এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  অপার বাংলা

  • রামকে খোলা চিঠি 

    তামিমৌ ত্রমি লেখকের গ্রাহক হোন
    অপার বাংলা | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ৩৭৬ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • রামকে খোলা চিঠি
    তামিমৌ ত্রমি 

    রাম, তোমার ঠোঁটে ঠোঁট বিছিয়ে রাখতে চেয়েছিলাম। বটবক্ষে মাথা। নাভিতে তব নাসিকারথচূড়া ঠেকিয়ে আস্বাদন করতে চেয়েছিলাম উদ্ভিন্ন অন্ধকার। প্রিয়তম রাম! তুমি উজিয়ে উঠলে অঙ্গে ময়ূর বন্য বেজে ওঠে মোর। আরো নীচে, আরো গভীরে অলঙ্কৃত রিক্ততা ছিঁড়ে নিজেদের ছালচামড়ায় গোক্ষুরা চিহ্ন এঁকে রাখার কথা লিখে ফেললে শালগ্রাম না আবার  জীবাশ্ম হয়ে যায়!  ছলছলছলছলছলছল।  
    সমুদয় বালতি উজাড় হয়ে গেলেও ঠোঁটদুটো ফাঁক করে তোমার সম্পর্কে দুটো কথা বলার উপায় নেই। তোমাকে ভালোবাসি বলতেও ভয়, না বলতেও ভয়।
    অথচ.. 

    এই নিভৃত নুন জলে একটি দাঁড়ি বসার কথা ছিল তীব্র,তাই না? তুমি আমার মহাকাব্যের নায়ক। সম্পর্ক তো একান্ত তোমার আর আমার। কেন কোন তালেবর তোমার আর আমার মাঝখানে ভাদ্র ভ্রুকুটি পাকিয়ে তুলবে?

    তুমি ছোটবেলা থেকে আমার নি:শ্বাসে প্রশ্বাসে। তখন তোমাকে ভালোও লাগত না, মন্দও লাগত না। যেমন ভাত।রোজ খেতে হয়; তার আবার ভালোমন্দ।  ঠাকুমা বুড়িকে তিন বছরের বেশি পাইনি কিন্তু তার প্রবাদ আজও টেপফ্রক ঘুলঘুলিতে গুঞ্জরিত হয়- 'রামায়ণ ধামায়ণ বুঝিতে না পারি/ সকলের দু:খ দেখে কেঁদে কেঁদে মরি'। ইউনিফর্ম বিনুনির সময়ে যখন জোড়া বিস্কুট খেলে জোড়া বাচ্চা হোত আর ঠাকুর কথায় কথায় পাপ দিত, 'অরুণ' এলেন কিরণ ছড়িয়ে স্বর্ণরথে। তুমি একখানা অবয়ব পেলে। রক্ত মাংসের টেলি অবতার। 

    কিন্তু জানো তো, যেমন ফুল ফোটে,সেফটিপিন ফোটে তেমনি মেয়েদের বুক ফোটে, দেহের সেই কুঁড়িকাতর আর্তনাদ যে কতটা মধুর; কতটা বিষাক্ত, তা তুমিও নিশ্চিত জানো রাম, যৌবন তো তোমার দরজায়ও কড়া নেড়েছিল।

    বাল্মীকিকে মহাকাব্য লিখতে হবে,তাঁর তাড়া রয়েছে। তিনি ব্যাখ্যা করেননি তোমার স্বপ্নদোষ কিন্তু অযোধ্যার রাজমহলের কোন উদ্ভিন্নযৌবনা অসতর্ক  দাসীকে কখনো তুমি রক্তিম -পলাশ নয়নে একবারের জন্যও বিদ্ধ করনি, তোমার শ্বাস এক মুহুর্তের জন্যও স্তব্ধ হয়নি, তোমার চোয়াল ও নিগূঢ় এক পলের জন্যও দৃঢ় হয়নি, এ যদি সত্যি হয়, তাহলে তোমার রক্তমাংস, লসিকাতন্তু বৃথা..

    কিন্তু যত হলুদ বনে সবুজ বাঘ গর্জাতে শুরু করল, তত তোমার প্রতি এই ভ্রুযুগল সন্দিগ্ধ হতে শুরু করল। পুঁজ ও ঘৃণা উদবেল হয়ে  উঠতে লাগল বিস্ফার ঠেলে। কী বিরক্তিকর তুমি! অসহ্য! একটি স্লোগান, একটি জিগিরের বাহক। যে স্লোগানে মানুষকে তার চৈতন্য থেকে পিস পিস করে কেটে আস্তিত্বিক  কিমায় কুঁচিয়ে ফেলা যায়, সেই স্লোগানের বিধাতাপুরুষ তোমাকে, অন্য দিকে চেয়ে দীর্ঘশ্বাসের ফোঁসফোঁসটুকু দেওয়া ছাড়া আর কিছু দেওয়ার ছিল না। 

    ক্রমে বুক- বুদ্ধি ডাগর হল। দু একটা বইয়ের পাতা ওল্টাতে শুরু করলাম। মহাভারত হয়ে উঠল আমার অন্তরাত্মা। যত দিন যেতে লাগল কৃষ্ণ, কর্ণ, অর্জুন, একলব্য এঁদের সঙ্গে ইলাস্টিক যাপনে বুঁদ হয়ে রইলাম। তুমি শুধু রইলে গা রি রি করে ওঠা জ্বালায়..

    এমন সময়ে অমিত্রাক্ষরেশ্বরের প্রেমে পড়লাম। মাইকেল ভিতর থেকে চাড় দিয়ে জাগিয়ে দিলেন আমাকে। যেন এক ডায়নোসর ঘুমিয়ে ছিল, এবার তার বুক কাঁপল, অতিকায় সমুদ্রকায়ে দোল জাগল, তারপর দুটি দীঘির মতো চোখ মেলা হল, একটা বড় করে সাইক্লোনিক শ্বাস উদগত হয়ে সে ধরণী ঝাঁকাল, তারপর উঠে দাঁড়াল। এভাবেই সামান্যা থেকে বোধিকা উন্মোচনে মেঘনাদবধকাব্যের জড়োয়া বিভঙ্গে জড়িয়ে গেলাম। আবিষ্কার করলাম প্রমীলাকে, সীতাকে.. নতুন রূপে। মাইকেলী সীতা, প্রমীলারা তো দেবী নয়, চরিত্রও নয়, তারা আমার মতো কথা বলে,হাঁটে,দু:খ পায়,দু:খ মোচনের পথ খুঁজে নেয়। তাদের সম্পর্কে জানতে কৌতুহল হল। শুরু করলাম রামায়ণ পাঠ।  

    সীতার ঘোমটা প্রতিদিন একটু একটু করে উন্মোচিত হতে লাগল। তার দৃষ্টির সুদূর আমার নয়নে স্থাপিত হল কখন, তার শ্বাস প্রশ্বাসের সঙ্গে সঙ্গে আমার বুকের ওঠানামা শুরু কোন আশ্চর্য নির্বন্ধে, সেসব খেয়াল করার আগেই দেখি, হরধনু ভঙ্গ করে তুমি ঈষৎ লজ্জিত অথচ দৃপ্ত মৃদুহাস্যমথিত মুখখানা উদ্ভাসিত করে এদিক ওদিক আড়ে আড়ে চাইতে চাইতে হঠাৎ তোমার দৃষ্টি আটকে গেল একটি মুখের উপর।

    সেই মুহুর্তে  সমস্ত চরাচর স্তব্ধ
    গাছ একটি পাতা মোচন করেনি
    পৃথিবীতে কোথাও কেউ চোখের পাতাটুকু ফেলেনি
    হৃদস্পন্দনক্রিয়া বলে যে এই মায়াপ্রপঞ্চে কিছু আছে তার কোন প্রমাণ ছিল না...
    যার চোখ থেকে অনঙ্গমোহিনী মাকড়সা তোমার চোখ অব্দি জাল রচনা করেছিল, সে সীতা, আর তার পাশে.. বরণমালার থালা হাতে দাঁড়িয়েছিল যে দাসী, সে কে? 
    আমি, রাম। সেইদিন সেই মুহুর্তেই তোমাকে ভালোবেসেছিলাম।
    বনবাসে তো দিব্যি ছিলে প্রথমে দুটিতে। সীতার শাড়ি গয়নার প্যাঁটরা বইতে বইতে দেখছিলাম তোমাদের চোখের আঠালো বিনিময়। তুমি তাকে গাছ, ফুল, লতা পাতা চেনাতে চেনাতে যাচ্ছিলে, আমি চিনে নিচ্ছিলাম নতুন করে এই মায়াময় কাজলপরা জগৎকে কম্প্র আবডালে

