গত দুমাসেরও বেশি লকডাউন আমাদের জীবনের গতিতে একটু লাগাম টেনে ধরেছে। একদিকে এতদিনের বাধ্যতামুলক ঘর-বন্দীজীবন, থেমে-থাকা অর্থনীতির নীচের দিকে ছুট আর অন্য দিকে তুমুলভাবে উপর দিকে উঠতে থাকা করোনা-আক্রান্তের গ্রাফ – দুয়ের চাপে পড়ে জুন মাসের লকডাউন থেকে আনলক পর্ব নিয়ে কেমন একটা গুলিয়ে-যাওয়া অনুভূতি হচ্ছে অনেকেরই। কেমন হবে আগামী দিনগুলো? এদিকে খবর আসছে যে জাপানের হক্কাইডোতে প্রথম দফার লকডাউন তোলার এক মাসের মধ্যে আবার লকডাঊন জারী করতে হয়েছে। সব মিলিয়ে অবস্থাটা তেমন সুবিধার না। সামনেটা বড্ড অস্বচ্ছ, ঘোলাটে দেখাচ্ছে। ... ...
- খুব তো কেরল কেরল করো, দেখলে তো পনের বছরের প্রেগন্যান্ট হাতিটার কী হাল করল কেরালার লোক গুলো? - হ্যাঁ, খারাপ লাগলো খুব। কারা যে করলো? কেন যে করলো? - কারা আবার? মানেকা গান্ধীর স্টেটমেন্ট পড়নি। মাল্লাপুরে! মাইনরিটি এলাকা! কেরালায় বছরে ৬০০ হাতি মারা পড়ে বলেছেন। - হ্যাঁ দেখলাম, টুইট করেছেন ৩রা জুন। কিন্তু বুঝলাম না কী বলছেন! ভারত সরকার সংসদে ২০১৯ সালে একটা প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছেন ভারতে গড়ে বছরে ৫৬.৬ টা হাতি মারা যায়। ২০১৯ এর ফেব্রুয়ারি মাসের কোনো একটা তারিখে দ্য হিন্দু পত্রিকায় বেড়িয়েছিল যে ২০১৮ সালে ৭৫টা হাতি মারা গেছে এলিফেন্ট সেন্সাস অনুযায়ী। ৬০০ র অঙ্কটা ঠিক কোথায় পাওয়া গেল? ... ...
সর্বত্রই ত্রাণের কাজে যাঁরা যাচ্ছেন, তাঁদের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের কাছ থেকে একটাই কথা শুনতে হচ্ছে - 'ত্রাণসামগ্রী নিয়ে কিছুদিন না হয় চলবে, কিন্তু সরকার যদি দীর্ঘস্থায়ী সমাধান না করে, তাহলে মরে যাব আমরা'। আমরা গুরুচণ্ডা৯-র পক্ষ থেকেও এই কথার সাথে সম্পূর্ণ সহমত পোষণ করি। কেবল ত্রাণ নয়, এই সমস্যাগুলোর দীর্ঘমেয়াদী সমাধান চাই। আজকে যাঁরা ত্রাণের জন্য হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন, তাঁদের কাছে আমাদের তাই আবেদন, দীর্ঘমেয়াদী সামাজিক নজরদারি কীভাবে গড়ে তোলা যায়, কীভাবে আয়লা বা আমফানের ক্ষয়ক্ষতির পুনরাবৃত্তি রোধ করা যায়, ধীরে ধীরে সেটিকে চর্চার বিষয় করে তুলুন। ... ...
তবে শুধু করোনা কেন ভারতবর্ষের দিকে তাকিয়ে দেখলে পশ্চিমবঙ্গে আমফান বিপর্যয়, বিভিন্ন রাজ্যে পঙ্গপাল হানা, উত্তরাখণ্ডে দাবানল—কিছুরই হদিস দিতে পারেনি জ্যোতিষের কারবারিরা। তবে তাতে এই ধাপ্পাবাজির কারবারিদের খুব একটা কিছু যায় আসবে বলে মনে হয় না। কারণ করোনা পরবর্তী পৃথিবীতে গভীর অনিশ্চয়তার অন্ধকারে ডুবতে চলেছে মানুষ। রোজগারহীন, নিরাপত্তাহীন হাজার হাজার মানুষ খেটে খাওয়া হাত দুটো নিয়ে ছুটবেন তো তাঁদের কাছেই—কপালে কী ভবিষ্যৎ লেখা আছে তা জানতে। ... ...
