর্তি করে, চির যাতনার লখনৌয়ের পাট চুকিয়ে, ছোটো ছেলে সাঈদ আর সহায়িকা খানুম সহ, দুটো স্যুটকেস হাতে ১০ আগস্ট সকালে দিল্লি স্টেশনে ট্রেন থেকে নামলেন সাঈদা বানো।
    .....
    এক পারিবারিক বন্ধুর বাড়িতে সাময়িকভাবে আশ্রয় নিলেন সাঈদা। ১১ আগস্টের সারাটা দিন তাঁর কাটল দিল্লি রেডিও স্টেশনে কন্ঠ প্রশিক্ষণ, সংবাদ পাঠের নানান খুঁটিনাটি সমেত নিজের দায়িত্বগুলি বুঝে নিতে। ১৩ সকাল থেকে শুরু হলো রোজকার সকালের উর্দু খবর পড়ার কাজ। স্বপ্নসম্ভবের সেই প্রথম স্বাধীনতা দিবসে সারাদিন খবর পড়ার অভিজ্ঞতাকে বড় আকর্ষণীয় ভাবে নিজের আত্মজীবনীতে লিখে রেখেছেন সাঈদা। দিনভর কাজের পরে সন্ধেয় ফিরেই তিনি ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে পড়তেন স্থায়ী আস্তানার খোঁজে। নিজের দমে ঠিক ক'দিনের মধ্যেই সম্পূর্ণ অচেনা দিল্লি শহরে 'ইয়ং ওমেন্স ক্রিশ্চিয়ান এসোসিয়েশন'-এর হস্টেলে থাকার জন্য ঘরও খুঁজে নিলেন সাঈদা। বড় ছেলে আসাদকে হস্টেলে রেখে ফিরে আসার যন্ত্রণা হোক বা রোজ ভোরে সাঈদকে খানুমের দায়িত্বে ফেলে সারাদিনের জন্য বেরিয়ে আসার দুশ্চিন্তা, দেশভাগ পরবর্তী দিল্লির দাঙ্গায় দুই সন্তানকে হারিয়ে ফেলার তুমুল উদ্বেগ মাথায় নিয়ে ভোরে কাজে বেরোনোর দায়িত্ব হোক বা পরিস্থিতির কারণে ছেলেদের ছোটো বয়সেই পরিণত হয়ে উঠতে বাধ্য হওয়া...; সাঈদা বানোর আত্মজীবনীর ছত্রে ছত্রে রয়েছে নিজের শর্তে মাথা উঁচু করে বাঁচতে চাওয়া এক চাকরি করা একলা মায়ের নীরব কষ্ট আর মানসিক টানাপোড়েনের মন কেমন করা বহু মুহূর্ত। 
    ......
    এদিকে দেশের প্রথম সংবাদপাঠিকা সাঈদা বানোকে নিয়ে তাঁর শ্রোতাদের মধ্যে দেখা দিলো মিশ্র প্রতিক্রিয়া। স্টেটসম্যান কাগজ যেমন তাঁর সুকণ্ঠের প্রশংসা লিখল, ঠিক তার উল্টো দিকে রেডিওর মত পাব্লিক ডোমেইনে এক মুসলমান মহিলার সরব উপস্থিতি পছন্দ করলেন না সমকালের রক্ষণশীল মুসলিম সমাজের একাংশ। একদিকে যেমন তাঁর ভক্তদের তরফ থেকে আসা শয়ে শয়ে চিঠি ( বহু চিঠিতে সরাসরি প্রেমের, এমনকি বিয়ের প্রস্তাবও পেতেন সাঈদা) উপচে পড়ছিল রেডিও স্টেশনের ঠিকানায়, তেমনই 'মুসলিম' সাঈদা "আমাদের দেশে কি করছ, পাকিস্তানে যাও'' গোছের উগ্র সাম্প্রদায়িক প্রচুর হুমকি চিঠিও পাচ্ছিলেন। অথচ আজীবন এই 'মুসলিম' নারীটির আদর্শ ছিলেন মহাত্মা গান্ধী। দেশের তথা নিজেরও সেই অস্থির সময়ে শান্তির খোঁজে বারবার তিনি ছুটে যেতেন বিড়লা হাউসে, গান্ধীর প্রার্থনা সভায়। আকুল কান্নায় ডুবে যাওয়া সাঈদা ১৯৪৮ এর ৩০ জানুয়ারি স্টুডিওতে উপস্থিত থেকেও গান্ধীজির মৃত্যুর খবর ঘোষণা করে উঠতে পারেননি কিছুতেই...।

