এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  উপন্যাস

  • কোথায় তোমার দেশ গো বন্ধু? পর্ব ৩

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ২১ নভেম্বর ২০২১ | ১৫২৬ বার পঠিত
  • (৩)

    ১লা এপ্রিল, সোমবার ডিটেনশন সেন্টার

    সাদা দেয়াল। বিদ্যাভারতী স্কুল। আগেই বলেছি যে এখন এটা ডাউটফুল ক্যাটেগরির জন্যে ডিটেনশন সেন্টার। এখানে রাখা হয় তাদের যাদের এনআরসি বা ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ সিটিজেন্সে নাম নেই বা নাম কাটা গেছে। আমি দ্বিতীয় দলের।

    সেই যে চিঠিপত্র, ভাড়ার রসিদ এসব দেখানোর পর আমাকে নীচে ডাকল তখন টের পেলাম - খেলা শেষ, হেরে গেছি।

    রসিদটা ছিল আমার কাকা বিনয়কৃষ্ণ দত্তের নামে। আবার বাড়িওয়ালার নাম শেখ সিরাজুল। তো আমি কী করব? পার্কসার্কাসের অধিকাংশ বাড়িওলা তখন হয় সিরাজুল, নয় আশরাফুল, নয় মুশফিকুর! বিশেষ করে বালু হক্কাক লেনে। সেটা কি আমার দোষ? ওই বাড়ি, ওই পাড়া কি আমি ঠিক করেছিলাম? বিনয়কৃষ্ণ আমার কাকা, উনি ঠিক করেছিলেন। এখন উনি কি ভেবে ও’পাড়ায় ভাড়া নিয়ে ছিলেন সেটা এত বছর পরে আমি কোত্থেকে বলব? ধেত্তেরি! সামনের গোলাবুদ্ধির লোকটা কেন বুঝতে পারছে না - এই দুনিয়ায় অনেক কিছুই, বলতে গেলে কোন কিছুই আমার ইচ্ছায় হয়নি। দেশভাগ আমি করিনি কারণ আমি তখন জন্মাইনি। বিনয়কৃষ্ণ কেন আমার কাকা সেটা আমি কী করে জানব? আমি কোন ঘরে জনম নেব সেটা কি জানতাম? নাকি এই বঙ্গভূমে কবে অবতীর্ণ হব সেটা ঠিক করেছিলাম?

    ওরা বলল-কী আগড়ম বাগড়ম বকছেন মাস্টারমশাই? আপনার মাথাটাথা ঠিক আছে তো? এই সময় মাথা ঠিক রাখা খুব দরকার, বুঝলেন? আমরা আপনার ভাল চাই, কিন্তু আমাদের হাত-পা বাঁধা। আপনি যে একটাও কাগজ দেখাতে পারছেন না।

    বার্থ সার্টিফিকেট? নেই। ভোটার রোলে নাম? নেই। উচ্চ মাধ্যমিক বা মাধ্যমিকের মার্কশিট? আছে, কিন্তু তাতে জন্ম তারিখ লেখা নেই,-- তাহলে ওটা না থাকারই মত, কোন কাজের নয়। অ্যাডমিট কার্ড? নেই।

    এবার জুনিয়র লোকটি শুরু করে। বাবা নাকি আর্মিতে ছিলেন, দেশের জন্যে সীমান্তে লড়াই করেছিলেন। কিন্তু সব শোনা কথা, মুখের কথা। একটা কাগজ নেই; না রিলিজ অর্ডার, না পেনশনের ।

    আমি আর থাকতে পারি না। কোন কাগজ নেই মানে? এতগুলো চিঠি, বাড়ি ভাড়ার রসীদ? আমার আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, ব্যাংকের পাসবুক, গ্যাসের কাগজ, নিজের পেনশনের কাগজ!

    -- দেখুন মাস্টারমশায়! এক তো আপনার আধার কার্ড, ভোটার কার্ড আলাদা করে নাগরিকত্ব প্রমাণ করার জন্য যথেষ্ট নয়। এগুলো এখন যে কেউ মুড়িমুড়কির মত বানিয়ে নিতে পারে। আর ওই পূর্ব পাকিস্তানের খাম ও পোস্টকার্ডগুলো? ওগুলো না দেখালেই ভাল করতেন। সবগুলোতেই সবুজ চাঁদ ও তারা—পাকিস্তানের সিম্বল। এগুলো দেখেই আমাদের টপ বসের মেজাজ খিঁচড়ে গেল। নইলে একটা চান্স নিচ্ছিলাম।

    আমার রাগ চড়ে যায়। আরে গোমুখ্যুর দল! পাকিস্তান থেকে আসা পোস্টকার্ড ও লিফাফায় পাকিস্তানের চাঁদ তারা থাকবে না? তবে কি থাকবে? অশোক চক্র , সিংহ এইসব? ন্যাকাচৈতনের দল!

    --বসেরও একই কথা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও আপনার বাবা-মা-ঠাকুমা সব পাকিস্থানে ছিলেন। আপনার জন্ম যে ময়মনসিং জেলার সরকারি হাসপাতালে বা গাঁয়ের বাড়িতে কোন দাইয়ের হাতে না হয়ে কোলকাতায় হয়েছে তার কোন প্রমাণ আপনার কাছে আছে? নেই তো, তাহলে? আর আপনার কাকার কোলকাতায় ১৯৪৮ সালে এসে বাড়িভাড়া নেওয়া? তাতে কি হয়? সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট পাস হয়েছে ১৯৫৫ সালে।

    -- দেখুন দেশ স্বাধীন হয়েছে ১৫ই আগস্ট, ১৯৪৭ নাগাদ। যাঁরা দেশভাগের পর প্রাণ হাতে করে সীমান্ত পেরিয়ে এদেশে এসেছেন তখন নাগরিকত্ব আইন তৈরি হয়নি। তাদের কী হবে? যেমন আমার বাবা-মা ও কাকার পরিবার? তারা কি ত্রিশংকু হয়ে শূন্যে ঝুলে থাকবে?

    জুনিয়র সিনিয়রের সংগে মুখ চাওয়াচাওয়ি করে।

    খানিকক্ষণ সবাই চুপচাপ। আমি বিজয়ীর হাসি হেসে ঘ্যাম নিয়ে তাকাই। অনেক সহ্য করেছি, আর নয়। যা খুশি বললেই হল! শালুক চিনেছেন গোপাল ঠাকুর!

    ছোটজন উঠে কোণের ওয়াটার পিউরিফায়ার থেকে জল গড়িয়ে বেশ ঢক ঢক করে খায়। তারপর দু’গ্লাস জল এনে আমার আর সবিতার সামনে রাখে। বড়জন উঠে পাশের কামরায় চলে গেছে। নিঘঘাৎ বড়কর্তার সংগে পরামর্শ করতে।

    খানিকক্ষণ পরে ফিরে আসে একজন কালো কোটকে সংগে নিয়ে ,তার হাতে একটা মোটকা মত বই নিয়ে। বইটা সে আমার সামনে টেবিলে নামিয়ে একটু আমার দিকে ঠেলে দেয়; ভাব যেন—দেখে নিন, মাস্টারমশাই, হেঁ হেঁ!

    আমি নেড়ে চেড়ে দেখি -- কন্সটিট্যুশন অফ ইণ্ডিয়া, একটু হলদে হয়ে যাওয়া পুরনো এডিশন। বইটাতে অনেক ফ্ল্যাগ লাগানো।

    -- রেগে যাবেন না মাস্টারমশাই, প্লীজ। আমাদের উপরেও অনেক চাপ। দেখুন ভারতের সংবিধান সবার কথা ভেবেছে। সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগের বিষয় হল নাগরিকত্ব-আর্টিকল ৫ থেকে আর্টিকল ১১ পর্য্যন্ত । আর্টিকল ৫(ক) বলছে সংবিধান পাশ হওয়ার সময় যারা ভারতের ভুখন্ডে জন্মেছে এবং ভারতে স্থায়ী ভাবে বসবাস করেছে তারা সবাই ভারতের নাগরিক। আপনি তো জন্মের পর থেকে ভারতেই স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন, পড়াশুনো, চাকরি সব এখানে। ভোটার কার্ড, আধার সবই হয়েছে, কোথাও আটকায়নি? কিন্তু এন আর সি’র নিয়ম অনুযায়ী এগুলো কোনটাই আলাদা করে পর্যাপ্ত প্রমাণ নয়। সেকেন্ডারি প্রমাণ।

    -- প্রাইমারি প্রমাণ? সেটা কী?

    -- আপনি কোথায় জন্মেছেন অথবা কার সন্তান? স্বাধীন ভারতের বৈধ নাগরিকের, নাকি বিদেশি নাগরিকের?

    -- আমি এফিডেভিট করে বলতে রাজি যে আমি কোলকাতার মেডিকেল কলেজে জন্মেছি এবং আমার আধার কার্ড বা ভোটার কার্ডে যে জন্ম তারিখ লেখা আছে সেই তারিখেই। এবং বাবা -মা জন্মেছেন অবিভক্ত ভারতে, তখন পাকিস্তান বলে কিছু ছিল না। দেশভাগের পর ওঁরা এসে এদেশের নাগরিক হয়েছিলেন। ভোটার কার্ড ছিল, বাবা ইণ্ডিয়ান আর্মিতে কিছুদিন চাকরি করেছিলেন। হ্যাঁ, এসবের জন্য আলাদা কোন কাগজ আমি দেখাতে পারছি না। কিন্তু একটা কথা বলুন, যাঁরা দেশভাগের পর এদেশে এসেছিলেন জান বাঁচাতে তাঁদের জন্য আপনাদের কোন নিদান নেই? তাঁরা তো ১৯৫৫ সালের আগে জন্মেছেন। আমিও তো ১৯৫৫ সালের আগে জন্মেছি।

    -- সংবিধানে সবই আছে। দ্বিতীয় ভাগের আর্টিকল ৬ অনুযায়ী যাদের বাবা-কাকারা ১৯শে জুলাই, ১৯৪৮ এর আগে পাকিস্তান থেকে ভারতে এসেছেন তারা সবাই ভারতের নাগরিক হিসেবে গণ্য হবে। আপনার কাকার বাড়িভাড়ার রসিদটা দেখান দিকি।

    আমি কিছু বলার আগেই সবিতা হাঁচড়ে পাঁচড়ে কাগজটা বের করে এগিয়ে দেয়। ওর চোখমুখ প্রত্যাশায় জ্বলজ্বল করছে।

    সরকারি উকিল ভদ্রলোক উলটে পালটে দেখে বললেন—আরও আছে নিশ্চয়ই ; সবগুলো দেখান।

    পাঁচমিনিট ধরে মনোযোগ দিয়ে দেখে ওগুলো সবিতার দিকে ঠেলে দিয়ে মাথা নাড়েন।

    -- হবে না?

    -- বললাম না কাট অফ ডেট ১৯শে জুলাই, ১৯৪৮? আপনাদের সবগুলো রসিদ তার পরের তারিখের। সবচেয়ে কাছাকাছি ৮ আগস্ট, ১৯৪৮।

    -- এটা কোন কথা হল? আমার বাবা ও কাকার ভোটার কার্ড ছিল । সেটা কি বে-আইনি? অ্যাদ্দিন বাদে এই কথা? তাও যখন ওঁরা কেউ বেঁচে নেই?

    -- আদৌ নয় । ওঁরা নিশ্চয়ই আসার ছ’মাস পরে নিয়মমাফিক ভারত সরকারের অধিকৃত অফিসারের কাছে নিয়মমাফিক আবেদন করেছিলেন, তাই রেজিস্টারে নাম উঠেছিল।। (আর্টিকল ৬(খ)(১) (২)।

    -- তাহলে তো ল্যাঠা চুকে গেল। নয় কি?

    -- দেখতে হবে। আগে আপনি আপনার বাবা-মা বা কাকার সিটিজেনশিপ সার্টিফিকেট দেখান তো!

    -- মানে?

    -- সেই ১৯৪৮-৫৪ সালের মাঝে যাঁরা এসে নিয়মমাফিক আবেদন করেছিলেন তাঁদের নাম ন্যাশনাল রেজিস্টারে নাম উঠেছিল তো; তার ভিত্তিতে তাঁদের সিটিজেনশিপ সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছিল। অর্থাৎ তখনই প্রথমবার রেজিস্টার তৈরি হয়েছিল। তারপর ১৯৫৫ সালে নাগরিকতা আইন তৈরি হল। ফলে রেজিস্টার আর আপডেট করা হয়নি, কাউকে প্রমাণ পত্র দেয়া হয়নি । ফের আপডেটিং শুরু হয় গত জনগণনার ভিত্তিতে; আমরা নতুন করে কিছু করছি না, সেই পেন্ডিং কাজটা কমপ্লিট করছি।

    -- আমি এ’রকম কিছু কোন দিন শুনি নি। আমার কাছে বাবা মার কোন সার্টিফিকেট নেই। তাহলে কি আমি দেশের বৈধ নাগরিকের সন্তান নই?

    -- ব্যাপারটা একটু গোলমেলে। যদি আপনি সেই সময়ের কোন ডকুমেন্ট দেখাতে পারতেন বা আপনার বাবার আর্মির সার্টিফিকেট, তাহলেও ব্যাপারটা মিটিয়ে দিতাম। এখন --, দাঁড়ান। আপনার কেসে ‘ন্যাচারালাইজেশন’ এর ধারার প্রয়োগ—

    -- সেটা কী জিনিস? খায় না মাথায় দেয়?

    -- আপনি আবার রেগে যাচ্ছেন। দেখুন, মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হবে; রাগলে চলবে না। বলছি, আপনাকে বুঝিয়ে দিচ্ছি। আপনি মাস্টারমশাই, ঠিক বুঝতে পারবেন। ন্যাচারালাইজেশন মানে দীর্ঘকালীন বসবাসের সূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়া।

    নাগরিকত্ব আইন, ১৯৫৫ এর ধারা ৬ বলছে আবেদককে প্রাকৃতিকবিধির অধীন নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র দেওয়া যেতে পারে যদি সে

    ক) বে-আইনি অনুপ্রবেশকারী না হয়,
    খ) আবেদনের ঠিক আগে লাগাতার ১২ মাস ভারতে বসবাস করে থাকে ,
    গ) ওই ১২ মাসের আগের ১৪ বছরে অন্ততঃ ১১ বছর ভারতে বাস করেছে।

    ধারা ৬(খ) এবং (গ) আপনার জন্য খাপে খাপ; যথেষ্ট প্রমাণ আছে। কিন্তু গণ্ডগোলের হল ধারা ৬(ক)। আপনি বে-আইনি অনুপ্রবেশকারী নন তার প্রমাণ?

    --আমি যে বে-আইনি অনুপ্রবেশকারী তার প্রমাণ আছে আপনাদের কাছে?

    --মাস্টারমশাই, আপনার ছাত্রের কাছে যদি ক্লাস ফোরের পাশ হওয়ার মার্কশীট না থাকে তবে তাকে কী বলবেন? ফেল?

    --না তা কেন? ও হয়ত পরীক্ষা দেয় নি। হয়ত অসুস্থ ছিল।

    --বেশ, যখন ফেল করেনি তখন ওকে নতুন বছরে ক্লাস ফাইভে বসতে দেবেন তো?

    --না তা দিতে পারি না। ক্লাস ফাইভে বসতে হলে ওকে আগে ক্লাস ফোরের পরীক্ষায় পাশ হওয়ার প্রমাণ দেখাতে হবে।

    --এগজ্যাক্টলি!

