এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • তেলেভাজা ও আমাদের দামোদরীয় সভ্যতা

    সুকান্ত ঘোষ লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২২ জুন ২০১৫ | ৮৫২ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • প্রত্যেক বাঙালীর সাথেই কোন না কোন নষ্টালজিক তেলেভাজা ও এগরোলের দোকানের নাম লেগে থাকে। বাঙালীও যে ব্যবসা বোঝে (প্রফুল্ল রায় মহাশয় বেঁচে থাকলে কি খুশীই না হতেন) এই তথ্য যাচাই হত ওই সব এগরোলের দোকানগুলির প্লেসমেন্ট দেখে। বেশীরভাগ এগরোলের ঠ্যালাই স্টেশন বা বাসস্ট্যাণ্ডের পাশে খাড়াই থাকত। মেমারীতে এগরোল শিরোপার লড়াইটা সীমাবদ্ধ ছিল লক্ষ্মী ও গণেশের মধ্যে। লক্ষ্মী স্টেশন বাজার এবং গণেশ বাসস্ট্যাণ্ড। আমি নিজে লক্ষ্মীদার এগরোল খেয়েই মানুষ – তিনটাকা থেকে শুরু করে আজ ১৪ টাকায় এসে ঠেকেছে প্রায় কুড়ি বছরের ব্যবধানে। লক্ষ্মীদা মূলত ঊড়িশার লোক – মূলত বললাম এই কারণে যে ঊড়িশার সাথে এখন লক্ষ্মীদার আর কোন সম্পর্ক নেই। এই গল্প আমাদের বহুশোনা – বহু ছোটগল্প, উপন্যাস লেখা হয়ে গেছে। লক্ষ্মীদা প্রথমে শুধুই এগরোল বিক্রী করত। এগরোলের ব্যাস ছিল প্রায় ছয় ইঞ্চির মতন। এগরোল বিবর্তিত হতে হতে আজকে চার ইঞ্চি ব্যাসে এসে ঠেকেছে। বাঙালী স্বাস্থ্য সচেতন হচ্ছে নাকি বাঙালীর হজম শক্তি কমছে – এই নিয়ে একটা বিতর্কসভার আয়োজন করা যেতেই পারে কোন এক বইমেলায়। আফটার অল বইমেলাতেও এগরোল এক মুখ্য আকর্ষণ, সে জেলা বইমেলা বা বাইপাস যেখানেই হোক না কেন।

    এগরোলের ময়দার নেচি আগে থেকে তৈরী থাকতে হবে। রেফ্রিজারেটেড হলে ভালো হয়, কিন্তু তার অভাবে ভিজে লাল কাপড়ের টুকরো দিয়ে চাপা দিয়ে রাখাটাই রীতি ছিল। কেরোসিনের স্টোভের উপর হালকা অবতল তাওয়াতে সেই এগরোল ভাজা হত। ভাজা বললাম এই কারণে যে এগরোলের বেসটা রুটির মত সেঁকা এবং লুচির মত ছাঁকা এই দুইয়ের মাঝে বলা যেতে পারে। দুই পিঠ হালকা করে সেঁকে নিয়ে, খুন্তীর পিঠে করে মালটাকে চেপে ধরা অল্প তেল থাকা অবতল তাওয়ার কেন্দ্রে। লক্ষ্মীদার তাওয়ার চারিদিকে সাতটা মতন এগরোল ধরত। সব বেসগুলি ভাজার পরেই লক্ষ্মীদা ডিমে হাত দিত, একটা এগরোল পিছু একটা ডিম। কাগজের পেটি থেকে ডিম নেওয়া, অ্যালুমিনিয়াম মগে চামচ দিয়ে ফাটিয়ে ঢালা, তাতে নুন দিয়ে ফ্যাটানো এবং তাওয়ার উপুর করা – সমস্ত কাজটি লক্ষ্মীদা করত ১৫ সেকেণ্ডের মধ্যে। বাই দি ওয়ে, বি বি সি টিভি চ্যানেলে Saturday Kitchen প্রোগ্রামে ওমলেট তৈরীর ফ্রেণ্ডলী যে প্রতিযোগীতা হয় সেখানে এক ইতালিয়ান শেফ্‌ আগেরবার জিতেছিল ২৮ সেকেণ্ডে ওমলেট তৈরো করে। আমার বদ্ধ ধারণা যে লক্ষ্মীদা এদের সবাইকে বিট্‌ দিতে পারত।

