মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন লিখিত রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি বইটির আলোচনা। ... ...
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন লিখিত রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনো খেতে আসেন নি নামক বইটির আলোচনা। ... ...
MistBorn-এর লেখক Brandon Sanderson-কে নিয়ে পরে বিশদে আলোচনা হবে (প্রচণ্ড ইন্টারেস্টিং ক্যারেকটার মশাই – লালমোহন থাকলে হয়তো ‘হাইলি সাসপিশাস’-ও বলতেন), কিন্তু ওঁর একটা ক্ষমতা নিয়ে অল্প-কথা এই জায়গায় বলতেই হচ্ছে – তা হল ওঁর অসাধারণ ম্যাজিক-সিস্টেম তৈরি করার ক্ষমতা। এই বিশেষ বইটিতে যে সিস্টেমটা ব্র্যান্ডনবাবু বানিয়েছেন, তার নাম অ্যালোমেন্সি। ব্যাপারটা ঠিক কি, তা নিয়ে একটি শব্দও আমার খরচ করার দরকার নেই – বইয়ে বিশদে আছে। এতটাই ডিটেলে, যে এই ধরণের সিস্টেমের অন্তর্গত সামঞ্জস্য সম্পূর্ণ ঠিকঠাক আছে কিনা, তা নিয়ে এদের জন্যে নিবেদিত রেডিট-পাতায় মাইলের পর মাইল তক্কো চলে। ... ...
রিভিউ এর আগে কখনো লিখিনি। সিনেমার রিভিউ লেখার যোগ্যতা আমার এমনিতেও নেই, কিন্তু বই এর রিভিউও লিখিনি কখনো। তাহলে হঠাৎ এই চেষ্টা কেন? কারণ মূলতঃ দ্বিমুখী। প্রথমতঃ এই বইটা আমার নিজের খুব ভাল লেগেছে, কিন্তু সেভাবে আলোচিত হতে দেখিনি – এর দুরকম কারণ হতে পারে বলে আমার মনে হয়েছে – হয় বইটা লোকে বিশেষ পড়েনি, অথবা পড়ে খুব একটা ভালো লাগেনি। এবং দ্বিতীয়তঃ, যদিও এটা কিছুটা রিলেটেড, আমি কয়েকটা রিভিউ পড়লাম, যেগুলো সবই নেগেটিভ রিভিউ – তো আমার মনে হল আমার যে ভাল লেগেছে, সেটা ডকুমেন্টেড করে রাখি। ও হ্যাঁ – বইটা। এক ... ...
যাই হোক খেলা চলছে। হাবিব, আকবর, শ্যাম - গো - ও - ও - ল। মা আমাকে জাপটে ধরে বলল, ওরে পেলের দলকে থাবড়া দিয়েছে শ্যাম থাপা। মায়ের কথা ডুবে গেল বাইরে পটকার আওয়াজে। মার মুখে এমন ভাষা আর আচরণ আমি এর আগে বা পরে কখনোই দেখিনি বা শুনিনি। মা বাগবাজারের নিবেদিতা ইস্কুলের শিক্ষিকা, সংযমী, রাশভারী। তখন অবশ্য এসব ভাবি নি। ছ বছরের আমি আর চারবছরের বোন, শ্যাম থা - পা, শ্যাম থা - পা বলে বলে তিড়িং বিড়িং নেচে নিলাম খানিকটা। রেডিওর ওধারে ইডেনেও মারকাটারি যুদ্ধ চলছে, আর এধারে দুই নারী, দুই শিশুর হৃদপেশীর কম্পন চলছে সেই যুদ্ধের তালে। একটু পরে আবার মোহনবাগানের গোল। ... ...
আমি অসৎ হলে বলতাম ওর গায়ের রং ছিল আবলুশ কাঠের মতন কালো। কিন্তু আমি সৎ, আর আমি জীবনে আবলুশ কাঠ দেখিনি। অনিতার গায়ের রং কালো ছিল নিঃসন্দেহে, তবে ওরকম কালো শেডের কাঠ আমি কখনো দেখি নি। ... ...
