এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  ইতিহাস  শনিবারবেলা

  • পূর্ব ইউরোপের ডায়েরি – ক্রোয়েশিয়া ৬

    হীরেন সিংহরায়
    আলোচনা | ইতিহাস | ৩০ জুলাই ২০২৩ | ১১১৭ বার পঠিত
  • জাদার অরগানের দিন


    রাগুসা / দুব্রভনিক


    দাবার চালে জিতে রাজা দ্রুঝিস্লাভ যে দেশটার দখল নিয়েছিলেন তার সঙ্গে বর্তমান ক্রোয়েশিয়ার চেহারা পুরোটা মেলে না। হাজার বছর ধরে দুব্রভনিক ছিল একটি বন্দর শহর ও স্বতন্ত্র রাজ্য – লাতিন নাম রাগুসা।

    বালটিক সাগর সংলগ্ন হানসা লিগের বন্দর শহরগুলির মত দুব্রভনিক একদা ছিল মুক্ত শহর এবং প্রজাতন্ত্র, আকারে ক্ষুদ্র হলেও ভেনিস রিপাবলিকের সঙ্গে তার তুলনা করা চলে। তাদের নৌবহর কেবল আদ্রিয়াতিক ও ভূমধ্যসাগর নয়, শোনা যায় ভারত অবধি পৌঁছেছে। ভেনিসকে পাশ কাটিয়ে স্থলপথে আমদানি করা সামগ্রী সে জাহাজে পাঠিয়েছে আজকের রটারডামে। আপন স্বাধীনতা বজায় রাখতে নিরন্তর লড়াই করেছে ভেনিসের বিরুদ্ধে। অটোমান সাম্রাজ্যের সঙ্গে চুক্তি মোতাবেক—উপকূলবর্তী খানিকটা জমি তুরস্ককে দান করে ভেনিসের সামনে একটা শিখণ্ডী খাড়া করেছে। *



    রাগুসা



    জনসংখ্যা আজ মাত্র ৪০,০০০! শ্যামবাজারে এর দ্বিগুণ লোক বসবাস করেন। ১৭৭৬ সালে স্বাধীনতা ঘোষণার অব্যবহিত পরে আমেরিকাকে যে সব দেশ স্বীকৃতি দেয়, তাদের মধ্যে দুব্রভনিকের নাম সপ্তম স্থানে—সুইডেনের পরে এবং ভেনিসের আগে। দাস ও ভূমিদাস প্রথা এরা বাতিল করেন ১৫শ শতাব্দীতে (১৪১৬): পর্তুগাল সেই ব্যবসার স্টার্ট আপ স্তরে আছে—দাস ব্যবসায়ে তাদের প্রথম পদক্ষেপ হবে তিরিশ বছর বাদে। আর ইংরেজ পাঠ্যপুস্তক পড়ে দাস ব্যবসায়ের বিজনেস মডেল বোঝার চেষ্টা করছে। পরের তিনশ বছর পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলিতে শেক্সপিয়ার, মার্টিন লুথার, দা ভিঞ্চি, ভলতেয়ার দেখা দেবেন। রেনেসাঁ রিফরমেশন আসবে; আর দাস ব্যবসায়ে সমৃদ্ধ ইউরোপীয় বণিকরা প্রতিষ্ঠা করবেন বিশ্ববিদ্যালয়—সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়বে জ্ঞানের আলো। একটা গোটা লিভারপুল শহর তৈরি হবে দাস-বেচা টাকার লাভে। লিবারতে, এগালিতে, ফ্রাতারনিতের স্লোগান ফরাসি দাস ব্যবসাকে বিভ্রান্ত করেনি। রাগুসা ঘোষণার পরে আরও চারশো বছর কেটে যাবে আমেরিকায় দাস প্রথা নিবারণ করণে। গেটিসবার্গ বক্তৃতায় লিঙ্কন “মানুষের দ্বারা, মানুষের জন্য, মানুষের সরকার”-এর যে ঘোষণা করেছিলেন, সেখানে দাসেদের কোনো ভূমিকা ছিল না। আরও একশ বছর কেটে যাবে তাদের ভোটের অধিকার পেতে। রাশিয়াতে ভুমিদাস প্রথা উচ্ছেদ হবে ৪৫৩ বছর বাদে। ১৩১৭ সালে সর্ব সাধারণের সেবা যে ফারমাসি বা দাওয়াখানা খোলা হয়েছিল সেটি আজও দৃশ্যমান।

    গ্রিস তথা কোনো ইউরোপিয়ান দেশে কর বাঁচানোর শুভ প্রয়াসে গ্রিক মালিকের জাহাজ লাইবেরিয়া বা পানামার পতাকা ওড়ায়। রাগুসার বাণিজ্য বহরের পতাকায় লেখা থাকত লিবারতাস—মুক্তি, স্বাধীনতা। কয়েকশ বছর যাবত তাদের জাহাজ বয়েছে পণ্যের পশরা – ভারতের রেশম, চিনের চা। কখনো বা স্থলপথে বস্তুসামগ্রী এসে পৌঁছেছে, যা দুব্রভনিকের জাহাজ আজকের আমাজনের কায়দায় ইউরোপীয় প্রাপকের ঠিকানায় হাজির করেছে। দুব্রভনিক (স্লাভিক ভাষায় ওক কাঠ) নামটা চাষাভুষোর মধ্যে চালু থাকলেও সরকারি দলিল দস্তাবেজে রাগুসা পেয়েছে পরিচিতি।

    এমনি এক ঐতিহাসিক বন্দরে বার্ষিক ফরফাইটিং কনফারেন্স উদ্বোধন করার সময় আহ্বায়ক শন এডওয়ার্ডস রাগুসার সংক্ষিপ্ত কাহিনি শুনিয়ে খুব নাটকীয়ভাবে বললেন, “বন্ধুগণ, বিগত তিরিশ বছরে আমরা নানান দেশে সমবেত হয়েছি, তবে দুব্রভনিক বা রাগুসার ইতিহাস হয়তো আমাদের ব্যবসার যথার্থ প্রতিফলন! এই শহর গড়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ের ভিত্তিতে যা থেকে আমাদের রুটি জোটে!”



    রাগুসা তার পাশে দুবরভনিক


    আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্কিঙে আমদানি রপ্তানির ব্যবসা – ট্রেড ফাইনান্স – অত্যন্ত জরুরি বিষয়। মাল কিনুন বা বেচুন, সঠিক দাম ক্রেতা তাঁর নিজের প্রার্থিত মুদ্রায় পেতে চান। কেবল অর্ডারের ভিত্তিতে সুদানের ক্রেতাকে ছ-মাসের কড়ারে আপনি কি এক হাজার জুতো পাঠাবেন? পাঠাবেন না, কারণ সে ক্রেতা সময়মত ডলারে দাম দিতে সক্ষম হবে কিনা আপনার সন্দেহ আছে। অনাদায়ী জুতোর দাম উদ্ধার করতে আপনি খারতুমের আদালতে যেতে চান না। তাই আপনার ব্যাঙ্কের কাছে গিয়ে বলেন, ‘আমার বিক্রির দামটা আমাকে এখুনি দিয়ে দিতে পারেন? অথবা গ্যারান্টি দিতে পারেন, যে আমার দেনদার ডুবে গেলে, কি সুদান দেউলে হলেও, আমার পাওনা টাকা হাপিশ হবে না? আপনার কমিশন কেটে বাকিটা দিন’। সে ব্যাঙ্কের হয়তো তেমন এলেম নেই যে ছ-মাসের জন্য সুদানের কোনো জুতোর দোকানের ঝুঁকি নেবে। তারা তখন অন্য মক্কেল খোঁজে যে সেই ঝুঁকি নেবে, যদিও তার খরচা আছে। এই ঝুঁকি কেনাবেচার ধান্দার কেতাবি নাম ফরফাইটিং। কথাটা এসেছে ফরাসি শব্দ আ ফরফে বা পরিত্যাগ থেকে।

    সারা বছরে যে সব ব্যাঙ্কের সঙ্গে ব্যবসা চলেছে, তারা একবার এই মচ্ছবে মিলিত হয়। কেবল ফোনে যাঁদের সঙ্গে কথা হয়েছে—এমন মানুষকে চাক্ষুষ করি, পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে এক পাত্তর পান, নতুন পরিচয়ের সুযোগ। এর পোশাকি নাম—বার্ষিক ফরফাইটিং কনফারেন্স। বসে নানান দেশে। লিস্টি লম্বা। অস্ট্রিয়ার বাদ ওয়ালটারসডর্ফ থেকে ইংল্যান্ডের বাথ, বার্লিন, দুবাই, সাঙ্কট মরিতস এমনকি কেপ টাউন গেছি। ১৯৯৬ সালে কপালে শিকে ছেঁড়ার সুবাদে মাইয়ামি। দুর্জনে আড়ালে বলেন ভাগ্য ভালো: যেখানে লোকে ট্যাঁকের পয়সা খরচা করে বেড়াতে যায়, সেখানে এরা যাচ্ছে কাজের বাহানায়!

    এবারের অধিবেশন দুব্রভনিক। ক্রোয়েশিয়ায় আমার যাতায়াত আছে, জাগ্রেবের সঙ্গে মোলাকাত হলো কয়েকবার। তবে দুব্রভনিক একবারে আলাদা। এক অসামান্য শহর যাকে ভূমধ্যসাগরের মুক্তো বলা হয়—পাথরের দেয়াল দিয়ে ঘেরা। লাল টালির ছাত! প্রথমবার ছবি দেখেই মনে হয়েছিল সমুদ্রের ভেতরে গিয়ে শহর ও কেল্লা বানানোর কি প্রয়োজন ছিল? ডাঙ্গায় জমিজমা কি অপ্রতুল? অনেক ঝড় ঝাপটা বিশেষ করে সাড়ে চারশো বছর আগের বিধ্বংসী ভূমিকম্প, ১৯৯২-১৯৯৫ সালের গৃহযুদ্ধ – এই সব সামলেও দুব্রভনিক একবারে পিকচার পোস্টকার্ডের শহর। কাশীকে হার মানানো সরু সরু গলি। সেখানে পসরা সাজিয়ে বসে আছেন দোকানিরা। চলমান জনতার স্রোত। সকল ইউরোপীয় ভাষা শোনা যায়! স্ত্রাদুন নামক ৩০০ মিটারের সদর পথে হাঁটলে মনে হয় একটা রূপকথার ভেতরে ঢুকে পড়েছি স্বপ্নে। ঘুম ভাঙলেই হয়তো দেখব লন্ডন টিউবে বসে আছি!



    স্ত্রাদুন ডিসেম্বর ১৯৯১

    স্ত্রাদুন ২০১৫



    রাগুসার ভাষা

    “এরা ইতালিয়ান কি কোনদিন শেখেনি বা মনে রাখেনি? এককালে তো ল্যাটিন চালু ছিল, ভেনিস আনকোনার সঙ্গে বিস্তর বাণিজ্য করেছে। তার লেজার লেখা হতো কোন ভাষায়?”

    এমনি বেমক্কা প্রশ্ন করলেন ইতালিয়ান ব্যাঙ্ক মনটি দেই পাসকি দি সিয়েনার (বিশ্বের প্রাচীনতম ব্যাঙ্ক, খাতা খোলে ১৪৭২ সালে) মারকো। একটু কিছু কেনাকাটা করতে শহরে গিয়েছিলেন – ভাষা নিয়ে নিতান্ত ঝঞ্ঝাটে পড়েন। আমাদের এই প্রি-ডিনার ককটেলে সেই প্রসঙ্গ তুললেন। ইতালিয়ান স্বাভিমানকে বাঁচিয়ে কেউ বা বললেন এককালে হানসা লিগের বন্দরে তো জার্মান চালু ছিল। শুধু হামবুর্গ লুইবেক নয়, এষ্টোনিয়ার রেভাল (টালিন), লাটভিয়ার রিগা, সুইডেনের ভিসবু সহ ডজন দুয়েক হানসা লিগের সদস্যের বাণিজ্য ভাষা ছিল জার্মান (বহু ক্ষেত্রে মেঠো জার্মান -প্লাত ডয়েচ, এখনো কান পাতলে যা হামবুর্গ ব্রেমেন শোনা যায় – আমার জার্মানি গ্রন্থে বিস্তারিত লিখেছি) সে সব দেশে জার্মান এখন দুর্বোধ্য। হানসা লিগের দিন শেষ হলে রাশিয়ান রাজভাষার উপদ্রব সহ্য করেও টালিন ভোলেনি এস্টোনিয়ান, রিগা তার লাটভিয়ান। একদা জার্মান ছিল বিজনেস ল্যাঙ্গুয়েজ (এমনকি ফিনল্যান্ডেও) আজ ব্যবসা চলে তাদের নিজের নিজের মাতৃভাষা প্লাস ইংরেজি দিয়ে। মারকোর ইতালীয় মাচো বেলুন ফুটিয়ে দিয়ে আরেকজন বললেন, ‘আজকের ইতালির সীমানার বাইরে ইউরোপে ইতালিয়ান বলে কে? অথচ ইউরোপে তোমাদের এত বড়ো রাজত্ব ছিল’ (কথাটা সম্পূর্ণ ঠিক নয়—আদ্রিয়াতিক উপকূল বরাবর এখনো ইতালিয়ান বলে হালে পানি পাওয়া যায়—মাসিদোনিয়া আলবানিয়াতে আমার স্ত্রীকে ভাঙ্গা ইতালিয়ান বলে দর দাম করতে দেখেছি – কে জিতেছে বলা শক্ত)। আমার বন্ধু অস্ট্রিয়ান মারটিন বললে, ‘এককালে হাঙ্গেরিয়ান চলত শুনেছি’। **

    শুধু ইতালিয়ান কেন, নেপোলিয়নের ঠেলা সামলাতে কিছুদিন ফরাসি পরে একশ বছর জার্মান ছিল সরকারি ভাষা - উনো দুয়ে ত্রের পরে আইনস তসোআই দ্রাই শিখেও আজ তারা ক্রোয়েশিয়ান এবং ইংরেজিতে গোনে! এই সবের মাঝে লোক ঠকিয়ে দু-পয়সা করেছে ভাষা জানা উকিল মোক্তার আর অনুবাদকেরা (তারা সরকারি দফতরের সামনে চাষাভুষোদের আর্জির বুলি তৎকালীন সরকারি ভাষায় তর্জমা করত)। এটাও মনে রাখা ভালো—একশ বছরের হাবসবুরগ শাসনকালে ক্রোয়েশিয়ানে লেখাপড়া করার ওপরে বাধা বন্ধ সৃষ্টি করা হয়। তাঁরা কখনো ভাবেননি এই সুন্দর দেশটা ছেড়ে একদিন চলে যেতে হবে। হাবসবুর্গ রাজত্বের অবসানে (১৯১৮) দুব্রভনিক যোগ দেয় স্লোভেন ক্রোয়াট সার্বদের সঙ্গে, যা কালে ইয়ুগোস্লাভিয়া নাম নেবে এবং ৪৫ বছর বাদে দেখা দেবে ক্রোয়েশিয়া। শেষ অবধি জাহাজ মালিকদের নয়, চাষাভুষোদের জয় হল—তাঁরা যে ভাষায় কথা বলতেন সেটাই কালক্রমে সারবো ক্রোয়াট হয়ে সারা যুগোস্লাভিয়ার রাষ্ট্রভাষা হল (স্লোভেনিয়ান খানিকটা আলাদা)।

    দুব্রভনিকের আরেক দিন—স্বাধীনতা কোনো মূল্যেই বেচা যায় না

    ‘ছবির মতন’—এ কথাটি সম্ভবত দুব্রভনিকের কথা মনে রেখেই বলা হয়েছিল! দুব্রভনিক যারা গেছেন তাঁরাই জানেন, এ শহরের দ্রষ্টব্যের তালিকা দেওয়া অর্থহীন—গোটা শহরটাই অনন্য। ইউনেস্কো তাকে সেই সম্মান দিয়েছে। ১৯৯১ সালে ক্রোয়েশিয়া আপন স্বাধীনতা ঘোষণা করলে পর সারবিয়ান, মনটিনেগ্রিন ভাই বেরাদর আক্রমণ করে দেশটাকে। বিচ্ছিন্নতাবাদী দুব্রভনিককের ওপরে বোমা বর্ষণ শুরু হয়। স্থল ও সমুদ্রপথে শহর অবরুদ্ধ। একটি দিনের স্মৃতি জেগে আছে আজও। ৬ ডিসেম্বর ১৯৯১ – একদিনে বিধ্বস্ত হয় আড়াইশো বাড়িঘর যার বেশির ভাগ ইউনেসকোর সুরক্ষিত তালিকার অন্তর্ভুক্ত। আজকের স্ত্রাদুনের চকচকে পথ দেখে ভাবা যায় না—মাত্র তিরিশ বছর আগে সেটি ছিল ধ্বংসস্তূপ। সরু গলির ভেতরে দেখবেন কিছু ক্ষত চিহ্ন আর প্রায় সর্বত্র দেখবেন বহু ভাষায় লিখিত (এমনকি হিন্দিতে) একটি পোস্টার, একটি স্লোগান:
    স্বাধীনতা কোনো মূল্যেই বেচা যায় না



    স্বাধীনতা বিক্রির জন্য নয়



    আজকের দুব্রভনিক

    দলে কয়েকজন আমেরিকান ব্যাঙ্কার ছিলেন। যাদের নিজের ইতিহাস মেরে কেটে চারশো বছরের, তাদের চোখে দুব্রভনিক ডিজনিল্যান্ডের মত। এমনি সাজানো গোছানো দৃশ্যপট শুধু সিনেমাতেই দেখা যায়! এই মধ্যযুগীয় শহর আজকের ডিজিটাল যুগে আপন স্থান করে নিয়েছে। জর্জ মারটিনের কাল্পনিক উপাখ্যানের প্রথম পর্বের নাম গেম অফ থ্রোনস—আইকনিক দৃশ্যপট কিংস ল্যান্ডিং দুব্রভনিকে চিত্রায়িত হয়।



    আজকের দিন


    কাল্পনিক ওয়েস্টেরোস ও এসোস মহাদেশের সাতটি রাজত্বের গল্প নিয়ে এই টেলিভিশন সিরিজটি অসম্ভব জনপ্রিয়। এর বিশাল অংশ দুব্রভনিকে তোলা হয়। সেই একই ব্যাপার স্টার ওয়ার্স নিয়ে। তাঁরাও দুব্রভনিককে সেট বানিয়ে ফেলে দূর দেশের জনতাকে আনন্দ আর এই শহরকে ধনসম্পদ প্রদান করেছেন। অতএব স্টার ওয়ার্স ট্যুর চলছে রমরম করে। আজকাল ওভার ট্যুরিস্টেড শব্দটি শোনা যাচ্ছে ইউরোপের কোনো কোনো অঞ্চলে—বার্ষিক ভ্রমণকারীর সংখ্যা সেখানকার জনসংখ্যার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। গ্রিসের রোডস (জনসংখ্যা সওয়া লক্ষ, টুরিস্ট পঁচিশ লক্ষ) আর ক্রোয়েশিয়ার দুব্রভনিক (চল্লিশ হাজার অধিবাসী, পনেরো লক্ষ টুরিস্ট) তার উদাহরণ।

    সরকারি গাইড যখন সর্বসমক্ষে ঘোষণা করে মার্কো পোলো কোনো ইতালিয়ান নাবিক অথবা ভাগ্যসন্ধানী পুরুষ নন, তিনি আদতে ক্রোয়েশিয়ান, দুব্রভনিকের কাছাকাছি করচুলা দ্বীপের লোক, তখন আমাদের জনতা নানানভাবে বিস্ময় প্রকাশ করেন। সেকি, আমরা তো জানি মার্কো পোলো ইতালিয়ান—মানে ভেনিশিয়ান! আমাদের ক্রোয়েশিয়ান গাইড সে প্রতিবাদকে সসম্ভ্রমে অবহেলা করে জানায় মার্কো পোলো করচুলা দ্বীপে জন্মান, ৭০ বছর বয়েসে ভেনিসে সমাহিত হন। এর মধ্যে বাবা ও কাকার সঙ্গে আজকের বেজিং ঘুরে আসেন, কুবলাই খানের সরকারি অফিসে কিছুদিন চাকরিও করেন। ক্যাথে (চীনের অন্য ইউরোপীয় নাম যা থেকে আজকের ক্যাথে প্যাসিফিক বিমান প্রতিষ্ঠান), ভারত পারস্য দেশ ঘুরে ভেনিসে মহা সম্মানিত হন। পরে ভেনিসের হয়ে জেনোয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন। মার্কো পোলোর ভূ-পর্যটনের কিছু গল্প বাজারে চালু ছিল, তাই হয়তো তাঁর জেলখানায় বিশেষ আরামের প্রবন্ধ করা হয়। হাতে অনেক সময়। পিসা শহরের রুস্তিকেলো নামক তাঁর কারাগারের সাথী। সারাদিন কোনো কাজকম্মো নেই (ঘানি নামক বস্তুটি—চাক্কি পিসিং—ইতালিয়ানরা অন্য কাজে ব্যবহার করত)। সময় কাটান তাঁর সঙ্গে আপন ভ্রমণের গপ্প করে। রুস্তিকেলো একদিন বললেন, ‘গুরু, এ তো ফাটাফাটি স্টোরি, বাজারে কাটবে’। যেমন শুনলেন রুস্তিকেলো, তেমনি লিখে গেলেন—ফ্যাক্ট চেকিঙের ব্যারাম তাঁর ছিল না। সেই বই পরে ভুবন বিদিত হল, আপন জীবৎকালেই তিনি বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। আমরা কলকাতায় বসে সেই সব কাহিনি জানলাম।

    এ অবধি সব ঠিক ছিল, কিন্তু ক্রোয়েশিয়ানরা দাবী করলেন ১৩শ শতাব্দীতে ভেনেশিয়ান রাজত্বে সবাই মোটে ভেনেশিয়ান ছিলেন না। যেমন ধরুন, ব্রিটিশ ভারতের আপামর জনতা ব্রিটিশ ছিলেন না! ব্রিটিশ পাসপোর্ট তো দূরের কথা। কালক্রমে ক্রোয়েশিয়ান দাবি জোরদার হল। তাঁরা জানালেন, পোলো পরিবার করচুলা দ্বীপের অধিবাসী ছিলেন, অতঃ ক্রোয়েশিয়ান। সম্প্রতি চীন দেশের ইয়াংজু শহরে মারকো পোলো মিউজিয়াম উদ্বোধন করতে প্রাক্তন ক্রোয়েশিয়ান রাষ্ট্রপতিকে ডাকা হয়। ইতালিয়ানদের ডাকা হয়নি বলে তারা অদ্যাবধি ক্ষেপে আছে। তার ওপর আবার করোনা ভাইরাস এল সে দেশ থেকে! আমার সনির্বন্ধ অনুরোধ—কোনো ট্যুরিস্ট অফিসের প্ররোচনার পাল্লায় পড়ে কদাচ করচুলা দ্বীপে যাবেন না। আসতে যেতে সারাদিন লাগে। আর যে ধ্বংসস্তূপকে পোলো পরিবারের আবাস বলে নির্দিষ্ট করা হয়, অমন ভাঙাচোরা বাড়ি সারা ইউরোপে ছড়িয়ে আছে। তার যে কোনো একটার ছবি তুলে বন্ধুজনকে মার্কো পোলোর আদি বাসস্থান বলে দিব্যি চালিয়ে দিতে পারেন। বরঞ্চ হাতে সময় থাকলে দুব্রভনিক থেকে দ্বীপ পরিক্রমায় যাবেন। এক দিনেই লোপুদ শিপান আর কোলোচেপ এই তিনটে দ্বীপে যাওয়া যায়। সঙ্গে তোয়ালে ও স্নানের পোশাক সঙ্গে নিয়ে যাবেন – সর্বত্র সমুদ্র স্নানের সুবিধে আছে।

    জাদারের সূর্যাস্ত

    ক্রোয়েশিয়া মানেই দ্বীপমালা, সমুদ্রতট। যদি কখনো পারেন, দুব্রভনিক থেকে আদ্রিয়াতিকের উপকূল ধরে সাড়ে তিনশ কিলোমিটার খাড়া উত্তরে চলে আসুন জাদারে। আড়াই হাজার বছরের পুরনো রোমান শহর, পথঘাট চুনাপাথরের, ইতিহাস লেখা আছে প্রতি ইঞ্চিতে, যার ওপর হাজার বছর ধরে হাজার হাজার মানুষ পথ হাঁটিয়াছে। এক কালে দেশের রাজধানী ছিল জাদার। আজকের কলা কৌশলীরা এই সাগর বেলায় বানিয়েছেন এক আশ্চর্য অর্গান—যা বেজে ওঠে সমুদ্রের ঢেউয়ের সামান্য ছোঁয়া পেলে।



    হাজার বছর ধরে হাঁটিয়াছি জাদারের পথে!

    জাদারের সোনা ঝরা সন্ধ্যা


    সমুদ্র এখানে যেন এক বিশাল প্রেক্ষাপট। সেথা নানা রঙ্গের খেলা চলিতেছে সারাক্ষণ! আলফ্রেড হিচকক বলেছিলেন, জাদারের সূর্যাস্ত তাঁর কাছে সবচেয়ে স্মরণীয়। আমার বিশ্ব দর্শন নিতান্ত সীমিত। তবে জাদারের উপকূলে অর্গানের সুর শুনতে শুনতে যখন আদ্রিয়াতিক সাগরে সূর্য অস্ত যেতে দেখি অনেক ক্ষণ কথা বলতে পারিনি।





    পাদটীকা ১
    * দুব্রভনিক তথা ক্রোয়েশিয়ার একটি বিচিত্র ভৌগোলিক ধাঁধা আছে। এই শহর ও তৎসংলগ্ন এলাকা বাকি ক্রোয়েশিয়া থেকে বিছিন্ন (যার পোশাকি নাম এক্সক্লেভ, যেমন কালিনিনগ্রাদ)। ক্রোয়েশিয়ার সুদীর্ঘ সমুদ্র তটরেখায় ২০ কিলোমিটার অংশ সেটি বসনিয়া-হারজেগোভিনার ভাগে পড়েছে। তার কারণ খুঁজতে তিনশ বছর পিছিয়ে যেতে হয়। ক্রমাগত ভেনিসের আক্রমণ থেকে বাঁচবার জন্য ১৬৯৮ সালে কার্লোভিতসের সন্ধি অনুযায়ী এই সমুদ্র তট অটোমানদের দেওয়া হয়। তারা তখন বসনিয়ার মালিক। তার মানে স্থলপথে দুব্রভনিক আক্রমণ করতে গেলে ভেনিসকে লড়তে হবে প্রথমে অটোমানদের সঙ্গে। নিজের সমুদ্রতট কেটে ভেনিসের যাত্রাভঙ্গ। ইয়ুগোস্লাভিয়ার আমলে কোনো সমস্যা ছিল না—বসনিয়া ক্রোয়েশিয়া একই দেশ। কিন্তু আজ ক্রোয়েশিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য, বসনিয়া নয়। কাজেই তটরেখা ধরে দুব্রভনিক থেকে স্প্লিত যেতে দু-বার পাসপোর্ট দেখাতে হবে! গাড়ি নিয়ে মেজুগোরিয়ে যাবার সহজ পথ ছিল ক্রোয়েশিয়ার তটরেখা ধরে কিন্তু বারে বারে পাসপোর্ট দেখানোর ঝামেলা থেকে ছুটকারা পেতে দুব্রভনিক থেকে বসনিয়া ঢুকে দীর্ঘতর পথপরিক্রমা করেছি। ক্রোয়েশিয়া চায় একটি দীর্ঘ সেতু বানিয়ে আকাশপথে বসনিয়ার বেড়া অতিক্রম করতে – খরচা দেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তবে সে প্রকল্প আপাতত নীল নকশার বোর্ডে আটকে আছে।

    পাদটীকা ২
    ** যে সব দেশে সিটিব্যাঙ্কের ব্রাঞ্চ ছিল না, তাদের তদারকির ভার দেওয়া হতো কোনো নিকটবর্তী শাখাকে। যেমন বালটিক দেশগুলি (লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, এস্টোনিয়া) সিটি ওয়ারশর জিম্মায় ছিল। বলকানের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিটিব্যাঙ্ক হাঙ্গেরিকে। আমার সহকর্মী আন্দ্রেয়া আরভাইয়ের সঙ্গে স্থানীয় ব্যাঙ্কের সাক্ষাৎকারে এক প্রশ্নের সম্মুখীন হই – ক্রোয়েশিয়ার ভার কেন বুদাপেস্তের হাতে? লন্ডন নয় কেন? কষ্টেসৃষ্টে বোঝালাম—এটা ব্যাঙ্কের প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত: লন্ডনের তুলনায় বুদাপেস্ত–দুব্রভনিকের প্লেন ভাড়া কম পড়ে! ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে পরিচয় বাড়লে বুঝেছি—বহু বছর কেটে গেলেও হাঙ্গেরিয়ানদের প্রতি ক্রোয়েশিয়ানদের বিদ্বেষ আজ অনেক গভীরে। বলকানে একটি প্রবাদ প্রচলিত আছে: তারা কিছুতেই একমত হতে পারে না, দুটি বিষয় বাদে – রাকিয়া নামক শ্নাপ্স বা উচ্চস্তরের নীট অ্যালকোহলের প্রীতি এবং হাঙ্গেরিয়ানদের প্রতি ঘৃণা-মিশ্রিত অবজ্ঞা। হাবসবুর্গ আমলের শেষ দিকে দ্বৈত শাসন চালু থাকলেও অস্ট্রিয়ান নয় হাঙ্গেরিয়ানরা বেশি উপদ্রব করে এদেশে। আজকের জাগ্রেবে সবচেয়ে সম্মানিত স্ট্যাচু বান ইয়েলাচিচের, যিনি অস্ট্রিয়ানদের চাকরি করেও ক্রোয়েশিয়ার স্বাধীনতার সন্ধানে হাঙ্গেরিয়ানদের বেধড়ক পেটান।


    ক্রমশ...

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ৩০ জুলাই ২০২৩ | ১১১৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Debanjan Banerjee | ৩০ জুলাই ২০২৩ ০৮:২২521898
  • হিরেনবাবু 
     
                 অনেক ধন্যবাদ আপনার "Work and Wanderlust: Memoirs of a Wandering Banker" বইটির উদ্ভোদনের সময়ে আমাকে আমন্ত্রনের জন্য | আপনার বইটি যথারীতি অসাধারণ হয়েছে | এই লেখাটি আপনার আরেকজন বাঙালী থেকে বিশ্বনাগরিক হয়ে ওঠবার দলিল | আপনি আপনার সুদীর্ঘ কর্মজীবনে যেসব অসংখ্য প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন দেখেছেন যেমন হাতে লেখা চিরকুট ও রসিদ থেকে ইমেইল বা হোয়াটসআপ বা ইউরোপের সোভিয়েত যবনিকার পতনের মুহূর্তগুলো আমার মতে ইতিহাসের অমূল্য দলিল হয়ে থাকুক | আপনার লেখার শেষ অধ্যায়টি যেটি হচ্ছে "Roots" অসাধারণ | এই লেখাটি থেকেই আপনার বিশ্বনাগরিক রূপটি ফুটে উঠলো | 
     
     
               শুভেচ্ছা নেবেন | কবে আবার আসবেন কোলকাতাতে ? আপনার লন্ডনের মোবাইল নম্বর কি ?
  • হীরেন সিংহরায় | ৩০ জুলাই ২০২৩ ১৪:৪০521912
    • অশেষ ধন্যবাদ ! পরবর্তী ইংরেজি বই ( মাই লাইফ এ্যাট সিটি) প্রস্তুতির পথে! ভালো থাকুন 
       
      লন্ডনের নম্বর এবং হোয়াটসএ্যাপ
       
      ০০৪৪ ৭৮৮৭ ৬২৬৭৩০
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন