এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  গপ্পো

  • ছোটদের গল্প - ১ - চিংড়ি লো চিংড়ি

    Kishore Ghosal লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | গপ্পো | ১৩ জুলাই ২০২২ | ১৩৫৫ বার পঠিত
  • [ত্রিপুরার "কিশোর-বার্তা" পত্রিকার উৎসব সংখ্যা ২০১৬-য় প্রকাশিত]  
     
    (কোলের কাছে বসে, চিংড়ি ভাজা দিয়ে ডালভাত মাখা খেতে খেতে, দিদিমার মুখে ছোট্টবেলায় যেমনটি শুনেছিলাম, এটা সেই গল্পই – একটু আলাদা মোড়কে।)

    ভোরের আলো ফুটেছে অনেকক্ষণ, পুব আকাশে এখন মায়ের কপালে সিঁদুরের টিপের চেয়েও এত্তোবড়ো সূর্য। তার রোদ্দুর একটু তেরছা হয়ে পড়ছে জামরুল গাছের পাতায় পাতায়। পাতা ভিজিয়ে রোদ্দুর গড়িয়ে পড়ছে টুপ টাপ, পুকুরের জলে। চারদিকে গাছে ঘেরা এঁদো পুকুর। সবুজ জল, খুদিপানায় ভর্তি। ঘাটের কাছে, মেয়ে বউরা বাসনকোসন মাজতে বসে, সেখানে জলটা একটু পরিষ্কার। উল্টোদিকের পাড়ে যেখানে খুব গাছপালা আর আগাছার ঝাড়, সেখানে পাতার আড়ালে বসে থাকে মাছরাঙা পাখি। আনমনে ছোট মাছেরা একটু ওপরের দিকে ভেসে উঠেছে কি, ঝপাং - মাছরাঙার ঠোঁটে রূপোর ঝিলিক।
     
    এদিকে মাঝ পুকুর বরাবর কিছু শালুকের ডগা জেগে আছে সাদা পাপড়ি মেলে। আশেপাশে গোলগাল আসনের মতো ভাসছে সবুজ পাতা। খুব হাল্কা হলে, জল থেকে উঠে বসাও যায় ওই পাতায়। যেমন আজ সকালে এসে এইমাত্র বসল, চিংড়িরাণি। সারাক্ষণ জলের মধ্যে থেকে তার চুল শুকোয় না। আজ শালুকপাতায় বসে রোদ্দুরে পিঠ দিয়ে সে বসল চুল শুকোতে।
    একটু আরাম করার কি জো আছে? হতচ্ছাড়া এক কাক, কোথায় ছিল, উড়ে এসে বসল, কাছের তেঁতুল গাছের ডালে। দুবার ডাকল, খা খা। সর্বদাই তার খাবার চিন্তা। ঘাড় ঘুরিয়ে এদিক দেখল, ওদিক দেখল। তারপর তার চোখ পড়ল ছোট্ট চিংড়িরাণির ওপর। লোভে তার ঠোটঁ ফাঁক হয়ে গেল, বলল, ‘চিংড়ি লো, চিংড়ি, খাবো লো তোকে’!  
    কাকের গলা পেয়ে, ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল চিংড়িরাণি। রাক্ষুসে কাকের ফাঁক করা ঠোঁট দেখে চিংড়িরাণির ভয়ও লাগল খুব, আবার রাগে হাত-পাও জ্বলতে লাগল। শালুক পাতার কানা থেকে তিড়িং করে লাফ মারল জলে। জলের মধ্যে ডুবে বেশ নিশ্চিন্তি। ভয়টা তো কাটল, কিন্তু রাগ? সেটা তো কমছে না! আকাশের কাকের সঙ্গে জলের চিংড়ির কী সম্পর্ক? চিংড়ি বুঝি ফ্যালনা, তাকে ‘তুই’ বলা যায়, ‘লো’ বলা যায়, আবার টপ করে খেয়েও ফেলা যায়? রাগে সমস্ত শরীর রি রি করতে লাগল চিংড়ির। কী করা যায়, কী করা যায়, ভাবতে ভাবতে চিংড়িরাণি গেল তার কাতলা দাদার কাছে।
     
    কাতলাদাদা আর বৌদি তখন খুব ব্যস্ত। কাতলাদাদা আপিস যাবে, বাচ্চারা যাবে স্কুল। বৌদি কাতলাদাদাকে খেতে দিয়েছে, বাচ্চারাও সবাই খেতে বসে হই হট্টগোল করছে। কাতলাদাদা চিংড়িরাণিকে দেখেই বৌকে বলল, ‘কে এয়েচে দেখো। আয় রে বোন চিংড়িরাণি, ওকে শিগ্‌গির দাও পিঁড়ি-পানি’।  
    বৌদি বলল, ‘ও মা ঠাকুজ্জি, এসো বোনটি, বোস বোনটি, এই নাও পানি, আর পিঁড়ি দিচ্ছি আনি’। 
    কাতলা চিংড়িরাণির মুখের দিকে তাকিয়ে বলল,  ‘কিন্তু বোন, বল তো দেখি কেন? তোর মুখটা ভীষণ ভার, মনে হচ্ছে যেন’।
     
    কাতলাদাদার কথায় ফুঁপিয়ে উঠে চিংড়িরাণি বলল, ‘সকাল বেলায় চানটি করে কীই বা করি বল, শালুকপাতায় বসে তখন শুকোচ্ছি কুন্তল। কাকটা এল উড়ে, বসল একটু দূরে। “চিংড়ি লো, চিংড়ি, খাবো লো তোকে”! বললে আমায় কাক, আমায় খাবার ঝোঁকে। কাক আমাকে খেত, সেও ভালো হত, কিন্তু ‘লো’ বলবে কেন? এই অপমান থাকতে তোরা, সইতে হবে হেন’?
    চিংড়িরাণির এই কথায় রেগে আগুন হয়ে উঠল কাতলাদাদা আর বৌদি। বলল, ‘হতচ্ছাড়া কাকের এতোই আস্পর্দা, কাতলা যে তোর বড়দা, গেছেই বোধ হয় ভুলে। কানটি তাহার মুলে, পাঠিয়ে দেবো খড়দা। এক কাজ কর তুই বোন, খারাপ করিস নে আর মন। এখন আমার ঘরেই থাক, তোর বৌদি আছে যখন। আপিস থেকে আসছি আমি ফিরে, দেখব আমি তখন। কি ভাবে ঢিট হতে পারে কাক বাছাধন’।

    কাতলাদাদার এই কথায় চিংড়িরাণি ভরসা করতে পারল না। রেগেও গেল খুব। আমি জ্বলছি কাকের কথায়, কাতলাদাদা চলল নেকটাই ঝুলিয়ে আপিস করতে! আপিস থেকে ফিরতে হবে সন্ধে। ততক্ষণ কাক বুঝি বসে থাকবে, কাতলাদাদার কাছে জব্দ হওয়ার জন্যে! প্রচণ্ড রাগে চিংড়িরাণি থড়বড়িয়ে বেরিয়ে গেল কাতলাদাদার ঘর থেকে, কাতলাদাদা বলল, ‘কোতা যাস, কোতা যাস, ও আমার বোন’। 
    বৌদি বলল, ‘ঠাকুজ্জি, ঠাকুজ্জি, একবারটি শোন’।

    কে শোনে কার কতা? চিংড়িরাণি একদণ্ডও আর দাঁড়াল না। সোওওজা গেল শোলদাদার বাড়ি। শোলদাদার বাড়িতে তখন খুব হট্টগোল। শোলদাদা নিজেই বাজায় ঢ্যাম গুড়গুড় ঢোল। বাদ্যি থামিয়ে শোলদাদা বলল, ‘আয় আয় বোন চিংড়ি, মুখটা কেন হাঁড়ি? সকাল সকাল কি হল রে, জানতে আমি পারি?’
     
    চিংড়ি খুব রাগে গনগনে মুখে বলল, ‘শালুকপাতায় বসে আমি শুকোচ্ছিলাম চুল, সকাল সকাল সেইটা বুঝি, হল আমার ভুল? হতচ্ছাড়া কাক, করছিল হাঁকডাক। “চিংড়ি লো, চিংড়ি, খাবো লো তোকে”! বললে আমায় জেন। খেত তো ভালোই হত, কিন্তু ‘লো’ বলবে কেন? এই কথাতেই হলাম আমি ভীষণ অপমান। বিহিত কিছু না করলে, দেবই আমি প্রাণ’।
     
    এই কথা শুনে শোলদাদাও খুব রেগে গেল। নিজের লেজ ঝটপট করে বলল, ‘রাগ হচ্ছে খুব। কাক ব্যাটাকে সঙ্গে নিয়ে জলেই দেব ডুব। ইচ্ছে হলেও, সত্যি সত্যি করতে কি আর পারি? চল তো দেখি, আমার সঙ্গে কাঁকড়াকাকার বাড়ি। সেথায় গেলে বেরিয়ে যাবে, একটা কোন উপায়। কী করেই বা কাকব্যাটা, এমন বলতে সাহস পায়?’

    শোলদাদার সঙ্গে চিংড়িরাণি চলল, কাঁকড়াকাকার বাড়ি। কাঁকড়াকাকা, সকালে উঠে ব্যায়াম করছিল, ইয়া মোটামোটা দাঁড়া ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে। হন্তদন্ত হয়ে ওদের আসতে দেখে কাঁকড়াকাকা ব্যায়াম থামিয়ে বলল, ‘আয়রে আমার চিংড়ি, আয়রে আমার শোল। কিছু একটা নিশ্চয়ই হয়েছে গণ্ডগোল। সকাল সকাল নইলে কেন আসবি তোরা বাড়ি? মুখটি দেখে মনে হচ্ছে, রেগে আছিস ভারি?’
     
    কাঁকড়াকাকার চেহারা দেখে চিংড়িরাণি অনেকটাই ভরসা পেল। সে হাঁফাতে হাঁফাতে বলল, ‘সকালবেলায় রোদ্দুরটি উঠেছিল বেশ, শালুকপাতায় বসে আমি শুকোচ্ছিলাম কেশ। হঠাৎ এল কাক, ঠোঁটটি করে ফাঁক। “চিংড়ি লো, চিংড়ি, খাবো লো তোকে”, বললে আমায় কাক, লোভ চকচক চোকে’। খেত তো ভালোই হত, কিন্তু ‘লো’ বলবে কেন? কেউ কোত্থাও নেই আমার, কোন স্বজন যেন?’
     
    কাঁকড়াকাকা এই কথা শুনে ভীষণ রেগে গেল। মোটামোটা দুই দাঁড়াতে শান দিয়ে বলল, ‘দাঁড়া, চিংড়ি, দাঁড়া। দেখছিস এই দাঁড়া? চেপে এমন ধরব আমি কাকব্যাটার গলা, বন্ধ হয়ে যাবে তার সকল কথা বলা। কাকব্যাটাকে কেমন করে করবো আমি বন্দী। সেটাই আসল ফন্দি। গায়ে আমার বাঁধতো দেখি, আচ্ছা সে ব্যাণ্ডেজ। মনে হবে আঘাত পেয়ে, আমার ঝিমিয়ে গেছে তেজ’।

    কাঁকড়াকাকার কথা মতো শোল আর চিংড়ি, কাঁকাড়াকাকার গায়ে খুব চওড়া করে ব্যাণ্ডেজ বেঁধে দিল, শুধু দাঁড়াদুটো খোলা রইল। ব্যাণ্ডেজ বাঁধা হয়ে যাওয়ার পর তিনজনে গেল সেই শালুক পাতার কাছে। কাঁকড়াকাকা জল থেকে ভেসে উঠে, শালুকপাতার ওপর চড়ে শুয়ে পড়ল চিৎপাত হয়ে। চিংড়ি আর শোল জলের মধ্যেই ভাসতে থাকল কি হয় দেখার জন্যে। কাঁকড়াকাকাকে দেখে মনে হচ্ছিল, সত্যিই যেন খুব অসুস্থ, সারা গায়ে মাথায় বেজায় চোট পেয়েছে।

