এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • বিনয় মজুমদারের 'একটি উজ্জ্বল মাছ'-পাঠ প্রতিক্রিয়া

    Koushik Ghosh লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২১ মার্চ ২০১৮ | ১৫৭১৯ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • 'সকলেই কবি নন, কেউ কেউ কবি।' কবিরা সংবেদনশীল হন। কবিরা দ্রষ্টা হন।যে দৃশ্য অন্যরা সাধারণভাবে দেখেন, সেই 'কেউ কেউ কবি', এ-সব দৃশ্যের অন্তরালে দেখতে পান অন্যতর সত্য। সেই সত্যের ধারাভাষ্য লেখেন তাঁরা।
    বিনয় মজুমদার এই ধরনের কবি ছিলেন। চেনা ও আপাত দৃশ্যের আড়ালে ঢাকা সত্য বের করে আনতেন স্বকীয় দক্ষতায়। তাঁর বহুচর্চিত কাব্যগ্রন্থের নাম ' ফিরে এসো চাকা'। 'ফিরে এসো চাকা'র প্রথম কবিতাটি নিয়েই এই সামান্য প্রয়াস, সেটি পড়লে বিস্ময়ের উদ্রেক হয়:

    একটি উজ্জ্বল মাছ একবার উড়ে
    দৃশ্যত সুনীল কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে স্বচ্ছ জলে
    পুনরায় ডুবে গেলো-এই স্মিত দৃশ্য দেখে নিয়ে
    বেদনার গাঢ় রসে আপক্ক রক্তিম হ'লো ফল।

    বিপন্ন মরাল ওড়ে, অবিরাম পলায়ন করে,
    যেহেতু সকলে জানে তার শাদা পালকের নিচে
    রয়েছে উদগ্র উষ্ণ মাংস আর মেদ;
    স্বল্পায়ু বিশ্রাম নেয় পরিশ্রান্ত পাহাড়ে পাহাড়ে;
    সমস্ত জলীয় গান বাষ্পীভূত হ'য়ে যায়, তবু
    এমন সময়ে, হে সমুদ্রমৎস্য, তুমি... তুমি...
    কিংবা, দ্যাখো, ইতস্তত অসুস্থ বৃক্ষেরা
    পৃথিবীর পল্লবিত ব্যাপ্ত বনস্থলী
    দীর্ঘ-দীর্ঘ ক্লান্তশ্বাসে আলোড়িত করে;
    তবু সব বৃক্ষ আর পুষ্পকুঞ্জ যে যার ভূমিতে দূরে দূরে
    চিরকাল থেকে ভাবে মিলনের শ্বাসরোধী কথা।

    একটি দৃশ্য: একটি উজ্জ্বল মাছ, উড়ে আবার ডুবে গেল। মাছ কি উড়তে পারে?  মাছটি যেন, লক্ষ্য করুন, লাফালো না,  উড়লো, এবং, আবার ডুবে গেল।

    প্রসঙ্গত, উড়ুক্কু মাছ, যা সামুদ্রিক, আক্ষরিক অর্থেই উড়তে পারে।
    মাছটি উড়লো, সম্ভবত জলের তল থেকেই উড়লো, এবং জলেই আবার ডুবে গেল।কেমন সে জল? 'দৃশ্যত সুনীল, কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে স্বচ্ছ জলে'। আসলে আপাতভাবে যে সমুদ্র নীল, তার জল, প্রকৃতপক্ষে, স্বচ্ছ। আলোর বর্ণালীর নীল রঙের তরঙ্গ দৈর্ঘ্য কম হওয়ায় অন্যান্য রঙের তুলনায় জলে কম শোষিত হয়। গভীর ও শান্ত সমুদ্র তুলনামূলক ভাবে বেশি নীল। এই নীলাভ রং আসলে ইলিউশন, আসলে ভ্রান্তি, প্রকৃত স্বচ্ছতার খোঁজ যেন বিনয়ের এই পংক্তিতে। এই বিনয় যেন প্রিজম দিয়ে আলোর বর্ণালী দেখলেন। যেন অন্য কোনো স্বচ্ছ দৃশ্য লুকিয়ে আছে, তাকে বের করে আনাই বিনয়ের উদ্দেশ্য। প্রসঙ্গত, বিনয়ের 'ফিরে এসো চাকার'  অন্য একটি কবিতার একই ধরনের পংক্তি মনে পড়ছে:
    'অভিজ্ঞতা থেকে আমি আকাশের বর্ণহীনতার মতো জেনেছি তোমাকে-
    বাতাসের নীলাভতা হেতু আকাশকে নীল মনে হয়।'

    পরের পংক্তিটি পড়লে মনে হয় কিছু রহস্যের আভাস রয়েছে এ-কবিতায়:

