এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ইস্পেশাল  নববর্ষ ২০১৪

  • কাকমানুষের চকখড়ি

    কুলদা রায় লেখকের গ্রাহক হোন
    ইস্পেশাল | নববর্ষ ২০১৪ | ১৫ এপ্রিল ২০১৪ | ১০৫২ বার পঠিত
  • কে একজন আমাদের বাড়িতে এসেছে। তাকে দেখিয়ে মা বলল, এই তোর সুখী দিদি। 

    সুখী দিদির লম্বা চুল। ঘন হয়ে নেমে গেছে পিঠ বেয়ে। গলায় আঁচল পেঁচানো। চোখ দুটো ম্লান। অন্ধকার জ্যোৎস্নার মত। মিট মিট করে জ্বলছে। বললাম, ও সুখী দিদি। তুমি কি আমাগো সুখী দিদি? চুপি দিদি? না, দুখী দিদি? 

    তার মুখে কথা নেই। ঝড়ের আগের বাতাসের মত নিঃশব্দ। বহুদিন পরে গোহাট ছেড়ে বেরিয়েছে। আমাদের উঠোনে এসেছে। 

    মা তখন ভাতের থালায় জল ঢেলে দিয়েছে। ধীরে ধীরে কাঁচিয়ে নিচ্ছে এঁটো। পিঁড়িটা একপাশে সরিয়ে রেখেছে। পুকুর ঘাটে চলে গেছে। 

    সুখী দিদি উঠানের মাঝখানে বসেছিল। ঘাসের উপরে। সেখানে এখন দাগ লেগে আছে। সুখী দিদি এইখানে বসেছিল। ঘর থেকেও বসার জায়গাটিকে দেখা যায়। এবং রাতেও।

    মা তখন হাত জোড় করে বলে- ঠাকুর ঠাকুর। আর আমাদের ঘুমের ভিতরে একটি বাগান উঠে আসে। 

    গোহাটার কাছাকাছি ছবির বাগান। বাগানে ছবি নেই। লিচু গাছ আছে। এই লিচু খুব টক। কেউ খায় না। কিন্তু ছবির বাগানে আমাদের যেতে হয়। গেলে দেখা যায়- এই বাগানে ঘাসের উপরে সুখী দিদি বসে আছে। টিপ নেই। চুড়ি নেই। ফুলতোলা আঁচল নেই। পা দুখানি মুড়ে। নত মুখ। আর কেউ নেই। মাথার উপরে একটি দাড় কাক উড়ছে। খুব কালো। কুচকুচে। সুখী দিদির চুলের মত দাড় কাকটি। বাড়ি ভুশুণ্ডির মাঠ। 

    পাশের বাড়িটি সাধু পরমানন্দের। পাড়ার ইনজেকশন ডাক্তার। টুং টাং করে করে তার সাইকেল বেজে ওঠে। বহুদূর থেকে শোনা যায়। তার সম্বল অনেক পুরনো একটি সিরিঞ্জ। দাগ টাগ উঠে গেছে। 

    সাধু পরমানন্দ ডাক্তার সারাক্ষণ বারান্দায় বসে আদি-পুস্তক পাঠ করে। আর তার বুড়ি বউ কমলা দিদিমণি উঠোনের একধারে খোলা চুলোয় রান্না করে। রসুন দিয়ে বেলে মাছ। আর নটে শাক। 

    আমরা যেদিন ছবির বাগানে চলে গেছি চুপি চুপি টকা স্বাদ কয়েকটি লিচুর ঘোরে। সুখী দিদির ছায়াটি শান্ত হাওয়ায় কাঁপছে। সাধু পরমানন্দের বাড়িটির নিমতলার নিচে কে একজন খুব ফর্সা লিকলিকে লোক উঁকি দিয়েছে। লম্বাটে মুখ। খোঁচা খোঁচা দাড়ি। হাফ প্যান্ট পরা। ফিস ফিস করে বলছে-- অ সুখী? সুখী? 

