সেই একই কেস। “দেখ মা, এরা নিজেরা ভুল করেছে, তার পানিশমেন্ট পেয়েছে। দে ডোন্ট ডিজার্ভ সিমপ্যাথি।” ‘“ভুল করেনি, এদের ঠকানো হয়েছে। দুটো এক নয়।” “দে চোজ দ্য রঙ মেন। দেয়ার ফল্ট।” “কাগজ পড়িস? প্রোপোজাল রিজেক্ট হয়েছে বলেও অনেক ঘটনা ঘটে। তারও দরকার হয় না, জাস্ট প্রেজেন্সই অনেক কিছু করে।” “কিছুই বুঝলাম না।” “খামবুনির ঘটনা মনে আছে? মেয়েটি গ্যাংরেপড হয়ে খুন হয়। কলেজ থেকে বাড়ি ফিরছিল, কয়েকজন তাকে তুলে নিয়ে যায়। মেয়েটির কি দোষ ছিল?” ... ...
"আ-আই হ্যাভ আ কোয়েরি।" মা তাকাল আমার দিকে। "তোমাদের… ডিভোর্স হল ফর দিস রিজন?” "মেনলি। একবার ওকে না বলে একটা এনজিওতে ডোনেট করেছিলাম বলেও প্রচুর ঝামেলা করেছিল।... আরও কিছু খুচরো প্রবলেম ছিল। তবে সে সব কম বেশি সব ফ্যামিলিতেই থাকে। তবে ওই… সব যোগ হয়ে ব্যাপারটা ক্রমশ পয়েন্ট অফ নো রিটার্নের দিকে চলে গেল। দুজনেই বুঝতে পারছিলাম কোনও টান আর নেই আমাদের মধ্যে। মিউচুয়াল ডিভোর্স হয়ে গেল। তুই তখন ছোট, ক্লাস ফাইভ, তাই আমিই তোকে পেলাম। তোকে আঁকড়েই বাঁচতে চেয়েছিলাম, কিন্ত…." ... ...
ছেলেটার মোবাইল বেজে উঠেছে। "হ্যাঁ স্যার বসিয়েছি… ঠিক আছে।" ফোন রেখে ছেলেটা বলল, "ওনারা ভিআইপি রোডে জ্যামে আটকে গেছেন। আপনাদের কোল্ড ড্রিংকস দিতে বললেন।" তৃষা বলল, "একটু খাবার জলও দেবেন।” ছেলেটা পাশের ঘরটায় ফিরে যেতেই স্বর্ণালীর প্রশ্ন, "ওনারা মানে কারা?" খোঁচা বলল, "আর একটু অপেক্ষা কর।" "না। ওনারা কারা? ডু উই নো দেম?" "জানি তোর অনেক প্রশ্ন আছে, বাট প্লিজ আর একটু ওয়েট কর,” বলল তৃষা। ... ...
"হোয়াট কাইন্ড অফ ড্রামা ইস দিস?" "আরে বাবা বেশিক্ষণ না,” খোঁচা বলল, “এ ড্রামা চলবে খুব বেশি হলে এক থেকে দেড় ঘন্টা।" "কী করতে চাইছিস?” “মেয়ে পাচারের বিজনেস শুরু করেছি। তোকেই ফার্স্ট পাচার করব।” হাত বাড়িয়ে খোঁচার মাথায় চটাস করে মারল স্বর্ণালী। “মারছিস কেন? ভাল লোকের কাছেই বেচব তোকে। ভেরি রিচ, তোকে সোনায় মুড়ে রাখবে।” এবার স্বর্ণালী খোঁচার চুল ধরে জোর টান দিল একটা। “এমন করলে কিন্তু কোনও গরীব লোকের কাছে বেচে দেব, তাতে যা লস হয় হবে,” বলল খোঁচা। অভিষেক হেসে উঠল। "খোঁচা থাম... ভয় পাস না সোনা," বলল তৃষা। ... ...
"চার জন আলাদা হয়ে খুঁজতে হবে, এক সাথে না," খোঁচা বলল। বলে একটু সরে দাঁড়াল, দোকানে আসা এক ভদ্রলোককে জায়গা করে দিতে। বছর ৫৫-র ভদ্রলোকের গায়ে ব্রাইট নীল রঙের শার্ট আর ফেডেড জিন্স, স্পোর্টস জুতোটা বেশ নামী কোম্পানির। পান কিনে ভদ্রলোক দোকান থেকে বেরিয়ে গেলেন। "সেই লোকটা," অভিষেক ফিসফিস করে বলল। "কোন লোকটা?" তিন জন প্রায় এক সঙ্গে জিজ্ঞেস করলাম। "আন্টির সঙ্গে যে লোকটা কথা বলছিল।" "তুই সিওর?" বলল তৃষা। "তাই তো মনে হচ্ছে, এই রকম ব্লু শার্টই ছিল ওনার গায়ে, প্যান্টটাও তো সে রকমই।" ভদ্রলোক হেঁটে যাচ্ছেন সামনে। একটা তিন তলা সাদা বাড়ির গায়ে একটা গ্যারাজ, সেখানেই ঢুকে গেলেন। ... ...
"কী বুঝলি?" বিশেষ কাউকে উদ্দেশ্য না করেই জিজ্ঞেস করল অভিষেক। ফোন থেকে চোখ না তুলে সারাক্ষণ কী করে থাকে ছেলেটা! "বোঝাবুঝির ব্যাপার নেই," বলল তৃষা, "দেখতে হবে সোনা নিজে কী চাইছে।” "কী চাইছে মানে?" আমি বুঝলাম না। খোঁচা বলল, "ও চাইছে কাকিমা প্রেম করছেন কি না সেটা যেন আমরা জানার চেষ্টা করি।" "আমরা কী করে জানব? স্বর্ণালী নিজেই জানে না।" আমি বললাম। তৃষা কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল, তার আগেই স্বর্ণালীর মোবাইল বেজে উঠল। আন্টি ফোন করছেন।তৃষা ফোনটা নিয়ে রান্নাঘরের দিকে চলে গেল। "নির্ঘাত দেরি করে ফিরবেন, ওইখানে যাবেন,” বিরক্তির সঙ্গে বললাম। খোঁচা বলল, "তোর তাতে কী প্রবলেম?" আমি রেগে গেলাম। "আমার কী প্রবলেম মানে? আমি স্বর্ণালীর প্রবলেমকে আমি নিজের প্রবলেম বলে মনে করছি, তাই আমার গায়ে লাগছে।" ... ...
আসলে কেমন ছিল ১৯৪৭-এর আগস্ট? কেউ উদযাপন করছিল সদ্য পাওয়া স্বাধীনতা দিবস বিনা পয়সায় বাসে চড়ে আর ফ্রিতে সিনেমা দেখে, আর কারও কাছে সে দিন ভরা ছিল জন্মভূমি হারানোর বেদনায়। এমন একটা সময় ঘিরে কাজ করেছে নানা ধরনের আবেগ, কাউকে মনের দুঃখ মনে চেপে রেখে তুলতে হয়েছে পাকিস্তানের পতাকা, আবার কেউ কেউ আনন্দিত হয়েছে কিছু অসামান্য গুজব শুনে আর তাকে সত্যি ভেবে। ... ...
আড় চোখে দেখি পাশের যাত্রী ঘাড় বেঁকিয়ে মেসেজ পড়ার চেষ্টা করছে। তাড়াতাড়ি উত্তর দিতে গেলাম “পরে কথা হবে।” মানে পি-এ-আর-ই (পরে) কে-এ-টি-এইচ-এ (কথা) ইত্যাদি। কিন্তু পি-কিউ-আর-এস এক বোতামে, জে-কে-এলও তাই। ‘আর’ পেতে তিন বার বোতাম টিপতে হবে। জ্বালাতন!! পি-এ-আর-ই লিখতে চাইছি, কিছুতেই আসছে না। আর-এর জায়গায় পি কিম্বা কিউ চলে আসছে। ডিলিট করতে গিয়ে পি-টাও মুছে গেল। একটা শব্দ লিখতে মিনিট দেড়েক চলে গেল। বন্ধ করে দিই ফোন? ছিছি, তাই করা যায়? লোকে তো এখনও তাকিয়ে আছে, ভাববে আমি মেসেজ করতে পারি না। ... ...
অফিস থেকে বেরিয়ে কয়েক পা দূরে প্যাটেল চৌকের দিকে হেঁটে যাচ্ছি, একটু থামছি, চারপাশ দেখছি। আপাততঃ এদিকে আর আসা হবে না, কবে আসব, বা আদৌ কোনও দিন আর আসব কি না, কে জানে। এই চত্বরে আসার পরে প্রথম প্রথম আশপাশগুলো তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতাম, তারপর সব রুটিন হয়ে গেল। এখন চলে যাওয়ার আগে ফের সব একবার দেখে নিতে সাধ জাগছে কেন তাই বা কে বলবে? ... ...
আর অনিন্দ্যর দেওয়া সেই কিং সাইজ লেপ, যাকে আমি তোষক হিসেবেও ব্যবহার করতাম ? তার ভবিষ্যৎও পুরো অন্ধকার – মানে যদিও সেও কুকার আর স্টোভের মত ক্ষণে ক্ষণে আমার দুয়ারে এসেছিল, কিন্তু তাকে যে কার হাতে সঁপে দিয়েছিলাম সেটা ভুলে মেরে দিয়েছি। যাকগে, সেই ঐতিহাসিক লেপের অতীতটা বলে যাই, নইলে ইতিহাস আমায় ক্ষমা করবে না। ... ...