এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  গপ্পো

  • শুয়াচান পাখি

    কুলদা রায় লেখকের গ্রাহক হোন
    গপ্পো | ১২ এপ্রিল ২০১১ | ৬৪৩ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • প্রফেসর ইউনুস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। মার্কিন দেশ থেকে ফিরে তিনি জোবরা গ্রামে মাত্র ছিয়াশি টাকা দিয়ে শুরু তার ক্ষুদ্র ঋণের প্রকল্প। প্রথম ক্লায়েন্ট সুফিয়া খাতুন। তিনি মারা গেছেন। তার মেয়ে জানিয়েছে--তাদের কপালের কোনো পরিবর্তন ঘটে নি। দারিদ্র অপরিবর্তিত তাদের জীবনে।

    ড: ইউনুস ইতিমধ্যে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে সারা পৃথিবীতে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছেন। নোবেল পেয়েছেন অর্থনীতিতে নয়-- শান্তিতে। বিদেশ থেকে এনেছেন হাজার হাজার ডলার। এগুলো ব্যবহৃত হলে সত্যি সত্যি সুফিয়াদের কপাল ফিরত। পাকা ঘর হত। গোয়ালে গরু থাকত। পুকুর মাছ। আঙিনায় পুষ্ট শিশু। চিত্র ঠিক উল্টোটা।

    হাতে টাকা পাচ্ছে দরিদ্র সুফিয়ারা গ্রামীণ ব্যাংক থেকে। সুদ ৩৭% দিতে হচ্ছে। এবং কোনো ক্ষেত্রে আরও বেশি। সই করো--টাকা নাও--কিস্তি দাও। কিস্তি না দিতে পারলে গ্রামীণ ব্যাংকের লোকজন এসে জন ঘরদোর ভেঙে নিচ্ছে। গরু কেড়ে নিচ্ছে। এই কিস্তি শোধ করতে সুফিয়াদের আরও এনজিওদের কাছে হাত পাততে হচ্ছে। এভাবে একজন সুফিয়া কমপক্ষে ২০-২৫টি এনজিওর খাতক। ঋণজালে শৃঙ্খলিত। ছেড়ার উপায় নেই।

    কিন্তু ইউনুসের ছিয়াশি টাকা এখন হাজার হাজার কোটি টাকা। দেশে ইউনুসদের সংখ্যা হয়েছে বিপুল। তারা রাক্ষুসে গজার। এই ক্ষুদ্রঋণের অনেক চোখের জলের খবর বের হচ্ছে এখন। এই গল্পটি সে রকমই একটি গল্প। কিন্তু সত্য। এসব সত্যি বাইরে থেকে দেখা যায় না।

    ==========================

    কেউ রোদ কুড়ায়। কেউ ছায়া কুড়ায়। মাঝে মাঝে পাতা। কোন পাতা? আমপাতা জামপাতা- বেনে বউ রূপকথা।। হি হি হি। জলকথা মলকথা। পদতল চুপকথা।। এরপর আকাশ। এরপর বাতাস। এরপর ধরণী, দ্বিধা হও গো মা জননী। এ প্রাণ রাখি কেমনে!

    এইখানে এসে সুতো ফুরিয়ে গেছে। সুঁইটা চোখের সামনে ধরলে ফুটোর মধ্য দিয়ে দেখা গেল- বেলা বিলের মাঝখানে উঠে পড়েছে। দরিয়াবানু পাতিলের মধ্যে হাত দিয়ে বলল, "ভাই গো,দুটো খুদ কুড়ো ফুটাই।' ততক্ষণে একটি তক্ষক সুড়সুড় করে উঠে গেছে তালগাছে। তালের গায়ে হলুদ বর্ণ আসতে শুরু করেছে। দূরে কোথাও টুব পাখি টুব টুব করে ডাকছে। একটি ডেকে উঠছে- ডুব। আরেকটি উত্তর দিচ্ছে - টুব। একটানা। তক্ষক ভ্রু কুঁচকে আছে। চুলোর উপরে টগবগ করে জল ফুটছে। একদলা লবণ খুঁজতে লেগেছে দরিয়াবানু। টুব পাখি দুটো দূরে সরে যাচ্ছে।

    এ সময় ঘাট থেকে মঞ্জু মুন্সী হাঁক দিল, "চাচী গো, খবর আছে!' দরিয়াবানু চুলার জ্বাল কমিয়ে দিয়েছে। জল শুকিয়ে এসেছে। সরা দিয়ে ঢেকে দিল। ফুঁসফুঁস করে বাষ্প বের হচ্ছে। সোনাবরুর কপালে হালকা তাপ আছে। পাশ ফিরিয়ে শোয়ালো। বলল, "বুনডি, ডালিম পাতা ভাইজা দিমুনে।'

    মঞ্জু মুন্সির সঙ্গে পুতলি বেগম এসেছে। উত্তেজনায় টগবগ করছে। ফটাফট করে ছবি তুলছে দরিয়াবানুর ভিটেমাটির। তালগাছে বাবুই পাখির বাসা ঝুলছে। একটা হাত-পা ছড়ানো গাবগাছ। এইখানে মুন্নির জাবনা ছিল। দড়িদড়া এখনো পড়ে আছে। একটা জগডুমুর গাছের ডাল জলের ওপর ঝুঁকে আছে। পশ্চিমকোণে বাঁশঝাড়। একটু তফাতে পুকুর। জামগাছের কাণ্ড ঘিরে ডাইয়া পিঁপড়ের বাসা। পুতলি বেগম নোট করছে, এইখানে একটি ডিপ টিউবয়েল-ফ্রেশ ড্রিংকিং ওয়াটার। গলায় ঝোলানো গ্রিনকার্ড। ইহার পানি আর্সেনিকমুক্ত। চালটা পাল্টে দিতে হবে। খড়ের ছাউনী নট। টিন লাগবে - বাঘমার্কা ঢেউতোলা টিন। একটা মৌবাক্স। একটা দুধের গাই। সেনিটারি পায়খানা। এইখানে থেমে পুতলি বেগম বলে উঠল, "ও বুড়ি, তোমার জন্য বায়োগ্যাস প্লান্ট।'

    মঞ্জু মুন্সির তেষ্টা পেয়েছে। বুড়ির জলের কলসির মুখ খোলা। একটু থেমে কলসিরটার দিকে আবার গেল। ওয়াটার বোতল আনতে ভুলে গেছে। পুতলি বেগম তার বোতলটি এগিয়ে দিয়ে বলল, "আপনেরা কি যে করেন, আরেকটু ইসমার্ট হন। উইদাউট ওয়াটার বোতল - নো ট্যুর। জলবৎ তরলং।'

    নকশী কাঁথাটি বারান্দায় বিছানো আছে। নানা অ্যাঙেল থেকে পুতলি বেগম ফটো নিতে লাগল। ক্যামেরায় চোখ রেখে বলল, "বুড়ি গো, তুমারে তো বললাম, বোররাকের ছবি খাড়তে। কী করছ? শুয়াচান পাখি? চিনন যায় না। খাড়বা- বোররাক উইড়া যাচ্ছে। উপ্রে লেখা- যাও পাখি বল তারে, সে যেন ভোলে না মোরে। ভাই খুব পছন্দ করবে। ফাটাফাটি। পাখি যাও। ঝামেলা কইরো না। হি হি হি।' বলেই ব্যাগ থেকে দুটো বই, আর্সেনিকমুক্ত টিউবয়েল আর বায়োগ্যাস ব্যবহারের সুফল - বের করে কাঁথার ঘরে ভিতরে রাখল। আর রাখল ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ে হার্ডভার্ট উইনিভার্সিটির গবেষণাপাত্র। ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা তর্জমা। এবং এক প্যাকেট রাজা কন্ডোম। আÒট্রা থিন। ডটেড। বলল, "বুড়ি ঘরে রাইখো।'

    - এইডা কী, সুতা নি?

    - কন্ডোম। কনট্রাসেপটিভ। এছাড়া উপায় নাই। সেভ দি আর্থ। পৃথিবী বাঁচাও।

    - কন্ডোম দিয়া কী করুম। আমি বেওয়া বুড়ি। তিনকাল গেছে। লগে নাবাল্লোগ নাতনী। সুতো দ্যাও। কাঁথাডা শ্যাষ করা দরকার।

    আকাশের নিচে ধানক্ষেত। ফড়িং বসে আছে। সুতো না হলে কাঁথা শেষ হবে কীভাবে?

    পুতলি বেগম গোছগাছ করতে করতে বললে, "সুতো আনা হবে। ভাই আসার আগে কাঁথাডা শ্যাষ কইরো। কাপড় আর সুতো আনুম নে। চিন্তা নাই। ভাই দেখার পরে নতুন কাঁথা শুরু করবা। চিন্তা নাই। শুয়াচান পাখি নট। বোররাক উইড়া যাইতাছে। তেজী বোররাক। কেউ ধরতে পারে না। হাওয়ার আগে চরে। ভাই আসবে।'

    - ভাই কেডা, মুজিবর? শ্যাখ মজিবর?

    - ব্যাকডেটেড। মজিবর হইব ক্যান? ডক্টর ইউনুস।

    - ইউনুস নবি?