    যেহেতু তাঁদের একমাত্র মহিলা সঞ্চালকটির উপস্থিতি শ্রোতাদের মধ্যে আলোড়ন তৈরি করেছিল, তাই দিল্লির উর্দু সংবাদ বিভাগ ঠিক করলেন, সাঈদা খবর পড়ার আগে মাউথপিসের সামনে তাঁর হাতের চুড়ির শব্দ শোনাবেন, যাতে আগেভাগেই সাঈদাকে শুনতে ইচ্ছুক বা অনিচ্ছুক শ্রোতারা সজাগ হতে পারেন! তাঁর জন্য আসা নেতিবাচক চিঠির সংখ্যা সময়ের সঙ্গে কমে গেলেও, কেরিয়ারের শুরুতে হোক বা মধ্যগগনে, কখনোই পাঠকের স্তুতি, হুমকি বা নিন্দা, তাঁকে মানসিকভাবে ছুঁতে পারেনি। নিখুঁত পেশাদারিত্ব আর আগাগোড়া সুনামের সঙ্গে দেড়দশক উর্দু সংবাদপাঠের কাজ করার পর ১৯৬৫-তে অবসর নেন সাঈদা বানো। যদিও এরপরও ৭০এর দশক জুড়ে তিনি অল ইন্ডিয়া রেডিওর দিল্লি দপ্তরে উর্দু সংবাদ বিভাগের অন্যতম প্রযোজক হিসেবে তিনি দায়িত্বপালন করেছিলেন। ২০০১ সালে ইন্তেকালের আগের দুই অবসরকালীন দশকে 'ব্রুটালি ফ্র্যাঙ্ক' দাদীজান (যদিও পরিবারের সবাই তাঁকে 'বিবি' নামেই ডাকতেন) সাঈদার সবচেয়ে পছন্দের কাজ ছিল তাঁর তরুণ নাতিনাতনি আর রেডিওর পুরোনো মহিলা সহকর্মীদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে সময় কাটানো। 
    ......
    ১৯৯৪ সালে সাঈদা বানো উর্দুতে তাঁর আত্মজীবনী 'ডগর সে হঠ কর' লিখতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু দীর্ঘদিন সেটি মুদ্রিত হয়নি। ২০২০-তে তাঁর নাতনি শাহানা রাজা প্রকাশ করেন বইটির ইংরেজি অনুবাদ, যেটির নাম 'অফ দ্য বিটেন ট্র্যাক'। সাঈদা নিজে চিরকাল যেমন নির্ভীক, প্রাণোচ্ছল অথচ গভীরভাবে সংবেদনশীল এক আদ্যন্ত সৎ মানুষ ছিলেন, তাঁর আত্মকথাটিও তাঁর মতোই অকপট আর সাহসী। পরিবারের ঠিক করে দেওয়া গন্ডি ডিঙিয়ে তওয়ায়েফ আখতারি বাঈকে 'বন্ধু' বানিয়ে ফেলা মেয়েটি, ৩৪ বছরে দুটি সন্তান সমেত স্বেচ্ছায় তালাক নিয়ে স্বচ্ছল জীবনের সমস্ত কমফর্ট ছেড়ে অচেনা শহরে একলা পাড়ি জমানো মেয়েটি, পুরুষ সহকর্মীদের বেঁকা চাউনি উপেক্ষা করে দেশের প্রথম সংবাদপাঠিকা হয়ে ওঠা মেয়েটি, নিজের রোজগারের টাকায় দিল্লির মত শহরে বাড়ি গাড়ি  করে ফেলা মেয়েটি, জীবনের মাঝপথে এসে ঘনিষ্ঠ বন্ধু তথা দিল্লির জনপ্রিয় মেয়র বিবাহিত নুরউদ্দিন আহমদের প্রেমে পড়ে যাওয়া মেয়েটি, সুদীর্ঘ ২৫ বছর কোনরকম প্রতিদানের প্রত্যাশা ছাড়া নুরউদ্দিনের প্রেমে "নিরন্তর অগ্নিপরীক্ষা" দিতে থাকা মেয়েটি, মা হিসেবে সন্তানদের কাছে নিজেকে দোষগুণ সমেত স্বচ্ছভাবে হাজির করা মেয়েটি, কন্যা থেকে স্ত্রী - মা থেকে দাদীমা পর্যন্ত জীবনের সমস্ত ধাপে সমাজের চাপিয়ে দেওয়া লেবেলগুলো উড়িয়ে দিয়ে হৈ হৈ করে সামনে এগিয়ে চলা মেয়েটিই তো সাঈদা বানো! আইকন থেকে ইতিহাস- ইতিহাস থেকে আইকন হয়ে ওঠা অনন্য অদম্য সাঈদা বানো...।

