এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • সিঁদুর খেলা - অন্য চোখে

    Swati Ray লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৭ অক্টোবর ২০১৭ | ১৫৮৬ বার পঠিত
  • সত্তরের দশকের উত্তর কলকাতার প্রান্তসীমায় তখনো মধ্যবিত্ততার ভরা জোয়ার. পুজোরা সব বারোয়ারি. তবু তখনো পুজোরা কর্পোরেট দুনিয়ার দাক্ষিণ্য পায় নি. পাড়ার লোকের অর্থ সাহায্যেই মা দুর্গা সেজে ওঠেন তখনো. প্যান্ডাল হপিং তখন শুরু হয়ে গেছে. পুজোর সময় তখনই মহঃ আলি পার্কের ঠাকুর বা সঙ্ঘশ্রী , সঙ্ঘমিত্র র ঠাকুর দেখাটা "পুজোয় চাই নতুন জুতো"র মতই মাস্ট. আর আবশ্যিক ছিল পুজোর অজ্ঞলি দেওয়া. অষ্টমীর সকালে নতুন জামা পড়ে ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে ঠাকুরের পায়ে ফুল বেলপাতা ছুঁড়ে দেওয়া. মাইকে মন্ত্র বাজছে .... কিন্তু সে শোনার থেকে মন জুড়ে থাকত চকচকে ত্রিনয়নের ছবি আর মায়ের শিখিয়ে দেওয়া মন্ত্র " সকলের তুমি ভাল কর ঠাকুর". .... সেই আমলের আমার পুজোয় আরো দুটো জিনিস ছিল এক্কেবারে আগ মার্কা আবশ্যিক . অষ্টমীর সন্ধ্যায় দেবীর আরতি এবং ধুনুচি নাচ. ঢাকের বোলে উদ্দামতা- গোটা মন্ডপ ধুনোর ধোঁয়ায় ভরে মগ্ন নৃত্য. ধোঁয়ায় চোখে জ্বালা ধরছে . জ্বলন্ত ধুনোর টুকরো ছিটকে পড়ছে চারদিকে. আর সেই ধোঁয়ার মধ্যে ভেসে উঠছে দেবীর মুখ. জগৎ জোড়া উৎসবের মাঝেও ত্রিনয়নের কোলে যেন চকচক করে উঠছে মুক্তোদানা. আনন্দের নাকি আসন্ন বিচ্ছেদ বিষাদের ? ... আর দেখতাম আমার বৃদ্ধা পিতামহীর টানা টানা চোখের কোল বেয়ে তোবড়ান গালের উপর নেমে আসত অশ্রুধার . কি জানি কেন? হয়তো নিজের মায়ের কোলটি স্মরণ করেই ! ...... সেদিন আরতির শেষে যখন দিদার হাতটি ধরে স্বল্পালোকিত পথ ধরে বাড়ি ফিরতাম , তখন দিদার গলায় বেজে উঠত আক্ষেপের সুর , আর তো মোটে দুদিন!....... সেই দুদিন পেরোলেই আবার মা, জ্যেঠিমার হাত ধরে মন্ডপ মুখো হতাম. সবার হাতে বরণের থালা. মুখে মিস্টি জল দিয়ে , পানপাতা দিয়ে মুখ মুছিয়ে , প্রদীপের উষ্ণতা তার বুকে , বুকে লাগিয়ে তাকে বলা আবার এসো মা. আমাদের মত গেঁড়িদের অবশ্য অধিকার শুধু টুলের উপর উঠে ঠাকুর প্রণামে. টুলের থেকে নাবতাম যখন তখন দেখতাম মা, জ্যেঠিমার সিঁথি তে সিঁদুর দিয়ে দিচ্ছেন পাড়ার কাকীমারা . আর হাতের শাঁখা , লোহায় ছুঁইয়ে দিচ্ছেন মা দুর্গার পায়ে ঠেকিয়ে আনা সিঁদুর কৌটোর সিঁদুর. আর একটু বড়রা মৃদু কন্ঠে আশীর্বাদ করছেন চির এয়োতী হও. পুরো পর্বটার মধ্যেই একটা বিষাদের অনুচ্চার স্বর চারিয়ে থাকত.

    সিঁদুর খেলা শব্দটা আমার ডিকশনারীতে ওঠে নি তখনো. প্রথম শুনলাম কলেজে উঠে , আমার এক সদ্য বিবাহিত বান্ধবীর মুখে. ততদিনে বুঝে গেছি " সকলের তুমি ভাল কর ঠাকুর " বললেই ঠাকুর সবার কষ্ট দূর করে দেন না. দুঃখ কষ্ট উৎসব আনন্দ - সবই জীবনের নিত্য সত্য. এই সত্য টি আত্মস্থ হওয়ার পরে প্রথম যে টি বাদ পড়ল তা হল অষ্টমীর অজ্ঞলি. সেই বিশ্বাস অবিশ্বাসের দোলাচল মুহূর্তে শুনলাম , বাগবাজার সার্বজনীনের পুজোর মজাটাই হল সিঁদুরখেলায়. অবাক হলাম. মনে পড়েছিল কয়েক মাস আগের সেই বান্ধবীরই বিয়ের পরের দিনের অশ্রুভারাক্রান্ত অসহনীয় বিদায় ক্ষণটি .হয়তো বিদায়ের মধ্যেই অন্য আগমনীর সুর লুকিয়ে থাকে.
    এরও কিছু বছর পরে নিজের জীবনেই সেই বিদায় বাঁশিটি বাজল. আগের রাত্রে আমার সিঁথিটি রঙীন হয়েছে অন্য একজনের বিজয় ঘোষণা করে. পরের দিন সকালে শ্বশুর বাড়ি রওনা হওয়ার আগে মা মেয়ে জামাইকে যত্ন করে খাওয়াচ্চেন , তারপর আশীর্বাদ করছেন. আমি দেখছি আমার মায়ের নাকের ডগাটি লাল হয়ে যাচ্ছে. মুখটা যাচ্চে অল্প ভেঙে. হুড়মুড়িয়ে মনে এল সেই ভাঙা পুজো মন্ডপের স্মৃতি. তখনো মার মুখটা এমনই হত যে.

    পরের দিনগুলোতে অপেক্ষা করছিল প্রথা বর্জন জনিত চাপ. শুধু আংটি বাদে বিবাহের কোন চিহ্ন শরীরে ধারণ করব না বলে ঠিক করলাম বিভিন্ন ব্যক্তিগত কারণে. আজ প্রায় কুড়ি বছর পরে সেটা যত সহজে লিখছি , কাজটা তত সহজে হল না. তবু every one has to carry their own cross. .....আর সেই সঙ্গে স্বেচ্ছায় ত্যাগ করলাম "সিঁদুর খেলার" অধিকার.

    অবশ্য জীবনে একবার একটি আশ্চর্য অভিজ্ঞতা হয়েছিল. সেবার বিজয়া দশমীর দিন দুপুরে গিয়ে হাজির হয়েছি উত্তর বঙ্গের এক জংলী রিসোর্টে. বিকেলে রিসোর্টের মধ্যেই হাঁটছি , হঠাৎ দেখি ভিতরের দিকের থেকে ঢাকের আর কাঁসরের শব্দ. রিসোর্টের কর্মচারীরা মিলে পুজোর আয়োজন করেছিলেন. তার বিসর্জন হচ্ছে. ছোট্ট প্রতিমা - যারা আয়োজক তারাই কাঁধে করে নিয়ে যাচ্ছেন. পিছনে চার পাঁচ জন মহিলা বরণের থালা হাতে দেবীর অনুগামী. প্রত্যেকের মুখে উৎসব শেষের কষ্টের দাগ. অবশেষে রিসোর্টের গেট পেরিয়ে তিনি মিলিয়ে গেলেন পাহাড়ের কোলে. আমি দূরের থেকে ছেলে কে কোলে নিয়ে দেখছিলাম. বড় ভাল লাগছিল. কলকাতার প্রাণহীন আড়ম্বর আর দেখনদারির কনট্রাস্টে আরও প্রাণে টান পড়ছিল. হঠাৎ একটি মেয়ে , একেবারেই বাচ্চা , খুব বেশি হলে বাইশ তেইশ বছর বয়স , দেখেই বোঝা যাচ্ছে খুব বেশিদিন গায়ে বিয়ের জল পরে নি, এগিয়ে এসে আমাকে বলল, দিদি যদি আপত্তি না থাকে , আপনাকে একটু সিঁদুর পরাবো? যে পরম মমতায় সে সেদিন সম্পূর্ণ অপরিচিত আমার সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়েছিল, সে অনুভূতি আমার নাগরিক জীবনে বিরল. পৃথিবীর যে প্রান্তেই তুমি থাকো , তোমার সর্বতো কল্যাণ হোক.

    আজ যখন কমপ্লেক্সের পুজোর মন্ডপে সবাই বরণের পরে সিন্দুর খেলায় মেতে ওঠেন , আমি দূরের থেকে দেখি খালি. ঢাকের বোলে বাজতে থাকে " ঠাকুর থাকবে কতক্ষণ, ঠাকুর যাবে বিসর্জন"। মায়ের মুখটি আজো ঠিক আগের মতনই. আজো চোখের কোণে আটকে থাকে অশ্রুবিন্দু. পানপাতার আদরে এইবারই হয়তো টুপ করে ঝরে পড়বে সেটি. মনে পড়ে নিজের বাড়ি ছাড়ার আগে বাবার বুকে মুখ গুঁজে গিলে ফেলা চোখের জলের কথা অথবা বছরে একবার বাড়ি আসা কন্যার বিদায়ের সময় দূরে দূরে পালিয়ে থাকার কথা. এই কষ্ট গুলো বুকে নিয়ে যারা খেলায় মাততে পারেন , তাঁদের মনের জোরের তারিফ করতে হয়.

    আমি তো চির-অপারগের দলে রয়ে গেলাম !
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৭ অক্টোবর ২০১৭ | ১৫৮৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Swati Ray | 127.194.42.122 (*) | ০৭ অক্টোবর ২০১৭ ০১:২৩61797
  • অনেক ধন্যবাদ সমীরকে।
  • | 116.210.228.18 (*) | ০৭ অক্টোবর ২০১৭ ০২:০৫61798
  • বহ এই সাহসটার জন্যই লেখাটা বেশী ভাল লাগল।
  • De | 192.57.104.200 (*) | ০৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:২৮61799
  • সিন্দুর? ঐ লাল টক্টকে মার্কারি কম্পাউন্ড? ওতো বিষ, পরাই উচিত নয়, খেলা দূরে থাক!
  • ঝর্না | 24.97.103.54 (*) | ০৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৪:০৪61800
  • খুব ভালোলাগল...
  • সমীর | 52.110.173.199 (*) | ০৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৫:১৩61796
  • সুন্দর। শুধুই সুন্দর? সিঁদুর রঙা সুন্দর। :)
  • Swati Ray | 69.97.220.169 (*) | ০৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৫:৪০61801
  • দ কে ধন্যবাদ। আর De র জন্য ভয় হচ্ছে :D সিঁদুর খেলা অনুরাগী বঙ্গ মহিলাকুল আপনাকে কি করবেন ভেবেই ভয়ে কম্পিত হচ্ছি! :D
  • Arindam Chakrabarti | 212.78.234.42 (*) | ০৮ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৩৩61802
  • লেখাটি সম্পূর্ন পড়লে মিশ্র অনুভূতি হয়। এমনিতে বলার কিছু নেই তবু ব্যক্তিগত স্তরে বলব বরন এবং তদ্‌জনিত সিঁদুর পরানো একটি ধর্মীয় আচার। আচার বিচার হয়ে ওঠে প্রতিপদে। এবং ভয়ের।

    সিঁদুর 'খেলা' নয়। সিঁদুর, 'খেলা' হতেই পারেনা।

    আর একে সাজের উপকরণ, লাগালে বা অলৌকিক বিভা ছড়ায় এসব বলে যারা কাব্য ফাঁদে তারা ধামা দিয়ে সত্য চাপ দেয়।
  • Atoz | 161.141.85.8 (*) | ০৯ অক্টোবর ২০১৭ ০৫:৩৭61804
  • মার্কারি কম্পাউন্ডের বদলে ভালো অর্গানিক সিঁদুর বানানো হোক, জবাফুল শুকিয়ে গুঁড়ো করে বা ওরকম কিছু থেকে। তারপরে পতঞ্জলির বাজার জিতে নেওয়া হোক। ঃ-)
  • de | 24.139.119.174 (*) | ০৯ অক্টোবর ২০১৭ ০৬:২৫61803
  • ভয় পাবেন্না স্বাতী - সিঁদুরে হাত দেয় না এমন বঙ্গ মহিলাও কম নেই! বাঙালী সিঁদুরের চাইতে বরং মেটে সিঁদুর বেশী ভালো। আমি অবাক হয়ে যাই, ওই সিঁদুর মাখা মিষ্টি লোকে কি করে খায়, তাই ভেবে! লাল আবির দিয়ে খেললেও তো পারে! আজকাল আবার চ্যানেলে চ্যানেলে সিঁদুরখেলা হয়!
  • AP | 121.93.166.58 (*) | ১০ অক্টোবর ২০১৭ ০৫:৫৩61805
  • @দে, Atoz,
    সিঁদুর সমস্যা কি শুধু মার্কারীজাতীয় ? মানে শারীরিক বিষক্রিয়ার ভয় ? নীতিগত কোনো সমস্যা নেই !
  • de | 24.139.119.173 (*) | ১০ অক্টোবর ২০১৭ ০৬:০২61806
  • নীতিগত সমস্যা নিয়ে তো এই লেখাটা লেখাই হয়নি - নীতির কথা বল্লে তো ইন্ফাইনাইট সিরিজ আসবে -

    নীতিগতভাবে তো অনেক কিছুরই বিরোধী আমি - সেসব তুলে এই লেখার নষ্টলজি নষ্ট করতে চাইনি, যেখানে লেখিকার সিঁদুর জড়িত অনেক স্মৃতি তুলে ধরা আছে। কি হবে সেসব কিছুকে কন্ট্রাডিক্ট করে?

    আমার নীতিবোধ দিয়ে সিঁদুরখেলা বন্ধ হবে, অতো জোর তো নেই! অন্ততঃ যে মানুষগুলো খেলছেন তাঁরা শারীরিক ক্ষতি থেকে দূরে থাকুন, এটুকুই চাওয়া। তাই মেটে সিঁদুরের কথা বল্লাম। মনে হয় এতোজও এই ভাবনা থেকেই জবাফুল গুঁড়োর কথা বল্লো।
  • Atoz | 161.141.85.8 (*) | ১০ অক্টোবর ২০১৭ ০৬:৩৬61807
  • সেই। নীতির কথা বলতে গেলে মহাভারত। আর রীতিনীতি বলতে গেলে আরো বেশি। আর ব্যক্তিগতভাবে যে নীতি বা রীতি আমি অনুসরণ করি বা করতে চাই, তাতে অন্য কারুর চাওয়া বা করা মিলতেও পরে নাও পারে। তাই নিয়ে অযথা গোল গোল তর্ক করে জিলিপি ভেজে কার লাভ?
  • Atoz | 161.141.85.8 (*) | ১০ অক্টোবর ২০১৭ ০৬:৫০61808
  • সাজগোজ নাচগান গয়নাপাতি লারেলাপ্পা সব কিছু নিয়েই নীতিগত আপত্তি আছে হয়তো কারুর না কারুর। তাতে কী এসে যায়? যারা এইসব করার তারা করবেই। কেনই বা করবে না? যাদের আপত্তি আছে তাঁরা দূরে থাকুন।
  • Swati Ray | 127.194.45.192 (*) | ১২ অক্টোবর ২০১৭ ০৪:২১61809
  • একদম হক কথা। আমার পছন্দ-অপছন্দ আমার-ই। কিন্তু সেটা অন্যের ঘাড়ে জোর করে চাপানর কোন মানে নাই। ( তবে চোরা গোপ্তা ভাবে অন্যকে যুক্তি দিয়ে বোঝানর চেষ্টা করে যাব অবশ্যই )। দিনের শেষে ( এবং সব যুক্তি বুদ্ধির শেষে ) যে যার নিজের মত করে আনন্দে থাকুন। সব সময় মনে রাখতে চাই, "ওরে ভীরু তোমার হাতে নাই ভুবনের ভার "। ... তবে নীতিগত আপত্তি আমারও আছে। তবে এটা সেই লেখার প্রতিপাদ্য ছিল না, ঠিক যেমনটি de , atoz বলেছেন। ...... অরগানিক সিঁদুর বাজারে আছে বলে শুনেছি, কিন্তু কে ব্যবহার করে জানা নেই। সিরিয়ালে তো বলে দেয় নি যে অরগানিক সিঁদুর ব্যবহার করা উচিত।
  • dc | 132.174.124.86 (*) | ১২ অক্টোবর ২০১৭ ০৪:৫৩61810
  • এদিক দিয়ে আমি বেশ ভাগ্যবান, কারন সিঁদুর, শাঁখা ইত্যাদি পরা আমার যতোটা বোকাবোকা লাগে আমার স্ত্রীরও অতোটাই লাগে। ফলে এসব বাদ দিয়ে আমরা দিব্যি আছি।
  • sm | 57.15.10.253 (*) | ১২ অক্টোবর ২০১৭ ০৭:০০61811
  • কিন্তু সিঁদুর পরতে, শাখা পরতে ও বিজয়া র সময় সিঁদুর খেলা -এসব তো বহু মহিলা কেই ভালোবেসেই করে থাকতে দেখেছি।
    মঙ্গল সুত্র তো উত্তর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।
    পশ্চিমে ওয়েডিং রিং-কেন পরে থাকে সারা জীবন কে জানে?
    মানুষ যতোই নিজেকে উন্নত ভাবুক-আসলে আকাট মুখ্যু।
  • swati | 127.194.39.183 (*) | ১২ অক্টোবর ২০১৭ ০৭:৪৪61814
  • ভারতীয় নারী অনেক কিছুই ভালোবেসে করে!... এই দোষটা কি নারীজাতির উপর চাপানটা ঠিক হল? যে কোন চলে আসা প্রথার বাবদে প্রশ্ন তুললেই অনেক অশান্তি ভোগ করতে হয়. সেগুলো উড়িয়ে দিতে পারার মত মনের জোর তো সবার থাকে না. এটা ছেলে মেয়ে দুজনের জন্যই সত্যি কিন্তু. তাই কেউ কেউ কষ্ট পেয়ে মানে. কেউ আবার এত ঝঞ্ঝাটে না গিয়ে ভালবেসে মানে. ... তবে যাই বলুন আর তাই বলুন যারা জীবনে সব কিছু মেনে নিতে পারে, তারাই প্রতিকূল পরিবেশেও সুখী হয়. নাহলে শুধুই অশান্তির আগুনে জ্বলেপুড়ে মরতে হয়.
  • Atoz | 161.141.85.8 (*) | ১২ অক্টোবর ২০১৭ ০৮:১২61815
  • রাতদিন সংসারে অশান্তির আগুনে জ্বলছেন অথচ শিশুকন্যাদের শেখাচ্ছেন "বর আসবে এখুনি/ নিয়ে যাবে তখুনি", এইরকম পরস্পরবিরোধী ব্যাপার আমাদের সমাজে অহরহ চলে। মালিক ও ক্রীতদাসের সমাজ কিনা! শুধু যে স্বামী স্ত্রী তে মালিকত্ব ক্রীতদাসত্ব তা তো নয়, বসে সাবর্ডিনেটে, নেতায় নাগরিকে, গুরুজনে কনিষ্ঠজনে, শিক্ষকে ছাত্রতে---বিন্দুতে বিন্দুতে এই অনাচার। সর্বত্র। যেখানেই যার একটুমাত্র অধিক ক্ষমতা আছে, সেই সেটা ফলাচ্ছে অপেক্ষাকৃত কম ক্ষমতাধিকারীর উপরে।
    সব ভেঙেচুরে আগুন জ্বালতে হবে। বিপ্লবের আগুন।
    "ওরে নৈরাজ্য, নেমে আয় আমার শুকনো পাতার ডালে / এই গরমে নতুন দিনের আগমনের কালে।"
  • de | 69.185.236.52 (*) | ১২ অক্টোবর ২০১৭ ১০:২৯61812
  • এই লিং টা এখানে অ্যাপ্রোপ্রিয়েট লাগলো এই মোমেন্টে -

