এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • আমরা কাঠের বাড়িতে থাকি - ১

    Sukanta Ghosh লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৯ নভেম্বর ২০১৩ | ১৮২৪ বার পঠিত | রেটিং ৩ (১ জন)
  • আমরা কাঠের বাড়িতে থাকতাম – ফারখান্দা অন্য কাঠের বাড়িতে। আমার মনে হয় ও অন্যরকম ভাবে আমাকে কাছের ভাবত। আর স্বাভাবিক কাছের ভাবত সেই ইতালিয়ান ছেলেটাকে। কেউ কেউ বলে ফারখান্দা নাকি পাখি হতে চেয়েছিল – প্রোফেসর বলতেন ও নাকি নিজেও জানত না – অথচ আমার মনে হত ফারখান্দা কেবল একটি পরিপূর্ণ মেয়ে হতে চেয়েছিল। সে ওড়না ভালোবাসত, মেহেন্দী – মাথার টিপ – আমার দেশে যাবার সময় ফরমাশ – ও স্যামন ভালোবাসত লাইম জুস দিয়ে। বাকি সময়টাতে ইতালিয়ান ছেলেটার সাথে খুনসুটি। ফেসবুকে ক্রিশ্চিয়ানোর ছবি দেখি, কিন্তু একটাতেও ফারখান্দাকে দেখি না। আজ চার বছর ধরে সে আমাকে পোক করতে ভুলে গেছে। গ্রীষ্ম শেষ হয়ে আসছে – অনেক দিক আগে এডিনবারা যেখানে ফারখান্দার ভাইরা নেই – রাত দশটা বাজার সঙ্গে সঙ্গে পার্টির দরজায় দাদার গাড়ির হর্ণ নেই। বিদেশেও দেশ লুকিয়ে থাকে কিছু চেনা পাড়ায়

    "প্রবাহ কাকে বলে? ভাবতে ভাবতে ক্যাসেলের সিঁড়ি
    ভেঙে ফারখান্দায় ফিরতে থাকি ছাতা হাতে
    ভিজতে অসংখ্য বৃষ্টিতে
    বাসের নম্বরে লেখা তখন ২৫ আর ফারখান্দার ওড়না
    লেপ্টে আছে
    আমার প্রিয় কবির কবিতা, লেপ্টে আছে জলকণা
    অথচ তারা জিন্স পড়েছিল এবং সাদা
    ফারখান্দা আমার বন্ধু জানে ইতালিয়ান ছেলেটা
    বন্ধু ------- জানি বন্ধুই
    এতো শুধু কম আলোর বিকেল এবং এক কাপ কফি
    আমি সচেতন ভাবেই হাত
    প্রবাহিত ক্যাসেলের সিঁড়ি"

    আমি ফারখান্দার হাত ধরেছি অনেকবার – গ্লাভস পরা হাতে এগিয়ে দিয়েছি ইলেকট্রোড – ল্যাবে রাখা টুনার ক্যান থেকে ছেঁকে নিচ্ছে সে লবণাক্ত জল – আমরা তাকিয়ে আছি স্ক্রীণের দিকে – বিল্ডিঙের পশ্চিম থেকে ঢলে পড়ছে রোদ, আমি তাকিয়ে আছি ফারখান্দায়, সাদা ল্যাব কোটের থেকে বেরিয়ে থাকা উপরের দিকটায়। আজ সে ভ্রু তে কাজল দিয়েছে, রোজই দেয় – তবে রোজ এই মুহুর্ত তৈরী হয় না – এই দেশে বিকেলে ঢলে পড়া রোদে বড়ই কৃপণ।

    আমরা ডন-কিহোতে দেখে ফিরছি – রাত বারোটা পেরিয়ে থাই রেস্তোঁরা – এখানে ওর ভাইরা নেই – আমার রুমের চাবি রয়েছে পকেটে – রাখতে দেওয়া ফারখান্দার রুমের চাবিটাও। ক্যাম্পাসে ঢুকে আসি – আমার রুম চলে আসে – ফারখান্দা চাবি চায় না। দেখি ও ইতালিয়ান ছেলেটার হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে তার রুমের দিকে। ক্রিশ্চিয়ানোর সাথে আর কাল সকালে একসাথে ব্রেকফাষ্ট করা হবে না –