    সুখী দিদি ততক্ষণে ঘাসের উপর থেকে উঠে পড়েছে। পুকুর ঘাটে নেমে গেছে। জলের কলসি নিয়ে আবার উঠে গেছে। শ্লথ পায়ে। নতমুখে। 

    লোকটি চেঁচিয়ে ডাকছে, অ সুখী? সুখী? 

    সুখী দিদি ঘাসের উপর দিয়ে ঝরা পাতার উপর দিয়ে ছায়ার উপর দিয়ে খণ্ড খণ্ড নৈশব্দের মধ্যে দিয়ে ছবির বাগানের মধ্যে দিয়ে হেঁটে চলে গেছে। সাধু পরমানন্দের বাড়ির পিছনের বাড়িটিতে। ওই বাড়িটিতে সুখী দিদির ছোট একটি ঘর। জং ধরা চালে নীলমণি লতা। দুখীরাম সেই কবে এনেছিল। তাদের পুকুরটিতে গোহাটের গরুগুলি মুখ দেখে আর জল খায়। হাম্বা করে ডাক দেয়। সুখী দিদি এই ছবির বাগান থেকে এই বাড়িটিতে যেতে যেতে তার পায়ের ছাপটি ফেলে যাচ্ছে ঘাসের উপরে। সেখান থেকে জোনাকি পোকার মত মৃদু মৃদু আলো বেরুচ্ছে।

    আর এই দেখে লিকলিকে লোকটির দুচোখ বেরিয়ে এসেছে। গলা থেকে বেরুচ্ছে গর গর শব্দ।

    সাধু পরমানন্দের বৌ কমলা দিদিমণি রান্না বান্না ফেলে দৌড়ে এসেছে । লোকটিকে পেছন থেকে টেনে ধরল। লোকটির গলার রগ ফুলে উঠেছে। কপালে ঘাম। ছুটে যাওয়ার ইচ্ছে। কিন্তু সত্যি সত্যি যাওয়ার ইচ্ছে নেই। সুখী দিদির নাম ধরে ডেকে যাওয়াই তার জন্য ভয়াবহ এবং একমাত্র নিয়তি। কমলা দিদিমণি বলছে, মথি উদয়। মথি উদয়। ঘরে আয়। ঘরে আয় বাবা।

    যেতে যেতে ফিরে ফিরে ছবির বাগানটিকে দেখতে লাগল মথি উদয় নামের এই মানুষটি । বাগানের মধ্যেকার নতমুখী মানুষটিকে। তার চলে যাওয়াটিকে। উড়তে থাকা কালো কাকটিকে। সাধু পরমানন্দ তখনো সুর করে বলছে- --

    ‘ঈশ্বর কহিলেন, রাত্রি হইতে দিবসকে বিভিন্ন করণার্থে আকাশমণ্ডলের বিতানে জ্যোতির্গণ হউক; সে সমস্ত চিহ্নের জন্য, ঋতুর জন্য এবং দিবসের ও বৎসরের জন্য হউক; এবং পৃথিবীতে দীপ্তি দিবার জন্য দীপ বলিয়া আকাশমণ্ডলের বিতানে থাকুক; তাহাতে সেইরূপ হইল।‘

     

    আমাদের এ পাড়ায় ছবির বাগান ছাড়াও একটি রাস্তা আছে-- শহীদ মাহবুব রোড। আছে একটি ক্লাব । একটি টিনের চালের নিচে কিছু ছেলেরা ক্যারাম বোর্ড খেলে। আর বছরে দুইবার শিশুদের পিটি প্যারেড টিম নিয়ে সারা শহর ঘুরে বেড়ায়। গান করে- -

    এক সাগর রক্তের বিনিময়ে
    বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা,
    আমরা তোমাদের ভুলব না।