    কী সুন্দর তুমি রাম! সুঠাম, পেশী অলঙ্কৃত, কমল - লোচন। তোমাকে দেখে সোহাগ করতে ইচ্ছে করে না, বল... শূর্পনখা যখন নালিশ ঠুকতে গেল রাবণের কাছে যে খর দূষণ সক্কলকে রাম কচুকাটা করছেন, রাক্ষস - নন্দিনীর সে বর্ণনার মধ্যে একটা ধড়াস ছিল জানো।  সে যে নিজেই জ্বলে মরছিল তখন তোমার প্রভাচ্ছন্নতায়। সে বলছিল তোমার ক্ষিপ্রতা, প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব ব্যাখ্যার অতীত, চোখের পলক ফেলতে না ফেলতেই তোমার বাণের ঝাঁকস্রোতে চোদ্দ হাজার দুর্দমনীয় রাক্ষস যেভাবে এলিয়ে পড়ল, সে বিশ্বাসের উর্ধ্বে। 

    কিন্তু বিশ্বাস না করে তো উপায় নেই। আরণ্যক সে যুদ্ধে নটরাজনের মতো তোমার চণ্ডসৌন্দর্য্য, হিমাচল পেশীভঙ্গিল, প্রতিটি বাণ নিক্ষেপের আগে তোমার বক্ষ আস্ফালন, জটা থেকে গঙ্গাস্রোতে ধেয়ে আসা ঘর্মধারায় সিক্ত তোমার শালতনু টকটকে ক্রোধান্বিত মুখ...রাজকন্যা শূর্পনখার পাশে তার নাসিকাস্নাত রক্তমাখা বর্জ্য  কাপড় মুঠোয় চেপে যে মূর্তিমতী তোমার প্রতিটি ক্রিয়াকলাপ সবিস্ময়ে  হরিলুটে গিলে মরছিল, সে কে?
    আমি, রাম। তোমাকে এভাবেই ভালোবেসে ফেললাম। কোনদিনই সচেতনভাবে তোমাকে ভালোবাসতে চাইনি, কিন্তু নির্বন্ধ হাতুড়ি ঠুকে ঠুকে আমার মধ্যে তোমার পেরেক-প্রবেশ ঘটালেন।

    বিভীষণের রাজ্যাভিষেকের পর যখন তুমি ভরা ময়দানে সীতাকে ডেকে কুকুরে চাটা ঘি বললে, আমি, যুদ্ধে সদ্য স্বামী পুত্র হারানো সামান্যা রাক্ষসী অবধি কেঁপে উঠেছিলাম। দিনের পর দিন সীতাকে আমি ভয় দেখাতাম, বেত্রাঘাত করতে বাকি রেখেছি কোন কোনদিন, তবু কোন কুকুরের প্রতি তার মন নিক্ষিপ্ত হয়নি অথচ তুমি...

    অগ্নিপরীক্ষা থেকে যে বেরিয়ে এল,  যাকে নিয়ে তুমি পুষ্পক চড়ে রওনা দিলে তোমার রামরাজ্যে, সে তো জনকনন্দিনী  সীতা কিন্তু যে মায়াসীতা ঐখানে ঐ মুহুর্তে পুড়ে মরল, যার হৃদয় আগেই ছাই হয়ে গেছে, সে কে?

