এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • একটি বই, আর আমার এই সময়

    Bishan Basu লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | ১৪৬৬ বার পঠিত
  • একটি বই, আর আমার সময়

    বিষাণ বসু

    একটি আশ্চর্য বইয়ে বুঁদ হয়ে কাটলো কিছু সময়। দি রেড টেনডা অফ বোলোনা।

    প্রকাশক পেঙ্গুইন মডার্ন। দাম, পঞ্চাশ টাকা। হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। মাত্র পঞ্চাশ টাকা।

    বোলোনা ইতালির এক ছোটো শহর। শহরের সব জানালার বাইরে সানশেডের মতো করে মোটা কাপড়ের ছাউনি। সেই ছাউনির রঙ লাল। সব বাড়িতেই। সময়ের প্রভাবে, কোনোটি উজ্জ্বল, কোনোটি বা ফিকে হয়ে আসা লাল। স্থানীয় ভাষায়, সেই ক্যানভাস কাপড়ের ছাউনির নাম টেনডা। টেন্ট শব্দটি কি একই সূত্র থেকে এসেছে? জানিনা। লেখক প্রশ্ন করেন নি। আমারও প্রশ্ন জাগে নি পড়ার মুহূর্তে। এখন মনে হলো।

    লেখক জন বার্জার। গত শতকের দ্বিতীয়ার্ধ জুড়ে, তিনি আমাদের দেখার চোখ বা পড়ার মনকে এমনভাবে আচ্ছন্ন করে রেখেছেন, তার জুড়ি মেলা ভার।

    এটাকে বই বলা যায় কি না, বলতে পারবো না। মাত্র ছাপ্পান্ন পাতা। কোনো কোনো পাতায় মাত্র দুটি কি চারটি লাইন।

    কাকার সাথে বার্জারের সম্পর্কের স্মৃতিচারণ। বোলোনা শহরের গল্প। ছাড়া ছাড়া।

    শুরুতেই লেখক বলে নেন, প্রথমেই জানিয়ে দিতে চান, তিনি তাঁর কাকাকে কেমনভাবে ভালোবাসতেন, কীভাবে ভালোবাসতেন, ঠিক কতোখানি না বোঝা মিশে ছিলো সেই ভালোবাসায়। প্রথাগত অর্থে ব্যর্থ সেই কাকাকে কৈশোরে পা রাখা বার্জারের ভালোবাসা, যাঁর ছায়া রয়ে যাবে বার্জারের পরবর্তী জীবনভর।

    এ এক আশ্চর্য সম্পর্কের গল্প। ফেলে আসা সময়ের স্মৃতিচারণ। যখন মানুষ বেড়াতে যেতেন, কিন্তু পর্যটন শিল্পের জন্ম হতে পারেনি। শেষ লাইনটা বার্জারের, আমার নয়।

    অব্যর্থভাবে আসে বোলোনা। বোলোনা, যে শহরে ফিরে যাওয়া যায় বারবার, ফিরতেই হয়।

    বোলোনা অবশ্য জর্জিও মোরান্দি-রও শহর। বিগত শতকের এক অনন্য শিল্পী। যিনি বাড়ি ছেড়ে, বাড়ির শহর ছেড়ে, আজীবন নড়বেন না প্রায় কোথাও-ই। আর, সামান্য কয়েকটি রঙের ব্যবহারে, ফুটিয়ে তুলবেন কিছু স্টিললাইফ, প্রায় একই কিছু সামগ্রী ফিরে আসবে বারবার তাঁর ছবিতে। লেখকের কাকার ভাষায়, এক অত্যন্ত নীরব চুপচাপ মানুষ এই মোরান্দি। না, তিনি মোরান্দিকে দেখেন নি। তাঁর বোলোনা যাত্রার আগেই মোরান্দি মারা গিয়েছেন। কিন্তু, মোরান্দির ক্যানভাস থেকেই তো চেনা যায় তাঁকে।