    দূর থেকে দেখতে পেয়ে, কিছুক্ষণ পর কাকটা উড়ে এসে বসল কাছের তেঁতুল গাছের ডালে। দুবার ডাকল, খা খা। সবসময়েই তার খাবার চিন্তা। ঘাড় ঘুরিয়ে কিছুক্ষণ দেখল কাঁকড়াকাকাকে। কাঁকড়াকাকা নড়েও না, চড়েও না। কাকটা ধরেই নিল কাঁকড়াটা বুঝি মরে গেছে। তার কালো কালো ঠোঁটদুটো লোভে ফাঁক হয়ে গেল। মনে মনে ভাবল, ‘আহা, কাঁকড়া খাবার এমন সুযোগ পাই নি বহুদিন। ভাবতে আমার মনটি নাচে ধা ধা তাধিন ধিন। করলে বেশি দেরি, জুটবে আরো কাক। আমার ভাগেই তখন পড়ে যাবে ফাঁক’।

    এই না ভেবে কাক উড়ে গিয়ে বসল শালুক পাতার ওপর। কাকের ভারে দুলে উঠল শালুকপাতা। জলের ভেতর ঢেউ উঠল গোল গোল। খুদিপানার সবুজ পাতাগুলোও দুলে উঠল ঢেউয়ের তালে তালে। খুদিপানার আড়ালে লুকিয়ে থাকা চিংড়ি আর শোল দম বন্ধ করে অপেক্ষা করতে লাগল, কী হয়, কী হয়! কাঁকড়াকাকা কিন্তু একটু নড়েও নি, চড়েও নি। মরার মতো শুয়ে থেকে দুলতে লাগল শালুকপাতার সঙ্গে। কাকটা এবার সরে এসে কাঁকড়াকাকার দু পাশে দুই পা রেখে দাঁড়াল, এবার ঘাড় তুলে ঠোকর মারবে মনে হয়। ঠোকর মারার আগে শেষবারের মতো চারপাশটা ঘাড় ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখে নিল, কোথাও কোন বিপদ আছে কিনা। কিচ্ছু নেই, এবার কাকটা দুবার ডাকল, খাই খাই। সর্বদাই তার খাবার চিন্তা।
     
    তারপর কাঁকড়াকাকাকে ঠোকর মারতে কাকটা যেমনি মাথা নামিয়েছে, কাঁকড়াকাকা এক ঝটকায় দাঁড়া দুটো দিয়ে, ক্যাঁক করে চেপে ধরল কাকের গলা। কাকটা ডানা ঝাপটিয়ে পালানোর জন্যে ছটফট করছিল, কিন্তু কাঁকড়াকাকার দাঁড়ার কামড় ছাড়াতে পারলে তো! কাঁকড়াকাকা, এবার কাকের গলা চেপে থেকেই, হাঁক দিল, ‘কোতায় গেলি, চিংড়িরানি, কোথায় গেলি শোল? দৌড়ে এসে দেখে নে, খাচ্ছে কেমন ঘোল। কাকব্যাটা হচ্ছে কেমন আমার হাতে জব্দ, মুখের থেকে শুনতে কী পাস কা কা কা শব্দ?’
    চিংড়ি আর শোল জলের মধ্যে থেকে সবই দেখছিল, এখন কাঁকড়াকাকার ডাকে শালুক পাতার ওপর উঠে এল চিংড়ি, আর পাতার চারপাশে ঘুরে ঘুরে সাঁতার দিতে লাগল শোলমাছ। চিংড়ি বলল,
    ‘কেমন রে, কাক আর কী আমায় খাবি, নাকি কাঁকড়াকাকার দাঁড়ার চাপে যমের দোরে যাবি?’

    কাক এতক্ষণে পুরো ব্যাপারটা বুঝতে পারল, সকালে ‘চিংড়ি লো, চিংড়ি, খাবো লো তোকে’ বলার জন্যেই, কাঁকড়া ব্যাণ্ডেজ বেঁধে মড়ার মতো শুয়েছিল শালুক পাতার ওপর, তাকে ধরবে বলে। কাক বেকায়দায় পড়ে, এখন চোখ মটকিয়ে কোন রকমে বলল, ‘না, না না, কাঁকড়াদাদা দাও গো এবার ছেড়ে, চিংড়ি খাবার বদবুদ্ধি ফেলেই দিলাম ঝেড়ে। চিংড়ি খাবার ইচ্ছে আমি করবো না গো আর, দমবন্ধ হওয়ার আগেই দাও গো আমায় ছাড়’।
     
    কাঁকড়াকাকা রাগী দুই চোখে তাকিয়ে কাককে কড়া ধমকে দিল, ‘চিংড়ি আমার ভাইঝি, রাখবি মনে কথা, কোনভাবেই চিংড়ি যেন, পায় না মনে ব্যথা। দিলাম এবার ছেড়ে, পরের বারে করলে এমন, রাখবো তোকে সেরে। যা উড়ে যা গাছের ডালে করবি না হাঁকডাক, এ পাড়াতে না দেখি আর, বুঝলি ব্যাটা কাক?’
     
    কাঁকড়াকাকার দাঁড়া থেকে ছাড়া পেতেই কাক ঝটপট উড়ে গিয়ে বসল জামরুল গাছের ডালে। সেখানে বসে অনেকক্ষণ নিজের গলায় হাত বোলালো। কাঁকড়াটা যা জোর চেপে ধরেছিল, গলায় দাগ বসে গেছে, উফ, প্রাণটা গিয়েছিল আরেকটু হলে। তারপর সেখান থেকেও সে উড়ে গেল কোথায় কে জানে।
     
    কাঁকড়াকাকা ব্যাণ্ডেজ খুলতে খুলতে বলল, ‘এখন খুশি তো, চিংড়িরাণি, আর তোকে ওই কাক; তোর ব্যাপারে কোনদিন গলাবে না নাক’। পাতা থেকে কাঁকড়াকাকা আর চিংড়িরাণি জলের মধ্যে ডুব দিল, তাদের সঙ্গী হল শোল। কাঁকড়াকাকা বলল, ‘চিংড়িরাণি, শোল, আমার বাড়ি চল; আমি খাব চা, তোরা কী খাবি বল। রান্না করে বসে আছে তোদের কাঁকড়াকাকি, চল এবারে সবাই মিলে কেমন হল চাখি’।
     
    কাক আর কাঁকড়াকাকার ঝটাপটিতে শালুকের পাতা খুব দুলছিল। আশপাশ থেকে দুলে দুলে দূরে সরে গিয়েছিল খুদিপানার ছোট্ট ছোট্ট পাতা। জলের নিচে ওরা ডুব দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে তারা আবার সরে এল, নিজেদের জায়গায়। এখন দেখে বোঝাই যায় না কিছু। খুদিপানার ছোট্ট পাতায় ঢাকা পড়ে গেছে পুকুরের স্থির জল।
     
    -০০-
     

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ১৩ জুলাই ২০২২ | ১৩৫৫ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    বকবকস  - Falguni Ghosh
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • kk | 2601:448:c400:9fe0:6c1b:80a5:3c57:830 | ১৪ জুলাই ২০২২ ০৮:১৬509840
  • এই গল্পটা আমিও ছোটবেলায় শুনেছি। তাতে চিংড়ির নাম ছিলো ইচলি রাণী। সে খুব রাগ করে বলছিলো -- "পদ্মপাতে বসে আমি চুল শুকাই / ঐ কাকটা বলে কিনা ও লো তোকে খাই? খেতে খাক, লো কেন বলবে?" :-)
  • Kishore Ghosal | ১৪ জুলাই ২০২২ ১১:৫৬509844
  • আপনার গল্পের ভাষা শুনে মনে হচ্ছে, এটি ওপার বাংলার - আমার গল্প এপার বাংলার - বর্ধমান জেলার গ্রাম। 
     
    আরেকটি গল্প ছোটবেলা থেকে নানান জায়গায় - মেদিনিপুর থেকে জলপাইগুড়ি - বহুবার শুনেছি - প্রবাসী ছেলেকে ভাত বেড়ে দিয়ে ভূত-মায়ের দাওয়াতে বসে লম্বাআআআআ হাতে বাগানের লেবুগাছের  পাতিলেবু পাড়ার গল্প।  
     
    লোকগল্প, লোককথা এভাবেই ছড়িয়ে থাকত আমাদের বাংলা জুড়ে, সে আঁচল আজ  শতচ্ছিন্ন - সে আঁচলে আজ রক্তের দাগ। 
  • যোষিতা | ১৪ জুলাই ২০২২ ১২:০৯509845
  • হ্যাঁ। সন্ধেবেলায় ছেলে খেতে বসেছে। মা হাত বাড়িয়ে লম্বা করে ফেলে বাগানের লেবু গাছ থেকে পাতিলেবু পেড়ে এনে দিল। এ গল্প সন্ধেবেলায় খেতে বসে শুনলে শিউরে উঠতাম ভয়ে।
  • &/ | 151.141.84.146 | ১৪ জুলাই ২০২২ ২২:৩৮509861
  • এক জামাইয়ের গল্পেও এরকম শুনেছি। জামাতা গেছে বৌকে বাপের বাড়ি থেকে আনতে। সেখানে আদরযত্নের ত্রুটি হল না, জামাইকে সযত্নে খেতে দিচ্ছে বৌ, লেবু দিতে ভুলে গেছে। লম্বা হাত বাড়িয়ে বাগানের গাছ থেকে লেবু ছিঁড়ে আনল। দেখে জামাই বাবাজীবন অজ্ঞান। পরে জানা গেল ওই গ্রামে সবাই সাবাড় মহামারিতে।
    (এই বিশেষ ভুতের কাহিনিটাতে সবসময়েই লম্বা হাত বাড়িয়ে লেবু তুলে আনার কথা থাকে। লঙ্কা বা অন্য কিছু না। অথচ পাতে কাঁচালঙ্কারও তো অভাব পড়তে পারত! ঃ-) )
  • kk | 2601:448:c400:9fe0:8473:4461:8e69:33c | ১৫ জুলাই ২০২২ ০০:১৩509862
  • ভূতের গল্প আমি একদম ভালোবাসিনা! আমি ভূত মোটেই বিশ্বাস করিনা, কিন্তু ভূতের গল্পে ভয় পাই! কী কারবার!
  • &/ | 151.141.85.8 | ১৫ জুলাই ২০২২ ০০:২০509863
  • ভালো ভূতের গল্প আমার ভাল্লাগে। বরদার ভূত বিষয়ক গল্পগুলো ভালো লাগে। ওগুলো অবশ্য ভয় ভূত না, অন্যরকম গল্প।
    ভয় দেখানো ভূতের গল্প বিশ্রী লাগে। ভয় তো লাগেই না, রাগ আর বিরক্তি হয়।
  • kk | 2601:448:c400:9fe0:8473:4461:8e69:33c | ১৫ জুলাই ২০২২ ০০:২৪509864
  • এই টইটা ঘেঁটে যাচ্ছে, তবু -- হ্যাঁ, আমি অবশ্য লীলা মজুমদারের ভূতের গল্পগুলো ভালোইবাসি।
  • &/ | 151.141.85.8 | ১৫ জুলাই ২০২২ ০০:২৮509865
  • 'নেপুর নবীকরণ' পড়লাম সদ্য। সেই গল্পে পিঠে তৈরী শিখতে আসতো ভূতমেয়েরা। :-)
  • Kishore Ghosal | ১৫ জুলাই ২০২২ ২০:৪৩509892
  • kk বাবু এবং &/ বাবু, শুকনো লংকা আর কালো জিরে ফোড়ন দিয়ে সাঁৎলে নামালে, ভূতের গপ্পো বেশ ভালই লাগে, বিশেষ করে নিম্নচাপের সন্ধ্যায়। মনে রাখলাম, পরে কোনদিন পরিবেশন করব।  
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে প্রতিক্রিয়া দিন