সাতজেলিয়া, মোল্লাখালি, পাখিরালা, রাঙাবেলিয়া, বাগনা-এর অনেক মানুষ তাই ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন (নাম অপ্রকাশিত) – “বাবুরা এমনভাবে বোটের উপর থেকে ত্রাণ ছুঁড়ে ছুঁড়ে দেয়, মনে হয় জঙ্গলের পশু-পাখি কে খাবার দিতে এসেছিল। আমরা ভিখারী নই, আমরা চাষ না করলে, মাছ-কাঁকড়া না ধরলে বাবুদের সাদা চামড়ার ফুটানি বের হয়ে যাবে। আমাদের সারাবছর যেভাবে খাটতে হয়, তখন এই দু-একদিনের চাল-ডালের মাধ্যমে আমাদের সমস্যার সমাধান হবে না।" ... ...
এসব নিতান্তই কল্পনা, মার্কো এবং জয়িত্রীর ভিতরে কী কথা হয়েছিল, তা খবরিয়ার আন্দাজ মাত্র। খবরিয়া পেনসিলিয়া জানে জয়িত্রীর আজ মন ভালো নেই। গত রাতে তার ঘুম হয়নি বিশেষ। কতবার ভেবেছে তার মোবাইল ফোন বেজে উঠবে। বাজেনি। মোবাইলে নেট অন করা। হোয়াটস আপ কল আসেনি।নভশ্চর অ্যালেক্সের ফেসবুক পেজ ডি অ্যাক্টিভেট করা আছে মনে হয়। খুঁজেই পায়নি। নাকি সে তাকে ব্লক করে রেখেছে। ... ...
কৃষ্ণাঙ্গ বিক্ষোভে আমেরিকা উত্তাল। রাজনৈতিক ভাবে, আমেরিকার বর্ণবাদের বিরুদ্ধে কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের সম্মান অর্জন প্রচেষ্টা আজ এক নতুন বিস্ফোরক বাঁকে। রাজনৈতিক আলোচনা চলবে। এই প্রবন্ধটি তিন প্রজন্মের কৃষ্ণাঙ্গ লেখকদের লেখা প্রসংগে। নবারুণ ভট্টাচার্য্য প্রতিষ্ঠিত 'ভাষাবন্ধন' পত্রিকায় ২০১৭ র উৎসব সংখ্যায় ইতোমধ্যে প্রকাশিত। ... ...
আমাদের ব্যক্তিগত আগ্রহের জায়গা, যদি সেটা ছবিটি সম্পর্কে জেগে ওঠে, সেখান থেকে অন্য একটা পথ চলা শুরু হতেই পারে। আমাদের পারিপার্শ্বিক, সামাজিক অবস্থান, যে পথ পেরিয়ে এসেছি সে পথের রক্ত ও কাদা আমাদের মনে করিয়ে দিতেও পারে অন্য কিছু। সেই অন্য কিছু, যা জরুরি ও অদরকারির মত পূর্বনির্ধারিত খোপে বসে নেই। সে কথা পরিচালক যে বলতে চাইছেন তাতে কোন সন্দেহ নেই। ক্রাফটের সীমাবদ্ধতা সেই যোগাযোগে ব্যর্থ হতে পারে কোন কোন ক্ষেত্রে, কিন্তু উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ থাকতে পারেনা। যেমন সন্দেহ থাকার কথা নয় রাজনীতি নিয়ে। উনিশে এপ্রিলে ২০২০ সালে আমি স্পষ্টই দেখি গায়ে হাত না তুলেও পিতৃতন্ত্র কীভাবে ছকের বাইরের লোককে রক্তাক্ত করতে পারে। প্যাসিভ অ্যাগ্রেশন কথাটা নব্বইয়ের দশকে জানা ছিলো কি অনেকের? ... ...
