অনুপম মুখোপাধ্যায় : বিবেকানন্দের জন্মদিন.
আজ বিবেকানন্দের জন্মদিন। আজ কিছু অজ্ঞ লোকের কাজ তাঁর ফটো খোঁজা আর কিছু 'বিপ্লোবী' বাঙালির কাজ তাঁর ফুটো খোঁজা, অর্থাৎ তাঁকে খিস্তি দিয়ে কিছু লাইক কুড়িয়ে পেটপুরে খাসিমাংস-ভাত খেয়ে দুপুরে একটা তোফা ঘুম দেওয়া।
.
আজ একাধিক পোস্টে দেখা যাবে বিবেকানন্দের মধ্যে স্ববিরোধ আছে। আচ্ছা! স্ববিরোধ নেই এমন একজন মনীষীর নাম করুন তাহলে! শ্রীকৃষ্ণ, যিশু, মার্ক্স, লেনিন, গান্ধী, এমন কি কিয়ের্কেগার্দ, তলস্তয়, দস্তয়েভস্কি, কাফকা, ফ্রয়েড, পিকাসো, মার্কেস, রুলফো, লাঁকা, ফুকো, দেরিদা, বাখতিন, বদ্রিলার একটা নাম তো করুন, যাঁর মধ্যে স্ববিরোধ নেই!
.
স্ব থাকলেই বিরোধ থাকবে। স্ব না থাকলে থাকবে না। যাদের মধ্যে 'স্ব' আজন্ম ঘুমিয়ে আছে তারাই যখন বিবেকানন্দের সম্পর্কে অশালীন বাগাড়ম্বর করে, খুব করুণ দৃশ্যের সূচনা হয়।
মেয়েদের নিয়ে না কি তাঁর কথাবাত্রা খুব আপত্তিকর? বেশ। এ বিষয়ে সিস্টার নিবেদিতা একমত ছিলেন কি না বলতে পারি না। ১৯শ শতকের একজন মনীষীর নাম বলুন যিনি মেয়েদের ব্যাপারে আজকের মেয়েদের ক্ষেত্রে খাটবে এমন কথা বলে গেছেন! আজকের মেয়েদের পরিস্থিতি তাঁরা জানতেন না। কাজেই বলা সম্ভব ছিল না তাঁদের পক্ষে। আজকের পলিটিক্স তাঁরা জানতেন না। আজকের নোংরামি তাঁরা জানতেন না। আজকের প্রগতি তাঁরা জানতেন না।
.
বিবেকানন্দ কিন্তু নস্ত্রাদামুস ছিলেন না, এটা ভুলে যাচ্ছেন। বিবেকানন্দ সায়েন্স ফিকশন রাইটার ছিলেন না!
যাঁরা বিবেকানন্দের ফুটো খুঁজছেন, তাঁদের মধ্যে স্ববিরোধ নেই তো? নেই নয়। আছে। চোখে পড়ে না। কারণ তাঁরা অতি ক্ষুদ্র। কীটানুকীট। বিরাট হলেই স্ববিরোধ থাকবে। পাহাড় হলেই তার একটা অংশের সঙ্গে আরেকটা অংশ মেলাতে দর্শককে অনেক ভাবতে হবে, বিভিন্ন ক্ষেত্র কাল ও পরিস্থিতি অনুসারে বিচার করতে হবে। সেটাও এঁরা পারবেন না। কারণ ব্যাকটিরিয়ার চোখে মাইক্রোস্কোপ লাগে না। ব্যাকটিরিয়াকে দেখতে মাইক্রোস্কোপ লাগে। এঁরা এক-একটি ভয়াবহ ব্যাকটিরিয়া।
.
মাইক্রোস্কোপ লাগালে দেখা যাবে এঁদের কারও কারও মুখে বাতেলাবাজির জন্য একটা মাইক্রোফোন ঠিকই লাগানো আছে। সেটা ব্যাধি ছড়ানোর কাজে লাগে, মহাশয়।।
.