    যাইহোক, সেই ডিম হালকা ভাজা হলে তেতে ময়দার বেস্‌টা থেবরে দাও। তারপর মালটা তৈরী হলে ফাইনাল প্রিপারেশনের জন্য চালান যেত তাওয়া থেকে এক চকচকে মসৃণ জায়গায়। এগরোলের অভ্যন্তরে দেওয়া হত শসা ও পেঁয়াজ এবং ছড়ানো হত ট্যমাটো-চিলি-জিজ্ঞার সস্‌। বলাই বাহুল্য সেট সস্‌ লক্ষ্মীদারই বাড়িতে তৈরী বাজারে বিক্রী না হওয়া ট্যমাটো-লঙ্কা ও নানাবিধ সব্জী দিয়ে। আমার কাছে খাওটাই মুখ্য, তার বাহ্যিক আড়ম্বর নয়। আমি নিশ্চিত আমার দলে বহু বাঙালীই পড়বেন। ফাইন ডাইনিং নামক ভাঁওতায় আজকাল দেশ ছেয়ে গেছে। সেই সময় এইসব লক্ষ্মীদা-দের এগরোল ফ্রেস এয়ার নিয়ে আসে বায়ুমণ্ডলে।

    গাঙ্গেয় সভ্যতার (টেকনিক্যালি আমরা ছিলাম ‘দামোদরীয়’ সভ্যাতার কাছাকাছি) যে টাইম পিরিওডে আমাদের শৈশব কেটেছে, সেখানে এগরোলের সাথে প্রেমের খুব একটা ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিল না। স্কুল লাইফে দলবেঁধে ছাড়া কাপল্‌ হিসাবে ছেলে-মেয়ে একসাথে এগরোল বা ফুচকা খাচ্ছে এটা আমাদের মফস্বলে অভাবনীয় ছিল। তাই লক্ষ্মী বা গণেশের দোকানের রমরমা মার্কেটের সাথে প্রেমের তখন কোন সরাসরি সম্পর্ক ছিল না। কিন্তু কেবল্‌ টিভির আগমণ, এবং মোবাইলের প্রাদুর্ভাব শুরু হবার পর দৃশ্য খুব তাড়াতাড়ি বদলে যায়। এখন তো স্কুল গমণকারী বালক-বালিকাদের পারস্পরিক ভাব বিনিময়ের যায়গা হয়ে দাঁডিয়েছে এই এগরোলের দোকানগুলি। আমাদের সময় লক্ষ্মীদার দোকানের সামনে কোন বেঞ্চ ছিল না – কিন্তু গতবার গিয়ে দেখলাম যে, তিনটি বেঞ্চ বর্তমান, এবং বৌদিও লক্ষ্মীদার সাথে হাত লাগিয়েছে খাবার বন্টনে। আমার ব্যক্তিগত ভাবে মনে হয় এগরোল খেতে খেতে ভাব বিনিময়ের সুবিধা ফুচকা খেতে খেতে সুবিধার থেকে বেশী। ফুচকা অর্ডার দেবার পর ওয়েটিং নামক কোন বস্তু নেই – সরাসরি শালপাতায় ও তেঁতুলজলে মনোনিবেশ। একজন মেয়ে প্রেম জাতীয় ভাব বিনিময় আর ফুচকার মধ্যে কোনটা বেছে নেবে সেটা অনুমানের ভার আপনাদের উপরেই ছেড়ে দিলাম। অন্যদিকে এগরোলের একটা মিনিমাম ওয়েটিং টাইম আছে, দুইহাত ব্যস্ত হয়ে পড়ে না – এই সব নানাবিধ কারণে নবীন প্রেমের জগতে এগ রোল এক বিশিষ্ট জায়গা দখল করে নিয়েছে আপাতত।

    একটু অপ্রাসঙ্গিক, তবুও এই ফাঁকে বলে রাখি। আমার এক সিনিয়র সেইদিন আই,আই,টি খরগপুড়ে তার পিএইচডি করার সময় চিকেনরোল নিয়ে বিষয়টা উল্লেখ করলেন। তারা নাকি লক্ষ্য করেছিলেন, চিকেন রোলের বিজনেসের রমরমা বাড়ার সাথে সাথে ক্যাম্পাসে কুকুরের সংখ্যা কমে যাবার একটা ক্লোজ সম্পর্ক ছিল। স্টাটার্প বিজনেসের কন্সেপ্ট এর মধ্যে লুকিয়ে ছিল কিনা প্লীজ জিজ্ঞেস করবেন না। তবে আমাদের মেমারীতে তেমন কিছু ছিল না এটা হলফ করে বলতে পারি।