    এই স্মিত দৃশ্য দেখে নিয়ে
    বেদনার গাঢ় রসে আপক্ক রক্তিম হ'লো ফল।

    কোন স্মিত দৃশ্য? মাছটির জলে ডুবে যাওয়ার দৃশ্য। কিন্তু, স্মিত শব্দের অর্থ তো ঈষৎ হাস্যময়। একটি মাছের নিছক জলে ডুবে যাওয়ার দৃশ্যে বেদনার গাঢ় রসে ডুবে যাওয়ার মতো কি এমন আছে? উত্তর মিলছে না।

    লক্ষ্য করুন, বিনয় প্রথমে 'দৃশ্যত সুনীল কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে স্বচ্ছ জলে' বলে একটা রঙের ইলিউশন ভাঙছেন, এবং পরক্ষণেই নতুন রং আনছেন। এখানে বেদনার রং যেন রক্তিম, লাল।

    এখনো বেদনার অর্থ পড়া যাচ্ছে না। অগত্যা একটু এগিয়ে পড়ি:

    বিপন্ন মরাল ওড়ে, অবিরাম পলায়ন করে,
    যেহেতু সকলে জানে তার শাদা পালকের নিচে
    রয়েছে উদগ্র উষ্ণ মাংস আর মেদ;
    স্বল্পায়ু বিশ্রাম নেয় পরিশ্রান্ত পাহাড়ে পাহাড়ে;

    আরেকটি দৃশ্য। একটি মরাল উড়ে চলেছে, অবিরাম পলায়নরত। লক্ষ্যনীয় এই যে প্রথম দৃশ্যে মাছটি উড়ে যায়, পরের দৃশ্যে মরালটিও উড়ে চলে। দৃশ্য থেকে অন্য দৃশ্যে মন্তাজের ঢঙে তৈরি হচ্ছে পরপর উড়ে চলার দুটি শট। একই জলের অনুষঙ্গে মাছ ও মরাল সংশ্লিষ্ট হয়। আবার, মরাল ও মাছের এই অবস্থান পরস্পরবিরোধী, কারণ মাছটি খাদ্য(prey) এবং মরাল অবশ্যই তার খাদক(predator)। একটি সংঘর্ষের মন্তাজ রচিত হল যেন।

    প্রশ্ন ওঠে, মরালটি কি মাছটিকে আক্রমণ করেছিল? সম্ভাবনা থাকছে কি? এই  দৃশ্য থেকেই কি বিনয় বেদনার্ত? এই বেদনা থেকেই কি বিনয় যেন রক্তিম, রক্তাক্ত?

    কিন্তু, মরাল-টি, কবির ভাষায় 'বিপন্ন' এবং 'অবিরাম পলায়ন করে'। কারণ, বিনয় লিখছেন, 'যেহেতু সকলে জানে তার শাদা পালকের নিচে
    রয়েছে উদগ্র উষ্ণ মাংস আর মেদ;'

    এখানেও সেই আপাত-দৃশ্য ও অন্তর্লীন দৃশ্য। আবার ফিরছে রং। আপাত দৃশ্যে রয়েছে 'শাদা' পালক। তার নীচে রয়েছে আসল নিহিত স্বচ্ছতর সত্য: 'উদগ্র উষ্ণ মাংস আর মেদ।' মনে পড়তে পারে চর্যার সেই বিখ্যাত পংক্তি: 'অপনা মাংসে হরিণী বৈরী'। আরেক কোনো শিকারির হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্যই পালিয়ে বেড়াচ্ছে বিপন্ন মরাল। স্বল্পায়ু এই মরাল, কারণ তার বাঁচার স্থিরতা নেই। এবং, সে পালিয়ে পালিয়ে ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত।

    এবারে যদি ফিরে আবার পড়া যায় আগের পংক্তিটিকে-

    এই স্মিত দৃশ্য দেখে নিয়ে
    বেদনার গাঢ় রসে আপক্ক রক্তিম হ'লো ফল।

    মাছটির বিপন্নতা ও মরালটির বিপন্নতা আলগোছে দেখলে একই ধরনের স্মিত ও লঘু দৃশ্য। কিন্তু, এর মধ্যেই রয়েছে বেদনার মূল সুরটি। প্রকৃতির মধ্যেই যেন রয়েছে এই নিরন্তর অনিশ্চয়তা, সম্ভাব্য মৃত্যু, আর অবিরাম পলায়ন।

    পরের অংশ পড়া যাক:

    সমস্ত জলীয় গান বাষ্পীভূত হ'য়ে যায়, তবু
    এমন সময়ে, হে সমুদ্রমৎস্য, তুমি... তুমি...

    প্রথম দৃশ্যে জলের উল্লেখ, আর এখানে 'জলীয় গান', বাষ্পীভূত হয়ে যায়, আসলে স্মিত দৃশ্যের অনুষঙ্গেই আসে যেন বা কোনো সংগীত, সেই গান, যেন বাষ্পীভূত হয়ে যায়, আর এমন সময়ে প্রথম দৃশ্যটিকে আবার ফিরিয়ে আনছেন বিনয়, সরাসরি উজ্জ্বল মাছটিকে সম্বোধন করছেন, 'এ সময়ে হে সমুদ্রমৎস্য, তুমি তুমি...'