    আমি, রাম। এই প্রথম তোমার উপর বিশ্বাস হারালাম। এরপর অনেকবার ভেঙেছে সে বিশ্বাস যখন আমি আলতা পরাচ্ছিলাম সন্তানসম্ভবা  সীতার পায়ে আর তুমি তাকে বেড়াতে যাবার প্রস্তাব করেছিলে। আশ্রমে লব কুশ হওয়ার সময়ে ধাত্রীকে গরম জল এগিয়ে দিতে দিতে যে নারী শুনেছিল সীতার 'রাম', 'রাম' হৃদয়প্লাবী আর্ত তিল তিল, সে নারীর নাম বলব না আর। যে রোজ লব কুশকে রাজা রাণী আর রাজকন্যার গল্প শুনিয়ে ঘুম পাড়াত, তাদের গা জ্বরে পুড়ে গেলে জলপটি দিতে দিতে ঘুমে ঢলে পড়া সীতার মাথায় বিলি কেটে দিত তার কথা মহাকাব্যে ঠাঁই পাবার নয়। 

    শুধু যেদিন আমার ছেলে শম্বুকের মাথা কেটে দিলে সেইদিন আমার কোন অনুযোগ ছিল না। ছেলের মাথাটা কোলে নিয়ে যত্ন করে বসেছিলাম অনেকক্ষণ, ওরা কখন এসে নিয়ে গেল টের পাইনি কিন্তু তখনও আমার মেধাবী ছেলের মস্তকের রক্তিম অনর্গলে মাখামাখি হয়েছিল আমার কোল। সে শাড়ি আমি ছাড়িনি রাম। আমার সারা গায়ে ভনভন করে উড়ে বেড়ায় মাছি, আজও

    সেই মাছি পোকাদের কিছু ভনভন আর কিলবিল উড়ে এসে বসেছিল রাজান্ত:পুরের বারান্দায় যেদিন আমার স্বামী লক্ষ্মণকে ত্যাগ করেছিলে।  সে হাঁটতে হাঁটতে চলে গিয়েছিল সরযুতীরে।  ধাপে ধাপে নেমে ডুব দিয়েছিল জলের কারুকার্য্যে। আর তার নাগাল চরাচর পায়নি কোনদিন। যে লক্ষ্মণ  চোদ্দটা বছর তোমার ছায়াসঙ্গী হয়ে কাটিয়ে দিল...বনবাসে যাবার সময়ে জানালা দিয়ে কেউ যে তার পদাঙ্ক অনুসরণ করছিল ঝাপসাপ্লুত নয়নে, সে কথা ভাবার সময় তার কোনদিনই ছিল না..  হায়! সেই  লক্ষ্মণ.. সৎ গোঁয়ার চণ্ড অথচ কী ছেলেমানুষ তাকে অবধি ব্রাহ্মণদের শাপের ভয়ে,  অখ্যাতির ভয়ে..

    ঠিক যখন তুমি জগত সভায় সীতাকে সহধর্মিণী হিসেবে পুন:প্রতিষ্ঠিত করার বদান্যতা দেখানোর সাহস পেয়েছিলে সীতা পাতালে ঝাঁপ দিল। আমি, তার আশ্রম-সই তার  হাতদুটো খামচে ধরেছিলাম। সীতা বাধা দেয়নি,কিছু বলেওনি, পদ্মকুঁড়ি যেমন ধীরে ধীরে বিকশিত হয়, তার  আঁখিস্থাপত্যদুটি সে শুধু ধীরে ধীরে মেলে ধরেছিল আমার দিকে..আমি দেখেছিলাম একটা কাগজের মুখ। তাতে কোন ভাবলেশ নেই। চাওয়ার দীপাবলি, পাওয়ার অকাল বোধন নেই। হাতটা নিজের অজান্তেই ছেড়ে দিয়েছিলাম। মনে মনে বলেছিলাম, দুজ্ঞা দুজ্ঞা। সীতা নামিয়া প্রমাণ করিল যে সে নামে নাই।

    তুমিও চলে গেলে রাম। সীতার সঙ্গে সঙ্গে তুমিও চলে গেলে। তারপর থেকে তোমার মুখে হাসি দেখিনি। রোজ তোমাকে খেতে দিতাম, তুমি খাবারের থালার সামনে হাত গুটিয়ে বসে থেকে জানালা দিয়ে চোখ ভাসিয়ে দিতে, তারপর থালায় জল ঢেলে উঠে যেতে। কতদিন মনে হয়েছে, বিষ মিশিয়ে দিই তোমার খাবারে, তুমি যা করেছো সীতার সঙ্গে, এটাই তোমার উপযুক্ত শাস্তি।

    কিন্তু মরা মানুষকে মারা যায় না। তোমার দেহ জৈবধর্মে চলে আর গেহ জ্বলে অনন্ত চিতায় । রাবণের চিতা নিভে গিয়েছে এক সময় কিন্তু তোমার চিতায় তুমি আপনি ঘৃতাহুতি দিয়েছো বিন্দু বিস্বাদে

    রাগ হতে হতেও আশ্চর্য লাগে, যার পিতার তিনশো পঞ্চাশ রমণী, যার পরবর্তী যুগেও একলা দ্রৌপদীকে নিয়ে কারোর সুখ হয়নি,  ষোলো হাজার রমণীর কমলাক্ষ মোহনকে নিয়ে যেখানে আড়ালে রসিকতা কম ছিল না সেখানে রাম, তুমি শুধু একজন নারীকেই ভালোবাসলে, সন্দেহ করলে, জ্বালিয়ে পুড়িয়ে খাক করলে, নিজেও ছাই হলে.. কী ভীষণ আধুনিক তুমি। অন্যরকম! না সীতাকে কোনদিনই সেভাবে পেলে না বলেই তাকে পাবার আশ মিটল না?

    এ প্রশ্নের উত্তর সরযূ নদীর স্রোত জানে। একটু একটু করে প্রতিদিন সাঁতার ভুলতে শেখার রেওয়াজ করেছিলে একদিন জলের হৃদয়ে ডুব দেবে বলে। যদি তখন মাছ জন্ম নিতাম তাহলে তোমার অন্ত:করণ ছেঁকে ধরতাম ঝাঁকে ঝাঁকে...

    কিন্তু থাক। কতদিন ভালো করে ঘুমোওনি। স্বর্ণময়ী সীতার ঝলকানিতে সারা রাত ঘুম হোত না তোমার...

    এই দেখো, যে কথা বলতে গিয়ে এত কথার অবতারণা- রাম, তোমাকে ভালোবেসেছি আমি। যেভাবে একজন মানুষী ভালোবাসে তার মনের মানুষকে, তাকে  ঘাম চন্দনের মতো মেখে নেয় নিজের সলজ্জ অথচ সপ্রতিভ শরীরে, মনে, সত্ত্বায়, ঠিক সেইভাবে 
    অথচ এই কথা বলতে গিয়ে এতগুলো চর্ব্য আর চোষ্য লেগে গেল - ভয়ে।

    কিন্তু ভয় কেন করব বল। যারা তোমাকে ভগবান ভাবে, তাদের হৃদয় থেকে তোমার ভগবত্তা তো আমি কেড়ে নিতে চাইছি না। তাহলে তাদের দৃষ্টিভঙ্গীতে আমার নয়ন স্নাত হতে বাধ্য হবে কেন? তুমি যতটা তাদের ততটাই আমার। আমাদের বিনিময়ের পৃথিবীটা আমাদেরই। এর মধ্যে গোটা পৃথিবীর অনুপ্রবেশ ঘটবে কেন? 

    তুমি যদি সত্যিই সসাগরা ধরণীর অধীশ্বর হও, তাহলে  তোমার কাছে আজ এই প্রার্থনা করি, তুমি সিংহাসন থেকে হৃদয়ে নেমে এসো। তোমাকে যেন নির্ভয়ে ভালোবাসতে পারি ; ঘৃণা করতে পারি পরম কুণ্ঠাহীনতায়। নিজের উঠোনের বেড়ায় তোমাকে, হে অন্তরতম, ঘনিয়ে তুলতে পারি নিজস্ব লতাঙ্গিকে...

    চিত্রঋণ: রাজা রবি বর্মা

     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • অপার বাংলা | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ৩৭৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন