এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  গপ্পো

  • সুনীল স্যারের লকডাউন

    Nirmalya Nag লেখকের গ্রাহক হোন
    গপ্পো | ২৩ নভেম্বর ২০২০ | ১৬৫৭ বার পঠিত | রেটিং ৪.৫ (২ জন)
  • --- "আজ সারা দেশ লড়ছে করোনা ভাইরাস বা কোভিড নাইন্টিনের সঙ্গে। তবে মনে রাখবেন আমাদের লড়তে হবে রোগের সাথে, রোগীর সাথে--" হ্যালো...
    --- জয়দীপ?
    --- হ্যাঁ স্যার, বলুন
    --- বলছি তুমি এখন কোথায়?
    --- রাঁচিতে
    --- এই সময়ে আবার ওখানে কেন?
    --- আমি তো বেশ কিছু দিন ধরেই এখানে। অফিস ট্রান্সফার করেছে। একটা ফ্ল্যাট ভাড়া করে ছিলাম। সেখানে একজনের করোনা হওয়ায় হোম কোয়ারান্টাইনে যেতে বলেছিল। কোম্পানি গেস্ট হাউসে নিয়ে চলে এসেছে। তবে অফিসে যাচ্ছি না, এখান থেকেই ওয়ার্ক ফ্রম হোম করছি।
    --- গেস্ট হাউস কেমন? মেয়ে-বউ নিয়েই আছো? তোমার তো মেয়েই?
    --- হ্যাঁ স্যার মেয়ে। আমি একাই এখানে। ওরা কলকাতাতেই আছে। গেস্ট হাউসটা ভাল স্যার। নেট কানেক্সনটা দারুণ। আমার ফ্ল্যাটে ওয়াই-ফাই ছিল না। আপনার খবর কী স্যার? কেমন আছেন?
    --- বলছি আমি আছি ভূপালে। মেয়ের বাড়ি এসেছিলাম, লক ডাউনে আটকে গেছি।
    --- তাও তো আপনি মেয়ের বাড়িতে আছেন। আমার চেনা এক জন শিলিগুড়িতে ভাগ্নীর বাড়ি গিয়ে আটকে আছেন। এক কলেজ স্টুডেন্ট গেছিল কুচবিহারে, বন্ধুর সাথে তার বাড়িতে। ব্যাস....
    --- ট্রেন প্লেন তো চালু হতে যাচ্ছে। এবার ফিরতে হবে। এখানে খুব গরম, আমার আবার এসি সহ্য হয় না।
    --- চালু হবার সাথে সাথে আসবেন না স্যার। কদিন অপেক্ষা করুন। ইনিশিয়াল ভিড়টা কাটুক, সুবিধে অসুবিধেগুলোও ততদিনে বোঝা হয়ে যাবে। কিসে ফিরবেন?
    --- ট্রেন প্লেন দুটোর টিকিটই কেটেছি। পাঁচ তারিখের। সুবিধে বুঝে একটা ক্যানসেল করব। সব ঠিকঠাক থাকলে ফ্লাইটেই ফিরব।
    --- ঠিক আছে স্যার... এখন রাখি। কাজের মধ্যে আছি তো... পরে ফোন করব।
    --- এই দাঁড়াও দাঁড়াও। আর একটা মিনিট। আসল কথাটাই বলা হয়নি।
    --- বলুন।
    --- বলছি ফ্লাইটে ফিরলে আমায় হোম কোয়ারান্টাইন দেবে, না কি সরকারি ব্যাবস্থায় থাকতে হবে?
    --- যদ্দূর জানি আপনার কোনও প্রবলেম না থাকলে হোম কোয়ারান্টাইন দেবে। ওটা নামার পর এয়ারপোর্টে ঠিক হবে।
    --- হুমমম.... ঠিক আছে। তুমি কাজ কর। আমি দরকার হলে আবার একটু ফোন করব।
    --- নিশ্চয় স্যার। রাত আটটার পরে করলে ভাল হয়।
    --- ঠিক আছে। রাখছি।

    *****

    --- হ্যালো
    --- জয়দীপ?
    --- হ্যাঁ স্যার। আপনার ফেরার সময় তো হয়ে হল।
    --- আরে একটা অন্য প্রবলেম হয়েছে।
    --- কী হল স্যার? শরীর টরির ঠিক আছে তো?
    --- হ্যাঁ হ্যাঁ সে সব ঠিক আছে। বলছি এই বাজারে বাইরে থেকে কেউ এলে লোকাল লোকেরা ঝামেলা করছে শুনছি।
    --- হ্যাঁ সে রকম ঘটনা ঘটেছে কিছু। তবে আপনি ভাবছেন কেন? আপনি তো নিজের বাড়িতে ফিরবেন। ফ্ল্যাট হলে তবুও কিছু চিন্তা ছিল।
    --- তা তো ফিরব। মেয়েও কোত্থেকে জানতে পেরেছে আমায় হোম কোয়ারান্টাইনই করবে। আসলে প্রবলেমটা অন্য জায়গায়। ব্যাপার হচ্ছে আমার পাড়ায় এক মাতব্বর আছে, চিন্তাটা তাকে নিয়ে।
    --- বুঝলাম না স্যার। পলিটিক্যাল নেতা?
    --- না না, পাড়ার যে রেসিডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন আছে তার কমিটি মেম্বার। মাস কয়েক আগে পাশের বাড়ির মালীকে ফালতু কারণে চড় থাপ্পড় মেরেছিল। তখন যে দু-চার জন প্রোটেস্ট করেছিল, সুযোগ পেলেই এখন তাদের হ্যারাস করে।
    --- বুঝলাম। ওই দু-চার জনের মধ্যে আপনিও ছিলেন আর এখন ভয় পাচ্ছেন লোকটা এই সুযোগে আপনার পিছনে লাগবে।
    --- ঠিক তাই।
    --- একটা কমিটি মেম্বার আর কী করবে স্যার? সেক্রেটারি প্রেসিডেন্ট হলেও একটা কথা ছিল।
    --- আর কিছু না থাক, লোকটার নুইসেন্স ভ্যালু আছে। ঝামেলা পাকাতে ওস্তাদ। আর করোনা ইস্যুতে সঙ্গী পেয়ে যাবারও চান্স রয়েছে।
    --- তা ঠিক।
    --- বলছি হোটেলে থাকা যায় না? ১৪ দিন না হয় হোটেলেই থাকলাম।
    --- ওই লোকটার ভয়ে নিজের বাড়ি ছেড়ে হোটেলে থাকবেন! কী বলছেন স্যার!
    --- আসলে আরও একটা কারণ আছে। আমার নাতিটার বয়স দেড় বছর। বাইরে থেকে ফিরছি তো…
    --- এটা অবশ্য একটা কথা।
    --- বলছি তুমি কোনও ঠিকঠাক হোটেলের সন্ধান দিতে পারো? বেশি দামী হলে চলবে না অবশ্য। আমি কিন্তু সব জানিয়েই থাকব। তুমি শুধু ফোন নম্বর জোগাড় করে দাও, কথাবার্তা আমিই বলে নেব।
    --- হোটেল তো এখন সব বন্ধ স্যার। তবে গেস্ট হাউস ইত্যাদি পাওয়া যেতেও পারে।
    --- সে সবের সন্ধান পাওয়া তো আরও কঠিন।

    --- ……

    --- হ্যালো…
    --- হ্যাঁ স্যার আছি। আমি আপনাকে সোনালীর নম্বর পাঠাচ্ছি। ও মনে হয় আপনাকে হেল্প করতে পারবে।
    --- সোনালী? তোমাদের ক্লাসের? হ্যাঁ মনে পড়েছে। ও কী করে?
    --- ও একটা ট্র‍্যাভেল এজেন্সিতে আছে। আমি ওর নম্বর হোয়াটসঅ্যাপ করছি। ওকেও বলে রাখব।
    --- তুমি নম্বরটা পাঠাও। এখন ওকে ফোন করা যাবে?
    --- যাবে স্যার। বেশি রাত তো হয়নি। সবে পৌনে নটা। তাহলে রাখছি স্যার, নম্বর পাঠাচ্ছি।
    --- ঠিক আছে।