    উকিলবাবুটির তুম্বোমুখ হাসি হাসি। আমি যুক্তিটা বুঝতে পেরেছি। আমাকেই আগে অনুপ্রবেশকারী না হওয়ার প্রমাণ দেখাতে হবে।

    --অনুপ্রবেশকারী কাকে বলে, মনে আপনার পুঁথিতে?

    ভদ্রলোক মহা ঘাগু মাল। বুঝতে পারে খেলাটা ও জিতে গেছে। এখন আমি শেষ ওভারে ছ’টা ছয় মারলেও জিততে পারব না। গোলপোস্ট অনেক দূরে সরে গেছে।

    ও আমাকে ছোটবাচ্চাকে অ্যালজেব্রা শেখানোর মত করে বোঝাতে শুরু করেঃ অনুপ্রবেশকারী হল এমন এক বিদেশি যে যাতায়াতের বৈধ দস্তাবেজ, যেমন পাসপোর্ট-ভিসা, ছাড়া এ দেশে ঢুকেছে।

    অথবা, যে বৈধ কাগজ পত্র নিয়ে এলেও অনুমোদিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় এদেশে রয়েছে।

    এখন আপনার কেসের স্ট্যাটাস ঠিক কী? যদি কোলকাতায় জন্মানোর কাগজ দেখাতে পারেন তবে কোন কথা হবে না। ধারা ৫(ক) অনুযায়ী আপনি ভারতের বৈধ নাগরিক। আপনার স্ত্রীর সেই প্রমাণ রয়েছে, তাই উনিও বৈধ নাগরিক। এর কনসিকোয়েন্সে আপনার মেয়েও ধারা ৫(খ) বা (গ) অনুযায়ী বৈধ নাগরিক।

    কিন্তু প্রমাণ দেখাতে না পারলে প্রিসাম্পশন হবে যে আপনি হয়ত পূর্ব পাকিস্তানে মানে বিদেশে এবং শত্রুরাষ্ট্রে জন্মেছেন। সে ক্ষেত্রে ধারা ৬(ক) হিসেবে দেখতে হবে আপনার কাছে ভিসা বা এদেশে বাস করার কোন অনুমতি আছে কিনা!

    খানিকক্ষণ আমার মুখে কথা জোটে না। একটু পরে বলি-আপনাদের মাথার ঠিক আছে তো? এভাবে আইনের প্যাঁচ পয়জারে দিনকে রাত করতে পারেন? আসল সত্যিটা কি আপনারা জানেন না? যত্তসব ইয়ে!

    তুম্বোমুখো উকিলের চেহারা একটু কাঠ কাঠ হয়ে যায়। তারপর কন্সটিট্যুশনের গাবদা বইটা তুলে নেয়। চলে যাবার আগে ঘাড় ঘুরিয়ে বলে—মাস্টারমশাই, সত্যিটা জানা কি এতই সহজ? যা সামনে দেখা যাচ্ছে তাই কি আসল সত্যি? আদালতে যা প্রমাণ হবে আমাদের জন্যে সেটাই সত্য। এখন আপনার সত্যি আপনার কাছে, আমার সত্যি আমার--।

    নাঃ , এরা বোধহয় আমার সংগে এপ্রিল ফুল এপ্রিল ফুল খেলছে!

    ৩০ এপ্রিল, ২০৩০ মঙ্গলবার

    সেদিনই ওরা জানিয়ে দিয়েছিল যে এবার আমার পাকাপাকি আস্তানা ডিটেনশন সেন্টার; আপাততঃ ফুটবল মাঠের ওপারে বিদ্যাভারতী বালিকা বিদ্যালয়ে। আমার জন্যে ঘর পরিষ্কার করা হচ্ছে, কাল থেকে ওরা বিছানা কম্বল সবই দেবে। খবরের কাগজও দেবে। এখন থেকে দু’বেলা খাওয়া দেবার দায়িত্ব টাও সরকার বাহাদুরের। সবকিছুরই একটা ভাল দিক থাকে। এখন থেকে আর সবিতাকে বাজার করে রান্না করে দু’বেলা টিফিন ক্যারিয়ার টেনে আনতে হবে না। হ্যাঁ, সেই খালপাড় থেকে। ওকে আর আমার বিছানার চাদর ধুতে হবে না। জামাকাপড় দিয়ে যেতে পারে।