    প্রথম অংশের দৃশ্যত 'সুনীল', সমুদ্রের ইঙ্গিত দিচ্ছিল। আর এখানে স্পষ্টতই তার সাক্ষ্য মিলল। এখানে বিনয় বাক্য অসমাপ্ত রাখছেন যেন: 'হে সমুদ্রমৎস্য, তুমি তুমি...'

    আসলে বেদনার্ত বিনয় যেন বলতে চাইছিলেন, 'হে সমুদ্রমৎস্য, তুমি তুমি ডুবে গেলে...'। মাছটিও বিপন্ন এ-কথা আরো স্পষ্ট হয় যেন।

    পরের অংশে সম্পূর্ণ অন্য দৃশ্যের দেখা মিলছে:

    কিংবা, দ্যাখো, ইতস্তত অসুস্থ বৃক্ষেরা
    পৃথিবীর পল্লবিত ব্যাপ্ত বনস্থলী
    দীর্ঘ-দীর্ঘ ক্লান্তশ্বাসে আলোড়িত করে;

    আগের দুই দৃশ্যে যে গতিময়তার সংঘাতপূর্ণ মন্তাজ ছিলো, তা এখানে নেই। এবার বিনয়ের চোখ বরং এই পৃথিবীর গতিহীন ও স্থির ব্যাপ্ত বনস্থলীর দিকে। দেখা যাচ্ছে যে বিপন্নতা সচল প্রাণীর মধ্যে, সেই বিপন্নতা রয়েছে বৃক্ষের রাজ্যেও। কিন্তু তারা আরো অসহায়।তারা তো পালাতে পারে না, তাই তাদের ক্লান্তশ্বাসে আলোড়িত হয় বনস্থলী।

    শেষ দুটি পংক্তিতে এসে দেখা যায় একটি লক্ষ্যনীয় রূপান্তর, এবং এখানে এসে বিনয় একটি ক্লাইম্যাক্স রচনা করেন যেন শেষ কথায়:

    তবু সব বৃক্ষ আর পুষ্পকুঞ্জ যে যার ভূমিতে দূরে দূরে
    চিরকাল থেকে ভাবে মিলনের শ্বাসরোধী কথা।

    এই অসহায় বিপন্ন বৃক্ষ ও পুষ্পকুঞ্জ, যারা পালাতেও অপারগ, তারা তবু মিলিত হতে চায়, নিজের প্রজন্ম তারা তৈরি করে, এটি আসলে প্রকৃতির প্রতিটি প্রজাতির নিহিত ইন্সটিঙ্কট। এবং এখানেই সমস্ত বিপন্নতা আর আসন্ন মৃত্যুও হেরে যায়, এখানেই কবিতাটির জিত বলে মনে হয়। 'মিলনের শ্বাসরোধী কথা', এই কথাটি বিনয়ের অসামান্য প্রয়োগ, প্রজননের ইচ্ছার মধ্যেই যেন লুকিয়ে আছে এক ধরনের ইচ্ছামৃত্যুও। পুষ্পকুঞ্জও এখানে মনে হয় নিছক উল্লেখ নয়, গাছেদের পরাগ মিলনের ইঙ্গিত দেয় এই পুষ্পকুঞ্জের উল্লেখ।

    বিনয়ের এই কবিতায় আসলে সমুদ্র, পাহাড়, বন, মাছ ও মরাল যেন এক সামগ্রিক ইকোসিস্টেম। সবাই যেন এক সুরে বাঁধা। এক অদ্ভুত সংবেদনশীলতা ছিল তাঁর, তিনি এই 'ফিরে এসো চাকা'র অন্য কোনো কবিতায় লিখছেন: 'কেন এত ব্যথা পাও পৃথিবীর বিয়োগে বিয়োগে?'

    এই কবিতাটির প্রথম দৃশ্যে মাছের উড়ে ডুবে যাওয়া যেন এক সাময়িক, transient দৃশ্য, তারপরে, মরালটির উড়ে যাওয়া নিরন্তর কালানুগ, এবং শেষে চিরকাল থেকে বৃক্ষদের স্থানু অবস্থান যেন কাল-নিরপেক্ষ।

    বিনয়ের এই আপাত-দৃশ্য ভেঙে নতুনতর কোনো সত্যের খোঁজ, এর উদাহরণ মিলবে 'ফিরে এসো চাকা'র অন্যান্য কবিতাতেও।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২১ মার্চ ২০১৮ | ১৫৭১৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ফরিদা | 132.161.113.146 (*) | ২১ মার্চ ২০১৮ ০৪:০৮64023
  • বাহ।

    আরও হোক।
  • সুতপা | 127.201.125.162 (*) | ২১ মার্চ ২০১৮ ০৪:৪০64025
  • বেশ মনোগ্রাহী বিশ্লেষন। কবিতা আমি বুঝি কম, কিন্তু এমন সাবলীল বর্ননা কবিতাটির প্রতি উতসাহ জাগিয়ে তুললো। পরবর্তী প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় রইলাম।
  • সুতপা | 127.201.125.162 (*) | ২১ মার্চ ২০১৮ ০৪:৪০64024
  • বেশ মনোগ্রাহী বিশ্লেষন। কবিতা আমি বুঝি কম, কিন্তু এমন সাবলীল বর্ননা কবিতাটির প্রতি উতসাহ জাগিয়ে তুললো। পরবর্তী প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় রইলাম।
  • Koushik Ghosh | 55.64.220.205 (*) | ২১ মার্চ ২০১৮ ০৪:৪৬64026
  • ধন্যবাদ, ফরিদা ও সুতপা।
  • এদের কে দেয়? | 127.194.201.23 (*) | ২১ মার্চ ২০১৮ ০৪:৫০64027
  • জঘন্য।
    "মাছটি খাদ্য(prey) এবং মরাল অবশ্যই তার খাদক(predator)" জঘন্যতর।
    "কিন্তু তারা আরো অসহায়।তারা তো পালাতে পারে না, তাই তাদের ক্লান্তশ্বাসে আলোড়িত হয় বনস্থলী" জঘন্যতম।

    বাংলা কবিতাকে ক্ষ্যামা দিন কৌশিক।
  • dc | 181.49.209.90 (*) | ২১ মার্চ ২০১৮ ০৫:২০64028
  • যেমন অসাধারন কবিতা তেমনি অসাধারন তার পাঠপ্রতিক্রিয়া। আরো লিখুন।
  • Atoz | 161.141.85.8 (*) | ২১ মার্চ ২০১৮ ০৬:০৪64029
  • ডিসি,
    এঁদেরকে সসম্মানে ভোগোনদের সামনে নিয়ে গিয়ে পরম শ্রদ্ধাভরে চেয়ারে বসিয়ে বেঁধে রাখতে হয়। ঃ-)
  • rabaahuta | 132.172.90.221 (*) | ২১ মার্চ ২০১৮ ০৬:৫৭64030
  • বিনয় মজুমদার চিরদিনই মুগ্ধ করেন।

    ধন্যবাদ কৌশিক, এরকম আলোচনা পড়তে চাই আরো।
  • একেদে | 127.194.201.23 (*) | ২১ মার্চ ২০১৮ ০৭:০৮64031
  • কবিতা বিশ্লেষণ জিনিসটা আরো কতদূর বিভীষিকাময় হতে পারে কয়েকটি উদাহরণ দেখে নিন -

    (http://www.jaijaidinbd.com/)
    একটি উজ্জ্বল মাছ একবার উড়ে
    দৃশ্যত সুশীল কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে স্বচ্ছ জলে
    পুনরায় ডুবে গেলো_ এই স্মিত দৃশ্য দেখে নিয়ে
    বেদনায় গাঢ় রসে আপক্ক রক্তিম হলো ফল।
    বিষয়টিকে মাসুদুল হক আরো বিস্তৃত প্লাটফর্মে ব্যাখ্যা করেছেন- ব্যাপারটি এভাবে উপলব্ধি করা যায়। পুকুরের তলদেশে একটি নারী-মৎস্য দুঃখ নিয়ে সাঁতরে বেড়াচ্ছে। হঠাৎ একটি পুরুষ মৎস্য কোনো এক আনন্দের স্পর্শ দিল। সে সুখেই নারী মৎস্যটি জল মাধ্যম থেকে বায়ু মাধ্যমে উড়াল দেয়। কিন্তু সে আনন্দ-উড়াল ক্ষণিকের। কেননা সে অনিবার্যভাবেই আবারও দুঃখের স্রোতেই মিলে যাবে। কিন্তু মাঝখানে প্রকৃতির ঐক্যের কারণে, আপেক্ষিক তত্ত্বের পরিপ্রেক্ষিতে এই উড়াল দৃশ্য একটি ফল দেখে নিয়ে দার্শনিক বেদনাতেই আপক্ক রক্তিম হয়ে ওঠে। নিউটনের সেই আপেলের ভূপৃষ্ঠে পতিত হবার যে ঘটনা তা এক দুঃখবাদের কেন্দ্রগামী বিন্দু। যাকে তিনি অভিকর্ষীয় ত্বরণ দিয়ে ব্যাখ্যা করেন এই বস্তুবিশ্বের পরিপ্রেক্ষিতে। কিন্তু মূল বিষয় হচ্ছে দুঃখবাদের এক অনন্ত সমীরকরণ। সেই মীমাংসাই ঘটান বিনয় মজুমদার তাঁর 'একটি উজ্জ্বল মাছ' কবিতাতেই গণিতের সমীকরণ দিয়ে।

