এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • বিশ্ব হৃদয় দিবস

    Gautam Mistri লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২৩ মার্চ ২০১৬ | ১৬৯৫ বার পঠিত
  • কর্পোরেট হাসপাতালের জেলেদের কথা

    একটি মধ্যবিত্ত যুবক বেসরকারি সংস্থায় অস্থায়ী কাজ করেন। তেত্রিশ বছরের ঐ যুবকটির কোন শারীরিক সমস্যা ছিলোনা। ফ্রি হার্ট চেক আপের জালে ওনাকে আটকেছে বাইপাসের কবিগুরুর নামাঙ্কিত একটি হাসপাতাল। ঐ হাসপাতালটা ও দূর থেকে কয়েকবার দেখেছে আর ভেবেছে বড় বড় হাসপাতালগুলো বড় বড় হোটেলের মতো। বাবাকে নিয়ে কয়েকবার রাতে পি. জি. হাসপাতালে ওনাকে যেতে হয়েছিলো। ওগুলোর একটা আলাদা গন্ধ আছে। বাইপাসের বড়ো রাস্তার দুধারে বড় বড় বাড়িগুলো দেখে কোনটা হোটেল আর কোনটা হাসপাতাল বোঝা মুস্কিল। এই রকম এক হোটেল-হাসপাতালের একজন হাফ-ডাক্তার একদম বিনে পয়সায় সবার হার্টের টেস্ট করতে অফিসে এসেছিলেন। উনি ই সি জি করে ওনাকে একান্তে বলেছেন ওনার নাকি ছোটখাটো একটা হার্ট অ্যাটাক হয়েই গেছে। আর দেরী না করে ওনার করে ফেলা উচিৎ ইকোকার্ডিওগ্রাফি, করোনারি এঞ্জিওগ্রাফি, আঞ্জিওপ্লাস্টি, বাইপাস ….।

    আগে কেবল রাষ্ট্রায়ত্ত বা বেসরকারি ব্যাঙ্ক আর ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা কর্পোরেট অফিসগুলোই এদের নিশানায় ছিলো। মাষ্টার হেলথ চেক আপ নামক ধাপ্পাবাজি দিয়ে স্বাস্থ্য সম্বন্ধে অবহেলা করার দুর্বলতা আছে এমন সুস্থ মানুষদের ধরতে বেরত। দুর্জনেরা বলেন, এতে অফিসের আর হাসপাতালের বড়বাবু আর মেজবাবুদের সড় থাকলেও থাকতে পারে। কুসময়ের রোগের চিকিৎসার জন্য উপভোক্তার কষ্টার্জিত টাকা পয়সা সাইফন্ড হয়ে কর্পোরেট হাসপাতালের ক্যাশ বাক্স ভর্তি করত। এতে আর বুঝি হাসপাতালের খিদে আর মিটছে না। এরা এবার সমাজ সেবার মুখোশ পড়ে শহরের ছোটখাটো বেসরকারি অফিস কাছারিতেও হানা দিচ্ছে।
    ডাক্তারের ছদ্মবেশে কেবল মাত্র একটি ই সি জি মেশিন সম্বল করে হাসপাতালের দালাল রুগী ধরতে হানা দেয় শহরের অলিগলিতে। ই সি জি হৃদরোগের অস্তিস্ব আর সম্ভাবনা নির্ণয়ের কোন বিধিসম্মত পদ্ধতি নয়। ১ বিশেষ করে যেখানে সেই ‘ ই সি জি’ র মানে বোঝার জন্য যদি উপযুক্ত প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত প্রযুক্তিবিদ না থাকে। কম্প্যুটারাইজড ই সি জি মেশিনে আজকাল প্রাথমিক একটা রিপোর্ট পাওয়া যায়। এই রিপোর্টের নির্ভুল রোগ নির্ণয় ক্ষমতা মোটামুটি ২০ শতাংশ। কম্প্যুটারাইজড ই সি জি মেশিনে একটি ই সি জি পরীক্ষা করতে খরচ মাত্র দু টাকা। এই কাজে ডাক্তারদেরও লাগে না। ডাক্তার নয়, হাসপাতালের দালাল ই সি জি মেসিন নিয়ে ভুল রিপোর্ট দিয়ে হাসপাতালের খিদে মেটায়। এত অল্প বিনিয়োগে আঞ্জিওপ্লাস্টি আর স্টেন্ট বেচার সুযোগ আর কোন রাম রাজত্ব্যে মেলে?