    শেষজীবনে নিজের ছকভাঙা জীবনের গপ্প করতে করতে নাতিনাতনিদের কাছে তাঁদের প্রিয় 'বিবি' তর্জনী উঁচিয়ে হাসতে হাসতে প্রায়ই বলতেন, "আমি যা যা করেছি, তার একটাও তোমরা করোনা কিন্তু..."। কিন্তু ততদিনে তাঁর তৈরি করা অন্যরকম পথটিতে হাঁটতে শুরু করে অনেক দূর এগিয়ে গেছেন ভারতীয় রেডিও বা টেলিভিশনের আগামী সমস্ত প্রজন্মের মহিলা সাংবাদিক ও সংবাদপাঠিকা। "তীব্র স্বাধীনচেতা, সাহসী, ব্যতিক্রমী, প্রাণোচ্ছল, আবেগী আর সপাট আত্মবিশ্বাসী" এমন সাঈদা বানোরাই তো যুগে যুগে ইতিহাস  তৈরি করেন, তাইনা?
    ......

    ** সঙ্গের ছবিটি সাঈদা বানোর আত্মজীবনীর প্রচ্ছদ।

    **মুখ্য ও গৌণ তথ্যসূত্রগুলি : 

    ১) Off the Beaten Track: The Story of My Unconventional Life – Saeeda Bano Translated by Shahana Raza
    ২) The Inimitable Saeeda Bano Lived Her Life Off The Beaten Track : Mehru Jaffer /   thecitizen.in
    ৩)Saeeda Bano : India's First News Reader Who Lived Life On Her Own Terms - Carol Lobo / peepultree.world
    ৪) SAEEDA BANO : First professional female broadcaster in India - Ministry of Culture, Govt of India
    ৫) উর্বশী বুটালিয়ার নেওয়া শাহানা রাজার সাক্ষাৎকার। ইউ টিউব ভিডিওর লিঙ্কটি হল, 
    https://www.youtube.com/live/sK6zN-L5U3A?feature=share
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ০৩ এপ্রিল ২০২৩ | ৮৩১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • অমিতাভ চক্রবর্ত্তী | ০৩ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:২৯518178
  • কিছুই জানতামনা এই অসাধারণ মানুষটির সম্পর্কে। পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য আপনাকে অজস্র ধন্যবাদ।
  • Suchetana Mukhopadhyay | ০৩ এপ্রিল ২০২৩ ১০:২৭518180
  • লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ জানাই।
  • Ranjan Roy | ০৪ এপ্রিল ২০২৩ ০৫:৪০518225
  • সাইদা বানোর অসামান্য আত্মজীবনীটি কিভাবে কেনা যাবে?
  • Ranjan Roy | ০৪ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:২৯518234
  •  লেখাটির জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুচেতনা।
     
        অ্যামাজনে ডিজিটাল ভার্সন পেয়ে গেছি। 
  • Suchetana Mukhopadhyay | ০৪ এপ্রিল ২০২৩ ২০:৫১518262
  • পড়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ 
  • dc | 27.62.83.26 | ০৪ এপ্রিল ২০২৩ ২০:৫৫518263
  • এই লেখাটা খুব ভালো লাগলো। আর সাঈদা বানোর সম্পর্কে জানতে পেরে আরও ভালো লাগলো। সত্যি অসাধারন জীবন ওনার, এই হলো বাঁচার মতো করে বাঁচা। ওনাকে আমার স্যালুট। 
  • aranya | 2601:84:4600:5410:d965:cbaf:3611:3d4d | ০৪ এপ্রিল ২০২৩ ২১:৫০518265
  • সাঈদা বানোর কথা জানতাম না। খুবই ভাল লাগল পড়ে। ধন্যবাদ সুচেতনা 
  • | ০৪ এপ্রিল ২০২৩ ২২:০০518266
  • কি অপূর্ব জীবন। খুব ভাল লাগল।
  • Suchetana Mukhopadhyay | ০৫ এপ্রিল ২০২৩ ১৪:০৮518301
  • সময় করে পড়েছেন বলে পাঠকদের ধন্যবাদ।
  • ফরিদা | ০৫ এপ্রিল ২০২৩ ১৬:৪৪518302
  • বাহ। লেখার বিষয় তো অসাধারণ। লেখাটিও দুর্দান্ত। 
  • Suchetana Mukhopadhyay | ০৮ এপ্রিল ২০২৩ ২০:৩৯518454
  • ধন্যবাদ ফরিদা।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে প্রতিক্রিয়া দিন