    (
    ষট্চক্রের আলোকে ফিরে এসো চাকা তথা চক্র - জুবিন ঘোষ

    'ফিরে এসো চাকা' তো সভ্যতার প্রধান চক্র, যার মাধ্যমে সভ্যতা গড়িয়ে ছিল, আর চক্র মানেই ষট্?চক্র। সেখানে দেখুন রয়েছে- ১) মূলাধারচক্র, ২) সাধিষ্ঠানচক্র, ৩) মণিপুরচক্র, ৪) আনাহতচক্র, ৫) বিশুদ্ধি চক্র, ৬) আজ্ঞাচক্র। তবে এই চক্রের পুনঃসাধনার কথাই বলেছেন কবি বিনয় মজুমদার। এত চরম আধ্যাত্মিক গভীরতার দিকে এগুচ্ছে বিনয়ের ফিরে এসো চাকা, যাকে বলতে পারি ফিরে এসো চক্র- সভ্যতার সাবলীল গতিসমূহ, মানব দেহের সাবলীল সাধনাসমূহ। মূলাধারচক্র-সাধনায় মানবের বাসনাসিদ্ধ হয়- সে মুক্তিলাভ করে। বিনয় 'আমার আণ্ডর্য ফুল'-এ বলছেন- "কাকে বলে নির্বিকার পাখি। / অথবা ফড়িং তার স্বচ্ছ ডানা মেলে উড়ে যায়। / উড়ে যায়, শ্বাস ফেলে যুবকের প্রাণের উপরে। /... / আমি মুগ্ধ; উড়ে গেছ; ফিরে এসো ফিরে এসো চাকা,", এই মুগ্ধ উড়ে যাবার মধ্যে মুক্তির স্বাদ, মুগ্ধের অর্থ বাসনা পরিতৃপ্তির ফল। এই মুগ্ধ উড়ান আমরা বার বার পাই ফিরে এসো চাকার প্রথম কবিতাতেই, 'একটি উজ্জ্বল মাছ' যা ১৯৬০, ৮ই মার্চের লেখায় আশ্রিত- "একটি উজ্জ্বল মাছ একবার উড়ে / দৃশ্যত সুনীল কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে স্বচ্ছ জলে পুনরায় ডুবে গেল- এই স্মিত দৃশ্য দেখে নিয়ে / বেদনার গাঢ় রসে অপক্ব রক্তিম হল ফল/... বিপন্ন মরাল ওড়ে, অবিরাম পলায়ন করে..."- আবার 'কাগজ কলম নিয়ে' (১৪.১০.৬০) কবিতায় বিনয় লিখছেন, "তবু কী আণ্ডর্য, দ্যাখো উপবিষ্ট মশা উড়ে গেলে / তার সেই উড়ে যাওয়া ঈষৎ সংগীতময় হয়।" - এই ওড়াটাই হল মুক্তির আর্কিটাইপ, উড়ে যেতে চাইছে সব ছিন্ন করে, মুক্তি পেতে চাইছে বাসনা তৃপ্ত করে, যা মূলাধারচক্র-সাধনার মূল রস যা আমার ফিরে আসছে 'মুকুরে প্রতিফলিত' (২৬ আগস্ট, ১৯৬০) কবিতায়, "মানুষ নিকটে গেলে প্রকৃত সারস উড়ে যায়।" যাক এখানে মুক্তিটাই দেখানোর কথা ছিল, সেটাই দেখালাম, যা আরও একবার উপস্থিত ছিল 'ভালোবাসা দিতে পারি' (১৮.০৫.১৯৬২) কবিতায়, "পারাবত, বৃক্ষচূড়া থেকে/ পতন হলেও তুমি আঘাত পাও না, উরে যাবে। / প্রাচীন চিত্রের মতো চিরস্থায়ী হাসি নিয়ে তুমি / চ'লে যাবে;"। এভাবেই পরস্পর একটা ঐচ্ছিক মুক্তির পথে বার বার তাঁর কলম অজান্তে লিখে চলেছে 'ফিরে এসো চাকা'-তে সেই ষট্চক্রের মুলাধারচক্রের সার কথা।

    অন্তত আমার মনে হয়েছে ষট্চক্রের প্রত্যেকটা চক্রের কথাই লিখে গেছেন কবি বিনয় মজুমদার, আমার কথা প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে পুনরায় আমি ফিরে যাচ্ছি 'আমার আণ্ডর্য ফুল' কবিতায়, সেখানে বিনয় লিখছেন, "আমি রোগে মুগ্ধ হয়ে দৃশ্য দেখি, দেখি জানালায় / আকাশের লালা ঝরে বাতাসের আশ্রয়ে আশ্রয়ে" এবং একই সঙ্গে দেখব 'আমিই তো চিকিৎসক' (৬. ৩. ৬২)-এর পঙ্ক্তিগুলি, "আমিই তো চিকিৎসক, ভ্রান্তিপূর্ণ চিকিৎসায় তার / মৃত্যু হলে কী প্রকার ব্যাহত আড়ষ্ট হয়ে আছি। / আবর্তনকালে সেই শবের সহিত দেখা হয়; / তখন হৃদয়ে এক চিরন্তন রৌদ্র জ্ব'লে ওঠে।" কী অসাধারণ রোগমুক্তির আর্তি। মৃত্যুচেতনার মধ্যে দিয়ে রোগমুক্তির সাধনা, শব যেন তান্ত্রিক ভাবাপন্নতা, আর সেখানেই লুকিয়ে রয়েছে স্বাধিষ্ঠান চক্র যার সাধনায় শরীর ব্যাধিমুক্ত ও রূপবান হয়। এবার একটু পূর্ণাঙ্গ ও আরও গভীরতায় যাই এই স্বাধিষ্ঠান চক্রের। সেখানে বলছে ষড়দল হচ্ছে একটা পদ্ম। যা মূলাধারচক্রের যা মানবের মাতৃগর্ভাবাসকালের অষ্টম মাসে মূলাধার চক্র গঠিত হয়, ৩২টি জ্ঞানগম্য সূক্ষ্মগ্রন্থিযুক্ত নাড়ী মলদ্বার থেকে মেরুদণ্ডের সমান্তরাল অবস্থান করে, যেখানে নাভিপদ্মকে কেন্দ্র করে ঊর্দ্ব ও অধঃ দুইভাবে বিভক্ত, এই মূলাধারচক্রের ঊধর্ে্ব বিদ্যুদ্বর্ণ ষড়দলপদ্ম উপস্থিত। সেখানে একটি বরুণমণ্ডল আছে। বরুণ মানে জলাধিপতি বারি বর্ষণকারী দেবতা, বৃষ্টির প্রতীক যা আকাশ থেকে লালার মতো ঝরে। এবার ঐ বরুণমণ্ডলের মধ্যে একটি অর্দ্ধচন্দ্রাকৃতি যন্ত্রে 'বং' বীজের উপর শুভ্র মকরবাহনে বরুণদেবতার ক্রোড়ে লক্ষ্মীরূপা নীলবর্ণা রাকিনী-শক্তিসহ নারায়ণ বিদ্যমান। এবার একটু দেখাই যাক বিনয় মজুমদার 'আমার আণ্ডর্য ফুল' কবিতায় কী বলেছেন, "আমি রোগে মুগ্ধ হয়ে দৃশ্য দেখি, দেখি জানালায় / আকাশের লালা ঝরে বাতাসের আশ্রয়ে আশ্রয়ে"- আকাশের লালা যা বারি বর্ষণের প্রতীকী। অর্থাৎ বরুনের কৃপা লাভ। সেই বারি বর্ষণে মুগ্ধতার মাধ্যমে কবির রোগমুক্তি স্বাধিষ্ঠানচক্রের সমর্থন এবং আমরা জানি বরুণ দেবতার প্রধান অস্ত্র বাণ হল বারির বা বৃষ্টির তীক্ষ্ন ফলা, তাতেই তিনি বিদীর্ণ করেন, সেখানে বিনয় 'আমার আণ্ডর্য ফুল'-এ পঞ্চম পঙ্?ক্তিতে লিখছেন, "জেনেছি বিদীর্ণ হওয়া কাকে বলে, কাকে বলে নীল / আকাশের হৃদয়ের; কাকে বলে নির্বিকার পাখি।" একটু আগেই দেখলাম লক্ষ্মীরূপা নীলবর্ণা রাকিনী-শক্তিসহ নারায়ণ ষড়দলপদ্ম উপস্থিত। বিনয়ও লিখছেন, যে তিনি জেনেছেন, "কাকে বলে নীল- / আকাশের হৃদয়ের;"- এই নীল সেই লক্ষ্মীরূপা নীলবর্ণা নারায়ণ যা 'বরুণদেবতার ক্রোড়ে' অর্থাৎ বিনয়ের কবিতায় "আকাশের হৃদয়ে" ("কাকে বলে নীল- / আকাশের হৃদয়ের;") অবস্থান করে। এবং সর্বোপরি, 'আমার আণ্ডর্য ফুল' কী তবে সেই অ-অগি্নস্পর্শা নাভীপদ্ম, ষড়দলপদ্ম। এরপর আশা করি 'ফিরে এসো চাকা'-তে স্বাধিষ্ঠান চক্র তথা ষট্?চক্রের উপস্থিতি নিয়ে সংশয় থাকা উচিত না।