    লক্ষ্মী রোল কর্ণার প্রথমে এগ এবং চিকেন দিয়ে শুরু হলেও পরে তা চাউ (মিন), ভেজিটেবল চপ্‌ ও মোগলাই-এ বিস্তার লাভ করে। মেমারী স্টেশন বাজারে ক্রমশঃ খদ্দের এত বেড়ে গেল যে আরও একটি স্টল তৈরী হয়। সেই স্টলের স্পেশালিটি প্রথমে চাউ ও মোগলাই পরোটা-ঘুঘনি ছিল। এবং সেও লক্ষ্মীদাকে অনুসরণ করে এগরোল তৈরী শুরু করে – এর ফলে একে অপরের প্রতিদ্বন্দী হয়ে দাঁডালো। ব্যাপারটা হল সেই আশির দশকে কোক-পেপসীর লড়াইয়ের মত। কোক পেপসীর মত স্বাদের এবং পেপসী কোকের মত পানীয় তৈরীর চেষ্টা দিতে থাকে। এর ফলে ক্রেতাদের কি সুবিধা হল বলতে পারব না, তবে মেমারী স্টেশনবাজার রোল লড়াইয়ে পাবলিক বিরক্ত ও বিভ্রান্ত হয়ে অন্য জায়গায় গণেশ রোলে ভিড় বাড়াতে শুরু করে। বেশী কম্পিটিশন অর্থেই যে ভেজাল সেটা এখন আর MBA স্কুল সিলেবাসে পড়ানো উচিত নয়। কেবল্‌ টিভির নিউজ্‌ চ্যানেলগূলো দেখে মধ্যবিত্ত বালক-বালিকাদের মজ্জাতেও উহা ঢুকে গিয়েছিল। খাদ্যবস্তুতে আমাদের তা প্রথম নজরভুক্ত হয় রঙ দেওয়া ভেজিটেবল চপ্‌-এ। গ্রামীণ ঐতিহ্য অনুসারে বীটের প্রাধান্য থাকত ভেজিটেবল চপে। অ্যাভেলেবিলিটি অনুযায়ী তাই শীতকালেই ভেজিটেবল চপ্‌ পর্যাপ্ত পরিমাণে ও সুস্বাদু পাওয়া যেত। কিন্তু অফ্‌ সিজিনেও সেই মাল সাপ্লাই চালু রাখতে গিয়ে আলুকে রং করে বীট্‌ বলে চালানো হতে থাকল চপের পুরে। খেতে গিয়ে মাঝে মাঝে তা মালুম হত – বড় পীস্‌ আলুগুলিতে বাদামী রঙ সবসময় ডিফিউজ হত না। আমরা প্রবলভাবেই সন্দেহ করতাম যে সেই খাবার বাদামী রঙ মার্চ মাসের দোল খেলার রঙের ইক্যুইভ্যালেন্ট ছিল। কিন্তু সন্দেহকে সত্য বলে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা বা প্রয়োজন কোনটাই আমরা অনুভব করি নি।

    বাঙালীর পেট পাতলা করার পিছনে যে চপ্‌ এবং সিঙাড়ার অবদান যুগান্তকারী তা এতটাই সত্য যে সেটা বিশদভাবে লিখে কেউ আর সময় নষ্ট করেন নি। তবে খুব কম জায়গাতেই টাটকা উপকরণ দিয়ে অতীব সুস্বাদু চপ্‌ - সিঙাড়া তোইরী হত- তার এক উদাহরণ ছিল গণার চপ। গণার চপের জায়গা স্টেশনবাজারে খোলা থাকত বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত। আর জায়গা বলতে হল কারণ প্রকৃতপক্ষে গণার কোন স্থায়ী দোকান ছিল না। একটা মুদীখানা দোকানের সামনে গণা একটা কেরোসিনের স্টোভ ও দুই অ্যালুমিনিয়ামের ট্রে ভর্তি করে ভেজিটেবল চপ্‌ নিয়ে বসত। গণার চপে বীট্‌ অর্থে বীট্‌ এবং গাজর অর্থে গাজরই বর্তমান থাকত। গণার ফ্লাইং কাষ্টমার প্রায় ছিল না – সবাই পার্মানেণ্ট। লিমিটেড এডিশন বিজনেস স্ট্রাটেজি আমাদের গঞ্জে পৌঁছবার আগে গণার চপ্‌ ও নীরেন ময়রার রসগোল্লাই ছিল আমাদের কাছে সীমিত সময়ে সহজলভ্য। রসগোল্লার প্রসঙ্গে পরে আসা যাবেক্ষণ। গণার চপের সাথে থাকত শসা (কচি), পেঁয়াজের স্যালাড ও বিটনুন ছিটে – সে এক স্বর্গীয় স্বাদ।