    আমার শুরু করা ছোটগল্পের নায়ক সম্পূর্ণ সুস্থ। ডাক্তারের ছদ্মবেশী দালালের লেখা হার্টের রোগের বাঘা বাঘা ওষুধগুলো বন্ধ করা হয়েছে। পরবর্তী দুর্ঘটনাগুলো উনি হয়ত এড়াতে পারলেন। কিন্তু বিগত দু সপ্তাহে বিনিদ্র রাত কেটেছে পাঁচ বছরের মেয়ে, স্ত্রী আর বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে গোটা পরিবার। উৎকণ্ঠায় কাটানো ভদ্রলোকের স্ত্রীর রাত জাগা ফোলা ফোলা চোখের অঝোর ধারায় যে প্রশ্ন ছিলো তার উত্তর আমার জানা নেই।

    "বিশ্ব হৃদয় দিবস"

    দিন আসে, দিন যায়। তারই মধ্যে কোন কোন দিন আর পাঁচটা এলিবেলি সাধারণ দিনের মতো নয়। কোনোটা ভ্যালেন্টাইন ডে আবার কোনোটা নারী দিবস। বছরের তিনশো পঁয়ষট্টি দিনের মধ্যে আর বাকি পড়ে আছে কিছু কী? এরপরে বুঝিবা ওয়েব সাইটের ডোমেনের নাম বা ব্যবসায়িক সংস্থার নাম রেজিস্ট্রেশনের মতো কোন এক নিয়ামক সংস্থা “দিন নামকরনের” ঠিকা নিয়ে রমরমা ব্যবসা খুলে বসবে। উন্নয়নশীল দেশের সচেতন নাগরিক শীঘ্রই সকালে ঘুম থেকে উঠে এই রকম সমস্যায় পড়বেন - ১৪ই ফেব্রুয়ারিতে ভ্যালেন্টাইন ডে’র লাল গোলাপ কিনবেন, না শহিদ ভগত সিং এর ছবিটার জন্য সাদা গোড়ের মালা কিনবেন। যেমন ধরুন আজ, ২১ শে মার্চ, যে দিন এই লেখাটা শেষ করছি, জানতে পারলাম আজ নাকি কমপক্ষে পাঁচটি বিশেষ দিন। আজকের দিনটাতেই নাকি একাধারে বিশ্ব ডাউনস সিন্ড্রোম দিবস, আন্তর্জাতিক বর্ণ বৈষম্য দূরীকরণ দিবস, বিশ্ব কবিতা দিবস, বিশ্ব পুতুলনাচ দিবস এবং বিশ্ব বন দিবস। তা এমন ধারা হয়তো আরও বেশ কিছুদিন ধরে চলবে। কিন্তু এখন আপাতত মাথা গুলিয়ে যাচ্ছে । “ওয়ার্ল্ড হার্ট ডে” বা বিশ্ব হৃদয় দিবসের সরকারি-বেসরকারি চিকিৎসা সংস্থার সুবিশাল কর্মকাণ্ড , বাঘ সিংহ মার্কা ক্লাবের মিডিয়া পরিবৃত হয়ে পায়চারি মার্কা পদযাত্রা, বৈদ্যুতিন মিডিয়ার রিয়ালিটি শোএর রঙ তামাসা, ভার্চুয়াল জগতের টুং টাং টুইট ইত্যাদির মধ্যে জড়ভরত হয়ে থাকলে নিজেকে কেমন জোলো হৃদয়হীন বলে মনে হয়।

    ক্যাম্পেন তুমি কার তরে?
    বুলাদির ক্যাম্পেনের বয়স বেশিদিনের না হলেও বুলাদি সিগারেটের প্যাকেটের উপরে ক্যান্সারের মৃত্যু হুশিয়ারির থেকে সফল কেন ভাববার বিষয়। বিশ্ব হৃদয় দিবসের সাতসকালে টি-শার্টে ভুঁড়ি ঢেকে, হাফ প্যান্টের নীচের দিক থেকে বেড়িয়ে আসা লিকলিকে লোমশ ঠ্যাঙে স্নিকার বেঁধে, নিজ নিজ ক্ষমতা অনুযায়ী দু-চারটে সেলিব্রিটির শিখণ্ডী সামনে রেখে ফ্যাশন শো এর র‍্যাম্পে হাঁটার ভঙ্গিতে হেঁটে যান নধরকান্তি নায়ক ও অসূর্যম্পশ্যাগন। ক্যামেরায় পটাপট ছবি ওঠে, টেলিভিশন আর ফেসবুকে নধরকান্তিদের বুকে রক্তিম হৃদয় আঁকা হয়ে ছড়িয়ে পরে আকাশে-বাতাসে, আই-ফোনে আর অ্যান্ড্রয়েডে। পাড়ায়, ক্লাবে, অফিসে, এমনকি কর্পোরেট হাসপাতালের বিনি পয়সায় হার্ট পরীক্ষার হাতছানি উপেক্ষা করা নির্বুদ্ধিতা বলে মনে হয়। তাহলে দেশ বেশ এগিয়েই চলেছে! উন্নতির মধুরসের দু-এক ফোঁটার দাক্ষিণ্য চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে। কেবল বড় করে হাঁ করে জিভ বার করে বসে যাও। একটু দূরবীন নিয়ে বসে পড়া যাক, হার্ট চেক আপ এর পর কী কী হয় একটু দেখে নেওয়া যাক।

    বিশ্ব হৃদয় দিবসে বিনি পয়সায় কী কী পাওয়া যায়? মরে যাবার পর সরকার বাহাদুর “ডুপ্লিকেট ডেথ সার্টিফিকেটের ওরিজিনাল (?) কপি ” মাগনা দেয় না। অথচ ব্যাঙ্কে, রেশন দোকানে, পেনশন দেনেওয়ায়ালার ফাইলে শ্মশানের সরকারি ডাক্তারের আসলি সই ওয়ালা ডুপ্লিকেট ডেথ সার্টিফিকেটই চাই। এমন নগদমূল্যে কেনাবেচার বাজারে ফ্রি চেক আপ? দু-এক ফোঁটা রক্ত দানের বিনিময়ে পাতাভর্তি রিপোর্ট পেয়ে গেলেন একদম বিনি পয়সায়। দুঃখের কথা ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট না যায় বোঝা, না যায় খাওয়া! প্যাকেট ভর্তি একতাঁড়া কাগজের বোঝা দেওয়ালের পেরেকে লটকে থাকে। হৃদয়ের হাল-হকিকতের কোষ্ঠী বিচারের জন্য ডাক্তার বদ্যি ডাকতে হয়, নাইলে কোষ্ঠ কাঠিন্য অবধারিত। এইক্ষনে আপনি নিজের অগোচরে আধুনিক বাণিজ্যিক চিকিৎসার ঘূর্ণিপাকে ঢুকে গেলেন। বিশ্ব ব্যাপী কর্পোরেটের জালের ঘূর্ণিপাকে আমি আপনি …. লক্ষ হাজার অভিমন্যু, বেরনোর পথ জানা নেই। রক্তরসে সাঁতরে বেড়ানো পদার্থগুলোর অস্বাভাবিকতার সীমানা গুলো দেশভাগের মতো ঘরের আঙিনার মাঝখান দিয়ে যায়, অস্বচ্ছ সীমানার ঠিক ওপারে থেকে যায় যে পদার্থগুলো তাদের দেখে ভয় লাগে। খারাপ-ভালোর এই সীমানা গুলো তো আর আকাশ থেকে টুপ করে ঝরে পড়েনি! ও গুলো মানুষেরই বানানো। ডাক্তারদের জ্ঞানগম্যি যত বাড়ছে, ততই আঁটোসাঁটো হচ্ছে স্বাভাবিকতার গণ্ডি। চারপাশের চেনা অচেনা লোকের রোগভোগের কথা আর আপনার বিছানার পাশের দেওয়ালের পেরেকে দোদুল্যমান অপাঠ্য পড়োয়ানা রাতের ঘুমে হানা দেয়। ঘরে বউ আর অপিসে সহকর্মীর ক্রমাগত চাপ আপনাকে হাজির করবেই বিশেষজ্ঞের দরবারে।

    আপনার যাত্রা হোল শুরুঃ
    সোজাসাপটা বা অপরিহার্যতা বলে বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার যে বৈশিষ্ট্য সেটা চিকিৎসাবিজ্ঞানে অনুপস্থিত। রোগ-মৃত্যু-জরার বিরুদ্ধে মানুষের পালটা আঘাত ঝাড়ফুঁক আর তুকতাকের জমানা থেকে অতি অল্পই এগোতে পেরেছে। যদিও মঙ্গলগ্রহে অঙ্ক কষে নির্ভুল ভাবে উড়োজাহাজ পাঠাচ্ছে, নির্ভুল শত্রু নিশানায় মৃত্যু-রকেট ছুঁড়ছে কিন্তু জ্বরের কারণ ম্যালেরিয়া না টাইফয়েড সেটা নির্ণয়ের জন্য ১০০ শতাংশ নিশ্চয়তা নিয়ে কোন সমীকরণ আবিষ্কার করা যায়নি। এমনকি এ দুটো সমস্যা প্রধানত জ্বর হিসাবে গণ্য করা হলেও কখনও কখনও এই রোগ দুটোতে জ্বর নাও হতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রচলিত কার্যকারণ সম্পর্কের একটা সাধারণ রূপরেখা থাকলেও এর ব্যতিক্রম হতেই পারে। এই রকম ধোঁয়াশা ভরা রোগ নিরাময়ের শাস্ত্রের তেমনই প্রহেলিকাময় তার রোগ লক্ষণ। এর প্রয়োগ রোগ নিরাময়ের কাণ্ডারি তথা চিকিৎসকের মেধা, বিশ্লেষণ ক্ষমতা আর সততার উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। হৃদয়ের ধুকপুক শব্দ, মণিবন্ধের চামড়ার নীচে নাড়ীর ছন্দ আর গতি, রক্তচাপের ত্রৈরাশিক সংখ্যা মাপার জন্য নির্ভুল কোনো মেশিন কম্প্যুটার যুগ ডাক্তারদের হাতে তুলে দিতে পারেনি। মানুষ চিকিৎসক তাঁদের জৈবিক বৈশিষ্ট্যের সীমাবদ্ধতা নিয়ে রোগভোগের শেকড় বাকড় খুঁজে বেড়ান। ক্রমবর্ধমান পরীক্ষা নিরীক্ষার ঝুলি চিকিৎসকের সীমিত বিশ্লেষণ ক্ষমতাকে ভারাক্রান্ত করে তোলে। শানানোর বদলে মাঝে মধ্যে বুদ্ধি গুলিয়ে যাবার উপক্রম হয়।

    যেমন ধরা যাক ‘ক’ বাবু কেরানী। বউ বাচ্চা আর দশটা পাঁচটা ব্যাঙ্কের চাকরি নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করছিলেন। “ওয়ার্ল্ড হার্ট ডে” র ফ্রি চেক আপের ফাঁদে পড়ে গেলেন। হাই (ব্লাড) প্রেশার নেই, সুগার নেই, রোজ সকালে নিয়ম করে হাঁটাহাঁটিও করেন। লম্বা ফিতের মতো আঁকিবুঁকি আঁকা ই. সি. জি.র রিপোর্টের ভাষা বার বার পড়ে এটুকু বুঝলেন এটায় কিছু একটা গণ্ডগোলের আভাস আছে। এমন সময় মাথা কাজ করে না। যে তারামার্কা হসপিটাল একদম বিনি পয়সায় চ্যারিটি করেছিলো তাঁদের অতি বৃহৎ ডিগ্রিধারী হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে মোলাকাতের ব্যবস্থা পাকা করা গেল। দুমাসের আগে ওনার ডেট পাওয়া যায়না; নেহাত ব্যাঙ্কের ম্যানেজার বাবু ছিলেন! ফ্রি চেক আপের রিপোর্টের মানে বুঝতে যাওয়াটা অবশ্য ফ্রি নয়। মোটা ফিস দিয়ে অচেনা হাসপাতালের অলিগলিতে যাত্রা শুরু হোল। ইকোকার্ডিওগ্রাফি, ট্রেড মিল টেস্ট, করোনারি আঞ্জিওগ্রাফি করে আবার ডাক্তারের চেম্বারে। কুড়ি হাজার খরচ করে জানলেন বড়ো বাঁচা বেঁচে গেছেন। ডাক্তার বাবু বলেছেন রোগটা বেশি বাড়েনি। মাত্র ২০ শতাংশ ব্লক দেখা গিয়েছে হার্টের রক্ত চলাচলের নালী, ওরফে করোনারি আরটারিতে । এবার ‘ক' বাবু অথৈ সাগরে। আঞ্জিওপ্লাস্টি, স্টেন্ট না বাইপাস সার্জারি …. বয়স দশ বছর বেড়ে গেল কী?

    যে কথাটি কেউ বলে নাঃ
    হার্টের ব্লক একটা বা দুটো, ২০ শতাংশ অথবা ৮০ শতাংশ হলে কী হবে তার পরিণাম খোলসা করে কেউ বলে না। একেই এঞ্জিওগ্রামের রিপোর্ট দেখে ব্লকের সংখ্যা ও তার মাত্রার ব্যপারে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের ভিন্ন ভিন্ন মতও পাওয়া যাচ্ছে। হার্টের ব্লক সম্বন্ধে একটা অস্পষ্ট ধারণা তৈরি হয়েই যায় কাগজের বিজ্ঞাপন আর রাস্তার ধারের হোর্ডিং দেখে। ফ্রিতে পাওয়া এক তাড়া কাগজ ও তার পড়ে মোটা টাকার দাক্ষিণ্যে পাওয়া সুদৃশ্য মলাটে মোড়া রিপোর্টের বোঝায় শিরদাঁড়া নুইয়ে যায়, মাথা ঝুঁকে যায়। দিশেহারা চোখ থেকে সব স্বপ্ন উধাও। হোমিওপ্যাথি, রেইকি, জ্যোতিষ শাস্ত্রের লাল নীল পাথর, আর্ট অব লিভিং এর অবিজ্ঞান আর অপবিজ্ঞানের সাথে আধুনিক বিজ্ঞান সম্মত চিকিৎসা বিজ্ঞানের ফারাকটা ফিকে হয়ে যায়। যে কোন মূল্যে, যে কোন মতে হার্টের ব্লক থেকে মুক্তি পাবার জন্য বিজ্ঞান মনস্কতা সুসময়ের এক ফ্যান্সি লাক্সারি মনে হতে থাকে। বিভিন্ন ব্যাতিক্রমী পন্থা বাজিয়ে দেখার পরে, উড়ে এসে জুড়ে বসা এই আপদের হাত থেকে নিষ্কৃতি পেতে তবে কী এবার আঞ্জিওপ্লাস্টি আর স্টেন্ট? মানব দরদী সমাজসেবায় নিয়োজিত কর্পোরেট হাসপাতালের মার্কেটিং একজিকিউটিভ পাবলিক রিলেশনের মুখোশ পড়ে সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে দেয় একদিনের ব্লক বিদায়ের প্যাকেজের দক্ষিণার কথা। শরীরের আজব কলকারখানার কথা লালন ফকির কবে গেয়ে গেছেন! আক্ষরিক অর্থে সেই শরীর এবার ফকির করে দিতে চলেছে শরীরের বন্ধ হয়ে যাওয়া বিকল কারখানার মেরামতিতে। আপনি ভাবছেন একটাই তো জীবন। আপনি বাঁচলে তবেই … । কর্পোরেট প্রভু হাসপাতালের ঠাণ্ডা ঘরে হাসছেন , হাসছেন তার আজ্ঞাবহ হাই প্রোফাইল কর্মী হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। পরের বছরে ফ্রি হার্ট চেক আপের বিস্তার গ্রামে গঞ্জে সুদূর প্রসারী করার ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে যায় মাঝ রাতের কক্টেল পার্টিতে। যে কথাটা আপনি তখনও জিজ্ঞেস করেননি, মাথায়ও আসেনি, আঞ্জিওপ্লাস্টি করলে আপনার হৃদয় চিরতরে সুরক্ষিত হবে তো ? সেই কথাটা ডাক্তারও সযত্নে এড়িয়ে গেছেন। এক কথায় আপনাকে প্রশ্নটা মনে করিয়ে দিয়ে সোজাসুজি বলি, ছোট্ট উত্তর ‘না' । যদি সত্যিই হৃদপিণ্ডের রক্তনালীতে ব্লক হয়েই থাকে, আঞ্জিওপ্লাস্টি বা বাইপাস অপারেশন করেও হার্টের সেই রোগ নির্মূল হবে না। হার্টের রক্ত চলাচলের নালীতে ব্লক থাকলেই সেটা নির্মূল না করতে পারার জন্য হা-হুতাশ করার দরকার নেই। ব্লক কেন নির্মূল হবেনা বা তবে এমন ক্ষেত্রে কী করা উচিৎ সেটা অন্য আলোচনা।

    হার্টের রোগের অস্তিত্ব নির্ণয়ের জন্য চেক আপ আর বুকের ক্যান্সারের অস্তিত্ব নির্ণয়ের জন্য বুকের এক্সরে আর সি. টি. স্ক্যান তো একই ধরনের কর্মকাণ্ড। বিড়ি-সিগারেট ফোঁকা লোকজনের কেউ কেউ সিগারেটের প্যাকেটের উপরের বিধিসম্মত সাবধান বানী পড়ে ফুসফুসে ক্যান্সার হোল কিনা এই ভয়ে মাঝে মধ্যে ডাক্তারি পরীক্ষা করার তাড়নায় ভোগেন। তাতে কোন লাভ হবার নয়। ঘন ঘন বুকের এক্সরে করে দেখার চেয়ে ধূমপান বর্জন করা ফুসফুসের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সফল একমাত্র আধুনিক বিজ্ঞান সম্মত পদ্ধতি। কারণ এক্সরে আর সি. টি. স্ক্যান করে যখন ক্যান্সার ধরা পড়ে, তখন সেটা চিকিৎসার অতীত। এক্সরে আর সি. টি. স্ক্যান করে স্বাভাবিক রিপোর্ট পাওয়া গেলে ছয় মাসের মধ্যেই ফুসফুসে ক্যান্সার হতে পারে, কারণ ফুসফুসের ক্যান্সার শুরু হবার পরেই দ্রুতলয়ে বৃদ্ধি পায় ও তাড়াতাড়িই ছড়িয়ে পড়ে। ফুসফুসে ক্যান্সারের সফল প্রতিরোধ তাই রোগের কারণ নির্মূল করা, অর্থাৎ ধূমপান বন্ধ করা। বার বার বুকের এক্সরে করে এর থেকে নিস্তার পাওয়া যাবে না, বরং তাতে এক্স রে রেডিয়েশনের ঝুঁকি আছে। ফুসফুসের ক্যান্সারের এই বৈশিষ্ট্যের সাথে হৃদরোগ তুলনীয়। ফুসফুসের ক্যান্সার আর হৃদরোগের মধ্যে অবশ্য একটা পার্থক্য আছে। ফুসফুসের ক্যান্সার যখন এক্সরে আর সি. টি. স্ক্যান এ ধরা পড়ে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেটা চিকিৎসায় নিরাময় বা নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব। হৃদরোগের ক্ষেত্রে অবশ্য মানুষটিকে প্রায় স্বাভাবিক আয়ুষ্কাল পর্যন্ত বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব, তবে বড় খরচ সাপেক্ষ সেই বাঁচা। হার্টের রোগ যেন উঁইয়ে ধরা কাঠের আলমারি, যখন টের পেলেন তখন রোগটা অন্তত সত্তর থেকে আশি শতাংশ ক্ষতিসাধন করে ফেলেছে। হার্টের রোগ যখন কষ্টের উদ্রেক করে বা পরীক্ষা নিরীক্ষায় ধরা পরে, তখন কেবল ঠেকা দেওয়া, জোড়াতাপ্তি দেওয়ার চিকিৎসাই সম্ভব, রোগ নির্মূল করা যায় না। ফুসফুসের ক্যান্সারের হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য ধূমপান, পরিবেশ দূষণ এড়াতে হবে; মাঝে মধ্যে বুকের এক্সরে আর সি. টি. স্ক্যান করে বিন্দুমাত্র লাভ হবার নয়। তেমনই হৃদয়ের সুরক্ষার জন্য ফি বছর ঘটা করে কর্পোরেট সংস্কৃতির প্রোমোশনাল ফ্রি চেক আপ করে আম জনতার কোন লাভ হবার নয়। লাভ যে টুকু হাসপাতালেরই হবার কথা। বিশ্ব হৃদয় দিবসের মতো আরও অনেক সুচতুর ব্যবসায়িক প্রয়োজনে সৃষ্ট হুজুকে চিকিৎসা ব্যবসায়ীরা ভারতের মতো বিশাল বাজারে জাল পাতে রুগী-রূপ মাছ ধরার জন্য। সারা বছর নাক ডাকিয়ে ঘুমিয়ে, দু একটা দিন সকালে হাঁটার জন্য ফি বছর নতুন নতুন টি-শার্ট আর স্পোর্টস-জুতো আপনার জন্য একটা বাজে খরচ। ওয়ার্ল্ড হার্ট ডের কর্মকাণ্ড হৃদরোগের প্রকোপ কমাতে পারেনি কোন দেশে। হাতে গোনা দু একটা ধনী আর গরীব দেশে হৃদরোগের প্রকোপ যে টুকু কমেছে সেটায় বিশ্বহৃদয় দিবস উদযাপন হুজুকের কোন ভূমিকা নেই। হৃদরোগের প্রকোপ কমানোর লক্ষ্যে অনেকগুলি পদক্ষেপের সাথে অবশ্য ন্যূনতম কয়েকটি পরীক্ষা করা দরকার, বিশ্ব হৃদয় দিবসের অনুষ্ঠানে সেগুলো অবহেলিতই থেকে যায়। যে আলোচনাগুলোর জন্য অন্য প্রয়াসের অপেক্ষায় থাকবো সেটা হোল ব্যাক্তিগত আর জনগোষ্ঠীর হৃদয়ের সুরক্ষার জন্য সফল প্রয়াস কী? হৃদপিণ্ডের রক্তনালীতে ব্লক থাকলে আঞ্জিওপ্লাস্টি বা বাইপাস অপারেশনই কী সর্বোত্তম চিকিৎসা প্রযুক্তি? ব্যাবসায়িক চিকিৎসা সংস্থা হৃদরোগ নিরাময় করে নিজের পায়ে কুড়ুল মারবে কোন দুঃখে? এই ভূমিকাটা পালন করতে একমাত্র রাষ্ট্রই পারে। তত সুদূর প্রসারী দৃষ্টিওয়ালা রাস্ট্রনেতার বড়ই অভাব।
    ২১ শে মার্চ, ২০১৬, কোলকাতা

    তথ্যসূত্রঃ
    1.Moyer VA, U. S. Preventive Services Task Force. Screening for coronary heart disease with electrocardiography: U. S. 
Preventive Services Task Force recommendation statement. Ann Intern Med 2012; 157:512 

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২৩ মার্চ ২০১৬ | ১৬৯৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Gautam Mistri | 123.21.69.151 (*) | ২৩ মার্চ ২০১৬ ০৫:১৭56034
  • কিছু বানান ভুল নজর এড়িয়ে গেছে। দুঃখিত।
  • | 24.97.241.26 (*) | ২৩ মার্চ ২০১৬ ০৫:২৫56035
  • এই ব্লগটায় কেউ ইন্ডোকে ধরে আনো।
  • | 127.194.4.22 (*) | ২৩ মার্চ ২০১৬ ০৭:৫৪56031
  • সেকি? কেউ কমেন্ট করেন নি এখনও?
    "আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল শুধাইল না কেহ"।

    ডা গৌতম মিস্ত্রী, মনে হয় বিশ্ব হৃদয় দিবসের অনুষ্ঠান-সর্বস্বতা সেভাবে কেউ বুঝতে পারছে না।
    ইঁদুর-ধরার-কল যদি ইঁদুররাই চিনে ফেলতে পারত তো তারা কি আর ইঁদুর থাকত?
  • Gautam Mistri | 123.21.66.194 (*) | ২৩ মার্চ ২০১৬ ০৯:১৬56032
  • ঠিক বলেছেন। হুলো বেড়াল যখন ইঁদুর ধরা কলের ব্যাপারে চিল্লামেল্লি করে বেড়াচ্ছে, ইঁদুরের একটু দুর থেকেই মাপে! কাশিবাসী বেড়াল জেগে থাকবে ।
  • avi | 233.191.57.70 (*) | ২৩ মার্চ ২০১৬ ১০:১৯56033
  • ওহো এগুলো তাহলে বিশ্ব হৃদয় দিবসের জন্য ছিল। তাই বলি কদিন আগে কেন ফোন আসছিল! তো যাই হোক, একটা ফোন ধরে বলতে হল সেমিনারে আছি, দু ঘন্টা পর কথা বলব। ঠিক দু ঘন্টা পরেই ফোন এল। বাইপাসের তারাচিহ্নিত হাসপাতাল। সুরেলা গলায় বলে যাচ্ছেন ভদ্রমহিলা হোল বডি চেক আপের গল্প। সিবিসি, সুগার থেকে শুরু করে শেষে পেটের ইউএসজি এবং হ্যাঁ, ইকোকার্ডিওগ্রাফি সব নাকি করা হবে।
    -দাঁড়ান দাঁড়ান, ইকো ইউএসজি এসব কি সবারই করা হচ্ছে?
    - হ্যাঁ স্যর, নিশ্চয়।
    - কেন?
    - কেন মানে স্যর, এগুলো তো আমাদের চেকআপের পার্ট। এই সবগুলোই। সিবিসি, সুগার...
    - থামুন, শুনেছি তো। ইকো করে আপনারা কী ডিটেক্ট করার আশা করছেন সেটা বলুন। একজন আদারওয়াইজ হেলদি মানুষের?
    - স্যর, আপনার হার্টের ভালভ যদি কাজ না করে, এটা দিয়ে আগেই বোঝা যাবে। প্লাস যদি কোনো ভেসেলে ব্লক হয়, নিয়মিত ইকো করলে..
    - উড য়ু পারমিট মি টু সাজেস্ট সামথিং?
    - ইয়েস স্যর। শ্যূয়োর।
    - আপনি প্রপার হোমওয়ার্ক করে আমাকে ফোন করুন প্লিজ। আপনি কী বলছেন, আপনার ধারণা আছে?
    - স্যর আপনি এক মিনিট হোল্ড করুন, আমাদের সিনিয়ার স্যর কথা বলবেন।
    কিছুক্ষণ ধরেই দেখি। ওপাশে শুনতে পাচ্ছি বলা হচ্ছে, ইকো নিয়ে জানতে চাইছে। একটু পরেই ভারি গলা, "হ্যাঁ স্যর, আপনার কোয়েরি কী যেন?"
    জানালাম। "এগজ্যাক্টলি কী প্যাথলজি আপনারা এই স্টেজে ডিটেক্ট করতে পারবেন মনে করেন?"
    - "স্যর আমরা ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা করে আপনাকে পরে ফোন করছি।"
    -ওক্কে।
    আর ফোন আসবে না জানাই ছিল। কিন্তু শুরুতেই ভদ্রমহিলা আমি বিবাহিত কি না শুধিয়ে স্ত্রীর জন্য স্পেশাল ছাড় এবং আনুষঙ্গিক অফারও দিয়েছিলেন। কোনো একটা অফার তো জনতা নেবেই।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে প্রতিক্রিয়া দিন