ঝড়ের থেকে জলকে ভয় বেশী। আয়লার সময় সব ভেসে গিয়েছিল। এবার নদীর মাটির বাঁধ কোথাও কোথাও ভেঙ্গেছে, কিন্তু জল ঢোকেনি গ্রামে। অঞ্চলে বারো আনা বাড়ি মাটির। ঝড়ে চাল উড়ে গেছে - কিন্তু সারাতে বেশী অসুবিধা হয় নি। খড় বাড়িতে থাকেই। খরচা বলতে দুদিনের মজুরি ৬০০। ঝড়ের দুদিনের মধ্যে বিদ্যুৎ চলে এসেছে। টিউব ওয়েল আছে, যদিও দূরে দূরে। তবু পানীয় জলের অসুবিধা নেই। ... ...
লকডাউনে আটকে পড়েছেন একদল মহিলা শ্রমিক। নিজের ঘর হরিহরপাড়া,মুর্শিদাবাদ থেকে ১৮০০ কিলোমিটার দূরে বসে এদের কান্না থামছেনা। কাছের ষ্টেশন লুধিয়ানা। মাথাপিছু ট্রেনভাড়া নাকি ৭৫০ টাকা। ওদের কাছে ভাড়া নেই। ফিরিয়ে ঘরে নিয়ে আনার কেউ নেই। মহিলারা কেউ ফেলে এসেছে বাচ্চা বাড়িতে। কেউ নিয়েছে সঙ্গে। বছর দুই এর সরফরাজ কেঁদেই চলেছে। খাবার বন্ধ হয়েছে চার দিন। দিনে ষাটবার করে হেল্পলাইনে ফোন করছে ওদের স্বামীরা। কিন্তু কোনও সাড়া নেই। সরকারী লাইন থেকে নাকি বলেছিল যে রেশনের ব্যবস্থা করা হবে। সেটাও করা হয়নি। এখন রোজা করছে এক টুকরো বিস্কুট খেয়ে। ... ...
টেস্টিং এর ক্ষেত্রে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে পার্থক্যও লক্ষনীয়| ২৫শে মে পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী যেখানে মহারাষ্ট্রে টেস্ট ৩,৭৯,১৮৫, কেরালায় ৬৩,০০৯, পশ্চিমবঙ্গে সেই সংখ্যাটা ২০শে এপ্রিল অব্দি ছিল ৫৪৬৯ আর মে মাসের ২৫ তারিখে ১,৪৮,০৪৯| বিগত প্রায় এক মাসে পশ্চিমবঙ্গে টেস্টের সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে| প্রতি পজিটিভ কেস পিছু টেস্টের সংখ্যা এই মুহূর্তে চল্লিশের (৩৮.৮) কাছাকাছি। ১০ই এপ্রিল নাগাদ এই সংখ্যাটাই ছিল ১৮| তুলনায় কেরলে ১০ই এপ্রিল নাগাদ এই সংখ্যাটা ছিল ৩৬.৭ আর ২৫শে মে’র হিসাব অনুযায়ী, ৭০.২, দুক্ষেত্রেই পশ্চিমবঙ্গের প্রায় দ্বিগুন| অর্থাৎ শুরু থেকেই পজিটিভ কেস পিছু বেশিমাত্রায় সন্দেহভাজন ব্যক্তির টেস্ট করে কেরলে যেখানে কোভিড প্রায় নিয়ন্ত্রণে, সেখানে এই রাজ্যে কম রোগলক্ষণযুক্ত বা উপসর্গহীন অথচ সংক্রমিত এমন অনেক মানুষ এখনও অধরা থাকার সম্ভাবনা প্রবল| ... ...
সাহিত্যের ভাষা ভৌগোলিকভাবে যেখানকারই হোক না কেন তা তো কাঁধে কাঁধ মিলিয়েই চলবে। সুতরাং, আমি যেখানেই থাকি, আমার মাতৃভাষা যাই হোক, এই ছোঁয়া ঠিক লাগবেই। কারণ, একমাত্র একজন লেখকই অনুসন্ধান করেন আর কোথায় কি লেখা হচ্ছে। ... বছর কুড়ি আগে কলকাতায় এই সাক্ষাৎকারটি দেন সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়। ... ...
মন্মথনগরে বাঁধ ভেঙেছে এক কিলোমিটার জুড়ে। জোড়াতালি দিয়ে বানানো বাঁধ। ভাঙার পর তার কঙ্কালসার চেহারা দেখলেই বোঝা যাচ্ছে মানুষের অসহায়ত্ব নিয়ে ছেলেখেলা করা হয়েছিলো। প্রায় ৬ হাজার বিঘে জমি জলমগ্ন। মানে নোনাজলের তলায়। ফসল নষ্ট হয়েছে, আগামী কয়েকবছর ফসল হবে না। গরু বাছুর মারা গেছে। পুকুর খালের মাছ মরে ভেসে উঠছে ব্যাপকহারে। আনুমানিক ৫০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংখ্যাটা আরো বেশি হতে পারে। নদীর ঠিক পাড়েই যাদের বাস তাদের সর্বস্ব গেছে। ... ...
ইদের শুভেচ্ছাসহ প্রকাশিত হলো আজকের বুলবুলভাজা - ছোট্গল্প, কবিতা, বড়গল্প, স্মৃতি, এই সময়ের কথা, এবং এক খন্ড ডিডির কিচাইন! ... ...
ঈদ বলতে বুঝি, কয়েকজনের বাড়িতে বচ্ছরকার নেমন্তন্ন। বিরিয়ানি, সেমাই, হালিম। ব্যস। আর রইল জাকারিয়া স্ট্রিট। আমাদের সেকুলারিজমের প্র্যাকটিক্যাল খাতা। ঈদ নিয়ে তাই আমার বলার কিছু নেই। করোনা, লকডাউন আর সাইক্লোনে লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়া সময়ে তেমন করে ঈদ এলই বা আর কই! আমি বরং বলি কয়েকজন খুচরো মানুষের গল্প, যাঁদের আজ, এই ঈদের সন্ধেয় আচমকা মন পড়ছে, অকারণেই। একজন বর্ণহিন্দুর চোখ দূর থেকে দেখেছে যে 'অপর'দের, তাদেরই কয়েকজন। ... ...
চাঁদরাত কথাটা খুব মিষ্টি। মায়ের ভালোবাসার মতন মিষ্টি। আলতো করে চোখ বুজলাম। আমি আমাদের বর্ধমানের গোলাপি বাড়িটার ঠিক সামনে দাঁড়িয়ে। পুরো পাড়াটা সবুজ নীল টুনি বাল্বে মায়াময়। ক্লাবের সামনে প্যান্ডেল... সুভানসাহেবের বাড়ি সামনেও প্যান্ডেল। ছোটো ছোটো বাচ্চারা নতুন জামা পরে সেজে গুজে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের কাছে ছোট্ট টাকার ব্যাগ। তাতে আছে জমানো টাকা। কাল অনেকে ঈদ সালামি পাবে। ... ...
প্রদীপ হল (হ্যাঁ হল) আদি গঙ্গার পাড়ে। ফলতঃ প্রদীপের ছাদ ও ব্রিজের রাস্তা একই লেভেলে। রাস্তার ওপর টিকিট ঘর। টিকিট কেটে সিঁড়ি বেয়ে নীচে নামতে হতো। প্রদীপে টিকিট ছিলো ৫০ ও ৬৫ পঃ। ব্যালকনি নাই। কারণ থাকা সম্ভব নয়। থাকলে টিকিটের দাম হতো ১টাকা। ও কেউ কিনতো না। ১টাকা দিয়ে সিনেমা দেখার বিলাসিতা ঐ অঞ্চলে কারুর ছিলোনা। সামাজিক অবস্থান। কে পি রায় লেন, ইউ কে মন্ডল লেন সংলগ্ন অঞ্চল। কলকাতার বেশ পুরোনো লালবাতি এলাকা ও বাংলার ঠেক। একটি সরকারী গাঁজা-চরস-আফিমের আবগারী দোকানও ছিলো। সে সত্যযুগে সরকার এসবও বেচতেন। হাজার হলেও জনকল্যানমূলক রাষ্ট্র। ফলে প্রদীপে সিনেমা দেখতে যাওয়ার নিষিদ্ধ যাত্রা কদাপি বড়দের কানে গেলে কান কামস্কাটকায় চালান অবধারিত। ... ...
কিন্তু পত্রিকার একটা ইসে আছে না? মানে ক্যারেকটার। সেই বুঝে খুব উদাসীন ডিরেকশন থাকে। যেমন ধরুন লেখা আছে "এবারে প্যাঁজ দিন"। আপনি যদি প্রশ্ন করেন, আরে,পেঁয়াজ যে দেবো, কতোটা তো বলবেন? তার কোনো সদুত্তর মিলবে না। বড়জোর উত্তর পাবেন, "দিন না, দিন না। এক খাবলা দিয়ে দিন"।তবে এও ঠিক মাপ জোক দেওয়াও মুষ্কিলের। সারা বিশ্বজুরে পাঠককুল - এক মাপে সবাইকে বোঝাবেনই বা কী করে? যদি বলেন তিনটে পেঁয়াজ দিন - তো সেটা কলকেতার তিনটে বিমর্ষ মুড়ির মোয়া সাইজের হতে পারে আবার টেক্সাসের পাঠিকার কাছে থান ইঁট সম ইডাহোর রাক্ষুসে আলুও হতে পারে। ... ...
জীবনে এতো রহস্য কেন এটা নিয়ে আমি ভেবেছি। আমার এই লেখাগুলি হয়ত সেইসব রহস্য কিনারা করার এক চেষ্টা। আমি একসময় খুবই যুক্তি দিয়ে চিন্তা করতাম। সেইসময়ে, বা তার কিছু পরে রফিকুন্নবীর সাথে আমার দেখা। এরপর থেকে রহস্য নিয়ে আমার ভাবনা চিন্তার অনেক বদল হয়েছে। রফিকুন্নবী বলেন, কী মিয়া এইসব কী কও! মিস্ট্রি থাকব না? তাইলে থাকলো কী! মিস্ট্রি ইজ দি ইন্ট্রিগ্রাল পার্ট, ইন্ট্রিগ্রাল বুঝো তো, মানেই হইল ধরো মূল একটা জিনিস, অব লাইফ। তাই মিস্ট্রি কখনো সলভ হয় না। আমি বললাম, সলভ হয় তো। অনেক হয়। শার্লক হোমসীয় কার্যকলাপ হয় তো। রফিকুন্নবী তখন বিরক্তির সাথে আমার কথা উড়িয়ে দেন। বলেন, ধুর মিয়া! মিস্ট্রি কখনো সলভ হয় না, একটা গেলে ঐ জায়গায় আরেকটা আসে। সলভ দিয়া মিস্ট্রি বিষয়ে ভাবা হইল একটা ফান্ডামেন্টাল মিসটেক। ভাববা রিপ্লেসমেন্ট দিয়া। মানে ঐ রহস্য সইরা কোনটা আসলো। ... ...
রহিমা খালা এক বাসাতে থেকে কাজ করার কথা বলল। ফুলবানু অনেক ভেবেচিন্তে রাজি হলো। খুব বড়োলোকের বাসা। থাকা-খাওয়া ওখানেই। মাসে বেতন পাঁচ হাজার টাকা। একসাথে এত টাকা ফুলবানু কল্পনাও করতে পারে না। তবে প্রথম মাসের বেতন থেকে দু’হাজার টাকা খালাকে দিতে হবে। সকাল থেকে রাত অবধি কাজ করতে হয়। সমস্যা বাধল রান্না করা নিয়ে। তার হাতের রান্না ও-বাড়ির কেউ মুখে তুলতে পারে না। পারবেই বা কেমন করে? সে কি বড়োলোকের খাওয়ার মতো রান্না করেছে কোনোদিন? নাকি খেয়েছে কোনোদিন? সমস্যা আরও আছে। এ বাড়িতে রান্না, তরকারি গরম করা, ঘর মোছা, কাপড় কাচা সবই হয় মেশিনে। ওগুলোতে হাত দিতে বড়ো ভয় করে ফুলবানুর। সে রান্না করেছে ক্বচিৎ-কদাচিৎ। ইটের চুলা বানিয়ে ভাত আর সবজি রান্না করেছে বটে; তবে সেই রান্না কি এ বাড়ির মানুষ মুখে তুলতে পারে? খালাম্মা জানিয়ে দিলেন, এ মাস গেলে বেতন দিয়েই বিদায় করে দিবেন। ও-বাড়িতে একটাই ছেলে। ভার্সিটিতে পড়ে। বড়ো ছেলে বিয়ের পরে বউ নিয়ে এই ঢাকা শহরেই থাকে। বউ এর সাথে মায়ের বনিবনা না হওয়ায় বড়ো ছেলে পৃথক বাসা নিয়েছে। ... ...