মায়ের কথাগুলো মনে পড়ে - মোহনবাগান একটা আদর্শ, আমাদের পূর্বপুরুষদের অনেক আশা আর স্বপ্ন নিয়ে গড়া যখের ধন, ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতীক, আমাদের অস্তিত্ব। মোহনবাগানের হারজিত, আর আমাদের জেতা হারা এক। সেদিন না বুঝলেও, এবারে একটু একটু বুঝতে পারছি। মোহনবাগানের প্রথম দিকের দলের একটি নাম নিয়ে আমি খুবই আগ্রহী। ইনি কে? সেই নামটি হল দ্বিজেন্দ্রনাথ বসু। ... ...
গোয়েন্দা কাহিনী এবং গোয়েন্দাকে কেমন করে চিনবেন। ... ...
আমার বাবা আজিজ মেহের (৮৬) সেদিন সকালে ঘুমের ভেতর হৃদরোগে মারা গেলেন।সকাল সাড়ে আটটার দিকে (১০ আগস্ট) যখন টেলিফোনে খবরটি পাই, তখন আমি পাতলা আটার রুটি দিয়ে আলু-বরবটি ভাজির নাস্তা খাচ্ছিলাম। মানে রুটি-ভাজি খাওয়া শেষ, রং চায়ে আয়েশ করে চুমুক দিয়ে বাবার কথাই ভাবছিলাম।আজ তাকে কাছেই সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। দুদিন আগে তিনি পর পর তিনবার বাথরুমে পড়ে গিয়েছিলেন। ৮৬ বছর বয়সে এই প্রথম তার পা ফস্কে গেল। নইলে এতো বছর ধরে সব কাজ তিনি একাই করেছেন। অস্বাভাবিক প ... ...
বিলাসপুর সেন্ট্রাল জেল। দুটো রাত কেটে গেছে। ঘুম হয় নি। দেয়ালে পিঠ দিয়ে বসে ছিলাম। দিদি আমার কাঁধে মাথা রেখে একটু ঝিম মেরে রয়েছিল। আমরা খুনি নই, নিজের গায়ে চিমটি কেটে দেখেছি -- এটা সত্যি না ব্যাড ড্রিম। আনফরচুনেটলি সত্যি। একেবারে কাফকা মার্কা। পিজি ক্লাসে কাফকার ‘দি ট্রায়াল’ পড়াই। কখনও ভেবেছি এইরকম কাফকেস্ক অভিজ্ঞতা আমাদের দু’বোনের কপালে জুটবে? আমরা দুই বোন, সংস্কৃত সাহিত্য ও ইংলিশ লিটারেচারে ডক্টরেট, তাও শান্তিনিকেতন থেকে — আমরা আজ ছত্তিশগড়ের জেলে আন্ডার ট্রায়াল প্রিজনারদের সেকশনে বন্দী! খুনের দায়ে, ভাবা যায়? আমাদের মোবাইল পর্য্যন্ত চালাকি করে বুড়ারে সেই মোটা মত লোকটা পরীক্ষা করার অজুহাতে সীজ করে নিয়েছে। ... ...
পৃথিবীতে কিছু শিশু নানান ধরনের সমস্যা/অক্ষমতা নিয়ে জন্মায় এবং বড় হয়। যাদের আমরা "বিশেষ শিশু" বলে থাকি। তাদের সম্পর্কিত বিষয়ে ইংরাজী ভাষার বইপত্তর থাকলেও সহজ বাংলায় তার বেশ অভাব। যেটুকু আছে তাতে সবসময় সব সঠিক তথ্যও থাকে না। নিজের বহুবছরের অভিজ্ঞতার নিরিখে এবং এক শুভান্যুধায়ীর অনুপ্রেরনায় নানান ধরনের সমস্যা/অক্ষমতা নিয়ে সহজবোধ্য ভাবে কয়েকটি পর্বে ধারাবাহিক হিসেবে লেখার প্রচেষ্ঠা করেছি৷ আজ প্রথম পর্ব৷ ... ...
এত বছর পর গতমাসে ফোনে শিবুদার গলা শুনে অবাকই হয়েছিলাম! যোগাযোগ নেই প্রায় সিকি শতক! সে বছর মাঝ শ্রাবণে ভাসতে ভাসতে ভাসতে এসে পৌঁছেছি মহানগরের স্নায়ু কেন্দ্রে। ঠাঁই নাড়া হবার পর সেই আমার নতুন ঠিকানা! সেখানে হাত বাড়ালেই প্রসিদ্ধ স্মৃতি-সৌধ, গির্জাঘর, ঝাঁ-চকচকে রাস্তা, কৃষ্টি-কেন্দ্র আর অজস্র-ধারা-বৃষ্টির মতন মানুষ! শিকড় সমেত উপড়ে এনে আমাকে বলা হয়েছে, ডালপালা ছড়াও হে, এই তোমার নতুন আকাশ! ... ...
সুবীর কুমার বসুকে কেউই চিনবেন না। সুবীর বসু কখনো কখনো আমার সঙ্গে বিকেলে হাঁটতে বেরোতেন। শেষ বয়সের কুঁচকে যাওয়া, চকচকে চামড়া, টলোমলো পা। হাত ধরে ধরে কিছুটা নিয়ে গিয়ে ফিরিয়ে আনতাম আবার। যাওয়াতেও যে তাঁর খুব আপত্তি ছিল, এমন নয়; আবার ফিরেও আসতেন লক্ষ্মী হয়ে, কিচ্ছুটি না বলে। ... ...
রিহার্সাল দিতে দিতে একদিন নূপুর বললো, নাটক করতে গেলে তো গয়না কিনতে হবে - চলো চাঁদা তুলি। ক্লাসের মেয়েরা কতো আর চাঁদা দেবে, তবু কেউ কেউ দিল। সামান্য সেই টাকা নিয়ে নূপুর আমাদের কয়েকজনকে নিয়ে এলো শহরের বড় ইমিটেশন গয়নার দোকানে। মালিক খুব সস্নেহ ব্যবহার করছিলেন কিন্তু নিজে নিজে গয়না কেনার উত্তেজনায় আমরা কী করে যেন শোকেসের কাঁচ ভেঙে ফেললাম। উনি আর কী করেন, বললেন স্কুলে জানাবেন। উপায়ান্তর না পেয়ে যৎপরোনাস্তি ভীত সন্ত্রস্ত আমরা সবাই গিয়ে দিদিমণিকে বলতেই দিদিমণি ক্ষোভে দুঃখে অস্থির। নূপুর কি করেছো, উইদাউট পারমিশন সরকারি স্কুলে চাঁদা তুলেছো। আমার মানসম্মান জলে গেল, বেআইনি কাজ করেছো তোমরা ইত্যাদি ইত্যাদি। ঐসব নিয়ে একপ্রস্থ লাঞ্ছনা গঞ্জনা হলো। ... ...
ধরে নাও, সমুদ্রতীরের কোনও শহরে আমার আর তোমার দেখা হয়ে গেল, বহুদিন পর, প্রথমবারের মতো। দু'জনেই অন্তরে বেশ অবাক, কিছুটা ক্ষুণ্ণই হলাম একে অন্যকে ভালো থাকতে দেখে, কারণ, আমরা তো ভাবিনি ভালো থাকবে অন্যজন আমাদের ছাড়া। ভালো তো কারুরই থাকার কথা নয়, ভেবেছিলাম, কারণ প্রত্যেকে কারুর সঙ্গে যেমন আছে, কাউকে ছেড়েও তো আছে? তাই মুখে শুধু বলি, "ভালো তো? কতদিন পর...!" ... ...
একদিন বিবিসিতে দেখলাম, দুটো প্লেন মিলে ১১০ তলার দুটো বাড়িকে মাটিতে মিশিয়ে দিল। লো-অ্যাঙ্গেলে ক্যামেরা রাখা। তাতে বারবার ধরা পড়ছে, কালো আর ছাই-ছাই ধোঁয়ায় ঢেকে যাচ্ছে আমেরিকা, বিল্ডিংদুটো রংমশালের ফুরিয়ে আসার মতো নেমে আসছে। ... ...
অপরাজিত মুক্তিপ্রাপ্তির সময় চলে নি। পরবর্তীতে ভেনিসে গোল্ডেন লিও জেতার পর আবার একবার মুক্তি পায় যতদূর শোনা যায়, তাও চলে নি। ... ...
কোনো চাকা আবিষ্কার, বড়শির হুক আবিষ্কার, এমনকি আগুন ব্যবহার করতে শেখার জ্ঞান থেকেও এই সভ্যতার যাত্রা শুরু হয়নি, অপরকে সাহায্য করবার মন-মানসিকতা তৈরি হওয়া থেকেই শুরু হয়েছে এই যাত্রা। ঠিক এভাবেই অপর সম্পর্কে উদাসীনতাই যে এই যাত্রাভঙ্গের কারণ হয়ে দাঁড়াবে, সে বিষয়েও কোনো সন্দেহ নেই আজ আর। ... ...
পাহাড় থেকে ভূমিপুত্ররা বেচতে আসে জুমের ছোট্ট আর গোলদানার লালচে চাল। বড় সোনালি রঙের পাথরবাটি যেটি দুপুরুষ আগে দ্বারকায় তীর্থ করতে গিয়ে কেনা হয়েছিল তার ওপর নূতন ধোয়া জলগামছা বিছিয়ে গরম ভাত বিছিয়ে দিয়ে তার ওপর জগন্নাথ দীঘির মিষ্টি জল ঢালবেন। গন্ধরাজ লেবুর ষোলটা পাতা ষোলটুকরা লেবু দিতে হবে।পরের দিন সকালে নারকেল কোরা ছড়িয়ে ছেঁকে নেওয়া পান্তা ভাতের সঙ্গে কাঠের খুন্তি নেড়ে মিশিয়ে দিতে হবে। গুড়ের ডেলা সাজানো থাকবে কালো পাথরের রেকাবীতে।লাল শাকের টক,গাঁঠিকচু আর সর্ষেপোস্ত,তিল বাটা তিলের মুচমুচে বড়া। আর আছে কাঁচা তেঁতুলের টক। শেষ পাতে আমআদা দিয়ে নারকেল বাটার সন্দেশ। কয়েকদিন ধরে যোগাড়যন্ত্র করে ঠাকুমা ব্যতিব্যস্ত। ... ...
প্রায় মাধ্যমিক পর্যন্ত প্রফেশ্যনাল ম্যাসাজের বলতে আমার দৌড় ছিল ওই সিধু জ্যাঠা অবদিই। বাড়ির উঠোনে সেই সকাল থেকে বাড়ি শুদ্ধু পাবলিকের দাড়ি, চুল কাটা চলছে। প্রথমেই বাবার দিয়ে শুরু, বাবা দাড়ি কেটে নিমো ফটকগোড়ায় নারানের চায়ের দোকানে রোজকার প্রাতঃকালীন আড্ডায় চলে গেল। কাকা রবিবার ছূটির দিনে দাড়ি ইত্যাদি কেটে একবার গেল চাষের জমিতে রাউন্ড মারতে, সে রাউন্ড মারা অবশ্য সিম্বলিকই ছিল। কাজের কাজ বলতে কাকা মাঝে মাঝে জমি থেকে গোটা কতক মূলো তুলে এনে বলত, মূলো গুলো খাবার মত হয়ে গ্যাছে, মুড়ি দিয়ে খাব বলে নিয়ে এলা ... ...