এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • হিন্দু মানসে নিরাপত্তাহীনতা ও তার রাজনীতি

    Manash Nath লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৭ এপ্রিল ২০১৭ | ১০৩১ বার পঠিত
  • নিরাপত্তাহীনতা এক সর্বজনীন অনুভূতি। এক প্যাঁচালো স্টেট অফ মাইন্ড। আপনারও আছে, আমেরিকারও আছে। কোন অবস্থায় দাঁড়িয়ে বা কী কী কারণে আপনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবেন সেটাও একটা মাইন্ডসেট। দীর্ঘদিন ধরে অরগানাইজড ভাবে ক্রমাগত প্রচারে এই মাইন্ডসেট তৈরি করা যায়। পিউবার্টি এজে বা টিন এজে আরও তাড়াতাড়ি করা যায়। সব রাজনৈতিক দলই তাই 'ক্যাচ দেম ইয়ং' পলিসিতে আস্থা রাখে। স্কুল-কলেজেই মাথায় কোনও বিশ্বাস ঢুকিয়ে দিতে পারলে, তা অধিকাংশ সময়েই খুলিতে গেঁথে যায় পেরেকের মতো। তারপর, কারও কারও ক্ষেত্রে তা থাকে চিরকাল।

    ধর্মের কারণে দেশভাগ এবং তজ্জনিত বিপর্যয়ে জর্জরিত বাঙালি হিন্দু কিন্তু খুব স্বাভাবিক ভাবেই মুসলমান আর গান্ধী বিরোধী। এর পক্ষে বিপক্ষে হাজারো যুক্তি সম্প্রতির উদাহরণ দেখানো যায় কিন্তু ইতিহাস বার বার আঙুল তুলে বলবে স্বাধীন ভারতে প্রথম হিন্দু মুসলমান দাঙ্গা এখান থেকেই শুরু হয়েছিল। সেই ক্ষত যতবারই ভুলবার চেষ্টা করা হয় ততবারই সেই ঘা খুঁচিয়ে রক্তপাতের চেষ্টা করে সু্যোগসন্ধানীরা। একটা বড় সংখ্যার মানুষ দেশজ শিকড় থেকে উপড়ে আসার কারণে রেনেসাঁ-জনিত কালচারকেই আঁকড়ে ধরতে বাধ্য হয়েছিল।বাঙালি তার মুসলিম বিদ্বেষকে ইদের সিমুই বা হালুয়া দিয়ে ঢেকে রাখতে পেরেছিল। ৭১'-পরবর্তী পূর্ব বাংলা থেকে রাজাকার আর খান সেনার অত্যাচারের স্মৃতি নিয়ে আরও একদল বাঙালি হিন্দু এই বাংলায় চলে আসে। হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপির পক্ষে এই বিপুলসংখ্যক মানুষের কাছে নিরাপত্তাহীনতার চোরা স্রোত বইয়ে দেওয়ার কাজটি করা তাই খুব সহজ হয়েছে। সোশাল মিডিয়াতে বারবার ওই বাংলাদেশে হিন্দু মেয়েকে রেপ করা হল ওই মন্দির ভেঙ্গে দেওয়া হল এসব কয়েকবছর ধরেই চলছে। সংখ্যাগুরু হিন্দু বাঙালির মনের ঘা খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে বের করার চেষ্টা হচ্ছে নিরাপত্তাহীনতা জাগিয়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। অনেকাংশে সফল ও হয়েছে এই কাজে বিজেপি।

    আসলে, শুধুমাত্র সেকুলার রাজনীতির তোষণ বা ব্যালেন্সকে দোষ দিয়ে লাভ নেই, ক্ষেত্র প্রস্তুতই ছিল। আজ বারবার রাজীব গান্ধীর শাহাবানু মামলার রায় অগ্রাহ্য করা বা বাবরি মসজিদের দরজা খুলে দেওয়া বা বাম-তৃণমূল সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর মুসলিম ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতিকে দায়ী করে সেকুলার রাজনীতিকে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে ঠিকই; কিন্তু, গত তিনদশক ধরে যাঁরা ভারতীয় রাজনীতির গতিবিধি লক্ষ করেছেন মন দিয়ে তাঁরা হাড়েহাড়ে জানেন প্রকৃত সত্যটা।

    বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, Rss, শিবসেনা, বজরঙ দল প্রভৃতি হিন্দুত্ববাদি সংগঠনগুলিকে সামনে রেখে হিন্দু ভোটব্যাঙ্ক তৈরির কাজে নামে বিজেপি। রাম মন্দিরের নামে রথযাত্রা করে গোটা উত্তরপ্রদেশে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতি দুমড়ে মুচড়ে ক্ষমতায় আসে কল্যাণ সিং।তারপরেই ১৯৯২ সালে সেই বাবরি মসজিদ ভাঙা। আমরা তখন ক্লাস ইলেভেন। কলেজে উঠেছি।পাড়ায় পাড়ায় শান্তি কমিটি তৈরি হল। বাংলায় তেমন আঁচ না পড়লেও আই এস আই-এর মদতে ইসলামিক ফান্ডামেন্টালিস্টরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। পরের বছর বাবরি মসজিদের বদলায় হল মুম্বই বিস্ফোরণ। তখন 'বম্বে'। দাউদ ইব্রাহিম আর বাল ঠাকরের মধ্যে ভাগ হয়ে গেল ভারতের অর্থনৈতিক রাজধানী! ভারত চলে এল সন্ত্রাসবাদের ম্যাপে। আর এটাই চায় বিজেপি। যাতে, ইসলামিক মৌলবাদের ভয় দেখিয়েই সংখ্যাগুরু হিন্দু ভোটকে একত্রিত করার রাস্তাটি প্রশস্ত হয়...

    সব জাতিরই নিজস্ব আইকন বা মহাপুরুষ থাকে। বাঙালির মেনস্ট্রিম আইকনরা সবই রেঁনেসা-পরবর্তী। তা সে রবীন্দ্রনাথ, রামমোহন, বিদ্যাসাগর, বিবেকানন্দ, রামকৃষ্ণ,সুভাষ বোস- যাঁকেই ধরুন না কেন। সর্বজন মান্য কোন মুসলমান আইকন বলতে নজরুল ইসলাম। মহিলা? নাহ! চৈতন্যদেবকে তো বাঙালি ভুলেই মেরে দিয়েছে...একটি সমাজ তৈরিতে এরকম কিছু আইকনকে দরকার। একটি দেশ তৈরিতেও। অথচ, ঘটনা হল, স্বাধীনতা-সংগ্রামী কোনও মুসলিম আইকন এপারে তৈরি হল না। কেউ কি ছিলেন না! থাকলেও তাঁদের নাম ইতিহাসের বইতে খুঁজে খুঁজে বের করতে গিয়ে মাথার চুল ছিঁড়তে হয়! আমাদের জাতীয় নেতৃবৃন্দ ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রামে যে জাতীয়তাবোধ জাগ্রত করতে চাইছিলেন, যে সুতোয় আন্দোলনকে বাঁধতে চাইছিলেন তার সঙ্গে ব্রিটিশদের আগের মুসলমান রাজত্বের একেবারেই কোনও মিল ছিল না। প্রসঙ্গত, যে সত্যটা অনেকেই মানতে চান না- ঐতিহাসিক 'সিপাহি বিদ্রোহ'ও কিন্তু দিল্লির মুসলিম রাজ ফিরিয়ে আনারই লড়াই ছিল!

    ভারতীয় জাতীয়তাবাদের সঙ্গে হিন্দু জাতীয়তাবাদ বরাবরই হাত ধরাধরি করে চলেছে। হিন্দু ভাবাবেগ আর হিন্দু ধর্মীয় নেতাদের আদর্শে অনুপ্রাণিত এই জাতীয়তাবোধ, যা আসলে হিন্দু -হিন্দি - হিন্দুস্থান এই আপাত সরলরেখায় চলে, তা প্রথম যে দেওয়ালটিতে গিয়ে ধাক্কা খায় তার নাম, মহাত্মা গান্ধী।
    জাতীয়তাবাদের পিছনে লুকিয়ে থাকা ব্রাহ্মণ্যবাদের মুখ প্রথম প্রত্যক্ষ করেন তিনি। আন্দোলনের রশি তাই নিজের হাতেই রেখে দেন। কারণ তিনি জানতেন- ভারতের প্রান্তবাসী,জঙ্গলবাসী,আদিবাসী, দলিত, হরিজন, মুসলমান কেউ এদের বিশ্বাস করে না। বস্তুত পৃথিবীর ইতিহাসে হিটলার, স্ত্যালিন, আলেকজান্ডার, চেঙ্গিস খাঁ,ক্রুসেড, কমিউনিস্ট কেউই এত দীর্ঘদিন ধরে মানুষের উপর এমন কুৎসিত ও ভয়াবহ অত্যাচার নামিয়ে আনতে পারেনি যা ভারতবর্ষে বর্ণাশ্রমের নামে ব্রাহ্মণ্যবাদীরা করেছে। কিন্তু চালাকিটা হল ব্রাহ্মণ্যবাদের সবচেয়ে বড় বিরোধীদের পরবর্তী কালে অবতার বানিয়ে দিয়ে আবার একই ঘেরাটোপের মধ্যে আটকে ফেলা! মহাবীর থেকে বুদ্ধ, গুরু নানক থেকে চৈতন্য, আজকের হিন্দু মসিহা আদিত্যনাথের গুরু গোরক্ষনাথ থেকে সন্ত কবীর। মনে রাখতে হবে, এই শেষের জন রামকে হিন্দি বলয়ের কাছে মানবিক মুখ করে তুলেছিলেন। উপাখ্যানের নায়ক থেকে প্রাণের মানুষ রূপে নবজন্ম দিয়েছিলেন। অথচ, সন্ত কবীর নিজে ছিলেন প্রবল ব্রাহ্মণ্যবাদ বিরোধী। মহাবীর, বুদ্ধ, নানক, চৈতন্য সবাই-ই তো তাই! কিন্তু এদের সবাইকে হিন্দু জাতীয়তাবাদ এক ছাতার তলায় নিয়ে এসেছে। ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগ আমাদের জাতীয় নেতারা ঠেকাতে না পারলেও গান্ধী, নেহেরু, আম্বেদকার, রাজেন্দ্রপ্রসাদরা এই হিন্দু সাম্রাজ্যবাদকে সচেতনভাবেই দূরে রাখতে পেরেছিলেন। তা না হলে আজকের ভারত আমরা দেখতে পেতাম না। এই কারণেই হিন্দু জাতীয়তাবাদ স্বাধীন ভারতে তাদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে মহাত্মা গান্ধীকে চিহ্নিত করে।আজকের হিন্দি হিন্দু জাতীয়তাবাদিদের হাতেই খুন হন জাতীর জনক।

    ইতিহাসের সমস্যাই হল - তা সকলের ত্রুটির কথাই বলে। কারো বেশি, কারো কম। এখন আমরা একটা বদলা বা শোধ নেওয়া বা প্রতিযোগিতার কাহিনী নিয়ে ভাবব নাকি ভবিষ্যৎ এর কথা ভাববো? এই মুহূর্তে কি হয়েছে - কার দোষ - এই নিয়ে যতবার ভাবা হবে - বিষয়টা ততই সমাধানহীনতার দিকে যাবে। তাই ইতিহাস নয় ভবিষ্যৎ এর দিকে তাকিয়েই সমাধান খুঁজতে হবে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৭ এপ্রিল ২০১৭ | ১০৩১ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    মার - Manash Nath
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে প্রতিক্রিয়া দিন