    - বুড়ি দেখি কিছু জানে না। একদম ইল্লিটারেট। ইউনুস নবি না। ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস। বাপ অব মাইক্রো ক্রেডিট। নোবেল পাইছেন। ফ্রেন্ড অব ক্লিন্টন। সোনাবরু ঘুমিয়ে পড়ার আগে বই দুটো নেড়ে-চেড়ে দেখল। টিউবয়েলের নিচে একটি বালিকা হাত দিয়ে জল খাচ্ছে। কানে হলুদ দুল। তুলতুল। ফুঁ দিয়ে ফোলাল আÒট্রা থিন ক¾ট্রাসেপ্টিভ। ডালিমপাতার ভাজি ঠোঁটে লেগে আছে। সেভ দি আর্থ। একটি তরমুজের চেয়েও বড় নিরাপদ বেলুন। উইড়া যাইওগো পঙ্খী কোনবা দূরের গাঁও। আইনা দিয়ো আমার লাইগা ময়ূরপঙ্খী নাও।। ঘুমিয়ে পড়ার আগে সোনাবরু বেড়ার ফোঁকর দিয়ে দেখতে পেল বিলের ওপর দিয়ে শুয়াচান পাখি উড়ে আসছে। হাওয়া থেকে সাঁ সাঁ করে নেমে এসেছে। জলের ওপর বসেছে। ঠোঁট খুলে বকবক করে বলছে, মনে রেখ, ভুলো না আমায়।

    এ সময় দরিয়াবানু পিছন দিক দিয়ে জাংলায় ঢুকে পড়েছে। মরিচগাছ থেকে বেছে বেছে লাল মরিচ তুলছে। দুটো ঢেঁড়শ বত্তি হওয়ার আগেই পট করে তুলে কোঁচড়ে রাখল। পুঁই লতাটিকে মাটি থেকে তুলে দিল ঝাম্‌?টি গাছের ওপর। পুকুর থেকে হাঁস দুটো গলা তুলে হাঁক দিয়েছে, পাক পাক পাক। শুষণী শাক তুলতে তুলতে ভুলে গেল, ফতে মোল্লার মেজ বিবি নটে শাক চেয়েছিল। টাকি মাছের মুড়ো দিয়ে নটে শাক খেতে খেতে মেঝ বিবি তাকে পুনরায় গর্ভধারণের বৃত্তান্ত বলতে চেয়েছে। ঘরামি বাড়ির মহাদেবের নাতিটির মুখেভাতের মুড়ি ভেজে দিতে হবে। এ সময় মনে হল, পুকুরের জল থেকে ইউনুস নবি ইশারা করে ডাকছেন মাছটিকে। মাছটির পেটে লাল দাগ। আর কিছু দ্র¦তহাতে করা শক্ত সেলাই। সেলাই দেখে মা জননী, দ্বিধা হও। এ প্রাণ রাখিব কেমনে। ঘাটে এসে মতিয়ার নীরবে ছোট বস্তাটি নৌকা থেকে নামাল। গামছার খুঁট দিয়ে কপালের ঘাম মুছল। ততক্ষণে তালগাছের মাথার কাছে তক্ষকটি বার দুয়েক জিহ্বা বের করে আকাশের দিকে তাকিয়েছে। সূর্য পাটে বসার আগে কেঁদে ফেলে। এইসব দেখে শুনে শুয়াচান পাখিটি জলের ওপর থেকে একটু এগিয়ে গিয়ে ডানা মেলে ওড়ে। গান গায়। মতিয়ার পাখিটি দেখতে দেখতে ডেকে ওঠে, "সোনাবরু। সোনাবরু।'

    সোনাবরু তখনি পাশ ফিরতে ফিরতে শুনতে পেল বাপজান মুন্নিকে জাবনা দিতে দিতে বলছে, "সোনাবরুর মা, এবার বকনা হবে মনে লয়।' সোনাবরুর মা দ্র¦তহাতে মুড়ি ভাজতে ভাজতে থেমে গেছে। বলছে, "সোনা, বাটিটা নিয়া আয়। গরম গরম হুড়ুম খাইয়া নে, মা'

    মতিয়ার বস্তাটি নিয়ে ঘরে এল। লক্ষ্মীদিঘা ধান। মুড়ির ধান। মেয়ের কপালে হাত রেখে শ্বাস ফেলল ফোঁস করে। কানের পাশে চুল লতিয়ে উঠেছে। সোনাবরু ঘুমের ভেতরে ফিসফিস করে বলে উঠল, "আম্মি, আম্মি।' এই ফাঁকে দরিয়াবানু পুকুরঘাট থেকে আনাজগুলো ধুয়ে নিয়েছে। গলা তুলে বলল, "মতি, জাম্বুরাটা নিয়া যাস, বাপ।'

    মতিয়ার বস্তাটির মুখ বেঁধে রাখল। হাঁস দুটো উঠোনে চুপ করে বসে আছে। ডানা থেকে জল পড়ছে টুপটাপ। বাক্সটির মুখ খুলে দিতেই নড়ে-চড়ে উঠল। ভেতরে ঢুকে শেষবার পাক পাক করে হাঁক দিল। বাক্স'র দরোজা টেনে দিয়ে দরিয়াবানু বলল, "অ মতি, জাম্বুরাটা নে না, বাপ। ছোট বিবিরে আসতি কইস। শ্বউরের ভিটা। না আসলি চলে!'

    নৌকাটি তালগাছের আড়াল হতে হতে মতিয়ার দীর্ঘশ্বাস ফেলল। বর্ষার জল বাড়ে। সোনাবরু নিদ যায়। নিদ্রার ঘোরে বলে ওঠে, "আম্মি আম্মি।'

    কোনবা দ্যাশে যাওরে পঙ্খী
    কোনবা তোমার ঘর,
    আমার খবর খবর লৈয়া যাইও
    সেই না তেপান্তর।।


    এ সময় বিলের মাঝখান থেকে চাঁদ ওঠে। একটু জলে ভেজা। জলের গন্ধ পেয়ে ঝুপ করে লাফ মেরে ওঠে লবটুলি মাছ। মাছের পেটের কাছে লাল। কাটা দাগ। তাই দেখে বাঁশঝাড় থেকে দুটো পাতা হাওয়ায় ভাসতে ভাসতে ঝরে পড়ল। দরিয়াবানু পাতা দুটো কুড়োয়। তক্ষকের ছায়া খসে পড়ে। দরিয়াবানু যত্ন করে ছায়াটি কুড়োয়। আকাশ থেকে শুয়াচান পাখির মায়া ঝরে পড়ে। দরিয়াবানু ঝিমুতে ঝিমুতে মায়াটুকু কুড়িয়ে নেয়। এই মায়ার মর্ম অপার। সোনাবরুর চোখেমুখে এই মায়াটুকু দীর্ঘশ্বাস ফেলে। ধরণী, দ্বিধা হও গো মা জননী। এ প্রাণ রাখি কেমনে।

    পুতলি বেগম সুইডেনে গিয়েছিল। রানি সিলভিয়া তার কাঁধে হাত রেখে ছবি তুলেছে। মাথায় স্বর্ণমুকুট নেই। মুখটি সোনাসোনা। পুতলি বেগমকে বলেছিল, "হাসো। টোমাডের হাসি ডেকটে চাই।'

    এ সময় রানিকে একটি নকশী কাঁথা উপহার দেওয়া হয়েছিল। মিহিদানা সুতো দিয়ে বোনা। একটি মাঠ। নিচে নদী। ওপরে মেঘ। চাঁদের আলোর মধ্যে ডানা মেলেছে- বোররাক। মৃন্ময়ী মুখ। হাসি হাসি। হাওয়ায় চুল উড়ছে। দেহটি ঘোড়ার। কেউ আটকে রাখতে পারে না। আলোর বেগে ছুটে যেতে পারে সাত আসমানে। এর মধ্যে একটি চাঁদ উঠেছে। ফুল ফুটেছে। হাতি নাচছে। রানি মুগ্ধ। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলেন কাঁথাটিকে। বললেন, "কে নির্মাণ করেছে এই কান্থা?'

    - দরিয়াবানু।

    - ওকে, আমি টোমাডের ডরিয়াবানুকে ডেকটে যাইব। চান্দের আলোয়। ইন দ্য ফুল মুনলিট নাইট।

    রানির সঙ্গে এই সাক্ষাতের বিবরণী ইকনমি পত্রিকায়ও ছাপা করা হয়েছিল। হেড অফিসে বড় করে টানানো আছে। লেখা আছে, "চাদেঁর আলোয় শান্তি বেড়ে উঠেছে। ইহার মৃত্যু নাই। মাইক্রো ক্রেডিট ফর পিস।'

    এরপর থেকে পুতলি বেগম কমোড ব্যবহার ছাড়া বাহ্য ত্যাগ করতে পারে না। এইটুকু আনন্দ ছাড়া উন্নয়ন কঠিন। এই গল্প কর্মক্ষেত্রে মুখে মুখে প্রচারিত আছে। পুতলি বেগম - দি গ্রেট প্রোফাইল অব শান্তি।

    দরিয়াবানুর ঘরের পাশটিতে লাগানো হয়েছে একটি কমোড। সাদা মনোহর। পুষ্প অঙ্কিত আছে। বাইরে লেখা আছে- শান্তিখানা। এইখান থেকে একটি পাইপলাইন চলে গেছে বায়োগ্যাস প্লান্টে। রান্না করতে নো পাতা। নো কাঠ। গো গ্রিন।

    একদিন বারী সিদ্দিকী এলেন। জাঙ্গালিয়া স্কুলের মাঠে গানের আসল জমে গেল। ওখানে হেলিপ্যাড নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে গানের আসরে তিনি চক্ষু বুজে গাইলেন -

    শুয়াচান পাখি, আমার শুয়াচান পাখি
    আমি ডাকিতাছি তুমি ঘুমাইছো নাকি।
    তুমি আমি জনম ভরে ছিলাম মাখামাখি
    আজি কেন হইলে নীরব মেল দুটি আঁখি রে পাখি।


    গানটি পল্লবিত হয়ে বিলের জলে থৈ থৈ করে নেমে গেল। ধানের ওপর দিয়ে শিশির ঝরার মতো ঝরে গেল। চাঁদনী রাতে এই সুরটি কণ্ঠে নয় - বাঁশিতে হবে। দরিয়াবানুর ভিটে থেকে একটু দূরে নলবনের আড়ালে বসবেন - নৌকায় বসে বাঁশিতে সুর তুলবেন বারী সিদ্দিকী। রানি সিলভিয়া দেখবেন, আকাশ থেকে খসে আসা চাঁদের আলো কীভাবে নরম হয়ে জলের ওপরে গলে নামে। সুতো হয়ে ভাসতে থাকে। দরিয়াবানু শুয়াচান পাখির রূপকথা বুনে যাবে নকশী কাঁথায়। এইটুকু ভেবে ভেবে পুতলি বেগমের চোখে জল এল। শান্তি বড় মনোহর!

    চাল থেকে নেমে গেছে জীর্ণ খড়। খুব যত্ন করে বসানো হয়েছে ঝকঝকে টিন। হোগলার বেড়ার বদলে ব্রিকওয়াল। দেয়াল বেয়ে চালের উপরে হাওয়ায় দুলছে লাউডগা। কাঁচের জানালা দিয়ে চেয়ে আছে সোনাবরু। ঠোঁট নড়ছে। ফিসফিস করে বলছে, "আম্মি, আম্মি।'

    এ সময় ছোট বিবি নৌকা থেকে নেমে এল। নাকের নোলক দুলে দুলে উঠেছে। ছোট পুঁটলিটা বুকের কাছে ধরা। ঘাট থেকে পাকা সিঁড়ি নেমে গেছে জলের গভীরে। দুটো মুরলী মাছ পায়ের পাতায় সুড়সুড়ি দিয়ে সরে গেল। তাই দেখে ঘাড় ফিরিয়ে বলে উঠেছে, "পুতলি আফারে কইয়ো। আমি পোলাউ রানতেও জানি।'

    মতিয়ার এ সময় হাটে যাবে। লগি ঠেলতে গিয়ে সোনাবরুর কথা মনে হল। মনে হল, মেয়েটার সঙ্গে দেখা করে গেলে বেশ হতো। ততক্ষণে নৌকা খালের মাঝখানে চলে গেছে। টলটলে জল। স্রোত উজিয়ে মঞ্জু মুন্সি খুব কাছে এসে পড়েছে। হাত নেড়ে বলল, "মতিভাই - একখান কথা।'

    মতিয়ার নৌকা থামিয়ে দিয়েছে। ট্রলার থেকে নেমে মঞ্জু মুন্সি ফিসফিস করে বলল, "মতিভাই। মুন্নিরে কাল ভোরে নিয়ে আসুম নে। পুতলি আপা কইছেন, গবাদিপশু ছাড়া ভরভরন্তি সংসার ভাল দেখায় না। রানি সিলভিয়াকে বাংলাদেশের ভরভরন্তি সংসার দেখাবেন ভাই। বদলে যাওয়া বাংলাদেশ।'

    মতিয়ার নিচের ঠোঁটটি কামড়ে ধরেছে। কপালে ঘাম জমেছে- মঞ্জু মুন্সি মতিয়ারের হাত দুঞ্চটি আরও জোরে চেপে ধরে বলল, "আপনের কাছে আমার মেলা অপরাধ হইছে। আপনে মাফ না দিলে কী করি ভাইসাব!' ততক্ষণে মতিয়ার লগি ঠেয়ে আরেকটু দূরে চলে গেছে। যেতে যেতে কানে আসছে, মুন্সি বাকরুদ্ধ গলায় ট্রলার থেকে বলে চলেছে, "লোন তো ছিল মুন্নির লাইগ্যাই। কিস্তি দিতি পারেন নাই। অফিস কৈল - আর আমি মুন্নিরে নিয়ে গেছিলাম। ভাইসাব। আমারে মাপ দিয়েন। আমি চাকরির দাস।'

    শেষ কথাগুলো ঠিক শোনা গেল না। কিছু শ্লেষ্মা জড়ানো শব্দ। কিছুটা অপরাধ। মঞ্জু মুন্সি জানে কোন কোন মাফে চোখের জলের মতো নুন লেগে থাকে। ক্ষতদেশে ভয়ানক জ্বালা করে ওঠে। এ রকম ভেবে তার খুব তেষ্টা পেয়ে গেল। আজও ঠিক ভুলে গেছে ওয়াটার বোতল আনতে। দু'হাত ভরে খালের পানি চোখে-মুখে নিতে নিতে দেখল, পুতলির বেগমের ট্রলারটা এসে গেছে। একটি ওয়াটার বোতল এগিয়ে দিয়ে বলল, "আরেকটু ইসমার্ট হন। নো বোতল। নো ট্যুর।' ছোট বিবি টিউকল টিপে টিপে জল খেল। মুরগির বাসা এসেছে- দোতলা। চারটি মুরগি কক কক করে ডাকছে। আর মোরগটি ফুল তুলে তীক্ষ্ণ চোখে বাইরে তাকিয়ে আছে। লোকজন ট্রলার থেকে একটি ঢেঁকি নামিয়ে রাখল। কে একজন ডায়নামো চালিয়ে দেখছে, বাঁশঝাড়ে মরিচ বাতি জোনাকির মতো কতোটা জ্বলে আর নেভে।

    অমিতাভ রেজা ক্যামেরা ট্যামেরা ফিট করেছে। জুম করে বিলের মধ্যে একটি পাখির চিহ্ন খুঁজতে লেগেছে। কালো জল। সবুজ ধানক্ষেত। আকাশ মেঘহীন। নীল। একটি পাখি বিন্দু থেকে বৃত্তের মতো বড় হতে হতে উড়ে আসছে। বসছে ধানের ক্ষেতে। ডানা দুটো মেলা। বেজে উঠেছে - শুয়াচান পাখি। আর ফেড ইন হয়ে আসছে- দরিয়াবানুর কাঁথা। ক্ষুদ্র ঋণের সুসমাচার। আয়োজনে- ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া ওয়ার্ড।

    অমিতাভ রেজা মাথা থেকে ক্যাপটা খুলে ফেলে বলল, "একটা মেয়ে দরকার। হাসি হাসি মুখ। দ্য স্মাইলিং ফেস।' যখন হাসি এল। পুতলি বেগম হি হি হি করে হাসতে হাসতে বলল, "নো প্রবলেম রেজা ভাই। মাইয়া আছে। একদম ফেরেশ। আপনে যেমুন যেমুন চাইছেন - সেইরকমই আছে। নইলে এনজিও করি ক্যান!' ছোট বিবি দু'হাতে চুরি পরেছে। মাথায় খোঁপায় লাল ফুল। ধানীরং শাড়িটা পরে আসতেই অমিতাভ রেজা আবার মাথায় ক্যাপটা পরে নিল। লুক থ্‌রু করছে। 'গুড। একটু বাঁদিকে।' ক্যামেরা আকাশ থেকে প্যান করে নিচে নেমে আসছে। তলি বেগম নেপথ্য থেকে বলতে শুরু করেছে- "জমেলা খাতুন। বয়স বাইশ। যখন বিয়ে হয়েছেল তখন ১৫। স্বামী মতিয়ার তাকে তুলেছিল পড়ো পড়ো ঘরে। চুলো জ্বলে কি জ্বলে না। হতদরিদ্র শ্বাশুড়ি বৌয়ের মুখ দেখে বলে উঠেছিল, "তুমি আমগো লক্ষ্মী আম্মা। তুমি আইছ। আমগো অভাব ফিরা যাইব এবার।''

    পুতলি বেগম বলছে, "সেসময় জমেলা খাতুন ক্ষুদ্র ঋণের জন্য আবেদন করে। কিনে আনে কিছু সুতো। দুটো মুরগী। আর একটি গাভী। সেই থেকে শুরু। শাশুড়ির কাছ থেকে বুনতে শিখেছে- বাংলার ঐতিহ্য নকশী কাঁথা বোনা। সে কাঁথায় রূপকথা হয়ে উঠেছে - অভাবী মানুষের স্বপ্ন নিয়ে জেগে ওঠার গান - দিন বদলের পালা। ক্ষুদ্র ঋণের গ্‌রুপ সে কাঁথা বিক্রি করে কপাল ফিরিয়েছে। ডিম-দুধে পুষ্টি চাহিদা মিটিয়ে তাদের এনে দিয়েছে সচ্ছলতা। এটা এক সত্য ঘটনা। উত্তরাধুনিক রূপ বদলের রূপকথা।'

    পুতলি বেগম একটু থেমে আবার বলছে, "আমরা এখন কথা বলছি, জমেলা খাতুনের সঙ্গে। জমেলা, আপনের এ সাফল্যের গোপন রহস্য কী?'

    ছোট বিবি ঠোঁটে একটু লিপিস্টিক ঘষছে। জাম গাছের ছায়ায় ছুতোর মিস্ত্রিরা বসাচ্ছে বাঁশের তৈরি ইজি চেয়ার। তার পাশে টি টেবিল। পুতলি বিবি কিছুটা বিরক্ত হয়ে ছোট বিবির হাত ধরে ঝাঁকি দিল। বলল, "জমেলা, কথা কন না ক্যান?'

    ছোট বিবির লিপিস্টিক একটু কড়া হয়েছে। লাল টকটক। কথা বললেই মুছে যেতে পারে। পুতলি বিবি একটু ধমকে বলল, "কথা কন না ক্যান আপনে, জমেলা? দ্যাখেন না ডাইরেক্টর রেজা ভাই থাইম্যা গেছে!'

    - আমি জমেলা না। রমিজা খাতুন।

    - আপনে জমেলা খাতুন। রমিজা খাতুন না।

    - কী কন পুতলি আফা? জমেলা খাতুন আমার উনির বড় বিবি। তিনি ইন্তেকাল হইছেন। হ্যারপর আমারে আনছেন। আমার নাম রমিজা খাতুন।

    ক্যামেরা চলছে। অভিতাভ রেজা গভীর মনযোগ দিয়ে শুট করে চলেছেন। পুতলি বেগম বাঁধানো খাতা বের করল। বলল, "তুমি আইজ রমিজা খাতুন না। মতিয়ার রহমানের বিবি জমেলা খাতুন। সাং জাঙ্গালিয়া, ইউনিয়ন নিজড়া, উপজেলা গোপালগঞ্জ। এ ইষ্টোরি জমেলা খাতুনের। তিনি আমগো কাছ থিকা মাইক্রো ক্রেডিট লইছিলেন। গরু কিনছিলেন। কাঁথার বিজিনিস শুরু করছিলেন। ঘরে খড়ের বদলে টিন এসেছে। টিপকল এসেছে। এই তো জমেলা খাতুন।'

    - জমেলা খাতুন কিস্তি দেবার পারেন নাই। আপনেরা হের গরু মুন্নিরে লইয়া গেছেন। চাল থিকা টিন খুইল্যা লৈছেন। তিনি এই দু:খে আত্মঘাতী হৈছেন। তিনি এখন ভুত হৈছেন। আমি ভূতে ভয় করি। এইজন্য বিয়ার পরে এই বাড়ি আসি নাই। অন্য জায়গায় থাকি। এ বাড়ির কথা মনে হইলে দ্যাখতে পাই-জমেলা বুজি একটা মরা পাখির মতন জলের উপরে ভাসতে আছে। উপরে চান্দের আলো। "আমি রমিজা খাতুন। জমেলা খাতুন না।'

    এ সময় ট্রলার থেকে মুন্নিকে নামানো হচ্ছে। বহুদিন পরে পরিচিত ঘাটে এসে মুন্নি লাফ দিয়ে নেমে এল। বারান্দায় বিছানো ছিল দরিয়াবানুর নকশী কাঁথা।

    সুতোর জন্য ধানক্ষেতে এখনো বাতাস খেলে নাই। শুয়াচান পাখি জল থেকে ওড়ে নাই। পুতলি বেগম সেই সুতো আনবে বলেছে। মুন্নি কাঁথার উপরে মুখ ঘষে ঘষে ডেকে উঠছে - হাম্বা। হাম্বা।

    ঘরের মধ্যে সোনাবরু পাশ ফিরছে। জানালা দিয়ে বিলের ওপর থেকে হাওয়া আসছে। তালগাছের মাথায় একটা তক্ষক জিভ বের করে দেখছে। ক্যামেরা চলছে। বারী সিদ্দিকীর বাঁশি বাজছে। রাগ যোগ।

    শুয়াচান পাখি, আমার শুয়াচান পাখি
    আমি ডাকিতাছি তুমি ঘুমাইছো নাকি।
    তুমি আমি জনম ভরে ছিলাম মাখামাখি
    আজি কেন হইলে নীরব মেল দুটি আঁখি রে পাখি।


    সোনাবরু বার দুই ফিসফিস করে বলল, "আম্মি। আম্মি।'

    আর অমিতাভ রেজার ক্যামেরা প্যান করে রমিজা বেগমের চোখ ওপর স্থির হয়ে গেছে। ঠোঁট কামড়ে ধরেছে। নাকের ডগাটা তির তির করে কাঁপছে। চোখ থেকে গড়িয়ে পড়ছে জল। কাজল লেপ্টে গেছে। পুকুর থেকে কী একটা পাখি উড়ে যাচ্ছে। ডেকে উঠছে- হিট্টি হিট্টি হিট্টি।। কে একজন জলের ভেতর থেকে পালিয়ে যেতে চাইছে। জল তাকে টেনে ধরেছে। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। বড় একটা গজার মাছ হা করে তেড়ে আসছে। হাসি হাসি মুখ। রমিজা বেগম হাঁসফাঁস করতে করতে বলে উঠল - "পানি খামু।'