    বছরে দুইদিন এই গানটি শুনতে আমাদের ভাল লাগে। এই দিনে ডাল খিচুড়ি। এইদিন লাল দোপাট্টা মল মল। এই দিন রাতের বেলা হাওয়াই বাজি। এই ডাল খিচুড়ির অন্যরকম স্বাদ। শহীদ মাহবুবের আম্মা নিজ হাতে রান্না করেন। তিনি আমাদের বড়ো চাচী। চাচীর চুল পেকে এসেছে।

    বড় চাচী একদিন আমাদের বাড়ি ছুটতে ছুটতে এসেছেন। হাতে তেল হলুদ মাখানো। মাকে বলছেন, ও বিনা, বিনা- শুনছ, সুখীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

    --কোন সুখী?

    --দুখীরামের বউ। গোহাটার দুখীরাম। আমার মাহবুবের বন্ধু। 

    ততক্ষণে মা তুলসী তলাটি নিকিয়ে ঘরে ফিরে এসেছে। লক্ষ্মী ঠাকরুনের সামনে গড় হয়ে বলছে, ঠাকুর ঠাকুর। 

    বড় চাচী ছুটছেন শহীদ মাহবুব ক্লাব ঘরে। ঘরের মধ্যে ছেলেরা টিভি দেখছে। নতুন। সাদা কালিতে টিভির গায়ে লেখা : দানবীর পনু মিয়া কর্তৃক উপহৃত। কে একজন তারস্বরে গান গাইছে কোমর দুলিয়ে দুলিয়ে- ওরে সালেকা, ওরে মালেকা। শহীদ মাহবুবের মা কিছু না বলে ঘরে ফিরে গেছেন । তার ছেলের ছবিটার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে কেঁদে ফেলছেন। ছেলেরা গাইছে-- ওরে সালেকা/ ওরে মালেকা/ ফুলবানু পারলি না বাঁচাতে। 

    দুদিন পরেই শহরের মানুষ মধুমতীর দিকে ছুটছেন। মধুমতী ছোট নদী। মরে আসছে। ওপারের চরে ক্ষীরার ক্ষেত। ক্ষীরার ক্ষেতের মধ্যে দিয়েও মানুষ আসছে। ফাঁকে ফাঁকে ক্ষীরা মুড়ি খাচ্ছে। 

    এই মধুমতীর পাড়েই মড়াখোলা। এই নদীর জলে হাওয়া খোলা। এর মধ্যে সুখী দিদি বসে আছে। হাঁটু মুড়ে। অর্ধেক জলে- অর্ধেক স্থলে। পিঠ বেয়ে নেমেছে চুল। নত মুখ। আঁচলটা গলায় পেঁচানো। চোখের মধ্যে অন্ধকার জ্যোৎস্না। মাথার উপরে চুলের মত কালো এক দাড় কাক বসে আছে। নির্ঘুম। স্থির দুচোখ। দুজনে নড়ে না। চড়ে না। পাথর-প্রতিম।

    এটা দেখে কমরেড শওকত চৌধুরী খুব দৌড় ঝাপ করেছেন। তিনি ফর্সা মানুষ। হাটুর নিচে মাংসপেশিতে এখনো গেঁথে আছে একটি তরতাজা বুলেট। চলতে ফিরতে তিনি বেশ বুঝতে পারেন। গোলগাল মুখ। কয়েকজন মানুষকে নিয়ে তারস্বরে শহরময় চেঁচিয়েছেন, শহীদ দুখীরামের বাড়ি শত্রু সম্পত্তি করা চলবে না। বন্ধ কর। শহীদ দুখীরামের বাড়ি দখলবাজি চলবে না- বন্ধ কর। 

    কমরেড শওকত চৌধুরী তখন বেশি ফেড হয়ে ভাবছেন, মহাত্মা মার্কস সাহেব এর কি ব্যাখ্যা দিয়েছেন? অথবা লেনিন? 

    সবাই তখন নদীর পাড়ে। কাক-মানুষ দেখতে ব্যস্ত। কেউ কেউ সিন্নি এনেছে। বলছে- সবই তার খেলা। কেউ কেউ প্রদীপ জ্বেলে গড় হচ্ছে। বলছে, ঠাকুর ঠাকুর।

    এ সময়ে সাধু পরমানন্দের বাড়ির পাশের বাড়িটিতে দিনরাত ঘর তুলছে পনু মিয়া আর হাবিল মিয়া। তারা দুভাই নদীর পাড়ে যায়নি। যাওয়ার সময় নেই। মিস্ত্রীদের ঠং ঠাং শব্দ আর ক্লাবের ছেলেদের হল্লাবল্লার মাঝখানে লিকলিকে মথি উদয় চেঁচিয়ে মাঝে মাঝে বলছে- সুখী। অ সুখী। তোমাদের ঘর গেল কই? 

    এই রকম কোলাহলে পনু মিয়ার ভাই হাবিল মিয়ার কিঞ্চিৎ নেশা আসে। ঢক ঢক করে গিলেছে ধেনো মদ। মথি উদয়ের কাঁধে হাত রেখে হাবিল মিয়াও বলতে শুরু করেছে, সুখী। অ সুখী। তোমার ঘর গেল কই? তোমার নীলমণি লতাটি গেল কই? 

    মথি উদয় বলে কান্না কান্না গলায়। ব্যাকুল হয়ে। আর হাবিল মিয়া বলে শ্লেষ জড়ানো গলায়। গলা ধরে দুজনে দু-রকমভাবে বলে। আর ধেনো মদ গেলে। মথি উদয়ের গলা দিয়ে নামে না। মাথার উপরে ঢেলে দেয়। আর বলে, অ সুখী। তুমি কোথায়? অ সুখী তোমার ঘর গেল কোথায়?

    --পনু মিয়ার কাছে।

    --পনু মিয়া কে?

    -- রাজাকারের চেয়ারম্যান।

    --পনু মিয়া এখন কী?

    --পৌরসভার চেয়ারম্যান।

    -- পনু মিয়া কেমন মানুষ?

    --পোস্টারে লেখছে- তিনি সৎ মানুষ।

    --এখন কি দরকার?

    -- দেয়ালে লেখছে, সৎ মানুষের সরকার।

    রাত্রি বাড়ে। আকাশ থেকে জ্যোৎস্না নেমে যায়। দুইজন ধেনো লোক তারস্বরে এইরূপ মদমত্ত হয়ে নাচে। সাধু পরমানন্দ ডাক্তার আরও জোরে আদি পুস্তক কানের উপর চেপে ধরে। 

    ‘তখন প্রভু কহিলেন, তুমি কি করেছ? তোমার ভাইকে তুমি হত্যা করেছে? তার রক্ত মাটির নিচ থেকে আমার উদ্দেশ্যে চিৎকার করছে। তুমি তোমার ভাইকে হত্যা করেছ এবং তোমার হাত থেকে তার রক্ত নেয়ার জন্যে পৃথিবী বিদীর্ণ হচ্ছে। তাই এখন আমি এই ভূমিকে অভিশাপ দেব। অতীতে তুমি গাছপালা লাগিয়েছ এবং গাছপালার ভালই বাড় বৃদ্ধি হয়েছে। কিন্তু এখন তুমি গাছপালা লাগাবে এবং মাটি তোমার গাছপালা বাড়াতে আর সাহায্য করবে না। এই পৃথিবীতে তোমার কোনও বাড়ি থাকবে না, তুমি এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ঘুরে ঘুরে বেড়াবে।‘ 

    ঠিক এ সময় ভাত সমেত হাড়ি কুড়ি বুড়ি কমলা দিদিমণি পুকুরের জলে ভাসিয়ে দিচ্ছে। জলের ভিতর ভাতগুলো শিউলি ফুলের মত ডুবতে ডুবতে ডুবে যাচ্ছে। ডুবতে ডুবতে বুড়বুড়ি ছাড়ে। আর ঢোল ডগর বাজে।

    তাই দেখে আকাশে মেঘ জমে। ঝম ঝম করে বৃষ্টি নামে। বৃষ্টিতে সুখী দিদির চুল ভিজছে । চোখ ভিজছে । নাক ভিজছে । মুখ ভিজছে। গা ভিজছে । গলে জল হচ্ছে । জল হয়ে নদীর জলে মিশে যাচ্ছে । সুখী দিদির চুল নাই। নাক নাই। চোখ নাই। মুখ নাই। গা নাই। হাড় নাই। আমাদের সুখী দিদিও নাই। জলে ধুয়ে গেছে। কিন্তু শহীদ দুখীরামের বউ সুখী দিদি আছে। অর্ধেক জলে। অর্ধেক স্থলে। অন্তর্জলী যাত্রায়। নিরাকার। অন্ধকার জ্যোৎস্নার তরঙ্গের মত। ফসফরাসের আলেয়ার মত। চকখড়ির দাগের মত। তার মাথার উপর দাঁড় কাকটি বসে আছে। পলকহীন। বাড়ি ভুশুণ্ডির মাঠ।

    ------- ( গুরুচণ্ডা৯ প্রকাশিত লেখকের 'কাঠপাতার ঘর' সংকলনের গল্প)
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ইস্পেশাল | ১৫ এপ্রিল ২০১৪ | ১০৫২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • kk | 81.236.62.176 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৪ ০৫:৫২87474
  • ছবির মত !!
  • | 24.99.95.169 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৪ ১২:৪৮87472
  • এই লেখাটা পড়ার ইচ্ছে ছিল অনেকদিন, সেই যবে সচলে আপনার লেখা প্রথম দেখি।
    সুখী দিদি দুখী দিদিরা কেমন ভুইজতে ভিজতে ভিজতে ভিজতে ..........
  • | 24.99.95.169 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৪ ১২:৪৮87471
  • এই লেখাটা পড়ার ইচ্ছে ছিল অনেকদিন, সেই যবে সচলে আপনার লেখা প্রথম দেখি।
    সুখী দিদি দুখী দিদিরা কেমন ভুইজতে ভিজতে ভিজতে ভিজতে ..........
  • vikram | 93.147.135.239 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৪ ১২:৫১87473
  • শাবাশ শাবাশ শাবাশ
  • dd | 132.171.80.177 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৪৯87475
  • হাড় হিম করা ভালো।

    একবার, শুনুন কুলদাবাবু, আমেরিকার একটি শহর,একটি পার্ক, তার কিছু মর্মর মুর্ত্তি .... ইত্যকার ছবি নিয়ে আপনি গল্পো ফেঁদেছিলেন।