    এরপর আসা যাক মণিপুরচক্রে। মণিপুরচক্রে বলছে যে এই সাধনার ফলে সাধক অন্য শরীরেও প্রবেশ করতে পারেন, যেভাবে "আমার আণ্ডর্য ফুল, যেন চকোলেট"-এর মতো এক বস্তুস্থিত অবস্থান থেকে অন্য বস্তুস্থিত অবস্থানে চলে যাচ্ছেন। একটু প্রক্ষীপ্ত উদাহরণ মনে হতে পারে পাঠকের, যেন জোর করে ঢোকানো, কিন্তু কবিতায় এক দেহ থেকে আরেক দেহ মিশে যাওয়ার কোনও সুস্পষ্ট উদাহরণ হয় না, মিশে যাওয়াটাই অনুভব করতে হয়, একটা চিত্র বারবার অন্য চিত্রের সঙ্গে অন্য আর্কেটাইপের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। "একটি উজ্জ্বল মাছ একবার উড়ে / দৃশ্যত সুনীল কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে স্বচ্ছ জলে পুনরায় ডুবে গেল"- এই যে দৃশ্যত সুনীলের সঙ্গে স্বচ্ছ জলে মিশে যাওয়াটাই তো মণিপুরচক্র। এইরকম প্রায় প্রত্যেক কবিতাতেই এই বৌদ্ধিক সাধকের মিশে যাওয়ার প্রবণতা ধরা যায়। 'একটি উজ্জ্বল মাছ' কবিতায় সেই মিশে যাবার আকাঙ্ক্ষা শেষ দুই পঙ্ক্তিতে, "তবু সব বৃক্ষ আর পুষ্পকুঞ্জ যে যার ভূমিতে দূরে দূরে/ চিরকাল থেকে ভাবে মিলনের শ্বাসরোধী কথা"- এ যেন সেই প্রজাপতি বা মক্ষিটি কিংবা অলির অন্য বসে থাকা, যারা পায়ে পায়ে এনে দেবে দূরবর্তী পরাগ মিলন। গায়ত্রী চক্রবর্তীর মতো মিথ সেখানে আসবে দূরবর্তী প্রেমের মিলন সুখের ভাবনায়। যেমন 'আরো কিছু দৃশ্যাবলী' কবিতার শেষ কয়েক পঙ্ক্তিতে দেখি, "বাতাসে বিধৌত দেহমন/ কার জন্য সুরক্ষিত, হায় কাল, জলের মতন/ পাত্রের আকার পাওয়া এ বয়সে সম্ভব হবে কি?" - এসবই তো মণিপুরচক্রের এক দেহ থেকে অন্য দেহ/ আকার পাওয়ার বাসনা, নিরাকার থেকে সাকার হবার বাসনা। কিছু না থেকে থিতু, স্থির ও ধারক-আধার হবার বাসনা। বিশুদ্ধিচক্রে পরমযোগী হবার সাধনা বারবার তাঁর কাব্যে এসেছে। "কী উৎফুল্ল আশা নিয়ে সকালে জেগেছি সবিনয়ে।" কিংবা "উপবিষ্ট মশা উড়ে গেলে/ তার সেই উড়ে যাওয়া ঈষৎ সংগীতময় হয়।" এমন তো একজন প্রকৃত ঋষিই পারেন, পরম সাধকেই তো তিনি উত্তীর্ণ।

    (http://www.banglatribune.com/) - রহমান মতি

    বিনয় মজুমদার কবিতাটির মধ্যে আকস্মিক একটা সৌন্দর্য রাখেন। তিনি ঐ সৌন্দর্যের মধ্যেই বেদনা দেখতে পান:
    একটি উজ্জ্বল মাছ একবার উড়ে
    দৃশ্যত সুনীল কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে স্বচ্ছ জলে
    পুনরায় ডুবে গেল।
    এ পর্যন্ত কবিতাটি একরকম। পরের দুটি পঙক্তি উপরের পঙক্তিগুলোকে মুহূর্তে ভিন্ন করে তোলে:
    এই স্মিত দৃশ্য দেখে নিয়ে
    বেদনার গাঢ় রসে আপক্ব রক্তিম হল ফল।
    এ দৃশ্যটির নাম বিনয় মজুমদার নিজেই দেন স্মিত দৃশ্য। খুব উজ্জ্বল বা প্রাণবন্ত কোনো কিছুই স্মিত। প্রাকৃতিকভাবেই দেখা একটি দৃশ্য হয়ে যায় প্রতীকী। এ দৃশ্যটির সঙ্গে প্রথম স্তবকের শেষ পঙক্তিতে ‘বেদনা’র রসকে গাঢ় মনে করে তার সঙ্গে সম্পূর্ণ পেকে খাওয় ফলের সংযোগ। এটাও কী ভাবা যায়। ফল তো নিজেই এক সময় পেকে যায়। অথচ ঘটা করে কবি তাকে কত গভীর অর্থে বলছেন অন্য কথা। প্রাকৃতিকভাবেও ফল পাকলে ‘রক্তিম’ লাগে। সেটা ঐ উজ্জ্বল মাছটির মতো আলো-আঁধারি খেলা খেলল বিনয়রূপী একজন কবি ও দর্শকের সঙ্গে। অতঃপর ভাবা সঙ্গত হয় বেদনাও এক সময় ভরাট হয় পেকে যাওয়া ফলের মত। আধুনিক কবির এ অন্যদৃষ্টি নিজস্ব কাব্যিক অনুভূতিযুক্ত। পরের স্তবকটি উপরের স্তবকের ‘বেদনা’ বা দুঃখর সম্প্রসারিত ভাবনা। ‘মরাল’ হয়ে যাচ্ছে পলায়নপর অথচ এই মরালও উষ্ণ মাংস আর মেদরূপী এক ধরনের পাখি। তার বিপরীতে সমুদ্রমৎস্যকে অনেক বড় সাক্ষী করেন। সমুদ্রমৎস্য দেখে অসুস্থ বৃক্ষেরা শ্বাসজনিত কষ্টে আছে আর এভাবে সব বৃক্ষ এবং ফুলেরা স্ব স্ব জায়গায় মিলনের কথা ভাবে। সমুদ্রমৎস্যের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্টের কথা বলেননি কবি কেননা তার সে কষ্ট নেই। এই ‘শ্বাসকষ্ট’ অসুস্থ বৃক্ষের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অভাবিত এক মানসবেদনার উৎস হয়। বিনয় মজুমদার দুঃখকে ভিন্নদৃষ্টিতে দেখে সম্পূরক জীবন অনুভূতি তুলে ধরেন।

    এ সমস্ত জঞ্জাল আরো না বাড়িয়ে বরং এটা পড়া বেশি দরকার -
    http://jeebangranthigodyo.blogspot.in/2014/08/blog-post_95.html

    আরে, আমি তো ছিলাম পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র। তা, সেখান থেকে হলাম মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম। আর গায়ত্রী প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইংরাজিতে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম। এই কথা যেই জানলাম, ওমনি মনে হলো, এ-মেয়েও তো আমার মতো ডুবে যাবে, কেননা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হওয়ার পর আমার পতন হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে নিয়ে কবিতার বইটি লিখে ফেললামঃ “একটি উজ্জ্বল মাছ একবার উড়ে”, মানে একবার ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়েই “দৃশ্যত সুনীল কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে স্বচ্ছ জলে পুনরায় ডুবে গেল”, অর্থাৎ জীবনে আর কিছুই করতে পারলো না!
  • Atoz | 161.141.85.8 (*) | ২১ মার্চ ২০১৮ ০৮:১৩64032
  • ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজীয় ব্যখ্যাটা একেবারে দারুণ। লক্ষ করুন , "সুনীল" ও আছে। ঃ-)
  • Atoz | 161.141.85.8 (*) | ২২ মার্চ ২০১৮ ০৪:৪৮64035
  • এ হেঃ। আমি তো গোটা ইন্টার্ভ্যু টাই বানানো লেখা ভাবলাম। চ ভ বাবুর বানানো । ঃ-)
  • র২হ | 132.172.106.141 (*) | ২২ মার্চ ২০১৮ ০৭:২১64034
  • ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজীয় ব্যখ্যাটা তো বিনয় নিজে দিয়েছেন।

    এই জায়গাটা মজার
  • kihobejene | 83.223.64.61 (*) | ২২ মার্চ ২০১৮ ১২:০৩64033
  • ekede-r comment ta bujlam na .. binoy majumdar ek bhebe likechen ... koushik, masdul ba jubin nijer moto kore explain korchen ... kobita r experience ta exam noi je ekta simple solution hobe ... ekta cinema apnar mone hote pare bostapocha, amar darun lagte pare, ekjon scholar ekta boi likte paren tar opor, director hoito sompurno onno karone cinema ta baniyechilen ...

    koushik-er explanation er shonge agree nai korte paren kintu koushik ke kobita r bishleshon korte baron korchen keno?
  • pi | 24.139.221.129 (*) | ২৩ মার্চ ২০১৮ ০২:৫৩64036
  • লেখা হয়ে গেলে সেতো পাঠকের সম্পত্তি বলেই।জানি। যে যেভাবে পাঠ করবেন। লেখক কী ভেবে লিখেছেন, খুব ম্যাটার করে কি? মানে জানতে পারলে ভালই হয়, কিন্তু সেই ভাবনার লাইনেই পাঠকের পাঠ নির্ধারিত হতে হবে বা প্রভাইত, এমন তো না। কবিতার ক্ষেত্রে তো আরোঈ প্রযোজ্য!
  • * | 113.238.192.152 (*) | ২৩ মার্চ ২০১৮ ০৯:২০64037
  • 'কবিতা পরিচয়' পড়ে নিলেই হয়....নতুন কিছু নেই
  • Kushan | 561212.187.1256.242 (*) | ২৯ অক্টোবর ২০১৮ ১০:০৩64038
  • Protikriya deowar jonno sobaike dhonnobad janai.
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আদরবাসামূলক প্রতিক্রিয়া দিন