আমার জীবনে দেখা একটা ইন্টারেস্টিং ক্যারেক্টার হলো প্রত্যয়। খুব সুন্দর করে কথা বলতে পারে সে। আর সবসময়ই হাসছে। কেউ খারাপ কথা বললেও হাসছে,ভালো কথা বললেও হাসছে। পরিবার নিয়ে আমাকে দেখতে এসেছিলো প্রত্যয়। সেখানেই আমাদের প্রথম আলাপ। কথাবার্তা প্রায় পাকা হয়ে যাওয়ার পর আমি ওকে বললাম, আমার এরকম বিয়ে পছন্দ না। সে হাসতে হাসতে বললো, তাহলে কিরকম বিয়ে পছন্দ? গ্রান্ড ওয়েডিং? নায়ক-নায়িকাদের মতো? আমি না সূচক মাথা নেড়ে চুপ করে বসে রইলাম। তার কয়দিনের মধ্যেই যখন ... ...
বিজয়া মুখোপাধ্যায়ের কবিতা আদ্যোপান্ত পড়া ও তা নিয়ে বিশ্লেষণ করার একটি চেষ্টা। ... ...
সিদ্ধার্থ যদি দুহাজার বছর আগে না জন্মে এই দুর্মর পলিটিকাল-কারেক্টনেসের যুগে জন্মাতেন, সুজাতার হাতে পায়সান্ন খেয়ে তাঁর আর বুদ্ধদেব হওয়া হতনা। বদলে হাজতে বসে পুলিশের পিটুনি আর মোটা চালের ভাত খেতেন। বৌদ্ধধর্ম লাটে উঠে যেত, নির্বাণ লাভ আরও কয়েক জন্ম পিছিয়ে যেত, কারণ মাথায় যা মামলা চাপত, তাতে মিনিমাম ১৪ বছর জেল। একে তো নাবালিকা সুজাতাকে ফুসলানোর অপরাধে শ্লীলতাহানির কেস। তারপর "বিয়ে করে বৌ-ছেলেকে ফেলে পালিয়েছিস?" বলে প্রতারণার চার্জ । রিগ্রেসিভ-প্রগ্রেসিভ চুলচেরা বিশ্লেষণে অভ্যস্ত সমবেত ভদ্রমহোদয় ও মহিলাগণ মিডিয়া এবং সোশাল মিডিয়ায় হাঁ করে কেসের ধারাবিবরণী গিলতেন, তারপর "বেশ হয়েছে, আর পালাবি?" বলে হাততালি মারতেন। ... ...
ইদানিং এমনকি জগদ্ধাত্রী পুজোর প্যান্ডেলেও ‘মায়ের পায়ে জবা হয়ে ওঠ না ফুটে মন’ বেজে চলতে দেখেছি --- একেবারে কালী প্রতিমা কেন্দ্রিক গান দিব্যি চালানো হচ্ছে জগদ্ধাত্রী পুজোয়, আসলে যিনি নাকি মা দুর্গারই একটা রূপ ! কী চূড়ান্ত গুরুচণ্ডালী ব্যাপারস্যাপার বলুন দেখি? ... ...
.সন্দেহবাতিক ........... ক্ষমতায় এসেই দেশের সব নাগরিককে ‘চোর’ ঠাওরানো আসলে একটা ‘মহান’ দ্বিচারিতা------- চৌকিদারকে চোর ধরে দেখাতে হয়, চোর চোর বলে চিৎকার করলে হয় না। সমস্যার কথা, এ ক্ষেত্রে চিৎকার শুধু নয়, গোটা দেশের নাগরিকের জীবনযন্ত্রণা বাড়িয়ে দেওয়ায় আগুয়ান ভূমিকা নিয়ে খলনায়কের ভূমিকায় প্রযুক্তি। প্রযুক্তি তো আর নিজে নিজে হাঁটতে পারে না, তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয় নিজেদের মতাদর্শ মতো- ‘নাচে কারা? তারা তারা !’ ... ...
বিলিতি কম্পানির বড় সাহেবদের জন্য সাপ্লায়ার সমূহ প্রেরিত "ডালা"। যত বড় সাহেব ততো বড়ো চ্যাঙারি। তাতে বাছাই করা ফল-বাদাম - বিস্কুট - চকলেট - রসে ডোবানো আনারসের "সুদর্শন" চক্র যেমনি থাকতো... থাকতো Gold Coin Apple Juice, সোডাপানি আর লাঠি হাতে বুড়ো ছাপ কালো বাক্সের লালজলের বোতল। কেন জানি সেটা দেখলেই আমার 'আবোলতাবোল' এর 'কাঠবুড়োর' কথা মনে হতো ! ... ...
আমি যেন একটা ঘাসের বনের মধ্যে শুয়ে আছি। মানুষের মাথা ছাড়িয়ে উঠে গেছে, এমন একটা ঘাসের বন। দূরে হয়তো একটা বাওবাব গাছ। যেমনটা আফ্রিকায় বা চাঁদের পাহাড়ে পাওয়া যায়, তেমন। ... ...