    *****

    --- হ্যালো, আপনি কি সোনালী বলছেন?
    --- ইয়েস। কে কথা বলছেন?
    --- আমি স্কুলের সুনীল স্যার বলছি।
    --- হ্যাঁ স্যার, বলুন। কেমন আছেন? জয়দীপ বলছিল আপনি কাল রাতে ফোন করবেন।
    --- চেষ্টা করেছিলাম। ফোনে কানেক্সন হল না।
    --- আর বলবেন না স্যার। আমফানের পর থেকে কানেক্টিভিটি খুব খারাপ। তিন দিন কারেন্টও ছিল না।
    --- তুমি কোথায় থাকো সোনালী?
    --- নাকতলায় স্যার।
    --- বিয়েথা করেছো?
    --- হ্যাঁ স্যার। আমার এক ছেলে আর এক মেয়ে।
    --- বাহ, ছেলেমেয়েরা কী পড়ছে?
    --- ছেলে টেন আর মেয়ে সিক্স।
    --- অনলাইন ক্লাস করছে?
    --- সে তো করছে। তবে পড়াশোনা কিছু হচ্ছে বলে মনে হয় না। ছেলে তো ক্লাস করতে বসে হোয়াটস্যাপ করছে দেখছি।
    --- নতুন জেনারেশন, নতুন ভাবে ফাঁকি দিচ্ছে। তোমরা অন্য ভাবে দিতে।
    --- হা-হা… এইটা ঠিক বলেছেন স্যার।
    --- তোমাদেরও কি ওয়ার্ক ফ্রম হোম চলছে?
    --- আর ওয়ার্ক! আমাদের ইন্ডাস্ট্রিটাই শেষ হয়ে গেল করোনায়। স্যালারি হাফ হয়ে গেছে। এখন অপেক্ষা করছি চাকরিটা কবে যাবে। ও সব বাদ দিন স্যার।
    --- বলছি জয়দীপ কিছু বলেছে?
    --- গেস্ট হাউসের ব্যাপারে তো? বলেছে। কিন্তু প্রবলেম আছে স্যার। জয়দীপের থেকে শুনে আমি আজ সকালেই তিন জনের সাথে কথা বলেছি। দুজন বলল সার্ভিসের লোকেরা বাড়ি চলে গেছে। অন্য জন ঘুরিয়ে যেটা বলল তার মানে হল এই যে কম বয়সের কেউ হলে রাখত।
    --- তাহলে তো মুশকিল হল।
    --- আমার হাজব্যান্ড একটা সাজেশন দিয়েছে স্যার। আমি অবশ্য খুব হেসেছি...
    --- বল বল…
    --- বলছিল কোনও মাঝারি কোয়ালিটির নার্সিং হোমে অ্যাডমিট হয়ে যেতে।
    --- হেসেছো কেন? আইডিয়াটা তো ভালই। কিন্তু আমার তো কোনও অসুখ নেই, আমায় নেবে কেন?
    --- এক কাজ করুন স্যার। আপনাকে শৈবালের নম্বর দিচ্ছি। ও মানিকতলার দিকে একটা নার্সিং হোমের সাথে অ্যাটাচড।
    --- শৈবাল?... তোমাদের ব্যাচ? মনে পড়ছে না যে।
    --- রোগা লম্বা কোঁকড়াচুল... মাঝারি গায়ের রং...
    --- উঁহু, একদম মনে পড়ছে না। যাকগে, নম্বর দাও। এখন ফোন করব? ডাক্তার মানুষ…
    --- শৈবাল ডাক্তার নয় স্যার। অ্যাকাউন্টস ডিপার্টমেন্টে আছে।
    --- তোমাদের ব্যাচে ডাক্তার নেই?
    --- আছে, শুভাশিস আর সোমা। তবে ওরা সরকারি ডাক্তার।
    --- ঠিক আছে, নম্বর পাঠাও।
    --- পাঠাচ্ছি স্যার। ওর সাথে একটু কথা বলে নিয়ে পাঠাচ্ছি। ও আবার একটু ইয়ে আছে…
    --- অসুবিধে থাকলে ছেড়ে দাও।
    --- একবার দেখে নিই স্যার। আপনাকে নিয়ে সমস্যা হবে বলে মনে হয় না।
    --- দেখ… এমন সমস্যায় পড়েছি… তোমাদেরও সমস্যায় ফেলছি…
    --- অত চিন্তা করবেন না স্যার। কিছু একটা ঠিক হয়ে যাবে।
    --- দেখ… রাখছি।