    আমি নাচতে জানি না – হয়ত জানি, কিন্তু তাকে নাচ বলে কিনা জানি না। গালা ডিনার পার্টিতে ফারখান্দা একটি মেয়ে নিয়ে এলো আমাদের টেবিলে – জো। জো-র রঙ বাদামী, নাকি শ্যামবর্ণ – হলের লাইটে চেনা যায় না। তবে চোখ দেখা যায় – চোখ চেনা যায় – জো সঙ্গী খুঁজছে সেই রাতে, নাচের পার্টনার। আমি এক স্টেপ ভাবি – জো আমার হাত ধরে টানতে থেকে, আমি জেনে যাই জো তেলেগু জানে – জো এর মা তেলেগু জানে। আমি নাচতে পারি না – ফারখান্দা কানে কানে মনে করিয়ে দেয় সুযোগ হারাবার কথা – তবুও ফ্লোরে সবার মাঝে দুজনা হতে দ্বিধা লাগে। দ্বিধা কেটে ওঠে স্কটিশ গানের সুরে – আমরা লাইন ডান্সে মিশে যাই – ওড়া হাসতে থাকে, আমাদের চোখে আলো ঝলকায়, মাথা হেঁট করে গলে যাই মেয়েদের বাহুবন্ধনের তলা দিয়ে। রাত মিশে আসে, গানের গতি দ্রুত হয় – রেড ওয়াইন তার কাজ শুরু করে, বাদামী জিহ্বা কার স্বাদ পেয়েছিল ধূসর কোষ তা মনে রাখেনি।
    জো এর সাথে পরেরদিন এয়ারপোর্টে দেখা দেখা হবার কথা –

    "এর পর জো ডাকতে থাকল, জো মানে জ্যোৎস্না
    দোতলার টব থেকে গড়িয়ে পড়া জলে
    আমরা ভিজতে থাকি অভিভাদন গেটের এপারে
    আমি ছুঁতে থাকি আরাকু ব্যালি, বোরা কেভস্‌
    ঠিকানা লেখা শেষ পাতাটি জো এগিয়ে দেয়
    চিঠি এবং ট্যাক্সি এগোতে থাকে
    এক নতুন ব্যালি হয়ত বা নতুন কেভস্‌ -এ।"

    ফারখান্দা আমাদের কাঠের বাড়িতে আসে – আমাদের কাঠের বাড়িতে পরিবার নেই, বিদেশের মধ্যে কোন ছোট দেশ নেই। আমরা থাকি – আমি, যোসেফ, নোয়েল, সিজারী আর অনেক মৌমাছি - ভিভিয়ান, আইরিন, ওলা, আইভি, রিয়া, কারমেন, লিডা, এলেন, অলিভিয়া, আমান্দা, টোমোয়ো, অ্যানা। এরা জানে ফারখান্দা আমার বন্ধু, তাই মিশে যায়, পার্টির রাত – ও চুড়িদার পড়ে আসে, জিন্স পড়ে আসে - শাড়ি পড়বে বলেছিল একবার, পড়া হয় নি। ওলা শাড়ি ভালোবাসত – ফারখান্দা তাকে শাড়ি শিখিয়ে দেয় – এর অনেক পরে ওলা আমার দেশে এসে শাড়ি পড়েছিল – সেই ছবি দেখে আমি এখনো ভাবি সেই রাতগুলির কথা –

    "তুমি কি শাড়ি ভালোবাস, জটিলতা?
    তুমি কি পাখি ভালোবাস – বেদনা?
    যাদের কাজল আছে
    আমার চোখে তারা রামধনু
    জানি তুমি বৃষ্টি ভালোবাস, কুয়াশা

    শেষ বৃষ্টির সন্ধ্যেয়
    যারা সুগন্ধ ভালোবাসে তাদের বৃত্তাকার
    চোখে কাজল লাগা
    কারো বা ঝিলিক
    আমি ঝিলিকের রহস্য জানি
    তোমাদের হাতে চুড়ি নেই তাই
    সুগন্ধই ডেকে নেয় টেবিল
    সাদা মোজা টেবিলের নীচে
    পাখিদের রং লেখা গীটারের তার"

