মনে করা যাক আজ থেকে ৫০০ বা ১০০০ বছর সেই সময়ের আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বা ধর্মীয় পরিস্থিতিতে যে নিয়ম তৈরি হয়েছিল তা আজকের বহু বহুগুণ বদলে যাওয়া সমাজে কেন মেনে চলতে হবে সে প্রশ্ন তোলা বা তা নিয়ে তর্ক করাটাও অনিয়মের মধ্যে পড়ে। ক্লাস টুর বাচ্চাটার গল্প থেকে একটু সরে আসা হয়েছে, তার কথাও এখানেই শেষ হতেই পারত, তবে কিনা এটা তো ঠিক গল্প নয়, তাই একটা "তার পর" রয়েছে। তবে আপাততঃ ওই শিশুর ছোট্ট জীবনে যে নতুন নিয়মটা যোগ হল তা হচ্ছে প্রশ্ন করতে নেই। আর বৃহত্তর সমাজে এরই অনুসিদ্ধান্ত হল প্রশ্ন করতে দিতে নেই। ... ...
বাড়ির নয়, স্কুলের খিচুড়ির কথা হচ্ছে। সরস্বতী পুজোর দিন স্কুলের খিচুড়ি। এর কোন তুলনা আছে কি? না, একটা এমফ্যাটিক না। ... ...
তেমন ‘বড় মাপের’ মানবিকতা না দেখালে তো আর খবরের কাগজে জায়গা পাওয়া যায় না। তবু মনে হয় ছোট সাহায্যও কি কম? প্রতিদিনের এমন কত ছোট ছোট সাহায্য যে কত মানুষকে অন্য ভাবে খবরের কাগজে নাম ওঠান থেকে বাঁচিয়ে দিচ্ছে কে তার হিসেব রাখে। ... ...
--- আরে একটা অন্য প্রবলেম হয়েছে। --- কী হল স্যার? শরীর টরির ঠিক আছে তো? --- হ্যাঁ হ্যাঁ সে সব ঠিক আছে। বলছি এই বাজারে বাইরে থেকে কেউ এলে লোকাল লোকেরা ঝামেলা করছে শুনছি। --- হ্যাঁ সে রকম ঘটনা ঘটেছে কিছু। তবে আপনি ভাবছেন কেন? আপনি তো নিজের বাড়িতে ফিরবেন। --- তা তো ফিরব। আসলে প্রবলেমটা অন্য জায়গায়। ব্যাপার হচ্ছে আমার পাড়ায় এক মাতব্বর আছে, চিন্তাটা তাকে নিয়ে। মাস কয়েক আগে পাশের বাড়ির মালীকে ফালতু কারণে চড় থাপ্পড় মেরেছিল। তখন যে দু-চার জন প্রোটেস্ট করেছিল, সুযোগ পেলেই এখন তাদের হ্যারাস করে। --- বুঝলাম। ওই দু-চার জনের মধ্যে আপনিও ছিলেন আর এখন ভয় পাচ্ছেন লোকটা এই সুযোগে আপনার পিছনে লাগবে। --- ঠিক তাই। লোকটার নুইসেন্স ভ্যালু আছে। ঝামেলা পাকাতে ওস্তাদ। আর করোনা ইস্যুতে সঙ্গী পেয়ে যাবারও চান্স রয়েছে। বলছি হোটেলে থাকা যায় না? ১৪ দিন না হয় হোটেলেই থাকলাম। ... ...
পাঁচটি চেনা গল্প, বিভিন্ন জনের রচনা, রঙ-রসও তাদের আলাদা। মিল একটাই, অন্তিম পংক্তিগুলি যেন কবিতার মত ডানা মেলে, গল্পের আওতায় আটকে থাকতে চায় না। আর সেই শেষ শব্দগুলির মধ্যে দিয়েই তাদের অন্তরে পৌঁছনোর চেষ্টা। ... ...
হ্যাঁ হ্যাঁ বুয়েছি, আপনি বলছেন এ চাপ তো রাবণের মায়ের, ছেলের কোথায়? আরে মশায়, দশ খানা মাথায় ঘুম আসাটা কি চাট্টিখানি কথা? এক মাথা চ্যাঁ ভ্যাঁ করলে পাশের জনের, থুড়ি, পাশের মাথার কানে চলে যাবে, ব্যাস, যেটুকু ঘুম এসেছিল তার বারোটা।... আবার কী বলছেন? রাবণের কান কটা? কেন, কু---- না না, ঠিকই তো বলেছেন। মাথাগুলো তো সবকটাই পাশাপাশি আটকানো, কানের জন্য কোনও অ্যালাউন্স তো নেই। তাহলে বোধহয় দুটোই কান -- ফার ইস্টের একটা আর ফার ওয়েস্টের একটা। এতে অবশ্য একটা সুবিধে -- কান বেশি থাকলে কামমলাও বেশি খেতে হত। ... ...
দীপাঞ্জন খয়েরি টাই বেঁধে দিল ঝড়ের বেগে, আর মুখ চালাল আরও স্পিডে। এই রকম বোতামওয়ালা সোয়েটার নাকি বয়স্ক লোকেরা পাঞ্জাবির সঙ্গে পরে, ইয়ং ছেলেরা ইন্টারভিউ দিতে গেলে পরে না, আর টাই-এর সঙ্গে তো নয়ই, ইত্যাদি ইত্যাদি। কিছু করার নেই, মুখের ভেতর থেকে কথা আর বাড়ির ভেতর থেকে সোয়েটার একবার বেরিয়ে গেলে আর পালটানো যায় না। আয়নায় এক ঝলক নিজের “স্মার্ট” চেহারাখানার দিকে তাকালাম, খুব একটা ইম্প্রেসিভ লাগল না। সত্যিই ওই সোয়েটারের সাথে টাইটা ম্যাচ করছে না। মোদ্দা কথা হল, বুঝে গেলাম চাকরি যদি আমার না হয় তা হলে ওই সোয়েটারের জন্যই হবে না। ... ...
আলাদা বলেই এর একটা নাম রেখেছিলেন বিপ্লব - সানাই। ছোটবেলায় বাঁকুড়া জেলার খাতড়ায় যে পাড়াতে ওঁরা থাকতেন সেখানে একটা রাস্তার কুকুরের ওই নাম ছিল। কুকুরটা ডাকতো একটা অদ্ভুত গলায়, কেউ একজন ওই নাম দিয়েছিল, সেটা চালু হয়ে যায়। নামের কথা ভাবতে গিয়ে ওইটাই মনে এসেছিল তাঁর। এতদিন কোথায় ছিলে? ফিস ফিস একটা বনলতা সেনীয় প্রশ্ন করলেন বিপ্লব। ... ...
ওপরের তাক থেকে তিন চারটে বই টেনে নামাতেই একটা খাম মেঝের ওপর পড়ে গেল। টুলের ওপর থেকে রঞ্জন সাহা তাকিয়ে দেখলেন একটা বড়সড় ব্রাউন রঙের খাম। কিসের খাম বুঝতে পারলেন না। এই তাকটা খুব একটা ব্যবহার হয় না। মাসখানেক ধরে গৃহিনী তাগাদা দিচ্ছেন বই-এর আলমারির ওপরের তাকটা পরিষ্কার করার জন্য। আজ টুলে উঠে সবে কাজটা শুরু করেছেন, তার পরেই এই ঘটনা। ... ...