খুকীর বছর পাঁচেক বয়স পর্যন্ত ওরা ছিল কটকে। অধিকাংশ সময় বাবা থাকত না বাড়ী। কোথায় কোথায় সব ট্যুর করে বেড়াত। ট্যুর শব্দটাকে ভারী অপছন্দ করত ও। বাড়ীর খুব কাছে ছিল কাটজুড়ি নদী। বিকেল বেলা পরমেশ দাদা খেলতে নিয়ে যেত সেখানে। বাড়ীতে কেউ এলে সেখানে একটা পিকনিক মত হত। কাটজুড়ি নদীতে চরা-ই বেশী। খুকীর কির’ম ধারণা হয়ে গেছিল নদীর থেকে পুকুরে বেশী জল থাকে। সেই যে সেবার কোন্নগরে বেড়াতে গিয়ে পুকুর দেখতে চাইল আর ... ...
এটা আসলে ট্রেনের গল্প। আমার বাবা নেশায় ছিলেন হোমিওপ্যাথ, পেশায় রেল-কর্মচারী - বছরে দু-দুটো পাশ পেতেন আর আমরা পুজোর ছুটি, শীতের ছুটি দেদার ঘুরে বেড়াতাম এদিক-ওদিক। প্রায়ই প্ল্যান শুরু হতো পুষ্কর লেক দিয়ে, শেষ হতো পাশের পাড়ায় পুরীর বীচে। কখনো আবার হঠাৎ করে দেখতাম একগাদা কিচিরমিচির করা ফ্যামিলি নিয়ে চলেছি পাহাড়ে বা সমুদ্রে। ইস্কুল থেকে কলেজে উঠে তো আরো মজা, ফি বচ্ছর শিক্ষামূলক ভ্রমণ হয়, একজন অসহায় টিচার, আর একগাদা উচ্ছৃঙ্খল জনতা। আমাদের সেই ছোটো আর মাঝারি-বেলার সব গরমের ছুটি যদি একটা আঁতেল আর্ট ফিলিম হয়, তার ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক হবে শুধুই কু-ঝিক-ঝিক এবং ফাঁকে ফাঁকে 'চায়ে গ্রম চায়ে'। ... ...
বিজ্ঞানকে পছন্দ করি বা না করি, একে ছেড়ে থাকা আমাদের কারওর পক্ষেই সম্ভব নয়। সকালের ব্রেকফাস্ট থেকে রাতের ঘুম, বারেবারেই আমাদের বিজ্ঞানের শরণাপন্ন হতে হয়। বিজ্ঞানের শরণাপন্ন বলতে আমি মাইক্রোওয়েভ টেকনোলজি বা স্মার্টফোন টেকনোলজির কথা বলছি না। আমি বলছি রোজকার জীবনের নানা সিদ্ধান্তের কথা, যার পরতে পরতে জড়িয়ে রয়েছে বিজ্ঞানের নানা অন্ধিসন্ধি। কী রকম? ধরা যাক, আপনি সকালে জ্যাম-পাঁউরুটির বদলে ওটমিল খান। কেন? না, ছোটকাকুর ডাক্তার বন্ধু বলেছেন ময়দার জিনিষ না খেতে। কিন্তু তিনি এটা জানলেন কী করে যে ময়দা খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর? কী করে আবার, ডাক্তার মানুষ, তাই জানেন। উঁহু, উত্তরটা হল না। তিনি জানেন, কেন না, কেউ কোথাও এটা নিয়ে গবেষণা করে উত্তরটা খুঁজে বার করেছেন। ডাক্তারকাকু সম্ভবত কোনও জার্নালে পড়ে এটা জেনেছেন। ... ...
মধুর ঠোঁট থেকে সিগারেটটা পড়ে গেল। কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকে লোকটাকে আচমকা ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে ছুটে পালানোর চেষ্টা করল সে। পারলো না, আরও দু জন লোক কাছেই ছিল, একজন মধুকে ল্যাং মারল, সে উলটে পড়ে যেতেই চার জন মিলে তাকে ধরে পিছমোড়া করে হাতে হাতকড়া লাগিয়ে দিল। তারপর কোমরে দড়ি পরিয়ে ঠেলতে ঠেলতে নিয়ে চলল পাশের গলির দিকে, সেখানে দাঁড়িয়ে আছে একটা পুলিশের গাড়ি। মধুকে তাতে তুলে বেরিয়ে গেল গাড়িটা। আশেপাশে জড়ো হওয়া লোকেরা হাঁ করে তাকিয়ে থাকল। ... ...
তাছাড়া সেদিন কি শুধু সুকল্প তাকে মুক্তি দিয়েছিল? ঊর্মি সুকল্পকে দেয়নি মুক্তি? পুরুষতান্ত্রিক সমাজ নারীদের হাত ধরে ঘটে যাওয়া এই নিঃশব্দ বিপ্লবকে কোনোদিন স্বীকার করে নি করবেও না। কিন্তু তাতে ঊর্মীদের কৃতিত্ব কমে না। ... ...