    গণা চপের জগতে ইতালিয়ান রসুই হলে কালু ছিল চাইনীজ ইক্যুইভ্যালেণ্ট। গণার পরিবেশনের মধ্যে স্যালাড জাতীয় সফিস্টিকেসি থাকলে কালুর মধ্যে ছিল চাইনীজ র‍্যাপিডনেস – অথচ উভয়ের খাবারই সুস্বাদু। কালু মেমারী স্টেশনবাজারের এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। সে দোকান দিয়েছিল তথাকথিত ‘রেলের’ জায়গায়। আজ প্রায় ২০ বছর ধরে শুনে আসছি যে কালুর চপের দোকান (ততসহ বাবার ছাত্রদের ফলের দোকানগুলি) রেল তুলে দিল বলে! কিন্তু কালু অবিচলিত অবস্থায় গনিখান চৌধুরী, জৈল সিং, নীতিশ কুমার, লালু, দিদি সবাইকে পার করেছে। অবিশ্যি কালুর দোকান উঠাতে কোন বেগ পাবার কথা নয় (গণপ্রতিরোধ ছাড়া) – কারণ তা ছিল ওপেন এয়ার থিয়েটারের মতন। দিনের শেষে কালুর দোকান উঠলে পড়ে থাকত একটি ভাঙা তক্তা ও মাটির এক স্থায়ী উনুন। কাঁচামাল সহ কালু সকালে আগমণ ও রাতে প্রস্থান করত। কালু পাক্কা বিহারী ছিল, তার বড় ছেলে বিহারী-বাঙালী ও ছোট ছেলে বাঙালী-বিহারী কম্বিনেশনে পরিস্ফুট হয়েছিল।

    আমাদের ঔষুধের এবং কাপড়ের দোকানের সামনেই কালুর দোকান থাকাতে আমরা কিছু বিশেষ সুযোগ সুবিধা লাভ করেছি। কালু সকাল সন্ধেয় আমার জ্যাঠাদের চা এনে দিত, ফায়ফরমাশ খাটত টুকটাক এবং অর্ডার মত চপ্‌ বানাতো। Diversity and Inclusiveness (D&I) নামক মহাধাপ্পার জিনিসটা ক্যান্সারের মত আজকের বহুজাতিক সংস্থাগুলিতে ছড়িয়ে পড়ার আগে, আমার জ্যাঠা কালুকে আদর করে “এই শালা বিহারী” বলেই ডাকত – এবং কালুও তার মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু খুঁজে পায় নি। কালুর থেকে আমাদের সুবিধা অর্থনৈতিক কিছু ছিল না – সম্পর্ক জড়িয়ে ছিল জিহ্বাস সাথেই মূলত। কয়েক বছর আগে আমার জ্যাঠার শরীর রোগ জর্জরিত হয়ে পড়তে শুরু করে, চলা ফেরা ক্রমশঃ কমে আসছিল এবং কোন এক সময়ে ডাক্তার কেবলমাত্র বিকেলে হাঁটাচলা করার উপদেশ দিল। জ্যাঠা সেই সময় উইণ্ডোর সদব্যবহার করে বিকেলে কালুর দোকানে চপ মুড়ি খেতে আসত। ইদানিং সেই চলা ফেরাও বন্ধ – আর জ্যাঠা তাই ঘরে বসে কালুর চপ খেতে না পারার আক্ষেপ করেই সময় কাটায় এখন। বাই দি ওয়ে, পেটের অবস্থায় জন্য জ্যাঠার চপ-তেলেভাজা খাওয়া বহুদিনই বারণ। এক মরণাপন্ন মানুষ মৃত্যুশয্যায় কালুর চপ খেতে না পারার আপেক্ষ নিয়ে দিন কাটাচ্ছে – এর চেয়ে বড় ট্রিবিউট কালুর চপের জন্য আর কি হতে পারে! (খুব কাছাকাছি হয়ত থাকতে পারে রামকৃষ্ণদেবের ক্যান্সার হবার পর জিলিপি খাবার জন্য আকুতি – তবে তিনি স্পেসেফিক কোন দোকানের নাম করতেন কিনা ঠিক এই মুহুর্তে মনে পড়ছে না, ভাবছি ব্যাপারটা শঙ্কর বা নিমাইসাধন বসুর কাছ থেকে যাচাই করে নেব)।