    আবার লিখুন তো শহর নিয়ে,আম্রিকা নিয়ে, টিন এজার মে'দের নিয়ে... এইসব নাগরিক,আধুনিক লোকজন প্রেক্ষাপট নিয়ে। পড়ি।
  • রোবু | 213.99.211.18 (*) | ১৭ এপ্রিল ২০১৪ ০৬:২১87476
  • কী পাওয়ারফুল!!
  • Dr. Sourav Chandra | 127.194.209.161 (*) | ১৮ এপ্রিল ২০১৪ ০৮:২৫87477
  • Asadharon Luglo.. aro erakom lekha porar opekhhai roilum..
  • Tim | 188.91.253.21 (*) | ১৮ এপ্রিল ২০১৪ ১১:০৬87478
  • অপূর্ব! লেখককে অনেক অভিনন্দন।
  • i | 134.168.166.51 (*) | ১৮ এপ্রিল ২০১৪ ১১:৫৫87479
  • '...আচমকা তার নাম ধরে কে ডাকল-পরমেশ, ও পরমেশ! মাঝরাত ফনফন করছিল। ঝিঁঝিঁঝির গর্তে জল, ঝিঁঝি ডাকছিল না। খোঁদলে জল ঢুকে পড়ে কোথায় ভাসিয়ে নিয়ে গেছিল টুরিব্যাংগুলোকেও!এমন সময় ডাক-পরমেশ, ও পরমেশ!.. মুখের ওপর ঝুঁকে পড়ে পরমেশের ঠাকুরমা বলল-আমি, আমি রে নাতি... জেগে থাক বাছা, ঘুমোস না।"। ধড়ফড়িয়ে জেগে উঠে পরমেশ বলল-কইনীটা আবার শুরু কর ঠাকুরমা.. ফের 'কইনী ' বলা শুরু হয়।'কইনী' ফুরোয় না, কেউ না কেউ ঘুমে ঢুলে পড়ে। কাহিনীকারের ডাকে জেগে উঠে সে আগা মুড়ো খুঁজে পায় না। কাহিনীকারকে আবার গোড়া থেকে কাহিনীটা বলতে অনুরোধ করে। নিরলস কাহিনীকার ফের শুরু থেকেই 'কইনীটা' বুনে চলে। রাত বাড়ে। রাত ফুরোয় না। আরো ঘন করে বৃষ্টি আরম্ভ হয়। এ বৃষ্টি থামে না।"

    নলিনী বেরার বর্ষামঙ্গল থেকে-
    মনে পড়ল।
  • audity falguni | 127.18.231.40 (*) | ২৩ এপ্রিল ২০১৪ ১২:০৭87480
  • Good story no doubt! But I recall I have read this same story elsewhere with a different title.
  • Kulada Roy | 152.105.9.124 (*) | ২৫ এপ্রিল ২০১৪ ০৪:০৮87481
  • গল্পটির সুখীর বাড়ি গোপালগঞ্জের গোহাটায়। বঙ্কিম রায়ের বোন। আমাদের কাকা লাগে। বিয়ে হয়েছিল আমাদের বাড়ির পাশে। একাত্তরের তার স্বামীকে হত্যা করা হয়। সবে তখন তার বিয়ে হয়েছিল।
    এই গল্পটি যখন লিখেছিলাম--তখন শুরুতে নামগুলো প্রকৃত নামই ছিল। যেমন সুখী দিদির নাম দু:খি দিদি। পনু মিয়ার নাম পলু মিয়া।
    তবে সাধু পরমানন্দ, তার স্ত্রী কমলা দিদিমনি, তাদের ছেলে মথি উদয়ের নাম পালাটানো হয়নি। মথি উদয় চরিত্রটি জীবিত। তিনি আমদের উদয়দা। পরে তিনি দার্শনিক হয়ে গিয়েছিলেন। এখন রঙ মিস্ত্রী। এই মথি উদয়দের বাড়িতে আমাদের খুব যাওয়া আসা ছিল। বড়দিনে তারা যীশু কীর্তন গানের আয়োজন করতেন। এবং গুড় মুড়ি খাওয়াতেন। মথি উদয়কে নিয়ে আরেকটি গল্প লিখেছি--নাম মথি উদয়ের তারা।
  • Kulada Roy | 152.105.9.124 (*) | ২৫ এপ্রিল ২০১৪ ০৪:১১87482
  • অদিতি ফাল্গুনীর দিদিমা'র বিষয় সম্পত্তির ব্যাপারে পলু মিয়া দেখভাল করতেন। একাত্তরে আমাদের বাড়ির একটি অংশ পলু মিয়া দখল করেছিলেন।
  • a x | 86.31.217.192 (*) | ২৫ এপ্রিল ২০১৪ ০৫:৩০87483
  • গা ছমছমে ভালো। এই শব্দ বিন্যাস, এই ছবি, মাথায় পাক দিতে থাকে অনেকক্ষণ।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে মতামত দিন