    *****

    --- হ্যালো...
    --- স্যার শৈবাল বলছি।
    --- তুমি নিজেই ফোন করলে...
    --- আমার ডিউটি শুরু হয়ে যাবে। তার আগে কথা বলব বলে ফোন করলাম।
    --- একটা সমস্যায় পড়ে যোগাযোগ করতে চাইছিলাম। আসলে...
    --- শুনেছি। ওসব করতে যাবেন না।
    --- মানে…
    --- নার্সিং হোম টোমে ভর্তি হতে যাবেন না। ফালতু এক গাদা টাকা গচ্চা যাবে।
    --- একটু খুলে বলবে?
    --- আপনি অকারণ নার্সিং হোমে থাকতে চান মানে আপনার গাদা কাঁচা পয়সা আছে। কেবিন চার্জ, স্পেশাল ডায়েট, রোজ দুবেলা ডাক্তারের ফি, মেডিসিন, পিপিই, মাস্ক, হাজারখানা টেস্ট সব কিছু মিলিয়ে ১৪ দিনে অ্যাট লিস্ট লাখ চারেক গলে যাবে। আপনি সেটা চান?
    --- বল কী! এত টাকা! আচ্ছা, ইনসিওরেন্স থেকে পাওয়া যাবে না?
    --- এক পয়সাও না। আপনাকে বলেছে হোম কোয়ারান্টাইন, আর আপনি হসপিটালাইজড হবেন। ওরা কেন দেবে?
    --- তাও বটে! বলে দিয়ে খুব উপকার করলে বাবা। বলছি… আমি না তোমাকে মনেই করতে পারিনি।
    --- পসিবল। আমি মিডিওকার ছিলাম। লেখাপড়া, বদমায়েশি - সবেতে। স্পোর্টস বা কালচারাল অ্যাকটিভিটিতেও থাকতাম না। রাখছি স্যার।
    --- তাহলে আমার প্রবলেমটা… পরশুই যে ফ্লাইট।
    --- হুঁ, চেনটা ব্রেক করে যাচ্ছে। আপনার প্রবলেম উকিল আর পলিটিসিয়ান ছাড়া কেউ সলভ করতে পারবে না। ওরাও ভাল কেস প্যাঁচাতে পারে অ্যাণ্ড ভাইসি ভার্সা। আর নইলে হোটেল টোটেল সস্তা হবে। রাখছি।
    --- বলছি তোমাদের মধ্যে কেউ--- যাহ, কেটে দিয়েছে।

    ******

    --- হ্যালো...
    --- বলুন স্যার। আপনার কাজ হল?
    --- না, সোনালী নম্বর দিয়েছিল দেবাশিসের। উকিল। একটু পরে কল করছি বলে আর করলই না। আমি বসে থাকলাম করবে বলে। তোমাদেরও বিব্রত করছি ফোন করে করে… আসলে আমার আত্মীয় বন্ধুও তেমন কেউ নেই যারা হেল্প করতে পারে।
    --- আমরা এতগুলো স্টুডেন্ট থাকতে আর কাউকে লাগে না কি স্যার? দেবাশিস আপনাকে ফোন করবে বলেও করল না কেন বুঝলাম না। কাজের মধ্যে ভুলে যেতে পারে অবশ্য।
    --- তা তো হতেই পারে। একটা কিছু ঠিক হয়ে গেলে ভাল হত। কালই আমার ফ্লাইট।
    --- কালই আবার আমার গেস্ট হাউসের পালা শেষ হচ্ছে। ১৪ দিন হয়ে গেছে। এখানে এত ভাল ছিলাম। নেটটা এত স্ট্রং…
    --- তো থাকো না আরও কদিন।
    --- না স্যার, সার্ভিসের লোকেরা ঝামেলা করছে। আমার মত কেসে দু জন আছি এখানে। আমাদের জন্য ওরা নাকি বাড়ি যেতে পারছে না।
    --- আমিও তো বাড়ি যেতে পারছি না, মানে ঝামেলার ভয় পাচ্ছি।
    --- আচ্ছা প্রণবের সঙ্গে কথা হয়েছে আপনার? পলিটিশিয়ান খুঁজছিলেন না?
    --- ওহ, সেটা তো বলতেই ভুলে গেছি। সে তো বড় নেতা।
    --- ও আবার বড় নেতা কবে হল? সেক্রেটারি ফোন ধরেছিল নাকি স্যার? হাহাহা…
    --- বলছি কর্মী কখন নেতা হয় জানো? যখন সে তোমার সমস্যা শুনে নিয়ে গম্ভীরভাবে একটা বিশেষ টোনে বলে 'দেখছি', তখন।
    --- হোহোহো… আপনাকেও 'দেখছি' শুনিয়ে দিল নাকি?
    --- হ্যাঁ, তাই বলল।… যাকগে, এবার খেয়ে নিয়ে শুয়ে পড়ি। কাল আবার ফেরা। চিন্তাটা রয়েই গেল।
    --- আপনার মেয়ে জামাই কোনও সাজেশন দিল?
    --- জামাই তো অস্ট্রেলিয়ায়। আর মেয়ে তার দুই বাচ্চাকে নিয়ে জেরবার। আমার বড় নাতনিটা খুব দুষ্টু। শাশুড়িও আছে। ঠিক আছে, গুড নাইট।
    --- গুড নাইট স্যার।

    *****

    --- হ্যাঁ স্যার বলুন…
    --- বলছি এয়ারপোর্টে বসে আছি। আধ ঘন্টা পরে প্লেন ছাড়বে।
    --- আচ্ছা।
    --- শোন। তোমায় কাজের সময়ে ফোন করলাম অন্য কথা বলব বলে। আমার প্রবলেম সলভড।
    --- বাহ, এ তো দারুণ খবর। কী ভাবে হল?
    --- সলভ করল আমার মেয়ের বাড়ি যে ঠিকে কাজ করে সেই বৌটি। আমার মুখ দেখে তার কিছু একটা মনে হয়েছে। মেয়েকে জিজ্ঞেস করে প্রবলেম জেনে নিল আর সলিউশন দিল ঠিক এক মিনিটে। তাদের ওখানে কে নাকি এই রকমের পলিসি নিতে গিয়েছিল। তবে ধরা পড়ে যায়। ওর প্ল্যানে যেটুকু ফাঁক থাকছিল, সেটুকু সবাই মিলে পূরণ করে ফেললাম।
    --- কী রকম স্যার?
    --- আমি এয়ারপোর্টে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করব। ছেলে নিতে আসবে বেশ রাত করে, মানে পাড়ার লোকেরা ঘুমিয়ে পড়ার পর যাতে আমরা ফিরতে পারি। আমি দোতলায় থাকি। সেখানকার দরজা জানলা বন্ধই থাকবে। বাইরের কেউ জানবে না আমি এসেছি। চোদ্দ দিন পর একটা নাটক করতে হবে। আমি ফের একবার চুপিচুপি বেরিয়ে লোককে দেখিয়ে ফিরে আসব।
    --- বাহ, সহজ ব্যাপার। আমাদের কারোর মাথায় এল না!
    --- আর সমরবাবু - মানে যাঁর জন্য এত কিছু - তিনি কিছু বললেই টিকিট দেখিয়ে দেব। দেখুন, আমি এত দিন আগেই ফিরেছি। অন্য জায়গায় কোয়ারান্টাইনে ছিলাম।
    --- যাক, আপনি এবার নিশ্চিন্ত।
    --- হ্যাঁ, কেবল বাড়ি ফিরেও নাতিটার কাছে কদিন যেতে পারব না এটাই বাজে লাগছে। আর একটা জিনিস নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের ঠিকে কাজের মেয়েটি যেন ফেরার ব্যাপারটা টের না পায়। দোতলায় একা থাকি বলে সুবিধে আছে একটু।
    --- ঠিক বলেছেন। ওদের ওখানে তো সাকসেসফুল হয়নি।
    --- আরও দু-একটা খুচরো ব্যাপার আছে সেগুলো ঠিক করে নিতে হবে। ঠিক আছে, রাখছি। কলকাতায় ফিরে জানিয়ে দেব।
    --- সাবধানে ফিরবেন স্যার… ওহ... হ্যালো হ্যালো..
    --- হ্যাঁ বল…
    --- আপনার মেয়ের ওই ঠিকে কাজের বৌটির ফোন নম্বর আমায় একটু জোগাড় করে দেবেন?

    ---........

    --- বুঝতে পারলেন না তো স্যার? আসলে আমার গেস্ট হাউসে থাকাটা এনসিওর করতে উনি যদি কিছু প্ল্যান দিতে পারেন….
    --- হা হা হা... এটা দারুণ বলেছ… হা হা হা...
    --- হা হা হা

    -------★★★-------
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • গপ্পো | ২৩ নভেম্বর ২০২০ | ১৬৫৭ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    ইঁদুর  - Anirban M
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি মতামত দিন