    গামছাকে হিন্দিতে কি বলে জানা নেই, তবে বিহার থেকে কালু লিটারেলী গামছা পড়েই মেমারীতে হাজির হয়েছিল। কথিত আছে যে আমার বড় জ্যাঠা আমার ফুল-জ্যাঠার জন্য মেয়ে দেখতে গিয়ে শুধুমাত্র ল্যাংচার লোভে পড়ে মেয়ে না দেখেই বিয়ে ঠিক করে চলে এসেছিল। তা সে হেন জ্যাঠা যে চপ্‌ কারীগর এক বিহারীকে নিজের দোকানের সামনে রেলের জায়গার তেলেভাজার দোকান করে দেবে, সেটা আর আশ্চর্য্য কি! ওই চপের দোকান থেকেই আজ কালুর তিনতলা বাড়ি, টিভি, ফ্রীজ এবং দুই মেয়ের ‘দহেজ্‌’ সহ বিয়ে দেওয়া। ওর দোকানে সিঙাড়া পাওয়া যেত না – মূল প্রোডাক্ট ছিল চপ্‌, পেঁয়াজী, ফুলুরী, বেগুনী, ছোলাছাঁকা ও মুড়ী। মেমারী স্টেশনবাজারে ২ টাকার জলখাবার দেওয়াতে কালুর জুড়ি কেউ ছিল না। একটা আড়াইশো সাইজ ঠোঙাতে মুড়ি, একটা চপ্‌, কিছু ছোলা ছাঁকা – ইহা বহুলোকের খাদ্যগহ্বরের তৃপ্তিদান করেছে এবং এখনও করছে, বেসনের ফুলুরীগুলি জাম্বো সাইজের ছিল এবং কোন এক কারণ বসত আমরা আমরা সেগুলিকে ‘বোমা’ বলতাম। ঝূরো বেসনের তাল – এক বেসনের ভাজা খোলের মধ্যে সেঁধিয়ে আছে। জলের সাহায্য ছাড়া ওই জিনিস পেটে চালান করা দুঃসাধ্য ছিল। কালুর প্রায় সমস্ত প্রোডাক্টই ওয়ান স্টেপ প্রসেসে তোইরী হলেও, পেঁয়াজী তৈরী হত টু-স্টেপ প্রসেসে। প্রথম স্টেপে পেঁয়াজ বেসনে মেখে গোল বলের মত করে হালকা ভেজে নেওয়ার পর সেমি ভাজা বলগুলি চেপ্টে রাখা হত। সেকেণ্ড ও ফাইনাল স্টেপে সেই চ্যাপ্টা মাল ভাজলে তা পরিপূর্ণ ‘পেঁয়াজি’তে রূপান্তরিত হত।

    খাবার সমস্ত বৈশিষ্ট ছাড়াও কালুর দোকানের (এবং প্রকৃত অর্থে সব তেলেভাজার দোকান) বৈশিষ্ট ছিল সেই তেলে ভাজার কড়াই। ও কড়াই কবে কেনা হয়েছিল কেউ জানে না এবং কড়াই কিসের তৈরী সেটাও অনুমানসাপেক্ষ। এটা আজ নানাবিধ পরীক্ষা ও সমীক্ষার দ্বারা সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, তেলেভাজার কড়াই এবং তাতে ফুটতে থাকা তেল উভয়েই পুরানো না হলে তেলেভাজার স্বাদ ঠিক খোলে না। অবশ্য তেলের বয়স ও কড়াইয়ের বয়সের পার্থক্য New Earth Creationist দের মতে পৃথিবীর বয়স ও Old Earth Creationist দের মতে পৃথিবীর বয়সের পার্থক্যের মতই সমান ডাইমেনশনের। কড়াই কোনদিন ধোওয়া বা মাজা হত না – একেবারে ইউজ এ্যাণ্ড থ্রো টাইপের যাকে বলে। বাড়ির তেলেভাজার স্বাদ ঠিক এই কারণেই বাইরের তেলেভাজার মত হয় না। আর বাড়িতে তেলেভাজা নাড়তে মূলত খুন্তী ব্যবহার হয় যেখানে ক্ল্যাসিক্যাল চপ্‌ বেগুনী নাড়া হয় সাইকেলের চাকার স্পোক (লোহার সরু শিক) দিয়ে। এই দুইয়ের পার্থক্যের জন্যও চপের স্বাদের ফিলোসফিক্যাল ও সাইকোলজিক্যাল তফাত হয়।

    আমার মনে হয় বেগুন থেকে বেগুনী কথাটা এসেছে (সুনীতি চাটুজ্জে শুনলে খুশী হতেন)। বাজারে বেগুনের দামের উপর নির্ভর করে বেগুনী তৈরী হত বেগুন বা কুমড়োর ফালি দিয়ে। কুমড়ো দিয়ে বেগুনী তৈরী সোনা দিয়ে পাথরবাটি তৈরীর মতনই। অথচ এই কন্ট্রাডিকশনটা এখনও বাংলা পাঠ্য বইয়ে ঠাঁই পেল না। বেগুনী প্রসঙ্গে বহু ছোটবেলার এক কথা মনে পড়ে গেল। নিমো স্টেশনে বোতন-দা তার দোকানে একবার সীমের বেগুনী চালু করেছিল। বোঁটা সহ কচি সীম বেসনে ডুবিয়ে তেলে ভাজা – সে এক অপূর্ব স্বাদ। অবশ্য বেসনে কিছু সিক্রেট মশলা থাকত – উহা ছিল ট্রেড সিক্রেট। আমরা বোতন-দার খুব কাছের লোক হবার জন্য জেনেছিলাম গোপন মশলা আদপে ছিল খাবার সোডা ও লঙ্কাগুঁড়ো। যাই হোক সেই ‘বেগুনী’ সুপারহিট ছিল। তারপর বোতন-দা একদিন সেই দোকান তুলে দিয়ে কলকাতায় মাড়োয়ারী গদিতে কাজ করতে চলে গেলে সীমের বেগুনীর আর্ট লুপ্ত হয়ে গেল। কলকাতা ও মারোয়ারী সংক্রান্ত আমার ব্যক্তিগত দোনামনা সেই তখন থেকে শুরু।

    চপ-বেগুনীর সাথে সিঙাড়ার একটা পার্থক্য ছিল যা অনেক সময় আমাদের জাতিভেদ প্রথার সমতুল্য বলেই মান্য হতে পারত। সিঙাড়া মূলত তৈরী হত মিষ্টির দোকানে। ক্ল্যাসিক্যাল মিষ্টির দোকানে ভিয়েন হত রাতের বেলায় তাই উনুনগুলি সকালে ফাঁকা থাকত এবং তার সদব্যবহার হত সিঙাড়া ও কচুরী তৈরী করে। এই দুই প্রোডাক্টেই ময়দার ব্যবহার ছিল – ময়রা থেকেই ময়দা এসেছে কিনা জানি না তবে ওদের সম্পর্ক বেশ মাখামাখি ছিল। এটা নিশ্চয়ই আপনার জানেন যে আলুর স্বাদের উপর সিঙাড়া (বা চপ্‌) স্বাদ অনেকটা নির্ভরশীল। আমি আলুর প্রকারভেদে এইক্ষেত্রে ঢুকতে চাইছি না, কারণ বাজারে প্রায় পচা ও রদ্দি আলু দিয়েই সিঙাড়া ও চপ্‌ তৈরী হয়। তাই আলুর মূলত প্রকারভেদ করছি ছোট আলু ও বড় আলু দিয়ে। ছোট আলুকে অনেক সময় আমাদের দিকে আবার ‘ক্যাঁট’ আলু বলা হত। আর তা ছাড়া জমি থেকে আলু তোলার সময় দুই অবস্থায় তোলা হত – কাঁচা আলু ও পাকা আলু। কাঁচা আলুর খোসা পাতলা আর তাই কাঁচা আলু সিদ্ধ করে খোসা ছাড়ানোর দরকার হত না। ছোট আলু ও কাঁচা আলু এই দুইয়েরই সিঙাড়া হত খোসা সমেত। আমাকে বলতেই হবে যে খোসার পরিমাণ বেশী না থাকলে, সেই সিঙাড়া অপূর্ব খেতে হত। সিঙাড়ার সাথে অনেক সময় চাটনী দেওয়া হত চাট হিসাবে। আমি আজ পর্যন্ত সেই চাটনীর ট্রেন্ড ঠিক করে উঠতে পারি নি – তার বিস্তৃতি ছিল আমড়া থেকে ট্যমেটো পর্যন্ত। জ্ঞানীজনেরা বলে থাকে ওই চাটনীর পিছনে আগের দিন রাতের ভিয়েনের গেঁজের অবদান ছিল প্রগাঢ়। গেঁজ হল মিষ্টির রস ফুটতে থাকা অবস্থায় সৃষ্ট ফেনা, সেই ফেনা কারীগর ছেঁকে নিয়ে পাশের টিনেতে রাখে সাধারণত। যাইহোক সেই চাটনী অপূর্ব খেতে হত যদিও তার মূল কম্পোজিশন জানার মত কোন ক্যেমিক্যাল অ্যানালিসিস এখনও পর্যন্ত আবিষ্কার হয় নি – এমনকি Raman spectroscopyও ফেল হতে বাধ্য।

    সিঙাড়ার পুর ছাড়া আলু দিয়ে তৈরী হত কচুরীর সহযোগী তরকারী। যাদের জলখাবারের বাজেট একটু বেশী তারা চপ্‌ মুড়ির পরিবর্তে কচুরী তরকারীর দিকে পা দিত। অবশ্য আপনি যদি ওই কচুরির মধ্যে মটরের পুর খোঁজেন তা হলে আপনাকে আপাদমস্তক হতাশ হতে হবে। মটরের পূর না থাকলেও থাকত ডালের পূরের ছিটে। মেমারী স্টেশন বাজারে দুইখানি দোকান সেই কচুরীর যোগান দিতে হিমসিম খেত – এক ছিল ভাইয়ার দোকান ও দুই আগে উল্লিখিত নীরেন ময়রার দোকান। আর তা ছাড়া কচুরীর বেশী চল ছিল ফ্লাইং কাষ্টমারদের মধ্যে – ট্রেন থাকে নেমে বাস ধরার আগে কচুরী দিয়ে জলযোগ। আমি গভীর মনোযোগ দিয়ে এই সমাজতাত্বিধ্ক তথ্য আবিষ্কার করেছি যে, যে পাবলিক নিজের এলাকায় চপ-মুড়ি খায়, সেই আবার অন্য জায়গায় গেলে কচুরী-তরকারী খোঁজে। এর মধ্যে কি কোন মনস্তত্বিক জটিলতা আছে? ভাইয়ার দোকানে ফ্লাইং কাষ্টমার বেশী থাকলেও নীরেন ময়রা মূলত সার্ভ করত বাঁধা খদ্দেরদের। এই বিশ্বায়নের যুগে নীরেন ময়রার ফিলোসফি আমার কাছে আজও বিষ্ময়কর লাগে। রসগোল্লা, জিলাপী, ফুচকা ইত্যাদি সহ সেই গল্প পরের পর্বে ...
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২২ জুন ২০১৫ | ৮৫২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | 24.97.144.151 (*) | ২২ জুন ২০১৫ ০৫:২২67311
  • ইশশ কতরকমের তেলেভাজা যে বাদ পড়ে গেল! আলুর চপ, মোচার চপ, টমেটোর চপ, ডিমের ডেভিল, পটলের চপ (আমাদের কোন্নগরে বাটার পাশে ঝন্টুদার দোকানের পটলের চপ খুব বিখ্যাত ছিল)। আমিষের দিকে চিংড়ীর চপ, চিকেন চপ, মাটন চপ। এরপরে একটু কেতের দোকান হলে কাটলিস বা কাটলেটও থাকবে। একটু বিহারী জনপদ ঘেঁষা হলে ছাতুর কচুরী।

    গত সপ্তাহে ব্যাঙ্গালোরে পেঁপের বেগুনী খেলাম। কাঁচাপেঁপে পাতলা করে কেটে তাতে অর্ধেকটা ডিমের ডেবিল স্টাইলে বেসন আর পেঁয়াজের পুর ভরেছে, তারপর পুরোটা আবার বেসনের গোলায় দুবিয়ে ভেজেছে। এমনি ভালই, তবে অত বেসনে কেমন বেসন বেসন গন্ধ হয়ে গেছে। পুরটায় বেসনের বদলে ছাতু দিলে ভাল হত।
  • সে | 87.59.50.34 (*) | ২২ জুন ২০১৫ ০৭:০১67312
  • চলুক। চমৎকার লাগছে।
  • ` | 192.66.54.1 (*) | ২৩ জুন ২০১৫ ০১:৩৯67322
  • ওয়া কত্তা!সর্বক্ষণ জিভ চুলকে মলুম আর জিভের জলে পেট জয়ঢাক হয়ে উঠল। এচ্চেয়ে বেশী আর কী বা বলতে পারি!
  • সুকি | 168.161.176.18 (*) | ২৩ জুন ২০১৫ ০২:২৪67313
  • 'দ' - আপনার উল্লিখিত তেলেভাজার বিবরণ খুবই চমৎকার।

    আসলে আমি এই লেখাতে আমাদের ওখানে স্টেশন বাজারে যা পাওয়া যেত সেই সব জিনিস পত্রের কথাই লিখেছি। তা বাদ দিয়েও তেলেভাজার যা জগৎ, সে এক জমজামাটি ব্যাপার। সব ধরণের তেলেভাজাই যে খেয়েছি, সে দাবিও করতে পারি না। তবে বেশীর ভাগই টেষ্ট করার সৌভাগ্য হয়েছে।
  • dc | 132.164.157.193 (*) | ২৩ জুন ২০১৫ ০২:২৫67323
  • সত্যি, ছোটবেলায় যে কতো রকম চপ খেয়েছি! ভেজিটেবিল চপ, মোচার চপ, পটোলের চপ, চিংড়ির চপ, মটন চপ। একটা কাগজের ঠোঙায় দুটো চপ দিয়ে, বিটনুন ছড়িয়ে, ওপরে কিছুটা শশা পেঁয়াজ দিয়ে, তার ওপর কাসুন্দি দিয়ে দিত। সেই ঠোঙা হাতে করে পাঁচিলের ওপর বসে সারা সন্ধে আড্ডা। আহা!
  • Byaang | 233.227.182.60 (*) | ২৩ জুন ২০১৫ ০২:৩২67324
  • খুব ভালো লাগল লেখাটা। কিন্তু কলেজ স্কোয়ারের কালিকার কাঁচামিঠে আমের চপের উল্লেখ কেউ করল না দেখে একটু দুঃখ পেলাম।
  • dd | 116.51.128.147 (*) | ২৩ জুন ২০১৫ ০২:৪৮67314
  • সু বাবুর এই রম্য রচনা সিরীজটা খাসা হচ্ছে। যেমন মুখরোচক তেমনি পুষ্টিকর।
  • ranjan roy | 132.180.170.196 (*) | ২৩ জুন ২০১৫ ০৩:০৭67315
  • ডিডি কে ক।পুষ্টিকর বটেক।
  • S | 139.115.2.75 (*) | ২৩ জুন ২০১৫ ০৩:০৯67316
  • সিঙ্গাড়া খেলে পেট খারাপ হবেই। সেই ভয় তেলেভাজাতে নেই। কেন জানি না।

    আর কচুরি তো সকালে খাওয়ার জিনিস। বাঙ্গালী এবং অভিজাত ব্রেকফাস্ট। তেলেভাজা বিকেলে হেঁটে হেঁটে হওয়া খেতে খেতে মুড়ি দিয়ে খাওয়ার জিনিস। যাহ খিদে পেয়ে গেলো।
  • kumu | 132.161.31.93 (*) | ২৩ জুন ২০১৫ ০৪:৩৫67317
  • "ফাইন ডাইনিং নামক ভাঁওতায় আজকাল দেশ ছেয়ে গেছে। সেই সময় এইসব লক্ষ্মীদা-দের এগরোল ফ্রেস এয়ার নিয়ে আসে বায়ুমণ্ডলে।"চমৎকার,খুব সুখপাঠ্য,অনায়াস ।
  • amit | 190.148.69.210 (*) | ২৩ জুন ২০১৫ ০৪:৫০67318
  • জিভে জল আনা লেখা ।
  • de | 69.185.236.54 (*) | ২৩ জুন ২০১৫ ০৮:০৪67319
  • লাঞ্চ করতে করতে পড়ছি - তাও খিদে পাচ্চে - ছাতার বম্বেতে চপ্পাওয়া যায় না - খালি বড়াপ্পাও!
  • amit | 190.148.69.210 (*) | ২৩ জুন ২০১৫ ০৯:১৮67325
  • আহা , ব্যাং এর লেখা পড়ে ছোটবেলায় ফিরে গেলাম আবার। কলেজ স্কোয়ারের কালিকার সামনে বেগুনির যা লাইন দেখেছি, সেটা অমিতাভ -এর সিনেমাকে দশ গোল দেবে গুনে গুনে। আপনি কি ওই চত্বর এ থাকতেন ? আমার নিজের পুরো ছোটবেলাও ওখানের আশেপাশেই কেটেছে।
  • AS | 125.187.59.93 (*) | ২৩ জুন ২০১৫ ০৯:৩০67320
  • চমৎকার চ্লুক
  • শ্রী সদা | 113.19.212.21 (*) | ২৩ জুন ২০১৫ ১০:৫২67321
  • আহা। মুচমুচে লেখা।
  • Byaang | 132.172.198.112 (*) | ২৪ জুন ২০১৫ ০২:১৭67326
  • না আমি ওখানে থাকতাম না ছোটোবেলায়।

    তবে কালিকায় লাইন আজও পড়ে।
  • | 183.17.193.253 (*) | ২৪ জুন ২০১৫ ০২:৩০67327
  • লেখাটা পড়ে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়লাম।কালিকার চপের সে সুদিন আর নেই।কদিন আগেই খেলাম,জিবের বদলে চোখে জল এসে গেলোঃ(
  • Lama | 213.99.211.133 (*) | ২৪ জুন ২০১৫ ০৮:২৭67328
  • হাম পূজোর সময় তোমকো অনেক মিষ্টান্ন আর পুলিপিঠে খাওয়ায়্গা
  • | 77.98.72.126 (*) | ২৪ জুন ২০১৫ ০৮:৫৭67329
  • ম, টাও যেমন। দেখো বাপু জল আসা নিয়ে কথা। তা জিভে হোক বা চোখে!! বুইলে কিনা!!
  • sumeru | 127.194.83.221 (*) | ০৬ জুলাই ২০১৫ ০৫:১৬67330
  • প্রফুল্ল রায়ের হোঁচটে পড়াই হল না। পিসি রায় বললেই হইত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে মতামত দিন