    এ সময় দরিয়াবানুর ঢেঁড়শতোলা সময়। দুটো মরিচ পেকে লাল হয়ে গেছে। লেবুগাছের গোড়ায় আজ আবার কিছু ছাই দিতে হবে। সুতো এলে বুনতে হবে - সবুজ সবুজ ধানক্ষেত। হাওয়ায় দুলছে। জল থেকে উড়ে যাচ্ছে শুয়াচান পাখি। বোররাক নয়। জলে ভেজা পাখি। ডাকে হিট্টি হিট্টি। বলে শুয়াচান পাখি, "আপনেগো ঘরের টিনের চালে বসতে চাই গো মা জননী। সোনাবরুরে মুড়ি ভাইজা দিবার মন চায়। মুন্নির দুধ দিয়া সুড়ুৎ সুড়ুৎ কইরা মুড়ি খাইতে চাই। এত্তোটুকু মাইয়া- উঠোনে ঘুরতে ঘুরতে হাততালি দিউক। আর বলুক - অ পাখি, তুমি যাইবা কোনখানে?'

    জলের মধ্যে তখন একটু একটু চাঁদ উঠেছে। ফুল ফুটেছে। বাঁশি বাজছে। জেগে উঠেছে টিনের চাল। টিউকল। বহুদিন পরে বিছানা থেকে উঠে এসছে সোনাবরু। নাচতে নাচতে ঘুরছে উঠোনময়। পায়ে মল। ঝুম ঝুম করে বাজে। কী বাজে দেখতে পাখি ঘাড় ঘুরিয়ে ফেলেছে। সব কিছু ঠিকঠাক আছে। ও পাখি, তোমার চক্ষু দুটি নাই। জলে গলে যাচ্ছে লাল রং আর পাখিটি চেঁচিয়ে বলছে, "সোনাবরু - যা,তুই পালিয়ে যা। পালিয়ে যা।' সোনাবরু চীৎকার করে উঠছে, "অ পাখি, তোমার চক্ষু গেল কই?'

    সবুজ সুতো খুঁজতে খুঁজতে দরিয়াবানু পেরেশান। থেকে থেকে একটা গজার মাছ খুবলে খুবলে খাচ্ছে পুকুরের জলের ভেতরে শুয়ে থাকা শুয়াচান পাখির চোখ, নাক, মুখ। লম্বা চুল। তার নাকের নোলক ঘুরতে ঘুরতে নেমে যাচ্ছে পুকুরের জলের গভীরে। নোলকটি গপ করে গিলে ফেলেছে আরেকটি মাছ। তাই দেখে অপার হয়ে সোনাবরু কেঁদে কেঁদে উঠছে "আম্মি, আম্মি।' আর কিছু নয়।

    সুতো খুঁজতে খুঁজতে চাঁদের আলোয় ভাসতে ভাসতে রূপকথা আসতে আসতে কে এক ইউনুস নবি এই সময় মাছের পেটের মধ্যে বিড়বিড় করে বলছে - "লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুন্তু মিনাজ জ'লেমিন।'
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • গপ্পো | ১২ এপ্রিল ২০১১ | ৬৪৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • রূপঙ্কর সরকার | 126.203.205.175 (*) | ২১ এপ্রিল ২০১৩ ০২:৪৯89003
  • 'শুয়াচান পাখি' আগে পড়েছিলাম। মনে হচ্ছে খানিক পরিবর্ধিত হয়েছে। আমার ভুলও হতে পারে। কুলদা রায়ের লেখা পড়লে কথা হারিয়ে যায়। 'পিপ্পলকুমারী' পড়ে আমি কিছুদিন বাকরুদ্ধ ছিলাম।
  • pi | 78.48.231.217 (*) | ২১ এপ্রিল ২০১৩ ১১:৩৭89001
  • তুললাম।
  • কৃশানু | 213.147.88.10 (*) | ২১ এপ্রিল ২০১৩ ১২:০৭89002
  • অসাধারণ!!
  • brc - slg | 37.125.200.121 (*) | ২৫ এপ্রিল ২০১৩ ০৯:৫২89004
  • কুলদা বাবুর লেখাটি অনবদ্য।
    বারী সিদ্দিকীর কণ্ঠে, 'শুয়াচান পাখি' গানটি যদি কেউ শুনতে চান :

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে মতামত দিন