এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • স্টার্ট-আপ সম্বন্ধে দুচার কথা যা আমি জানি

    ন্যাড়া লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৭ আগস্ট ২০১৯ | ৬৩৭ বার পঠিত
  • স্টার্ট-আপ সম্বন্ধে দুচার কথা যা আমি জানি। আমি স্টার্ট-আপ কোম্পানিতে কাজ করছি ১৯৯৮ সাল থেকে। সিলিকন ভ্যালিতে। সময়ের একটা আন্দাজ দিতে বলি - গুগুল তখনও শুধু সিলিকন ভ্যালির আনাচে-কানাচে, ফেসবুকের নামগন্ধ নেই, ইয়াহুর বয়েস বছর চারেক, অ্যামাজনেরও বেশি দিন হয়নি। অতএব স্টার্ট-আপ সম্বন্ধে গভীর বাণী দেবার সবরকমের হক ও জ্ঞানভান্ডার আমার আছে।
    প্রথম যে স্টার্ট-আপে ঢুকেছিলাম সে একেবারে ওয়ান-পাইস ফাদার-মাদার। একতলার করিডোরের দুপাশে তিনটে মাঝারি সাইজের ঘরে গাদাগাদি করে জনা-পঁচিশ লোক। তারপরে লোক বাড়লে আরেকটা ঘর নেওয়া হল। তারপরে আরও একটা, সেটা আবার দোতলায়। জনা ছয়েক আঁটে এরকম কনফারেন্স রুম ছিল দুটো। তার একটা কিছুদিন পরে বেহাত হয়ে গেল। একবার মনে আছে চটজলদি অলহ্যান্ডস মিটিং-এর জায়গা পাওয়া গেল না। বাড়িটার ওপরতলায় কন্সট্রাকশন হচ্ছিল। সেখানে সবাই গোল হয়ে দাঁড়িয়ে মিটিং হল। সেই মিটিং-এই কথা উঠল নতুন অফিস আর না হলেই নয়।
    ঘরে একেবারে গাদাগাদি করে বসা হত। আমি প্রথমে যে ঘরে বসতাম, সেখানে তিনটে কিউবিকল ছিল। ঠেসাঠেসি করে হয়তো আরও দুটো ধরত। সেই পাঁচজন-আঁটে-ঘরে শেষ পর্যন্ত ন'জন বসে কাজ করতাম। দুটো কিউবে দু'জন করে। এখন হলে কিউব-টিউব উড়িয়ে "ওপেন স্পেস"-এর ধ্বজা তুলে আরও জনা দুয়েক ঢুকে পড়ত। বেশ কিছু রিসার্চে দেখা গেছে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ঘেরা জায়গায় - সে ঘরই হোক কি কিউবিকল - না বসে খোলা জায়গায় বসলে প্রোডাক্টিভিটি ঝুলে লাট হয়ে যায়। তবু সিলিকন ভ্যালিতে ওপেন স্পেসের রমরমা। প্রথমতঃ কিউব-টিউব না থাকলে একই পরিমাণ জায়গায় বেশি লোক ধরানো যায়। দু নম্বর, টিম বিল্ডিং-কোলাবরেশন নামক ঢপ বিনাপ্রশ্নে লোকে খায় ভাল। ফাউন্ডারদের ধারণা খোলা জায়গা হলে লোকের পারস্পরিক আদান-প্রদান বাড়বে কচুরিপানার মতন। কাজেই লাগাও "ওপেন স্পেস"। বেলঘরিয়াগামী এ পানসিতে ছোট-বড় সব কোম্পানিই যে যেমন পারছে উঠে পড়ছে।
    স্টার্ট-আপে এখন খাওয়া-দাওয়ার খুব সুবিধে। মূলতঃ গুগুলের পর থেকেই পয়সাওলা স্টার্ট-আপগুলো বিনিপয়সায় লাঞ্চ দিতে শুরু করল। তারপরে ব্রেকফাস্টও। অনেক দেরি অব্দি কাজ করলে ডিনারের চল অবশ্য অনেকদিন থেকেই ছিল। আমার সেই ঘাড়াঘাড়ি-বসা কোম্পানিতেও ছিল। কিন্তু লাঞ্চ-টাঞ্চ সুদূর নীহারিকা।
    গেল আঠার বছরে সে সবই পাল্টাল। আমি মাঝে দেড়খানা বড় কোম্পানি ছাড়া স্টার্ট-আপের ঘাটে ঘাটেই সফর করেছি। সেদিক দিয়ে বলতে হয়, চোখের সামনে সব পাল্টাল। এখনকার স্টার্ট-আপগুলোয় খাবার-দাবার ফ্রি। মানে অধিকাংশগুলোতে। সে আবার যে-সে লাঞ্চ নয়, ভাল রেস্টোর্যান্টের কেটার্ড লাঞ্চ। সঙ্গে ফুললি স্টকড কিচেন। স্ন্যাকস, ড্রিংকস। দিতেই হবে। ইন্ডাস্ট্রির ভাষায় "টেবিল স্টেক"। যার কম দিলে লোকেরা চাকরি নেবেনা। আর সেই খাবার-দাবারের ধাক্কায় সম্মিলিতভাবে ওজন ঊর্ধগামী। কাজেই সঙ্গে থাকতে হবে জিমের ফেসিলিটি বা মেম্বারশিপ। ব্যায়াম-ট্যায়াম করলে বাবু-বিবিদের মনমেজা্জ ভাল থাকবে। কাজ হবে দুদ্দুড়িয়ে।
    শরীরগতিকের কথাই যখন উঠল, তখন ডাক্তার-বদ্যির হিসেবটাও থাক। প্রথমদিকে স্টার্ট-আপগুলোয় শুধু মেডিকেল, ভিশন আর ডেন্টাল বেনিফিট থাকত। প্রিমিয়ামের পুরোটা কোম্পানি দিত কিনা মনে নেই। বোধহয় দিত। এখন কি-ছোট, কি-বড় - প্রায় সব কোম্পানিতেই কিছুটা অন্ততঃ প্রিমিয়াম নিজেকে দিতে হয়। অন্যদিকে, কোম্পানি কন্ট্রিবিউশন তো দূরের কথা, ৪০১-কে ধরণের রিটায়ারমেন্ট বেনিফিটও অনেক সময়ই থাকত না। এখন ওটা প্রায় সেই টেবিল স্টেকই হয়ে গেছে। যদিও প্রফিটেবল না হলে এখনও কোম্পানি কন্ট্রিবিউশন থাকে না, কিন্তু ৪০১-কে প্রায় সব স্টার্ট-আপই দেয় একটা সময়ের পরে। আজকাল ফাউন্ডাররা অফিসের সৌন্দর্য ওরফে চকশা নিয়েও অনেক বেশি মাথা ঘামায়। ফার্নিচার-টার্নিচার দেখতে ভাল। অফিস-টফিসেরও বেশ একটা চরিত্র আছে।
    এখন ডেস্কে ডেস্কে ফোনের গল্প উঠে গেছে। ফোন লাগেই না। লাগলে সফট-ফোন ব্যবহার কর। অবশ্য বড় কোম্পানিরাও আস্তে আস্তে সেই পন্থাই নিচ্ছে। ব্রডব্যান্ড হইহই করে আসার আগে বাড়ি থেকে কাজ করার সুযোগ ছিল কম। তবে তাও কোম্পানি অনেকসময়েই ইঞ্জিনিয়ারদের বাড়ির ইন্টারনেটের বিলটা চুকিয়ে দিত। এখন ঘরে ঘরে ব্রডব্যান্ড নিত্যব্যবহার্য হয়ে যাওয়ায় কোম্পানিরাও হাত ঝেড়ে ফেলেছে।

    মোদ্দা কথা স্টার্ট-আপরা এখন বড় হয়েছে, ভারিক্কি হয়েছে। লোকেরা মান্যিগন্যি করে। কিন্তু কৈশোরের সেই বেপাড়ায় গিয়ে "ঘরে নেই নুন, ছেলে আমার মিঠুন" ধরণের রোয়াব নেবার স্পিরিটটায় ঘুণ ধরেছে। স্টার্ট-আপ আর স্টার্ট-আপ নেই।

    *******

    প্রথম ব্যাচের স্টার্ট-আপেরা - মানে ২০০০-২০০১ সালে ডট-কম বুদবুদ ফেটে যাবার আগে যাদের জন্ম - তারা অনেকটাই বড়লোকের বখা ছেলের মতন। শোনা যায় স্রেফ পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন সম্বল করে ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টদের গালগল্প শুনিয়ে কয়েক মিলিয়ন ডলার ফান্ডিং বাগিয়ে সে টাকা উড়িয়ে-পুড়িয়ে নয়ছয় করেছিল অনেক উদ্যোগপতি। স্টার্ট-আপের ব্যাপারটা এরকম। ধরুন আমার চ-ম-ৎ-কা-র একটা আইডিয়া আছে, যা ঠিকমতন নাবাতে পারলে দুনিয়া পালটে দেবে। আমি সেই আইডিয়ার জন্যে এমনই পাগল যে আমার নাওয়া-খাওয়া প্রায় শিকেয় উঠেছে। আমি আর থাকতে না পেরে একজন ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট ওরফে ভিসির কাছে গেলাম। ভিসি লোকগুলো কারা? এরা মূলতঃ দালাল। পয়সাওলা দালাল। এরা অন্য পয়সাওলা লোকের কাছে গিয়ে বলে "তোমার এত টাকা আছে, তার থেকে কয়েক মিলিয়ন আমায় দাও। আমি অ্যা্যসা দূরদৃষ্ট ইনভেস্টার যে এমন সব টেকনলজিতে তোমার টাকা খাটাব যে তিন বছরের মধ্যে তোমার টাকা চার-পাঁচগুণ তো কোন ছার দশ-বারোগুণ হয়ে ফেরৎ আসবে। সেরকম সেরকম লেগে গেলে কুড়ি-পঁচিশগুণ হওয়াও বিচিত্র নয়। সোবই হানুমানজীকা হিঞ্ছা।" এইসব বলে, এমত টুপিটাপা পরিয়ে ভিসিরা বড়লোকদের থেকে চাঁদা-টাঁদা তুলে একটা ফান্ড বানায়। সেটা দু-দশ মিলিয়নের ডলারের হতে পারে আবার কয়েকশো বিলিয়ন ডলারেরও হতে পারে। ভিসিরা নিজেরাও অনেক সময়ই নিজেদের পয়সা দিয়েই ফান্ড শুরু করে।

    তো আমি আমার সেই যুগান্তকারী আইডিয়া নিয়ে ভিসির কাছে গিয়ে বললাম, "ভিসিদাদা, ভিসিদাদা পয়সা দাও। জিনিস বানাই।" ভিসি বলল, "এস ভাই, বস ভাই। খাট পেতে দিই, ভাত বেড়ে দিই। তোমার জিনিস দেখাও!" আমি বলব, "জিনিস? জিনিস তো এখনও নেই। জিনিস বানাব বলেই তো তোমার কাছে পয়সা চাইতে এসেছি। এই দেখ আমার প্ল্যান।" এই বলে আমি পাওয়ার পয়েন্টে খুলে প্ল্যান-ট্যান দেখিয়ে বুঝিয়ে দিলাম অমুক থেকে অমুক হয়ে তুশুক করে দেড় বছরের মধ্যে আমার কোম্পানি ৫০০ মিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করবে। ব্যস, ভিসির টাকা ৫০ গুণ হয়ে হেঁটেহেঁটে ফেরৎ চলে আসবে। ১৯৯৭ সালে হলে ভিসিদাদা চার মিলিয়ন টাকা আমার হাতে গুঁজে দিয়ে বলত, "আপাততঃ এই রাখ। চিন্তা মৎ করো। কাজ যেমন যেমন এগোবে পয়সাও তেমন তেমন পেয়ে যাবে।" সবাই নয়, অনেকেই এইভাবে পয়সা তুলেছে। তারপরে আইডিয়া আর প্রডাক্ট নিয়ে ল্যাজেগোবরে হয়ে ক্ষান্ত দিয়েছে। আর এখন ওই নিয়ে গেলে ভিসি দুদ্দুর করে তাড়িয়ে দেবে। বলবে, "ইল্লি! তুমি কোন হরিদাস পাল হে? আগে নিজের পয়সায় কিছু একটা বানিয়ে তো আন যাতে বুঝতে পারি যে তুমি মাল বানাতে পার, সেই মাল দেখে কিছু খদ্দের ধরতে পার আর সেই মালের ওপর তোমার এমন ভরসা আছে যে তুমি নিজের গ্যাঁটের সময় ও কড়ি খরচা করেছ। ্তোমার নিজেরই যদি নিজের আইডিয়ার ওপর ভরসা না থাকে তালে আমি ভরসা করে পয়সা দিই কোত্থেকে? মাল বানিয়ে দু-চারটে খদ্দের-টদ্দের ধরে এস, তখন নাহয় টাকাকড়ির কথা বলা যাবে।"

    ফলে এখন স্টার্টাপের কর্মপদ্ধতিতে অনেক বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারা এসেছে। কটা জিনিস লক্ষ্য করি -

    ১। এখন স্টার্টাপের মূল প্রতিষ্ঠাতা অনেক আঁটঘাট বেঁধে নাবেন। ব্যবসার যে দিকটায় তাঁর খামতি, সে কাজে দড় এমন সহ-প্রতিষ্ঠাতা জুটিয়ে নেন যাতে ভিসিদাদার থেকে পয়সা তুলতে সুবিধে হয়।

    ২। আগে প্রতিষ্ঠাতারা স্টক অপশনে দিয়ে-থুয়ে খেতেন। এখন প্রতিষ্ঠাতা ভাইয়েরা আর তাদের ভিসিদাদারা স্টকের অধিকাংশই নিজেদের কুক্ষিগত করে রাখেন। ফলে স্টার্টাপ যদি পরে ভাল দামে বিকিয়েও যায়, কর্মীদের ভাগ্যে লবডঙ্গার থেকে খুব বেশি কিছু জোটেনা, বিশেষত যদি না সেই কর্মী দশ-কুড়িজন কর্মীর একজন না হন। সময় ও উৎসাহ পেলে স্টার্টাপের পয়সা কিভাবে ওঠে আর স্টক কিভাবে বিতরিত হয়, সে সম্বন্ধে লেখা যাবে।

    ৩। অনেক স্টার্টাপ এখন শুরুর আগে ভেবে নেয় বছর দুই-থেকে-পাঁচ পরে কোন কোম্পানি তাদের কিনে নিতে পারে। সেইমতন তারা তাদের ভিসি ও তৎসহ স্ট্র্যাটেজি স্থির করে।

    ৪। আগে স্টার্টাপের যেমন অনেকটা "এলোমেলো করে দে মা, লুটেপুটে খাই" ধরণের কর্মপদ্ধতি ছিল, এখন "লীন স্টার্টাপ" ধরণের কিছু অ্যাকাডেমিক আর থিওরেটিক্যাল মেথডোলজি এসেছে স্টার্টাপ চালানোর চিন্তায়।

    ৫। ৯০% কি তারও বেশি স্টার্টাপ বলে, "আমরা অ্যাজাইল শপ"। মানে ইঞ্জিনিয়ারিং প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট "অ্যাজাইল" নামের পদ্ধতি অনুসরণ করে। যদিও কাজে সত্যিকারের অ্যাজাইল যে কজন করে উঠতে পারে, তা সন্দেহ।

    ৬। যত স্টার্টাপ তৈরি হয় তার মধ্যে কমবেশি ৪% মাত্র স্টার্টাপ কোনরকম সাফল্যের মুখ দেখে। এই ৪% শতাংশের গল্পই ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে বলে স্টার্টাপ যুগের পত্তন করা হয়েছে। বাকি ৯৬% শুধু যে কাব্যে উপেক্ষিতা তাইই নয়, তারাই আসল গল্প।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৭ আগস্ট ২০১৯ | ৬৩৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | 236712.158.455612.192 (*) | ১৭ আগস্ট ২০১৯ ০৬:১৬49307
  • আমি আগাগোড়া সার্ভিস ইন্ডাস্ট্রিতে। তাও দুই এক কথা বলব কাল সময় করে।
  • ন্যাড়া | 236712.158.565623.99 (*) | ১৭ আগস্ট ২০১৯ ০৬:২৫49308
  • লিখুন।

    কিন্তু আমার প্যারাগ্রাফ ডিভিশনগুলো কোথায় চলে গেল! এই টানা আখাম্বা প্যারাগ্রাফবিহীন লেখা তো পড়ার দুর্জয় সাহস থাকলেও কেউ পড়তে পারবে না।
  • র২হ | 236712.158.786712.23 (*) | ১৭ আগস্ট ২০১৯ ০৬:৩২49309
  • প্যারাগ্রাফ দেখতে পাচ্ছি তো
  • ন্যাড়া | 237812.68.233412.70 (*) | ১৭ আগস্ট ২০১৯ ০৬:৪০49310
  • পরের আধে আছে। প্রথম আধখানা শহিদ মিনারের মতন আখাম্বা। অন্ততঃ মোবাইলে।
  • S | 236712.158.566712.143 (*) | ১৭ আগস্ট ২০১৯ ০৬:৫৯49311
  • স্টার্টাপে স্টেক আর দেয় না, তার বদলে টেবল স্টেক দেয়। কি আর করা যাবে। তাতে তো লোক কমেনি। স্টার্টাপে কাজ করার এক্সপি এখন সার্ভিস ইন্ডাস্ট্রিতে মারাত্মক ভ্যালুয়েবল; কেউ কেউ ঝট করে লীডারশীপ রোলও পেয়ে যায়।

    তবে ন্যাড়াদা, বড়লোকদের টুপি পড়িয়ে কয়েক মিলিয়ন তোলা ব্যাপারটা এতো সোজা নয় মনে হয়। বড়লোকরা টুপি আদৌ পরেনা। ওদের অতো বেচারা মনে করার কোনও কারণ নেই। এন্ডাওমেন্ট ফান্ডগুলোকে তাও কিছুটা বুঝিয়ে সুঝিয়ে কিছু ব্যবস্থা করা যেতে পারে। আপনি যে সময়ের কথা বলছেন, তখন পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দারুন ব্যাপার স্যাপার ছিলো। কতরকমের রঙিন স্লাইড হতো, আর কতরকমের অ্যানিমেশন। বহুলোক কম্পিউটার বলতে এসবই বুঝতো। এখনও বোঝে।

    সবশেষে ৪% স্ট্রাইক রেট কিন্তু খুবই ভালো। ইনভেস্টরের পক্ষে এবং বহু এমপ্লয়িদের পক্ষেও। এই সাকসেসফুল স্টার্টাপ দিয়েই অনেকসময় অনেক ফেইল্ড স্টার্টাপ কিনিয়ে নেওয়া হয় এবং লোকজনও অ্যাবজর্ভ করা হয়।
  • | 237812.68.343412.35 (*) | ১৮ আগস্ট ২০১৯ ০৩:৫৪49312
  • “চকশা” মানে কি? কনটেক্স্ট থেকে গেস করতে পারছি কিন্তু এমন বিশেষণ আগে শুনি নাই।
  • ন্যাড়া | 890112.162.561223.241 (*) | ১৮ আগস্ট ২০১৯ ০৪:১৫49313
  • চকশা = চকচকে ভাব।

    এটা পারিবারে শুনেছি। বহুল প্রচলিত বলে মনে হয়না।
  • ন্যাড়া | 236712.158.565623.153 (*) | ১৮ আগস্ট ২০১৯ ০৬:৪৬49316
  • "টুপি-টাপা পরিয়ে" - একটা কথার কথা।

    কিন্তু ভিসি মানি খুবই ঢুকছে শেষ বছর দশেক। স্টক মার্কেটের ঊর্ধ্বগতি, ইকোনমির প্রসারণ - এসবের ফলে বড়লোকদের হাতে ইনভেস্ট করার মতন পয়সা বাড়তেই থেকেছে। কিন্তু স্টক খুবই দামী হয়ে পড়েছে, ফলে সেখানে টাকা ঢালবার আগে অনেক ভাবতে হচ্ছে। (বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে ১২২ বিলিয়ন ডলার ক্যাশ নিয়ে বসে আছে।) ২০০৯-এর ক্রাইসিসের পরে ডেরিভেটিভ মার্কেটে আর অত আস্থা রাখা যাচ্ছে না। পড়ে রইল হেজ ফান্ড আর ভিসি ফান্ড। এই দুই জায়গাতেই প্রচুর পয়সা ঢুকছে। তার সঙ্গে মিডিয়া ইউনিকর্ন, উবার, এয়ারবিঅ্যান্ডবি, উইওয়ার্ক, জুম, পিন্টারেস্ট প্রভৃতি নাম বলে বাজার গরম করেও রাখছে।

    ৪% খুব কম না হলেও বেশিও নয়। আমার মতন ছাপোষা ইঞ্জিনিয়ার পঁচিশটা র‍্যান্ডম স্টার্টাপে কাজ করে একটায় টাকার মুখ দেখার আশা করতে পারে। স্ট্যাটিস্টিকালি স্পিকিং। ক্লিফ পিরিয়ড একবছর হলে পঁচিশ বছর কাজ করে একটায় কিছু পয়সা (অপশানের ১/৪ অংশ) পেতে পারে।

    বি-বাবু আর হুতো, অমন চাকরি জুটলে আমায় খবর দিও। মাইনের ১০% রেফারাল ফি দেব তোমাদের।
  • S | 236712.158.786712.163 (*) | ১৮ আগস্ট ২০১৯ ০৭:১৮49317
  • হ্যাঁ পোর্টফোলিও ডাইভার্সিফাই করতে সক্কলে এইসব ভিসি ফান্ডগুলোতে ভরসা করছে।

    তাছাড়াও যেটা হচ্ছে তা হলো এখন স্টার্টাপগুলো অনেক বেশি আট্ঘাঁট বেঁধে নামছে। প্রথম থেকেই বিজনেস কনসাল্টেন্ট রেখে নিজেদেরকে অনেক বেশি অর্গানাইজ্ড এবং প্রেজেন্টেবল করে তুলছে। যেটা আপনিও বলেছেন। ফলে চটপট ফান্ডিংও পেয়ে যাচ্ছে। তাতে ইনোভেশন কমছে কিনা সেটা আপনিই বলতে পারবেন। আর ফান্ড ম্যানেজাররা দেখছে যে স্টার্টাপে ইনভেস্ট করে পুরো কন্ট্রোল নিজের হাতে রাখা যায়, রিস্ক কমে যাচ্ছে। ভিসি, অ্যান্জেলরাও অনেক বেশি ম্যাচুওর্ড হয়েছে।
  • b | 236712.158.786712.7 (*) | ১৮ আগস্ট ২০১৯ ০৭:২০49314
  • ন্যাড়াদার স্টার্ট আপে আমাকে চাকরি দেবেন? বিশেষ কিছু নয়, মাঝে মধ্যে গুরু থেকে নানা রকম জোকস বলে কর্মচারীদের মন প্রফুল্ল রাখবো, প্রডাক্টিভিটি হু হা। বদলে আমাকে ঐ টেবিল স্টেকস এর একটু ভাগ দিতে হবে।
  • S | 236712.158.786712.163 (*) | ১৮ আগস্ট ২০১৯ ০৭:২১49318
  • আর ৪% সাকসেস রেট কিন্তু যথেষ্ট। আপনার হিসাবটাই করে দেখি। আপনি ২৫ বছর কাজ করলে প্রথম বছরেও সাকসেসফুল ভেন্চারে ঢুকতে পারেন আবার ২৫তম বছরেও ঢুকতে পারেন। প্রথম বছর ঢুকলে ২৫ বছরই সাকসেসফুল স্টার্টাপে কাজ করবেন, শেষ বছরে ঢুকলে ১ বছর কাজ করবেন। সেক্ষেত্রে অ্যাভারেজ ধরুন ১২-১৩ বছর।
  • র২হ | 237812.68.454512.186 (*) | ১৮ আগস্ট ২০১৯ ০৭:৩৩49315
  • আরে বি-দা আমার চাকরিতে ভাগ বসাতে চায়।
    আমি সব উচ্চপদস্থ পরিচিতদের বলি তোমরা সিইও টিইও হও, আর আমাকে একটা বিদূষক টাইপ চাকরি দাও।
  • অর্জুন | 236712.158.676712.162 (*) | ১৯ আগস্ট ২০১৯ ০৪:২৭49319
  • প্রযুক্তির ওপর লেখা সবচেয়ে কঠিন কাজ। আপাত ভাবে রসকষহীন একটা বিষয়কে পাঠযোগ্য করে তোলা একেবারেই সহজ নয়। স্টার্ট-আপ বিষয়টা অজ্ঞাত ছিল কারণ আমি এই ইন্ডাস্ট্রির লোক নই।

    এই লেখাটা পড়ে আমি ন্যাড়া বাবুর ফ্যান হয়ে গেলাম।

    সত্যিই কি বিচ্ছিরি ঝগড়া করেছি এই কিছুদিন আগে। আপনার সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। 'নিক' গুলো থেকে কি বা জানা সম্ভব ! সম্ভব হলে ঝগড়ার কথা গুলো ভুলে যাবেন। আপনার আরো লেখার পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
  • cd | 890112.162.893423.130 (*) | ১৯ আগস্ট ২০১৯ ০৪:৫২49320
  • জানতেন কি যে ন্যাড়া অসম্ভব ভালো ভারতনাট্যম নাচেন? বারো বছর নাচ শিখেছেন। শিব্পুরে একবার তেজেন্দ্র নারায়ণ মজুমদারের বাজনার সাথে উনি পারফর্ম করেছিলেন। সিলিকন ভ্যালিতে ওনার নাচের স্কুলের খুব নাম।
  • | 237812.69.563412.233 (*) | ১৯ আগস্ট ২০১৯ ০৬:১০49321
  • আমার ছোট্টই একটু বলার ছিল যে অনেকে স্টার্টাপ খোলেই এই লক্খ নিয়ে যে কিছু বছর পরে কোন তিমিঙ্গিল গিলে নেবে। এটা সম্ভবত হতমেল এর থেকে শুরু হয়েছে। ধরুন ফ্লিপকার্ট হাতে গরম। বা রেডহ্যাটস তাই, আইবিএম নিল। এবার রেডহ্যাতসের অ্যানসিবল ইত্যাদি আলাদা করেই মার্কেটে চলছে। খুব সম্ভবত অ্যানসিবল ছাড়া নেতওয়ার্ক অটোমেশানের আর কোন প্রোডাক্ট এই মুহূর্তে অ্যাভেইলেবলও নয়। তো রেডহ্যাতসের এইগুলো চলছে। আবার কিছু প্রোডাক্ট তো আইবিএমেরও আছে অন্য নামে। সেক্ষেত্রে আইবিএম কোনটাকে প্রেফারেন্স দেবে? বা দেওয়া উচিৎ?

    আরেকটা যেটা দেখছি আমাদের কোম্পানির মত অনেকেই স্টার্টাপ কিনছে পোর্টফোলিও ডাইভার্সিফাই করে বিজনেস ধরার জন্য। তো সেটাও একেবারে খারাপ কিছু না, যদি স্ট্র্যাতেজিকালি টার্গেট বিজনেস ধরে এগোয়।

    ইফটে কাজ করা নিয়ে মনে পড়লো ১৯৯৯-২০০০ এ আর এস সফটওয়্যারে আমরা ৩ শিফটে কাজ করতাম। সকালের শিফট শুরু হত সকাল ৭টায়। তো তখন আর এসের নিজস্ব বিল্ডিঙ মাত্র একটা ছিল, বসার জায়গা প্রায় নেই, অতএব একই পিসিতে ৩ শিফটে কাজ হচ্ছে। মাঝেমাঝেই এসে দেখতাম আগেরদিনের ঠিক করে যাওয়া কোড আবার ভুল হয়ে গেছে। ;-D আর সে সেই ৮৪০০০ লাইনের কোবল কোড।
    উফ্ফ ভাবলেও আতঙ্ক হয় এখন।
  • অর্জুন | 236712.158.786712.167 (*) | ১৯ আগস্ট ২০১৯ ০৬:২৮49322
  • @cd জানতাম না। লেখা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে নাচ দেখারও ইচ্ছে রইল।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আদরবাসামূলক প্রতিক্রিয়া দিন