    ইলেভেন এ ক্লাস রুমে আমার অদ্যই শেষ রজনী। ঘুম আসছে না। জানলার গরাদ ধরে বাইরের কালো আকাশে ফুটে ওঠা তারাদের দেখি। মনে পড়ে এই ক্লাসেই আমার বন্ধু হিমাদ্রি অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডস্যার শ্রীমন্তবাবুর হাতের বেত কেড়ে নিয়ে মট কড়ে ভেঙে এই জানলা দিয়ে নীচে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল। বলেছিল, -স্যার, আমরা আপনার ছাত্র, গরুভেড়া নই। আপনার মেজাজ খারাপ হলেই বেত বা লাঠিপেটা চলবে না।

    স্যার নিজেকে এমন অপমানিত মনে করেছিলেন যে আমাদের ক্লাস বয়কট করেছিলেন, একটি মাস ইংরেজি ফার্স্ট পেপার পড়াতে আসেন নি। এদিকে বোর্ডের আগে প্রি-টেস্ট পরীক্ষা এগিয়ে আসছে। শেষে আমরা দল বেঁধে স্টাফ রুমে গিয়ে স্যারের কাছে ক্ষমা চাইলাম। খানিকটা বরফ গলল। তারপর অন্য স্যারেদের পরামর্শে হিমাদ্রিকে রাজি করিয়ে ফের নিয়ে গেলাম। ও গিয়ে ‘ভুল করেছি স্যার, ক্ষমা করুন’ বলামাত্র স্যার কেঁদে ফেললেন। পরের দিন থেকে ফের ইংরেজি ক্লাস শুরু।

    কিন্তু আর কোনদিন বেত নিয়ে ক্লাসে ঢোকেননি। এভাবে আমাদের স্কুল থেকে ধীরে ধীরে বেত মারা উঠে গেল। তারপর আমি যখন টিচার হলাম ততদিনে বাঁশদ্রোণী উষা পোলের নীচে আদি গঙ্গার খাল দিয়ে অনেক জল বয়ে গেছে।

    পরের দিন। বালিকা বিদ্যালয়ের একতলায় কোনার ঘরে ঠাঁই হল। হাসপাতাল মার্কা তিনটে লোহার খাট, কিন্তু বাকি দুটো খালি। দেয়ালে জমে থাকা ঝুল, মাকড়সার জাল সব সাফ করা হয়েছে, কিন্তু সাদা দেয়াল কেমন পাঁশুটে হয়ে রয়েছে। পাখা নেই, বড় বড় জানলা রয়েছে। হাওয়া ও মশা দুটোই আসে। সবিতা মশারি দিয়ে গেছে।

    বেলায় এসেছি, একটু পরে খাবার এল। মোটা চালের ভাত, ডাল, ঘ্যাঁট ও একটুকরো মাছ। অখাদ্য নয়, খাওয়া যায়। তবে মাছটা ভাল করে ভাজা হয়নি। আর মাছভাজার তেল দিয়ে ডালে সম্ভার দিয়েছে। কারও কারও পছন্দ হয়, আমার আঁশটে গন্ধ লাগে। আমি বললাম আমায় সম্ভার না দিয়ে সেদ্ধ ডাল দিতে। আর একটুকরো পেঁয়াজ ও কাঁচালংকা দিতে। রাত্তিরে হাতে গড়া রুটি, একটু কাঁচা কাঁচা, মোটা মত। তবে পেঁয়াজ ও লংকা দিয়েছিল। সবিতা বিকেলে এসে একটা আচারের শিশি, মাথার তেল ও ভাল গামছা দিয়ে গেছল।

    বলতে ভুলে গেছি, স্কুলবাড়ির সামনে পেছনে কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে দিয়েছে, এবং চারজন সেন্ট্রি লাগিয়েছে। আমিই নাকি এই ডিটেনশন সেন্টারের প্রথম ডেটিনিউ। সবিতাকে জিজ্ঞেস করি – তোমার ক্লাস রুম কোন ঘরটা?

    সবিতা চমকে ওঠে। বলে-বলব না। তারপরে মুখ ফিরিয়ে নেয়। সবিতা কি লজ্জা পাচ্ছে?

    সেটা ছিল আমার হায়ার সেকেন্ডারি পরীক্ষার বছর। সরস্বতী পূজোর দিন। জানুয়ারির শেষ নাকি ফেব্রুয়ারির শুরু? আজ মনে পড়ে না। মার্চের গোড়ায় বোর্ডের ডেট পড়েছিল। ঘরে বসে প্রাণপণে পড়ার কথা, প্রিপারেশন লীভ শুরু হয়ে গেছে। তাতে কি? সরস্বতী পুজোর দিন স্কুলে না এসে থাকা যায়! একে তো বোর্ড পরীক্ষার আগে বাগ্দেবীর আশীর্বাদ চাই। আর সামনের বালিকা বিদ্যালয়কে আমাদের পুজোর জন্যে নেমন্তন্ন করতে হবে না? আমরা তিনজন সিনিয়র গিয়ে ওদের হেডমিস্ট্রেসের হাতে চিঠি দিয়ে এলাম। ইতিউতি চাইছি, যদি কোন উজ্বল চোখের সংগে দৃষ্টি বিনিময় করার সুযোগ পাই। ও আমাদের পাড়ার। কিন্তু ওর বাবা পুলিশে কাজ করেন।

    পরের দিন ওরা সাহস করে এল আমাদের স্কুলে। আমরা যেন জানতাম ওরা আসবেই। ফেরার সময় ওদের তিনটে মেয়ে দেখল দুদিকের দুটো কোলাপ্সিবল গেট কে বা কাহারা বন্ধ করিয়া তালা লাগাইয়া দিয়াছে। দু’জন মেয়ে প্রথমে নার্ভাস মুখে হাসছিল , বলছিল খুলে দিন না! কিন্তু ছেলের দলের দুষ্টু হাসি এবং চাবি হারাইবার ঘোষণায় অচিরেই মুখ শুকাইয়া কাঁদো কাঁদো ভাব। ব্যতিক্রম তৃতীয় জন। পুলিশ অফিসারের কন্যা ছেলের দলের সর্দারের চোখে চোখ রাখিয়া বলিল—পাঁচ গুনছি, তার মধ্যে হারানো চাবি খুঁজে এনে তালা খুলে দিন, নইলে এমন চেঁচাব—

    আমি স্যারের ঘর থেকে বারান্দায় আসার সময় গ্যাঞ্জাম দেখে ব্যাপারটা বুঝে পুজো কমিটির সেক্রেটারিকে ফিসিফিসিয়ে বললাম—ভুল জায়গায় খাপ খুলেছিস, শিগগির খুলে দে। ওর বাপ যাদবপুর থানার সেকন্ড অফিসার।

    কাজ হল। আর আমার সংগে সবিতার পরিচয় ক্রমশঃ ঘনিষ্ঠ হল।

    সাতটা দিন যেতেই এন আর সি অফিসের বড়কর্তা সবিতাকে বললেন—রোজ রোজ আসার পারমিশন নেই। শুধু বুধ আর রবিবারে আসুন।

    আমি ওনাকে বললাম — বেশ, আমার অ্যাকাউন্টে সবিতার নাম জোড়া রয়েছে, ব্যাংককে লক খুলে দেবার নির্দেশ দিন। যাতে ও পয়সা বের করতে পারে। আর পেনশনের টাকা রিলিজ না হলে ও খাবে কী?

    কিছু তর্কাতর্কির পর ফয়সালা হল যে সবিতা যেন একটা চেক কেটে গোটা ব্যালান্স তুলে নিয়ে নিজের নামে আলাদা অ্যাকাউন্ট খুলে তাতে রেখে অপারেট করে। আমি ডাউটফুল, আমার অ্যাকাউন্টে আর কোন লেনদেন করা যাবে না। আমার কোন নাগরিক অধিকার নেই, তাই পেনশনও আপাততঃ স্থগিত থাকবে।

    খানিকক্ষণ ভাবলাম। এই সময়ে মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে, কিন্তু কী করে?

    সবিতাকে বললাম—এবার মেয়ে জামাইকে জানিয়ে দাও। জমা টাকায় ছ’মাসের বেশি চলবে না। তাছাড়া এদের এই আখাম্বা রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট লাগাতে হবে গভর্ণমেন্টকে পার্টি বানিয়ে। তার জন্যে ভাল উকিল চাই, টাকা পয়সা চাই। তুমি মধুমিতাকে ফোন কর। জামাইয়ের অনেক চেনাজানা। যদি উকিল ঠিক করে দেয়। আর তোমাকে ওদের কাছে নিয়ে যাক, ঝামেলা না মেটা অব্দি তুমি মেয়ের কাছেই থাক।

    সবিতা মাথা নীচু করে কিছু ভাবতে থাকে, হাত ঘষে। আমার চোখে পড়ে ওর অযত্নে বড় হওয়া হাতের নখে ময়লা জমে আছে। সবিতা মুখ তোলে।

    -- শোন, আমি কোথাও যাচ্ছি না। সেবার তোমাদের স্কুলের তালাবন্ধ অবস্থার থেকে তুমিই আমাকে ছাড়িয়েছিলে, মনে আছে? এবার আমিই তোমাকে এখান থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাব।

    (চলবে)
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ২১ নভেম্বর ২০২১ | ১৫২৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • :|: | 174.251.162.128 | ২৩ নভেম্বর ২০২১ ০৪:১৩501381
  • কেন দশ বছর ধরে ভদ্রলোক এমন সিরিয়াস ব্যাপারে ডকুমেন্ট কালেকশন না করা বা লইয়ার কনসাল্টেশন নেগলেক্ট করা ইত্যাদি করছিলেন সেটা নিশ্চয়ই কোনও না কোনও পর্বে বলা হবে -- আশা করি। 
    আর দশ বছরেই সবাই কি এত ভালো হয়ে যাবে যে ঘুষ না নিয়ে শুধু আইন ধরে কাজ করবে? এই অফিসারদের মধ্যেই অবশ্যই কেউ থাকবেন যিনি ফলস সাট্টিফিটি দিয়ে দেবেন। এতক্ষন ধরে শুধু মাথা ঠান্ডা রাখতে বলছে মিষ্টিজল খাবার টাকা দিলেই কাগজ এসে যাবে বলেনি -- এটি কোন ভারতের কতা হচ্চে ভাই? 
  • Amit | 203.0.3.2 | ২৩ নভেম্বর ২০২১ ০৫:৪৩501382
  • এটা তো কাল্পনিক গল্প। লেখকের লেখার স্বাধীনতা থাকবেই । তবে সব জায়গায় ঘুষ দেওয়াটাও অতটা সোজা কি ? আমার নিজের ই অভিজ্ঞতা আছে।  একটা ভিসার জন্যে ইঙ্গ সার্টিফিকেট সরকারি স্ট্যাম্প করার দরকার ছিল। সিম্পল কাজ। তার জন্যে রাইটার্স আর যাদবপুরে এক মাস ধরে দৌড়োদৌড়ি করতে হয়েছিল। আকারে ইঙ্গিতে অনেক বার জিগেশ করেছিলাম কিছু দিলে কাজটা তাড়াতাড়ি এগোবে কিনা ?  কিচ্ছু হয়নি। 
     
    আমাদের সরকারি সিস্টেম  টাই এমন যে কেউ চাইলে কিছু অজুহাত দেখিয়ে কাজ আটকে দিতেই  পারে। ওপর থেকে চাপ না এলে জাস্ট করবে না। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে মতামত দিন