এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • শ্বেতশুভ্র পঞ্চ বিষ। : পর্ব ১ : পরিশোধিত নুন

    Gautam Mistri লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১১ মার্চ ২০১৬ | ৮৮৪৮ বার পঠিত
  • শ্বেতশুভ্র পঞ্চ বিষ। : পর্ব ১ : পরিশোধিত নুন

    স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার লক্ষ্যে একটি আপ্তবাক্য স্মরণীয়: -পাঁচটি সাদা বিষ থেকে দূরে থাকুন।

    (১)প্যাকেটবন্দি পরিশোধিত নুন, (২) চিনি,(৩ ) সাদা সরু ও চকচকে পালিশকরা চাল এবং (৪ ) সাদা আটা, ময়দা ও তার থেকে ঘরে প্রস্তুত করা রুটি অথবা বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুত করা বিস্কুট, পাউরুটি, কেক, কুকিজ ইত্যাদি অসংখ্য বেকিং করা খাবার এবং (৫ ) দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার। প্রথম পর্বের আলোচনা নুন নিয়ে।

    পরিশোধিত সাদা নুন অ্যাটম বোমার চেয়েও ভয়ংকর:

    গুহাবাসী মানুষ নিজেদের উন্নত করার প্রয়াসে আগুনের ব্যবহার শেখার সাথে সাথে শিকার করা মাংস ঝলসিয়ে খেতে শিখেছিলো। এর পরে কেটে গেছে বহু যুগ। স্থান ও কালভেদে রান্না করার অসংখ্য উপায় আমরা শিখে গেছি,
    সিঙ্গারা আরও অসংখ্য রন্ধনপ্রণালী টেলিভিশনের পর্দায় অহরহ আমাদের লালাগ্রন্থিকে উত্তেজিত করে চলেছে।প্রাথমিকভাবে গুহাবাসী মানুষ উদ্বৃত্ত খাবার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষানীরিক্ষার ফলস্বরূপ একসময় খাদ্যে নুন মিশিয়ে সফল হলেও আমরা, উত্তরসূরীরা, অস্বাস্থ্যকর লবণাক্ত খাবারে অভ্যস্ত হয়ে ক্রমশঃ জিভের অভ্যাস বদলে ফেললাম।এটা যে কেবল অস্বাস্থ্যকর তা নয়, এটা অপ্রয়োজনীয়ও বটে।খাদ্যে অতিরিক্ত নুন না মেশালেও প্রাকৃতিক খাবারে নুনের দৈনিক প্রয়োজন(৬ গ্রাম)মিটে যায়। শৈশব থেকে অভ্যাস না করলে অথবা প্রাপ্তবয়সে স্বাস্থ্যের কারণে আলাদা করে নুনের ব্যবহার ত্যাগ করলে নুন ছাড়া খাবারের স্বাদগ্রহণে অসুবিধা হয় না। তিব্বতীরা চায়ে নুন মিশিয়ে পান করলেও আমরা নুন ছাড়া চা বেশ উপভোগ করতে পারি। নুনে অভ্যস্ত না হওয়া কিছু জনগোষ্ঠী অতিরিক্ত নুন ছাড়াই সারা জীবন দিব্যি কাটিয়ে দেয়। কোরিয়ার লুও প্রজাতি (Luo Tribe) খাদ্যে নুন মেশানোর ব্যবহার শেখেনি আর তাদের মধ্যে উচ্চরক্তচাপের প্রকোপ উল্লেখযোগ্য ভাবে কম। আবার শহরাঞ্চলে বসবাসকারী লুও প্রজাতির বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে নুনের ব্যবহার বাড়ার সাথে সাথে তাদের উচ্চরক্তচাপ ও তৎসম্পৃক্ত অন্যান্য রোগের প্রকোপও বেড়ে যেতে দেখা গেছে।১ যদিও আমাদের শরীরে সোডিয়াম ক্লোরাইড ছাড়া অন্য বেশ কিছু নুনের (যেমনঃ আইয়োডিন,ফ্লুরিন,ক্যালসিয়াম,পটাসিয়াম) প্রয়োজন আছে, বিকৃত
    কেক, প্যাস্ট্রি, বেকড খাবার খাদ্যাভ্যাসের তাড়নায়,সচেতনভাবে আমরা কেবল সোডিয়াম ক্লোরাইড নামক নুনের প্রয়োজন অনুভব করি। খাবারের টেবিলে খাবারের স্বাদ গ্রহণ না করেই ভাত মাখার আগে কিছুটা নুন ছড়িয়ে নিই।আমাদের রক্তে বিভিন্ন নুনের (সোডিয়াম ক্লোরাইড সহ অন্যান্য লবণ)মাত্রা সুদুর অতীতের কলুষমুক্ত সমুদ্রের লবণাক্ত জলের বিভিন্ন নুনের মাত্রার সঙ্গে আশ্চর্যভাবে মিলে যায়। সমুদ্রের অসংখ্য প্রাণীতো সেই জলেই পরিপুষ্ট হয়। খাবারে নুন মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যেসটা অপ্রয়োজনীয়; জৈবিক প্রয়োজনে অন্যান্য লবণের মত সোডিয়াম ক্লোরাইড বনাম নুনের প্রয়োজন মেটানোর জন্য পরিশোধিত প্যাকেটজাত নুনের প্রয়োজন নেই।

    কিঞ্চিৎ রসায়নঃ
    রাসায়নিক অভিধান অনুযায়ী, লবণ হল অ্যাসিড ও ক্ষারের বিক্রিয়ায় উৎপন্ন এবং ধাতব মৌলের সাথে অধাতব মৌল অথবা র‍্যাডিক্যালের সমন্বয়ে গঠিত এক শ্রেণীর যৌগ। এই শ্রেণীভুক্ত যৌগের মধ্যে কেবল সোডিয়াম ক্লোরাইড (এই নিবন্ধে নুন বলে অভিহিত)শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়ায় দৃষ্টিতে একটি অত্যন্ত সক্রিয় লবন। আমাদের শরীরের দেহকোষের স্তরে সকল শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়ার সোডিয়াম আয়নের মুখ্য ভূমিকা আছে। হৃদস্পন্দনের জন্য, এক স্নায়ুকোষ হতে অন্য স্নায়ুকোষে বার্তা প্রেরণের জন্য, মাংসপেশীর সংকোচন প্রসারণের জন্য মায় এই নিবন্ধটি পড়ার জন্য আমাদের দেহকোষের মধ্যে সোডিয়াম আয়ণের সুনির্দিষ্ট মাত্রায় ও পথে চলাচল করা আবশ্যক। বৈজ্ঞানিকগণ রক্তে সোডিয়ামের স্বাস্থ্যকর মাত্রা নির্ধারণ করেছেন। দীর্ঘমেয়াদি সূত্রে খাবারে অতিরিক্ত নুন গ্রহণে রক্তে উপরোক্ত মাত্রা বজায় রাখার প্রয়াসে সোডিয়াম নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থার উপর চাপ পড়ে। প্রয়োজনের অধিক নুন গ্রহণের ফলে, রক্তের ঘনত্ব বজায় রাখার লক্ষ্যে, নুনের সাথে শরীরে জলও জমতে থাকে।খাবারে দৈনিক নুন গ্রহণের মাত্রার তারতম্য ঘটলেও বৃক্কের (কিডনি)প্রয়োজনভিত্তিক নুন নিয়ন্ত্রক ক্ষমতার জন্য তাৎক্ষণিক ভাবে কোন ক্ষতিসাধন ঘটে না। সেই অতিরিক্ত নুন বর্জনের প্রক্রিয়া স্বরূপ বিভিন্ন উৎসেচকের (rennin-aldosterone-angiotensin system, atrial natriuretic peptide)প্রভাবে রক্তচাপ বেড়ে যায়,যার ফলে বৃক্কের নুন বর্জনের ক্রিয়া বৃদ্ধি পায়। মানুষ ও সমশারীরবৃত্তীয় ক্রিয়া সম্পন্ন প্রাণীর উপরে চালানো বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষায় মাত্রাতিরিক্ত নুন গ্রহণের ফলে বৃক্কের অতিরিক্ত নুন বর্জনের বোঝার সাথে উচ্চ রক্তচাপের যোগাযোগ প্রমাণিত। ২

    প্রাথমিকভাবে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া টা তাই তাৎক্ষণিকভাবে শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়ার অনুকূল (প্রয়োজনের অতিরিক্ত নুন বর্জনের জন্য)। কিন্তু এই অসমহারে অধিক নুন গ্রহণের প্রক্রিয়া চলতে থাকলে পাকাপাকিভাবে রক্তচাপ বেড়ে যাবার আশঙ্কা উপস্থিত হয়।প্রয়োজনের অধিক নুন গ্রহণের এই ক্ষতিসাধন অবশ্য কিছু মানুষের হয় না।যাদের হয় তাদের নুন সংবেদনশীল(sodium sensitive) বলে। অধিক নুন গ্রহণের জন্য উচ্চরক্তচাপ ও
    চিজ তৎসম্পর্কিত অন্যান্য রোগ এদেরই বেশী পরিলক্ষীত হয়। খাবার নুন অর্থাৎ সোডিয়াম ক্লোরাইডের বদলে একটু অন্য ধরণের লবণে(যেমন পটাশিয়াম ক্লোরাইড অথবা সোডিয়াম বাই কার্বনেট)এমন ধারা ক্ষতি হয়না। বরং, সোডিয়াম ক্লোরাইডের সঙ্গে পটাশিয়াম ক্লোরাইড গ্রহণ করলে সোডিয়াম ক্লোরাইডের বিষক্রিয়া কিছুটা প্রশমিত হয়। আফ্রিকার বংশোদ্ভূত আমেরিকাবাসীদের এক সমীক্ষায় খাদ্যে পটাশিয়ামের ঘাটতিতে সোডিয়াম সংবেদনশীলতা ভয়ংকররূপে বেড়ে যেতে দেখা গেছে – যার ফলস্বরূপ অধিক নুন গ্রহণে তাদের উচ্চ রক্তচাপ বেশীমাত্রায় সংগঠিত হতে দেখা গেছে। ৩ আধুনিক কালের সর্ববৃহৎ মারণরোগ হিসেবে হৃদরোগ ও সেরিব্রাল স্ট্রোক ইতিমধ্যে কুখ্যাত হয়ে গেছে।এটা নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত যে, উচ্চ রক্তচাপ নিবারণ অথবা নিয়ন্ত্রণ দ্বারা ঐ সকল মারণরোগ থেকে পৃথিবীর সব দেশের ব্যক্তিবিশেষ অথবা রাষ্ট্রীয় সার্বিক ও আর্থিক ক্ষতির সবচেয়ে সফল প্রতিরোধ সম্ভব। যে সকল জনগোষ্ঠীতে দৈনিক নুন হিসাবে সোডিয়াম গ্রহণের পরিমান ১.২ গ্রামের কম, তাদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ বিরল। আবার অপর দিকে উচ্চ রক্তচাপ সেইসব জনগোষ্ঠীতেই দেখা যায়, যাদের নুন হিসাবে সোডিয়াম গ্রহণের পরিমাণ ২.৩ গ্রামের বেশী.। ৪, ৫

    এই তথ্য থেকে বোঝা যায়,উচ্চরক্তচাপ সংঘটিত হবার জন্য দৈনিক নুন গ্রহনের একটি বিপদসীমা (threshold) আছে, আর নুনভক্ষনের এই রক্তচাপ বাড়ানোর ক্ষমতা অন্যান্য রোগোপাদানের উপর নির্ভরশীল নয়। অর্থাৎ স্থুলতা, পরিশ্রমবিমূখিতা, জিনগত বৈশিষ্ট্য ইত্যাদির উচ্চরক্তচাপ সৃষ্টি করার ক্ষমতার সংগে মাত্রাছাড়া নুন গ্রহনের রক্তচাপ বাড়ানোর ক্ষমতা যোগ হয়ে যায়।আমেরিকায় কেবল এই বিপদসীমার ঊর্ধ্বে নুন গ্রহণের জন্য প্রতি বছর প্রায় ১৫০,০০০ জনের অকাল মৃত্যু হয়।সাধারনতঃ সচেতন নয় এমন ব্যক্তির দৈনিক নুন গ্রহনের পরিমান ৮ থেকে১২ গ্রাম।
    ফাস্ট ফুড ২০১০ সালে আমেরিকার কৃষি, স্বাস্থ্য ও মানবকল্যাণ দপ্তরের নির্দেশিকার মতে অধিকপক্ষে দৈনিক ৬ গ্রাম নুন অথবা ২.৩ গ্রাম সোডিয়াম গ্রহণ নিরাপদ। ইউরোপীয় উচ্চচাপ নিয়ন্ত্রক সংস্থার (European society of hypertention) মতে এই মাত্রা ৫ গ্রাম।৬ যদিও উচ্চরক্তচাপের প্রাদুর্ভাব আছে এমন জনগোষ্ঠীর (৫১ বছরের বেশী বয়স, কৃষ্ণাঙ্গ, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, উচ্চরক্তচাপের রুগী অথবা অনিরাময় যোগ্য কিডনির অসুখে আক্রান্ত রুগী) নুন গ্রহনের ঊর্ধ্বসীমা দৈনিক ৪ গ্রাম(১.৫ গ্রাম সোডিয়াম)৭ । হিসেব কষে দেখা গেছে, আমাদের নুন গ্রহনের শতকরা ৮০ শতাংশই আসে প্রক্রিয়াকৃত খাবার ও পানীয় থেকে। অর্থাৎ প্রক্রিয়াকৃত খাবার ও পানীয় বর্জন অথবা সঠিক খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে আমাদের নুন গ্রহনের পরিমান বহুলাংশে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আমেরিকার এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, এই নির্দেশিকা বলবৎ করা গেলে ঐ দেশে বছরে ১২০০০০ জনের হৃদরোগ, ৬৬০০০ জনের সেরিব্রাল স্ট্রোক,৯৯০০০ জনের হার্ট অ্যাটাক নিবারণ সম্ভব আর তার ফলে ২৪০ কোটি ডলার সাশ্রয় করা যাবে।৮

    খাবারে নুন মেশানো নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে উচ্চরক্তচাপের প্রাদুর্ভাব কমানোর সাথে সাথে অন্য বেশ কিছু উপকারও পাওয়া যায়। নুন কম খেলে প্রস্রাবে কম মাত্রায় ক্যালসিয়াম বের হয়। অর্থাৎ নুন খাওয়াতে রাশ টানতে পারলে ফাউ হিসাবে পাওয়া যাবে কিডনির পাথর জমার সম্ভাবনা থেকে মুক্তি আর বৃদ্ধ বয়সে ক্যালসিয়ামে পরিপূর্ণ অধিক শক্তিশালী জোরদার হাড়। পাকস্থলীর ক্যান্সার আর হাঁপানিও মাত্রাতিরিক্ত নুন গ্রহনের সাথে বাড়তে থাকে।
    কতটা নুন কমানো স্বাস্থ্যকর?

    দৈনিক নুন গ্রহণের মাত্রা ১ গ্রামের কম (০.৪৫ গ্রাম সোডিয়াম) হলে রক্তে লঘুঘনত্বের (low density lopoprotein cholesterol, LDL cholesterol) কোলেস্টেরলের মাত্রা ১০ শতাংশ বেড়ে যেতে দেখা গেছে, যদিও এটা রক্ত ঘন হয়ে যাবার জন্য হয় বলে বৈজ্ঞানিকরা মনে করেন। ৯ সবদিক বিচার করে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলেছেন, দৈনিক নুন গ্রহণের নিম্নসীমা নিরাপদে ৪.৭ গ্রামে রাখা যেতে পারে। রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা কমে যাবার ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও অন্যান্য শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়ায় অংশ গ্রহণকারী রেনিন-অ্যাঞ্জিওটেন্সিন - এল্ডোস্টেরোন সিস্টেমের অধিক সক্রিয় হয়ে যাবার আশংকা অমূলক বলে প্রমাণিত। ১০ খেয়াল রাখতে হবে, অনিরাময় যোগ্য কিডনির অসুখে (chronic kidney disease) আক্রান্ত ব্যাক্তিদের প্রচলিত নুন অর্থাৎ সোডিয়াম ক্লোরাইডের বিকল্প হিসাবে পটাসিয়াম সমৃদ্ধ নুনের (“কম সোডিয়ামের” বিকল্প নুন হিসাবে জনপ্রিয়) ব্যবহার ক্ষতিকারক। কিছু পাঠক মনে করতে পারেন, রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা স্বাস্থ্যকর সীমার নিচে নেবে গেলে বুঝিবা প্রাণের আশংকা উপস্থিত হয়! একদম খাঁটি কথা। অন্যান্য কারণের সাথে, বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তিদের কিছু রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধে ( ডায়ইউরেটিক গোত্রীয়) অমনটি হতে পারে। এই আলোচনা জটিল ও আপ্রাসঙ্গিক। জেনে নেওয়া যাক, সেই আপৎকালীন অবস্থা খাদ্যে নুনের ওভাবে হয় না।

    আয়োডিন সমৃদ্ধ নুন - কতটা অপরিহার্য?
    প্রশ্ন উঠতে পারে, প্যাকেটে যে নুন কিনতে পাওয়া যায়, তাতে প্রয়োজনীয় আয়োডিন মেশানো থাকে। সেই নুন না গ্রহণ করলে আয়োডিনের জোগান কোথা থেকে আসবে? আয়োডিন একটি অধাতব খনিজ, যেটা আমাদের গলার সামনে অবস্থিত থাইরয়েড নামক গ্রন্থির থাইরক্সিন উৎসেচক উৎপাদনের একটি কাঁচামাল। এটির অভাবে হৃদপিণ্ড, মাংসপেশি, স্নায়ু ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ সঠিক ভাবে কাজ করতে পারেনা। এর অভাবে বিশেষ করে শৈশবে মস্তিষ্কের বিকার অপূর্ণ থেকে যেতে পারে আর কৈশোরে দেহবৃদ্ধির সময় গয়টার (goitre) নামে রোগ হতে পারে। ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে প্রথম আমেরিকায় নুনে আয়োডিন মিশিয়ে গয়টার অধ্যুষিত এলাকায় সফলতা পাওয়া যায়। জেনে রাখা দরকার, প্রক্রিয়াকৃত খাবারে যে নুন ব্যবহার হয় সেটা মোটেই আয়োডিন সমৃদ্ধ নয়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির দৈনিক আয়োডিনের প্রয়োজন মাত্র ১৫০ মাইক্রোগ্রাম (বাড়ন্ত শিশুদের, গর্ভবতী মহিলাদের আর মাতৃদুগ্ধ দানকারী মায়েদের অধিক আয়োডিনের দরকার)। সেটা সহজেই সামুদ্রিক মাছ, সামুদ্রিক শ্যাওলা জাতীয় খাবার অথবা লবণাক্ত জমিতে পালন করা গৃহপালিত পশুর দুগ্ধজাত খাবারে ও মাংসে পাওয়া যাবে। আয়োডিন সমৃদ্ধ জমিতে চাস করা সবজিতেও পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়োডিন থাকে। সুষম, বৈচিত্র্যপূর্ণ খাদ্যাভাসে অভ্যস্ত হলে আয়োডিনের জন্য নুনের উপর ভরসা করতে হবে না।

    খাবার সময় অবশ্য এই সব তত্বকথা মাথায় থাকে না, আলাদা করে মেপে করে নুন খাওয়া অসম্ভব। নুন খাওয়ায় রাশ টানার জন্য দুটি পৃথক প্রয়াস প্রয়োজন।

    প্রয়াস ১ : নুন সমৃদ্ধ খাবারও বর্জন
    ক্রমবর্ধমান পশ্চিমী খাবারে অভ্যস্ত হবার কুফলে আমরা যে প্রক্রিয়াকৃত খাবারে আপোষ করে নিই, সেটাই আমাদের দৈনিক অর্ধেক নুন গ্রহণের জন্য দায়ী। অস্বাস্থ্যকর প্রক্রিয়াকরণের জন্য বেশ কিছু খাবারে প্রচুর পরিমাণে নুন থাকে। এগুলি সম্পূর্ণভাবে বর্জনীয়। সুদীর্ঘ নুন-বিষে পূর্ণ খাবারের তালিকা থেকে অল্প কয়েকটির উল্লেখ করা যাক - চটজলদি খাবার (ফাস্ট - ফুড), বেকারির খাবার (কেক, প্যাস্ট্রি, প্যাটিস, কুকিজ, পাঁউরুটি), প্যাকেটজাত মাখন, চিজ, নোনতা খাবার (চপ, কাটলেট, নিমকি, শিঙাড়া), টিনবন্দি খাবার। একটি গাছ থেকে পাড়া আপেলে ১.৫ গ্রাম সোডিয়াম থাকলেও প্যাকেটজাত আপেলের রসে সোডিয়াম থাকে প্রায় ২৫ গ্রাম। প্যাকেটবন্দি খাদ্য খাবার আগে “লেবেল গোয়েন্দা” হওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ। বিভিন্ন খাদ্যে নুনের মাপের অধিক তথ্য পাওয়া যাবে এই ঠিকানায় http://fcs.tamu.edu/food_and_nutrition/pdf/sodium-content-of-your- food-b1400.pdf

    প্রয়াস ২: দৈনিক ঘরোয়া রান্নায় নুনের নিয়ন্ত্রণ:
    এই প্রয়াসে দৈনিক নুন গ্রহণের এক তৃতীয়াংশ কমানো যেতে পারে। জনপ্রতি ৪ থেকে ৬ গ্রামে (চা-চামচের ১ চামচ) নুন নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে এক হেঁসেলে পাত পাড়ে এমন সদস্য সংখ্যা অনুযায়ী হিসেব করে দৈনিক বরাদ্দ করা নুন আলাদা করে মেপে নিয়েই রান্নাঘরে ঢোকা উচিত। খাবারের টেবিলে (বা পাতের ধারে ) নুনের শিশি, সস বা ক্যাচাপ (এগুলিতে প্রচুর পরিমাণে নুন থাকে) থাকলে সরিয়ে ফেলতে হবে। অ্যাডভেঞ্চারে অপ্রিয় বেশ কিছু ব্যক্তিদের কাছে কম নুনের খাবার প্রথমে আকর্ষণীয় মনে না হলেও মাস খানেক অভ্যাস করার পরে খাবারের স্বাভাবিক স্বাদ পেতে অসুবিধা হবে না। আলাদা করে নুন না মিশিয়ে রান্না করলেও বেশ কিছু খাদ্যে প্রাকৃতিক ভাবেই দৈনিক প্রয়োজন মেটানোর মতো পর্যাপ্ত পরিমাণে সোডিয়াম থাকে। সোডিয়াম সমৃদ্ধ খাদ্যগুলি হোল, ডিম, মাছ, দুধ, দুগ্ধজাত খাবার (মাখন, চিজ, দই), মাংস, পাঁউরুটি, পালং শাক, মূলা, গাজর, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বাদাম, বিস্কুট, সরিষা, প্যাকেটজাত ফলের রস, ডায়েট কোক, আদা, রসুন, বেকিং পাউডার, সয়াসস, কাসুন্দি, ক্যাচাপ, ইস্ট ইত্যাদি।

    নুন নিয়ন্ত্রণের নির্দেশিকা:
    ১. সুস্থ আবাল-বৃদ্ধ-বনিতার দৈনিক নুন গ্রহণের ঊর্ধ্বসীমা ৫ গ্রাম, যাতে ২ গ্রাম সোডিয়াম থাকে।
    ২. একান্ন বছরের বেশি বয়সী ব্যাক্তি, কৃষাঙ্গ অথবা উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও অনিরাময়যোগ্য কিডনির অসুখে আক্রান্ত ব্যক্তির দৈনিক নুন গ্রহণের ঊর্ধ্বসীমা ৪ গ্রাম (১.৫ গ্রাম সোডিয়াম)।
    ৩. সাদা, পরিশোধিত, মিহি ও প্যাকেটবন্দি নুনের চেয়ে অন্যান্য প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ, অপেক্ষাকৃত অপরিশোধিত মোটাদানার লালচে নুনই শ্রেয়।

    তথ্যসূত্র

    1.Circulation. 1990; 81: 987-995)
    2.Siffert W, Düsing R. Sodium-proton exchange and primary hypertension. An update. Hypertension 1995; 26:649. 18. Kuro-o M, Hanaoka K, Hiroi Y, et al. Salt-sensitive hypertension in transgenic mice overexpressing Na(+)- proton exchanger. Circ Res 1995; 76:148.
    3.Morris RC Jr, Sebastian A, Forman A, et al. Normotensive salt sensitivity: effects of race and dietary potassium. Hypertension 1999; 33:18.
    4.Adrogué HJ, Madias NE. Sodium and potassium in the pathogenesis of hypertension. N Engl J Med 2007; 356:1966.
    5. Elliott P, Stamler J, Nichols R, et al. Intersalt revisited: further analyses of 24 hour sodium excretion and blood pressure within and across populations. Intersalt Cooperative Research Group. BMJ 1996; 312:1249.ē
    6.Mancia G, De Backer G, Dominiczak A, et al. 2007 Guidelines for the Management of Arterial Hypertension: The Task Force for the Management of Arterial Hypertension of the European Society of Hypertension (ESH) and of the European Society of Cardiology (ESC). J Hypertens 2007; 25:1105.
    7.US Dept of Agriculture and US Dept Health and Human Services. Dietary Guidelines for Americans 2010. US Govt Printing Office; US Dept of Agriculture and US Dept Health and Human Services, Washington, DC, 2010.
    8.Coxson PG, Cook NR, Joffres M, et al. Mortality benefits from US population-wide reduction in sodium consumption: projections from 3 modeling approaches. Hypertension 2013; 61:564.
    9.Graudal NA, Galløe AM, Garred P. Effects of sodium restriction on blood pressure, renin, aldosterone, catecholamines, cholesterols, and triglyceride: a meta-analysis. JAMA 1998; 279:1383.
    10.He J, Ogden LG, Vupputuri S, et al. Dietary sodium intake and subsequent risk of cardiovascular disease in overweight adults. JAMA 1999; 282:2027.

    এই নিবন্ধটি উৎস-মানুষ পত্রিকায় পূর্বে প্রকাশিত
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১১ মার্চ ২০১৬ | ৮৮৪৮ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    বকবকস  - Falguni Ghosh
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • sswarnendu | 138.178.69.138 (*) | ২৭ মার্চ ২০১৭ ০৮:৪১56219
  • dc,
    হ্যাঁ দেখেছি। সেইটাই লিখলাম। এমনকি যাদের সমস্যা নেই তারা পরিমাণমত নুন খেলে কিছু হবে না এরকম কিছুও আমি বলতে চাইছি না ( বলবার আমি কেউ নইও ) .... শুধু এইটাই লিখতে চাইলাম য়ে এই দুটো আলাদা জিনিস। একটা আর একটা ইমপ্লাই করেনা।

    আমি এ নিয়ে নিজে কিছুই জানিনা, এখানের আলোচনাগুলো পড়ে লিঙ্কগুলো দেখে নিজের বোধবুদ্ধিমত একটা কনক্লুশনে পৌঁছতে চেষ্টা করছি মাত্র।
  • Ekak | 53.224.129.63 (*) | ২৭ মার্চ ২০১৭ ০৯:১২56220
  • নুন দেওয়া চা ভুটানে চলে । ওখানে কোনো স্টাডি হলে বেটার বোঝা যাবে মনে হয় । তবে রিয়েল টাইম স্টাডি তে প্রচুর আইএফএস এন্ড বাটস থেকেই । ভুটানিরা প্রচুর ভেষজ জিনিস খায় খাবারের সঙ্গে । তার প্রভাব নুনের প্রভাব কে কাটিয়ে দিচ্ছে কিনা বোঝা জরুরি ।
  • Pi | 57.29.241.8 (*) | ২৭ মার্চ ২০১৭ ০৯:১৩56221
  • স্বর্ণেন্দু।না। কন্ট্রোল সেভাবেই নেওয়া হয়।দেশের সর্বত্র এটা হয়ও না। আর ম্যালনিউট্রিশন য়ো হাইপারটেনশনের রিস্ক ফ্যাক্টর নয়।
  • sswarnendu | 138.178.69.138 (*) | ২৭ মার্চ ২০১৭ ১১:১০56222
  • "কন্ট্রোল সেভাবেই নেওয়া হয়।" -- এইটা বুঝলাম না। আর ম্যালনিউট্রিশন কে হাইপারটেনশনের রিস্ক ফ্যাক্টর বলিনি... পেশাগত অনিশ্চয়তা হাইপারটেনশনের রিস্ক ফ্যাক্টর ... আর ম্যালনিউট্রিশনের সমস্যা আলাদাভাবে বলতে চেয়েছিলাম। রক্তে সোডিয়াম-পটাশিয়াম ব্যালেন্স এর ক্ষেত্রে ম্যালনিউট্রিশন ও নিশ্চয়ই জরুরী বিষয়, নয়?
  • Shib Mohammed SebastiarPillai | 140.159.211.144 (*) | ২৭ মার্চ ২০১৭ ১২:০৫56223
  • এক তো লুও উপজাতি কোরিয়াতে নয়, কেনিয়াতে থাকে। যদিও ভুলটা খুবই সামান্য তাও নাইরোবি থেকে সিওলের দূরত্ব দশ হাজার কিমির বেশী ।

    দ্বিতীয়ত, মানুষ নুন খাওয়া শিখেছে তাও নয় নয় করে কয়েক লক্ষ বছর , প্রতি ৪ হাজার বছেরেই জেনেটিক মার্কার চেঞ্জ হয়, গরু গৃহপালিত হয়েছে ১০ হাজার বছর, এর মধ্যেই এক শ্রেনীর মানুষ এডাল্ট ল্যাক্টোস টলারেন্স বাড়িয়ে ফেলেছে । চায়নাতে গৃহপালিত গরু নেই, জনসংখ্যায় টলারেন্স মাত্র ১০% অথচ মোঙ্গলরা নোমাডিক ট্রাইব, এবং গরু পালন করে, ওদের মধ্যে ল্যাক্টোস টলারেন্স ৭০% । সেই প্রেক্ষিতে নুন খাওয়া কতটা ক্ষতিকারক বলা মুস্কিল । সমস্যা অন্য জায়গায়, প্রকৃতিতে নুন সবসময় পাওয়া যায় না। তাই আমাদের জিভে নুনের প্রতি আসক্তি আছে, যেমন আছে চিনির প্রতি । প্রকৃতিতে কখন কি ফের পাওয়া যাবে বলা মুস্কিল । কিন্তু মানুষ তো এখন আর বনে জঙ্গলে চরে খায় না, ম্যাকডনাল্ড খাওয়া শিখেছে । এখন ম্যাকডনাল্ড বা হলদিরাম সেই আসক্তিটা কে কাজে লাগিয়ে আপনাকে বেশী নুন খাইয়ে ফেলে দোষ শরীরের নয় ।
  • SS | 160.148.14.3 (*) | ২৭ মার্চ ২০১৭ ১২:৪৮56224
  • সোডিয়াম ইনটেক আর ব্লাড প্রেশারের কোরিলেশন নিয়ে একটা ল্যান্ডমার্ক স্টাডি হচ্ছে DASH সোডিয়াম স্টাডি। যতদূর মনে হচ্ছে ২০০/২০০১ এ পাবলিশ হয়েছিল। একটা র‌্যান্ডমাইজড, ক্রসওভার স্টাডি। ইন ফ্যাক্ট, ড্যাশ ডায়েট রেকমেন্ড করা হয় হাইপারটেনশনের পেশেন্টদের জন্যে। NIH বা NHLBI এর সাইটে স্টাডির লিংক, ইনফর্মেশান পাওয়া যাবে।
  • Pi | 57.29.241.8 (*) | ২৭ মার্চ ২০১৭ ১২:৫৮56216
  • স্বর্ণেন্দু কি পড়েছিস, আমি কী লিখেছি ? চা বাগানের স্টাডি জেনেরাল পপুলেশেনরই খুব বেশি নুন খাওয়ার প্রভাব নিয়ে।
  • pi | 57.29.241.8 (*) | ২৮ মার্চ ২০১৭ ০৭:০১56226
  • স্বর্ণেন্দু, প্রায় যে কোন স্টাডিতেই নানা রিস্ক ফ্যাক্টর থাকে বলেই মাল্টিভেরিয়েট রিগ্রেশন করে, একটার এফেক্ট দেখার জন্য অন্যগুলো আডজাস্ট করে। তো, একই রকম সোশিও ইকনমিক স্ট্যটাস এও পাওয়া গেছে। কন্ট্রোল গ্রুপ মানে, যাদের সেই রিস্ক ফ্যাক্টর নেই, তাদের তুলনায় কত বেশি হচ্ছে।
    তবে, এসব স্টাডিই ফুল্প্রুফ , এমন না। এখনো কাজ হচ্ছে। কিছু জিনের পলিমর্ফিস্জম নিয়েও কাজ হচ্ছে। নুনের ক্ষতি বেশি হয়, সেসবের জন্য, এসবও আসছে। সেখানে আবার এক্স্ট্রা নুন খাওয়াটাকে আডজাস্ট করে দেখেছে।

    খুব বেশি লিখতে ইচ্ছে করছে না এখন, শরীর সুবিধের নেই। এই নিয়ে বেশ কিছু পেপার পাবি। আমি আরেকটা প্রেজেন্টেশন দেখে এসেছিলাম, জানিনা এখন পাবলিশড হয়ে গেছে কিনা। সেখানে শুধু ঐ চায়ে ( আর অন্য কিছুতেও মনে হচ্ছে) নুন খাওয়া কমিয়েছিল, এই ইন্টারভেনশন ওয়ালা গ্রুপে হাইঅপারটেনশন সিগনিফেকণ্টলি কমেছিল বলে দেখিয়েছিল। আর বাকি সব একই ছিল। এগুলো স্টাডির বেসিক ক্রাইটেরিয়াই থাকে। এবার সেসব সব জায়গায় খুব ভালোভাবে কন্ট্রোল করা হয় বা যায়, সেও হয়তো নয়। তো, সেজন্য তো, অনেক এক্সপেরিমেণ্টের মতই , ধ্রুব সত্য বলে দেওআ যায়না।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল মতামত দিন