    কাকার সাথে বার্জার বোলোনা যেতে পারেন নি। তিনি যান, পরে, কখনো।

    রাস্তায় ঘুরে, চার্চে, বোলোনার বড়ো চত্বরে, টেনডা কাপড়ের দোকানে, স্মৃতিসৌধের সামনে বার্জারের অনুভবের ঠিক কোনখানে মিশে সহচর থাকেন সেই কাকা।

    একটি বড়ো দেওয়ালের গায়ে কয়েক হাজার মানুষের সাদাকালো ছবি, নামসহ রাখা থাকে। তাঁরা শহীদ। এই শহরে, ফ্যাসিজম বিরোধী আন্দোলনে যাঁরা যোগ দিয়েছিলেন, তাঁদের এক চতুর্থাংশই নিহত হন। কয়েক হাজার শহীদ। একটি ছোটো শহরে।

    আমাদের চিন্তার স্বাধীনতা, ইচ্ছেমত কথা বলার স্বাধীনতার মূল্য তো কম নয়!!

    শহরে ঘুরতে ঘুরতে বার্জারের কানে আসে, কাকার সাথে কথোপকথন।

    দ্যাখ, শহীদরা কিন্তু খুব সাধারণ মানুষ। তাঁরা ক্ষমতাধর নন। হ্যাঁ, মৃত্যুর পর কিছু ক্ষমতা হয়তো তাঁদের নামের সাথে জড়িয়েই যায়, কেননা, তাঁরা প্রাণ দিয়েছেন।

    আর, শহীদরা ঈর্ষনীয়ও। হ্যাঁ, তাঁদের যে যন্ত্রণা পেতে হয় শেষ মুহূর্তে, সেইটা খুব কষ্টকর, আর সহানুভূতির যোগ্য। কিন্তু, শহীদরা জানতে পেরেছেন, কীভাবে স্পর্শ পেতে হয়, যেটা বাকি লড়িয়েরা জানতে পারেন না। সেইজন্যেই, শহীদেরা ঈর্ষনীয়।

    আর হ্যাঁ, মৃত্যুর আগে, শহীদেরা জানতে পারেন, তাঁদের জীবন কোনো একটা উদ্দেশ্য পূরণের লক্ষ্যে নিয়োজিত হলো। হ্যাঁ, সেই উদ্দেশ্য যদি ভুল হয়, তা-ও শহীদের জীবন ঈর্ষনীয়।

    শহীদের মৃত্যুর উদ্দেশ্য, যাতে তাঁরা সর্বত্র আবাস পান, সবার গৃহে, সকলের অন্তরে। যখন শহীদপূজা শুরু হতে থাকে অট্টালিকা প্রাসাদে, সেইখানেই শহীদের প্রস্থান।

    ছোটো ছোটো প্রাত্যহিকতা নিয়ে ছোটো ছোটো মানুষের বেঁচে থাকার সাথে তাই শহীদ হওয়ার খুব মিল। দুটোই, মৃত্যু নয়, বেঁচে থাকার সাথেই মিলেমিশে যায়।

    বার্জারের ছাড়া ছাড়া অনবদ্য কথনের রেশ রয়ে যায় বই শেষ করার পরেও, বহুদূর পর্যন্ত।

    একসময় ঘোর কাটে।

    তাকিয়ে দেখি, আমি রয়েছি, এই পশ্চিমবঙ্গে, কলকাতা শহরে।

    অনেক লাশের পাহাড় আমাকে ঢেকে ফেলেছে। এক সেতুর ভেঙে পড়ার অব্যবহিত কাল পরেই এক বাজারে আগুন। উর্দুর পরিবর্তে বাংলাভাষার শিক্ষক চেয়ে খুন হয় ছাত্র। সব সাধারণ মুখ শহীদ হলে, তাঁরা কি ক্ষমতার অধিকারী হয়ে ওঠেন? নিদেনপক্ষে, ক্ষমতার্জনের পথে অনিবার্য বোড়ে?

    আর, সব শহীদই কি ক্ষমতার ঘটা করে শোকপালনের শেষে পাগলু ড্যান্স ড্যান্স নাচ দেখে গৃহত্যাগী হতে পারেন?

    শহীদের কথা বলতেই, অনিবার্যভাবে, বার্জারের মনে পড়ে যায়, ক্যারাভেজিও অঙ্কিত শেষ ছবি, উরসুলার শহীদ হওয়া। মিথের চরিত্র উরসুলা, নিজের প্রাণ বাঁচানোর শর্তে এটিলার পত্নী হতে চান নি। পরিণামে, এটিলার হাতেই নিহত হন তিনি।

    উপস্থিত বাকিদের চোখে মৃত্যুর আকস্মিকতার অভিঘাত আর উরসুলার চোখে আত্মুমর্যাদামিশ্রিত বিস্ময় অমর হয়ে গিয়েছে ক্যারাভেজিও-র তুলিতে।

    কিন্তু, ব্রীজের তলায় সঙ্গীদের জন্যে রান্না করছিলেন যিনি? বা, ইসলামপুরের সেই ছাত্ররা? তাঁরাও কি অমর হতে পারবেন?

    তাঁরা কিসের জন্যে শহীদ হলেন? নাকি, এ শুধু মরে যাওয়া, শহীদ হওয়া নয়?

    তাঁরা কি উন্নয়নের বলি? রাজনীতির বোড়ে? শিকার রাষ্ট্রীয় ঔদ্ধত্যের? প্রশাসনিক অপদার্থতার?

    আর, আগুনে পুড়ে যাওয়ার জন্যে রুটিরুজি হারালেন যে কয়েকশো, নাকি কয়েক হাজার, দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করা মানুষ? তাঁদের ভোটে নির্বাচিত সরকার আঠাশ কোটি টাকা পুজোর চাঁদা দিতে পারেন, কিন্তু তাঁরা তো মূলস্রোতে ইনভিজিবল।

    আর, আমাদের এই ছোটো ছোটো ভালো লাগা নিয়ে ছোটো ছোটো বেঁচে থাকা? এও কি এক সম্মিলিত প্রতিরোধ?

    এও কি বেঁচে থাকা?

    নাকি শুধুই, নিস্পৃহ আত্মকেন্দ্রিকতা?
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | ১৪৬৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • বিপ্লব রহমান | 340112.231.126712.74 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:৩০62093
  • প্রশ্নগুলো খুব জ্বালাচ্ছে আজকাল!
  • Bishan Basu | 785612.35.012312.227 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৯:১৪62094
  • বেড়াতে যাওয়া শিল্প হলেও, আমার কখনো ইতালি যাওয়া হবে না। বিষাণ বাসুর উল্লেখিত বইটিও পড়িনি। কিন্তু বোলোনাকে আমি দেখেছি, দেখেছি আমার দেশে। উত্তরবঙ্গের একটি ছোট্ট শহর। যার উত্তরে নজর দিলে নজরে আসে নীল পাহাড়, বরফের মুকুট তার মাথায়। সবুজ, নির্জন শহরের একটি থানায় ঘটলো এমনই একটি ফ‍্যাসিবাদী বিরোধী আন্দোলন। কাঞ্চনজঙ্ঘার সাদা বরফ আর সবুজ চায়ের বাগান আর তার সাথে শালের জঙ্গলে লাগলো আগুনের রঙ। বহু যুবক কিশোরের মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে সে আন্দোলন ছড়িয়ে পরলো দেশের দূর প্রান্তে।
    বোলোনার মানুষ একসময় হয়তো তাদের লড়াইয়ে জিতে গেছে, কিন্তু এ দেশের একই মতাদর্শের স্বৈরাচারী শাসকেরা সাংবিধানিক বাহুবলী ভাড়াটে সৈনিক দিয়ে দমিয়ে রেখেছে, সাধারণ মানুষের চাওয়া পাওয়া।
    বিষাণ বাসুকে ধন্যবাদ এমন চমৎকারভাবে একটি বইয়ের প্রসঙ্গে দেশের অরাজক অবস্থার বর্ণনা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন।
  • Bishan Basu | 7845.11.9005612.27 (*) | ১০ অক্টোবর ২০১৮ ০৫:৪৮62095
  • খুব ভালো লাগল
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন