বেড়িয়েছিলাম । ঠাকুর দেখতে নয়, উৎসবে পরিবেশের হাল কেমন, সেটার খোঁজ নিতে। বাড়ির কাছেই, সোনারপুর অঞ্চলে।রাস্তায় বড় বড় তোরণ, কিছু পরে পরেই। ফ্লেক্সে মোড়া। মোড়ে মোড়ে ফ্লেক্সের বিশাল বিশাল বিজ্ঞাপনী ব্যানার। ফ্লেক্স non-biodrgradable, অপচনশীল। দিন পাচ-সাত পরেই এই বিপুল পরিমাণ ফ্লেক্সের কী গতি হবে, ভাবলেই আশঙ্কা জাগে।কয়েকটা পুজো মণ্ডপে উঁকি দিলাম। সুন্দর কারুকাজ। কিন্তু মণ্ডপসজ্জার উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে থার্মোকল, যার পোষাকী নাম Styrofoam । বস্তুটা অপচনশীল, পুনর্ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই। কী না তৈরি হয়েছে এই বিপজ্জনক বস্তুটি দিয়ে। এক মণ্ডপ রয়েছে শত খানেক শিবলিঙ্গ । প্রায় সমান মাপের, দেড়-দু ফুটের। কোনো শিবলিঙ্গই ঢালাই করে বানানো না । অর্থাৎ ... ...
১ঢাকি,ঢাঁই কুরা কুর তাক বোলে,শাক দিয়ে মাছ ঢাক;কাঁসর ঘন্টা বাজিয়ে মন্ত্র-হচ্ছে চিচিং ফাঁক।২নমঃ বাবাজি,ওই ঝোলার মধ্যে কি?চুপ-চুপ-চুপ-চুপ, দুটো মোরগ পুষেছি!একটা ঘোর নিরামিশাষী,অন্যটা আমিষঠ্যাঙে বেঁধে দিলে ছুরি একসাথে ফিনিশ।
মনে পড়ে যায় শৈশবের সেই দিনগুলি, আমার উমা দিদির আঙুল ধরে হেঁটে যাওয়া এক মণ্ডপ থেকে আরেক মণ্ডপে পায়ের ফোস্কা নিয়ে, কিন্তু মুখে লেগে থাকত কিছু হয়নি অভিনয়ের প্রলেপ। তবে ফিরতে হোতো উমা দিদির ঘাড়ে চেপেই, ফাঁকি কি দেওয়া যায় উমা দিদির চোখকে। মনের আলমারিতে নাড়া দিয়ে স্মৃতির দুয়ারে ভেসে আসে সেই ছোটবেলার দুষ্টুমির কথা - অঞ্জলির ফুল ছুঁড়ে দেওয়ার কথা, শিউলির পাপড়ির লেখা সেই মেঘবালিকার হলুদ্রাভ পিঠে লেগে থাকার কথা, পিছন ফিরে সেই আড়চোখে তার মিষ্টি চাউনির কথা।মনে পড়ে শরতের ঘুঘু ডাকা দুপুরের একফালি নরম রোদে বসে, মায়ের পাকা চুলে বিলি কাটতে কাটতে দিদি মিঠে বুলিতে শোনাত পুস্পাঞ্জলি, ভোগের খিচুড়ি ... ...
আজ মহাসপ্তমী। তাই কাকভোরে উঠেছি। কলাবৌ স্নান দেখব বলে গঙ্গার ঘাটের দিকে চলেছি। হঠাৎ নাড়ুমামার সাথে দেখা। মুখচোখ দেখে মনে হল খুব ক্লান্ত। জিজ্ঞেস করলাম, এত ভোরে কোথা থেকে..? বলল, আর বলিস না। উত্তরবঙ্গ থেকে একেবারে বিজয়া সেরে ফিরছি। আমি অবাক হয়ে বললুম, মানে?শুনে নাড়ুমামা বলল, সেকি রে, তুই জানিস না! উত্তরবঙ্গে তো গতকালই দশমী হয়ে গেছে। ধুস। কি যে বলো না ছাই। কিছুই বুঝছি না। আজ সবে সপ্তমী পড়েছে। আর তুমি বলছ দশমী হয়ে গেছে!আরে, ওখানে দুগ্গা আসার আগেই মণ্ডপের উদ্বোধন হয়ে গেছিল। তাই আগেভাগে দশমীটাও কাল সেরে নিল। আমি তো শ্বশুরবাড়ি ছিলাম। তাই গতকাল বিজয়াটা একেবারে সেরে-ই ফিরলাম। তোদের এখানে এখনো ... ...
ফিরে আসে বার বারলেখিকাঃ পল্লবী সেনগুপ্তপ্রকাশকঃ পত্রভারতীপাঠ প্রতিক্রিয়া বইটি কেনার মূল এবং একমাত্র ভাবনা ছিল, মহাভারতের কথা, নতুন প্রজন্মের সাহিত্যিকের নজরে জানা এবং খোঁজা। পল্লবী দেবীর কোনও রচনা আমার পড়া ছিল না, এটাই প্রথম। এক বেলাতেই পড়া শেষ হয়ে গেল। বইটির ব্যাক ফ্ল্যাপে পড়লাম, লেখিকার গল্প শর্ট ফিল্ম এবং ওয়েব সিরিজের জন্য নির্বাচিতও হয়েছে। বর্তমান বইটিও যেন তিনি চিত্রনাট্যের রূপেই বোধহয় লিখতে চেয়েছেন। পাশাপাশি তিনটি ভিন্ন পরিবেশের মানুষ এবং চরিত্র নিয়ে তার রচনার বিস্তার। তা কখনও ৫০০০ বছর আগে, দ্বাপরের শেষ পর্বে, কখনও আজকের দিনে - কলকাতায়? কখনও উত্তরাখন্ডের গন্ডগ্রাম পাউরিতে। যদিও কলকাতা স্পষ্ট করে বলা নেই কোথাও। সুপার লং শট, তারপর ডিরেক্টরের কাট, ফোকাস ... ...
শেষমেশ পুজো এসেই গেল । কোভিডের দাপটে গত দুই বছর পুজোপর্ব প্রায় ভোগে যাবার দশাই হয়েছিল । গত দুই বছর তো এমন হাল হয়েছিল যে মরবো নাকি বেঁচে থাকবো সেটা নিয়েই বেশ সংশয়ে ছিলাম । এবারের কোভিড আরো জবরদস্ত কায়দায় আক্রমণ শানাবে বলে বার্তা " রটি গেল গ্রামে গ্রামে ।" কিন্তু দেখা গেল যা রটেছিল বাস্তবে তার টিকি বা সিকিমাত্র দেখা যায়নি । ইতিমধ্যে সম্ভবত অজান্তেই আমাদের লাইফ স্টাইল বেমালুম পাল্টে গেছে । মাস্কের ব্যবহার প্রায় তলানিতে এসে পৌঁছেছে । কিছুটা হলেও বাজারে যাবার প্রবণতা তুলনামূলকভাবে কমেছে । চাল-ডাল-তেল-নুনসহ ব্যবহার্য সমস্ত সামগ্রী আপনার স গতর সামান্যতম না নড়িয়েই দিব্যি ... ...
যেখানেই থাকুক, দুর্গাপুজোর সময় পলাশ ঠিক চলে আসে তাদের বসতবাড়িতে। সেই ১৯৫৪ সালে পলাশের দাদুভাই শুরু করেছিলেন উমা'মায়ের সপরিবারে আমন্ত্রণ ওনার বসতবাড়ির পুজোমণ্ডপে, স্বপ্নাদেশ পেয়ে - আজও তা অব্যাহত ৬৯ বছর ধরে। দাদুভাইয়ের এক ভোরের স্বপ্নে দেখা দিলেন স্বয়ং উমা'মা। ইচ্ছাপ্রকাশ করলেন সবার মাঝে কয়েকদিন কাটিয়ে যাওয়ার।আমাদের ঠাকুমা কিংবা মা-কাকিমা-পিসিমাকে 'দুর্গা-মা' উচ্চারণের অধিক 'উমা' উচ্চারণ করতে শুনেছি। এই 'উমা' যেন মা-কাকিমা-পিসিমাদের কাছে অনেক বেশি ঘরের মেয়ে কিম্বা মা হয়ে উঠেছেন। আর কোনো দেবদেবীকে বোধহয় এমন পারিবারিক হয়ে যেতে দেখিনি। 'উমা' যেন আমাদের ঘরের মেয়ে কিংবা মা, তাঁকে দেখে অনেক বেশি আপনার মনে হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯২৯ সালে মহালয়ার দিনেই ‘পথের ... ...
সেই অর্থে আমি রিভিউকারী নই। সাপ্তাহিক বর্তমানে আমার জানাশোনা এক দাদা একটি গল্প লিখেছেন - সেটি পড়ার জন্য খবরের কাগজওয়ালাকে বলে কয়ে ৩০-শে সেপ্টেম্বরের সাপ্তাহিক বর্তমানটা হাত করি। অরুণাচল দার "নিখোঁজ" সত্যিই এক অদ্ভুত গল্প। কি বলা যায়, আধি ভৌতিক না'কি প্টারের দুনিয়ার ম্যাজিকের দুনিয়া। আমরা যারা পড়ছি, তারা হলাম মাগলুরা। লেখা একেবারে স্বচ্ছ্ব এবং কল্পিত হলেও, একেবারে মাখনের মত স্মুদ। কোথাও কষ্ট কল্পনা মনে হয় না। তবে চমকে দিয়েছেন তিনবার। সেই অজানা স্টেশন থেকে অজানা ট্রেনের যাত্রাপথে, বাথরুমের মধ্যে দুব্যাগ ভর্তি হাড়! ডাক্তার মানুষ ছাড়া, কল্পনার এই সীমায় কেউ সহজে পৌঁছাতে পারবেন না, হলফ করে বলা যায়। এমন গ্রাম ... ...
এক বড় বসকে ছেলেটা খুবই ভোগাচ্ছে কদিন ধরে। বড় বস অর্থে, প্রত্যয়ের পরিচয় সে এই অফিসের একজন ডেলিভারি ম্যানেজার, যার দায়িত্বে অনেক ছোট ছোট দলে সব মিলিয়ে প্রায় ১০০ জন কাজ করে । যাদের মধ্যে একজন এই ছেলেটা, শান্তনু । অর্থাৎ বুঝিয়ে বললে প্রত্যয় শান্তনুর ম্যানেজারের ম্যানেজার। যখন মিটিংরুমে সবাই গম্ভীর মুখে প্রত্যয়ের কথা শোনে, শান্তনু এককোণে চেয়ারে বসে ঝিমোয়। সবসময় তার মধ্যে একটা ঘুম ঘুম ভাব, একেবারেই সিরিয়াস না। মাঝে মধ্যে বৃষ্টি হলেই অফিস ডুব দেয়। পরদিন ধরলে বলে, "বৃষ্টি পড়ছিল তো, তাই আসতে ইচ্ছে করেনি। বাড়িতে বসে বৃষ্টি দেখলাম, তেলেভাজা আর চা খেলাম।" ক্যান্টিনে শান্তনু তার টিমেরই অনিন্দিতার সঙ্গে ... ...
এই বছরের আশ্বিন মাসের, বাঙালির এই বাতসরিক অনুষ্ঠান আমার জন্য অভুক্তের সামনে খাদ্য সামগ্রীর অঢেল উপস্থিতির মত ছিল। কাজের গুঁতোয়, গত ৪০-টা বচ্ছর বাইরে বাইরে কাটিয়ে, এবার নিজের ঘরে ফিরি। তাই মহালয়া থেকে এক দুরু দুরু অপেক্ষা নিয়ে দিন গুণছিলাম। কিন্তু হতাশ হলাম। কলকাতার পূজো হয়তো জাঁক জমক আর আকারে প্রকারে বিরাট হয়ে উঠেছে - বিশেষত তকমাধারী হবার পরে। তা বলে মায়ের রূপও পালটে দেবে? বন্ধু বান্ধব আর প্যান্ডেল হপিং করে বেড়ানো কিছু উৎসাহী পরিচিতের পাঠানো হোয়াটস অ্যাপ ছবিতে, মা-কে বেশির ভাগ মন্ডপেই, অ্যালিয়েন রূপে দেখতে পাচ্ছি। মায়ের এ রূপ আমি জানি না, পড়ি নি, বীরেন বাবুর বর্ণনাতেও পাই নি। এই কি আমাদের ... ...
একা একা পথ চলতে আর লাগছে না ভালো।এবার তো আমার জীবনে মনের মতো কেউ আসো।।এই নাছোড় ছাড়া মনটাকে কেউ তো নিজের প্রেমে বাঁধো।।নিজের মনে করে এবার কেউ তো আমায় ভালোবাসো।।আগাম দিনের বার্তা নিয়ে কেউ তো পায়ে পায়ে পথ চলো।আমার যে এখন লাগছে একা একা। কেউ তো আমার সুখে দুঃখে হাঁসো। -দীপঙ্কর সাহা (দীপ) ... ...
"পৌরাণিক ভস্ম থেকে উঠে আসে বেদনার পাখি বিবর্ণ প্রজাপতি ছুটে যায় কালো জল নদীটির কাছে অস্তমিত সব কথা অতীতের নিবিড় অতলে ঘুমিয়েছে আমাদের অন্তর্গত অলীক শহর"পাপা, ক্যান আই টেল ইউ এ্যা স্টোরি অব ডগ।আমি কলম সরিয়ে রাখলাম, গভীর মনোযোগে তাকালাম মেয়ের দিকে। আধো আধো কথা তার। বোঝা না-বোঝার এক আশ্চর্য পৃথিবীতে বসবাস সদ্য খেলতে খেলতে পড়ালেখা শেখার চেষ্টা করা শিশুটির।সস্নেহে বললাম, বলো মা।ওয়ানস আপঅন এ্যা টাইম। থিংক, ইটস এ্যা মিলিয়ন ইয়ার এ্যাগো। দেয়ার ওয়াজ এ্যা ডগ। ওহ! নো! সরি! নট ডগ পাপা। এ্যা নাইস হটডগ দেয়ার।বাংলায় বলো মা গো। বাংলা তো তুমি পারো, তাই না!অফকোর্স আই ক্যান পাপা। ওকে, দেন ... ...
কলতান ভাবল , মিসেস দত্তকে সরাসরি জিজ্ঞাসা করে, তার কলতানের কাছে আসার উদ্দেশ্য কি । যেসব কথা বলছে, সেসব তো সে আগেই জেনে ফেলেছে । সে প্রিয়দর্শিনীকে একটা খোঁচা মারল, ' সতীনাথবাবুর ব্যাপারে কি ভাবছেন আপনি ? 'এবার আর কোন হেঁয়ালি করলেন না ভদ্রমহিলা । প্রাঞ্জল ভাষায় বললেন , ' ওর ব্যাপারে আর ভাবার কি আছে । ইহকাল পরকাল সবই তো গেছে । আর আমার জীবনেরই বা আর কি আছে ? মেয়েটার ভবিষ্যৎ যদি সুখের হয় সেটুকুই কামনা .... ' ------ ' হ্যা ...... সে তো ঠিকই .... কিন্তু নেকলেসের সমস্যাটার তো সমাধান করতে হবে..... আপনার কাছে কো-অপারেশান চাইতেও সংকোচ বোধ ... ...
নীরবতা ভাঙলে বলটা ইংরেজদের কোর্টে-পালাইনি তো; গাছে তুলে মই নিয়েছে কেড়ে! সম্বিৎটা ফিরলে বোঝে বুদ্ধিটা কার ঘটেকোটি কোটি মহাত্মা কি আর কখনও ফেরে!?
কলতান সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দিল না । পরের দিন সকাল পর্যন্ত মুলতুবি রাখল চিন্তাভাবনা করার জন্য । তার গোয়েন্দা মন জানে, অত সহজে কাউকে বিশ্বাস করা যায় না । একজন বিবাহিতা মহিলা একা আসতে চাইছে প্রকাশ্য স্থানে কিছু বলবার জন্য এটা শিশুসুলভ সরলতায় গ্রহণ করাটা অবিমৃশ্যকারিতা হতে পারে । তাছাড়া দেখা যাচ্ছে ভদ্রমহিলা নিউ হরাইজনের কথা জানেন । এখানেই ব্যাপারটা আরও জটিল লাগছে । হয়ত তিনি মহুয়া মিত্রের ব্যাপারটাও জানেন । প্রিয়দর্শিনীকে ফোন করাটা ওনার পক্ষে নিরাপদ হবে কিনা বলা মুশকিল । তাই ভোরবেলায় কলতান প্রিয়দর্শিনী দত্তকে একটা মেসেজ পাঠাল ----- "বেটার টু মিট অ্যট মাই প্লেস ইফ পসিবল ফর ইউ, ... ...
সন্ধে ছটা নাগাদ কলতান বৌবাজার থানায় ঢুকল । বিদ্যুৎ থানায় ছিল ।----- ' আরে কলতানদা..... আসুন আসুন .... আপনার জন্যই ওয়েট করছিলাম ....খুব ঘেমে গেছেন ..... কোল্ড ড্রিঙ্কস আনাই ? ' কলতান রুমাল বার করে ঘাম মুছতে মুছতে বলল, ' আনাও .... আনাও .... সারাদিন প্রচুর প্রেসার গেল ...... 'বিদ্যুৎ একজনকে ডেকে দুটো ঠান্ডা বোতল আনতে দিল । ----- ' তারপর ....... বালীগঞ্জ অপারেশান সাকসেসফুল ? '---- ' হ্যা .... যে উদ্দেশ্যে গিয়েছিলাম সেটা করে আসতে পেরেছি । সতীনাথবাবুর এ ব্যবসায়ে কোন অংশীদারিত্ব নেই । তিনি তার দাদার অধীনে দোকানের ম্যানেজার স্তরের কিছু ... আর কি ..... এবং যে কারণেই ... ...