    http://www.hindustantimes.com/india-news/37-women-in-bihar-believe-man-can-beat-his-wife-if-she-argues/story-C9JP9FJMFmcBSgva7pcSoM.html

    A substantial number of women in Bihar seem to condone domestic violence with 37% saying they believe that a man has the right to spank his wife if she argued with him, a survey has found.

    Another 41% of the 45,812 women surveyed as part of the decadal National Family Health Survey (NFHS)-4, believe that a man was justified in beating his wife if she did not respect her in-laws. The report was released last week.

    According to the NFHS-4 findings on Bihar, wife-beating and a husband’s right to have sex with his wife irrespective of her wishes were the two hurdles that prevented women from attaining gender equality.

    Mumbai-based firm, the International Institute of Population Sciences (IIPS), had undertaken the survey between March and August 2015 on behalf of the Union ministry of health and family welfare.

    Shockingly, there is a list of reasons women thought their husbands were justified in beating them. These include neglecting their house or children (35%), not cooking food properly (30%) and infidelity (29%).

    Even 56% working women agreed with at least one reason for wife-beating. Forty-nine per cent in the 15-19 age group, 37% urban women and 36% girls, having a minimum educational qualification up to intermediate, also concurred on this.

    IIPS researcher Y Vaidehi sounded a note of caution, saying, “Although urban and educated persons are less likely to agree with wife-beating, these characteristics are not sufficient to supplant beliefs in gender egalitarian norms.”

    Women accorded higher weightage to a man’s chastity than his suffering from a sexually transmitted disease (STD) in their preference to have sex. Around 84% of women believed that a wife was justified in refusing to have sex with her husband if she knew that he was cheating on her and having sex with other women. Another 83% believed that women were right in refusing the husband if he was suffering from a sexually transmitted disease.

    Eighty per cent averred that a woman had the right to refuse her husband if she was not in a playful mood, the report said.

    ভারতীয় নারী অনেক কিছুই ভালোবেসে করে!
  • sm | 52.110.203.239 (*) | ১২ অক্টোবর ২০১৭ ১০:৫০61813
  • বিয়েটাও অনেক নারী ভালোবেসেই করে জানতাম। করাই উচিত নয়।বিয়ে জিনিসটাই যে আইনি করে দেওয়া উচিত ।
    যে যার নিজের মতন থাকুক।
  • Swati Ray | 69.97.220.241 (*) | ১৩ অক্টোবর ২০১৭ ০৫:৪৩61817
  • যাঃ পুরুষের দিকে আঙ্গুল তুলল কে? দোষ দুজনেরই - কারোর একার নয়। অন্যায় মেনে নেওয়া কোন গুণ নয় - একশ বার সত্যি। কিন্তু কে বলেছে পৃথিবীর সব মানুষ ই সর্ব গুণে গুণান্বিত হবেন? ব্যক্তি স্তরে দেখলে একজন মানুষ কোন ঝামেলাতে না গিয়ে সব নিয়ম মুখ বুজে মেনে নিয়ে বা ভালবেসে মেনে নিয়ে হয়তো নিজের একটা জগত গড়ে তাঁর মধ্যে বাস করছেন। ব্যক্তিগতভাবে যদি তিনি তাতে শান্তি বা সুখ পান, তাঁর জন্যে তাই ভাল। ... তবে অবশ্যই এক মেনে নেওয়া বা ভালবেসে পালন করার প্রভাব টা সামগ্রিক স্তরে একটা দৈন্য উদ্ঘাটিত করে - কিন্তু সমষ্টির দায় কবেই বা ব্যক্তি নেয়, দায়ে না পড়লে বা আইনগত বাধ্যতা তৈরি না হলে?

    ভাবুন না, আমাদের প্রপিতামহদের বা প্রপিতামহীদের কতজন ইংরেজ শাসনের প্রতিবাদ করেছেন? তাঁরা তো অনেকেই সেটা অন্যায় বলে বোঝেনই নি , তাই না! যারা সেটা অন্যায় বলে বুঝেছেন, তারাও তো অনেকেই সেটা মেনে নিয়েছেন মুখ বুজে, হয়তো অন্য কোন বাধ্যতা থেকেই। ... লড়াই করতে সবাই পারে না, এটাই বাস্তব। মেয়ে ছেলে দুজনের জন্যেই।
  • de | 24.139.119.172 (*) | ১৩ অক্টোবর ২০১৭ ০৭:৩৬61816
  • ভারতে মেয়েদের আজ যে অবস্থা তার দায় পুরোটাই কি পুরুষের? মেয়েরা শুধু পুরুষের দিকে আঙুল তুলেই ছাড় পাবে?

    অন্যায় মেনে নেওয়া কোন গুণ নয়, প্রতিবাদ করাটাই ন্যাচার‌্যাল! সেই ন্যাচার‌্যাল রিফ্লেক্সও মেয়েরা হারিয়ে বসে থাকে!
  • Atoz | 161.141.85.8 (*) | ১৩ অক্টোবর ২০১৭ ০৯:৩৫61818
  • পুরুষের অবস্থাও যে খুব ভালো, তাও বলা যায় না।
    এই যে নেতাগণ অসহনীয় অবস্থাগুলো তৈরী করছে দেশ জুড়ে, যেকোনো প্রতিষ্ঠানে অদ্ভুত নেপো নেপো অবস্থা, এই যে ক্যালানো আর ত্যালানোর সর্বব্যাপী কালচার--- এতে পুরুষরাও কি নানাভাবে অপমানিত অত্যাচারিত হচ্ছে না?
  • de | 192.57.40.87 (*) | ১৪ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:১৯61819
  • অন্যায় অন্যায়ই - কোন নিয়ম নয়। অন্যায় মানা আর নিয়ম মানায় তফাত আছে। চারিপাশের কতো করাপশন মেনে নিয়েও তো মুখ বুজে মানুষ বাস করে। সেটাও তাহলে নিয়ম!

    প্রতিবাদ করার জন্য সবসময় হারে রে রে লড়াইয়ের দরকার হয়না! শান্তভাবেও প্রতিবাদ করা যায়! তবে এটা আপনি ঠিকই বল্লেন, অন্যায় বলে বোঝার বোধও হয়তো সকলের তৈরীই হয় না!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই মতামত দিন