    ফারখান্দা জানত যে ওলার বুকদুটো চোখ টেনে নেয় – আমাদের ল্যাবে ডিআয়োনাইজড ওয়াটার নিতে এসে যোসেফ সেই পর্যবেক্ষণ অনেকবারই ফারখান্দাকে জানিয়েছিল। আমরা সবাই তা জানতাম – ওলা নিজেও সেটা জানত – আমাদের অবচেতনে ওলার বুক ছিল না – সেটা বড় অভিয়াস ছিল। তবে যোসেফের সচেতনে সেই বুক অনেক জায়গা জুড়ে ছিল। ওলা ওনেক পড়ে তার সঙ্গী খুঁজে পায় – সেই স্প্যানীশ ছেলে ফুল নিয়ে দেখা করতে আসত আমাদের কাঠের বাড়িতে। আমরা খুশি হয়েছিলাম – ওলা প্রথমে পাজলড্‌ ছিল – বুকের দিকে না তাকিয়েও যে ভালোবাসা যায় সেই ব্যাপারটা ওলা ভুলে গিয়েছিল যোসেফের প্রতিবেশী হবার জন্য। আমার নিরপেক্ষতা আমার বন্ধু ছিল – আমার নিরপেক্ষতা আমাকে বন্ধুদের মাঝে থেকেও নিঃসঙ্গ করতে দিতে পারত – ফারখান্দা সেটা মনে করিয়ে দেয়

    "আমি যদি বলি হিমবাহের মতন শীতল
    তুমি বলিবে আরোপিত
    অথচ আমরা উভয়েই জানিতাম
    উহা হিমবাহের মতই শীতল

    আমি যদি বলিতাম বিকেলের মত গোলাপী
    তুমি তো বলিতেই আরোপিত
    আমাদের আঙুলে কিন্তু সেই গোলাপী বিকেল
    যদি ও চম্পাকলির মোহে
    তোমাদের মতে আরোপিত আঙুলেও
    আমি সচেতন ইশারা ভাবি
    আমি যদি বলি এ বড় সুখের –
    তুমি চুপ থাক
    অথচ আমরা উভয়েই জানিতাম এরপরে –
    সময় ---"

    ফারখান্দা আইরিনকেও চিনত – যার চোখে নাকি আমার জন্য অন্যরকম কিছু রাখা ছিল। আমি কোনদিন সেটা দেখতে পাই নি – এর পরে আইরিন আমার গ্রামের বাড়িতে এসেছিল – গ্রামের লোকে সময় নিয়ে সেই গ্রীক সুন্দরীকে দেখে একই বলেছিল যে তার চোখে অন্য কিছু একটা আছে। আমার মনে হয় সেই অন্য চোখ মানে নীল চোখ – আমি নীল চোখের দিকে তাকিয়ে থেকেছি – টিভিতে সিনেমা দেখার সময় – বাইজেন্টাইন পেন্টিং নিয়ে আলোচনার সময় – আর শুক্রবারে অল্প পান করেই আইরীন পাল্টে যাবার পর। তেমনই একরাতে আইরীন পাল্টে গিয়েছিল – এ ওকে আমরা চিনি না – আমরা মধ্যরাত পেরিয়ে বারে দেখছি আইরীন এগিয়ে যাচ্ছে মাঝের দিকে, এ এগিয়ে যাওয়া একাকীর – কতটা কষ্ট জমা থাকলে এমন একাকী এগিয়ে যাওয়া যায়! ওর কষ্টের কথা আমরা কেউ জানতাম না, আমি নিজে নিজেকে নিয়ে ভাবছিলাম – যোসেফ তাকে নিয়ে

    "তোমার কোমরের রঙ
    কেমন সাদা শুধু সাদা হয়ে যায় দুই দিকে
    ঠোঁট থেকে চোখ তুলে দেখি আঙুল
    আমার বিপন্নতা বাড়িয়ে
    আত্মহনন সাজালো ওই নখেরা
    তুমি কোমরের দিকে ওঠো
    হাতের আত্মহনন
    আত্মহননের হাত
    তুমি সেই লাল আর ফেনানো সুবাস নিয়ে
    ধীর পায়ে মাটির দিকে নামো
    স্খলিত পতঙ্গেরা খুঁটি বেয়ে আসে
    আলোর দিক থেকে
    বরফ – বাতাস – ছায়াহীন ল্যাম্পপোষ্ট
    খুব সকালের আত্মহনন
    আরো একদিন বেঁচে থাকায়"

    ফারখান্দা এখনো জানে না আইরিনের বিয়ে হয়ে গেল এই সেদিন ।

    [--- ক্রমশঃ]

    আমাদের কাঠের বাড়িটার পূর্ণ ইতিহাস জানি না। যখন সেখানে ছিলাম তখন বাড়ির ইতিহাসের থেকেও বাড়ির বাসিন্দাদের সাথে জড়িয়ে পড়াটাই অনিবার্য ও স্বাভাবিক বলেই মনে হয়েছিল। আজ যখন ফিরে দেখি, সামনের কম্পিউটার স্ক্রীণে ভেসে ও্টহা কালো সাদা ডোরাকাটা কাঠের বাড়িটাও কেমন কাছে টেনে নেয়। বেসমেন্ট সমেত তিনতলা বাড়ি আর ওই তিনতলার মাঝের ঘরটা আমার – মানে অন্ততঃ আমার ছিল প্রায় চার বছার। এই বাড়িটা নাকি একসমইয়ে এখানকার বিখ্যাত কয়লা ব্যবসায়ীর ছিল। দু-আড়াইশো বছর ঘুরে কোন একটা চার্চকে দান করা হয়েছিল। সেই চার্চ বাড়িটাকে বিদেশী ছাত্রদের আবাসস্থল বানায় – একজন ওয়ার্ডেন, একজন পার্ট টাইম কর্মী ও বেশ কিছু ভলেনন্টিয়ার সমেত নন্‌-প্রফিটেবল্‌ অর্গানাইজেশন।
    বেশ ঈর্শীনীয় – প্রায় তিরিশটা ঘরে ছেলে বলতে সাকুল্যে আমি, যোসেফ, ফউষ্টো, সিজারী ও নোয়েল। বাকি সব পরী – সৌন্দর্য্যে, ব্যবহারে, রন্ধনে বা নিমগ্ন কন্ঠে। কাঠের সিঁড়ি দিয়ে ওই হালকা উঠে যায় ফন্‌। ফনের পুরো নাম আর মনে নেই – মনে আছে তার এক প্রায় অসম প্রেমের চেষ্টা ও বরফস্নাত দুপুরগুলিতে লালচে গালের স্বীকারোক্তি। ফন্‌ একসময় লেসবিয়ান ছিল – আমার হতবাক তখনো ভারতীয় ছাত্র মন চোখ নামিয়ে নেয় বাটিতে দুলতে থাকা পর্ক স্যুপের দিকে। আমার পাশের ঘরেই ওমানি ছেলেটা থাকে – কাঠের বাড়িতে শব্দের আব্রুতা বড় কম – আমার কান ছুঁইয়ে যায় ফন্‌এর জড়িত আবেশী শ্বাস –

    “আঁধার এলে শুরু হয় চুমুকের শব্দ বা জিহ্বার
    এমনি সময়ে কেন মনে হয়
    চার বছর তুমি লেসবিয়ান ছিলে!
    আমি এমনই কবিতা ভেবে চলি প্রিয়তমা
    প্রতিটা প্রিয়তমা কবিতা হয়ে
    অজস্র না খোলা চিঠির ফুটে ওঠা কালিতে
    মুহুর্ত হয়ে যায় জেনে
    সমস্ত কিশোরীই ভালোবাসে নিজেদের

    শুধু ওদের ভালোবাসার প্রতিশব্দ হয় না”।

    ফারখান্দার সাথে ফনের আলাপ হয় নি। জানা হয় নি লেসবিয়ান ব্যাপারটা নিয়ে ফারখান্দা কি ভাবত – তবে আমি কল্পনা করে নিতে পারি তার কাজল দেওয়া চোখ ওমানি ছেলেটাকে করুণা করতে চাইছে বা বিবাহিত জেনে ঘৃণা। সুপ্ত এক উপামহাদেশীয় সত্ত্বা যেন ফারখান্দার মনে প্রোথিত রয়ে গেছে – ছেড়ে যাওয়া যেখানে প্রায়শঃই অশ্রুসিক্ত।

    কাঠের সিঁড়িতেই প্রথম দেখা হয়ে যাওয়া অ্যানা ডি মমির সাথে। আমি মুখ দেখতে পাচ্ছি না – দেখছি একরাশ কালো ঝাঁকড়া চুল ঢেকে আছে সিঁড়িতে রাখা টেলিফোন বক্সটা। ভাষা বুঝছি না – ভাষার মাধুর্য বুঝছি না – প্রেমালাপ নাকি বাড়ির সাথে কুশল প্রদান? আমার পায়ের শব্দ আছে, সিঁড়ির কাঠেরও মুর্ছনা আছে, অ্যানা ডি মমি ঘুরে তাকাচ্ছে – দেখছি ধনুকের মতো বাঁকা ভ্রু, প্রায় সাদা মুখ, নিখুঁত ঠোঁট। একটা হাত আমার দিকে উঠে আঙুলগুলো নড়ে উঠল – নখের ডগায় পড়ন্ত বিকেলের রোদ লাল রঙে বিবশ করে আন। ল্যাব ক্লান্ত আমার ঠোঁট হাসতে পারে না – ফেটে যায়। তার পরে ঘনিষ্ট হয়েছি অ্যানার সাথে – ও আমাদের সালসা ক্লাস দিয়েছে। কালো পোষাকে হাত ধরে কাছে আসা শিখিয়েছে –

    “তুমি মোচার মত খুলতে থাকো অ্যানা ডি মমি
    শেখানোর ছলে, সেই নিয়মিত সালসা ক্লাসে
    আর তার আগে
    কাঠের শব্দে ঝুঁকে যায় রিসিভার কানে
    একরাশ কোঁকড়ানো চুল প্রেমিকের চুম্বনে

    সিসিলীয় দ্বীপের অ্যানা পড়ন্ত বিকেলেই পাপড়ি খেলে
    তার নতুন বন্ধুর সাথে
    আমি তখন প্রায়শঃই নোটবই ভুলে যাই
    নীচের রুমের কাঠের দেওয়াল দিয়ে ক্লান্ত হাসির আবেশগুলো
    মৃদু কাঁপুনি ধরায়
    পাস্তা রাঁধতে গিয়ে আরো ঝুঁকে আসে নিপুণ আঁকা ভ্রু
    লালচে গালের ওধারে – এতো রাতেও কিভাবে?
    আমি প্রশ্ন ভাবতে গিয়েও বিষ্ময় পেয়ে যাই
    খয়েরী রাঙা গেঞ্জিতে”।

    আমি প্রায় চার বছর সেই কাঠের বাড়ির ফায়ার ওয়ার্ডেন ছিলাম। প্রায় অলিখিত এক দায়িত্ব ছিল আমার – বাড়ির শান্তি বজায় রাখা। আর যেটা লিখিত ছিল – অর্থাৎ যেই শর্ত সহ আমরা হাউস এগ্রিমেন্টে সই করেছিলাম তা হল এই বাড়িতে ছেলে মেয়ে এক ঘরে রাত কাটাতে পারবে না এবং অবিবাহিত সেক্স নিষিদ্ধ। ক্যাথলিক চার্চ পরিচালিত হবার জন্যই এমন নিদারুণ শর্ত। কিন্তু কে কে মানত? অনেকেই না – কিন্তু ওই যে বললাম হাউস ফায়ার ওয়ার্ডেন হবার জন্য সবাই ভেবে নিয়েছিল আমার বাড়তি দায়িত্ব ছিল অবিবাহিত সেক্স ওই বাড়িতে হচ্ছে কিনা সেটা নজরে রাখা। তাই সকালে খাবার ঘরে গিয়ে অনেকেরই লাজুক হাসির মুখোমুখি হতাম নিয়তই। আর আমার কাছে ছিল মাষ্টার কী – সেই চাবি দিয়ে খুলতে পারতাম যে কোন দরজা বিপদকালীন সময়ে। কিন্তু সত্যিই পারতাম কি দরজা খুলতে? – ফাঁকা দরজার আহ্বান বড় মারাত্মক আর ছোঁয়াচে। খোলার আগে কল্পনা করে নিতে হয় দরজার ওপাশটা।

    এমনই একরাতে ফায়ার এলার্ম বেজে উঠল – আমি মাষ্টার চাবি নিয়ে দরজায় দরজায় নক্‌ করে সবাইকে বাইরে বার করছি। তিনতলা থেকে আইভি, যোসেফ, দোতলা থেকে রিয়া, এলেন, অলিভিয়া, লিডা, অ্যানা – সবাইকে বার করে ভিভিয়ানের দরজায় এসে থামলাম। নক্‌ করছি কিন্তু দরজা খুলছে না – বেশ কিছু বার চেষ্টা করার পর যখন আমি মাষ্টার চাবিটা ব্যবহার করতে যাব, ঠিক তখনই দরজাটা খুলে গেল –

    “জানালার হুকে ঝোলা তোমার ভিতরটা
    সাদা আর বড় স্বচ্ছ থাকতে পারে কিভাবে
    ভাবতে ভাবে তুমি
    একই সাথে ঘন কিন্তু স্বচ্ছ হচ্ছিলে

    তুমি লেপ্টে যাও ভিভিয়ান যেখান থেকে তুলে আনা
    ফায়ার অ্যালার্মের রাত একটা আমার ডিউটি
    জানালার হুক থেকে সাদা শরীর
    স্বচ্ছতা ঢেকে আনে
    রেশম গুটি ঘাড় বা পিঠের থেকে গড়িয়ে
    বড় পিচ্ছিল সসেজ্‌ শীতল হয়ে যাই
    খালি পায়ে শনিবার হাঁটু জোড়া রাতে
    ভিভিয়ান, তুমি ঠিক আছো তো”?

    ভিভিয়ানের সেই মুহুর্তের আমার দিকে তাকিয়ে থাকা দেখলে ফারখান্দা কি বলত জানতে বড় ইচ্ছে করে।

    [--- ক্রমশঃ]

    আমি ভিভিয়ানকে নিয়ে বেশ কিছু কবিতা লিখি – ফারখান্দা সেটা জানত। আমাকে অনেকবার সে অনুবাদ করে দিতে বলেছিল কবিতাগুলি – কিন্তু হায় কে বোঝাবে তাকে যে বাঙলা প্রেমের কবিতার সঠিক ইংরাজী অনুবাদ হয় না! কিন্তু সত্যি কি প্রেমের কবিতা ছিল সেগুলি? ফারখান্দা জানত না সুনীলের নীরা বা জীবনানন্দের বনলতার কথা – ও তাই জানত না মানস প্রতিমা কাকে বলে। ভিভিয়ান কি তা হলে আমার মানষ প্রতিমাই ছিল? জানি না ঠিক – এতো দিন পরে যখন ভাবতে বসি ভিভিয়ান নিয়ে একাধিক লেখা কথা তখন তার মূল খুঁজে পাই না। ফারখান্দাই কি তা হলে ঠিক ছিল? মনের কোন অবচেতন মনে গড়ে উঠছিল এক আকর্ষণ? ফারখান্দা ছেলে-মেয়েদের জোড় লাগাতে ভালোবাসত – একটা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে এবং সর্বোপরি এক বিদেশী পরিবেশে যেখানে ব্যক্তিগত সীমারেখাটা বড়ই প্রকট যেখানে তার সেই প্রচেষ্টা এক বিষ্ময়কর ব্যাপার ছিল বৈকি! আসলে আমরা সবাই ফারখান্দাকে ভালোবাসতাম – সেই ভালোবাসার ছিল বিভিন্ন রূপ।

    ভিভিয়ানের সাথে ফারখান্দার আলাপ হয়েছিল আমাদের কাঠের বাড়ির আর বাকি সব মেয়েদের মতই – মনে হয় ভিভিয়ান সেখান থেকেই জানতে পারে তাকে নিয়ে আমার কবিতা লেখার কথা। ফারখান্দা আমার লেখা কবিতার সাথে ভিভিয়ানের প্রতি আমার আকর্ষণের এক সরল সমীকরণ বার করেছিল, ফলতঃ ভিভিয়ানের কানে ভালোবাসের কিছু বীজমন্ত্র ঢোকাতে সে কসুর করে নি। আকর্ষণ নাকি ভালোবাসা নাকি পর্যবেক্ষণ নাকি অনুপ্রেরণা? আমি তখন লিখেছি –

    “ভিভিয়ান একটি চীনা নাম
    কাঁধের সাদা জামা থেকে খুলে পড়া ফিতে
    সিরামিক করে নিয়তই
    চীনা মেয়েরা ভিভিয়ান হয় না
    একটা মুখোশের সাথে লালা মিশে
    পুরু ঠোঁট খুঁজি
    জামাটা পাতলা ছিল, ঘরের হিটার অন্‌
    কিভাবে স্যালাড হয়
    সবুজ দিয়ে স্টোর ফেরত আঙুলগুলি
    সিরামিকে মাখিয়ে নেয়
    ওভান আর নিঃস্বাসের গরম
    ঘরটায় রান্নার জায়গা

    ঘরটায় সেদ্ধ হয় কিছু আগের প্রাণীরা
    সিরামিকে আঁকা একরাশ ছবি
    এবার টুকরো হবে
    গরম নিঃশ্বাসে
    আঙুলগুলি খেলবে ন্যাতানোর সঙ্গে
    স্যালাডে ঠেকানো জিবে
    লালার সাথে ফেনাবে আর ফেনাবে
    ধার করা উত্তাপ এবার বন্ধ
    জামাটা পাতলা ছিল বলেই তাপে
    গলতে থাকবে চীনা মেয়েটা
    ও ভালো সিরামিক জুড়তে জানে
    ফিতে খুলে নিলে সাদা
    চীনা মেয়েটা ভিভিয়ান”।

    ভিভিয়ানের ফিতে খোলা শরীরের সামনে আমি রাত একটার অ্যলার্মের ফায়ার ওয়ার্ডেন দাঁড়িয়ে আছি। সময় থমকে গেছে – নাকি সময় ভঙ্গুর হয়ে সিরামিকের মত গুঁড়িয়ে যাচ্ছে ক্রমশঃ ? ভিভিয়ান ফিরে গেছে তার দেশে অনেক দিন হল – মাঝে মাঝে সেই স্থবির সময়ের কথা মনে পড়ে আমার। পেলব উজ্জ্বল চামড়া থেকে গড়িয়ে পড়ছে করিডোরের আলো – আমি স্বচ্ছতা থেকে চোখ সরিয়ে নিতে চাই – ভিভিয়ান তাকিয়ে আছে, ফিতের দিকে হাত বাড়াবার কোন তাগিদ অনুভব করছে না। এখনো কি তুমি এমনই ভঙ্গুর হও ভিভিয়ান? ফারখান্দা ভিভিয়ান আর আমার এই ফিতের ভঙ্গুর গল্পটা জানত না।

    তেমনি জানত না ফারখান্দা রিয়ার সাথে আমার বহু পরের সেই কথোপকথনও। আসলে ফারখান্দা নিজে সুন্দর ছিল বলে বাকি সবার মধ্যেও সহজেই সৌন্দর্য্যের খোঁজ পেয়ে যেত। অবশ্য আমাদের সেই কাঠের বাড়িতে সব মেয়েরাই স্বাভাবিক সুন্দর হবার জন্য ফারখান্দাকে বেশী কল্পনা প্রবণ মনে হয় নি কোনদিনও। রিয়া আমার খুবই কাছের বন্ধু – অবাক লাগে যারা জীবনের একটা সময় অনেকটা জায়গা জুড়ে ছিল তাদের মূল নামটা এখন আর মনে পরে না – প্রত্যেক চাইনীজ ও তাইওয়ানীজ মেয়েদের ও ছেলেদের একটা করে ইংরাজী নাম থাকত। রিয়া তেমনই এক তাইওয়ানীজ মেয়ের নাম – আমরা নাম নিয়ে মাথা ঘামাই নি। আর তা ছাড়া রিয়া নামটা বড় কাছের বাঙালী বলে মনে হয়। অনেক কাল পরে যখন রিয়ার এক স্প্যানীশ বয়ফ্রেন্ড হয়েছে – যে জন্মদিনে রাত বারোটায় সারপ্রাইজ দেয় – ভেলেনটাইন ডে তে রিয়ার অফিসের ডেক্সে পৌঁছে দেয় একতোড়া গোলাপ – প্রায়শঃই বর্ষাস্নাত সন্ধ্যায় রেঁধে খাওয়ায় পাইয়ালা। তেমনি এক সময়ে আমি রিয়াকে বলি, “ইউ নো রিয়া, আই অলওয়েজ ওয়ান্টেড টু গো আউট উইথ ইউ”। রিয়া বলে, “বাট ইউ নেভার আস্কড্‌”! আমি ওর চোখের দিকে তাকিয়ে থাকি – বড় রহস্যময় লাগে – ভাবতে ভালো লাগে ও ঠাট্টা করছে না – আবার ঘোর লাগে, কোন ভাবে কি সেই সময়টায় আবার ফিরে যাওয়া যায়?

    “আর কেন জানি ভিড় ভালো লাগে না
    একা একা ভেজা ভালো লাগে না
    আমি তো এমন কথা লিখতেই পারি আর পারি মায়াবেশ
    এ শব্দেরা এই পতঙ্গেরা একান্ত পূর্ণিমায় নেশাতুর করে দিলে
    আকাশ চিলেকোঠা গোলাপী চাদরে ভিজতেই পারি
    আমারই একান্তে এই অস্ফুট পঙতিমালা
    জানি মুছে যাবে তবু কেন ভিজতে পারি না
    একা একা
    জানি শুধু গোলাপী চাদর একেলা নেশাতুর করে না

    মেয়েরা আমাদের অজানতেই গোলাপী রঙে প্রীত হয়
    রিয়া ফ্রান্স বেড়াতে যাবার আগে তার এমনি গোলাপী চাদর
    আমার ঘরে রেখে যায় এবং বালিশও
    ফলতঃ আমি এখন জ্বরতপ্ত কিন্তু নিঃসঙ্গ নই
    আমার জামায় গোলাপী সুবাস যারা পেতে পারে
    তারা এইভাবেই ঠিক বুঝে যায় আমি নিঃসঙ্গ
    আর জ্বরতপ্ত হই
    চিলেকোঠা আকাশে ভিজে পতঙ্গের
    এয়ার ফ্রান্সের অযাচিত প্রতীক্ষা”।

    তুমি কি জানতে ফারখান্দা আমি কতটা নিঃসঙ্গ ছিলাম? জানতে কি কাকেই বা আমি ঠিক সময়ে প্রশ্ন করতে ভুলে গিয়েছিলাম – থেমে গিয়েছিলাম “আই ওয়ান্ট টু গো আউট উইথ ইউ” বলতে গিয়েও। জানি না এই প্রশ্নের অপেক্ষায় কেউ ছিল কিনা – জানি না প্রশ্নের অপেক্ষায় তুমি ছিলে নাকি সেই ইতালিয়ান ছেলেটা। আমার তো কাঠের বাড়ি ছিল – চিলেকোঠার ঘর ছিল – ছিল কিছু ঘোর লাগা চোখ – রাতের ফায়ার ওয়ার্ডেনের ডিউটি – কিছু উত্তাপ – ম্যানিকিউর করা আঙুলের ফাঁকে কিছু স্ট্রবেরী – ফিতের গল্প – স্নান ঘরে ফেলে আসা সুবাস। ফারখান্দা, তুমি কি জানতে তোমাকে আমার না বলা সমস্ত গল্পে সেই কাঠের বাড়ি জড়িয়ে ছিল?

    [--- ক্রমশঃ]
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৯ নভেম্বর ২০১৩ | ১৮২৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | 24.97.233.105 (*) | ১০ নভেম্বর ২০১৩ ০৯:১৯45540
  • চলুক।
    এটা কি অনুবাদ?
  • kk | 81.236.62.176 (*) | ১১ নভেম্বর ২০১৩ ০২:৫০45545
  • সুকান্ত ঘোষের লেখার স্টাইল আমার বড় ভালো লাগে। এই লেখাটাও ভালো লাগছে। চলুক।
  • শিবাংশু | 127.201.167.172 (*) | ১১ নভেম্বর ২০১৩ ০৫:১০45541
  • বাহ....
  • Ranjan Roy | 24.99.155.12 (*) | ১১ নভেম্বর ২০১৩ ০৭:২৬45542
  • আমারও একই প্রশ্ন!
  • Sukanta Ghosh | 212.160.18.140 (*) | ১১ নভেম্বর ২০১৩ ১১:০২45543
  • ধন্যবাদ আপনাদের।

    না, এই লেখাটা কোন অনুবাদ নয় - নিতান্তই আমার নিজের লেখা, মায় কবিতাগুলি শুদ্ধু। যে সব মেয়েদের কাছে থেকে দেখেছি, তাদের সবাইকে নিয়ে এককালে কবিতা লিখেছিলাম। সেই কবিতা লেখার প্রেক্ষাপট নিয়েই এই লেখা।
  • Ranjan Roy | 24.99.172.255 (*) | ১১ নভেম্বর ২০১৩ ১২:১৮45544
  • সুকান্ত,
    অভিবাদন! মন ছুঁয়ে গেছে। আরো চাই।
  • a x | 86.31.217.192 (*) | ৩০ এপ্রিল ২০১৪ ০৫:০৭45546
  • ভালো লাগল।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে প্রতিক্রিয়া দিন